স্বস্তি-শঙ্কা-আশঙ্কা

মো. সাহাবুদ্দিন চুপ্‌পু
Published : 20 Oct 2019, 03:32 PM
Updated : 20 Oct 2019, 03:32 PM

রামায়ণের অন্যতম চরিত্র রাবন। রাবনের ছোট দুই ভাই বিভীষণ ও কুম্ভকর্ণ। রাবনের সীতাহরণ মেনে নিতে না পারলেও পরিবারকে সমর্থন দিয়েছিলেন কুম্ভকর্ণ। বিভীষণ কিন্তু তা করেননি। পরিবারের বিরুদ্ধে গিয়ে সরাসরি যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন তিনি। শাস্ত্র থেকে যতটুকু পাওয়া যায় তাতে সত্যের পক্ষে ছিলেন বিভীষণ, ছিলেন ধর্মের পক্ষেও। কিন্তু আপন পরিবারের সাথে শত্রুতা করায় ইতিাহাস তার পদবী নির্ধারণ করে 'বিশ্বাসঘাতক'। তৈরি হয় তিন শব্দের ঘৃণ্যতম বাগধারা- 'ঘরের শত্রু বিভীষণ'।

বাংলাদেশে ঘরের শত্রু বিভীষণের বহুল প্রচলন শুরু হয় পঁচাত্তরের অগাস্ট থেকে। বঙ্গবন্ধু যাদের আগলে রাখলেন, বিশ্বাস করলেন- সেই তারাই স্বাধীনতাবিরোধীদের সাথে নিয়ে বিরোধী পক্ষ হয়ে ষড়যন্ত্র করলেন। ফলে এলো ১৫ অগাস্ট। জন্মদাতাকে অস্বীকার করে কোনো মানুষের পরিচয় দেওয়া যদি অর্থহীনতা হয়, তবে 'বাংলাদেশি' পরিচয় নিয়ে রাষ্ট্রের ভালো-মন্দের পাশে না থেকে ষড়যন্ত্র করাও এক ধরনের অর্বাচীনতা ও অপরাধ। কেন এই কথা- সেই ব্যাখ্যায় পরে আসব, আপাতত প্রাসঙ্গিকতার স্বার্থে 'ডেঙ্গু' ক্রাইসিস নিয়ে দুটো কথা বলতে চাই।

ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে সারাদেশে মৃতের সংখ্যা ইতোমধ্যে ১৩২ ছাড়িয়েছে। সরকারি হিসাব বাদ দিলে এই সংখ্যা যে আরও বেশি হবে- তাতে বোধহয় কারও সন্দেহ থাকার কথা নয়। এই মৃত্যু কি প্রাকৃতিক? অনিবার্য ছিল? এইডিস মশা কি প্রতিরোধযোগ্য ছিল না? ডেঙ্গুর উত্থান তো ২০০০- এ, অর্থাৎ দু'দশক আগে (স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মতে, ওই বছরই ৯৩ জন নিহত হয়েছেন)। কিন্তু হঠাৎ করেই তা আবার জেঁকে বসল কী করে?

এইডিস মশা দমনে কী করলেন ক্লিন ঢাকার স্বপ্ন দেখানো আতিকুল ইসলাম-সাঈদ খোকন ও তাদের কাউন্সিলরসহ দলবলরা? ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণের জন্য বছরজুড়ে যে কাজটি করতে হয়, তা হলো- মশা মারার ব্যবস্থা করা, জঞ্জাল সাফাই করা, যেখানে সেখানে পানি জমতে না দেওয়া। মোটা দাগে এই তিনটি কাজ করার কথা ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনের। সারা বছর এ সেবামূলক কার্যক্রম চলতে থাকে কিন্তু কী হলো! নগর পিতা পরিচয়ে রাজধানী দাপিয়ে বেড়ানো দুই মেয়রকে যুক্তরাজ্য থেকে নির্দেশ দিতে হলো প্রধানমন্ত্রীকে। বলা হলো- কার্যকর ওষুধ আমদানি এবং তা ছিটাতে। তাহলে কি আমরা প্রশ্ন তুলতে পারি- অকার্যকর ওষুধ ছিটিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করা হচ্ছিল? যে কারণে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ও মৃত্যুর হার বেড়ে গেছে। তাছাড়া আতিক-খোকন চাইলেও কি এতগুলো মৃত্যুর দায় এড়াতে পারেন? সিনেমার ও নাটকের নায়ক-নায়িকাদের সঙ্গে হাতে ঝাড়ু নিয়ে চকচকে-ঝকঝকে পরিষ্কার রাস্তায় ছবির পোজ দিয়ে তারা কি নিজেদের ইমেজকে খাটো করলেন না? উপহাস ও হাসির খোরাক কি হলেন না ?

সাধারণের ধারণা বা প্রশ্ন এটাও উঠে- দু'জনের একজনকে পিতার অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ দক্ষিণের মেয়র বানানো হয়েছে। অথচ এই সেদিনই তিনি বঙ্গবন্ধুর রাজনীতিকে অস্বীকার করে ওয়ান ইলেভেনে (২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি) সুযোগসন্ধানীদের গড়া 'কিংস পার্টি'তে যোগ দিয়েছিলেন। আওয়ামী লীগের রাজনীতি নিয়ে অনেক আজে-বাজে কথাও বলেছিলেন । নিজ নেত্রীকে মাইনাস করে নিজে হিরো হতে চেয়েছিলেন । তার (সাঈদ খোকন) তো নৈতিক চরিত্রের পরিচয় তখনই পাওয়া গেছে। তাহলে কি তিনি পিতার অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ এ পদ পাওয়ার যোগ্য? প্রশ্ন থেকে যায়।

অপরদিকে উত্তরের এক ব্যবসায়ীর কাঁধে নৌকা তুলে দেয়া হলো। বঞ্চিত হলেন অনেক ত্যাগী নেতা-কর্মী। যারা লাঠিপেটার শিকার হয়েছেন, নির্যাতন ভোগ করেছেন, জেল খেটেছেন- এমনকি বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও তার কন্যার জন্য জীবনও বাজি ধরেছেন। অথচ যার কাঁধে নৌকা দেয়া হলো, তিনি প্রকাশ্যেই স্বীকার করলেন- তিনি 'অনভিজ্ঞ'। অর্থাৎ আওয়ামী লীগের সংস্পর্শহীন তো বটেই, মেয়র হিসেবেও দূরদর্শিতা, বিচক্ষণতা ও যোগ্য প্রশাসকের ঘাটতি তার মধ্যে রয়েছে। হয়তো শক্তিধর কোনো ব্যবসায়ী লবি আওয়ামী লীগের রাজনীতির প্রয়োজনে তাকেই প্রয়োজন বিবেচনা করে ব্যবসায়িক রাজনীতির হিসেব-নিকেশে দলীয় স্বার্থে তার জন্য চেষ্টা চালিয়ে থাকতে পারেন।

বঙ্গবন্ধু কন্যার কৌশলী ও বাস্তবমুখী রাজনীতি বিবেচনায় এ দুটো সিদ্ধান্তই তার উদার মনের পরিচয়ক। সংকটকালে এদের দুইজনের দায়িত্ব নেত্রী নিজের কাঁধেই নিয়েছেন। তবে আমার শঙ্কা- বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে শাণিত করে নীতি ও নৈতিকতার সাথে নগর পরিচালনায় সাফল্যের স্বীকৃতি কি এরা পাবেন?

দুই.

আজ আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘ কর্তৃক পৃথিবীর দ্বিতীয় ফেভারিট প্রধানমন্ত্রী হিসেবে স্বীকৃত।শিশু স্বাস্থ্য খাতের সবচেয়ে সম্মানজনক 'ভ্যাকসিন হিরো' পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। পিতা মুজিবের স্বপ্ন ও আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে পথের অনেকটাই পাড়ি দিয়েছেন আমাদের প্রধানমন্ত্রী। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক প্রভাবশালী ব্যবসায়িক সাময়িকী ফোর্বস ইতোমধ্যে তাকে বিশ্বের ২৬তম ক্ষমতাধর নারী হিসেবে উল্লেখ করেছে। স্থান করে নিয়েছেন 'দ্য ফরেন পলিসি' প্রকাশিত বিশ্বের শীর্ষ ১০০ চিন্তাবিদদের তালিকায়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এখন বিশ্বের অন্যতম নেত্রী ও পথপ্রদর্শক । সে জন্যই ভারত ও পাকিস্তান তার কাছ থেকে উন্নয়নের রাজনীতি এবং রাজনৈতিক নেতৃত্ব শিখতে চায় । কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াংকা গান্ধীও সম্প্রতি বলেছেন, শেখ হাসিনা আমার পথপ্রদর্শক এবং উন্নয়নের রাজনীতির জন্য প্রেরণার উৎস। শুধু প্রিয়াংকা গান্ধীর নয়, আমাদের নেত্রীকে বিশ্ব নেতৃত্বের মোড়লরাও ইতোমধ্যে বিচক্ষণ ও দূরদর্শী নেতা হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছেন। সবমিলিয়ে আজ বিশ্ব নেতৃত্বে শেখ হাসিনা, বিশ্ব নেতৃত্বে বাংলাদেশ। এটা আমাদের গর্ব, বাঙালি জাতির গর্ব, মুজিব অনুসারীদের গর্ব।

শুধু ব্যক্তি শেখ হাসিনা নয়, দল আওয়ামী লীগও এখন অনন্য উচ্চতায়। ক'মাস আগেই সাত দশকে পা দিয়েছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। দলের গৌরবোজ্জ্বল ঐতিহ্যের এ সময়ে দেশ উঠেছে উন্নয়নের মহাসড়কে, পৌঁছেছে স্বল্প উন্নয়ন থেকে উন্নয়নশীলে। সংক্ষিপ্তভাবে বলতে গেলে ক্ষমতাকালীন শেখ হাসিনা সরকারের উল্লেখযোগ্য সাফল্যগুলো ছিল- ভারতের সঙ্গে ৩০ বছর মেয়াদী গঙ্গা নদীর পানি চুক্তি, পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি, যমুনা নদীর উপর বঙ্গবন্ধু সেতু নির্মাণ এবং খাদ্য উৎপাদনে স্বয়ং-সম্পূর্ণতা অর্জন। কৃষকদের জন্য বিভিন্ন কল্যাণমূলক কর্মসূচি এবং ভূমিহীন, দুস্থ মানুষের জন্য সামাজিক নিরাপত্তামূলক কর্মসূচি চালু করার পদক্ষেপেও তিনি পিছিয়ে ছিলেন না। আইনি যুদ্ধের মাধ্যমে সমুদ্র বিজয় এবং শান্তিপূর্ণভাবে ভারতের সঙ্গে সহযোগিতার মাধ্যমে দীর্ঘদিনের ক্যান্সার নির্মূল অর্থাৎ সীমান্ত চুক্তির মাধ্যমে নিজ ভূমি উদ্ধারও তার অনবদ্য অর্জন।

বঙ্গবন্ধুকন্যার দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতাগ্রহণ পরবর্তী বাংলাদেশের চিত্রটি ছিল আরো উজ্জ্বল। এ সময়ে শেখ হাসিনা সরকারের উল্লেখযোগ্য অর্জনগুলোর মধ্যে রয়েছে বিদ্যুতের উৎপাদন ক্ষমতা ১৫ হাজার ২৬০ মেগাওয়াটে উন্নীতকরণ, গড়ে ৮ শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধি অর্জন, ৫ কোটি মানুষকে মধ্যবিত্তে উন্নীতকরণ, প্রতিটি ইউনিয়নে ডিজিটাল সেন্টার স্থাপন, মাধ্যমিক পর্যায় পর্যন্ত সকল শিক্ষার্থীর মধ্যে বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ, কৃষকদের জন্য কৃষিকার্ড এবং ১০ টাকায় ব্যাংক হিসাব খোলা, বিনা জামানতে বর্গাচাষীদের ঋণ প্রদান, চিকিৎসাসেবার জন্য সারাদেশে প্রায় সাড়ে ১৬ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক এবং ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র স্থাপন, দারিদ্র্যের হার ২০০৬ সালের ৩৮ দশমিক ৪ থেকে ২০১৩-১৪ বছরে ২৪ দশমিক ৩ শতাংশে হ্রাস, জাতিসংঘ কর্তৃক শেখ হাসিনার শান্তির মডেল গ্রহণ ইত্যাদি।

তৃতীয়বারের মতো ক্ষমতায় আসা আওয়ামী সরকারকে তো স্ব-চক্ষেই দেখছি। ঘোষিত হয়েছে ইতিহাস সেরা ৫ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকার বাজেট। পদ্মাসেতুর কজে অনেক অগ্রগ্রতি হয়েছে, রাজধানীজুড়ে চলছে মেট্রোরেলের দুর্বার গতি। ক'দিন আগেই অর্থনীতির 'লাইফ-লাইন' ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে দ্বিতীয় মেঘনা ও দ্বিতীয় গোমতী সেতু উপহার দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। উপহারের এই তালিকা দিন দিন বাড়ছে।

তৃতীয় বিশ্বের উন্নয়নকামী দেশগুলোর দুটো জিনিসের বড় অভাব। ক. সৎ ও সততার চর্চাকারী সাহসী রাজনীতিবিদ। খ. উন্নয়নের ধারবাহিকতা। জননী সাহসিকা সুফিয়া কামাল আশাবাদ করে বলেছিলেন- "পরম প্রত্যাশায় আছি, শেখ হাসিনা মৃত্যুর ভয়ে পশ্চাৎপদ হননি। সাহসের সঙ্গে সংগ্রামে এগিয়ে অগ্রবর্তিনী হয়ে আমাদের শ্রদ্ধা অর্জন করেছেন আর ঘাতক মূষিক গোপন থেকে ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পদদলিত হওয়ার আশঙ্কায় কৃমিকীট হয়ে আত্মগোপন করেছে।" সম্ভবত এ কারণেই সর্বনাশা পদ্মায় সাহসী স্বপ্নযাত্রার রোডম্যাপ (পদ্মা সেতু) এঁকেছেন শেখ হাসিনা। বিশ্বব্যাংক অর্থায়ন থেকে সরে যাওয়ার পর বিশাল এ প্রকল্প হাতে নেয়ার ঘটনায় অনেক দেশ ও সংস্থা এবং সরকারের মধ্যেও কোন কোন নীতি নির্ধারক সন্দেহ ও বিস্ময় প্রকাশ করলেও সে স্বপ্ন এখন দৃশ্যমান। সর্বশেষ তথ্য মতে, ৬ দশমিক ১ কিলোমিটার দীর্ঘ এ সেতুর কাজ ইতোমধ্যে ৮১ শতাংশ শেষ হয়েছে।

শুধু পদ্মা সেতু নয়, বড় বড় প্রকল্প নিয়ে তার (শেখ হাসিনা) সাহসী সিদ্ধান্তগুলোও বেশ প্রশংসার দাবিদার। এর মধ্যে এক লাখ ১৩ হাজার কোটি টাকা খরচ করে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করছে বাংলাদেশ। গত বছরের ৩০ নভেম্বরের পর থেকে দেশ এখন বিশ্বের ৩১টি পারমাণবিক শক্তিধর দেশের তালিকায়। রয়েছে মহাকাশ জয়ের মত বিশাল অর্জন। দেশের প্রথম স্যাটেলাইট 'বঙ্গবন্ধু-১' উৎক্ষেপণ করা হয়েছে। দুই হাজার ৯৬৭ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এ উপগ্রহ সফলভাবে মহকাশে যাওয়ায় বিশ্বের ৫৭তম দেশ হিসাবে নিজস্ব স্যাটেলাইটের মালিক হয়েছে বাংলাদেশ। যার সফল বাণিজ্যিকীকরণও কয়েকদিন আগে শুরু হয়েছে। গড় আয়ু হয়েছে ৭১ বছর। এসব আমাদের স্বস্তির জায়গা, আশা জাগানিয়ার গল্প।

তিন.

টানা তৃতীয়বারের মতো ক্ষমতায় শেখ হাসিনার নৌকা। স্বভাবতই সেই নৌকায় শুভাকাঙ্ক্ষীদের ভিড় বেশি। বেশি বললে ভুল হবে, বরং এতটাই যে নড়াচড়ার জো নেই। এ কথাটাই বেশ গুছিয়ে বলে থাকেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তার ভাষায়- 'প্রতিবারই ক্ষমতার আসার সঙ্গে সঙ্গে দলে কিছু 'কাউয়া' ঢুকে। ওরা ৭১'-এ ছিল, ৭৫'-এ ছিল।' আমি বলি— ২০১৯-এও আছে। প্রচার লীগ, তরুণ লীগ, কর্মজীবী লীগ, ডিজিটাল লীগ; আছে হাইব্রিড লীগও। দলের নামে 'লীগ' না থাকলেও যে নৌকায় ঠাঁই হয়নি, এমন নয়। শুধু ঠাঁই নয়, বড় বড় পদও পেয়েছেন অনেকে।  এরা ঘটনাক্রমে অনুপ্রবেশকারী নয়, সচেতনভাবে সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে। স্মরণ রাখতে হবে যে খুনি জিয়া মাথানত করে দরখাস্ত দাখিল পূর্বক বঙ্গবন্ধু ঘোষিত বাকশালে যোগ দিয়েছিলেন। পরে তিনি মুস্তাকের খুনি চক্রের সক্রিয় সহযোগিতায় বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডে অংশগ্রহণ করেছিলেন ।

মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সিক্ত দেশপ্রেমিক দলসমূহের রাজনৈতিক ঐক্যের প্রয়োজনে জননেত্রী শেখ হাসিনা নির্বাচনী ঐক্যজোট গঠন করেছিলেন। উদ্দেশ্য ছিল মহৎ। জাতির কল্যাণে সকলের সমন্বিত প্রচেষ্টা। এটা কোনো দুর্বলতা ছিল না। এই ঐক্যজোটে যোগ দিয়ে জনপ্রিয় আওয়ামী লীগের সহায়তায় অনেক দলীয় প্রধান মন্ত্রিত্বইও পেয়েছেন। যাদের একজন কিনা কোন কারণ ছাড়াই অযথা ক্ষমতায় থাকাকালীনই (৮ নভেম্বর, ২০১৭) হুমকি দিয়ে বসলেন, 'আমরা (জাসদ) না থাকলে আওয়ামী লীগকে রাস্তায় ফ্যা ফ্যা করে ঘুরতে হবে; হাজার বছরেও ক্ষমতার মুখ দেখবেন না।' আওয়ামী লীগ নেতাদের উদ্দেশ্য করে তিনি আরো বলেন, আপনারা এক টাকার মালিক নন, ৮০ পয়সার মালিক। এরশাদ, ইনু, দিলীপ বড়ূয়া ও মেননকে নিয়েই আওয়ামী লীগের এক টাকা হয়েছে। ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনে জয়ের পরও সরকারি দল-বিরোধী দল প্রশ্নে নানা বিব্রতকর বক্তব্য এসেছে তার মুখ থেকে। তারা তো আছেন, কিন্তু মন্ত্রিত্ব পাননি, তবে নৌকায় পা দিয়ে সংসদে এসেছেন ঠিকই। এসেছেন তাদের নতুন সতীর্থরাও।

অথচ ৩০ ডিসেম্বর ২০১৮ এর পর আরেক ডিসেম্বর না আসতেই সরকারের সমালোচনায় মুখর হয়ে উঠেছেন তারা। প্রশ্ন তুলেছেন জাতীয় নির্বাচন নিয়ে। জনগনের স্বতস্ফূর্ত অংশগ্রহণে আওয়ামী লীগ ও সহযোগীরা নিরঙ্কুশ বিজয় লাভ করেছেন। কিন্তু এরা  বিএনপি-জামাতের চেয়েও জোর গলায় নির্বাচনকে কলঙ্কজনক আখ্যায়িত করে এর দায়ভার আওয়ামী লীগকে নিতে হবে মর্মে হুঙ্কার দিচ্ছেন। তাদের পার্টি ফোরামেও চলছে সরকারের সমালোচনার ঝড়। পত্রিকায় দেখলাম- একজন পার্টি প্রধান অত্যন্ত রূঢ় ভাষায় সরকার পরিচালনায় চরম দুর্নীতির কথা উল্লেখ করে জননেত্রীর নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের কঠোর সমালোচনা করেছেন। এ লক্ষণ সুখকর নয়। মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকার জন্য জাতি অবশ্যই তাদের শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছে বা করবে; কিন্তু সাময়িক ক্রাইসিসের মুহূর্তে মূল দল আওয়ামী লীগের দিকে আঙুল উঁচিয়ে 'শাসিয়ে কথা বলা' কি এটাই প্রমাণ করে না যে, তারা আওয়ামী লীগকে প্রকান্তরে হুমকি দিচ্ছেন? আমার তো তাই মনে হয়। তাই আমি শঙ্কিত হই।

আমাদের অতীত অভিজ্ঞতা অনেক পীড়াদায়ক। পঁচাত্তরের ১৫ অগাস্টের পটভূমি কীভাবে সৃষ্টি হয়েছিল, কারা সৃষ্টি করেছিল- তা আমাদের অজানা নয়। আমি নিজেও ব্যক্তিগতভাবে এদের দ্বারা আক্রান্ত হয়েছিলাম। সারাদেশ ছিল অস্থির। কোথাও রেললাইন পুড়িয়ে দেয়া হয়, কোথাও পাটের গুদামে আগুন ধরানো হয়, থানা হামলা করে  অস্ত্রলুট করা হয়। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বাসা ঘেরাও করে সন্ত্রাস সৃষ্টি শুধু নয়, গুলিও চালানো হয়েছিল, ফলে কয়েকজনের হতাহতের ঘটনাও ঘটেছিল । বিদেশি রাষ্ট্রদূতকে অপহরণ চেষ্টা করে সদ্য স্বাধীন দেশকে অকার্যকর দেশ হিসেবে চিহ্নিত করার চেষ্টা করা হয়েছিল। কৃত্রিম খাদ্য সংকটকালে খাদ্যভর্তি দুটি জাহাজ দেশে আসার পথে মাদ্রাজ উপকুলে সমুদ্রে ডুবিয়ে দেয়া হয়েছিল।

'উদ্ভট সমাজতন্ত্র'র ধারণা দিয়ে গণবাহিনী সৃষ্টি করে শত শত মুজিবাবাদী ছাত্রলীগ কর্মীকে হত্যা করা হয়। সদ্যস্বাধীন প্রায় ধ্বংসপ্রাপ্ত দেশে সিরাজ সিকদারকে সহায়তা করে দিনের পর দিন হরতালের ডাক দেয়া হতো । জনগণের মধ্যে ভীতিকর পরিবেশ সৃষ্টির করা হতো । এসব তো আমরা ভুলে যাইনি। ১৫ অগাস্টের পূর্ববতী ও পরবর্তী ঘটনাসমূহ এবং ৩ নভেম্বরের ঘটনা পর্যালোচনা করলে তাদের আজকের এই অবস্থান নিশ্চয়ই আমাদের দারুণভাবে শঙ্কিত করে তোলে। বঙ্গবন্ধুর খুনি জিয়াকে নির্ঘাত মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা করে তথাকথিত সিপাহী জনতার উচ্ছ্বসিত মিছিলে কারা নেতৃত্ব দিয়েছিল, তা জনগণ প্রত্যক্ষ করেছে এবং আমরা ভুলিনি। আমার মনে হয় এভাবেই বঙ্গবন্ধুর নির্মম হত্যকাণ্ডকে শুধু উপেক্ষা নয়, অবজ্ঞাও করা হয়েছে। সন্দেহ এখানেই ।

জীবদ্দশায় এসব সুখ-পাখিদেরকেই 'হঠকারী দল' আখ্যা দিয়ে এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিয়েছিলেন বর্ষীয়ান নেতা প্রয়াত সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। তিনি বলেছিলেন, 'মুক্তিযুদ্ধ আমাদের ইতিহাসের একটি অংশ। কিন্তু জাসদের নেতা-কর্মীরা এই সফল মুক্তিযুদ্ধকে বিতর্কিত করার চেষ্টা করছিল। এদের একজনকে আবার মন্ত্রিত্বও দেওয়া হয়েছে, যার প্রায়শ্চিত্ত আওয়ামী লীগকে আজীবন করতে হবে (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম, ১৩ জুন ২০১৬)।' সৈয়দ আশরাফ চলে গেছেন গত ৩ জানুয়ারি। অথচ বছর না ঘুরতেই তার বলে যাওয়া সেই প্রায়শ্চিত্ত শুরু হয়ে গেছে। আওয়ামী লীগের এ সহযোগীদের উল্টো সুর তো এটাই প্রমাণ করে। হ্যাঁ, বলতে পারেন তারা গঠনমূলক সমালোচনা করছে বা সতর্ক করছেন; কিন্তু আমার অতীত অভিজ্ঞতা তো আমার মনে হতাশারই জন্ম দেয়। শঙ্কা এখানেই  ।

জীবনের কোনো পর্যায়ে ছাত্রলীগ-আওয়ামী লীগ না করেও অনেকে ব্যবসায়ী থেকে আওয়ামী লীগের নমিনেশনে এমপি হয়েছেন, এসেছেন হাওয়া ভবনের সদস্যরাও। সাম্প্রতিক জননেত্রী শেখ হাসিনার অভিযানে এর অনেকটাই খোলাসা হয়েছে ইতোমধ্যে। উচ্চস্বরে অনেক কথা বলা হলেও থেমে নেই যুদ্ধাপরাধী বা তাদের উত্তরসূরী ও আওয়ামী বিদ্বেষী বিএনপি-জামায়াতের সক্রিয় নেতা ও কর্মীদের দলের বিভিন্ন পর্যায়ে স্বত:স্ফূর্ত যোগদান। জেলা থেকে কেন্দ্র পর্যায়ে এদের দলে যোগদান অব্যাহত রয়েছে। শুধু বিএনপি-জামাত থেকে নয়, যুদ্ধাপরাধীর সন্তান বা তাদের উত্তসূরীরাও মহাসুখে দলে দলে যোগ দিচ্ছে আওয়ামী লীগে। এ যোগদানে সহায়তা করছেন ক্ষমতাসীনরাই। নেত্রীর কোনো হুঁশিয়ারির প্রতি তারা ভ্রুক্ষেপ করছেন না। ওবায়দুল কাদেরের (কাউয়া) বা কাক সম্ভবত এরাই।

কাক বেশ ধূর্ত চরিত্রের প্রাণী। কী গ্রাম, কী শহর— সব পরিবেশেই এরা মানানসই। অন্যকে তাড়িয়ে নিজের ষোলআনাটা বুঝে নিতেও এরা ওস্তাদ। উচ্চস্বরে ডাকতে পারাটা এদের অনন্য বৈশিষ্ট্য। ধারণা করি- নিজের বহিরাগত পরিচয়টা দূর করে অবস্থান পাকাপোক্ত করাই এই ডাকাডাকির মূল হেতু। বাস্তবিক অর্থে হয়ও তাই। কাকেরা খাপ খাইয়ে চলতে পারে সবখানে। কেড়ে নিতে পারে অন্য প্রাণীদের খাবার, অধিকার।

অতি সাবধানী কাকের সাবান চুরির গল্পটা সবার জানা। চুরি বোঝার পর কোনো কোনো ক্ষেত্রে হয়তো সাবানটা উদ্ধার করা যায়, কিন্তু ততক্ষণে তো সেটা ক্ষতবিক্ষত। তাই চতুর কাক থেকে সাবধানতা নয়, দমনটাই বেশি জরুরি। এসব প্রতীকী কথা। আওয়ামী লীগে উড়ে এসে জুড়ে বসা লোকদের সঙ্গে মেলালেও মেলাতে পারেন। কাউয়া তাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে ভেজালও দূর করতে হবে। মোহাম্মদ নাসিমের ভাষায়, 'নব্য ভেজালকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। কারণ এরাই আমাদের জন্য ক্ষতিকর।' আমরা ঘরের ভেতর ঘর চাই না। মশারির ভেতর মশারি টানানোও কাম্য নয়। যদিও তা থামছে না। চলছেই।

আরেকটি বিষয় স্বীকার করতেই হবে, সত্তরের নির্বাচনে অভূতপূর্ব সাফল্য পেলেও বিপক্ষে কিন্তু ২৮ শতাংশ ভোট পড়েছিল। সেই ২৮ শতাংশের সহায়তায় আরও যে দু-এক ভাগ বাড়েনি, সেটাও তো নিশ্চিত করে বলা যায় না। এই অপশক্তিই ফুলে ফেঁপে উঠে নিজামী-মুজাহিদদের ক্ষমতায় বসিয়েছে। জন্ম দিয়েছে আরও নানা অপশক্তির, অপরাজনৈতিক দলের। স্বাধীন দেশেও ফের ভর করতে শুরু করে পাকিস্তানি প্রেতাত্মা। যদিও বাংলাদেশের জনগণ তা হতে দেয়নি। চতুর্থবারের মতো ক্ষমতায় বসিয়েছে শেখ হাসিনাকে, ফিরিয়ে এনেছে মুজিবের আদর্শ।

তবুও শঙ্কা থেকে যায়। কারণ, দেশে এখন শুধু সাম্প্রদায়িক শক্তির উত্থান কিংবা সুবিধবাদী সুখ-পাখিরাই নয়, দলের ভেতরেও অনেক উইপোকা বাসা বেঁধেছে। সম্প্রতি ক্যাসিনো ইস্যুতে কয়েক যুবদল কর্মী (পরবর্তীতে যুবলীগ) কোটিপতি বনে যাওয়ার খবরে এর প্রমাণ মিলেছে। জেলায় জেলায় নব্য গডফাদার সৃষ্টি হয়েছে। এরা শাসকদলের কাঁধে চড়ে অর্থ উপার্জনে লিপ্ত। তা সাম্প্রতিক অভিযানে দৃশ্যমান হয়েছে। এক্ষেত্রে পক্ষপাতহীন অভিযান প্রয়োজন বলে এক সুরে দেশবাসী দাবি তুলেছেন। জননেত্রী শেখ হাসিনা এক্ষেত্রে সফল হবেন প্রত্যাশা করি ।

বিভীষণ নিয়ে লেখার শুরুতে 'অর্বাচীন' শব্দটি উল্লেখ করেছিলাম। শেষ করব সেই বক্তব্যে ফিরে, একটি প্রশ্ন রেখে।

ভারতীয় লেখক সুখরঞ্জন দাশগুপ্ত তার বইয়ে লিখেছেন, 'মুজিব খুন হয়ে যাওয়ার পর একটা প্রশ্ন প্রায়ই ওঠে, একটা চক্রান্ত যে চলছে এ-কথা জানা সত্ত্বেও ভারত সরকার মুজিবকে বাঁচানোর জন্য কিছু করল না কেন?' '৭৭-এর ৩০ নভেম্বর ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতী ইন্দিরা গান্ধীর সঙ্গে সাক্ষাৎকালে আমিও এ প্রশ্নটা তুলি তার কাছে। শ্রীমতী গান্ধী আমাকে বলেন, কিছু একটা যে ঘটতে যাচ্ছে আমরাও তা জানতাম। মুজিবকে আমি এ-সম্পর্কে বহুবার সতর্কও করে দিই। কিন্তু তিনি বরাবর আমাকে বুঝিয়েছেন, 'পাকিস্তানের জেল থেকেই যখন বেরিয়ে আসতে পেরেছি, নিজের দেশের জল্লাদদের নিশ্চয়ই এড়াতে পারব।' (মুজিব হত্যার ষড়যন্ত্র: পৃষ্ঠা নং ৮০)

ভয় পেতেন না বঙ্গবন্ধু; সেই ভয় কন্যাও পান না। অথচ তাকে ঘিরে সব সময়ই আমাদের শঙ্কা-আশঙ্কা। ১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট তিনি বিদেশে থাকার কারণে বেঁচে গিয়েছিলেন, তবে সেদিন তার জন্য যে বুলেট ঘাতকরা বরাদ্দ রেখেছিল, এখনও তা তাকে তাড়া করে ফেরে। এখন পর্যন্ত ১৯ বার মৃত্যুর মুখোমুখি হয়েছেন। ২০০৪ সালের ২১ অগাস্ট বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে দলীয় সমাবেশে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় তাকে হত্যার জন্য গ্রেনেড হামলা ছিল সবচেয়ে ভয়াবহ হত্যা মিশন। দলের নেতাকর্মীরা নিজেদের জীবন দিয়ে শেখ হাসিনাকে সেদিন রক্ষা করেছে। সেই গ্রেনেড হামলার কুশীলবরা এখনও লন্ডনে, পাকিস্তান এমনকি বাংলাদেশসহ আরও কয়েক দেশে।

বাস্তবিক অর্থে শেখ হাসিনা অপশক্তিকে ভয় না পেলেও আমরা পাই। কেননা বঙ্গবন্ধু হত্যার পর 'হত্যার প্রতিবাদে' প্রতিরোধের জন্য মিছিল বের করায় আমি নিজেই বর্বর নির্যাতনের শিকার হয়েছিলাম। অনেক স্থানীয় সতীর্থ নেতারাও নির্যাতন ভোগ করেছিলেন। ডাণ্ডাবেড়ি লাগিয়ে, হাতকড়া পরিয়ে চোখ বেঁধে খালি মাঠে গুলি করে হত্যার পাঁয়তারাও তারা করেছিল। আমি আইনজীবী, প্রভাষক ও সাংবাদিক হওয়া সত্ত্বেও নিছক সাধারণ হাজতীর চেয়েও খারাপ আচরণ করেছিল খুনি মোস্তাকের গেস্টেপো বাহিনী। এক হাজার পঁচ্চানব্বই দিন অহেতুক অমানবিক কষ্ট দিয়ে কারাগারে আটক রাখা হয়েছিলো আমাকে।

সমাগত মুজিব বর্ষ ও স্বাধীনতার শত বার্ষিকী। দুটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি অনুষ্ঠানসমূহ বাস্তবায়নের সক্রিয়। এখানে অনুপ্রবেশকারী, ভেজাল, কাউয়া বা হাইব্রিডরা সুযোগ পান নাই বলে আমি মনে করি। তবে নেত্রীর অজান্তে এধরনের যদি কেউ এখানে স্থান পেয়ে থাকেন তবে নিজেকে দুর্ভাগা মনে করা ছাড়া কিছুই করার নেই ।

দেশরত্ন, আপনি তো বারবার বুলেট ও গ্রেনেডের মুখ থেকে বেঁচে ফেরা বহ্নিশিখা। রাজনীতির মাধ্যমে মানুষের কল্যাণই আপনার রাজনীতির দর্শন। বাংলার মেহনতি দুঃখী মানুষের কল্যাণে আপনার মতো কে চিন্তা করবে? কে করবে জীবন উৎসর্গ? সর্বোপরি সবচেয়ে বড় কথা- আমরা দিশা খুঁজব কার কাছে?

পিতার রক্তে, কন্যার জীবনভর সংগ্রামে তিল তিল করে গড়ে তোলা যে বাংলাদেশ; সেই দেশে থেকে বঙ্গবন্ধুর নীতিবিরোধী, শেখ হাসিনার সরকারবিরোধী, রাষ্ট্রবিরোধী এমনকি স্বার্থের টানে নিজ দলের বিরুদ্ধেও যারা ষড়যন্ত্র করছে- অর্বাচীন-মূর্খ-কাউয়া তো তারাই। সেই কাউয়াদের বিতাড়ণ করতে প্রয়োজন 'কাকতাড়ুয়া'। আওয়ামী লীগ কী সেটা নিয়ে ভাবছে?