ধর্ষকামের ডান-বাম আর পুরুষতন্ত্রের কত্তবড় ‘৯’

আইরিন সুলতানাআইরিন সুলতানা
Published : 21 Oct 2020, 03:14 PM
Updated : 21 Oct 2020, 03:14 PM

অনন্ত জলিল নারীদের পর্দার উপদেশ দিতে না দিতেই সামাজিক মাধ্যমে সবাই হামলে উঠলেন। তার দেওয়া ভিডিও পোস্টে ৮০ শতাংশের বেশি মন্তব্য পোশাককে দুষলেও সংখ্যালঘু সমালোচনায় সাড়া দিয়ে নারীদের 'বড় ভাই' অনন্ত জলিল ফেইসবুকে দেওয়া আগের ভিডিও মুছে ফেলে বক্তব্য সংশোধন করে নতুন ভিডিও যোগ করলেন। বরাবরই টুকটাক 'অগভীর' কথাবার্তা বলা অনন্ত জলিল এই ঘটনায় ছিলেন ক্রিকেট মাঠের সহজ ক্যাচ; জায়গায় দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়েই বল লুফে নিয়েছিলেন ফেইসবুক বাসিন্দারা। 

নায়ক অনন্ত জলিলের দুর্ভাগ্য তিনি ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নূর নন; যিনি  লাইভে এসে কোনো নারীর  চরিত্র নিয়ে অসংলগ্ন কথা বলার পরও তাকে নিয়ে ফেইসবুকে বড় কোনো রা নেই। যেন এই মুহূর্তে দেশকে ধর্ষণমুক্ত করতে নূরই নারীদের একমাত্র কাণ্ডারি; তাকে তাই চটানো যাবে না।  

নূরের ওই লাইভ ভিডিওটি সেসময় দেখা হয়নি; পরেও কেন যেন খুঁজে পাইনি। তবে ১৪ অক্টোবর আপলোড করা ৯ মিনিট ১০ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ক্লিপ দেখার সুযোগ হয়েছে; যেখানে নূর আগের ভিডিওতে বলা  একটি বিশেষ শব্দের এমন দশাসই ব্যাখ্যা দিলেন যে এরপর তাকে বাংলা ভাষার কাণ্ডারিও বলা চলে। 

নূর বলছেন, মামুন-সোহাগের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও খোদ নূরের নামে এতে সহযোগিতার অভিযোগে মামলা করা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীকে তিনি মোটেও 'দুশ্চরিত্রা' বলেননি। যেন বাংলা একাডেমির ভিডিও টিউটোরিয়াল চলছে এমন করে নূর জানালেন, তিনি তো বলেছিলেন 'দু-শ্চ-রি-ত্রা-হী-ন'। 

আর এরমধ্যে দিয়ে বাংলার শব্দ ভাণ্ডার ও কাউকে বিশেষ বিশেষণে বিশেষায়িত করায় এক উত্তরাধুনিক মাত্রা যোগ করলেন ডাকসুর সাবেক ভিপি নূর। নারীকে তো সমাজ হরহামেশাই  'দুশ্চরিত্রা' বলেছে; নূরই প্রথম কোনো নারীকে লাইভে এসে 'দুশ্চরিত্রাহীন' বলতে পেরেছেন। 

শব্দটি অনতিবিলম্বে বাংলা অভিধানে সংযুক্ত করার জন্য বাংলা একাডেমির দৃষ্টি আকর্ষণ না করলেই নয় আসলে। দিব্য চোখে দিব্যি দেখছি, একদিন এই শব্দের ইটিমোলজি লেখা হবে নূরকে ঘিরে। 

পরের ভিডিওতে ঢাবি শিক্ষার্থীকে বারবার 'বোন' সম্বোধন করেছেন নূর। এদিকে পত্রিকায় পড়েছি আগের ভিডিওতে এই 'বোনটিকে' নিয়ে নূর বলেছিলেন, তিনি 'স্বেচ্ছায়' ও 'হাসিখুশি ভাবে' জনৈকের সাথে বিছানায় গিয়েছিলেন। নারীটির বিছানায় যাওয়ার এহেন বর্ণনায় তাকে খোটা দেওয়ার মধ্যেই উচ্চমার্গের 'দুশ্চরিত্রাহীন' শব্দযোগ একটা না মেলা কিউবিক পাজলের মত পীড়া দিয়ে চলেছে। 

এদিকে উঠান জুড়ে আরো এক বিশাল অংক; বিছানায় যাওয়ার সময় মেয়েটি 'হাসিখুশি' ছিল এমন গুরুত্বপূর্ণ একটি তথ্য নূরকে কে দিতে পারেন? মামুন? না কি সোহাগ? আইনের লম্বা হাত এই দুজনকে কেন ধরতে পারছে না? এই মামলায় পেছনের সারির বিবাদী নূর সোশাল মিডিয়াতে ও বিদেশি মিডিয়াতে মামলা করা ঢাবি শিক্ষার্থীর নামে অনেক কথাই বলেছেন অনেকবার। যেন তাকে এসব বলার পুরো ছুট দিয়ে রেখেছেন কেউ। নূরের হাত কি আইনের হাতের চেয়েও লম্বা? 

নূরের মনেও মেয়েটির ধর্ষণ মামলা ঘিরে এক পৃথিবী প্রশ্ন। মামলার অভিযোগ মতে, মেয়েটি জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে দুজন বিবাদী দ্বারা ধর্ষণের শিকার হন। নূর জানতে চান, জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে ঘটনা ঘটলে মেয়েটি কেন সেপ্টেম্বরে মামলা করবেন? 

এটি আসলে সমাজের পরীক্ষায় নারীর জন্য 'কমন' আসার মত একটি প্রশ্ন। 

বিয়ের প্রায় ৯ বছর পর আচমকা অপু বিশ্বাস মিডিয়াতে কোলে সন্তান নিয়ে জানালেন তার আর শাকিব খানের বিয়ের কথা। ঘটনায় শকড শাকিব খানের তো বটেই, এখানে-ওখানে যার-তার একটাই প্রশ্ন ছিল, তা অপু বিশ্বাস এতদিন কেন বলেনি এসব?     

বনানীর রেইন ট্রি হোটেলে ধর্ষণের শিকার হয়েছিলেন জানিয়ে ঘটনার প্রায় ৪০ দিন পরে মামলা করেছিলেন তরুণী। তখনও  অনেকেই বলেছিলেন,  এতদিন পরে কেন? 

২০১১ সালে ভিকারুননিসা নূন স্কুল ও কলেজের ওই সময়ের শিক্ষক পরিমল মে মাসে শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ ও ভিডিও করেন। জুন মাসেও পরিমল এই ঘৃণ্য অপরাধ পুনরায় করেন। এরপর ঘটনা প্রকাশ পায় এবং মামলা করা হয় জুলাই মাসে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির ওই সময়ের অধ্যক্ষ হোসনে আরা বেগম বলেছিলেন, এটা  'মিউচুয়াল সেক্স'।

যিনি শারীরিক ও মানসিক নিপীড়নের মধ্যে দিয়ে যান তিনি পরে পরিবারের মুখ রক্ষার জন্যও চেপে যান ঘটনা; অনেকে হয়ত পরিবারকে জানানোর সাহসও পান না। মোটে আজকাল হল নারী ভয়-লজ্জা কাটিয়ে তার সঙ্গে হওয়া অপরাধের কথা আইনের মধ্যে দিয়ে বলার চেষ্টাটা শুরু করছে।

দেশ-বিদেশের আইনে একটি বড় ফোঁকড় হল, যিনি ধর্ষণের শিকার হলেন, তার শরীরকেই আবার টানাহেঁচড়া করা হয় ক্লিনিকাল প্রমাণের জন্য। এ কারণে ঘটনা ঘটার পরপরই নারীকে থানা-পুলিশে অভিযোগ জানাতে বলা হয়। মেডিকেল সায়েন্স ও আইনের  সীমাবদ্ধতার পুরো দায় যেন চাপিয়ে দেওয়া হয় নারীকে; তাকে বিপর্যস্ততা কাটিয়ে মানসিকভাবে থিতু হওয়ারও সুযোগ দেবে না কেউ। নারীকে ঘটনার পরপরই পুলিশের শরণাপন্ন হতে মানসিক ভাবে শক্তি দেওয়া যায়, কিন্তু এতে দেরি হওয়ার উল্টো দোষ দেওয়া যায় না; যা নূর করতে চাচ্ছেন।  

তবে হাই কোর্ট এবার একটি মানবিক ও যুগান্তকারী কথা বলেছে, ডাক্তারি পরীক্ষা না করার কারণে বা পরীক্ষায় কোনো প্রমাণ না পেলেই (বিশেষত যে কোনো কারণে দেরি হওয়ার প্রেক্ষিতে) অপরাধ সংগঠিত হয়নি এমনটা ভাবা যাবে না; বাদি ও পারিপার্শ্বিক অন্যান্যদের স্বাক্ষ্যের ভিত্তিতেও ওই অপরাধ প্রমাণ হতে পারে।

সম্মতিকে গুরুত্ব দিয়ে সম্মতিহীন যৌন সম্পর্ককে ধর্ষণ উল্লেখ করে ২০১৮ সালে সুইডেন তাদের আইন হালনাগাদ করে। এরপর সুইডেনে ধর্ষণের মামলা বাড়তে থাকে; ওই আইন ঘটনার শিকার ব্যক্তিকে ন্যায্যতা পাওয়ার সুযোগ করে দিয়েছিল বলেই অভিমত ছিল অনেকের। 

সুইডেনের মত ব্রিটেন, বেলজিয়াম, কানাডা, সাইপ্রাস, জার্মানি, গ্রিস, আইসল্যান্ড, আয়ারল্যান্ড, লুক্সেমবার্গের আইনও সম্মতিহীন যৌনতাকে ধর্ষণ বলে মনে করে। বাংলাদেশের আইনে ধর্ষণের সঙ্গে বল প্রয়োগে বেশ জোর দেওয়া হয়েছে। যারা ধর্ষণ ঘটনার প্রতিবাদে সরব হন, তারাও সাধারণত ঘটনায় 'নিষ্ঠুরতা' থাকলেই ধর্ষণ বিরোধী প্রতিবাদে সামিল হন। 

অথচ বল প্রয়োগ ও হুমকির ঘটনা না থাকলেও ধর্ষণ অপরাধকে আমলে নিতে আইনের হালনাগাদ করেছিল সুইডেন। চুপ থাকলে বা কোনো রকম বাধা না দিলেই তাকে সম্মতি মানতেও নারাজ এইসব আইন। যদি কোনো ভাবে 'অ্যাকটিভ' সম্মতির বদলে 'প্যাসিভ' সম্মতি থাকে, তাহলে সেখানে ওই ব্যক্তি ধর্ষণের শিকার হয়েছেন বলে প্রমাণ হতে পারে।

যদি কোনো পুরুষ বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে নারীটির সঙ্গে যৌন সম্পর্ক গড়ে তুলে পরে বিযের কথা থেকে পিছু হটে, তাহলে নারীটি কি ধর্ষণের শিকার বলে দাবি করতে পারেন? ২০১৯ সালে বিবিসি একটি প্রতিবেদন শুরু করেছিল এভাবেই।

ভারতের সুপ্রিম কোর্টের একটি মামলার উদাহরণ টেনে এই প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হয়েছিল, 'হ্যাঁ'। অর্থাৎ যদি কোনো ব্যক্তি ছলের আশ্রয় নিয়ে, বিশ্বাসযোগ্য ভাবে মিথ্যে বলে বা প্রলোভন দেখিয়ে অপরজনের সঙ্গে যৌন সম্পর্ক গড়ে, তবে তিনি ধর্ষণ অপরাধ করলেন। 

অর্থাৎ 'প্রেমের সম্পর্কের' বেলাতেও ধর্ষণের অভিযোগ আনার ও তা প্রমাণ হওয়ার আইনগত সুযোগ বা অধিকার রয়েছে। 

আর তাই কোনো নারী ধর্ষণের অভিযোগ আনলে তিনি পুরুষের সাথে 'স্বেচ্ছায়' বিছানায় গেছেন এমন কথা প্রচার করার আগে নূরকে ধর্ষণ নিয়ে পর্যাপ্ত জ্ঞান ও কাণ্ডজ্ঞান পাশাপাশি রাখতে হবে।

নূরের দাবি এই ঘটনা রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র। হয়ত তাই… কিন্তু তাই -ই কি? সমাজ কি এতটাই নারীবান্ধব হয়ে গেছে যে একজন নারী নিজেকে  দুইবার ধর্ষণের শিকার বলে পুরো দেশকে জানিয়ে মাইকিং করে বেড়াবেন? যদি ঘটনাটি আদতেই ষড়যন্ত্র হয়,  এর প্রমাণ ও নিষ্পত্তি আদালতে হওয়া অনেক বেশি বাঞ্ছনীয়। নূর সেখানে গিয়ে ঘটনার প্রমাণ না দিয়ে সোশাল মিডিয়াতে এসে কেন হট্টগোল করছেন? 

দেশে ধর্ষণবিরোধী আন্দোলন চলছে। নারীর প্রতি এহেন নিপীড়নে দ্রুত বিচার ও মৃত্যুদণ্ড পর্যন্ত গড়িয়েছে ঘটনা। অথচ নারীর আনা যৌন নিপীড়নের অভিযোগে  চুপ থাকতে দেখি বামপন্থী সিপিবিকে; যখন অভিযোগকারী ও অভিযুক্ত খোদ সিপিবিরই। ঢাবির ওই শিক্ষার্থীর মত সিপিবি নেত্রী জলি তালুকদারও কি ষড়যন্ত্র করতেই নিজেকে যৌন হয়রানি করা হয়েছে বলে অভিযোগ এনেছেন? 

একদিন টিভিতে শাহবাগে এক আন্দোলনকারীকে বলতে শুনলাম, এখন পর্যন্ত সব ধর্ষণ ছাত্রলীগ করে। কেউ বলছেন, আওয়ামী লীগের রাজত্ব বলেই ধর্ষণ হচ্ছে। সমাজে ধর্ষণের মত অপরাধের মূল মনস্তত্ব তাহলে মোটা দাগে এটাই? অথচ দেশের প্রায় সব ঘটনাতে নারীর (এমনকি পুরুষেরও; যেমন মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের) ধর্ষক যখন পুরুষই, সেখানে সমাজে পুরুষ হতে পারাই যথেষ্ট ক্ষমতার।

শাহবাগ থেকে বামধারার ছাত্র সংগঠনগুলো 'ধর্ষণ ও নির্যাতন বিরোধী বাংলাদেশ' ব্যানার হাতে গত ৯ অক্টোবর নয় দফা দাবি ঘোষণা করেছিল। এই নয় দফায় একটু তাড়াহুড়া, একটু গতানুগতিক কথা, একটু অস্পষ্ট কথা এবং একটু রাজনীতির সঙ্গে বাকি অনেকখানি ছিল নারীর অধিকার পুরুষের দৃষ্টি ও গ্রহণযোগ্যতা দিয়ে প্রতিষ্ঠার চেষ্টা। 

৯ দফার একটি দফার এক অংশে বলা ছিল – "সাহিত্য, নাটক, সিনেমা, বিজ্ঞাপনে নারীকে পণ্য হিসেবে উপস্থাপন বন্ধ করতে হবে।" 

ওয়াজে ও টিভি চ্যানেলগুলোতে প্রচারিত ইসলামি সাওয়ার-জওয়াবে সবসময় নারীর পোশাককে সরাসরি নয়তো ঘুরিয়ে-পেঁচিয়ে দোষ দেওয়া হয়। এসব আলাপেও বলা হয়, মিডিয়া-নাটক-সিনেমাতে নারীরা অশ্লীল পোশাকে আসেন। এইসব আলাপ ও নয় দফার এই দৃষ্টিভঙ্গিতে তাই কোনো ফারাক নেই। 

সাহিত্য, নাটক, সিনেমা, বিজ্ঞাপনে নারী কীভাবে পণ্য? পোশাকের কারণে? তাহলে নারীর পোশাকের স্বাধীনতা কোথায়? না কি বামও একটু ঘুরিয়ে-পেঁচিয়ে মনে করছে পোশাকই ধর্ষণের কারণ। 

বিজ্ঞাপন তো পণ্যের প্রচারের জন্যই। সেখানে নারীর সঙ্গে পুরুষও থাকে, এখন তো আবার প্রায় সব বিজ্ঞাপন শিশুদের ব্যবহার করে নির্মিত হয়। এই উঠানে ক্যামেরার সামনে দাঁড়ানো সবাই পণ্য। বাইরে সিনেমায় কাজ করা শিল্পীরা নিজেদের  'এনটারটেইনার-এনটারটেইনার-এনটারটেইনার' বলতে দ্বিধা করছেন না। 

সালমান খান বুকের পশম সাফ করে সিনেমা-টিভি শো আর বিজ্ঞাপনে আসেন। ঋত্বিক রোশন অথবা জন আব্রাহাম তাদের শরীরি আবেদন তুলে ধরতে কোনো কার্পণ্য করেন না। ক্যামেরার সামনে দাঁড়ালে টাইগার শ্রফ তার সিক্স প্যাক ঢেকে রাখেন না। তাহলে শুধু নারীকেই পণ্য ঠেকে কেন বামের? 

টাইটানিক অথবা দ্য রিডার সিনেমায় সম্পূর্ণ নগ্ন কেট উইন্সলেট কি পণ্য? পিকাসো-ভ্যান গগের চিত্রকর্মে নগ্ন নারীরা বামের এমন দফা পড়ার পর নিজেদের এতক্ষণে কাপড়ে মুড়ে নিয়েছে নির্ঘাত! 

এইসব  ক্লিশে দাবি আসলে নারীর জন্য নয়; এসবে জড়িয়ে রয়েছে শুধুই মনন-মগজে অপরিপুষ্ট বাম-পুরুষেরা।   

প্রতিবাদের রাজপথে নেমে কেউ লিখেছে, আমি লজ্জিত; কেউ লিখেছে, আমি বিবস্ত্র; কেউ লিখেছে আমি ধর্ষিত। সমাজ তো বরাবর চায় নারী এভাবেই নিজেকে দায় দিক; অথচ আমাদের অপরাধীর উদ্দেশে বলতে হত,  'তুমি ধর্ষক'। যিনি ধর্ষণ করেন, বিবস্ত্র তো তিনিই হন; তাই 'তুমি  বিবস্ত্র'। যিনি ধর্ষণ করেন, লজ্জা তো তারই পেতে হবে। অপরাধের শিকার নারী কেন নিজেকে ধর্ষিত-ধর্ষিতা বলে পরিচয় দেবে? নারী কেন লজ্জা পাবে? কেন নারীকে বিবস্ত্র বোধ করতে বাধ্য করা হচ্ছে? 

আফসোস হয়, নারীর অধিকার আদায়ের আন্দোলনটা নারীর হাত থেকেই আজ বেহাত হয়ে গেছে! সেখানে  কিলবিল করছে পুরুষতন্ত্র।