ইতিহাসের কাঠগড়ায় লৌহমানবী থেচার

নাদিরা মজুমদার
Published : 17 April 2013, 07:03 PM
Updated : 17 April 2013, 07:03 PM

৮ এপ্রিল সাতাশি বছর বয়সে মারা গেলেন যুক্তরাজ্যের সাবেক প্রধানমন্ত্রী লৌহমানবী হিসেবে খ্যাত মার্গারেট থেচার। ১৯৭৯ সাল থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত টানা এগার বছর দু'শ নয় দিন তিনি এ পদে ছিলেন। সে হিসেবে, বিশ শতকে দীর্ঘতম কাল কোনো দেশের প্রধানমন্ত্রীত্বে থাকার রেকর্ড তাঁর দখলে। উনিশ শতকে লর্ড স্যালিসব্যারি একটানা তের বছর দু'শ বায়ান্ন দিন, এবং এর আগে লর্ড লিভারপুল চৌদ্দ বছর তিনশ পাঁচ দিন প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। তবে শেষোক্ত দুই লর্ড যে সময়ে প্রধানমন্ত্রী ছিলেন তখন ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের সূর্য অস্ত যেত না।

মার্গারেট থেচারের বড় বাহাদুরি ছিল যে, তিনি ইংল্যান্ড ও তাবৎ ইউরোপের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হয়ে রাজনৈতিক লড়াইয়ের ট্যাবু ভেঙ্গে ফেলেন। তবে কিছু সমালোচক বলেন, নিজের দলের ভেতরেই হোক বা সরকারি নীতির মাধ্যমেই হোক- নারীকে এগিয়ে দেওয়ার ব্যাপারে যা-যা করতে পারতেন থেচার তা করেননি। তাই ব্রিটিশ ফেমিনিষ্টদের কেউ কেউ তাঁকে 'শত্রু' বলে চিহ্নিত করতেও দ্বিধা করছেন না। অভিবাসী প্রশ্নে থেচারের দৃষ্টিভঙ্গিকে প্রফেসর মার্টিন বার্কার 'নব্য র্বণবৈষম্য' বলেছেন। দক্ষিণ আফ্রিকার বর্ণবাদী প্রেসিডেন্ট বোথার সঙ্গে অকপট বন্ধুত্ব ছিল তাঁর। ফলে, বোথা সরকারের ওপর কমনওয়েলথ ও কমন মার্কেটের নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিরোধিতা করেছেন তিনি। চিলির স্বৈরশাসক পিনোশের সঙ্গেও তাঁর বন্ধুত্ব ছিল।

ক্ষমতাসীন হয়েই থেচার ব্রিটেনে পুরোপুরি অর্থনৈতিক সংস্কারে নেমে পড়েন; এর মধ্যে ছিল সরকারি নিয়ন্ত্রণবিধির লোপকরণ, রাষ্ট্রীয় মালিকাধীন শিল্পকারখানা ও সম্পদের ব্যক্তিমালিকানায় হস্তান্তর, এবং ট্রেড ইউনিয়নগুলো দুর্বল করে দেওয়া। এ প্রোগ্রাম তিনি প্রায় শতভাগ পূরণ করেন। সামষ্টিক অর্থনীতির পরিপ্রেক্ষিতে, তাঁর নীতিমালা প্রতিযোগিতা, ব্যক্তিমালিকানাধীন শিল্প ও আত্মর্নিভরশীলতাকে উৎসাহিত করে ও ব্রিটিশ অর্থনীতিকে সঞ্জীবনীশক্তির যোগান দেয়।

ফলস্বরূপ, অপেক্ষাকৃত ছোট নতুন ধনিকশ্রেণির আর্বিভাব ঘটতে থাকে। এর পাশাপাশি কম প্রতিযোগী ও টিকে থাকতে অসমর্থরা কোণঠাসা হয়ে পড়ে, চাকরিবিহীনের হার আকাশছোঁয়া হয়, গরিবরা সামাজিকভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে, অনেক শিল্প সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস হয়ে যায়। যেমন, কয়লাখনি। এ শিল্পের সঙ্গে জড়িতদের ম্যারাথন ধর্মঘট, কয়লাখনি বন্ধকরণ ও ট্রেড ইউনিয়ন দুর্বলকরণ- সবই চলছিল। ফলে সামাজিক অস্থিরতাও বৃদ্ধি পায়।

থেচারের এ নীতিমালা 'থেচারিজম' নামে পরিচিতি লাভ করে। অনেকে তাঁকে আটিলা দি হুন, মিল্ক স্ন্যাচার, ম্যাগি ইত্যাদি উপনাম দেয়। তবে এক সোভিয়েত সাংবাদিক ভিন্ন প্রসঙ্গে তাঁকে লৌহমানবী উপনাম দেন। শেষ পর্যন্ত তাঁর আপোষহীন রাজনীতি ও নেতৃত্বের ষ্টাইলের সঙ্গে লৌহমানবী শব্দটি ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে যায়।

থেচারিজমের বহুনিন্দিত কয়েকটি বিষয়ের একটি হল 'পোল ট্যাক্স', অর্থাৎ বাড়ির আসল মালিকদের পরিবর্তে বাড়িতে বসবাসরতদের ওপর মাথাপিছু কর ধার্য করা। ফলে করের ভার ধনী থেকে গরিবের ওপর বর্তায়। আরেকটি নীতি হল 'মনিটারিজম অর্থনীতি'- অর্থাৎ বাজারে চালুকৃত টাকার সরবরাহ নিয়ন্ত্রণে রাখা। সরবরাহকৃত টাকার পরিমাণের বিভিন্নতা স্বল্পমেয়াদি ভিত্তিতে জাতীয় উৎপাদনে এবং দীর্ঘমেয়াদি ভিত্তিতে পণ্যমূল্যের ওপর গভীর প্রভাব ফেলে। থেচারের 'মনিটারিজম নীতি' কোনো কোনো এলাকায় কর্মহীনের সংখ্যা বৃদ্ধিসহ ড্রাগের অপব্যবহার, আত্মহত্যা, পারিবারিক বন্ধন ভেঙ্গে পড়া ইত্যাদি সামাজিক ক্ষতের সৃষ্টি করে; সে পাঁকে যুক্তরাজ্য এখনও বন্দী। তবে থেচার কোনোদিনই তাঁর পোল ট্যাক্স বা মনিটারিজমের জন্য অনুতাপ ও খেদের কথা বলেননি।

এখানে উল্লেখ না করলেই নয় যে, রোনাল্ড রিগান ও থেচারের মধ্যে সুন্দর রাজনৈতিক ও ব্যক্তিগত বন্ধুত্ব গড়ে ওঠার পেছনে দুটি মন্ত্র অনুঘটকের কাজ করে। এক, থেচারিজম; তাঁর র্অথনৈতিক প্রবৃদ্ধির মডেল অর্থনীতিতে সম্পূর্ণ নতুন মাত্রা এনে দেয়; শিল্পের বদলে ফটকাবাজি বা স্পেকিউলেশন ও ফাইন্যান্সিয়াল বাণিজ্য অধিকতর গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। রাজনৈতিক অর্থনীতিবিদ সুসান স্ট্রেঞ্জ তাই একে বলেন 'ক্যাসিনো ক্যাপিটালিজম'। যুক্তরাজ্যে থেচারের ও যুক্তরাষ্ট্রে রিগানের আমলে উৎসাহিত ও প্রশ্রয়প্রাপ্ত এ 'ক্যাসিনো অর্থনীতি' ফুলে-ফেঁপে বড় বড় অর্থ সংস্থা ও ব্যাঙ্কের জন্ম দেয়, এবং ২০০৮ সালে এগুলোর পতনের মাধ্যমে বিশ্বায়িত জনগোষ্ঠীকে ক্ষতিগ্রস্ততার দিকে ঠেলে দেয়।

দুই, কমিউনিজমের প্রতি কিংবদন্তিতুল্য বিতৃষ্ণা। ১৯৭৬ সালের ১৯ জানুয়ারি কনজারভেটিভ দলের সদ্য নির্বাচিত দলনেতা হিসেবে থেচার মানুষে ঠাসা কেনসিংটন টাউন হলে তীব্র জ্বালাময়ী ভাষায় সোভিয়েত ইউনিয়নকে আক্রমণ করে যা বললেন তার মর্মার্থ ছিল এরকম: রুশরা বিশ্বে আধিপত্য অর্জনে দৃঢ়সংকল্পবদ্ধ, এবং পৃথিবীর সবচেয়ে ক্ষমতাধর সাম্রাজ্যবাদী জাতি হওয়ার জন্য দ্রুত সকল প্রয়োজনীয় উপায় অর্জনে তারা নিয়োজিত রয়েছে। পলিটব্যুরোর দূরদৃষ্টিসম্পন্ন মানুষগুলো এ লক্ষ্য অর্জনে এমনই দৃঢ়বদ্ধ ও অটল যে তাদের জনমতের ধার না ধারলেও চলে, ইত্যাদি।

বিশ্ব রাজনৈতিক অঙ্গনে, দু'শিবিরের মধ্যে পারমাণবিক অস্ত্র প্রতিযোগিতা ও ডিটারেন্সের কাল তখন। থেচারের সোভিয়েত ইউনিয়ন ও সমাজতন্ত্রের কঠোর বিরোধিতার পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৭৬ সালে সাংবাদিক ক্যাপ্টেন ইউরি গাভরিলভ সোভিয়েত পত্রিকা রেড স্টারে তাঁকে 'লৌহমানবী' বা আয়রন লেডি বলেন। রূপকালঙ্কার হিসেবে লোহাকে ব্যবহার করার সময় লৌহজ নির্দিষ্ট কিছু বৈশিষ্ট্যের কথা নিশ্চয়ই গাভরিলভের মনে কাজ করেছিল। রূপকালঙ্কারে লোহা বিশেষ্য বা বিশেষণ। যে ভাবেই ব্যবহার করা হোক না কেন, লোহা বললেই আমাদের মানসপটে ভেসে ওঠে এমন কিছু যা কঠোর, অনমনীয়, রূঢ়, কর্কশ, একরোখা, অনড়, অটল, অপরির্বতনীয়, বলিষ্ঠ, সবল, তেজি, শীতল ইত্যাদি।

গাভরিলভ হয়তো-বা অসম্মান প্রকাশের জন্যই থেচারকে লৌহমানবী বলেন। তবে শেষ পর্যন্ত উপনামটি ইতিবাচক অর্থ নিয়ে সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে। এমনকি থেচারও উপনামটি খুব পছন্দ করে সোভিয়েত প্রেসকে ব্যক্তিগতভাবে ধন্যবাদও জানিয়েছিলেন। লৌহজ গুণাবলীর অনেকগুলোই রাজনীতিক থেচারের মধ্যে ছিল।

ঠাণ্ডা লড়াইয়ের খুবই টানটান অবস্থা চলছে তখন। দীর্ঘ পনের বছর বাদে নির্বাচনে জিতে কনজারভেটিভ দল ক্ষমতায় আসে; ১৯৭৯ সালে, মার্গারেট থেচার প্রধানমন্ত্রী হন। তাঁর খরখরে বাজপাখিতুল্য বৈদেশিক নীতি সুন্দরভাবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট রিগানের নীতির সঙ্গে মিলে যায়। ১৯৭৬ সালের সোভিয়েতবিরোধী বক্তব্য কাজে প্রমাণের সুযোগ আসে থেচারের। ইউরোপে কনভেনশনাল সামরিক শ্রেষ্ঠতা অর্জনের সম্পূরক হিসেবে সোভিয়েতরা যখন মধ্যপাল্লার পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র এসএস-২০ বসানোর পাঁয়তারা করে, তার সদুত্তর দেওয়ার জন্য ন্যাটোভুক্ত জোট তখন পশ্চিম ইউরোপে পারমাণবিক ব্যালিষ্টিক ও ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র সিএলসিএম স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেয়। থেচার অগ্রদূতের ভূমিকা নেন। যুক্তরাজ্যের গ্রীনহামে কমন বেইজ স্থাপনের ব্যবস্থা হয়। এর বিরুদ্ধে বেশ কয়েকমাস ধরে বিক্ষোভ মিছিল হলেও ইউরোপে ন্যাটোর প্রথম রকেট ঘাঁটি প্রতিষ্ঠা সম্পন্ন হয়ে যায়।

তারপরে আসে রিগানের সেই স্ট্র্যাটেজিক ডিফেন্স ইনিশিয়েটিভ; শরীরের রক্ত হিম করে দেওয়া 'ষ্টার ওয়ার্স' কৌশলটি। ইউরোপে থেচার হন রিগানের অতিনির্ভরশীল বন্ধু। ১৯৮৩ সালে এর বিস্তারণ সোভিয়েত ইউনিয়নকে অস্ত্র-প্রতিযোগিতায় নামতে বাধ্য করে; যা দেশটির অর্থনীতির ওপর বিশাল ভারি পাথর হয়ে বসে। ইত্যোবসরে সে বছরেরই অক্টোবর মাসে থেচারকে কিছু না জানিয়ে রিগান গ্রেনাডা আক্রমণ করে বসেন। থেচার এর তীব্র প্রতিবাদ করেন; জবাবে রিগান তাঁকে সান্ত্বনা দিয়ে বলেন যে, আসলে আক্রমণের কোনো পরিকল্পনা তাঁর ছিল না। এ কারণেই থেচারের মনে হয় যে, রিগানের উপর আর কখনও-ই শতভাগ আস্থা রাখা ঠিক হবে না।

যাহোক, থেচার তখন কী ভাবছিলেন? রাজনৈতিক অদৃষ্ট কি একেই বলে! সোভিয়েতদের ঠেকানোর বদলে, বরং তাদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার দুর্লভ এক সুযোগ আসে তাঁর কাছে। সুযোগের পূর্ণ সদ্ব্যবহারে মনোনিবেশ করেন তিনি। এখানেই তাঁর সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক সাফল্য। ১৯৮৪ সালে পলিটব্যুরোর সদস্য মিখায়েল গর্বাচেভকে থেচার ১০নং ডাউনিং স্ট্রিটের বাড়িতে আমন্ত্রণ জানান। গর্বাচেভ তখনও সরকারিভাবে সোভিয়েত নেতা হননি। অপরদিকে থেচার তাঁর কট্টর সোভিয়েতবিরোধী নীতি ত্যাগ করেছেন বলে প্রতীয়মান হয়। গর্বাচেভের সঙ্গে আলোচনা করে তাঁর মনে হয় যে 'এঁর সঙ্গে ফলপ্রসূ আলোচনা সম্ভব'। গর্বাচেভের প্রতি তাঁর ইতিবাচক মন্তব্য 'ভালো লেগেছে' সারা বিশ্বে মিডিয়ার হেডলাইন হয়ে ছড়িয়ে পড়ে।

পরবর্তীকালে দুজনের মধ্যে একাধিক আলোচনা হয়, এবং সোভিয়েত নেতৃত্বও বুঝতে পারেন যে সমরাস্ত্র প্রতিযোগিতার যুদ্ধে কেউই বিজয়ী হবে না। ফলস্বরূপ, ১৯৮৭ সালে যুক্তরাষ্ট্র ও সোভিয়েত ইউনিয়ন মধ্যপাল্লার পারমাণবিক শক্তি চুক্তি সই করে; বিশ্ববাসী হাঁপ ছেড়ে বাঁচে।

থেচার আসলে তাঁর কট্টর সোভিয়েতবিরোধী নীতি পরিত্যাগ করেননি কখনও-ই। প্রথম সাক্ষাতের দিন গর্বাচেভকে সাদর অভ্যর্থনা জানাতে যেমন কোনো কার্পণ্য করেননি, আবার তাঁকে 'আমি কমিউনিজম ঘৃণা করি' কথাটিও বলেছিলেন অনায়াসে। পূর্ব ইউরোপের প্রশ্নে, এ উক্তি থেচারকে বিপুল পরিমাণের পরিধ্বংসী শক্তি ও ক্ষমতার অধিকারী করে, এবং তিনি নৈপুণ্যের সঙ্গে এর ব্যবহারও করেন। তাঁর অবস্থান সামান্য উঁচুতে চলে আসে। যেমন, পোল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট জেনারেল ইয়ারুজেলস্কির সঙ্গে মিটিং করে তিনি চলে যান সলিডারিটি আন্দোলনের নেতা লেখ ভালেসার সঙ্গে কথা বলতে। এখানেই থেচারের কূটনৈতিক ক্যারিজমার পূর্ণ বিকাশ ঘটে।

তবে সোভিয়েত শিবিরের জনগণ কর্তৃক গর্বাচেভের গ্লাসনস্ত ও পেরেস্ত্রয়কার প্রতি অপরিমেয় সমর্থনও যে থেচারের আপাত সহজ সাফল্যে বিশাল ইতিবাচক ভূমিকা রাখে, তা মানতেই হয়। এরপর আরও পাঁচ বছর যুক্তরাষ্ট্র, সোভিয়েত ইউনিয়ন ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে কূটনীতি চলার পর যখন প্রথম গণপ্রতিবাদ পূর্ব জার্মানিতে শুরু হয়, দুই জার্মানির একীকরণের বিষয়টি অবশ্যম্ভাবী দেখে থেচার গর্বাচেভকে সরাসরি বলেন, 'আমরা সংযুক্ত জার্মানি চাই না'। তাঁর এ উক্তির মধ্যে দেশটি দুই দুইটি মহাযুদ্ধ বাঁধিয়েছিল বলে একটি ভয়মিশ্রিত আশঙ্কা ছাড়াও, আরও কিছু রাজনৈতিক কারণ ছিল। তবে তা ভিন্নভাবে আলোচনার দাবি রাখে। এখানে থেচারকে দেখি জাতীয় স্বার্থ প্রথম; আন্তর্জাতিক কমিউনিষ্ট বিরোধী স্বার্থ দ্বিতীয় স্থানে।

যেসব উপাদান সোভিয়েত ইউনিয়নের ভাঙন অবশ্যম্ভাবী করে তুলে, থেচার তাতে নির্ণায়ক ভূমিকা পালন করেন নি, এবং তা আলাদাভাবে আলোচনাসাপেক্ষ।

প্রধানমন্ত্রী থেচারের সবচেয়ে সঙ্কটময় সময় ছিল আর্জেন্টিনার বিরুদ্ধে ফকল্যান্ড যুদ্ধে জড়িয়ে পড়া। এ যুদ্ধ বিজয়ই তাঁকে দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতাসীন হতে সাহায্য করে।

প্রধানমন্ত্রী হিসেবে থেচারের দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবন ছিল বর্ণাঢ্য। তাই তাঁর মৃত্যুসংবাদও সমালোচনা ও প্রশংসা মিলিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করেছে। তিনি বলে গিয়েছিলেন তিনি রাষ্ট্রীয় অন্তেষ্টিক্রিয়া চান না। কিন্তু তাঁকে সেই মাপেরই অন্তেষ্টিক্রিয়া দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এর বিরুদ্ধে যে প্রতিবাদ মিছিল, বিক্ষোভ, গান রচনা ইত্যাদি হয়েছে তাতে বিস্ময়াকুল হওয়ারও কিছু নেই।

নাদিরা মজুমদার : বিশ্লেষক, লেখক, সাংবাদিক।