পানির জন্য শক্তি, শক্তির জন্য পানি

জাহিদুল ইসলাম
Published : 22 March 2014, 09:31 AM
Updated : 22 March 2014, 09:31 AM

১.

প্রতিবারের মতো এ বছরও ২২ মার্চ সারাবিশ্বে পালিত হচ্ছে বিশ্ব পানি দিবস। এ দিবসের সূচনা ১৯৯২ সালে। সে বছর ব্রাজিলের রাজধানী রিও ডি জেনে-রিওতে জাতিসংঘের পরিবেশ ও উন্নয়ন বিষয়ক অধিবেশনে একটি বিশেষ দিনকে 'স্বাদু পানি দিবস' হিসেবে পালনের সুপারিশ করা হয়। পরের বছর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে সর্বসম্মতিক্রমে ১৯৯৩ সালের ২২ মার্চ প্রথম আন্তর্জাতিক পানি দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়।

এর ধারাবাহিকতায় প্রতি বছর স্বাদু পানির উপর এক একটি বিশেষ দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে দিবসটি পালন হয়ে আসছে। ইতোমধ্যে পালিত পানি দিবসগুলিতে স্থান পেয়েছে নারী ও পানি, তৃষ্ণার জন্য পানি, পানির প্রতুলতা, ভূগর্ভস্থ পানি, ভাটির অধিবাসীর জীবন, একুশ শতকের পানি, পানি ও স্বাস্থ্য, উন্নয়নের জন্য পানি, ভবিষ্যতের জন্য পানি, জীবনের জন্য পানি, পানি ও সংস্কৃতি, পানির অপ্রতুলতা, পয়ঃনিস্কাশন ব্যবস্থা, আন্তঃসীমান্ত পানি, পানির মান, শহরের জন্য পানি, পানি ও খাদ্যের নিশ্চয়তা ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

এর মধ্যে 'পানি ও জীবন' শিরোনামে একটি পানি দশক (১৯৯৫-২০০৫) পালিত হয়েছে এবং ২০১৩ সাল 'ইন্টারন্যাশনাল ইয়ার অব ওয়াটার কোঅপারেশন' বা পানি নিয়ে আন্তর্জাতিক সহযোগিতার বছর হিসেবে পালিত হয়েছে বিশ্বজুড়ে। পানি ও শক্তির একে অপরের উপর নির্ভরশীলতার (পানি-শক্তি যোগসূত্র) উপর গুরুত্ব আরোপ করে এবারের (২০১৪) বিশ্ব পানি দিবসের শ্লোগান 'পানি ও শক্তি'। এই প্রবন্ধে বৈশ্বিক ও বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে পানি ও শক্তির মধ্যকার নির্ভরশীলতা ব্যাখ্যা করার প্রয়াস থাকবে।

২.

পানি এবং শক্তি একে অপরের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত যাকে বলা যেতে পারে পানি-শক্তি যোগসূত্র (Water-Energy Nexus), যার মূল প্রতিপাদ্য হচ্ছে, শক্তি উৎপাদনে প্রয়োজন পর্যাপ্ত পানির। আর সে সঙ্গে বিশুদ্ধ পানি সবার কাছে পৌঁছে দেবার জন্য প্রয়োজন শক্তির। বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে পানি-শক্তি যোগসূত্র নিয়ে প্রথমে আলোচনা করা যাক। দেখা যাক কীভাবে শক্তি উৎপাদনে পানির ব্যবহার আবশ্যক।

শুরুতে বলে নেওয়া ভালো যে, এ লেখায় শক্তির একক হিসেবে মিলিয়ন ব্রিটিশ থার্মাল একক বা MBTU ব্যবহার করা হয়েছে। ধারণার সুবিধার্থে বলা যায়, ১ MBTU শক্তি দিয়ে ১০০ ওয়াটের একটি বাল্ব টানা ১২২ দিন জ্বালানো যাবে। লেখার কোথাও শক্তির একক ব্যবহৃত হলে তা ১ MBTU হিসেবে বিবেচিত হবে।

প্রথমেই আসা যাক জ্বালানি তেলের প্রসঙ্গে। ২০১১ এর উপাত্ত মতে, পৃথিবীর মোট শক্তির জোগানের সিংহভাগ (৩১.৫ শতাংশ) আসে জ্বালানি তেল থেকে [১]। তেলকূপ খননের কাজে ও উত্তোলিত অপরিশোধিত তেলের পরিশোধনে পানির ব্যাপক ব্যবহার রয়েছে। গবেষণালব্ধ তথ্যমতে, ১ একক তেল শক্তি উৎপাদনে ৪,৫৫০ থেকে ৯,১৬০ লিটার পানির প্রয়োজন [২, ৩, ৪] হয়।

পৃথিবীর মোট শক্তির জোগানের ২৮.৮ শতাংশ আসে কয়লা থেকে। কয়লা উৎপাদনেও প্রচুর পরিমাণ পানির প্রয়োজন। এই পানির ব্যবহার খনি থেকে কয়লা উত্তোলন থেকে শুরু করে এর পরিবহণ, সংরক্ষণ ও বিশোধন পর্যন্ত সব ক্ষেত্রেই। শুধু তাই নয়, খননকাজ শেষ হবার পর খনি এলাকার পুনরুদ্ধারেও পানির উল্লেখযোগ্য পরিমাণ ব্যবহার হয়েছে। ১ একক কয়লা শক্তি উৎপাদনে ১৫৫ থেকে ৬২০ লিটার পানির প্রয়োজন [২, ৩, ৪]।

কয়লার পরেই বিশ্বের শক্তি জোগানে তৃতীয় অবস্থানে আছে প্রাকৃতিক গ্যাস (২১.৩ শতাংশ)। গ্যাসকূপ খননের কাজে পানির ব্যবহার রয়েছে। এছাড়া গ্যাসের সঙ্গে বেশ উল্লেখযোগ্য পরিমাণে ভূগর্ভস্থ পানি ভূপৃষ্ঠে উঠে আসে। তবে গ্যাসকূপ থেকে উত্তোলিত অপরিশোধিত গ্যাসের পরিশোধনে পানির উল্লেখযোগ্য পরিমাণে ব্যবহার রয়েছে। সার্বিকভাবে ১ একক গ্যাস শক্তি উৎপাদনে প্রায় ১১ লিটার পানির প্রয়োজন যা কিনা কয়লার তুলনায় অনেক অংশেই কম [২, ৩, ৪]।

শক্তির উৎসে নতুন ও ব্যাপক বিতর্কিত সংযোজন নিঃসন্দেহে বায়ো-ফুয়েল (ইথানল বা বায়োডিজেল) যা কিনা বর্তমানে প্রায় ১০ শতাংশ শক্তির জোগান দিচ্ছে। ইথানল উৎপাদিত হয় মূলত জোয়ার, আখ ও সেলুলোজ জাতীয় উদ্ভিদ থেকে (যেমন ভুট্টা)। অন্যদিকে বায়োডিজেলের মূল উৎস হচ্ছে সয়াবিন, উদ্ভিদজাত তেল এবং গ্রিজ। ১ একক ইথানল উৎপাদনে ৯,৫৪০ থেকে ১,১০,১৫৫ লিটার পানি প্রয়োজন হয় এবং ১ একক বায়োডিজেল উৎপাদনে ৫৩,০০০ থেকে ২,৮৩,৯০০ লিটার পানির প্রয়োজন হয়।

পাঠক, উপরের সংখ্যাগুলোর দিকে একটু লক্ষ্য করলেই দেখতে পারবেন যে বায়ো-ফুয়েল আসলে পানিসম্পদের উপর ঠিক কতটা চাপ সৃষ্টি করছে। ইন্টারন্যাশনাল এনার্জি এজেন্সির হিসেব মতে, ২০৩০ নাগাদ যাতায়াত ক্ষেত্রে বায়ো-ফুয়েলের চাহিদা ৫ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে। বায়ো-ফুয়েলের এই বর্ধিত চাহিদা কৃষিক্ষেত্রে পানির চাহিদা আরও ২০ ভাগ বাড়িয়ে দিবে [৫]।

সর্বশেষে আসা যাক বিদ্যুৎশক্তি প্রসঙ্গে। বিদ্যুৎশক্তি উৎপাদনের মূল উৎসের মধ্যে রয়েছে জীবাশ্ম জ্বালানি (প্রাকৃতিক গ্যাস, তেল ও কয়লা) যার উৎপাদনে প্রয়োজনীয় পানির ব্যবহার ইতোমধ্যেই আলোচনা করা হয়েছে। তবে এই কাঁচামাল থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রক্রিয়াগুলোতেও পানির ব্যবহার রয়েছে; বিশেষত বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের বাষ্পীয় ইঞ্জিনে ও ইঞ্জিন শীতলীকরণে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ পানি ব্যবহৃত হয়। গড়ে জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে প্রতি একক বিদ্যুৎ শক্তি উৎপাদনে ৪,১৬০ থেকে ৮,৩৩০ লিটার পানির প্রয়োজন হয় [২, ৬]।

জীবাশ্ম জ্বালানি ছাড়াও বিদ্যুৎশক্তির উল্লেখযোগ্য উৎস হচ্ছে পানিবিদ্যুৎ, নিউক্লিয়ার বিদ্যুৎ, ভূ-তাপবিদ্যুৎ এবং সৌর-বিদ্যুৎ। এই উৎসগুলির মধ্যে সবচেয়ে কম পানির ব্যবহার হচ্ছে জলবিদ্যুতের। জলবিদ্যুতের জন্য বিশাল আকৃতির জলাধারের প্রয়োজন হলেও, তাতে পানির ব্যবহার (কনজাম্পশন) সে রকম নেই। কারণ অধিকাংশ পানিই আবার নদীতে ফিরে আসে। শুধু জলাধারের বাষ্পীভবনের কারণে যে পরিমাণ পানি ব্যয় হয়, সেটাই মূলত পানির ব্যবহার। প্রতি একক জলবিদ্যুৎ উৎপাদনে মাত্র ৭৫ লিটার পানির প্রয়োজন।

বিপরীতক্রমে, নিউক্লিয়ার বিদ্যুৎ উৎপাদনে পানির ব্যবহার সর্বাধিক। প্রতি একক নিউক্লিয়ার বিদ্যুৎশক্তি উৎপাদনে ৯,১০০ থেকে ২২,০০০ লিটার পানির প্রয়োজন হয় [৭, ৮]। এই পানির অধিকাংশই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের শীতলীকরণে ব্যবহৃত হয়। এছাড়া ভূ-অভ্যন্তরের তাপশক্তি ব্যবহার করে প্রতি একক ভূ-তাপবিদ্যুৎ উৎপাদনে প্রায় ৪৯০ লিটার, ও সূর্যতাপ বিদ্যুৎ উৎপাদনে ৮৭০ থেকে ১০২০ লিটার পানির ব্যবহার হয় [২, ৪]।

এতক্ষণ বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে পানি-শক্তি যোগসূত্রের একদিক আলোচনা করা হল। অর্থাৎ আমরা ধারণা পেলাম শক্তির উৎপাদনে পানির গুরুত্ব কতটা। এবারে এর বিপরীতটা একটু ভেবে দেখা যাক। এক হিসাব মতে, বিশ্বের মোট শক্তির প্রায় শতকরা ৮ ভাগ ব্যবহৃত হয় পানি পরিশোধন ও পরিবহণের মাধ্যমে এর ব্যবহারকারীদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য [৫]।

সেচকাজের জন্য প্রয়োজনীয় পানির পরিবহণে (পাম্পিং) উল্লেখযোগ্য পরিমাণ বিদ্যুৎশক্তি বা জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহৃত হয়। শহরাঞ্চলে গৃহস্থালির ব্যবহার উপযোগী পানির পরিশোধনে ও পরিবহণে বিপুল পরিমাণ শক্তি ব্যবহৃত হয়। এছাড়া বর্জ্য পানির পরিবহণ ও পরিশোধনেও শক্তির প্রয়োজন।

৩.

এবারে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে পানি-শক্তি যোগসূত্র নিয়ে আলোচনা করা যাক। ইন্টারন্যাশনাল এনার্জি এজেন্সির ২০১১ সালের তথ্যমতে [১০], বাংলাদেশ মোট শক্তির জোগানের সিংহভাগ আসে প্রাকৃতিক গ্যাস থেকে (৫২.৩ শতাংশ)। শক্তির জোগানে এর পরে রয়েছে যথাক্রমে বায়োমাস ও বর্জ্য (২৮.২%), তেল (১৫.৫%), কয়লা (২.৯%) এবং পানিবিদ্যুৎ (০.২%)।

এখানে একটি বিষয় উল্লেখ্য যে, উল্লিখিত বায়োমাসের মধ্যে রয়েছে জ্বালানি কাঠ, গাছের পাতা, শস্য অবশিষ্ট, গোবর এবং করাত-মিল থেকে উদ্বৃত্ত অংশ। ইতোমধ্যে আলোচনা করা হয়েছে যে, প্রাকৃতিক গ্যাস উত্তোলনে পানির ব্যবহার তুলনামূলক কম (১১ লিটার/১ একক শক্তি)। তবে বাংলাদেশে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ শক্তির উৎস খনিজ তেল হওয়ার (৪,৫৫০ থেকে ৯,১৬০ লিটার/১ একক শক্তি) শক্তির জোগানে পানির ব্যবহার উল্লেখযোগ্য ব্যবহার রয়েছে।

এবারে আসি বিদ্যুৎশক্তি উৎপাদন প্রসঙ্গে। ২০১১ সালের তথ্যমতে, বাংলাদেশে মোট উৎপাদিত বিদ্যুৎ শক্তির পরিমাণ প্রায় ৪৪০৬১ গিগা ওয়াট-ঘণ্টা (১ গিগা ওয়াট=১০০ কোটি ওয়াট)[১০]। এই উৎপাদিত বিদ্যুতের সিংহভাগ (৯১.৫%) আসে প্রাকৃতিক গ্যাস থেকে। বাকি ৫.২ % আসে জ্বালানি তেল থেকে, ১.৮% আসে কয়লা থেকে ও ১.৫% আসে জলবিদ্যুৎ থেকে। অর্থাৎ কিনা বাংলাদেশের উৎপাদিত বিদ্যুতের প্রায় ৯৮.৫% ই আসে জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে।

আমরা ইতোমধ্যে বৈশ্বিক পরিসংখ্যান থেকে জেনেছি যে, জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে প্রতি একক বিদ্যুৎশক্তি উৎপাদনে গড়ে ৪,১৬০ থেকে ৮,৩৩০ লিটার পানির প্রয়োজন হয়। তবে যেহেতু বাংলাদেশে এখনও পর্যন্ত শক্তি খাতে পানির জোগান সেভাবে প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হয়নি; পানি-শক্তি যোগসূত্রের একদিকে বাংলাদেশের অবস্থান সেভাবে প্রশ্নবিদ্ধ নয়।তবে জলবায়ু পরিবর্তন ও উজানের দেশগুলিতে অধিক পানি প্রত্যাহারের কারণে ভবিষ্যতে, বিশেষত শুষ্ক মৌসুমে বাংলাদেশে শক্তি খাতে পানির জোগানের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হতে পারে।

আসা যাক বাংলাদেশের পানি-শক্তি যোগসূত্রের অন্যদিকে, অর্থাৎ পানির উৎপাদন ও সরবরাহে শক্তির ব্যবহার প্রসঙ্গে। জাতিসংঘের তথ্যমতে, বাংলাদেশে পানির ব্যবহারের ৮৮% চাষাবাদের জন্য, ১০% গৃহস্থালির কাজে এবং বাকি মাত্র ২% শিল্পখাতে [১১]। চাষাবাদের ক্ষেত্রে পানির ব্যবহারের সিংহভাগ জুড়ে রয়েছে সেচ যা কিনা দ্রুতবর্ধনশীল শস্য উৎপাদনের জন্য আবশ্যক।

এক হিসাবমতে, বাংলাদেশে প্রায় ১২ লক্ষ সেচ পাম্প রয়েছে যার শতকরা ৮৫ ভাগ ডিজেল-চালিত। ফলশ্রুতিতে বছরে সব মিলিয়ে প্রায় ৮ লক্ষ টন ডিজেলের চাহিদা রয়েছে বাংলাদেশে [১২]। বাকি ১৫ শতাংশ পাম্প বিদ্যুৎচালিত। ২০০৪-০৫ এর হিসাবমতে, সব মিলিয়ে বর্তমানে সেচ খাতে বাংলাদেশে বিদ্যুতের সরবরাহ দেশের মোট জোগানের প্রায় ৪ শতাংশ [১৩]।

অন্যদিকে গৃহস্থালির জন্য প্রয়োজনীয় পানি সরবরাহের শতকরা ৮৪ ভাগই বেসরকারি/ব্যক্তিগত খাতে এবং বাকি ১৬ শতাংশ সরকারের মাধ্যমে পরিচালিত হয়। সরকারি খাতে সরবরাহকৃত পানির উত্তোলন, বিশুদ্ধীকরণ, সরবরাহ এবং ব্যবহৃত বর্জ্য পানির নিষ্কাশন পরিশোধনেও উল্লেখযোগ্য পরিমাণ বিদ্যুৎশক্তির প্রয়োজন হয়।

৪.

এতক্ষণের আলোচনায় বৈশ্বিক ও দেশীয় প্রেক্ষাপটে একথা প্রতীয়মান হয়েছে যে, শক্তি উৎপাদনের জন্য যেমন পানির প্রয়োজন– তেমনি পানি উত্তোলন, পরিশোধন ও সরবরাহের জন্যও প্রয়োজন শক্তির। ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা, নগরায়ন এবং প্রযুক্তির উন্নয়নের দলে পানি ও শক্তির চাহিদা দিন দিন বেড়ে চলেছে এবং সেটা অদূর ভবিষ্যতেও বাড়বে; অথচ এই দুটোরই জোগান সীমিত।

আমরা যদি শক্তির অপচয় রোধ করতে পারি সে ক্ষেত্রে পানির ব্যবহার কমাতে পারব এবং বিপরীতক্রমে, যদি পানির অপচয় কমাতে পারি তবে শক্তির ব্যবহার কমাতে পারব। তবে অপচয় রোধের পাশাপাশি, পানি ও শক্তির উৎপাদন ও ব্যবহারের কর্মদক্ষতা আনয়ন জরুরি এবং সে লক্ষ্যে দুটিকে সমন্বিত পরিকল্পনার আওতায় আনা উচিত।

আমাদের মনে রাখতে হবে, বিশ্বের ১৩০ কোটি মানুষ বিদ্যুৎবিহীন জীবন যাপন করে এবং প্রায় ৭৮ কোটি মানুষের নিরাপদ পানির জোগান নেই। পানি দিবসে পানি ও শক্তির মধ্যেকার এই যোগসূত্রের উপলব্ধিটা সবার মধ্যে আসুক, সেই কামনা করছি।

তথ্যসূত্র:

[১] International Energy Agency (2013) "Key World Energy Statistics 2013"

[২] USDOE (2006) "Report to Congress on the Interdependency of Energy and Water."United States Department of Energy. Washington D.C.

[৩] Gleick, P.H.(1994) "Water and Energy" in Annual Reviews, Annu. Rev. Energy Environ., 1994, 19:267-99.

[৪] EIA (2008) "Annual Energy Review 2007", Energy Information Administration, Washington, D.C.:

[৫] United Nations (2014) "World Water Day 2014: Advocacy Guide"

[৬] Hutton, S.S., N.L. Barber, J.F. Kenny, K.S. Linsey, D.S. Lumia and M.A. Maupin. (2005) "Estimated Use of Water in the United States." USGS Circular 1268:

[৭] EPRI (2002a) "A survey of Water Use and Sustainability in the United States with a Focus on Power Generation." Electric Power Research Institute No. 1005474, Palo Alto, California.

[৮] EPRI (2002b) "Water and Sustainability (Volume 2)", U.S. Water Consumption for Power Production- The Next Half Century. Electric Power Research Institute. No. 10006786, Palo Alto, California.

[৯] Bangladesh Bureau of Statistics (2011) "Statistical Pocket Book of Bangladesh 2010"

[১০] IEA Energy Statistics: Bangladesh

[১১] United Nations (UN)Water:

[১২] The Water Sector In Bangladesh A Short Presentation On Market Potentials For Danish Technology Providers And Investors.

[১৩] Bangladesh power Sector Data Book

ড. জাহিদুল ইসলাম: পানি বিশেষজ্ঞ ও লেখক।