মহানবীর ধারাবাহিক ব্যঙ্গচিত্র এবং ফ্রান্সের সেক্যুলারিজমের দ্বিচারিতা

সাঈদ ইফতেখার আহমেদসাঈদ ইফতেখার আহমেদ
Published : 29 Oct 2020, 04:45 PM
Updated : 29 Oct 2020, 04:45 PM

ধর্মভিত্তিক, নাস্তিক্যবাদী এবং সেক্যুলার, রাষ্ট্রের মাঝে পার্থক্যের জায়গাটা কোথায়? 

ধর্মভিত্তিক রাষ্ট্রের মূল কথা হচ্ছে- রাষ্ট্রের একটি ধর্মীয় পরিচয় বা রাষ্ট্র ধর্ম থাকবে। রাষ্ট্র শুধু একটি ধর্মের প্রচার, প্রসার এবং বিকাশেই ভূমিকা পালন করবে। একটি বিশেষ ধর্ম ব্যতিত অন্য ধর্মের অনুসারীরা  রাষ্ট্রে সম অধিকার পাবেন না। উদাহরণস্বরূপ আধুনিক কালের ইরানের কথা বলা যায়। রাষ্ট্রটি শিয়া ঘরানার ইসলাম-ভিত্তিক হবার ফলে সেখানে সুন্নি মুসলমান এবং ইহুদীরা দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক হিসেবে জীবন যাপন করেন। তারা শিয়াদের মত সমঅধিকার ভোগ করেন না।  

নাস্তিক্যবাদী রাষ্ট্র হচ্ছে সেটি যা কোনও ধর্মের প্রচার বা প্রসারে উৎসাহ প্রদান তো করেই না বরং সমস্ত ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানকে বলপূর্বক নিশ্চিহ্ন করতে চায়। এ ধরনের রাষ্ট্রে ধর্মের অনুসারীয়া নানা ধরনের নিপীড়ন এবং বৈষম্যের শিকার হন। ধর্মভিত্তিক রাষ্ট্রের মত এ ধরনের রাষ্ট্রে শুধু নাস্তিকরাই তাদের চিন্তার প্রচার এবং প্রসারে রাষ্ট্রের সহায়তা পেয়ে থাকেন। অর্থাৎ, ধর্ম সংক্রান্ত চিন্তায় রাষ্ট্র নাস্তিকদের পক্ষে দাঁড়ায় বা রাষ্ট্র নাস্তিকদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। উদাহারণস্বরূপ স্তালিনের সোভিয়েত ইউনিয়নের কথা বলা যায়।

গুণগতভাবে নাস্তিক্যবাদী এবং ধর্মভিত্তিক রাষ্ট্র একই মুদ্রার ভিন্ন পিঠ। অন্য ধর্ম পরিচয়ের মানুষ এসব রাষ্ট্রের অংশীদার হতে পারেন না। তারা দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক হিসেবে নানা বৈষম্য এবং নিপীড়নের মাঝে জীবন যাপন করেন। 

একটি রাষ্ট্রকে তখন সেক্যুলার বলা হয়, যখন রাষ্ট্র কোনও বিশেষ ধর্মের পক্ষে না দাঁড়িয়ে সকল ধর্ম এবং ধর্ম সংক্রান্ত মতবাদের বিকাশের অবাধ এবং সম সুযোগ নিশ্চিত করতে পারে। সকল ধর্মের সম সুযোগ নিশ্চিত করবার জন্যই রাষ্ট্র থেকে ধর্মকে সেখানে আলাদা করা হয়। 

ইউরোপে সামন্ত যুগে খ্রিস্টধর্ম এবং রাষ্ট্র একীভূত ছিল। ফলে, রাষ্ট্র শুধু খ্রিস্টধর্মের প্রচার, প্রসার এবং বিকাশে পৃষ্ঠপোষকতা করত এবং অন্য ধর্মগুলোর ক্ষেত্রে নানা প্রতিবন্ধকতা তৈরি করত। সেখানে ইহুদী, নাস্তিক্যবাদি এবং বৈজ্ঞানিক চিন্তাসমূহকে কঠোর হস্তে দমন করা হত।

সামন্ত অর্থনৈতিক কাঠামোকে পুঁজিবাদী অর্থনৈতিক ব্যবস্থা দ্বারা প্রতিস্থাপন করার সংগ্রামের উপজাত যে  পুনর্জাগরণ এবং আলোকিত আন্দোলন (Renaissance and the Enlightenment movement), তার মানবিকতার আবেদনের মূল কথা ছিল, সমস্ত ধর্মমত এবং চিন্তার বিকাশের অবাধ পরিবেশের নিশ্চিতকরণ। আর এ নিশ্চিতকরণের প্রাথমিক পদক্ষেপ হল রাষ্ট্র থেকে ধর্মের বিযুক্তকরণ। এ বিযুক্তকরণ কেবল সমস্ত ধর্ম এবং চিন্তার বিকাশের পরিবেশই নিশ্চিত করবে না, একই সাথে ধর্মকে রাজনীতির নোংরা খেলার হাতিয়ার বানানো থেকেও রক্ষা করবে।   

সামন্ত শ্রেণির বিরুদ্ধে বুর্জোয়া শ্রেণির দীর্ঘ লড়াইয়ের ফল হলো সেক্যুলার রাষ্ট্র হিসেবে ফ্রান্সের জাতীয় পরিচয় গড়ে উঠা। কিন্তু ফ্রান্স কি পুরোপুরি সেক্যুলার রাষ্ট্র হয়ে উঠতে পেরেছে? 

বিভিন্ন মার্কসবাদী তাত্ত্বিকরা বলেছেন, একটি রাষ্ট্রের যখন অন্য একটি ব্যবস্থায় উত্তরণ ঘটে তখন সে একই সাথে পুরানো ব্যবস্থার অনেক ক্ষতই বহন করে বেড়ায়। এ ক্ষতগুলো থেকে মুক্ত হতে রাষ্ট্রকে দীর্ঘসময় ধরে চেষ্টা বা লড়াই করে যেতে হয়।  

এখন দেখা যাক, ফ্রান্স কি ধর্মভিত্তিক রাষ্ট্র থাকাকালীন ক্ষতগুলিকে এখনো বহন করে বেড়াচ্ছে, না পুরোপুরি সেক্যুলার রাষ্ট্র হিসেবে তার উত্তরণ ঘটেছে। আগেই উল্লেখ করেছি সেক্যুলার রাষ্ট্রের মূল বৈশিষ্ট্যই হল সব ধর্ম এবং এ সংক্রান্ত সমস্ত চিন্তার (নাস্তিক্যবাদসহ) বিকাশের সমান এবং অবাধ পরিবেশ নিশ্চিত করা। ফলে কোন ধর্মকে সেখানে রাষ্ট্রের নিয়ম কানুনের সাথে মানিয়ে চলতে হয় না, নাস্তিক্যবাদী এবং  ধর্মভিত্তিক রাষ্ট্রগুলোর মত।  

শিয়া, সুন্নিসহ সমস্ত ঘরানার মুসলমানদের কাছে তাদের নবী মোহাম্মদের (সাঃ) ব্যঙ্গচিত্র তো দূরের কথা কোন প্রকার ছবি আঁকাই নিষিদ্ধ। অর্থাৎ, কেউ যদি নিজেকে ইসলামের পরিকাঠামোর মধ্যে আছেন বলে যদি দাবী করেন, তাহলে তিনি এ আঁকাকে সমর্থন করতে পারবেন না। এ বিষয়টি তাদের ধর্ম বিশ্বাসের সাথে অঙ্গীভূত। 

একটি রাষ্ট্রে যদি এ ধরনের আঁকার ক্রমাগত চর্চা হতে থাকে, তাহলে শুধু সে রাষ্ট্রের মুসলিমরাই নয়, সারা পৃথিবীর ইসলামের অনুসারীরা তাদের ধর্মের Integrity নষ্ট করা হচ্ছে বলে মনে করবেন। তারা এটাও ভাববেন যে, যে ভিত্তিগুলোর উপর ইসলাম ধর্ম দাঁড়িয়ে আছে সে ভিত্তিগুলোকে আক্রমণ বা নষ্ট (pollute) করাই হচ্ছে এ ধরনের ক্রমাগত চর্চার মূল লক্ষ্য।  শুধু তাই নয়, এ ধরনের ঘটনা বারবার ঘটাবার পিছনে সে রাষ্ট্রের একটা ইন্ধন রয়েছে বলে তাদের ভেবে  নেওয়াটা স্বাভাবিক।  

প্রত্যেকটি ধর্ম বা রাজনৈতিক মতবাদ কতগুলি দার্শনিক ভিত্তি এবং মূলনীতির উপরে দাঁড়িয়ে থাকে। এখন যারা যে ধর্ম বা মতবাদের অনুসারী, তারা যখন দেখেন তাদের বিশ্বাসের মৌলিক ভিত্তি এবং মূলনীতিকে বারংবার আক্রমণ, হেয় বা ব্যঙ্গ করা হচ্ছে, তখন তারা শুধু ব্যথিত বা ক্ষুব্ধই হন না, তারা এটিকে আইনি/বেআইনি নানা প্রক্রিয়ায় রক্ষা করার বা থামানোর চেষ্টা করেন বা করবেন, এটাই স্বাভাবিক। 

সেক্যুলার দাবিদার একটি রাষ্ট্রের মূল কাজ হচ্ছে সে রাষ্ট্রে বসবাসকারী প্রত্যেকটি ধর্মের দার্শনিক ভিত্তি এবং মূলনীতি যাতে Integrated এবং Protected থাকে সে ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা। যদি তারা সেটা করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে রাষ্ট্র হিসেবে তারা তখন নিজেদের সেক্যুলার দাবি করতে পারে না। কিন্তু, ফ্রান্সের ক্ষেত্রে আমরা কী দেখছি? 

ফ্রান্সকে আমরা দেখছি, বিভিন্ন ব্যক্তি পর্যায়ে ইসলামের integrity কে নস্যাৎ করার যে প্রচেষ্টা, সে প্রচেষ্টাতে নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন না করে বাকস্বাধীনতার কার্ড ব্যবহার করে রাষ্ট্র হিসেবে একটি পক্ষ নিয়ে নেওয়া। রাষ্ট্রের মূলভিত্তি সেক্যুলারিজমকে পাশ কাটিয়ে একটি ধর্মের বিপক্ষে রাষ্ট্র হিসাবে ফ্রান্সের দাঁড়িয়ে যাওয়া। 

এটি আরো স্পষ্ট করেছেন প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাঁক্রো। তিনি পরিষ্কার করে বলেছেন যে, খোদ ইসলামকেই সংস্কার করতে হবে ফ্রান্সে জায়গা করে নিতে হলে, এবং এ ব্যাপারে তার দেশ "সাহায্য" করবে।

লক্ষ্যণীয়, প্রথমত দেশটির রাষ্ট্রপতি প্রকাশ্যে বলছেন যে, সংস্কার না করে ইসলামের স্থান ফ্রান্সের রাষ্ট্র ব্যবস্থায় নেই। অর্থাৎ, তিনি এখানে সেক্যুলার রাষ্ট্রের ভাষায় নয়, কথা বলছেন ধর্মভিত্তিক রাষ্ট্রের ভাষায়। তার মানে হচ্ছে, এ ধরনের রাষ্ট্রের মত ফ্রান্সও সব ধর্মকে ধারণ করতে পারবে না বা পারছে না। ফ্রান্স শুধু একটি অথবা কয়েকটি ধর্মকে ধারণ করবে। এখন ইসলামকে তার ভাষায় সংশোধিত হয়ে এসে রাষ্ট্র ব্যবস্থার সাথে মানিয়ে চলতে হবে। 

দ্বিতীয়ত, এ প্রক্রিয়ায় তিনি ঔপনিবেশিক প্রভুর ভাষায় কথা বলছেন "সাহায্য" করবার কথা বলে। ফ্রান্সসহ ইউরোপের প্রাক্তন ঔপনিবেশিক রাষ্ট্রগুলিতে এখনো অনেকে মনে করেন তারা দুনিয়ার বিভিন্ন দেশে উপনিবেশ স্থাপন করেছিলেন তাদের "সাহায্য" করবার জন্য। এই যে না চাইতে গায়ে পড়ে "সাহায্য" করবার বিষয়টি, এটি হচ্ছে ঔপনিবেশিক প্রভুদের ভাষা, যে ভাষায় ম্যাঁক্রো এখন কথা বলছেন। 

কার্ল মার্কস যে কথা বলেছিলেন সে কথার সূত্র ধরেই বলা যায়, আধুনিক পুঁজিবাদী সমাজ ব্যবস্থায় উত্তরণের দাবি করলেও ফ্রান্স আসলে সামন্ত যুগের ধর্মভিত্তিক রাজনীতির দুষ্ট ক্ষতই বহন করে চলছে। আর ম্যাঁক্রো চাচ্ছেন এ ক্ষতকে আরো বাড়িয়ে তুলতে। এখন দেখা যাক ম্যাঁক্রো কোন ধারার রাজনীতির প্রতিনিধিত্ব করছেন। 

ম্যাঁক্রো সোশ্যালিস্ট পার্টি থেকে বেরিয়ে এসে রিপাবলিকানদের একটি ক্ষুদ্র অংশসহ আরো কিছু ছোট ছোট দল নিয়ে ২০১৬ সালের এপ্রিল মাসে গঠন করেন La République En Marche নামক রাজনৈতিক দল। এ দলের প্ল্যাটফরম থেকেই তিনি ২০১৭ সালে ৬৬শতাংশের উপর ভোট পেয়ে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। 

মুখে মুখে মধ্যপন্থী লিবারেল দল বললেও তারা মূলত ম্যারি লা পেনের দক্ষিণপন্থী The National Rally-কে অনুসরণ করার চেষ্টা করছেন, যারা ফ্রান্সের সেক্যুলার ভাবধারাকে উপড়ে ফেলে খ্রিস্ট ধর্ম নির্ভর রাষ্ট্র ব্যবস্থায় ফিরে যেতে চাইছে। এরই অনুষঙ্গ হিসেবে রাষ্ট্র ব্যবস্থায় ফ্যাসিস্ট উপাদানগুলোকে একটি শক্ত ভিত্তি দিতে ম্যাঁক্র এবং পেন উভয়েই চাচ্ছেন। 

এ প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবেই আমরা দেখলাম শিক্ষক স্যামুয়েল প্যাটিকে হত্যাকারী ১৮ বছরের চেচেন যুবককে বিনা বিচারে হত্যা করতে। ফ্রান্সে এটিই একমাত্র বিনা বিচারে হত্যাকাণ্ড নয়। এক পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে, ২০১৮ সালে ফ্রান্সে ২৬ জনকে বিনা বিচারে হত্যা করেছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। অথচ সেই ফ্রান্সই আবার বাংলাদেশসহ উন্নয়নশীল বিশ্বের কোন দেশে এ ধরনের ঘটনা ঘটলে মানবাধিকারের লঙ্ঘন বলে উচ্চকণ্ঠ হয়। 

এটি আনুমান করা হয়ত ভুল হবে না, ফ্রান্সে যেহেতু ১৯৮১ সাল থেকে মৃত্যুদণ্ড নেই, তাই সরকার যাদেরকে মেরে ফেলতে চায়, তাদেরকে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কর্তৃক হত্যা করা হয়, যাতে তারা বিচারের মুখোমুখি হতে না পারে। 

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম মনিটর করা, স্বআরোপিত সেন্সরশিপ, অভিবাসী এবং মুসলমান জনগোষ্ঠীকে টার্গেট করে তাদের বাসা এবং অফিসে যখন তখন তল্লাশি, গ্রেপ্তার- ফ্যাসিবাদের এ সমস্ত লক্ষণ প্রকট হচ্ছে ফ্রান্সে। দক্ষিণপন্থীরা সরকার কর্তৃক নানা ক্ষেত্রে সেন্সরশিপ আরোপ করার দাবি জোরদার করছেন।  

মুখে মুখে সেক্যুলারিজমের কথা বললেও ইরাকে সাদ্দাম হোসেনের সেক্যুলার সরকার উৎখাতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পাশ্চাত্যের অন্যান্য দেশের সাথে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে ফ্রান্স। একই ভাবে তারা সমর্থন জানায় তুলনামূলক বিচারে সেক্যুলার, লিবিয়ার গাদ্দাফি সরকারকে উৎখাত এবং হত্যাকাণ্ডে। 

বর্তমানে তারা জোরালো ভূমিকা পালন করছে সিরিয়ার বাশার আল আসাদের সেক্যুলার সরকারকে উৎখাত করবার ব্যাপারে। উল্লেখ্য যে, রাষ্ট্র হিসেবে সিরিয়া পাশ্চাত্যের যে কোন রাষ্ট্রের মত বা তারও অধিক সেক্যুলার। সিরিয়াতে গণতন্ত্রহীনতার অভিযোগ এনে ফ্রান্সকে মদদ দিতে দেখা গেছে ইসলাম ধর্মকে ব্যবহারকারী বিভিন্ন সন্ত্রাসবাদি গোষ্ঠীগূলোকে। একই ভাবে ফ্রান্স আফগানিস্থানে মদদ দিয়েছিল মুজাহেদিনদের, সেক্যুলার কমিউনিস্ট সরকারকে নয়। সেক্যুলারিজমের প্রসার নয়, আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে ফ্রান্সের লক্ষ্য নগ্নভাবে দেশটির ক্ষমতাসীনদের স্বার্থ হাসিল করা। 

আজকে ক্ষমতাসীনরা আর ক্ষমতার বাইরে দক্ষিণপন্থীরা ফ্রান্সকে ক্রমশ ঠেলে নিয়ে যেতে চাচ্ছে ফ্যাসিবাদের দিকে। আর এ যাত্রায় তারা বাতিল হয়ে যাওয়া সামন্ত সমাজের খ্রিস্ট ধর্মভিত্তিক রাজনীতিকে আবার পুনরুজ্জীবিত করতে চাচ্ছে। সেক্যুলার মূল্যবোধকে জলাঞ্জলি দিয়ে রাষ্ট্র এবং সমাজের সব জায়গায় পুনর্বাসন করতে চাচ্ছে খ্রিস্টিয় মূল্যবোধ। এসবের সাথে পাল্লা দিয়ে দেশটিতে বৃদ্ধি পাচ্ছে বর্ণ বৈষম্যবাদ। 

তবে আশার কথা হচ্ছে বামপন্থী, অভিবাসী এবং মুসলমানরা ফ্যাসিস্ট রাজনীতি এবং সংস্কৃতির বিরুদ্ধে গড়ে তুলছে প্রতিরোধের রাজনীতি এবং তার সংস্কৃতি।তাদের লক্ষ্য হল সামন্ত যুগের ধর্মীয় রাজনীতি এবং মূল্যবোধের বিপরীতে সেক্যুলার রাজনীতি এবং সংস্কৃতির পুনরুত্থান। কেননা একমাত্র এর মাধ্যমেই ফ্রান্সে যেমন মুসলিমসহ ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের অধিকার সংরক্ষিত হবে তেমনি রক্ষিত হবে জাতিগত সংখ্যালঘুদের অধিকার।