বিপিএল
দুর্বার রাজশাহীসহ কয়েক দলের ক্রিকেটারদের কোনো টাকা না পাওয়ার বিষয়ে জানেন না বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের সদস্য সচিব নাজমুল আবেদীন, তবে সার্বিকভাবে নিজেদের ব্যর্থতা মেনে নিলেন তিনি।
Published : 17 Jan 2025, 08:42 PM
সিলেট থেকে বিপিএল চট্টগ্রামে আসার পর মাঠের ক্রিকেটের চেয়ে মাঠের বাইরের ঘটনাই বেশি আলোচনায়। নির্দিষ্ট করে বললে দুর্বার রাজশাহীর পারিশ্রমিক না পাওয়া নিয়ে টানা তিন দিন ধরে চলে অনিশ্চয়তা। একই অভিযোগ আছে অন্য দলগুলোর বিরুদ্ধেও। এসব নিয়ে বিব্রত বিসিবি পরিচালক ও বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের সদস্য সচিব নাজমুল আবেদীন।
জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে শুক্রবার দুর্বার রাজশাহী ও সিলেট স্ট্রাইকার্সের ম্যাচ শেষে উইমেন'স বিপিএল আয়োজনের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হওয়ার কথা জানাতে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে আসেন নাজমুল। কিন্তু শুরুতেই তার কাছে রাখা হয় বিপিএলের পারিশ্রমিক নিয়ে চলা সংশয়, অনিশ্চয়তার প্রসঙ্গ।
তবে শুরুতেই এটি নিয়ে কথা বলতে চাননি নাজমুল। পরে পারিশ্রমিক না পাওয়ায় রাজশাহীর ক্রিকেটারদের অনুশীলন বয়কট, পারিশ্রিমিক পরিশোধে বিলম্ব হওয়ার পর ফ্র্যাঞ্চাইজিটির পক্ষে নানান উদ্ভট যুক্তি, ম্যাচের দিন সকাল পর্যন্তও অনিশ্চয়তা চলা নিয়ে জিজ্ঞেস করা হলে এসব বিষয়কে সামনের জন্য শিক্ষা হিসেবে নেওয়ার কথা বলেন তিনি।
একইসঙ্গে নিজেদের ব্যর্থতাও মেনে নেন নাজমুল।
“আমরাও এসব কারণ নিয়ে বিব্রতকর। শুধু ক্রিকেট বোর্ড নয়, পুরো ক্রিকেট সম্প্রদায় কিন্তু এসব নিয়ে বিব্রত। আমাদের সবার জন্যই এগুলো শিক্ষা। আশা করি, সামনে এসব বিষয় সেভাবেই এড্রেস করব যেন আর না হয়। অনেকগুলো কাজ আমাদের করা উচিত ছিল। যেগুলো হয়তো আমরা সময়মতো করিনি।”
“তবে এটাও বিষয় যে, এবার একটা বিশেষ সময়ে অনেক ব্যাপারেই আমরা চাপে ছিলাম। হয়তো অনেক ব্যাপারেই যেসব নিয়ম অনুসরণের কথা ছিল, সেগুলো করতে পারিনি। তবে এগুলোও শিক্ষা। সামনে অবশ্যই এই শিক্ষা কাজে লাগাব।”
শুক্রবার জাতীয় দৈনিক প্রথম আলোর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এখন পর্যন্ত ফ্র্যাঞ্চাইজি থেকে আনুষ্ঠানিক চুক্তিপত্রই পাননি কোনো ক্রিকেটার। যেটি মূলত দিয়ে থাকে বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিল। এছাড়া কয়েকটি দলের অনেক ক্রিকেটার এক টাকাও না পেয়ে টুর্নামেন্টের মাঝপথ পর্যন্ত খেলেও ফেলেছেন।
এই প্রসঙ্গে দৃষ্টিপাত করা হলে অবগত নন বলেন নাজমুল, “না (অবগত নই)। সত্যি বলতে এটা সম্পর্কে আমি জানি না।”
পাল্টা প্রশ্ন রাখা হয় গভর্নিং কাউন্সিলের সদস্য সচিব হিসেবে এসব আগেই জানা উচিত ছিল কিনা? নাজমুলের হয়ে উত্তর দেন পাশে থাকা আরেক বোর্ড পরিচালক ইফতেখার আহমেদ।
“যখন আমরা জেনেছি, আমরা কিন্তু ক্রিকেট বোর্ড ও প্রেসিডেন্টসহ সম্পৃক্ত হয়ে রাজশাহীর বিষয়টা সমাধান করা হয়েছে।”
সেক্ষেত্রে প্রশ্ন থেকে যায়, বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিল কি নিজ থেকে সব দলের পারিশ্রমিকের ব্যাপারে খোঁজ নিতে পারে না? উত্তরে ক্রিকেটাররা অভিযোগ করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেন ইফতেখার।
“সেটা ঠিক আছে। কিন্তু কথাটা হচ্ছে, যারা সমস্যায় আছে তাদের তো জানাতে হবে। আমি দলগুলোর কথা বলছি না। টিম ম্যানেজমেন্ট বা ক্রিকেটাররা যখন আসবে, আমরা এটি এড্রেস করব।”
একই কথা বলেন নাজমুলও।
“যখন পারিশ্রমিক হবে না, আমাদের কানে কিন্তু আসবে। রাজশাহীর ক্ষেত্রে সেটা হয়েছে। আমাদের কানে এসেছে এবং সাথে সাথে আমরা কাজ করার চেষ্টা করেছি। আমি নিশ্চিত অন্যদের ক্ষেত্রে এই সমস্যা যদি থেকে থাকে... (সমাধান করা হবে)।”
অথচ টুর্নামেন্ট শুরুর আগে তিন ভেন্যুতে মিউজিক ফেস্ট, থিম সং, গ্রাফিতি, মাসকটসহ নানান আয়োজনে নতুন এক বিপিএল আয়োজনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল বিসিবি। কিন্তু মাঠের ক্রিকেট শুরুর পর ক্রমেই ফিকে হয়েছে সেই আশা।
শুরুর সেই প্রতিশ্রুতির কথা মনে করিয়ে দেওয়া হলে ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর দিকেই আঙুল তোলেন নাজমুল।
“আমাদের প্রত্যাশা তেমনই (সেরা বিপিএল আয়োজন) ছিল। আশা করেছিলাম, আমাদের এই যাত্রায় যারা যুক্ত হবেন, তারাও দায়িত্ব নেবেন। অনেক ক্ষেত্রেই হয়তো আমরা সেটা দেখতে পাইনি। তবে আমরা চেষ্টা করব বাকি যে সময় আছে, সেখানে এই পারিশ্রমিক ইস্যু বা অন্য যে কোনো বিষয় যেন আরও ভালো থাকে।”