যারে দেখতে নারি তার চলন বাঁকা

শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিকশামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক
Published : 20 Jan 2021, 02:20 PM
Updated : 20 Jan 2021, 02:20 PM

কয়েকদিন আগে এক অপরিচিত ব্যক্তি নিজেকে অধ্যাপক পরিচয় দিয়ে ফোন করে বললেন- "জানেন ভারত সরকার করোনা টিকা রপ্তানির উপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে, যার মানে বাংলাদেশে ভারতের করোনা টিকা আসবে না।" এ কথাটি বলার সময় তিনি বেশ আনন্দিত ছিলেন। আমি তাকে বললাম, আপনি যা বলছেন, তা যদি সত্যি হয় তাহলে সেটিতো একটি দুঃসংবাদ, কিন্তু আপনি মনে হয় এই সংবাদে আনন্দিত। তিনি বললেন, "আমাদের সরকার এখন বাধ্য হবে ভারতের সাথে বন্ধুত্ব খর্ব করতে। তাছাড়া আপনি তো অনেক লেখালেখি করেন, আপনিও ভারতের বিরুদ্ধে লেখার হাতিয়ার পাবেন।"

তার কথায় সেই প্রবাদটি মনে পড়ল 'নিজের কান কেটে অন্যের যাত্রা ভঙ্গ করা', অর্থাৎ দেশের মানুষ মরে যাবে তাতে কিছু আসে যায় না, তবুও ভারতের সাথে বন্ধুত্ব যেন খর্ব হয়। কথা শুনে ১৯৭১ এ লন্ডনের একটি কথা মনে পড়ল। মাসটি ছিল জুন। দেশ থেকে প্রতিদিনই গণহত্যার খবর আসছিল। এমনি এক দিনে এক চীনপন্থী ব্যক্তি বলতে শুরু করল- "পাকিস্তানিরা এত লোক মারছে আর ভারত কেন সরাসরি আমাদের সাথে থেকে যুদ্ধে নামছে না। না নামলে তো দেশের সব মানুষ শেষ হয়ে যাবে। টিক্কা খান তো বলেছে, আমি এদেশের মাটি চাই, মানুষ চাই না।" সে সময় অবশ্য মাওবাদী চীন ছিল একটি সত্যিকার অর্থে মার্কসবাদী দেশ। তখন বর্তমানের মতো খোলা বাজার অর্থনীতি, বড় বড় ব্যক্তি মালিকানার ব্যবসা, পুঁজিবাদের পূজা, আলিবাবা এবং জ্যাক মার মতো কোম্পানি বা ব্যক্তির উত্থানের নেশায় চীন সরকার নেশাগ্রস্ত হয়নি। যাই হোক দেশ পাকিস্তানি শৃঙ্খল মুক্ত হওয়ার পর সেই একই ব্যক্তি তীব্র ভাষায় এই বলে ভারতের সমালোচনা শুরু করলেন যে- ভারত পাকিস্তানিদের ফেলে যাওয়া সব অস্ত্র নিয়ে গেল।

আমি বললাম, "পাকিস্তানিরা যেসব অস্ত্র ফেলে গেছে এর সিংহভাগ চীনা অস্ত্র, আর ভারত চীনা অস্ত্র ব্যবহার করে না।" এবং যখন আরো বললাম, এই যুদ্ধে ভারতের কত অস্ত্র নষ্ট হয়েছে, কত টাকা খরচ হয়েছে, তারপরও তিনি নির্বাক না হয়ে বলতে লাগলেন- "আমাদের অনেক কিছু নিয়ে গেছে। কী সেই জিনিস, জিজ্ঞেস করলে তিনি এই বলে হাস্যকর জবাব দিলেন- "কেন আমাদের মুক্তাগাছার সব মন্ডা ভারতীয় সৈন্যরা নিয়ে গেছে না, পোড়াবাড়ির চমচম নিয়ে গেছে না।"

সেই ফোন করা ব্যক্তির বলা খবরটি শুনে আমি চিন্তিত হয়ে পড়লাম। অবশ্য একজন আইনজ্ঞ হিসেবে আমি বিশ্বাস করতে পারিনি যে ভারত আমাদের দেশে টিকা রপ্তানি বন্ধ করতে পারবে, কেননা রপ্তানির চুক্তিটি হয়েছে দুই সরকারের মধ্যে, যাকে আন্তর্জাতিক আইনের ভাষায় বলে দ্বিপক্ষীয় চুক্তি। এটি কোনো কোম্পানির সাথে চুক্তি নয়। যাই হোক, পরে খোঁজ নিয়ে জানলাম আমার ধারণাই ঠিক। অর্থাৎ বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের টিকা যথানিয়মেই আসবে। এটা জানার পর সেই আনন্দিত ব্যক্তিকে, যার নাম্বার লিখে রেখেছিলাম, ফোন করে সব বলার পর উনি খুবই মন খারাপ করলেন এই জেনে যে, বাংলাদেশে ভারতীয় টিকা বন্ধ হবে না, আর ভারতের সাথে বন্ধুত্বেও চিড় ধরবে না।

আমাদের দেশে এমন কিছু লোক রয়েছে যারা মজ্জাগতভাবে ভারতবিরোধী বা ইংরেজি ভাষায় বলতে গেলে- pathologically anti-Indian. অবশ্য তাদের এক বিরাট অংশ হচ্ছে, তারা যারা পাকিস্তান ভেঙ্গে বাংলাদেশ স্বাধীন হোক তা চায়নি বা তাদের বংশধরেরা। আর কিছু হচ্ছে চীনপন্থি, যদিও চীনকে এখন আর সমাজতান্ত্রিক বা আদর্শিক দেশ বলা যায় না, এটি এখন পুঁজিবাদী দেশেরও ঊর্ধ্বে যেখানে রয়েছে আলিবাবা, হুয়াওয়ের মতো বিরাটাকার ব্যক্তি মালিকানার কোম্পানি এবং জ্যাক মার মতো বেশ কিছু বিশ্বশ্রেষ্ঠ ধনকুবের।

এদের ভারত বিরোধিতার মূল কারণ ভারত আমাদের মুক্তিযুদ্ধে অপরিহার্য সহায়ক শক্তি ছিল। তাদের মতে মুক্তিযুদ্ধে আমাদের পাশে দাঁড়িয়ে ভারত মস্তবড় অন্যায় করে ফেলেছে, তাদের পেয়ারা ইসলামিক রিপাবলিক পাকিস্তানকে ভেঙ্গে দিয়েছে। তাই তাদের দৃষ্টিতে ভারতের চলন সবসময়ই বাঁকা। তবে এদের সংখ্যা খুবই কম। দেশের বিশাল সংখ্যাগরিষ্ঠ লোক ভারতের সাথে সুসম্পর্ক রাখতে চায়। ভারতের সব কাজই যে সমালোচনার ঊর্ধ্বে তা নয়। এটি হতেও পারে না। ভারত অন্যায়ভাবে আমাদের স্বার্থবিরোধী কিছু করলে অবশ্যই ভারতের সমালোচনা করতে হবে। সে সব ক্ষেত্রে সমালোচনা সমর্থনযোগ্য। কিন্তু এসব মজ্জাগত ভারতবিরোধীরা সব কিছুতেই ভারতের দোষ খুঁজে, বাংলাদেশের অমঙ্গলই করছে, কেননা ভারত-বাংলাদেশ বন্ধুত্ব উভয় দেশের জন্যই মঙ্গলকর এবং আবশ্যকীয়।

বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পর জিয়াউর রহমান এবং ক্ষমতায় তার উত্তরসূরিরা দীর্ঘ ২৫ বছর ভারতবিরোধী নীতি এবং কার্যক্রম, যথা উত্তর-পূর্ব ভারতের জঙ্গিদের প্রত্যক্ষ সাহায্য দিয়ে ভারতের সহযোগিতা থেকে আমাদের বঞ্চিত করে বাংলাদেশের উন্নয়ন ২৫ বছর পিছিয়ে দিয়েছে। তারা ভারতবিরোধী কার্যক্রমে লিপ্ত না হলে ছিটমহল সমস্যা, গঙ্গার পানি বণ্টন সমস্যা, পার্বত্য চট্টগ্রাম সমস্যা ৩৬ বছর আগেই সমাধান হতো। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর আমরা আন্তর্জাতিক শালিসের মাধ্যমে যে সমুদ্র জয় করেছি, জিয়া এবং তার উত্তরসূরিরা ভারতবিরোধী অবস্থান না নিলে তা ২৫+১১=৩৬ বছর আগেই হয়ে যেত। সমুদ্র জয়ের ফলে দেশের অর্থনীতিতে আসবে অভাবনীয় উন্নতি যা দৃশ্যমান হবে সমুদ্রের গভীরে এবং তলদেশে যে প্রাকৃতিক এবং খনিজ সম্পদ রয়েছে তা উদ্ধার করার পর, যার জন্য কয়েক বছর অপেক্ষা করতে হবে। তাছাড়া সমুদ্রের মৎস্য সম্পদ পুরোপুরিভাবে আহরণ করার জন্যও অপেক্ষা করতে হবে। এখানে উল্লেখ্য যে, শালিস আদালতেও কোনো রাষ্ট্র একক ইচ্ছায় যেতে পারে না, এর জন্য প্রয়োজন উভয় রাষ্ট্রের সম্মতি, যদি ও জাতিসংঘ সমুদ্র কনভেনশনে শালিস আদালতে যাওয়ার বিধান রয়েছে। অর্থাৎ ভারত রাজি না হলে সালিসে যাওয়ার কোনো সুযোগ হতো না এবং বন্ধুত্বের মাধ্যমেই ভারতকে রাজি করানো হয়েছে, যা বর্তমান সরকারের বহু কূটনৈতিক সাফল্যের একটি। অতীতে এটি হলে বহু আগেই আমরা তার ফসল পেতাম, দেশ আজ আরো অনেক উন্নত হতো।

আজ আমাদের সবচেয়ে বড় সমস্যা রোহিঙ্গাদের নিয়ে। এ সমস্যা যে চীন জিইয়ে রেখেছে সে কথা বলার অপেক্ষা রাখে না। ২০১৭ সাল থেকে শুরু করে রোহিঙ্গা বিষয় জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে তিনবার উত্থাপিত হলে তিনবারই চীন-রাশিয়া মিয়ানমারের পক্ষে ভেটো দিয়ে রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধান বন্ধ করে দিয়েছে। নিরাপত্তা পরিষদ হচ্ছে জাতিসংঘের একমাত্র অঙ্গ যার প্রয়োগ ক্ষমতা এবং পুলিশি ক্ষমতা রয়েছে। পরিষদের স্থায়ী সদস্য হিসেবে চীনের রয়েছে ভেটো ক্ষমতা। চীন মিয়ানমারের পক্ষে ভেটো ক্ষমতার অপপ্রয়োগ না করলে বহু আগে নিরাপত্তা পরিষদেই রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান হয়ে যেত। কারণ রাশিয়াও সম্ভবত চীনকে অনুসরণ করত। অথচ এসব মজ্জাগত ভারতবিরোধীরা টু শব্দ করছে না চীনের বিরুদ্ধে। কারণ চীন আমাদের মুক্তিযুদ্ধে আমাদের বিরোধিতা করেছে, চীনের পাঠানো বুলেট দিয়েই ৩০ লাখ শহীদকে হত্যা করা হয়েছে। চীন যে আমাদের কর্মকর্তাদের ঘুষ দিয়ে হাতে-নাতে ধরা পড়ল, সে বিষয়েও তাদের মুখ বন্ধ।

সম্প্রতি জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে রোহিঙ্গা সমস্যা আলোচনায় এলে চীন সেখানেও মিয়ানমারের পক্ষে অর্থাৎ নিন্দা প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দেয়, আর ভারত কোনো পক্ষেই ভোট দেয়নি। এতে অন্য বহুজনের মতো আমিও ভারতের উপর ক্ষুব্ধ- কেন না, আমাদের বিশিষ্ট বন্ধু হিসেবে ভারতের উচিত ছিল ভোট দানে বিরত না থেকে প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেওয়া এবং সেটাই ছিল আমাদের ৭১-এর পরম এবং রক্তের সম্পর্কের বন্ধু ভারতের কাছ থেকে যৌক্তিক প্রত্যাশা। আশ্চর্যের ব্যাপার হলো এ ব্যাপারে মজ্জাগত ভারতবিরোধীরা চীন প্রস্তাবের বিরুদ্ধে ভোট দিলেও তার বিরুদ্ধে কোনো কথাই বলল না। অথচ ভোট থেকে বিরত ভারতের বিরুদ্ধে সোচ্চার। বিরত থাকা ভারতের ভূমিকা নিশ্চিতভাবে সমালোচনাযোগ্য, কিন্তু যে দেশটি প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দিল অর্থাৎ চীনের বিরুদ্ধে কি আরো কঠোর সমালোচনা হওয়া উচিত ছিল না? যদিও সাধারণ পরিষদের কোনো প্রয়োগ ক্ষমতা নেই, যা একান্তই নিরাপত্তা পরিষদের ক্ষমতা, তারপরও সাধারণ পরিষদের নিন্দা প্রস্তাব আন্তর্জাতিক অঙ্গনে অনেক প্রভাব বিস্তার করতে সহায়ক। কেননা সাধারণ পরিষদের কথা মানে গোটা বিশ্বের কথা। আন্তর্জাতিক আদালত বেশ কটি অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ প্রদান করেছেন মিয়ানমারের বিরুদ্ধে। কিন্তু মিয়ানমার সেগুলো পালন করছে না। আন্তর্জাতিক আদালতের নির্দেশ কোনো রাষ্ট্র অমান্য করলে তার বিরুদ্ধে প্রতিকার দেওয়ার ক্ষমতা একমাত্র নিরাপত্তা পরিষদেরই রয়েছে আর চীন নিরাপত্তা পরিষদে তাদের রক্ষা করবে জেনেই মিয়ানমার আন্তর্জাতিক আদালতের অন্তর্বর্তীকালীন আদেশগুলো ভঙ্গ করে চলছে। রোড অ্যান্ড বেল্ট প্রকল্পসহ মিয়ানমারে চীনের রয়েছে অজস্র স্বার্থসংশ্লিষ্টতা যার কারণে চীন মিয়ানমারবিরোধী পদক্ষেপ নিচ্ছে না। অথচ রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানের চাবিকাঠি চীনেরই হাতে। এটাও ঠিক রাশিয়াও মিয়ানমারের পক্ষে নিরাপত্তা পরিষদে ভেটো দিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু চীন ভেটো না দিলে রাশিয়াও মত পাল্টাতো বলে অনেক বিজ্ঞজন মনে করেন।

ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে আমি শ্রদ্ধার চোখেই দেখে থাকি, বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. জাফরুল্লাহ গণস্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠা করে বহু দরিদ্রজনকে স্বাস্থ্যসেবা দিচ্ছেন। কিন্তু মাঝেমধ্যে তিনি এমনসব উদ্ভট কথা বলেন যা সবাইকে অবাক করে এবং তিনি নিজেও লজ্জিত হন।

করোনার টিকা রপ্তানি ভারত বন্ধ করেছে, এই ভুল খবরটি প্রকাশের পর কাল বিলম্ব না করে ডা. জাফরুল্লাহ ভারতবিরোধী মন্তব্য করার সুযোগ হাতছাড়া করেন নাই। পরে যখন জানলেন- ভারতীয় টিকা যথাসময়ে বাংলাদেশে আসবে তখন তিনি ভোল পাল্টিয়ে এই মর্মে অসত্য বক্তব্য দিলেন- ভারত টিকাটি যে দামে কিনছে, তার দ্বিগুণ মূল্য নিচ্ছে আমাদের কাছ থেকে। এরপর বললেন, "ভারত ৪৩ শতাংশ বেশি মূল্যে এই টিকা আমাদের কাছে বিক্রি করছে।" ডা. জাফরুল্লাহর সে দাবিও সরকার অবান্তর এবং অসত্য বলে মন্তব্য করেছে। তার ওই দাবি তথ্যভিত্তিক নয়। তিনি আন্দাজভিত্তিক কথা বলে জনগণকে বিভ্রান্ত করেছেন। ভারতের টিকাটি কিন্তু অক্সফোর্ডের টিকা, যা ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট অক্সফোর্ডের লাইসেন্সে তৈরি করছে। করোনার টিকা নিয়ে চীন, রাশিয়া এবং ফাইজার কোম্পানিসহ বিশ্বের বিভিন্ন কোম্পানি মুনাফা লাভের প্রতিযোগিতায় নামলেও অক্সফোর্ড রয়েছে তার ঊর্ধ্বে। যার ফলে অক্সফোর্ডের টিকার মূল্য যেমন সর্বনিম্ন তেমনি এর গুণগতমানও অনেকের চেয়ে শ্রেয়। সে অর্থে বাংলাদেশ সরকার অক্সফোর্ড আবিষ্কৃত টিকা এনে প্রশংসারই দাবিদার হয়েছেন।

ভারত বা যেকোনও দেশ অন্যায়ভাবে আমাদের স্বার্থবিরোধী কিছু করলে তার সমালোচনা করা প্রতিটি দেশপ্রেমিকেরই দায়িত্ব, কিন্তু অন্যায়ভাবে প্যাথলোজিক্যাল ভারতবিরোধী হয়ে যারা সমালোচনা করে, তারা বাংলাদেশেরই ক্ষতি করছে, যেমন করেছে একাত্তর সালে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করে। তাদের মজ্জাগত ভারতবিরোধিতার পেছনে মূল কারণ দেশের মানুষকে পাকিস্তানি ভাবধারায় প্রভাবিত করে দেশকে আবার পাকিস্তানে রূপান্তরিত করা এবং মুক্তিযুদ্ধের দলকে হটানো। কিন্তু তাদের সে আশায় গুড়েবালি।

সরকার বেশি দামের কারণে ফাইজারের টিকা আমদানি করে নাই। চীনের ভ্যাকসিনের দামও বেশি এবং ৫০ শতাংশ ফলদায়ক, যা ব্রাজিলসহ বিভিন্ন দেশে প্রমাণিত হয়েছে। এর বিপরীতে সরকার আমদানি না করে স্বল্পমূল্য এবং প্রমাণিতভাবে অধিক কার্যকর অক্সফোর্ডের টিকা আনছে ভারতের সেরাম ইন্সটিটিউট থেকে। জানা গেছে পাকিস্তানও সেরামের টিকা কিনতে চাচ্ছে একই কারণে। টিকার ব্যাপারে ডা. জাফরুল্লাহর ব্যক্তিগত এবং গণস্বাস্থ্যগত কারণে ক্ষোভ রয়েছে, যার কারণ সরকার গণস্বাস্থ্যের করোনা নির্ণয় কিটকে স্বীকৃতি দেয়নি। আমি এ ব্যাপারে সম্পূর্ণ অজ্ঞ বলে আমার মন্তব্য করা ঠিক হবে না। কিন্তু এ কারণে ডা. জাফরুল্লাহর মতো এক সমাজ সেবকের উচিত নয় দৃশ্যত ভালো টিকা আমদানির বিরুদ্ধে কথা বলে অমঙ্গলকর কাজে উৎসাহ জোগানো।

সর্বশেষ খবরে প্রকাশ ভারত করোনা টিকার অতিরিক্ত ২০ লাখ ডোজ বাংলাদেশকে উপহার হিসেবে দেবে, যা ২১ জানুয়ারি ঢাকা পৌঁছাবে। আমাকে ফোন করা সেই লোক এবং ডা. জাফরুল্লাহকে জিজ্ঞেস করতে ইচ্ছে করছে এখন তারা কী বলবেন! তাদের বলতে চাই মজ্জাগতভাবে ভারতবিরোধিতা করে স্বাধীনতাবিরোধিদের মদত জোগাবেন না।