সুবর্ণ সময়ে সুবর্ণজয়ন্তী

মুহাম্মদ শফিকুর রহমান
Published : 15 Dec 2021, 11:25 AM
Updated : 15 Dec 2021, 11:25 AM

বৈরী সময় অতিক্রম করে স্বাধীনতার ৫০ বছর সুবর্ণজয়ন্তী পূর্ণ হওয়ার পথে এখন সুবর্ণ সময় সুবর্ণ সময়ে সুবর্ণজয়ন্তীএকজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে এতদিন বেঁচে থাকা এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর কার্যক্রমে এতটুকু ভূমিকা হলেও রাখতে পারা কম গৌরবের কথা নয় আজ কেবলই গাইতে ইচ্ছে করছে– 'আহা কি আনন্দ আকাশে বাতাসে'

আমরা অবশ্যই ভাগ্যবান যে, বাঙালির জাতি-রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাতা পিতা, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি ইতিহাসের মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন বীর কন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনা পিতার পদরেখা অনুসরণ করে প্রতিটি স্বপ্ন অক্ষরে অক্ষরে বাস্তবায়ন করে চলেছেন এবং আমরা তা দেখলাম, দেখছি, উপভোগ- করলাম, করছি

আজ বাংলায় একটি মানুষও না খেয়ে থাকেনা, মানুষের মর্যাদা পুনর্প্রতিষ্ঠিত, সমুন্নত আমরা তা দেখে গেলামএর মূল কারণ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার অদম্য সাহস, সততা, দূরদর্শিতা এবং আদর্শে অবিচলতা সেইসাথে বাংলার দেশপ্রেমিক জনগণকেও ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা যারা সংগঠন দিয়ে ভোট দিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও আমাদের সেবার সুযোগ করে দিয়েছেন

এই ৫০ বছরে আমাদের অর্জন যেমন ঈর্ষণীয়, তেমনি বেদনার বালুচরও কম বিস্তৃত নয় ১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট ঘাতক বুলেট কেড়ে নিয়েছে আমাদের ত্রাতা জাতির পিতাকে কেড়ে নিয়েছে তার সহধর্মিণী রাজনৈতিক উপদেষ্টা শ্রদ্ধেয় বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিবকে কেড়ে নিয়েছে সময়ের মেধাবী সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধা ক্যাপ্টেন শেখ কামালকে, কেড়ে নিয়েছে বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ জামালকে, কেড়ে নিয়েছে শিশু শেখ রাসেলকে, কেড়ে নিয়েছে তৎকালীন যুব সমাজের আইকন যুদ্ধদিনের সবচেয়ে চৌকস বাহিনী বিএলএফ বা মুজিব বাহিনীর প্রধান সংগঠক ও অধিনায়ক শেখ ফজলুল হক মনিকে এবং তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী আরজু মনিকে। কেড়ে নিয়েছে জাতির পিতার অনুপস্থিতে মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনাকারী জাতীয় চার নেতা এবং মুজিবনগর সরকারের অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি ও মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক তথা সুপ্রিম কমান্ডার অব আর্ম ফোর্সেস সৈয়দ নজরুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ, এম মনসুর আলী ও এ এইচ এম কামরুজ্জামানকে আমরা ২০০৪ সালের ২১ অগাস্ট বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে গ্রেনেড হামলায় নারী নেত্রী আইভী রহমানসহ ২৪ জন নেতাকর্মীকে গ্রেনেডের স্প্লিন্টারে আহত হয়েছে তিন শরও বেশি নেতাকর্মী, জনতা আহতদের মধ্যে স্প্লিন্টারের যন্ত্রণা সয়ে সয়ে ইহলোক ত্যাগ করেছেন জাতীয় নেতা আব্দুর রাজ্জাক, মেয়র মোহাম্মদ হানিফ ও সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত এর আগে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে আমরা হারিয়েছি ৩০ লাখ শহীদ, ৩১৩ জন বুদ্ধিজীবী এবং ৫ লাখেরও বেশি মা-বোনের জীবন ও সম্ভ্রম। এ যেন এক আনন্দ-বেদনার মহাকাব্য আমাদের প্রধান কবি শামসুর রাহমানের কবিতা তিনটি পঙ্ক্তি- 

"… 

তুমি আসবে ব'লে, হে স্বাধীনতা,

সাকিনা বিবির কপাল ভাঙলো,

সিঁথির সিঁদুর গেল হরিদাসীর।…"

এক কোটি নারী-শিশু-কিশোর, বৃদ্ধ-বৃদ্ধা দেশত্যাগ করে পশ্চিমবাংলার শরণার্থী শিবিরে জীবন কাটিয়েছে ৯ মাসের মৃত্যুর মিছিলে সেদিনের সেই কষ্টের একটি খণ্ড চিত্র ফুটে ওঠেছে আমেরিকান কবি অ্যালেন গিন্সবার্গের কবিতায় 

Millions of babies watching the skies
Bellies swollen, with big round eyes
On Jessore Road–long bamboo huts
No place to shit but sand channel ruts

Millions of fathers in rain
Millions of mothers in pain
Millions of brothers in woe
Millions of sisters nowhere to go…

সেপ্টেম্বর অন যশোর রোড, অ্যালেন গিন্সবার্গ

দেশের অভ্যন্তরেও দুই কোটিরও বেশি মানুষ আজ এ বাড়ি, কাল ও বাড়ি করে নয় মাস কোনওরকম খেয়ে, না খেয়ে জীবন কাটিয়েছে এ বাড়ি, ওবাড়ি করতে করতে অনেকে হারিয়ে গেছেন প্রখ্যাত সঙ্গীতজ্ঞ বারীণ মজুমদার ও ইলা মজুমদারের ১০/১১ বছরের কন্যা হারিয়ে যায়, আর খুঁজে পাওয়া যায়নি আজকের সঙ্গীতজ্ঞ বাপ্পা মজুমদারও তাদের সন্তান বস্তুত বাংলাদেশ রক্তের ওপর হেঁটে চলেছে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যা করার জন্য অন্তত ২০ বার গুলি বোমা গ্রেনেড হামলার মতো অনেক দুঃখজনক ঘটনা ঘটেছে কিন্তু শেখ হাসিনা তার আদর্শ এবং লক্ষ্য থেকে এতটুকু বিচ্যুত হননি বরং সাহসের সাথে এগিয়ে চলেছেন আল্লাহ সহায় রাখে আল্লাহ মারে কে?

আজ একটি তথ্য তুলে ধরতে চাই মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ ও তাদের দোসররা দেশে দেশে ক্যু করিয়ে তাদের চামচা সরকার বসায় তবে প্রথমেই আসল তাবেদারকে সামনে আনে না প্রথমে কিছু 'ডামি' আনে বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও তারা সেই পদ্ধতি অবলম্বন করেছে প্রথমে খন্দকার মোশতাক, তারপর বিচারপতি সায়েম এবং সর্বশেষ তাদের মূল তাবেদার জেনারেল জিয়াকে সামনে আনে তাকে স্থায়ীভাবে প্রতিষ্ঠিত করে তাদের এজেন্ট হিসেবে এবং তার মাধ্যমে পাকিস্তানকে আবার বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠা করবে উদাহরণও কম নয়জিয়া বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পর জেলখানায় চার জাতীয় নেতাকে হত্যা করে এবং সাথে সাথে বেতার টেলিভিশন থেকে নির্বাসনে পাঠায়- জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু, বাঙালি জাতির পিতা এবং সংবিধান থেকে নির্বাসিত হয় বাঙালি জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা।

সবচেয়ে বড় কথা পাঠ্যপুস্তকে ইতিহাস বিকৃতির এক হীন কাজে হাত দেবার পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধের বিজয়ের মাধ্যমে বিতাড়িত ও নিষিদ্ধ ঘোষিত সবকিছু আবার পুনর্প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করে। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে পাকিদের গণহত্যার সহযোগী জামাত, মুসলিম লীগ, নেজামে ইসলামকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে আবার রাজনীতিতে প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করে। জামাত নেতা গোলাম আযমসহ যাদের নাগরিকত্ব বাতিল করা হয়েছিল তাদের নাগরিকত্ব ফিরিয়ে দেয় গোলাম আযমকে পাকিস্তান থেকে ফিরিয়ে আনে। মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধের শক্তির ওপর চালানো হয় অকথ্য নির্যাতন। জিয়া গণতন্ত্রকে সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করে মির্জা ফখরুলরা এখন 'গণতন্ত্র' 'গণতন্ত্র' বলতে বলতে নিজের দাঁত খসানোর অবস্থায় পৌঁছেছে যদি প্রশ্ন করা হয় কিসের গণতন্ত্র? জিয়া কোন গণতন্ত্রে ক্ষমতায় বসেছিল? তার হ্যাঁ-না ভোট কোন গণতন্ত্র? প্রশ্ন ওঠে 'হ্যাঁ' জিয়া হলে, 'না' কে? জবাব মেলেনি

জিয়ার 'রাষ্ট্রপতি ভোট' কোন গণতন্ত্র, যেখানে অনেক কেন্দ্রে মোট ভোটেরও বেশি ভোট পড়েছিল এই কি গণতন্ত্র? ১৯৭৯ সালে কার্ফিউ-র মধ্যে পার্লামেন্ট নির্বাচন কোন গণতন্ত্র? জাতির পিতা কে খুন করা কোন গণতন্ত্র? খুনিদের বিচারের বাইরে রাখা কোন গণতন্ত্র? খুনিদের বিদেশি দূতাবাসের বড় বড় চাকরি দেওয়া কোন গণতন্ত্র? পেট্রোল বোমা মেরে মানুষ হত্যা কোন গণতন্ত্র?

তারা আজ 'গণতন্ত্র' চান, 'উন্নয়ন' চান না এমন আনাড়ি পলিটিকাল পার্টি কেউ দেখেছে কী? বস্তুত খালেদাও জিয়ার পথেই চলেন জীবন যা-ই থাকুক জিয়ার মৃত্যুর পর খালেদাও তার পথেই চলেছেন খুনি-রাজাকারদের হাত ধরে রাজনীতির নামে দেশদ্রোহী কার্যক্রম করেছেন পদ্মা সেতুর মত কোন সেতু দূরে থাক, খালের ওপর দশটা সাঁকোও তারা করতে পারেনিআল্লাহ পাকের দরবারে অশেষ কৃতজ্ঞতা তিনি বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানাকে বাঁচিয়ে রেখেছেন এবং এইভাবে জিয়া-খালেদা-এরশাদের পাকিস্তানিকরণ থেকে আমরা বাঙালিরা, স্বাধীন বাংলাদেশ বেঁচে গেল বাংলাদেশ আবার জাতির পিতার নির্দেশিত মুক্তিযুদ্ধের ধারায় হাঁটতে শুরু করে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণএকটি মানুষও না খেয়ে থাকে না। এরচেয়ে বড় গণতন্ত্র কী? মানবধিকার কী?

আমরা খাদ্য রপ্তানি করছি, আমাদের গার্মেন্টস শিল্প বিশ্বের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম, আমাদের পাট শিল্প বিশ্বে সমাদৃত, দেশ শতকরা একশ ভাগ বিদ্যুতায়িত, গ্রামে বাড়ি বাড়ি কম্পিউটার, বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা ২৪ হাজার মেগাওয়াট, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৫০ বিলিয়ন ইউএস ডলার, মাথাপিছু আয় আড়াই হাজার ইউএস ডলার। জিডিপি টানা ১১ বছর ৬ শতাংশের উপরে, সে তুলনায় মূল্যস্ফীতি ৬ শতাংশের নিচে। মানুষের গড় আয়ু ৭৪ বছর। কোভিড ১৯ উন্নয়ন কার্যক্রম কিছুটা ধীরগতি করলেও থামাতে পারেনি জিডিপি, মাথাপিছু আয়, কৃষি ও শিল্প উৎপাদন কমাতে পারেনিকোভিডের সময় ঘরে ঘরে খাদ্য পৌছে দেওয়া হয়েছে।

বিশ্বব্যাংক অর্থায়ন বন্ধ করলেও পদ্মা সেতুর নির্মাণ ঠেকাতে পারেনি। নিজস্ব অর্থে পদ্মা সেতুর নির্মাণ সমাপ্তির পথে বছরের শেষার্ধ পুরো কাজ শেষ হবে। অল্পদিনেই সড়ক যোগাযোগ খুলে দেওয়া হবে। এর পরপরই খুলে যাবে রেলপথও। 

এইভাবে গহীন গাঙে পদ্মাসেতু থেকে শুরু করে মহাকাশের বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট, কর্ণফুলী টানেল থেকে পায়রা গভীর সমুদ্রবন্দর, ঢাকার মেট্রোরেল থেকে ঢাকা চট্টগ্রাম খুলনা রাজশাহীসহ মহানগরীর জীবনযাত্রা সহজীকরণে শতশত ফ্লাইওভার, ফুটওভারব্রিজ, রাস্তা পারাপারে আন্ডার পাস বা সাবওয়ে, সর্বত্র কর্মযজ্ঞ, একেকটি বিশাল প্রকল্প। 

আমাদের প্রধানমন্ত্রী স্বপ্ন দেখতে জানেন- স্বপ্ন দেখাতে জানেন, স্বপ্নের বাস্তবায়ন করেন। অদ্যম সাহস। ছোট চিন্তা একদমই করেন না কোথায় ছিল বাংলাদেশ, আজ কোথায়! এটাই খালেদা-ফখরুলদের গাত্রদাহ জাতির পিতার তার ৭ই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণে বলেছিলেন-

"সাত কোটি মানুষকে দাবায়ে রাখতে পারবা না,

কেউ দাবায়ে রাখতে পারেনি"

আজ ভারতের মত বড় বড় অর্থনীতিও আমাদের পেছনে পাকিস্তানেরতো খবরই নেই ভারতের হিন্দুস্তান টাইমস (২৫ অক্টোবর ২০২০) সংখ্যায় বাংলাদেশের অর্থনীতির অগ্রযাত্রার ওপর নিরন্ধের শিরোনাম করেছে- Bangladesh: from a basket case to a robust economy.

বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম (২২ অক্টোবর ২০২০) শিরোনাম করেছে- 'ভারতকে পেছনে ফেলার কৃতিত্ব শেখ হাসিনা পাবেন'

ন্যাশনাল হেরাল্ড (১৪ অক্টোবর ২০২০) শিরোনাম করেছে- India must compete with Bangladesh first before competing with the us and china.

একসময়ের বিশ্ববিখ্যাত ক্রিকেটার ইমরান খান পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হয়ে রাজনীতির মাঠকেও ক্রিকেটের মাঠ ভেবে বক্তৃতা মেরে সেঞ্চুরি করতে গিয়ে ক্যাচ খেয়ে আউট হয়ে গেলেন ভদ্রলোক এক জনাকীর্ণ সংবাদ সম্মেলনে পাকিস্তানের জনগণের কাছে একটা আবদার করলেন- 'হামে পাঁচ সাল কি মহল্লত দি-জিয়ে। হাম পাকিস্তানকো সুইজারল্যান্ড বানা দেয়েঙ্গে…'

একজন সাংবাদিক বললেন, 'মুহতারাম উজিরে আজম, হামে সুইজারল্যান্ড নেহি চাহিয়ে। আপ পাঁচ সাল কেয়া, দশ সাল লি-জিয়ে, হামে এক বাংলাদেশ বানা দি-জিয়ে'।

এই পাকিস্তান ২৩ বছর আমাদের সম্পদ লুণ্ঠন করে লাহোর-ইসলামাবাদ গড়ে তুলেছিল সাথে সাথে এক বিশাল সেনাবাহিনীও আর এই সেই পাকিস্তান এবং তথাকথিত দুর্ধর্ষ সেনাবাহিনী যার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ালেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তার ঘোষণায়, ডাকে এবং নেতৃত্বে নিরস্ত্র বাঙালি সশস্ত্র রূপ ধারণ করে ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধ করে স্বাধীন সার্বভৌম গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করেছে ৫০ বছর আগে আর আজ ৫১ বছরে পা দিয়ে তারই কন্যা বর্তমান বিশ্বের অদম্য সাহসী রাষ্ট্রনেতা প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আশেপাশের দেশগুলোকে পেছনে ফেলে এগিয়ে চলেছে বিশ্বব্যাপী কোভিড-১৯ এর আকস্মিক ছোবল অন্য সব দেশের মত বাংলাদেশের অর্থনীতি উন্নয়নও কিছুটা ধাক্কা খেলেও সমৃদ্ধির অগ্রযাত্রাকে থামাতে পারেনি। 

ঝড়ে পড়া নৌকার মাঝির মত শক্ত হাতে হাল ধরে আছেন শেখ হাসিনা, আমাদের প্রিয় প্রধানমন্ত্রী ইতিহাসের বীরকন্যা আমরা যদি আজকের পাকিস্তানের দিকে তাকাই দেখব প্রতিটি সূচকেই পাকিস্তান আমাদের চেয়ে পিছিয়ে। যেমন গত অর্থবছরের চিত্র দেখি-


আমার একটা আফসোস ছিল জাতির পিতার ঘোষণায় ও ডাকে আমরা যখন মুক্তিযুদ্ধে যাবার প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম তখন স্বাধীন বাংলা বেতার ও আকাশবাণীর খবর ছিল কুষ্টিয়ার বৈদ্যনাথ তলার আম্রকাননে স্বাধীন বাংলার বিপ্লবী সরকার শপথ গ্রহণ করছে ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল। আইয়ুবের সামরিক শাসন থেকে শুরু করে মুক্তিযুদ্ধ প্রতিটি লড়াইয়ের কর্মী ছিলাম। অথচ আম্রকাননে উপস্থিত থাকতে পারিনি বলে আফসোস করতাম। আল্লাহ পাকের শুকরিয়া মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অনুগ্রহে এই সংসদের ফ্লোরে দাঁড়িয়ে স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তির বিশেষ অধিবেশনে বক্তৃতা দেওয়ার সুযোগ পেলাম। আর আফসোস থাকলো না। ধন্যবাদ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। ধন্যবাদ ফরিদগঞ্জের জনগণকে যারা ভোট দিয়ে আমাকে এই সুযোগ করে দিয়েছেন।

(লেখাটি জাতীয় সংসদে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে সংসদ সদস্য মুহম্মদ শফিকুর রহমান এর বক্তব্য অনুলিপি)