বর্তমান প্রেক্ষাপট থেকে যদি দেখি বিএনপির উদ্ভট দাবি

হাসান মামুনহাসান মামুন
Published : 31 March 2014, 04:12 AM
Updated : 31 March 2014, 04:12 AM

তারেক রহমান ও বেগম খালেদা জিয়া মুক্তিযুদ্ধে জিয়াউর রহমানের ভূমিকা নিয়ে নতুন কী বলেছেন, সে আলোচনায় ঢুকে পড়তে মন সায় দিচ্ছে না। পুরনো কথা নতুন করে বলতে হবে যে! মানুষ বোধহয় নতুন কিছু শুনতে চায়। তবে জিয়াকে দেশের 'প্রথম রাষ্ট্রপতি' বলা নিয়ে দুটি প্রশ্ন মনের মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছে। এক. কেন তারা নতুন করে এমনতরো দাবি তুললেন? দুই. খোদ বিএনপি সমর্থকের কত অংশ এটিকে প্রয়োজনীয় ভাববে ও বিশ্বাস করবে?

বিএনপি তো 'স্বাধীনতার ঘোষক' হিসেবেও জিয়াকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারেনি দীর্ঘ চেষ্টা করে। মুক্তিযুদ্ধে জিয়ার যেটুকু ভূমিকা ছিল, সেটার মর্যাদা বরং নষ্ট করেছেন তারা। জিয়ার মৃত্যুর পরই এটি করা হয়েছে। তিনি নিজে এ বিষয়ে উৎসাহ দেখিয়েছেন বলে প্রমাণ নেই।

মুক্তিযুদ্ধে জিয়াউর রহমানের একটা ভূমিকা তো ছিলই। নইলে স্বাধীনতা পরবর্তীকালে বঙ্গবন্ধু সরকার তাকে পুরস্কৃত করবে কেন? সে সময়ে তিনি নাকি একাধিক পদোন্নতি পান। সেনাবাহিনীতে কোনো কোনো বীর মুক্তিযোদ্ধাকে নিয়েও 'পেইন' ছিল। জিয়া ছিলেন পেইনলেস। আওয়ামী লীগাররা আবার এ দিকটা মনে করতে চান না। জিয়াকে উড়িয়ে দিতে চান।

এসব দেখেশুনে ক্ষেপে গিয়েই কি লন্ডন থেকে তারেক রহমান নতুন বয়ান করলেন? তার সঙ্গে আবার সুর মেলালেন খালেদা জিয়া। এসব নিয়ে তো উচ্চ আদালতও করা হয়েছে। সেখানেও হেরেছেন তারা। এসব মোকদ্দমার বিষয় নয় অবশ্য। তারপরও ওই পথ ঘুরে এসেছি আমরা। বিএনপিকে এসব মানতে হবে।

তা নয়, তারা দাবি করে বসলেন– জিয়াই এদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি! এখন পারলে এটা প্রমাণ করুন। পারবেন তো না; শুধু শুধু নতুন করে তীব্রভাবে সমালোচিত হবেন প্রয়াত জিয়া। পঁচাত্তরের পর তার ভূমিকাও তুলে আনা হবে এ প্রসঙ্গে। একাত্তরে কোন পরিস্থিতিতে ঘোষণাটি তিনি দিয়েছিলেন, তাও আলোচিত হবে নতুন করে। কেউ কেউ বলবেন, মুক্তিযুদ্ধে জিয়া ছিলেন 'পাকিস্তানের চর'! এসব শুনতে কি ভালো লাগবে জিয়াভক্তদের? তার পুত্র ও স্ত্রীর?

বিএনপিতে যেসব মুক্তিযোদ্ধা নেতা রয়েছেন, তারাও বলেন না বা বলার সাহস রাখেন না যে, এসব বলে কী লাভ। 'মুক্তিযুদ্ধে অবদানের জন্য' খালেদা জিয়াকে সম্মাননা জানানোর অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে তাদের কেউ কেউ বরং এর তাৎপর্য ব্যাখ্যা করেন। খালেদা জিয়াও ওখানে কিছু কথা বলে বোঝাতে চেয়েছেন যে, তারও একটা ভূমিকা ছিল মুক্তিযুদ্ধে। ভূমিকা থাকলে তো ভালোই; কিন্তু না থাকলে জোর করে ইতিহাসে জায়গা করে নেওয়া যাবে না। সেটি টিকবে না দীর্ঘমেয়াদে। ভাবীকালের ইতিহাস-গবেষকরা নির্মোহ হয়ে অনেক সত্যই বের করে আনবেন। তখন হয়তো তর্ক-বিতর্কে লিপ্ত এখনকার লোকজন বেঁচে থাকবেন না।

সাদা চোখে একটা জিনিস দেখে অবশ্য ভালো লাগে যে, মুক্তিযুদ্ধে নিজেদের সংশ্লিষ্ট দেখাতে চাইছে বিএনপি। জামায়াতের সঙ্গে মিলে কিছুদিন আগেও তারা দেশে এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছিলেন যে, সেটাকে নিজেরাই বলছিলেন একটা 'যুদ্ধ'। তারা খেয়াল করেননি, যুদ্ধটা সরকার ছাড়িয়ে শান্তিপ্রিয় মানুষ ও দেশের ভবিষ্যতের বিরুদ্ধে চলে গিয়েছিল। শেষে জাতীয়, এমনকি আন্তর্জাতিক পর্যায় থেকে তাদের বলা হল জামায়াতের মতো দলের সঙ্গ ছাড়তে। বিএনপি অবশ্য বলছে, কার সঙ্গে থাকব, সেটা অন্যে কেন নির্ধারণ করে দেবে?

তা বটে। বিএনপিকেই নির্ধারণ করতে হবে, কার সঙ্গে থাকবেন তারা। মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে অব্যাহতভাবে বিতর্কে (আসলে কুতর্ক) লিপ্ত থাকবে কিনা দলটি, সেটাও তাদের নির্ধারণ করতে হবে। একদিকে মুক্তিযুদ্ধে নিজেদের স্থান দেখাতে চাইবেন আর অন্যদিকে জামায়াত ছাড়া চলতে পারবেন না, এটা হয় না।

মুক্তিযুদ্ধে কার কী ভূমিকা, তা নিয়ে নতুন করে বিতর্ক তোলাটা বিএনপির দিক থেকে উদ্দেশ্যমূলক বলেও অনেকে মনে করছেন। কী হতে পারে উদ্দেশ্য? ক্ষমতাসীনদের খোঁচানো? বিএনপি এ মুহূর্তে উল্লেখযোগ্য কিছু করতে পারছে না বলে কিছু একটা করা? কিন্তু দেশের মানুষ এটাকে কীভাবে নিচ্ছে, সেটি তারা ভেবে দেখবেন না? গোড়ার প্রশ্নটাই আবার করি– তার সমর্থকরা কীভাবে নিচ্ছেন?

আমাদের প্রধান দুই রাজনৈতিক দলেই গণতন্ত্রের বালাই নেই। থাকলে তাদের নেতৃত্ব নিয়ে গোপন ব্যালটে নির্বাচন হত; নীতি-আদর্শ নিয়েও বাহাস হত দলের মধ্যে। সেটি হলে বোধহয় বোঝা যেত– এই যে তারেক-খালেদা নতুন দাবি তুললেন, খোদ দলের কত শতাংশ তা সমর্থন করে? তাছাড়া এটা এ মুহূর্তে তোলার মতো কোনো বিষয় কিনা।

খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান এ সময়ে বরং বলতে পারতেন, মুক্তিযুদ্ধের একটা প্রধান লক্ষ্য ছিল দেশকে গণতান্ত্রিক ধারায় রেখে বিকশিত করা। তারা প্রশ্ন তুলতে পারতেন, দেশে গণতন্ত্র কি ঠিকমতো রয়েছে? সত্যিকারের জনপ্রতিনিধিত্বমূলক শাসন দেশে নেই, বিএনপির পক্ষে এটা বলাই যুক্তিযুক্ত হত। তাহলে বরং কিছুটা সমস্যায় পড়তেন ক্ষমতাসীনরা। তা না, জিয়াকে তারা প্রথম রাষ্ট্রপতি বানাবেন! অনলাইন পত্রিকায় মন্তব্য করতে গিয়ে মশকরা করে অনেকে এখন নিজ নিজ পিতাকে 'প্রথম রাষ্ট্রপতি' বলে দাবি করছেন।

'লাখো কণ্ঠে সোনার বাংলা' গেয়ে বাংলাদেশ বিশ্ব রেকর্ড করার পরপরই বিএনপি এমন বিতর্ক তুলল, সেটাও অনেকের নজর কাড়বে। সরকার নিজে এর আয়োজন করেছিল। এতে একটি দুর্বল ম্যান্ডেটের সরকারের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য থাকতে পারে বলেই হয়তো মনে করে বিএনপি। কিন্তু সেটার প্রতিক্রিয়ায় কি এভাবে কথা বলবে?

খালেদা জিয়া যে অনুষ্ঠানে তারেককে অনুসরণ করে বক্তব্য রেখেছেন, সেখানেও জাতীয় সঙ্গীত গাওয়া হয়েছে। বিএনপি কিন্তু বরাবরই তাদেরকে সঙ্গে নিয়ে চলেছে, যারা এ সঙ্গীত নিয়েও প্রশ্ন তোলে। এতে টেনে আনে সাম্প্রদায়িক ভেদবুদ্ধি। আর বিএনপি এদের সামনে দাঁড়িয়ে প্রশ্ন তোলে মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব নিয়ে। এটি করতে গিয়ে জিয়ার প্রতিও তারা সুবিচার করেননি। জিয়াকে নিজ স্বার্থে ব্যবহার করতে গিয়ে শেষ পর্যন্ত আর মেলাতে পারেননি তারা। এ থেকে শিক্ষাও নিচ্ছেন না। সমর্থকগোষ্ঠীর কাছে এজন্য অবশ্য জবাবদিহি করতে হচ্ছে না তাদের। এটা হল নেতৃত্বের যা খুশি বলার একটা উৎস।

মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস জানা-বোঝার ক্ষেত্রে কিন্তু একটা অগ্রগতি ঘটে গেছে এর মধ্যে। এটা বিবেচনায় নেওয়ার মনোভাবেরও দেখা মিলছে না বিএনপি নেতৃত্বে। জিয়াকে দেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি দাবি করার মধ্যে নতুন করে এর প্রতিফলন ঘটল। তারেক রহমান না হয় বলেছিলেন; বেগম জিয়া কেন তা সমর্থন করে বলতে গেলেন? দেশে থেকে আর ভারতে গিয়ে মুক্তিযুদ্ধ, এতে বিদেশিদের ভূমিকা ও তাদের স্বীকৃতি দেওয়া নিয়েও বললেন তিনি! এসব ক্ষেত্রে অন্তত তার উপদেষ্টাদের উচিত একটু সাহস করে নেত্রীকে বোঝানো যে, লোকে এখন জানে কোন পরিস্থিতিতে কীভাবে মুক্তিযুদ্ধটা পরিচালিত হয়েছে। বিদেশি, বিশেষত ভারতের সর্বাত্মক সহযোগিতা না থাকলে মুক্তিযুদ্ধের ভিন্ন পরিণতি হয়তো দেখতে হত আমাদের। তিনি নিজেও ক্যান্টনমেন্ট থেকে মুক্ত হয়ে ঘটনা পরম্পরায় দু'দুবার দেশটির প্রধানমন্ত্রী হতে পারতেন না।

ভারত অবশ্যই তার দৃষ্টিকোণ থেকে একাত্তরে আমাদের সহায়তা জুগিয়েছে। সব দেশই তা করে থাকে। এটা নিয়ে অভিযোগ করার তো কিছু নেই। বরং দেখতে হবে, এতে আমরা উপকৃত হয়েছি কিনা। অকৃতজ্ঞের মতো বক্তব্য দেওয়া কি ঠিক? আবার কৃতজ্ঞতাপাশে আবদ্ধ হয়ে দেশের স্বার্থ জলাঞ্জলি দেওয়াটাও ঠিক নয়। কোনো সরকার সেটি করে থাকলে তার বিরোধিতা অবশ্যই করতে হবে। আজ যারা বিরোধিতা করছেন, রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকাকালে তারা নিজেরা কী করেছিলেন– লোকে সেটাও খতিয়ে দেখতে চাইবে।

আমাদের মুশকিল হল, সমর্থকগোষ্ঠী নিজ নেতা-নেত্রীর অবস্থান খতিয়ে দেখতে চায় না। দু'হাত তুলে তারা খালি সমর্থন করেন আর নেত্রীর বিজয় দেখতে চান। মনে হচ্ছে, বিএনপি সমর্থকদের অধিকাংশই তারেক-খালেদার প্রথম রাষ্ট্রপতি সংক্রান্ত বক্তব্যটি সমর্থন করবে। যা কিছু প্রতিপক্ষকে বিরক্ত ও ক্ষুব্ধ করবে, এর পক্ষে দাঁড়াতে তারা যেন এক পায়ে দাঁড়ানো।

আওয়ামী লীগ সমর্থকদের বেলায়ও এ কথা কমবেশি খাটে। জিয়াকে যুক্তিহীনভাবে দোষারোপ করা হলেও তারা আপত্তি করেন না, বরং আনন্দ পান। চিন্তা করেন না, দেশে ২০ শতাংশ দলনিরপেক্ষ জনগোষ্ঠী বা 'সুইং ভোটার' থাকলেও তারা এটাকে কীভাবে নিচ্ছেন। এ অবস্থায় দলে দূরদৃষ্টিসম্পন্ন নেতৃত্ব থাকলে তারা হয়তো চিন্তা করতেন সমর্থনের ভিত্তি বিস্তৃত করার বিষয়ে।

ইতিহাস নিয়ে উদ্ভট দাবি করলে বিএনপির জনসমর্থনের ভিত্তি কি বাড়বে? দলনিরপেক্ষ জনগোষ্ঠীর কোনো একটা অংশ এটি বিশ্বাস করলে তো! তারা অতীত নিয়ে খুব একটা চিন্তা করছেন কী? এরা তো বাস করছেন বর্তমানে আর এখনকার চ্যালেঞ্জ নিয়ে। বর্তমান থেকে অতীতে ফিরে তাকালেও জিয়াকে তারা কিন্তু 'প্রথম রাষ্ট্রপতি' হিসেবে দেখবেন না। সত্যি সত্যি রাষ্ট্রপতি (আসলে সেনাশাসক) হিসেবে আবির্ভূত হওয়ার পর এদেশে জিয়ার ভূমিকা কী ছিল, সেখানেও কিন্তু আলো এসে পড়ছে। যেমন রাষ্ট্রীয়ভাবে সব অকল্যাণের শুরু '৭৫-এর ১৫ আগস্ট থেকে, এটাও আগের মতো করে আর মানা হচ্ছে না এখন। নির্মোহভাবে দেখার কাজটা কিন্তু শুরু হয়ে গেছে।

এ অবস্থায় কে কখন নেতা বা রাষ্ট্রপতি ছিলেন, তার চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিবেচিত হবে চেতনা বা আদর্শ কে কতটা ধারণ করেছেন, সেটি। কাজের দিকে দৃষ্টি যাবে বেশি করে। এই যে বিএনপি মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দেওয়ার কৃতিত্ব দাবি করছে ঘুরেফিরে– তাকে যদি আমরা বলি মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নের কথা, দলটি কি রাজি হবে? জামায়াতকে পরিত্যাগ করলেই কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বাস্তবায়ন হয়ে যাবে না। খোদ বিএনপিকে একটি গণতান্ত্রিক দল হতে হবে। ধর্মনিরপেক্ষ না হয়ে তো গণতান্ত্রিক হওয়া যাবে না। বিএনপির যে অতীত ও বিকাশের ধারা, এতে তার পক্ষে সেটি হওয়া সম্ভব বলে মনে হয় না। তার সমর্থকগোষ্ঠীর বড় অংশও মনে হয় না সে ধরনের রূপান্তর অনুমোদন করবে।

আওয়ামী লীগও কি পেরেছে তেমন দল হিসেবে আবির্ভূূত হতে? অত্যন্ত অন্যায়ভাবে রাষ্ট্রক্ষমতা হারানোর একুশ বছর পর গণতান্ত্রিকভাবে সেটি ফিরে পেয়েছিলেন তারা। এরপর আরও একবার পূর্ণমেয়াদে দেশ পরিচালনা করলেন। কিন্তু নিজেদের একাত্তরের উদার গণতান্ত্রিক ধারায় ফেরাতে পেরেছেন কী? সে লক্ষ্যে কোনো সংগ্রাম বা প্রচেষ্টা কি তার মধ্যে দেখতে পাচ্ছি?

প্রথম রাষ্ট্রপতি নিয়ে এমনতরো বিতর্কে যোগ দেব কেন? জানি তো, বঙ্গবন্ধুই ছিলেন সেটি। তার অনুপস্থিতিতে মুক্তিযুদ্ধ পরিচালিত হয়েছে মুজিবনগর সরকারের নেতৃত্বে। এর আগেই বিভিন্ন স্থানে, বিভিন্নভাবে শুরু হয়ে গেছে স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিরোধ। তারও ভিত্তি রচিত হয়েছিল শেখ মুজিবের নেতৃত্বে দীর্ঘ রাজনৈতিক সংগ্রামের মধ্য দিয়ে।

কিন্তু তারপর? স্বাধীনতা অর্জনের পর? মুুক্তিযুদ্ধের চেতনা অনুযায়ী পাকিস্তানের চেয়ে ভিন্ন তথা একটি গণতান্ত্রিক দেশ গড়ার পথে কি এগিয়েছি আমরা? নাকি গোড়া থেকেই এ প্রশ্নে বিচ্যুতি ছিল স্পষ্ট? তবু দেশটি যদি ভারতের মতো আগাগোড়া গণতান্ত্রিক ধারায় এগোত! মাঝে যদি জিয়া-এরশাদদের উত্থান না ঘটত? তাহলে কেমন হত বাংলাদেশ? চট করে অবশ্য বলা যায় না যে, খুব ভালো একটি দেশ পেতাম। গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত শাসকদেরও তো আমরা দেখেছি। সুশাসনেও তাদের মধ্যে পার্থক্য করা কঠিন। মুক্তিযুদ্ধের মূল অঙ্গীকার গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় তাদের কাউকেই দেখা যাচ্ছে না দৃঢ়চিত্ত।

অর্থনীতিতে অবশ্য এগিয়েছি আমরা। গর্ব করার মতো কিছু সূচক তুলে ধরতে পারি। এর পরবর্তী বিকাশ বাধামুক্ত করতেও একটা উদার গণতান্ত্রিক পরিবেশ চাই। সেটিই বোধহয় এখনকার সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। কে দেবেন ওটা?

হাসান মামুন: সাংবাদিক, কলামিস্ট।