মাননীয় আইনমন্ত্রী, আপনি ভুল বলছেন

এম সানজীব হোসেন
Published : 1 June 2014, 09:34 AM
Updated : 1 June 2014, 09:34 AM

সম্প্রতি বাংলাদেশ সরকারের আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী এডভোকেট আনিসুল হক আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে 'সংগঠন' হিসেবে জামায়াতে ইসলামীকে বিচার করার প্রসঙ্গে কিছু মন্তব্য করেছেন যা বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রচারিত হয়েছে। কী বলেছেন আমাদের মাননীয় মন্ত্রী?

৩০ মে, ২০১৪ টেলিভিশনে প্রচারিত তাঁর বক্তব্য হুবহু তুলে দিচ্ছি–

"যেই ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইমস (ট্রাইব্যুনাল) অ্যাক্ট যেটা আছে ১৯৭৩ এবং যেটা সংশোধন করা হয়েছে, সেই আইনের মধ্যে কিন্তু এ রকম কোনো রাজনৈতিক দলকে বিচার করা এবং তাকে শাস্তি দেওয়ার কোনো বিধান নাই। […] তদন্ত রিপোর্ট একটা আছে, সঠিক, কিন্তু এই পর্যায়ে অন্যান্য পারিপার্শ্বিক দিকগুলো বিবেচনা করে আমাকে এগিয়ে যেতে হবে। […] এই সংগঠনের যারা হর্তাকর্তা ছিলেন যারা এই মানবতাবিরোধী অপরাধ এবং যুদ্ধাপরাধ সংঘটিত করেছেন তাদেরকে কিন্তু অলরেডি বিচারের আওতায় আনা হয়েছে। সেই ক্ষেত্রে দোবারা, দ্বিতীয়বারের মতন এদেরকে আবার একটা শাস্তি দিলে এই যে আগে যে শাস্তি দেওয়া হয়েছে তার সাথে কিন্তু এটা সাংঘর্ষিক হবে কিনা সেটাও আমাদেরকে বিবেচনা করতে হবে।" [i]

পরবর্তীতে ৩১ মে, ২০১৪ মাননীয় মন্ত্রী আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ ঢাকা বারের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে বলেন–

"[…] ২০ ধারায় যেই শাস্তির কথা বলা আছে সেখানে সংগঠনকে শাস্তি দেওয়ার কোনো ধারা নাই। কোনো উপায় নাই।" [ii]

মুক্তিযুদ্ধ ও ১৯৭১ সালে সংঘটিত আন্তর্জাতিক অপরাধ বিচারের দাবিতে আন্দোলনরত বিভিন্ন সংগঠন আইনমন্ত্রীর এইসব বক্তব্যের প্রতিবাদ করেছে। [iii] প্রতিবাদের ঝড় বয়ে যাওয়ার পর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের সর্বশেষ রিপোর্টে (৩১ মে, ২০১৪) লক্ষ্য করা যায় যে, এডভোকেট আনিসুল হক তাঁর আগের বক্তব্য থেকে কিছুটা সরে এসেছেন। আইনে সংগঠনকে 'বিচার' করার বিধান আছে কী নেই সে সম্পর্কে এবার তিনি কোনো মন্তব্য না করে জানান যে, আন্তর্জাতিক অপরাধ বিচার সংক্রান্ত আইনে সংগঠনকে সাজা দেওয়ার সুনির্দিষ্ট বিধান না থাকার কারণে, আইন সংশোধন করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। [iv]

তিনি বলেন–

"সংগঠনকে কী রকম সাজা দেওয়া যাবে, কী রকম সাজা হবে তা এখানে পরিস্কার কিছু নেই।" [v]

মাননীয় মন্ত্রীর কাছে যখন জানতে চাওয়া হয় আইনটিকে সংশোধন করার বিল সংসদে কবে নাগাদ উত্থাপন করা হবে, তিনি বলেন–

"এটাই মূল প্রশ্ন। এ কথাটাই আমি বলতে চেয়েছিলাম– আইনে সংশোধনী আনার বিষয়ে আমার মন্ত্রণালয়কে ইতোমধ্যে [বৃহস্পতিবার] ইন্সট্রাকশন দিয়েছি। এখানে যে পরিবর্তনটা দরকার সে পরিবর্তনটা বিচারকাজ শুরু হওয়ার আগেই করা দরকার।" [vi]

আজকের লেখার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে আইনমন্ত্রীর বক্তব্য আইনের চোখে কতটুকু যথার্থ তা বিশ্লেষণ করা। প্রথমেই এডভোকেট আনিসুল হকের একটি ছোট ভুল ধরিয়ে দিই। যে আইনের মাধ্যমে বাংলাদেশের দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়েছে এবং পরিচালনা করা হচ্ছে, সেই আইনকে মাননীয় মন্ত্রী বলছেন 'ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইমস (ট্রাইব্যুনাল) অ্যাক্ট'। সঠিক নামটি হচ্ছে 'ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইমস (ট্রাইব্যুনালস) অ্যাক্ট, ১৯৭৩'।

খেয়াল করেছি, কেউ কেউ ভুলবশত 'ট্রাইব্যুনালস' এর স্থানে 'ট্রাইব্যুনাল' বলে থাকেন। আইনটি পড়েননি বা আইনটি সম্পর্কে পর্যাপ্ত ধারণা রাখেন না এমন মানুষ এই ভুল করতেই পারেন। কিন্তু ভুলটি যখন স্বয়ং আমাদের দেশের মাননীয় আইনমন্ত্রী করে ফেলেন তখন চিন্তিত হওয়া ছাড়া উপায় থাকে না।

শুধুমাত্র আইনের নাম সংক্রান্ত বিষয়ে যদি আইনমন্ত্রীর ভ্রান্ত ধারণা সীমাবদ্ধ থাকত, তাহলেও মেনে নেওয়া যেত। তবে দুঃখজনক হলেও বর্তমান বাস্তবতা ভিন্ন। নিশ্চিতভাবেই বলা যায়, বর্তমান আইনমন্ত্রী আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনালস) আইন, ১৯৭৩ এর বিভিন্ন বিধান ও তার প্রয়োগ সম্পর্কে ভ্রান্ত ধারণা পোষণ করেন।

আইনমন্ত্রীর মত অনুযায়ী, আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনালস) আইন, ১৯৭৩-এ "কোনো রাজনৈতিক দলের বিচার করা এবং তাকে শাস্তি দেওয়ার কোন বিধান নেই।" [vii]

এমনকি ২০১৩ সালে আইনটির ৩ (১) ধারা সংশোধন করার পরও বিচার করা এবং শাস্তি দেওয়া সম্ভব নয়। মাননীয় মন্ত্রীর মন্তব্যের ফলে দুটি প্রশ্ন উত্থাপিত হয়েছে–

১. আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনালস) আইন, ১৯৭৩-এ জামায়াতে ইসলামীর মতো রাজনৈতিক দলের বিচার করার বিধান আছে কিনা;

২. বিচার করা গেলেও শাস্তি দেওয়ার বিধান আছে কিনা।

প্রথম প্রশ্নের উত্তর পেতে হলে আমাদের ৩ (১) ধারায় যা বলা আছে তার উপর মনোনিবেশ করতে হবে। আইনের ৩ (১) ধারা ২০১৩ সালে সংশোধন করা হয়। পাঠকদের সুবিধার্থে সংশোধিত ৩ (১) ধারাটি হুবহু তুলে দেওয়া হল–

A Tribunal shall have the power to try and punish any individual or group of individuals, or organisation, or any member of any armed, defence or auxiliary forces, irrespective of his nationality, who commits or has committed, in the territory of Bangladesh, whether before or after the commencement of this Act, any of the crimes mentioned in sub-section (2). [viii]

পরিস্কারভাবেই দেখা যাচ্ছে or organisation শব্দগুলো ৩ (১) ধারায় উল্লেখ আছে। অর্থাৎ, জামায়াতে ইসলামীকে আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনালস) আইন, ১৯৭৩ এর অধীনে সংগঠন বা organisation হিসেবে বিচার করা সম্ভব।

তারপরও প্রশ্ন থেকে যায়। তবে কি বিচার করা গেলেও শাস্তি দেওয়ার বিধান আমাদের আইনে নেই? চলুন দেখে নিই শাস্তির বিধান সংক্রান্ত ২০ (২) ধারায় কী লেখা আছে–

Upon conviction of an accused person, the Tribunal shall award sentence of death or such other punishment proportionate to the gravity of the crime as appears to the Tribunal to be just and proper. [ix]

এই ধারায় person বলতে ব্যক্তি (natural person) এবং আইনগত সত্তা বা সংগঠন (legal person) বোঝানো হচ্ছে, যাদের কথা ৩ (১) ধারায় উল্লেখ করা আছে। ফলে ৩ (১) এবং ২০ (২) ধারাগুলো পর পর পড়লে যে অর্থ দাঁড়ায় তা হল, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল অবশ্যই organisation বা সংগঠনকে শাস্তি দিতে পারে।

আইন সম্পর্কে গভীর ধারণা রাখেন না এমন ব্যক্তিও বুঝতে সক্ষম হবেন যে সংগঠনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া যায় না। কিন্তু সেই একই ব্যক্তির বুঝতে অসুবিধা হওয়ার কথা নয় যে সংগঠনকে other punishment proportionate to the gravity of the crime প্রদান করতে ট্রাইব্যুনাল অবশ্যই পারবে। কারণ সেই বিধান ২০ (২) ধারায় স্পষ্টভাবে উল্লেখ আছে।

ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইমস স্ট্র্যাটিজি ফোরামের মতে–

"[…] সংগঠনের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য শাস্তির ধরন সঙ্গতভাবেই ব্যক্তিকে প্রদত্ত শাস্তির ধরণ থেকে স্বতন্ত্র হতে পারে, যা ট্রাইবুনালের বিজ্ঞ বিচারকবৃন্দ তাদের সুবিবেচনা প্রয়োগ করে চূড়ান্তভাবে নির্ধারণ করার যোগ্যতা রাখেন।" [x]

ফলে, বর্তমান আইনে শাস্তি প্রদানের এমন বিস্তৃত বিধান থাকার পরও সেই আইন সংশোধন করে সংগঠনকে সাজা দেওয়ার জন্য সুনির্দিষ্ট বিধান অন্তর্ভূক্ত করার সিদ্ধান্ত অনেকের কাছেই যুক্তিসঙ্গত মনে হচ্ছে না।

মাননীয় মন্ত্রী অবশ্য আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে জামায়াতে ইসলামীকে আপাতত বিচার না করার পেছনে আরও দুটো কারণ উল্লেখ করেছেন। তাঁর মতে, যেহেতু জামায়াতের নিবন্ধনের ব্যাপারে একটি মামলা ইতোমধ্যে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে চলমান আছে, আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনালস) আইন ১৯৭৩-এর অধীনে জামায়াতের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনলে তা ওই মামলায় প্রভাব ফেলবে।

এডভোকেট আনিসুল হক সম্ভবত multiplicity of proceedings/suits-এর কথা ভেবে ধারণা করেছেন যে, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে জামায়াতের বিরুদ্ধে মামলা হলে সেই মামলা সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের মামলার উপর প্রভাব ফেলবে। এ ক্ষেত্রেও তাঁর ধারণা ভুল বলেই পরিগণিত হবে, কারণ multiplicity of proceedings/suits ঘটে তখনই, যখন একই বিষয়ে দুটি মামলা দায়ের করা হয়।

সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে জামায়াতের বিরুদ্ধে যে মামলা চলছে তা হচ্ছে দলটির নিবন্ধন সংক্রান্ত। অন্যদিকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল যদি সংগঠন হিসেবে জামায়াতের বিচার করত, তাহলে বিচার্য বিষয় হত ১৯৭১ সালে সংগঠন হিসেবে জামায়াতের সংঘটিত আন্তর্জাতিক অপরাধ। ফলে দুটি মামলার একটিও একে অপরকে প্রভাবিত করার সম্ভাবনা বা সুযোগ নেই। এডভোকেট আনিসুল হকের মতো একজন পণ্ডিত আইনজীবীর কাছে তো এসব বিষয় অজানা থাকার কথা নয়।

মাননীয় আইনমন্ত্রী বাংলাদেশের অন্যান্য আইনের উদাহরণ টেনে জানিয়েছেন যে, "যদি কোনো সংগঠন, প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানি অপরাধ করে, তবে ওই সংগঠন বা প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বা নিয়ন্ত্রককে দায়দায়িত্ব নিতে হবে এবং দায়ী কর্মকর্তাদের শাস্তি দেওয়া হবে। [xi]

এ কারণেই তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন–

"এই সংগঠনের যারা হর্তাকর্তা ছিলেন যারা এই মানবতাবিরোধী অপরাধ এবং যুদ্ধাপরাধ সংঘটিত করেছেন তাদেরকে কিন্তু অলরেডি বিচারের আওতায় আনা হয়েছে। সে ক্ষেত্রে দোবারা, দ্বিতীয়বারের মতন এদেরকে আবার একটা শাস্তি দিলে এই যে আগে যে শাস্তি দেওয়া হয়েছে তার সাথে কিন্তু এটা সাংঘর্ষিক হবে কিনা সেটাও আমাদেরকে বিবেচনা করতে হবে।" [xii]

এডভোকেট আনিসুল হক ভুলে যাচ্ছেন যে, আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনালস) আইন, ১৯৭৩ একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ আইন। উদাহরণস্বরূপ, আইনের ২৩ ধারা উল্লেখ করা যেতে পারে। এই ধারায় বলা আছে যে বাংলাদেশের Criminal Procedure Code, 1898 এবং Evidence Act, 1872-এর বিধি-বিধান ট্রাইব্যুনালের কোনো কার্যক্রমে প্রযোজ্য হবে না। [xiii]

ফলে আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনালস) আইন, ১৯৭৩-এর সঙ্গে বাংলাদেশের অন্যান্য আইনের এমন সরল তুলনা চলে না।

১৯৭৩ সালের আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনালস) বিল সংক্রান্ত সংসদীয় বিতর্ক পড়লে জানা যায় যে, ন্যুরেমবার্গ চার্টারের [xiv] বিধান আমাদের আইন তৈরির প্রক্রিয়া প্রভাবিত করেছিল এবং আইনের ভেতর কিছু জায়গায় স্থান পেয়েছিল। মাননীয় আইনমন্ত্রী হয়তো জানেন না যে, বিখ্যাত ন্যুরেমবার্গ ট্রায়ালেও শুধুমাত্র ব্যক্তি নয়, সংগঠনেরও বিচার হয়েছিল।

ফলে ইন্টারন্যাশনাল মিলিটারি ট্রাইব্যুনাল (আইএমটি) বিভিন্ন ব্যক্তিদের শাস্তি প্রদানের পাশাপাশি নাৎসি পার্টির leadership corps, Die Sicherheitsdienst des Reichsfuehrer SS (SD), Die Schutzstaffeln Der Nationalsocialistischen Deutschen Arbeiterpartei (SS)-কেও শাস্তিস্বরূপ criminal organisation হিসেবে ঘোষণা করেছিল। [xv]

যেহেতু আমাদের বর্তমান আইনে ২০ (২) ধারায় শাস্তি প্রদানের বিস্তৃত বিধান রয়েছে, প্রমাণ-সাপেক্ষে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল জামায়াতে ইসলামীকে একটি criminal organisation হিসেবে ঘোষণা করতে পারে। এমনটি করলে তা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে কোনো ব্যক্তির বিচারপ্রক্রিয়ার সঙ্গে সাংঘর্ষিক হওয়ার সুযোগ নেই। এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন যে, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ইতোমধ্যেই তার কয়েকটি রায়ে জামায়াতে ইসলামীকে একটি criminal organisation হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। [xvi]

তাহলে দেখা যাচ্ছে যে, মাননীয় আইনমন্ত্রী এডভোকেট আনিসুল হক যে আইনি ব্যাখ্যা দিয়েছেন তা সঠিক নয়। আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনালস) আইন, ১৯৭৩-এর অধীনে জামায়াতে ইসলামীকে সংগঠন হিসেবে বিচার করা এখনই সম্ভব। আইন সংশোধনের কোনো প্রয়োজন নেই।

একটি সম্পূর্ণ ভিন্ন বিষয়ে আলোকপাত করে আজকের লেখা শেষ করছি। এডভোকেট আনিসুল হক, বিখ্যাত আইনজীবী প্রয়াত সিরাজুল হকের সন্তান। এডভোকেট সিরাজুল হকের মতো মানুষরাই আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনালস) আইনের জন্ম দিয়েছিলেন, ১৯৭৩ সালে। সেই সময়কার সংসদীয় বিতর্ক পড়ে আমরা তা জানতে পেরেছি। সিরাজুল হকের ইংরেজি ভাষায় দেওয়া ভাষণ আমাকে অনুপ্রাণিত করেছে।

অথচ তাঁরই সন্তান এডভোকেট আনিসুল হক আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটরের পদ প্রত্যাখ্যান করেছিলেন, তাঁর মা তা চাননি বলে! [xvii] আশ্চর্য হই, যখন জানতে পারি, এডভোকেট আনিসুল হক রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এস তাহের আহমেদ হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াতপন্থী আসামী ড. মিয়া মো. মহিউদ্দিনের সিনিয়র আইনজীবী ছিলেন! [xviii]

মাননীয় আইনমন্ত্রী, আপনার আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনালস) আইন, ১৯৭৩ সম্পর্কে সঠিক ধারণা নেই। কিন্তু গল্পের শেষ কি আসলে সেখানে? ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটরের পদ আপনি গ্রহণ করেননি বটে, তবে অর্থের বিনিময়ে আপনি একজন চিহ্নিত জামায়াতপন্থী ব্যক্তির পক্ষে মামলা লড়েছেন।

এই পরিস্থিতিতে আইনমন্ত্রী হিসেবে স্বাধীন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল সম্পর্কে মন্তব্য করার নৈতিক অধিকার আপনার আছে কি?

এম সানজীব হোসেন: পিএইচ-ডি গবেষক।

[i]

[লিঙ্কটিতে সর্বশেষ ৩১ মে, ২০১৪ প্রবেশ করা হয়েছিল]

[ii]

[লিঙ্কটিতে সর্বশেষ ৩১ মে, ২০১৪ প্রবেশ করা হয়েছিল]

[iii]

গণজাগরণ মঞ্চ, ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইমস স্ট্র্যাটিজি ফোরাম (আইসিএসএফ) ও একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি সুস্পষ্টভাবে আইনমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রতিবাদ করেছে।

একটি লিংক দেখুন–

'আইনমন্ত্রীর বক্তব্য প্রত্যাহার চায় গণজাগরণ মঞ্চ'

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম, ৩০ মে, ২০১৪

[লিঙ্কটিতে সর্বশেষ ৩১ মে, ২০১৪ প্রবেশ করা হয়েছিল]

[iv]

'জামায়াতের সঙ্গে সমঝোতার প্রশ্নই উঠে না: আইনমন্ত্রী'

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম, ৩১ মে, ২০১৪

[লিঙ্কটিতে সর্বশেষ ৩১ মে, ২০১৪ প্রবেশ করা হয়েছিল]

[v] দেখুন ফুটনোট ৪

[vi] দেখুন ফুটনোট ৪

[vii] দেখুন ফুটনোট ১

[viii]

[লিঙ্কটিতে সর্বশেষ ৩১ মে, ২০১৪ প্রবেশ করা হয়েছিল]

[ix]

[লিঙ্কটিতে সর্বশেষ ৩১ মে, ২০১৪ প্রবেশ করা হয়েছিল]

[x]

'আইনমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রত্যুত্তর: "আইনটি পূর্ণাঙ্গ, ট্রাইবুনালে সংগঠনের বিচারে কোনো বাধা নেই"'

ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইমস স্ট্র্যাটিজি ফোরাম, ৩০ মে, ২০১৪

[লিঙ্কটিতে সর্বশেষ ৩১ মে, ২০১৪ প্রবেশ করা হয়েছিল]

[xi] দেখুন ফুটনোট ১১

[xii] দেখুন ফুটনোট ১

[xiii]

[লিঙ্কটিতে সর্বশেষ ৩১ মে, ২০১৪ প্রবেশ করা হয়েছিল]

[xiv]

[লিঙ্কটিতে সর্বশেষ ৩১ মে, ২০১৪ প্রবেশ করা হয়েছিল]

[xv]

`Judgement: The Accused Organizations' The Avalon Project

[লিঙ্কটিতে সর্বশেষ ৩১ মে, ২০১৪ প্রবেশ করা হয়েছিল]

[xvi]

'Declare Jamaat-e-Islami (Bangladesh) a terrorist organisation'

International Crimes Strategy Forum, 7 January, 2014

[লিঙ্কটিতে সর্বশেষ ৩১ মে, ২০১৪ প্রবেশ করা হয়েছিল]

[xvii]

এই ভিডিওটির ২২ মিনিট ০৬ সেকেন্ড থেকে ২২ মিনিট ২৫ সেকেন্ড পর্যন্ত দেখুন–

[লিঙ্কটিতে সর্বশেষ ৩১ মে, ২০১৪ প্রবেশ করা হয়েছিল]

[xviii]

'ড. তাহের হত্যা মামলায় দুজনের মৃত্যুদণ্ড বহাল'

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম, ২১ এপ্রিল, ২০১৩

[লিঙ্কটিতে সর্বশেষ ৩১ মে, ২০১৪ প্রবেশ করা হয়েছিল]