প্রতিবন্ধী ব্যক্তির ‘কল্যাণ’ নহে অধিকার বলতে হবে নিজেকেই

সাবরিনা সুলতানাসাবরিনা সুলতানা
Published : 3 April 2015, 04:53 PM
Updated : 3 April 2015, 04:53 PM

মাস কয়েক আগেই পালিত হল প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের আন্তর্জাতিক দিবস। আর ২ এপ্রিল পালিত হল বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবস। এ দিন দেখা যায় প্রতিবন্ধী মানুষদের সাফল্য ও স্বপ্ন নিয়ে পত্রিকার পাতায় পাতায় দিবসকেন্দ্রিক নানান খবরাখবর; অটিজমের সঙ্গে এগিয়ে যাওয়া অদম্য জীবনের গল্প; সাদাছড়ি, হুইল চেয়ার, ক্রাচ ইত্যাদি বিতরণের তথ্য। শোনা যাচ্ছে অল্প কিছু দিনের মাঝেই দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য ডিজিটাল বই দেওয়া হবে। দেখেশুনে মনে হতেই পারে যে, উন্নয়নের জোয়ার লেগেছে দেশে!

জোয়ার লেগেছে বৈকি। উড়িয়ে দেওয়া যায় না। জাতিসংঘের প্রতিবন্ধী ব্যক্তিবর্গের অধিকার সনদের (সিআরপিডি) আলোকে ২০০১এর কল্যাণ আইন সংশোধন হয়ে ২০১৩তে এল প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইন। সেই বিধি তৈরির কাজ সময়ের হাতে ছেড়ে দেওয়া ছাড়া গতি নেই সম্ভবত!

এবার নজর দেওয়া যাক ২০১০ সালের এপ্রিলে দিবসকেন্দ্রিক এক আয়োজনের দিকে। সে দিন স্বতন্ত্র প্রতিবন্ধী অধিদফতরের ঘোষণা হয়েছিল। এই ঘোষণার মাত্র অল্প কবছর পরেই আরেক এপ্রিলের– সেটি ২০১৪ সালের– দিবসকেন্দ্রিক আয়োজনে ঘটা করে এই অধিদফতরের ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন করা হল। একীভূত শিক্ষা ব্যবস্থা শিক্ষানীতিতে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে তারও অনেক আগে, ২০০৯ সালে। জনগণ, অভিভাবক এবং প্রতিবন্ধী মানুষেরাও তা জানতে পারছেন পত্রপত্রিকার মাধ্যমে। কিন্তু পালন বা বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে কেন যেন অনীহা। 'কিন্তু', 'কেন', 'কীভাবে', 'কোথায়' এই জাতীয় শব্দ নিয়ে আমরা অনেকেই হয়তো মাথা ঘামাই, কিন্তু মুখ ফুটে প্রকাশ করি না আদৌ।

|| দুই ||

আমরা ঈমানের তিন স্তরের কথা কম বেশি জানি– অন্তরের উপলব্ধি, মৌখিক স্বীকারোক্তি এবং সর্বশেষটি হল শারীরিক শক্তির প্রয়োগ। যতটুকু বুঝতে পেরেছি, আমাদের দেশের অ-প্রতিবন্ধী এবং প্রতিবন্ধী ব্যক্তিনির্বিশেষে সকল মানুষের অবস্থা এই তিন স্তরের কাছাকাছিও যায় না।

অন্তরের উপলব্ধির অভাব। জেনেবুঝেও বিশ্বাস-অবিশ্বাসের দোলাচলে থমকে থাকা। বিশ্বাসের জন্ম হলে এই চিন্তা অকপট স্বীকারোক্তিতে রূপান্তরিত হতে সময় নেওয়ার কথা নয়। এরপর একদিন মুখে বলতে বলতেই শক্তিপ্রয়োগের আত্মবিশ্বাস জন্মায় মনে। আর এভাবেই বাস্তবায়িত হয় উন্নয়নের স্বপ্নগুলো। কিন্তু আত্মবিশ্বাসই যদি না থাকে! যোগ্যতা নিয়ে সন্দেহ! কিন্তু যোগ্যতার অভাব কেন? ঘাটতি কোথায়?

বহু যুগ আগের ক্রীতদাসদের কথা মনে পড়ে যাচ্ছে। দীর্ঘদিন প্রভুর অধীনে থাকতে থাকতে বদ্ধমূল ধারণা জন্মে যেত তাদের মনের ভেতর– তাদের যেন নিজস্ব চিন্তা-চেতনা-স্বপ্ন বলে কিছু থাকতে নেই। ইচ্ছা নেই। অধিকার নেই। নিজে থেকে কিছুই করার নেই জীবনে। এক সময় তারা ভাবতে শুরু করত যে, প্রভুর অধীনতা থেকে বেরিয়ে নিজ পায়ে ভর করে চলতেই পারবে না কখনও। তারচে এই বেশ ভালো আছি! এক ধরনের পরনির্ভরশীলতা বলা যায়। এই পরনির্ভরশীলতার চরম পর্যায়ে গিয়ে তাদের মনেই হত না যে, স্বাধীনভাবেও বেঁচে থাকা যায়। নিজের সিদ্ধান্ত নিজে নেওয়া যায়। মানুষের মৌলিক প্রাপ্য অধিকারগুলো না পেতে পেতে এক পর্যায়ে সেটা অর্জন করে নেওয়ার 'সাহস' চরম ভুল বলে মনে করা শুরু করত তারা।

আমাদের দেশের প্রতিবন্ধী মানুষের শতকরা নিরানব্ববই ভাগই সম্ভবত ঠিক এই অবস্থার ভেতর দিয়ে যাচ্ছেন। হাতেগোনা অল্পসংখ্যক সমাজের বিভিন্ন বাধার সঙ্গে অসম্ভব এক প্রতিকূলতার মাঝে লড়াই করে নিজেদের যোগ্য প্রমাণের চেষ্টা করে চলেছেন, অবিরাম। আর বাকি বিভিন্ন ধরনের প্রতিবন্ধী মানুষেরা নিজেদের শারীরিক সীমাবদ্ধতা 'অক্ষমতা' ভেবে ভাগ্যকেই দোষারোপ করেন। বাবা, মা, পরিবার তথা সমাজ যেভাবে যা বলে, তাকেই নিয়তি ধরে চুপচাপ নিজের ভেতর গুটিয়ে নেন নিজেকে। সিদ্ধান্তহীনতায় ভোগেন নতুবা পরনির্ভরশীলতায় ভর করে জীবনধারণে অভ্যস্ত বা বাধ্য হন ওরা। এই অবস্থার জন্য আসলে কি তারা নিজেরা দায়ী? নাকি সমাজ ব্যবস্থা?

আমার মতে, পরিবার তথা সমাজের কাছ থেকে 'পারবে না' এই শুনে শুনেই বেড়ে ওঠা প্রতিবন্ধী মানুষেরা নিজেদের অযোগ্য ভাবতে বাধ্য হওয়ার জন্য সমাজ ব্যবস্থাকেই দায়ী করছেন। এই সমাজ ব্যবস্থার সব ধরনের নেতিবাচক ধ্যান-ধারণাই তাদের নিজেদের সক্ষমতা প্রমাণের জন্য সুযোগ প্রদান বা এর জন্য যথাযথ পরিবেশ তৈরিতে সবচেয়ে বেশি বাধা দেয়। প্রতিবন্ধী মানুষদের আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বের হয়ে আসার এবং নিজেদের অবস্থান পরিবর্তনের জন্য কাজ করার মতো করে তোলার গুরুদায়িত্ব কার বা কাদের ওপর বর্তাবে?

|| তিন ||

একটু ভিন্ন প্রসঙ্গে আসি। পালন করুক আর না করুক– অকপটে এই কথা সকলেই স্বীকার করবেন– যে সমাজের পুরুষরা বৌ পেটায় তারাও বলবেন, পুরুষতান্ত্রিক সমাজে নারীর জীবন পুরুষ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। নারী সংগঠনগুলো আশির দশক থেকে শুরু হওয়া আন্দোলন, নিজেদের সমঅধিকার প্রতিষ্ঠার তীব্র লড়াই একটা সময় গিয়ে পুরুষকে স্বীকার করতে বাধ্য করিয়েছে: পুরুষ নারীর জীবন নিয়ন্ত্রিত করেছে এতদিন। আমাদের দেশে নারীদের সত্যিকার অবস্থান পরিবর্তন হয়েছে ২০০১ সালের পর থেকে। প্রায় দুদশকের শক্তিশালী আন্দোলনের মাধ্যমে ধীরে ধীরে নারীর অবস্থান আজ সকল ক্ষেত্রেই শীর্ষে। তা রাজনৈতিক হোক অথবা ব্যবসা কী চাকরি ক্ষেত্রে, সর্বত্র আজ তাদের শক্তিশালী পদচারণা। নারীআন্দোলনের সবচেয়ে বড় সফলতা নারী অধিদফতর। যেখানে নারীর প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করে নিজেদের ক্ষমতায়নে কার্যকরী ভূমিকা রাখতে পেরেছেন তারা।

কিন্তু আমাদের দেশে রাষ্ট্রীয় বা নীতিনির্ধারণী বিভিন্ন পর্যায়ে প্রতিবন্ধী মানুষদের জীবনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় তাদের প্রতিনিধিত্বের কোনো চর্চা বা সংস্কৃতি এখনও সেভাবে শুরু হয়নি। সমস্যাটা সম্ভবত এখানেই যে, প্রতিবন্ধী মানুষেরা সাংগঠনিক ছোটখাট কার্যক্রমমূলক গণ্ডির বাইরে গিয়েও নীতিনির্ধারণী কমিটিগুলোতে প্রতিনিধিত্ব করতে পারেন অথবা পরিচালনা পর্ষদের গদিতে বসে সিদ্ধান্ত নেওয়ার যোগ্যতা রাখেন, এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ক্ষমতাসীন মহল আজও সন্দিহান। তাছাড়া প্রতিবন্ধী ব্যক্তির স্বাধীন সংগঠনগুলো (ডিপিও) সম্পর্কেও অনেকের ধারণা স্বচ্ছ নয়। কিছু ক্ষেত্রে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের প্রতিবন্ধী মানুষের যোগ্যতা নিয়েও সন্দেহ। যেমন, শ্রবণ-বাকপ্রতিবন্ধী মানুষ এবং দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী মানুষ প্রতিনিধিত্বের কতটুকু যোগ্য তা নিয়ে দ্বিধায় ভোগেন কেউ কেউ।

যার চোখের দৃষ্টি এবং মুখে ভাষা উচ্চারণের সক্ষমতাসহ শ্রবণশক্তি আছে তিনি যেমন যোগ্য, ঠিক তেমনি যিনি দেখতে পান না পৃথিবীর রূপালী আলো, শুনতে পারেন না শব্দরাশি, উচ্চারণ করে জানাতে পারেন না মনের ভাব, তিনিও অবশ্যই সমান যোগ্যতার প্রমাণ রাখতে পারেন, যদি তাদের সবার চাহিদার ভিন্নতা অনুযায়ী ব্যবস্থা থাকে সর্বত্র। সামান্য উদাহরণ দেওয়া যেতে পারে। প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের কারও কারও দরকার স্বাধীন চলাচলের জন্য সিঁড়ির ব্যবস্থা। আবার কারও কারও জন্য র‌্যাম্প, ব্রেইল বা টেকটাইল দিকনির্দেশনা, ইশারা ভাষা ইত্যাদি ব্যবস্থা জরুরি।

সব ধরনের প্রতিবন্ধী মানুষই একটু সুযোগ পেলে নিজেদের যোগ্য প্রমাণ করতে পারেন। সুযোগ চাওয়া তাদের অধিকার। কিন্তু আমাদের সমাজে চাহিদার ভিন্নতা অনুযায়ী প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীর জন্য ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়টি প্রাধান্য পায় না। তাই অধিকারবঞ্চিত হতে হতে এক সময় এসবে অভ্যস্ত হয়ে পড়েন প্রতিবন্ধী মানুষরা নিজেরাও।

সমাজ আজও ভাবতেই শিখেনি যে, তারাও পারেন। উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনা এবং সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার সক্ষমতা প্রতিবন্ধী মানুষের আছে এটা বিশ্বাসই করার চেষ্টা করি না আমরা কেউ কেউ। সম্ভবত প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস জেগে ওঠার পথ বন্ধ হয়ে যায় এভাবেই। তাই নয় কি?

প্রতিবন্ধী মানুষের অধিকার নিশ্চিতের বিষয়ে যেখানে কথা বলা হয় সেখানে কাদের প্রতিনিধিত্ব বেশি জরুরি এই প্রশ্ন খোদ আমরা প্রতিবন্ধী মানুষেরা নিজেরাই নিজেদের করি না। ভাবলেও স্বীকারও করতে চাই না। প্রতিবন্ধী মানুষের জীবন তাদের নিজেদের হাতে, অ-প্রতিবন্ধী মানুষের হাতে নয়। আমাদের জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপের সিদ্ধান্ত অ-প্রতিবন্ধী মানুষেরা যখন নিচ্ছে, তখন আমরা হয়তো কোনো এক মঞ্চে মাইক্রোফোনের সামনে। কিন্তু নিজেদের ভেতরে জমে থাকা অপমানবোধ, দিনের পর দিন সয়ে যাওয়া বৈষম্য বা বঞ্চনার ভয়াবহ প্রকটতা আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে দৃপ্ত কণ্ঠে প্রকাশ করতে সাহস করি না। পরাধীনতার অদৃশ্য শেকলে আবদ্ধ বন্দিদশা নিয়তি হিসেবে মেনে নিই।

প্রতিবন্ধী মানুষের জীবন ও তাদের উন্নয়নমূলক কার্যক্রম অ-প্রতিবন্ধী মানুষ দ্বারা শোষিত এবং নিয়ন্ত্রিত, এটা স্বীকার করতে আমাদের ভেতরে একরাশ দ্বিধা-কুণ্ঠা-ভয়; অধিকারের প্রশ্নে সঙ্কোচ। কিন্তু কেন?

|| চার ||

প্রতিবন্ধী মানুষের জীবনে সত্যিকারের পরিবর্তন আনতে পারে সিআরপিডির (Convention on the Rights of Person's with Disability) বাস্তবায়ন। তার আলোকে গড়ে ওঠা অধিকার ও সুরক্ষা আইন ২০১৩। কিন্তু একজন প্রতিবন্ধী মানুষ হিসেবে এই আইন সম্পর্কে কতটুকু জানি আমরা? আমাদের জানা দরকার অধিকার অর্জনের লড়াইয়ে দুর্দান্ত এক হাতিয়ার রয়েছে আমাদের হাতে। অধিকার আইনের সুরক্ষার দায়িত্ব সরকারের হাতে তুলে দিয়ে বসে থাকলেই আমাদের সুরক্ষা ও অধিকার নিশ্চিত হয়ে যাবে না। সুরক্ষা আইনের বিধি তৈরির প্রক্রিয়ায় গড়িমসি কেন বা আইনে উল্লিখিত জাতীয় নির্বাহী কমিটি, সমন্বয় কমিটি, জেলা কমিটি, উপজেলা কমিটি, সমাজসেবা কমিটি এই পাঁচ ধরনের কমিটিতে প্রতিবন্ধী মানুষের অন্তর্ভুক্তি বা তাদের উপস্থিতি চোখে পড়ার মতন নয় কেন তা আমাদের ভাবতে হবে।

দুঃখজনক হল, এ সব নিয়ে আমরা প্রশ্ন করি না। গত বছরের অটিজম দিবসে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশনকে প্রতিবন্ধী ব্যক্তির স্বতন্ত্র অধিদফতরে রূপান্তরের জন্য ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন করলেন। এক বছর পর আরেকটি অটিজম দিবস এল। ফলক উন্মোচনের পর এই এক বছরে ফাউন্ডেশন বিলুপ্তি এবং অধিদফতর গঠনের পদক্ষেপ সম্পর্কে অথবা অধিদফতর পরিচালনা পর্ষদে সংখ্যাগরিষ্ঠ প্রতিবন্ধী মানুষের উপস্থিতি নিশ্চিতে আমাদের সরবতা চোখে পড়ে না। স্বতন্ত্র এই অধিদফতরের নীতিনির্ধারণী কমিটি প্রতিবন্ধী মানুষের নেতৃত্বে পরিচালিত হওয়ার পরিবেশ তৈরিতে ভূমিকা রাখার চিন্তা করার আগে এই ভাবনা গর্হিত কাজ মনে করি। গণপরিবহনে সংরক্ষিত আসন অথবা বিভিন্ন ক্ষেত্রে কোটা পেয়ে আমরা খুশি হয়ে যাই। সেখানে প্রবেশ ব্যবস্থা নিয়ে মাথাব্যথা লালন করার আগে স্বার্থপরের মতন পিছিয়ে যাই। আমাদের এই পিছিয়ে থাকা সমাজ আমাদের 'অক্ষমতা' মনে করে।

শিশু না কাঁদলে মা খেতে দেয় না। চিৎকার করে জানান দিতে হয় তাকে তার চাহিদার কথা। প্রতিবন্ধী মানুষদেরও নিজেদের অধিকারের বিষয়ে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সোচ্চার হতে হবে। নতুবা অধিকার অর্জনের জন্য কথা বলতে না পারার সঙ্কোচই আমাদের 'দুর্বলতা' ও 'অক্ষমতা' বলে প্রতিভাত হবে। সমাজের প্রতিবন্ধকতাগুলো আমাদের 'প্রতিবন্ধী' করে রেখেছে। এর সম্মুখীন হওয়া আমাদের অক্ষমতা নয়, অবস্থা মাত্র। কিন্তু এই অবস্থা নিয়েই সমাজের সবার মতো বসবাস করার সক্ষমতা আমাদের আছে তা আমাদের স্বীকার করতে হবে, জানান দিতে হবে। যদি সোচ্চার না হই, চলার পথ বাধামুক্ত করা যাবে না। এ জন্যেই আমাদের অধিকার অর্জন ও প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে সমাজের সকলের অর্থাৎ প্রতিবন্ধী মানুষ এবং অ-প্রতিবন্ধী ব্যক্তির সমন্বয়ে একত্রে কাজ করার প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম।

সরকারের পাশাপাশি কাজ করতে হবে সবাইকে, নিজ নিজ জায়গা থেকে। আগামী প্রজন্মের জন্য অবস্থার পরিবর্তনের শুরু এখান থেকেই হওয়া দরকার। সেখানে সবার আগে প্রয়োজন সবার মানসিকতার পরিবর্তন ও আত্মবিশ্বাসী হয়ে ওঠা।

তবেই আসবে পরিবর্তন। পরিবর্তন আসছে এবং পরিবর্তন হবেই।

সাবরিনা সুলতানা: সভাপতি, বি-স্ক্যান।