নির্বাচিত সরকারের আমলে বিচার-বহির্ভূত হত্যা

আলী আহমদ
Published : 8 July 2010, 04:28 PM
Updated : 8 July 2010, 04:28 PM

বিষয়টি নিয়ে বেশ ক'দিন থেকেই লিখব লিখব ভাবছিলাম। কিন্তু প্রতিদিনই কিছু-না-কিছু ঘটবে–সচরাচর যেমনটা হয়ে থাকে আর কি–এমনটা অপেক্ষা করছিলাম। অবশেষে দেখলাম হাইকোর্টের নির্দেশ এলো, আর মৃত তিন জনের একজনের বাবা হত্যা মামলা দায়ের করেছেন মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে।
হ্যাঁ, অতি সাম্প্রতিক অনেক আলোড়ন সৃষ্টিকারি পুলিশি হেফাজতে ঘটে যাওয়া তিন মৃত্যুর কথাই বলছি।

হঠাৎ করে এই তিনটি মৃত্যু কেন যে এতো আলোড়ন সৃষ্টি করলো, গণমাধ্যম কেন যে উঠে-পড়ে লাগলো এ নিয়ে এবং হাইকোর্টই বা কেন এতটা খড়গহস্ত হলো তা ভেবে আমি তো অনেকটা ভ্যাবাচ্যাকাই খেয়ে গেছিলাম। কারণ বিশেষ বিশেষ বাহিনীর হাতে সাধারণ মানুষের মৃত্যু পত্রিকার ভিতরের পৃষ্ঠার এক কলামের দুয়েক ইঞ্চির ছোট্ট শিরোনাম ছাড়া তো কিছুই নয় এখন আর। তা-ও আবার 'ক্রসফায়ার' নামেই এখন দেশব্যাপি পরিচিত। না, গণমাধ্যম কিংবা মানবাধিকার সংগঠনগুলো অথবা এমনেস্টি জাতীয় সংগঠনগুলোর দোষ দিয়ে লাভ নেই। তারা চেঁচামেচি করে আসছিলো অনেক দিন ধরেই। তবে 'অপরাধী' বলে পরিচিত এইসব সাধারণ মানুষের আক্ষরিক অর্থেই বাঁচা-মরার বিষয়টি যারা নির্ধারণ করেন তারা তো আর ঐ সংস্থাগুলো নন, তাঁরা হচ্ছেন ধরা-ছোঁয়ার বাইরের আইন-শৃক্সক্ষলা রক্ষাকারি বিশেষ বিশেষ বাহিনী। সুতরাং বে-ঘোরে প্রাণ হারানো এখন নিত্য-নৈমিত্তিক ব্যাপার।

চারদিকের এই অবস্থা দেখে আমার পুরনো একটা কথা মনে পড়ে গেল। গত শতকের আশির দশকের মাঝামাঝি সময় ছিল সেটা। এরশাদের স্বৈরাচারী শাসনের সূর্য তখন মাঝ-আকাশে। কথা হচ্ছিল এক সেনা কর্মকর্তার সাথে। আমাদের দেশের, অথবা বিশেষভাবে ঢাকার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি এতটা খারাপ তখনও পর্যন্ত হয়নি।

ঐ সেনা কর্মকর্তা আরেক কুখ্যাত স্বৈরাচারী সেনাশাসকের, অর্থাৎ ইন্দোনেশিয়ার সুহার্তোর, ভূয়সী প্রশংসা করে বলছিলেন যে জাকার্তায় সেনা নামিয়ে অপরাধী ও উচ্ছৃঙ্খল লোকজনদেরকে গুলি করে রাস্তায় কয়েকদিন ফেলে রাখার পর পুরো ইন্দোনেশিয়া এখন শান্ত। তিনি খুব আফসোস করে বলছিলেন যে এরশাদ অমন কোনো পদক্ষেপ কেন নিল না! নিরর্থক ভেবে তার সাথে আমি তখন তর্কে নামি নি।

বর্তমান তিনটি মৃত্যুর ব্যাপারে হাইকোর্ট অত্যন্ত সোচ্চার হয়েছে, গণমাধ্যম অতিশয় সক্রিয়। সুতরাং সংশ্লিষ্ট পুলিশ সদস্যদের আপাতত সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। কিছুদিন পরে তারা পুনর্বহাল হতে পারবে চাকরিতে। না হয়, চাকরি হারালেনই বা। কিন্তু যারা মারা গেলেন, যে অসহায় সন্তান তার বাবাকে হারালো, যে নিঃস্ব স্ত্রী হলো স্বামীহারা, আর বৃদ্ধ যে-পিতা চিরতরে হারালো তার সন্তানকে তাদের কি ক্ষতিপূরণ দেয়া হবে, আর কে-ই বা দিবে তা? রাষ্ট্রপরিচালকগণ কি তা ভাববেন না?

এর অনেক পরে, গণআন্দোলনের মুখে সামরিক শাসনের পিছু হটার পর, নির্বাচিত একটি সরকারের সময় গঠিত হলো র‌্যাব এবং মানুষ মারা শুরু হলো তথাকথিত 'ক্রসফায়ার' নামক কায়দায়। আশ্চর্যের বিষয় এই যে নির্বাচিত একটি সরকার আমার সেই কথিত প্রাক্তন সেনা সদস্যের আফসোসের কারণ দূরীভূত করে বে-ঘোরে মানুষ মারতেই থাকলো। এবারের নির্বাচিত সরকারও তাদের প্রতিশ্রুতি পূরণের জন্য এই নির্বিচার হত্যা বন্ধের লক্ষ্যে কোনো কার্যকর ব্যবস্থা এখনও নিল না। কি দুর্ভাগ্য আমাদের! আসলে 'ক্রসফায়ার' শব্দটি গণমনে এখন কি দ্যোতনা তৈরি একটি ছোট্ট ঘটনা দিয়ে তা বুঝাবার চেষ্টা করছি। ঢাকার ব্যস্ত বাণিজ্যিক এলাকা কাওরান বাজারে এক পকেটমার ধরা পড়েছিল বছর তিনেক আগে।

লোকেরা তাকে যখন মারধোর করছিল তখন এক পুলিশ সার্জেন্ট এসে সেখানে উপস্থিত। তখন তো তার হাতেই চলে যাবে অপরাধী। হলোও তাই। কিন্তু উপস্থিত জনতা অপরাধীর শাস্তি চায়। তাই তারা পুলিশের সার্জেন্টের কাছে জোর দাবি তুললো, "স্যার, হারামজাদাকো ক্রসফায়ারে দিয়ে দেন।" তাহলেই বুঝুন অবস্থা! র‌্যাব, পুলিশ, কিংবা ক্ষমতাসীনরা 'ক্রসফায়ার' বলে যে-সব ব্যাখ্যা দেন, তার কোনো কিছুই এদেশি মানুষ বিশ্বাস করে না। তারা পরিস্কার বোঝেন যে কাউকে গুলি করে মেরে ফেলার নামই ক্রসফায়ার। ঐ সত্যটি ঢাকবার জন্য বিশেষ বিশেষ বাহিনীগুলো যতই টালবাহানা করুক না- কেন, বিনা বিচারে মানুষকে গুলি করে মেরে ফেলার এই 'বিশেষ' অধিকার এবং 'দায়িত্ব' প্রথম কয়েক বছর র‌্যাব নামক নতুন তৈরি করা বিশেষ একটি বাহিনীর হাতেই ছিল। এর ফলে অপরাধ দমন কতখানি সম্ভব হয়েছে সে তো সবাই-ই দেখতে পাচ্ছেন, তবে বিনা বিচারে মানুষ হত্যার যে অপরাধ ও ধিক্কার তা শুধু ঐ বাহিনীই নয় গণমানুষের নির্বাচিত সরকারগুলোকেও নিতে হয়েছে ও হচ্ছে।

এরপরেই আসে পুলিশের কথা। র‌্যাব নামক ঐ ফ্র্যাঙ্কেনস্টাইনটি সশস্ত্র বাহিনীর সব ক'টি শাখা ও পুলিশের সদস্যদের নিয়ে গঠিত হলেও, পুলিশ সেখানে কিছুটা কোনঠাসা মনে করে নিজেদেরকে। তাছাড়া, আইন-শৃক্সক্ষলা নিয়ন্ত্রণ ঐতিহ্যিকভাবে পুলিশের দায়িত্বে ন্যস্ত। নতুন এই বাহিনী তাতে ভাগ বসাতে এলে পুশিলের মধ্যে ঈর্ষার সঞ্চার হওয়াও তো স্বাভাবিক। তাছাড়া, বে-হিসেবি মানুষ মারার অধিকার থাকলে অপরাধী, সম্ভাব্য অপরাধী এবং নিরীহ সাধারণ মানুষ যে ঐ সব বাহিনীকে অস্বভাবিক রকমের ভয় পায়, সবার সাথে সাথে পুলিশও তা দেখে।

এই ভয়ে অপরাধ কতটা নিয়ন্ত্রিত হয় তা অবশ্যই গবেষণার বিষয়; তবে ভয় দেখিয়ে বহু অন্যায় সুবিধা, উৎকোচ, এমনকি ডাকাতিও যে করা যায় তা তো সংবাদে আসে মাঝে-মধ্যেই। আর এই ভয়-দেখানো কিংবা বে-পরোয়া হত্যাকাণ্ডের যেহেতু তেমন কোনো জবাবদিহিতা নেই, তখন পুলিশ নিশ্চয়ই ভেবে থাকবে যে তাহলে তারাই বা কেন এটা করবে না; এবং ওসব সুবিধা আদায় করবে না! সুতরাং বছর কয়েক ধরে পুলিশও শুরু করেছে নির্বিচার হত্যা। প্রথমে একটু রয়ে-সয়ে, র‌্যাবের অনুকরণে তথাকথিত 'ক্রসফায়ারে', পরে নিয়ন্ত্রণকারি কর্তৃপক্ষের নীরব ও সরব সমর্থনে পথে-ঘাটে-বাড়ি-ঘরে যে-কোনো স্থান থেকে ধরে নিয়ে গিয়ে মুক্তিপণ আদায়।

তা দিতে ব্যর্থ হলে, কিংবা চাহিদামতো যোগান দিতে অসমর্থ হলে, নির্ঘাত মৃত্যু! এমনকি 'ক্রসফায়ারের' মিথ্যা প্রহসন সাজাবারও এখন আর দরকার মনে করে না তারা। সাম্প্রতিক সময়ের তিনটি মৃত্যু, প্রায় সবাই এখন যাকে হত্যাকা-ই বলছেন, তা এই ধরনের হয়েছে বলে গণমনে বিশ্বাস জন্মেছে।

তথাকথিত এই ক্রসফায়ারের উদ্ভব কেন হলো সে প্রশ্ন অবশ্যই মনে জাগা স্বাভাবিক। সামরিক শাসনের আওতায় গুপ্তহত্যা, গায়েব করা, কিংবা আর্জেন্টিনার পিনোচেটের মত উড়োজাহাজে করে নিয়ে মহাসাগরে নিক্ষেপ করার ঘটনা দেশে দেশেই ঘটেছে। আমাদের সামরিক শাসনামলে বিচ্ছিন্নভাবে দুয়েকটি ঘটনা ঘটলেও, সংগঠিতভাবে, আইনের আওতায় তৈরি করা বিশেষ বাহিনী দিয়ে হত্যাকাণ্ড নির্বাচিত সরকারের সময় হয়েছে এবং এখনও হচ্ছে। এর কারণ কি?


র‌্যযাব যখন গঠিত হয় তখন একটি নির্বাচিত সরকারের আওতায় হলেও দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার দায়িত্ব ন্যস্ত ছিল এমন একটি দুর্বৃত্ত চক্রের হাতে যারা দুর্নীতি, অদক্ষতা ও সন্ত্রাসের চরম পরাকাষ্ঠা হয়ে দাঁড়িয়েছিলো। আর এই ফ্রাঙ্কেস্টাইন যখন তৈরি হলো তখন এর জন্মদাতা সরকারও এর কাছে অসহায় হয়ে দাঁড়ায়। বর্তমান অবস্থাটি সম্ভবত সেরকম।

অপরাধী সন্দেহে, কিংবা সুপরিচিত অপরাধীকেও, বিনা বিচারে মেরে ফেলার অধিকার কোনো সভ্য সমাজে নেই, থাকতে পারে না। আমরা কি নিজেদেরকে তাহলে সভ্য বলে দাবি করতে পারি? কিংবা এই সমাজকে আখ্যা দিতে পারি সভ্য হিসেবে? মানুষকে বিনা বিচারে গুলি করে, কিংবা কয়েদখানায় নিয়ে পিটিয়ে ও শারীরিক নির্যাতন করে, মেরে ফেলার এই যে অধিকার কেন এটা দেয়া হলো?

প্রথমেই উল্লেখিত আমার সাথে সাক্ষাৎ হওয়া সেনা কর্মকর্তার কথা না হয় বাদই দিলাম। আমি শুনেছি দায়িত্ববান পুলিশ কর্মকর্তাদেরকে আক্রোশ প্রকাশ করতে; দেখেছি সুশিক্ষিত নাগরিককে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করতে। ক্ষোভের কারণ অপরাধীকে গ্রেপ্তার করলে সহজেই তারা জামিন পেয়ে যায়, এবং আবার শুরু করে তাদের সমাজবিরোধী কর্মকাণ্ড। আর কি? আর হচ্ছে… এতো যে অপরাধ হচ্ছে, হচ্ছে খুন-ডাকাতি-ধর্ষণ, সরকার কী করছে তা নিয়ন্ত্রণের জন্য? এই দুটো মূল অভিযোগের প্রথমটি যায় বিচার বিভাগের বিরুদ্ধে আর দ্বিতীয়টি পুলিশের বিরুদ্ধে। বিচার বিভাগের লোকজনদের সাথে আলাপ করে দেখেছি, পুলিশ যেমন তাদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে, তারা তার চেয়ে বেশি না-হলেও, অন্তত একই পরিমাণ ক্ষোভ প্রকাশ করে পুলিশের বিরুদ্ধে। তাঁরা বলেন যে, বহুল আলোচিত দুর্ধর্ষ অপরাধীকেও তো আইনের আওতায়ই বিচার করতে হবে। সেখানে পুলিশ সাধারণত যে অভিযোগ দায়ের করে তা এতই দুর্বল, কিংবা উপস্থাপিত সাক্ষ্য-প্রমাণ এতই অপ্রতুল, যে আসামীদেরকে জামিন অথবা খালাস দেয়া ছাড়া তাঁদের কোনো উপায়-ই থাকে না।

আর পুলিশের বিরুদ্ধে অপরাধ দমন বা নিয়ন্ত্রণে অপারগতার অভিযোগের বিষয়ে তাদের কি বক্তব্য তা-ও শোনা দরকার। দায়িত্বশীল পুলিশ কর্মকর্তাদের সাথে আলাপ করেছি এ বিষয়ে বিভিন্ন সময়ে। তাঁদের ব্যাখ্যাও গুরুত্ব সহকারে বিবেচনার দাবি রাখে। জনসংখ্যার তুলনায় পুলিশ সদস্যদের সংখ্যা অনেক কম হওয়া, দ্রুত গতিতে চলাচলের জন্য যথেষ্ট সংখ্যক যানবাহনের অভাব, পুরনো, সেকেলে আগ্নেয়াস্ত্র এবং পুলিশ সদস্যদের যথাযথ প্রশিক্ষণের অভাব। আরেকটি বিষয় খুবই ভয়াবহ। সেটি হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের দুর্নীতি ও রাজনৈতিকভাবে পুলিশের ব্যবহার। অদক্ষতার শুরু আসলে প্রথম থেকেই। সম্মানজনক কিছু ব্যতিক্রমের কথা বাদ দিলে, দুর্নীতি সর্বগ্রাসী বলতেই হবে।

চাকরি পেতে এবং ভালো ভালো জায়গায় পদস্থ হতে যে পুলিশ সদস্যকে লাখ লাখ টাকা ঘুষ দিতে হয় সে তো সেই টাকা এবং তার অতিরিক্ত কিছু তুলতে সব সময়ই সচেষ্ট থাকবে। সে তা তুলবে কোত্থেকে? অপরাধীসহ যাঁরাই তাদের কাছে যাবে তাদের কাছ থেকে। যারা কাছে যাবে না তাদের কাছ থেকেও অবশ্যই, যদি তা কোনোভাবে করা সম্ভব হয়। আর ঘুষের বিনিময়ে যে লোককে পুলিশে নেয়া হলো সে তো শুরুই করলো দুর্নীতি আর অদক্ষতা নিয়ে। তাহলে? ঢাকায় অপরাধ জগত মারাত্মক। কিন্তু একথা তো মানুষের মুখে মুখে প্রচলিত যে ঢাকার বিশেষ বিশেষ জায়গায় পদস্থ হতে হলে অনেক টাকা ঘুষ দিতে হয়। এই ঘুষের টাকা ঐ পুলিশ কর্মকর্তাগণ কিভাবে তুলবেন? তাদেরকে তখন অন্যায়ের সাথে আপোষ করতেই হয়। আর অন্যায়ের পিছল পথ বেয়ে গড়ানো একবার শুরু হলে, তা যে কোথায় গিয়ে থামবে তা কেউ-ই বলতে পারে না।

অভিযোগ আছে ওপরওয়ালাদের নজরানা দেয়ারও। এসব কারণেই তাদেরকে হতে হয় দুর্নীতিপরায়ণ, অতএব অদক্ষও। আর অনিয়ন্ত্রিত অপরাধ স্বাভাবিক কারণেই বে-পরোয়া হয়ে ওঠে। পুলিশেরও। পেশাদার অপরাধীরাও। আর তার পুরো ধাক্কাটাই জান-মাল হারিয়ে সহ্য করতে হয় নাগরিক সাধারণের। বিচার বিভাগের ব্যাপারে যে কথা বলা হয়েছে, তা একটি দিক। তাছাড়া, পুলিশের বিষয়ে প্রযোজ্য এই সমস্যাগুলো সেখানেও আছে। সাধারণ মানুষের দুর্বিষহ এই জীবন থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য রাষ্ট্রচালকেরা কি করবেন তা ভাবা দরকার এখনই, অতি জরুরিভাবে।

বর্তমান তিনটি মৃত্যুর ব্যাপারে হাইকোর্ট অত্যন্ত সোচ্চার হয়েছে, গণমাধ্যম অতিশয় সক্রিয়। সুতরাং সংশ্লিষ্ট পুলিশ সদস্যদের আপাতত সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। কিছুদিন পরে তারা পুনর্বহাল হতে পারবে চাকরিতে। না হয়, চাকরি হারালেনই বা। কিন্তু যারা মারা গেলেন, যে অসহায় সন্তান তার বাবাকে হারালো, যে নিঃস্ব স্ত্রী হলো স্বামীহারা, আর বৃদ্ধ যে-পিতা চিরতরে হারালো তার সন্তানকে তাদের কি ক্ষতিপূরণ দেয়া হবে, আর কে-ই বা দিবে তা? রাষ্ট্রপরিচালকগণ কি তা ভাববেন না?

র‌্যাব ও পুলিশসহ বিনা-বিচারে মানুষ মারার ক্ষমতা কারো নেই। বছরের পর বছর তারা এটা করে যাচ্ছে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায়। জনগণের নির্বাচিত একটি সরকার ক্ষমতায় থাকার সময় এটি কেমন করে হতে পারে? সরকারকে অবিলম্বে নিশ্চিত করতে হবে এমন ঘটনা আর যেন না-ঘটে। আর যা ঘটেছে, নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে সেগুলোর অপরাধীদেরকে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় অবশ্যই শাস্তির বিধান করতে হবে। নতুবা এই পাপ থেকে দুর্ভাগা এ-জাতি মুক্তি পাবে না।