চুক্তিটি নিয়ে বৈঠকে বসেছে ইসরায়েলের নিরাপত্তা পরিষদ। এরপর বসবে পূর্ণাঙ্গ মন্ত্রিসভা। দুই বৈঠকে অনুমোদিত হলে চুক্তি রোববার নির্ধারিত সময় থেকেই কার্যকর হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
Published : 17 Jan 2025, 07:23 PM
গাজা যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকর হলে শর্ত অনুযায়ী ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস রোববারই কিছু জিম্মিকে মুক্তি দেবে বলে আশা করছে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর দপ্তর।
চুক্তিটি অনুমোদনে ইসরায়েলি মন্ত্রিসভার বৈঠক কখন শেষ হতে পারে তা নিয়ে অনিশ্চয়তার মধ্য শুক্রবার তারা এ আশাবাদ ব্যক্ত করে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
সোয়া এক বছর ধরে চলা এ যুদ্ধ এরই মধ্যে গাজা উপত্যকাকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে।
শেষ পর্যন্ত যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলে তা এরই মধ্যে ৪৬ হাজারের বেশি মানুষের প্রাণ কেড়ে নেওয়া সংঘাতের অবসান ঘটিয়ে স্বজনহারা, বাস্তুচ্যুত গাজাবাসীকে খানিক স্বস্তি দেবে বলেই মনে করা হচ্ছে। যুদ্ধের কারণে ছোট এই ভূখণ্ডটির প্রায় ২৩ লাখ বাসিন্দাকে কয়েকবারই উপত্যকাটির ভেতরের এক স্থান থেকে আরেক স্থানে ছুটে বেড়াতে হয়েছে।
এই চুক্তি বাস্তবায়িত হলে আপাতত গাজায় ইসরায়েলি ধ্বংসযজ্ঞ থামার পাশাপাশি হামাসের হাতে জিম্মি ইসরায়েলি এবং ইসরায়েলের হাতে বন্দি ফিলিস্তিনিদের মুক্তির পথ খুলবে।
এই চুক্তি বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের বাড়িতে ফেরারও সুযোগ দেবে, যদিও ইসরায়েলি বাহিনীর ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞের পর তাদের বেশিরভাগের বাড়ি আর অবশিষ্ট নেই।
গাজা যুদ্ধে ইরান ও এর সমর্থক লেবাননের হিজবুল্লাহ, ইয়েমেনের হুতি ও ইরাকের বিভিন্ন সশস্ত্র গোষ্ঠীও নানাভাবে জড়িয়ে পড়েছিল। ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধবিরতি মধ্যপ্রাচ্যের এই অস্থিরতাও খানিকটা কমিয়ে আনতে সাহায্য করতে পারে বলে অনেকের আশা।
তিন ধাপের চুক্তির প্রথম ধাপটি স্থায়ী হবে ছয় সপ্তাহ; এই সময়ের মধ্যে হামাস বেসামরিক-সামরিক সকল নারী, শিশু ও পঞ্চাশোর্ধ পুরুষসহ ৩৩ ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দেবে।
এ ধাপেই ইসরায়েল তাদের হাতে আটক ১৯ বছরের কমবযসী সকল নারী ও শিশুদের মুক্তি দেবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
শুক্রবার এক বিবৃতিতে হামাস জানিয়েছে, গাজা যুদ্ধবিরতি চুক্তি নিয়ে যে সকল প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়েছিল, সেগুলো কেটেছে।
তবে এর মধ্যেও গাজায় হামলা থেমে নেই। বুধবার রাতে যুদ্ধবিরতি চুক্তির ঘোষণা আসার পর শুক্রবার সকাল পর্যন্ত উপত্যকাটিতে ইসরায়েলি বিমানের তীব্র হামলায় অন্তত ১০১ জন নিহত হয়েছে। নিহতদের মধ্যে নারী ও শিশুর সংখ্যা ৫৮ বলে জানিয়েছে গাজার বেসামরিক জরুরি পরিষেবা।
এদিকে চুক্তির ঘোষণা এলেও যতক্ষণ পর্যন্ত না ইসরায়েলের নিরাপত্তা পরিষদ ও সরকার চুক্তিতে অনুমোদন দেয়, ততক্ষণ পর্যন্ত যুদ্ধবিরতি রোববার থেকে কার্যকর হবে কিনা তা নিয়ে শঙ্কা থেকেই যাচ্ছে।
চুক্তিটি নিয়ে বৃহস্পতিবারই ইসরায়েলের নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠক হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু পরে সেটি পিছিয়ে দেওয়া হয়।
শুক্রবার সকালে এই বৈঠক শুরু হয় বলে জানিয়েছে বিবিসি। এরপর সরকারের পূর্ণাঙ্গ মন্ত্রিসভারও বৈঠক হওয়ার কথা। চুক্তিটি সেখানেও অনুমোদিত হতে হবে।