ভুতুড়ে বেগুন অথবা বিটি বেগুনের প্রচার!

ফরিদা আখতার
Published : 19 Sept 2012, 03:10 PM
Updated : 19 Sept 2012, 03:10 PM

তরিতরকারির মধ্যে বাংলাদেশে্ বেগুন সবারই অত্যন্ত পছন্দের। খুব আনন্দ করেই আমরা এই সবজি খাই। কিন্তু আতঙ্কের বিষয়, এই বেগুনে অন্য প্রজাতির 'জিন' ঢোকানো হচ্ছে। বেগুনের স্বাভাবিকত্বের হানি ঘটিয়ে এই বিকৃতির দরকার কী? বলা হচ্ছে, যে বেগুন আমরা এতকাল খেয়ে এসেছি সে বেগুনে নাকি দোষ আছে। দাবি করা হচ্ছে, 'ডগা ও ফল-ছিদ্রকারী পোকা ছোট-ছোট বেগুনগাছের কচি ডগা ছিদ্র করে ভেতরে প্রবেশ করে এবং খায়। কীড়া কচি ও বাড়ন্ত বেগুন ছিদ্র করে ভিতরের নরম শাঁস খায়' ইত্যাদি। এই তথ্য কারা প্রচার করছে? করছে ভারত থেকে প্রকাশিত ABSP II এর বিটি বেগুনের ওপর সচিত্র প্রচারপুস্তিকা। এই প্রচারপুস্তিকা ইংরেজিতে ছিল। বাংলাদেশে নিষ্ঠার সঙ্গে এই পুস্তিকাটির বাংলা অনুবাদ বিলি করা হচ্ছে। প্রথম পাতায় বাংলাদেশ সম্পর্কে কিছু তথ্য দিয়ে হুবহু একই ভারতীয় বই প্রচারিত হচ্ছে। তবে ভারতের চন্দন ভট্টাচার্য্যের আঁকা চিত্রগুলো সবই রয়ে গেছে। আর সেই চিত্রে আছেন ভারতের কৃষক পরিবার। স্বাভাবিকভাবেই বাংলাদেশের কৃষকদের সঙ্গে কোনও মিল নেই।

আমি সেখান থেকেই তথ্য নিয়ে লিখছি। এই পুস্তিকাটির নাম "ডগা ও ফল-ছিদ্রকারী পোকা-প্রতিরোধী বিটি (Bt) বেগুনঃ বারবার জিজ্ঞাসিত প্রশ্নাবলী।" ইংরেজিতে যাকে বলে Frequently Asked Questions বা FAQ – ওয়েবসাইট দেখুন www.absp2.net- বিটি বেগুন প্রকল্পের অংশীদার বেশিরভাগ বিদেশি সংস্থা, যেমন ইন্টারন্যাশনাল সার্ভিস ফর দি অ্যাকুইজিশান অব অ্যাগ্রো-বায়োটেক অ্যাপ্লিকেশান (ISAAA), ইউনিভার্সিটি অব ফিলিপাইন্স, লসবেনোস (UPLB), সাউথ ইস্ট এশিয়ান রিজিওনাল সেন্টার ফর গ্রাজুয়েট স্টাডি এন্ড রিসার্চ ইন এগ্রিকালচার (SEARCA) এবং বীজ কোম্পানি, যেমন ভারতের MAHYCO, যার সঙ্গে বহুজাতিক কোম্পানি মনসান্তোর অংশীদারিত্ব রয়েছে। কাজেই এই গবেষণা কেবল বাংলাদেশের বিজ্ঞানীদের, এমন দাবি করা যাবে না।

বিটি বেগুন নিয়ে আগেও প্রতিবাদ হয়েছে, আমি নিজেই কয়েকবার লিখেছি। কিন্তু দুঃখের বিষয় আমাদের সরকার বিটি বেগুনের ব্যাপারে অতিউৎসাহী। এই বেগুন প্রবর্তন করা হচ্ছে নিরবে। খুব আওয়াজ উঠছে না। কখন যে বাজারে অবাধে পাওয়া যেতে থাকবে, আমরা জানতেও পারব না। গাজীপুরে অবস্থিত কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠান (BARI) এই গবেষণা করছে যুক্তরাষ্ট্রের সাহায্য সংস্থা ইউএসএইডের বিশেষ কর্মসূচি ABSP II এর অধীনে। ভারতে এই বেগুন নিয়ে প্রচুর বিরোধিতা ও হৈচৈ হয়েছে এবং পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের ছাড়পত্রও পেতে ব্যর্থ হয়েছে। কিন্তু হায়, বাংলাদেশের পরিবেশ মন্ত্রণালয় নিরব। আর কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বিটি বেগুন ও বিটি আলুর ব্যাপারে অত্যন্ত উৎসাহী। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের ২০১১ সালের মার্চ মাসে অনুষ্ঠিত একটি সভায় তিনি জিএম ফসলকে স্বাগত জানিয়েছেন। তাঁর মতে, জিএম ফসল কীট দমনে ভালো ভূমিকা রাখবে। উৎসাহ প্রকাশের এক পর্যায়ে তিনি জিএম ফসল নিয়ে যারা বিরোধিতা করছেন তাঁদের ওপর বিরক্ত হয়ে তথ্যপ্রমাণ হাজির করতে বলেছেন। এমনকী তিনি বিরোধিতাকারীদের কথাকে 'ফতোয়া' বলে প্রমাণ ছাড়া গ্রহণযোগ্য নয় বলে উড়িয়ে দিয়েছেন (ডেইলি স্টার, মার্চ ৩০, ২০১১)।

মতিয়া চৌধুরী দাবি করেন. তিনি কীটনাশক পছন্দ করেন না। তিনি মনে করছেন, জিন-প্রযুক্তি কীটনাশক ব্যবহার কমাবে এবং ৩০ – ৪০% ফসল কীটের আক্রমণ থেকে রক্ষা পাবে। যদি তাই হত এবং জিন-প্রযুক্তি নিজেই যদি ক্ষতিকর ভূমিকা না রাখত তাহলে এর বিরোধিতা করার প্রশ্নই উঠত না। যারা বিটি বেগুন, বিটি আলু, গোল্ডেন রাইসসহ অন্যান্য জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের বিরোধিতা করছেন তারা প্রমাণ ও বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা সহকারেই করছেন। বিজ্ঞান হিসেবে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ভালোমন্দ নিয়ে বিতর্ক হতে পারে। তবে আমরা যেগুলো নিয়ে আপত্তি করছি সেগুলো বিজ্ঞানের দিক থেকেও ত্রুটিপুর্ণ এবং ইতিমধ্যে তার ভালো দিকের চেয়ে ক্ষতিকর দিকগুলোই বেশি প্রমাণিত হতে শুরু করেছে। কৃষিমন্ত্রী গ্রিনপিস, ETC group, Friends of the Earth, Grain, Navdanya সহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংগঠনের ওয়েবসাইট দেখলেই প্রমাণ পাবেন।

যারা এখানে ব্যাবসায়িক স্বার্থে বিটি বেগুন উৎপাদন করতে চাচ্ছেন তাদের প্রচারে বিভ্রান্ত হলে চলবে না। একটি দেশের কৃষিমন্ত্রীকে কোম্পানির স্বার্থ নয়,কৃষকের স্বার্থ দেখতে হবে। জনগণের খাদ্য-সার্বভৌমত্ব মানে শুধু প্রযুক্তি ও পরিমাণগতভাবে উৎপাদন বৃদ্ধি বোঝায় না- প্রাণবৈচিত্র্য ও পরিবেশের নিরাপত্তা এবং কৃষিবিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ওপর জনগণের নিয়ন্ত্রণও বোঝায়। জিএম প্রযুক্তি কীটনাশক, আগাছানাশক মুক্ত ভাবার কোনও কারণ নেই। কৃষিমন্ত্রী দাবি করেছেন, কীটনাশক বিক্রতা কোম্পানি বিটি বেগুনের বিরোধিতা করছে। আসলে তা ঠিক নয়, বরং তারাই জিএম প্রযুক্তির সঙ্গে যুক্ত। জিএম প্রযুক্তির বিরোধিতা প্রথমত করছেন সচেতন বিজ্ঞানীরা। তাদের গবেষণার সূত্র ধরে পরিবেশ ও স্বাস্থ্য সচেতন সংগঠনগুলোও এর বিরুদ্ধপক্ষ। এর ভয়াবহ পরিণতির কথা ভেবে এর বিরুদ্ধে বিভিন্ন দেশে প্রতিরোধ গড়ে তুলছেন কৃষকের স্বার্থরক্ষাকারী বিভিন্ন আন্দোলন ও সংগঠন।

বিটি বেগুনের প্রচারপুস্তিকার তথ্য থেকে বোঝা যায়, বেগুন বাংলাদেশে ব্যাপক পরিমাণে আবাদ হয়। বিবিএস ২০০৭ অনুযায়ী বাংলাদেশ ৫৭,৭৪৫ হেক্টর জমিতে ৩,৩৯,৭৯৫ মেট্রিক টন বেগুন উৎপন্ন হয় যা দেশের মোট সবজি-আবাদী এলাকার ২৫.৪% ভাগ। বিটি বেগুন সম্পর্কে প্রচারপুস্তিকায় বলা হচ্ছে, এই বেগুন ডগা ও ফল-ছিদ্রকারী পোকা-প্রতিরোধী। বিটি হোল Bacillus thuringiensis এর সংক্ষিপ্ত নাম, যা মাটিতে বসবাসকারী ব্যকটেরিয়াম Cry1Ac নামক জিন ধারণ করে এবং একটি পোকানাশক প্রোটিন তৈরি করে।এই প্রোটিন বেগুনগাছের ডগা, পাতা এবং ফলের মধ্যে ঢুকে পড়ে এবং সেখান থেকে খাদ্য খেয়ে বেঁচে থাকে। এই প্রোটিন পোকার জন্য বিষাক্ত, তাই বেগুনে পোকা লাগে না বা কোনও ছিদ্র হয় না।

তাহলেই কি এই বিটি বেগুন নিরাপদ হয়ে গেল? আন্তর্জাতিক পরিবেশ সংগঠন গ্রিনপিসের মতে, বিটি বেগুনের মধ্যে একটি বহিরাগত ব্যাকটেরিয়ার জিনের প্রবেশ ঘটানো হয় এবং এই ব্যকটেরিয়া গাছটিকেই কীড়া থেকে মুক্ত রাখার জন্য বিষাক্ত করে দেয়। তাছাড়া জিএম-সবজিতে অ্যান্টিবায়োটিক-প্রতিরোধক মার্কার থাকে। তার মানে, মানুষ এই সবজি খেলে তার শরীরে অ্যান্টিবায়োটিক কাজ করবে না, অথচ যে কোনও ইনফেকশান হলে অ্যান্টিবায়োটিক নেয়ার প্রয়োজন মানুষের থাকতে পারে।

এখনও খোলা বাজারে বিটি বেগুন এসেছে বলে মনে হয় না। সরকারের গবেষণাগারে এর পরীক্ষা ঠিক কীভাবে হচ্ছে আমরা জানি না। তবে এর স্বাস্থ্য-সমস্যার দিকগুলো বিচার না করে ছেড়ে দেওয়া হতে পারে বলে অনেকে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।

ইতিমধ্যে পাবনা জেলায় কৃষকদের দিয়ে বিটি বেগুনের গবেষণা করা হচ্ছে। উবিনীগের একটি গবেষণায় জয়নাল আবেদিন খান ও তার সহকর্মীরা পাবনা জেলার ঈশ্বরদী উপজেলায় অবস্থিত আঞ্চলিক কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা এবং যে সব কৃষক প্রশিক্ষণ নিয়েছেন তাঁদের সঙ্গে কথা বলেছেন।

ঈশ্বরদীর আঞ্চলিক কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের কীটতত্ত্ব বিভাগের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তারা জানিয়েছেন এই গবেষণা কেন্দ্রে বিটি বেগুনের চাষ হয়েছে তবে এখন তা মাঠে নেই। বিটি বেগুনের চারা গাজীপুর থেকে তাদের সরবরাহ করা হয়েছিল। গবেষণা-প্লটে চাষ করা হলেও কোনও বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা একটা বেগুনও খেয়ে দেখেননি। তাঁরা বরং এই বেগুন হওয়ার পর টুকরা টুকরো করে গর্তে পুঁতে ফেলেছেন। তাঁরা জেনেছেন, বিটি বেগুনের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে পোকা ধরবে না, সারাবছর চাষ করা যাবে। সার-বিষ দিতে হবে না, উৎপাদন খরচ কম হবে। কিন্তু এটা খেতে নিরাপদ কিনা এ ব্যাপারে তাঁরা জানেন না। বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তাদের মতে, বিটি বেগুন গবেষণা পর্যায়ে রয়েছে। মাঠ বা কৃষক পর্যায়ে এই বেগুনের বীজ বা চারা এখনও দেওয়া হয়নি।

যে বেগুন পোকায় খাবে না সে বেগুন মানুষ খাবে কী করে? এ বেগুন খেলে মানুষের কোনও ক্ষতি হবে কিনা প্রশ্ন করা হলে বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তাদের উত্তর ছিল এ রকম- ''যে বেগুন পোকায় খাবে না সেই বেগুন মানুষ খাবে, এই জন্যই তো গবেষণা করা হচ্ছে। তবে এ বেগুন আমার ছেলে-মেয়েদের কখনও খেতে দেব না।''

যদিও বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তারা বেগুন উৎপাদন করে মাটিতে পুঁতে ফেলছেন তবুও প্রশ্ন থেকে যায়- কোনওভাবে এই বেগুন বাজারে আসছে কিনা। তাই দাশুরিয়া ও মুলাডুলি হাট এবং বাজার, ঈশ্বরদী বাজার এবং রাজাপুর বাজারে অবস্থিত সবজি-ব্যবসায়ী ও বীজভান্ডারের দোকান থেকেও তথ্য নেয়া হয়েছে। বিক্রেতারা অবশ্য বিটি বেগুন নামে কোনও বেগুন চেনেন না। নামও শোনেননি। তাঁদের ধারণা, বিটি বেগুন বাজারে এলে অবশ্যই তাঁরা জানতে পারবেন।

তবে ঈশ্বরদী বাজারের একজন সবজি-বিক্রেতা জানান, ঈশ্বরদী এলাকায় ছিদ্রছাড়া একটি বেগুন 'ঝুমকা বেগুন' নামে পরিচিত। এই বেগুনে সাধারণ বেগুনের তুলনায় অনেক কম পোকা ধরে। গাছ ২ হাত থেকে ২.৫ হাত লম্বা ও আকার গোলাকার হয়। বেগুনের আকার ছোট ও লম্বাটে। এই বেগুন এখানে নতুন, দাম কম। সাধারণ বেগুনের দাম ৩০টাকা হলে ঝুমকা বেগুন ১৫টাকা। সপ্তাহে দুয়েকদিন এই বেগুন বাজারে আসে। চাহিদা অনেক কম। এই বেগুনে কীটনাশক ব্যবহার করা হয়। এই ঝুমকা বেগুনই বিটি বেগুন কিনা এ ব্যাপারে তিনি নিশ্চিত নন।

এই বেগুন-বিক্রেতা কৃষকদের কাছ থেকে প্রায় নয় জাতের বেগুন কিনে বিক্রি করেন। এই জাতগুলো হল- ১.যশোরি বেগুন ২.দেশি বেগুন (হালকা সাদার মধ্যে হালকা বেগুনি রং) ৩. দেশি বেগুন (সম্পূর্ণ বেগুনি) ৪. ইরি বেগুন (গোল), ৫. সুইটা বেগুন (গোল ও কাঁটাযুক্ত, সবুজের মধ্যে হালকা সাদা রং) ৬. সাদা গোল বেগুন, ৭. সাদা ডিম বেগুন, ৮. ইরি বেগুন (গোল), হালকা বেগুনি ৯. শয়লা বেগুন (লম্বা)। এই বেগুনগুলো দামের দিক থেকেও ভালো – ১৫ টাকা থেকে ২৫ টাকা পর্যন্ত কেজি। তবে দেশি গোল বেগুনের কদর এখনও বেশি। এ বেগুন ক্রেতারা ৪০ টাকা কেজি দরেও কিনেন।

তার মানে, আমাদের দেশে বেগুনের জাতের অভাব নেই। এতদিন উফশী ও হাইব্রিড জাতের বেগুন এনে ভয়ানক পরিমাণে কীটনাশক ব্যবহার করে মানুষের যথেষ্ট ক্ষতি করা হয়ে গেছে। এই কীটনাশক দেওয়া বাণিজ্যিক চাষের বেগুনের কোনও গুণ বা স্বাদ নেই। এখন মরার ওপর খাঁড়ার ঘা হিসেবে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের মাধ্যমে বেগুনগাছকেই বিষাক্ত করে দেওয়া হচ্ছে। বহুজাতিক কোম্পানির কাছে বেগুনের মতো সাধারণ মানুষের জন্য সহজলভ্য একটি সবজিকে জিম্মি করে রাখা হচ্ছে। গবেষণা শেষ হলেই তাদের পেটেন্ট হয়ে যাবে। বেগুন এমন সবজি যে নারীরা ঘরের আঙ্গিনায় দু'একটি গাছ লাগিয়ে প্রয়োজন মেটাতে পারেন। তাদের কীটনাশক লাগে না, বরং চুলার ছাই দিয়ে পোকা দমন করতে পারেন। আর নেহায়েত দু'একটি ছিদ্র থাকলেও তা সবজি কোটার সময় আদরে-যত্নে কেটে ফেলে দেন। তাতে খাদ্যের স্বাদের কোনও ক্ষতি হয় না।

আমাদের বেগুন আমাদেরই থাকুক। এর মধ্যে ব্যাকটেরিয়ার 'জিন' ঢুকিয়ে ভূত বানাবেন না।