“আমি সচেতন হলে ঠিক সময়ে আমি আমার স্ত্রীকে ঠিক জায়গায় নিয়ে যাব, সঠিক পুষ্টিকর খাবারটা তাকে খাওয়াব,” বলেন নূরজাহান বেগম।
Published : 20 Apr 2025, 04:44 PM
স্বাধীনতার পাঁচ দশক পেরোলেও সব প্রসূতির দায়িত্ব রাষ্ট্র নিতে না পারায় খেদ প্রকাশ করেছেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী সায়েদুর রহমান।
রোববার এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেছেন, নিরাপদ মাতৃত্বকে নিশ্চিত করা পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের দায়িত্ব হিসেবে না দেখে জাতীয় দায়িত্ব হিসেবে দেখতে হবে। নিরাপদ মাতৃত্ব একজন নাগরিকের অধিকার।
“কিন্তু বাংলাদেশে শতকরা ১৮ শতাংশ মা সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা পান, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোয় যান ৮২ শতাংশ মানুষ। এটা অনেক বড় পার্থক্য। নিরাপদ মাতৃত্ব নিশ্চিতে সরকারের সঙ্গে বেসরকারি খাতের অবদানের বিরাট পার্থক্য দুর্ভাগ্যজনক।”
বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস উপলক্ষে ঢাকার ওসমানী স্মতি মিলনায়তনে এক আলোচনায় সভায় বক্তব্য দিচ্ছিলেন সায়েদুর রহমান।
অধ্যাপক সায়েদুর রহমান বলেন, “প্রতিষ্ঠার ৫৪ বছর পর একটি রাষ্ট্র তার সকল মায়ের সন্তান জন্মদানের দায়িত্ব পালন করতে পারে না, এটা বড় ধরনের ব্যর্থতা। অবশ্যই বেসরকারি খাতের অবদান স্বীকার করতে হবে, কিন্তু এটা রাষ্ট্রের অন্যতম দায়িত্ব।”
নিরাপদ মাতৃত্ব নিশ্চিতে রাষ্ট্রকে সব দায়িত্ব নিতে হবে মন্তব্য করে তিনি বলেন, বেরসকারি সংস্থা বা অন্যরা তাদের দায়িত্ব- যার যার অবস্থান থেকে পালন করবেন।
“কিন্তু ১৮:৮২, এটা অবশ্যই একটা অগ্রহণযোগ্য সংখ্যা। এটা নির্দেশ করে রাষ্ট্র মায়েদের প্রতি দায়িত্ব পালনে যথাযথ পদক্ষেপ নিচ্ছে না। আমরা অন্তর্বর্তী সরকার অল্প সময়ের জন্য থাকব, কিন্তু আগামীতে যারা আসবেন তাদের সামনে এটাকে নীতি হিসেবে আনতে চাই।”
অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম বলেন, নারীদের প্রতি বঞ্চনা শুরু হয় পরিবার থেকে। নারীদের নারী হিসেবে, মা হিসেবে কতটুকু মর্যাদা দেওয়া হয়- তার ওপর সে কতটা অধিকার পায় তা নির্ভর করে।
তিনি বলেন, পরিবার পরিকল্পনায় এক সময় বাংলাদেশের অবস্থান কিছুটা ভালো ছিল। কিন্তু সেই উন্নতি মাঝপথে থেমে গেছে। এখন ভালোর দিকে না গিয়ে খারাপের দিকে যাচ্ছে।
“আমরা যদি বাল্যবিয়ের দিকে দেখি- তা কমছে না, বাড়ছে। বিভিন্ন হাসপাতালে গিয়ে দেখি- ছোট ছোট মেয়ে, তারা মা হয়েছেন। তারা নিজেই নিজের যত্ন করতে পারে না, সে বাচ্চার যত্ন কীভাবে নেবে। এটা অপরাধ, আমরা দেখছি; কিন্তু কিছু বলছি না। প্রতিরোধ করছি না।”
সবাই মিলে নজর দিলে পরিস্থিতির উন্নতি হবে মন্তব্য করে উপদেষ্টা নূরজাহান বলেন, “জন্ম তখনও সুরক্ষিত হবে- যখন আমরা সচেতন হই। সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান মিলে আমরা এই কাজটা করতে পারি।
“আমি সচেতন হলে ঠিক সময়ে আমি আমার স্ত্রীকে ঠিক জায়গায় নিয়ে যাব, সঠিক পুষ্টিকর খাবারটা তাকে খাওয়াব।”
স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব সারোয়ার বারী, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বাংলাদেশ প্রতিনিধি আহমেদ জামশেদ মোহাম্মেদ, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব সাইদুর রহমান, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবু জাফর, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক নাজমুল হোসেন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।