শহীদ জননী জাহানারা ইমাম ও সাম্রাজ্যবাদবিরোধী লড়াই

গৌতম রায়
Published : 26 June 2019, 11:17 AM
Updated : 26 June 2019, 11:17 AM

ভারতীয় উপমহাদেশে সাম্প্রদায়িকতা ও সাম্রাজ্যবাদবিরোধী আন্দোলনে শহীদ জননী জাহানারা ইমাম এক প্রাতঃস্মরণীয় ব্যক্তিত্ব। বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে তার কর্মকাণ্ড বিস্তৃত হলেও দেশ- কালের সীমা অতিক্রম করে তার সাম্রাজ্যবাদবিরোধী লড়াই, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী একাত্তরের ঘাতক দালাল ও পাক হানাদার বাহিনীর সাহায্যকারী শক্তির বিরুদ্ধে তার জীবন-সংগ্রাম, মৌলবাদ, সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে তার আপসহীন লড়াই তাকে মানুষের মুক্তির সংগ্রামে এক অবিস্মরণীয় ব্যক্তিত্বের ব্যক্তিত্ব হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছে।

জাহানারা ইমামের নেতৃত্বে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে পাক-হানাদার বাহিনীর সহযোগী ঘাতক দালাল, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে গত শতাব্দীর নয়ের দশকে বাংলাদেশে উত্তাল গণ সংগ্রাম হয়েছিল, তার ফলে সেই দেশ আজ আবার একটা গণতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ পরিকাঠামোর ভেতরে নিজেকে উপস্থাপন করতে সক্ষম হয়েছে। জাহানারা ইমামের নেতৃত্বাধীন এই আন্দোলনকে বাংলাদেশের মানুষ তাদের ঐতিহাসিক মুক্তিযুদ্ধের 'দ্বিতীয় পর্যায়' বলে অভিহিত করে থাকেন।

মুক্তিযুদ্ধের সেই 'দ্বিতীয় পর্যায়'টি  নির্যাস আজ  কেবল  বাংলাদেশের রাজনৈতিক বা ভৌগলিক সীমারেখার মধ্যে আবদ্ধ নেই। জাহানারা ইমাম তার ঐতিহাসিক আন্দোলনের ভেতর দিয়ে নিজেকে গোটা বিশ্বের মৌলবাদ, সাম্প্রদায়িকতা, যুদ্ধাপরাধ এবং সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী আন্দোলনের এক জীবন্ত প্রতীকে পরিণত করেছেন।

জাহানারা ইমামের জন্ম অবিভক্ত বাংলার মুর্শিদাবাদ জেলার এক প্রত্যন্ত গ্রামে ১৯২৯ সালের ৩ মে। তার পিতা সৈয়দ আবদুল বারী ছিলেন পেশায় ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট। মা সৈয়দা হামিদা বেগম ছিলেন সে যুগের এক বিশিষ্ট বিদুষী মহিলা। রাঢ় বাংলার অভিজাত  মুসলিম পরিবারের নিজস্ব আয়মাদারির ভেতরেই জাহানারার শৈশব -কৈশোর কাটলেও তার পরিবারে কিন্তু মেয়েদের আধুনিক শিক্ষার ব্যাপারে কোনো রক্ষণশীলতা ছিল না। তাই কোনও রকম পারিবারিক প্রতিবন্ধকতা ছাড়াই ১৯৪২ সালে জাহানারা ম্যাট্রিক পাস করেন।

১৯৪৪ সালে তিনি রংপুরের কারমাইকেল কলেজ থেকে আইএ পাস করে '৪৫ সালে ভর্তি হন কলকাতার লেডি ব্রেবোর্ন কলেজ। সেখান থেকেই  '৪৭ সালে তিনি বিএ পাস করেন। '৪৮ সালে তিনি ময়মনসিংহ শহরের বিদ্যাময়ী বালিকা বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষিকা পদে যোগ দেন। '৪৯ সাল পর্যন্ত সেই স্কুলে শিক্ষকতা করেছিলেন। এরপর চলে আসেন ঢাকায়। যোগ দেন সিদ্ধেশ্বরী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা হিসেবে।

১৯৬০ সাল পর্যন্ত এই স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা দায়িত্ব তিনি অত্যন্ত যোগ্যতার সঙ্গে পালন করেছিলেন। এই সময় তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএ ডিগ্রি অর্জন করেন এবং শিক্ষা বিজ্ঞানের উচ্চতর গবেষণার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যান। সেখানকার একটি সার্টিফিকেট কোর্স অত্যন্ত যোগ্যতার সঙ্গে উত্তীর্ণ হয়ে ঢাকায় ফিরে এসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএ উপাধি প্রাপ্ত হন। পরবর্তীতে তিনি ঢাকাতেই বুলবুল একাডেমী নামে এক কিন্ডারগার্টেন স্কুলের সঙ্গেও যুক্ত হয়েছিলেন।

পূর্ব পাকিস্তানের শিশু শিক্ষার ক্ষেত্রে এ ধরনের স্কুলের প্রচলন তখন প্রায় ছিলই না। পরবর্তীতে তিনি ঢাকা শিক্ষক প্রশিক্ষণ কলেজের প্রভাষকের দায়িত্ব পালন করেছিলেন। জাহানারা ইমাম কিছুদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আধুনিক ভাষা বিভাগের খণ্ডকালীন অধ্যাপনার দায়িত্ব পালন করেছিলেন। তার স্বামী শরিফ ইমাম ছিলেন পেশায় ইঞ্জিনিয়ার। মহান মুক্তিযুদ্ধে জাহানারা ইমামের পুত্র শফি ইমাম রুমী শাহাদাত বরণ করেন ।

মুক্তিযুদ্ধের সময় কালের সেই দুঃখ ভেজা দিনগুলোর কথা টুকরো টুকরো ছেঁড়া ছেঁড়া কাগজের লিপিবদ্ধ করে রাখতেন জাহানারা। একটা গোটা খাতাতে সে দুঃখজ্বালা লিপিবদ্ধ করার সাহস হতো না, পাছে পাক-হানাদার বাহিনী এসে তার পুত্র, মুক্তিযোদ্ধা রুমির তল্লাশির নামে সে খাতাখানিকেও নষ্ট করে দেয়, এই ছিল ভয়।

দেশ স্বাধীন হবার অনেক পরে, বঙ্গবন্ধুর শাহাদাত বরণেরও পরে যুদ্ধাপরাধী ঘাতক দালালেরা আবার দেশের মাটিতে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে দেখে বুকের ভিতর জমিয়ে রাখা কান্নাকে ক্রোধে রূপান্তরিত করে, সেই সব হারানো, ছেঁড়া, টুকরো টুকরো কাগজ গুলিকে একত্র করে জাহানারা ইমাম রচনা করেন 'একাত্তরের দিনগুলি'। এ বইটিকে শুধু বাংলাদেশের মানুষ নন, গোটা বিশ্বের মানবাধিকারের পক্ষের মানুষজন বলে থাকেন- 'বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের টেস্টামেন্ট।'

অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারী জিয়াউর রহমান ১৯৮১ সালে একাত্তরের ঘাতক দালাল, কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী গোলাম আযমকে বাংলাদেশে ফিরে আসবার অনুমতি দেওয়ার পরই জাহানারার অন্তরাত্মা থেকে যুদ্ধাপরাধী ঘাতক দালালদের বিরুদ্ধে ক্রোধের এই  স্ফুলিঙ্গ উৎসারিত হতে শুরু করেছিল।

খালেদা জিয়া প্রথমবার ক্ষমতায় আসার পর কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী গোলাম আযম বাংলাদেশের নাগরিকত্ব ফিরে পায় এবং একাত্তরের ঘাতক হিসেবে সব থেকে বেশি নিন্দিত জামায়াতে ইসলামী এই গোলাম আযমকে '৯১ সালের ২৯ ডিসেম্বর তাদের দলের আমির হিসেবে ঘোষণা করার  করে।

গোটা বাংলাদেশের মানুষের এই ঘটনার প্রেক্ষিতে  ক্ষোভের ফল্গুধারাকে প্রবাহমান নদীর স্রোতে পরিণত করেছিলেন শহীদ জননী জাহানারা ইমাম। একাত্তরের ঘাতক-দালালদের সমস্ত কুকীর্তির তথ্য প্রমাণ সংগ্রহ তিনি তৈরি করলেন 'গণ তদন্ত কমিশন'। এই কাজে তার পাশে সব রকমের সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিলেন বঙ্গজননী সুফিয়া কামাল।

সুফিয়া কামাল  নিজে এই গণ তদন্ত কমিশনের তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে থেকে শামসুর রাহমান, কলিম শরাফী, কবীর চৌধুরী, আহমেদ শরীফ, দেবেশ চন্দ্র ভট্টাচার্য, অনুপম সেন, বদরুদ্দীন উমর, শওকত ওসমান প্রমুখ মুক্তবুদ্ধির মানুষদের সঙ্গে নিয়ে এবং জননেত্রী শেখ হাসিনার মানবিক সহযোগিতাকে সম্বল করে তথ্য অনুসন্ধানের কাজটি সমাপ্ত করলেন।

'৯২ সালের ১৯ জানুয়ারি ১০১ জন সদস্যকে নিয়ে জাহানারা ইমামের নেতৃত্বে যে ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি তৈরি হয়েছিল, সেই কমিটি অল্প সময়ের ভেতরে গোটা বাংলাদেশ জুড়ে ৭০টি সংগঠনের সমন্বয়ে ১১ ফেব্রুয়ারি ('৯২) পরিণত হয় 'মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন ও একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল জাতীয় সমন্বয় কমিটি' হিসেবে।শহীদ জননী জাহানারা ইমাম হন এই সমন্বয় কমিটির আহ্বায়ক। সাংগঠনিকভাবে এই কাজে তার সব থেকে বড় সহায়ক শক্তি ছিলেন বাংলাদেশের বিশিষ্ট সংস্কৃতিকর্মী সৈয়দ হাসান ইমাম।

জাহানারা ইমামের ছিল অপূর্ব সাংগঠনিক দক্ষতা। তার অনুকরণীয় ব্যক্তিত্বের জেরে  তিনি পরস্পর বিপরীত মেরুতে অবস্থানকারী কমিউনিস্ট বুদ্ধিজীবী বদরুদ্দীন উমর এবং জননেত্রী শেখ হাসিনা কিংবা সারস্বত জগতে চরম ব্যক্তিত্বের সংঘাতে লিপ্ত কবীর চৌধুরী এবং আহমেদ শরীফকে ঘাতক-দালালদের শাস্তির দাবিতে এক মঞ্চে আনতে সক্ষম হয়েছিলেন।

গণ তদন্ত কমিশনের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে '৯২ সালের ২৬ মার্চ ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে একাত্তরের কুখ্যাত ঘাতক দালাল গোলাম আযমের বিচারের দাবিতে ন্যুরেনবুর্গের বিচারের অনুসরণে গণ আদালত অনুষ্ঠিত হয়। এই গণ আদালতের সদস্য হিসেবে ছিলেন বঙ্গজননী সুফিয়া কামাল, কবি শামসুর রাহমান, শিল্পী কলিম শরাফি, অধ্যাপক কবীর চৌধুরী, অধ্যাপক আহমদ শরীফ, অ্যাডভোকেট গাজীউল হক, বিচারপতি দেবেশ চন্দ্র ভট্টাচার্য, আবু ওসমান চৌধুরী, বিচারপতি অনুপম সেন প্রমুখ ।

গণআদালত সংগঠনে শহীদ জননীকে সাক্ষ্য প্রমাণ সংগ্রহের বিশেষভাবে সাহায্য করেছিলেন শহীদ বুদ্ধিজীবী শহীদুল্লাহ কায়সারের পত্নী পান্না কায়সার ও কন্যা শমী কায়সার। এই গণআদালত সার্বিকভাবে বাংলাদেশের সমাজ জীবনে একাত্তরের ঘাতক-দালালদের সম্পর্কে নতুন প্রজন্মের ছেলেমেয়েদের কাছে একটি আশাবাহী বার্তা বয়ে আনে। খালেদা জিয়ার সরকার, যেই সরকারের সাথে সরাসরি যুক্ত ছিল কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী সংগঠন জামায়াত ইসলাম। একাত্তরের কুখ্যাত ঘাতক ও দালাল মতিউর রহমান নিজামী পরে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন সরকারের কৃষিমন্ত্রী হয়েছিলেন। তিনিসহ যুদ্ধাপরধাধীরা প্রত্যেকেই ভয়ঙ্কর রকমভাবে রুষ্ট হন শহীদ জননী জাহানারা ইমামসহ গোটা গণআদালত প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত থাকা বাংলাদেশের মুক্তবুদ্ধির মানুষজনদের উপরে।

গণআদালতের সঙ্গে যুক্ত ২৪জন বিশিষ্ট ব্যক্তিসহ জাহানারা ইমামের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগ এনে অজামিনযোগ্য মামলা দায়ের করে খালেদা জিয়া সরকার। প্রবল গণরোষের প্রেক্ষিতে কার্যত বাংলাদেশের হাইকোর্ট বাধ্য হয়েছিল বাংলাদেশের বিশিষ্ট এই ২৪ জন নাগরিকের জামিন মঞ্জুর করতে। রাষ্ট্রযন্ত্রের এই প্রবল বিরোধিতার মধ্যেই ক্যান্সার আক্রান্ত জাহানারা ইমাম লাখো মানুষের পদযাত্রা নিয়ে '৯২ সালের ১২ এপ্রিল গণ আদালতের রায় কার্যকর করার দাবি সম্বলিত স্মারকলিপি জাতীয় সংসদের স্পিকার,  তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে সেই সময়ের  বিরোধী দলের নেত্রী শেখ হাসিনার হাতে অর্পণ করেন।

তৎকালীন জাতীয় সংসদের ১০০ জন সাংসদ প্রকাশ্যে গণ আদালতের রায়কে সমর্থন করেন। শহীদ জননীর নেতৃত্বাধীন গণ আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় উত্তাল হয়ে ওঠে বাংলাদেশ। গণ-স্বাক্ষর, গণসমাবেশ, মানববন্ধন, সংসদ যাত্রা, অবস্থান, ধর্মঘট, মহাসমাবেশ ইত্যাদি কর্মসূচির ভেতর দিয়ে আন্দোলন এক বেগবান ধারায় পর্যবসিত হয়। খালেদা জিয়ার সরকার বাধ্য হয়ে সংসদে চার দফা চুক্তির কথা বলেন। আন্দোলন চলতেই থাকে।

'৯৩ সালের ২৮ মার্চ নির্মূল কমিটির সমাবেশে খালেদা জিয়ার সরকার বর্বরোচিত আক্রমণ চালায়। পুলিশের লাঠিতে গুরুতরভাবে আহত হন ক্যান্সার আক্রান্ত শহীদ জননী জাহানারা ইমাম। তার আঘাত এতটাই গুরুতর ছিল যে, তাকে পিজি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করতে হয়েছিল। এই ঘটনার প্রেক্ষিতে গোটা বাংলাদেশের ভৌগলিক সীমারেখা অতিক্রম করে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার আন্তর্জাতিক মাত্রা লাভ করে ।

আন্তর্জাতিক স্তরে মানবাধিকার আন্দোলনের জীবন্ত কিংবদন্তী হিসেবে অভিহিত করা হয় শহীদ জননীকে। জাহানারা ইমামের এই ঐতিহাসিক আন্দোলনের ফলে খুনি মেজর চক্র পাকিস্তান এবং আমেরিকার সহায়তায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে সপরিবারে হত্যা করার পর গোটা বাংলাদেশকে যে আবার পাকিস্তানের ছায়া উপনিবেশে পরিণত করার ঘৃণ্য চক্রান্ত করেছিল, তা থমকে যায়। তার এই আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে পরবর্তী সময় শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সে দেশে একটি ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠিত হতে পারে সেই সরকার প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পরই গণ আদালতের রায়কে সম্মান জানানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়।

পরবর্তীতে ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সেই ঐতিহাসিক আন্দোলনের প্রেক্ষাপটকে মাথায় রেখেই শেখ হাসিনা একাত্তরের ঘাতক-দালালদের বিচারের জন্য বিশেষ  ট্রাইব্যুনাল তৈরি করেছিলেন। চুলচেরা বিচারে তাদের দোষী সাব্যস্ত করে সেই ট্রাইবুনাল কাদের মোল্লাসহ একাধিক যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির আদেশ দেয়।  শেখ হাসিনা সরকার সেই আদেশ কার্যকর করে।

'৯৪ সালের ২৬ জুন শহীদ জননী জাহানারা ইমামের মৃত্যু হলেও আজও বাংলাদেশসহ গোটা ভারতীয় উপমহাদেশে মৌলবাদ ,সাম্প্রদায়িকতা এবং সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ক্ষেত্রে শহীদ জননী জাহানারা ইমাম অত্যন্ত জীবন্ত একটি নাম। একাত্তরের ঘাতক-দালালদের বিচারের দাবিতে আন্দোলন সংগঠিত করার পাশাপাশি জাহানারা ইমামের লেখা অন্য জীবন, জীবন মৃত্যু, নিঃসঙ্গ পাইন, বুকের ভিতর আগুন, নাটকের অবসান, দুই মেরু, প্রবাসের দিনলিপি, ক্যান্সারের সঙ্গে বসবাস ইত্যাদি গ্রন্থ বাংলা সাহিত্যের এক চিরকালীন সম্পদ।