ভায়োলেন্ট মব: শুধুই সামাজিক অস্থিরতা নাকি স্যাবোটাজ?

Published : 23 July 2019, 01:50 PM
Updated : 23 July 2019, 01:50 PM

আমাদের দেশে কি এমন কোনও সংস্থা বা কর্তৃপক্ষ আছে যারা ঘটনা মনিটরিং করে? দুর্ঘটনার ট্রেন্ড, চরিত্র ইত্যাদি বিশ্লেষণ করে? দুর্ঘটনার সম্ভাব্যতা যাচাই করে? এমন কোন সংস্থার কথা আমার জানা নাই। কিন্তু মাঝে মাঝে কোনও একটা দুর্ঘটনা আসলেই দুর্ঘটনা কিনা সেটা নিশ্চিত হওয়াটা জরুরি। কোনও সুপরিকল্পিত অপরাধ যদি দুর্ঘটনার বাতাবরণে পার পেয়ে যায়, তবে অপরাধের প্রবণতা এবং অপরাধীর সাহস, দুটোই চক্রাকারে বাড়ার সম্ভাবনা থাকে।

এইতো কয়দিন আগেই লাগাতার আগুন লাগতে থাকলো দেশের নানা জায়গায়। সারাদেশ ব্যতিব্যস্ত হয়ে পড়লো হঠাৎ। আবার হঠাৎই থেমে গেলো সব। আর আগুন লাগছে না কোথাও! কেমন খটকা লাগে না? এমন না যে, সকল অবকাঠামোগত ত্রুটি রাতারাতি মেরামত করা হয়েছে। অথবা যথেষ্ট সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে সব জায়গায়। তবে কয়েক মাস আগে কেন ধুম পড়ে গিয়েছিল? এতো অল্প কয়দিনে এতোগুলো অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটতে পারলো, আর এখন একটিও ঘটছে না কেন? এমন কি হতো পারে যে এগুলো কোনটাই দুর্ঘটনা নয়, পরিকল্পিত অগ্নিকাণ্ড? আমরা জানিনা। কারণ, কেউ বিষয়টি তলিয়ে দেখেনি। মাঝখান থেকে বেঘোরে ঝরে গেলো কিছু জীবন।

এবার শুরু হয়েছে গণপিটুনি দিয়ে দলবদ্ধভাবে মানুষ মারার হিরিক। দেশের নানা জায়গা থেকে খবর আসছে। খেয়াল করলে দেখবেন, যারা এই সংঘবদ্ধ সন্ত্রাসের শিকার হচ্ছে তারা প্রত্যেকেই নিরীহ মানুষ। তারা কোনরকম উস্কানিমূলক আচরণ করেনি। তবুও একদল মানুষ ঝাঁপিয়ে পড়ছে তাদের টার্গেট করে। কাজটাকে নির্বিঘ্ন করার জন্য রটিয়ে দিচ্ছে ছেলেধরার গুজব। পুরো ব্যাপারটাই কেমন যেনো সাজানো নাটকের মতো। ভাবগতিক দেখে মনে হচ্ছে, এই ট্রেন্ড আগামী কয়েকদিন চলবে। তারপর যেমন হঠাৎ শুরু হয়েছে, আবার হঠাৎই থেমে যাবে। এমন না যে, যে সামাজিক অসহিষ্ণুতা বা অস্থিরতার কথা বলার চেষ্টা করা হচ্ছে, তার চিকিৎসা বা নিরাময় হয়ে যাবে এই কয়দিনে। এইসব ঘটনা দুর্ঘটনার ফাঁকে ফাঁকে চলছে শিশুর মাথা কেটে নেয়ার মতো গুজব বা অন্য দেশে গিয়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে বিচার, লবিং ইত্যাদি।

আমার ধারণা, গণপিটুনির হুজুগ থেমে যাওয়ার পর কিছুদিন বিরতি দিয়ে আরেকটা নতুন উপসর্গ দেখা দেবে। এরকমই হঠাৎ শুরু হবে, কয়দিন চলবে, মিডিয়া ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঝড় উঠবে। তারপর আবার হঠাৎই থেমে যাবে।

এর আগেও আমরা দেখেছি, ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে অসন্তোষ ছড়ানোর চেষ্টা। বা স্বতঃস্ফূর্ত কোনও গণআন্দোলনকে মিথ্যা বানোয়াট গুজব রটিয়ে ভিন্ন খাতে নেয়ার চেষ্টা। যাতে আমরা সামিল হতে দেখেছি তথাকথিত কোন কোন খ্যাতিসম্পন্ন মানুষকেও।

আমি জানিনা, এগুলো শুধুই আমার সন্দেহবাতিক মনের সমস্যা কিনা। নাকি সত্যি পরিকল্পিত স্যাবোটাজ সব? সুনির্দিষ্ট কেউ বা কোন সংঘবদ্ধ গোষ্ঠী পরিকল্পিতভাবে দেশটাকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে নাতো? হতেই তো পারে। আমি জানিনা। শুধু বুঝতে পারি, সবার সতর্ক থাকাটা জরুরি। খুব জরুরি। আর চাই, আমার সব সন্দেহ ভুল প্রমাণিত হোক।