প্রযুক্তিটিকে আরও এগিয়ে নিতে ও পরীক্ষার জন্য এখনও পর্যন্ত দুই কোটি ৭২ লাখ ইউরো অনুদান পেয়েছে স্টার্টআপটি।
Published : 17 Jan 2025, 03:13 PM
চালের দানার আকারের সমান এক ক্ষুদ্র রোবট তৈরি করেছেন গবেষকরা, যা মানুষের মস্তিষ্ক ঘেঁষে চলাচল করতে পারে। নির্মাতাদের দাবি, মানুষের স্নায়বিক অবস্থা নির্ণয় ও চিকিৎসা ক্ষেত্রে বিপ্লব ঘটাবে এটি।
‘হোবোত্তে’ নামের প্যারিসভিত্তিক স্টার্টআপটি আগামী বছর থেকে তাদের এই ক্ষুদ্র রোবটটি মানুষের ওপর পরীক্ষা চালানোর লক্ষ্য নিয়েছে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে ব্রিটিশ দৈনিক ইন্ডিপেনডেন্ট।
প্রযুক্তিটিকে আরও এগিয়ে নিতে ও পরীক্ষার জন্য এখন পর্যন্ত দুই কোটি ৭২ লাখ ইউরো অনুদান পেয়েছে স্টার্টআপটি।
নতুন প্রযুক্তিটিকে ‘বৈপ্লবিক’ হিসাবে ঘোষণা করেছেন এতে অনুদান দেওয়া বিনিয়োগকারীরা। তাদের দাবি, এন্ডোস্কোপ যেভাবে গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল ওষুধকে রূপান্তরিত করেছে, ঠিক সেভাবেই মস্তিষ্কের চিকিৎসায় মৌলিক পরিবর্তন আনবে ক্ষুদ্র এসব রোবট।
বর্তমানে তুলনামূলকভাবে অপরিণত পদ্ধতির উপর নির্ভর করে নিউরোসার্জারি করেন চিকিৎকরা। যার মধ্যে বিভিন্ন অনমনীয় টুলকে মস্তিষ্কের মধ্যে সরলরেখায় এমনভাবে ঠেলে দেন তারা, যা ঝূকিপূর্ণ হতে পারে।
এসব রোবট চালের দানার আকারের সমান এবং এগুলোকে কেবল তিন মিলিমিটার চওড়া ছোট গর্তের মাধ্যমে প্রবেশ করানো হয় মাথার খুলিতে। এসব ক্ষুদ্র রোবট তখন মস্তিষ্কের বাইরের ভাঁজ অনুসরণ করে আকাবাঁকা পথে চলাচল করতে পারে। এভাবে, এগুলো মস্তিষ্কের এমন সব জায়গায় পৌঁছাতে পারবে যেখানে পৌঁছানো কঠিন।
“যার মানে হচ্ছে, এসব রোবট নিউরোসার্জিক্যাল সূঁচ বা ইলেকট্রোডের মতো বাজারে এরইমধ্যে থাকা প্রচলিত বিভিন্ন টুলের তুলনায় কম ক্ষতিকর হবে,” বলেছেন হোবোত্তে-এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান অপারেটিং কর্মকর্তা জোয়ানা কার্তোচ্চি।
“এসব রোবটে একটি ছোট আকারের ইঞ্জিন রয়েছে, যাতে এরা টিস্যুর মধ্য দিয়ে চলাচল করতে পারে। পাশাপাশি এগুলোকে ডিজাইন করা হয়েছে একটি নির্দেশিত পথ অনুসরণ করে চলার জন্য, যা ঠিক করে দেবেন একজন নিউরোসার্জন।”
টিউমারের জন্য বায়োপসি টুল হিসেবে সবচেয়ে কম ঝামেলার এ পদ্ধতিটি নিয়ে এরইমধ্যে সফলভাবে পরীক্ষা চালানো হয়েছে প্রাণীদের ওপর। মানবদেহে ইলেকট্রোড ইমপ্লান্ট ও ডেটা নমুনাও সংগ্রহ করতে পারে এরা।
“নিউরোসার্জিকাল অপারেটিং রুম ও রোগীদের কাছে আমাদের এ পদ্ধতিটি পৌঁছে দিতে নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কাজ করছি আমরা,” বলেছেন কার্তোচ্চি।
এদিকে, হোবোত্তে-এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী বার্ট্রান্ড দ্যুপ্লা বলেছেন, “চিকিৎসাশাস্ত্রে এসব ক্ষুদ্র আকারের রোবটের সম্ভাবনা এখনও পুরোপুরি যাচাই করা হয়নি।”
মানুষের ওপর পরীক্ষা সফল হলে ২০৩০ সাল নাগাদ রোবটের মাধ্যমে মানবদেহে ওষুধ সরবরাহের জন্য নিয়ন্ত্রক সংস্থার অনুমোদন পাওয়ার আশা করছে স্টার্টআপটি।