মেয়েদের ক্রিকেটকে পরের ধাপে নিতে এবার ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্ট আয়োজন করার সিদ্ধান্ত নিল বিসিবি।
Published : 17 Jan 2025, 07:28 PM
পূর্বে দেওয়া আশ্বাসকে বাস্তবে রূপ দিতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। ছেলেদের চলতি বিপিএল শেষ হওয়ার পরপরই মেয়েদের ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্টের আয়োজনের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
গত মাসে বিপিএলের থিম সং ও মাসকট উন্মোচনের দিনের ঘটনা। বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদকে পেয়ে ছেলেদের মতো মেয়েদেরও বিপিএল আয়োজনের দাবি জানান জাতীয় দলের অধিনায়ক নিগার সুলতানা ও অভিজ্ঞ পেসার জাহানারা আলম। সেদিনই তাদের আশ্বাস দেন ফারুক। পরে তিনি সংবাদমাধ্যমেও বলেন এর সম্ভাবনার কথা।
মাসদেড়েকের মধ্যেই এলো আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত। চট্টগ্রামে শুক্রবার দুর্বার রাজশাহী-সিলেট স্ট্রাইকার্স ম্যাচ শেষে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে এর ঘোষণা দেন বোর্ড পরিচালক নাজমুল আবেদিন।
‘‘বোর্ড বেশ কিছুদিন ধরেই ভাবছিল আমরা নারীদের ক্রিকেটকে আরও কী কী ভাবে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি। সেই বিষয়টাকে মাথায় রেখে, নারীদের জন্য একটা বিপিএল করা যায় কিনা, সেটা নিয়ে চিন্তাভাবনা ছিল। আজকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, আমরা সেটা করব।’’
তিন দলের অংশগ্রহণে ওই প্রতিযোগিতার সূচি এখনও চূড়ান্ত হয়নি। যত দ্রুত সম্ভব আয়োজনের কথা বলেন নাজমুল আবেদিন।
“আমরা উইমেন’স বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ আয়োজন করব। প্রথম আসরটি তিনটি দল নিয়ে করার পরিকল্পনা করা হয়েছে। এটা এই বিপিএল শেষ হওয়ার পরপরই অনুষ্ঠিত হবে। এর সময়সীমা থাকবে ৮-৯ দিনের ভেতরে।”
ছেলেদের বিপিএলে অংশ নেওয়া সাতটি ফ্র্যাঞ্চাইজির মধ্য থেকেই নেওয়া হবে মেয়েদের বিপিএলের তিন দল। সেটিও এখন প্রক্রিয়াধীন।
“আমরা এরই মধ্যে কিছু ফ্রাঞ্চাইজির সঙ্গে কথা বলেছি। তারা আগ্রহ দেখিয়েছে। এটা দিয়ে আমরা শুরুটা করতে চাই। দেখতে চাই, নারীদের এই প্রতিযোগিতা যদি সামনে নিয়ে আসি টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে, সেটার ইফেক্ট কী রকম হয়। আমরা আশা করছি, এটা নারীদের ক্রিকেটকে আরেক ধাপ এগিয়ে নেবে।’’
এসময় টুর্নামেন্টের ফরম্যাট সম্পর্কে তিনি জানান, প্রথম পর্বে তিনটি দল একে অপরের বিপক্ষে খেলবে দুইটি করে ম্যাচ। পরে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষ দুই দল নিয়ে হবে ফাইনাল। সব মিলিয়ে সাত ম্যাচের টুর্নামেন্টের সবগুলো খেলাই হবে শের-ই বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে।
ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্ট হওয়ায় স্বাভাবিকভাবে বিদেশি ক্রিকেটারের অংশগ্রহণও থাকবে সব দলে। তবে কোনো দলই একজনের বেশি বিদেশি ক্রিকেটার মাঠে নামাতে পারবে না। আর নিজেদের স্কোয়াডে ১৫ জন দেশি ক্রিকেটার নিবন্ধন করতে পারবে দলগুলো।
কিন্তু অনেক আগে থেকেই একজন করে বিদেশি ক্রিকেটার নিয়ে খেলার নিয়ম রয়েছে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে। সেক্ষেত্রে শুধু সংস্করণ বদলে সামনে আরেকটি প্রিমিয়ার লিগই হবে কিনা সেই প্রশ্নও উঠল।
এই প্রসঙ্গে বেশি বিদেশি ক্রিকেটার না নেওয়ার পেছনে সীমাবদ্ধতা ও কারণ জানান নাজমুল আবেদিন।
“বিদেশি বেশি নয়, কারণ এখানে আর্থিক একটা বিষয় আছে। চার জন বিদেশি যদি নিতে চাই আমরা, সেক্ষেত্রে দলগুলোর ওপর একটা আর্থিক চাপ পড়বে। এই মুহূর্তে হয়তো দলগুলো সেই চাপটা নিতে চাচ্ছে না।”
“আরেকটা বিষয় হলো, আমাদের যে দেশি ক্রিকেটার আছে, তাদেরও বেশি সুযোগ দেওয়ার পথে হাঁটতে চাই। তাই আমরা দল চারটা না করে তিনটা করেছি। যেন প্রতিদ্বন্দ্বিতা ভালো হয়। এই খেলার পর আমরা যেন বলতে পারি, আমাদের মেয়েরা পরের একটা ধাপে উন্নীত হয়েছে।”