বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ উদযাপন প্রসঙ্গে

আনিসুর রহমান
Published : 19 April 2019, 12:51 PM
Updated : 19 April 2019, 12:51 PM

২০২০ সাল জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ। এর আগে আরও একজন বাঙালি মনীষীর জন্মশতবর্ষ এসেছিল। কিন্তু সেটা বাঙালি ঘটা করে পালন করতে পারেনি। সালটি ছিল ১৯৬১। মনীষীর নাম রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। বাঙালির আত্মপরিচয়ের জন্য দেশে এবং বিদেশে এই দুটি নাম অপরিহার্য। ১৯৬১ সালে সময়টি ছিল বাঙালির জন্যে এক 'কালের' সময়। তখন রবীন্দ্রনাথ নিষিদ্ধ। তার গান-সাহিত্য নিষিদ্ধ। এই নিষিদ্ধের কাল থেকে বাঙালি জাতিকে, বাঙালির কবি রবীন্দ্রনাথকেও যিনি মুক্ত করলেন তিনিই আমাদের বঙ্গবন্ধু।

সেই মনীষীর জন্মশতবর্ষ উদযাপন উপলক্ষে ফেব্রুয়ারি মাসে সরকার দুটি কমিটি করেছে। একটি কমিটির নাম 'জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় কমিটি'। এই কমিটির সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আর সদস্য হিসেবে আছেন মন্ত্রী, সংসদ সদস্য, শিক্ষাবিদ, লেখক, সাংবাদিক, আমলা এবং অন্যান্য পেশাজীবীগোষ্ঠির প্রতিনিধিরা।

একই সঙ্গে জাতীয় অধ্যাপক রফিকুল ইসলামকে সভাপতি করে ৬১ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটির নাম দেয়া হয়েছে- 'জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটি' দুটো কমিটিতেই প্রধান সমন্বয়ক হিসেবে রাখা হয়েছে অবসরপ্রাপ্ত আমলা কামাল আবদুল নাসের চৌধুরীকে।

এই দ্বিতীয় কমিটিতে গুরুত্বপূর্ণ সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান ও একাডেমি বিশেষ করে টেলিভিশন, বেতার, জাদুঘর, বাংলা একাডেমি, শিল্পকলা একাডেমির প্রতিনিধি রাখা হলেও জাতীয় গণগ্রন্থাগার, জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র আর বাংলাদেশ শিশু একাডেমির কোনও প্রতিনিধিকে কেন রাখা হলো না? অথচ বাংলাদেশ শিশু একাডেমি, জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র, গণগ্রন্থাগার অধিদপ্তরে ঐতিহাসিক এই বর্ষে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখার সুযোগ রয়েছে।

এই কমিটির সবচেয়ে সুখকর সংবাদ হলো জাতীয় অধ্যাপক রফিকুল ইসলামের মতো একজন নিষ্কলুষ ভাল মানুষ আর সৎ শিক্ষাবিদকে এরকম একটা তাৎপর্যপূর্ণ কমিটির প্রধান করা হয়েছে।

জাতীয় পর্যায়ে দুটি কমিটি করা হলো। একই সঙ্গে আন্তর্জাতিক পর্যায়েও কি একটা কমিটি করার দরকার ছিল না? বঙ্গবন্ধু এখন আর শুধু বাংলাদেশের ইতিহাসের অংশ নন। তিনি একই সঙ্গে আন্তর্জাতিক ইতিহাসের অংশ, বিশ্বমানের একজন নেতা। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ উদযাপন শুধু বাংলাদেশে সীমাবদ্ধ রাখলেই হবে না। সেই ক্ষেত্রে আমাদের দূতাবাসগুলোর উপর নির্ভর করলে হবে না। দুই একটি ব্যতিক্রম ছাড়া আমাদের দূতাবাসগুলো রুটিন কার্যক্রম আর কেরানিঢঙের কূটনীতি ছাড়া আর কী করে আমার জানা নাই। এরকম দূতালয়গুলোর উপর বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ উদযাপন ভার দিলে যা হবার তাই হবে। এক্ষেত্রে সাবেক কোনও প্রতিশ্রুতিশীল কূটনীতিককে সমন্বয়কের দায়িত্ব দিয়ে সংস্কৃতি আর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে সঙ্গে নিয়ে জাতীয় অধ্যাপক রফিকুল ইসলামের মতো আন্তর্জাতিক দুনিয়ায় যোগাযোগ রক্ষা করতে সক্ষম একজন নিষ্কলুষ নির্ভেজাল ব্যক্তিকে প্রধান করে একটা আন্তর্জাতিক কমিটি করার প্রয়োজন আছে বলেই মনে হয়।

এই কমিটিতে বিদেশি সংশ্লিষ্ট গুরুত্বপূর্ণ নাগরিককেও রাখা যেতে পারে। মোটকথা বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ অন্যান্য দেশেও গুরুত্বের সঙ্গে উদযাপন করতে হবে। আর উদযাপনটা যেন বছরের দুই-একটা দিন বিশেষ অনুষ্ঠানের মধ্যেই সীমাবদ্ধ না থাকে। এক্ষেত্রে আমরা একটা দৃষ্টান্ত উল্লেখ করতে পারি। ২০০৬ সালে নরওয়ে সারা দুনিয়া জুড়ে কবি ও নাট্যকার হেনরিক ইবসেনের মৃত্যুশতবর্ষ উদযাপন করেছিল। সেখান থেকে আমরা কিছুটা অভিজ্ঞতা লাভ করতে পারি। সেই শতবর্ষ উদযাপন বাংলাদেশও সামিল হয়েছিল চমৎকারভাবে। ২০০৬ সালের উদযাপনে নরওয়ে প্রথমেই যে কাজটি করেছিল- তা ছিল www.ibsen2006.com নামে একটা চমৎকার ওয়েবসাইট নির্মাণ।

বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ উদযাপন উপলক্ষে সেরকম এখনও কিছু করা হয়নি। প্রসঙ্গক্রমে উল্লেখ করতে চাই ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে নানা কর্মযজ্ঞ দেশে চলমান থাকলেও ধানমণ্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর এবং জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি ট্রাস্টের কোনও ওয়েবসাইট এখন পর্যন্ত নাই। কেন নাই? এর কোনো কারণ আমি খুঁজে পাই না।

২০২০ সাল বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষকে ঘিরে একটা বঙ্গবন্ধু ক্যালেন্ডার বানানো যেতে পারে। দেশের সরকারি, আধা সরকারি এমনকি বেসরকারি পর্যায়ে যতপঞ্জি দেয়ালপঞ্জি এবং দিনপঞ্জি বের হবে সেসবে বছরের ৩৬৫ দিনেই বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্মের প্রতিবেদন থাকতে পারে। খেয়াল রাখতে হবে তা যেন শুধু কতিপয় লোকের নিজেদের স্বার্থসিদ্ধি আর সুবিধা লাভের জন্যে ক্ষমতার কেন্দ্রে থাকা মানুষগুলোর দৃষ্টি আকর্ষণের মাধ্যমে হিসেবে ব্যবহৃত না হয়।

শুরুতে যেটা করতে হবে, বঙ্গবন্ধু ২০২০ অথবা শেখ মুজিব ২০২০ নামে একটা ওয়েবসাইট চালু করতে হবে। আর এই ওয়েবসাইটের নকশার ক্ষেত্রে দেশীয় চিত্রকলার রুচি ও ঐতিহ্য বঙ্গবন্ধুর ব্যক্তিত্বের সঙ্গে যায় এরকম তাৎপর্য যাতে ওয়েবসাইটে প্রকাশ পায় সেদিকটাও খেয়াল করতে হবে। এজন্যে ওয়েবসাইটটি নির্মাণে যারা যুক্ত থাকবেন তারা চিত্রশিল্পী রফিকুন নবী, আবুল বায়ক আলভী, হাশেম খান, নিসার হোসেন আর ধ্রুব এষের মতো চিত্রকলার যোগ্য মানুষের সঙ্গে পরামর্শ করে নিতে পারেন, সে সুযোগ রাখতে হবে। একইভাবে বঙ্গবন্ধুর ওয়েবসাইট হতে পারে বেশ কয়েকটি ভাষায়, বিশেষ করে জাতিসংঘে প্রচলিত ভাষাগুলোতে। সেক্ষেত্রে সে সব ভাষার যোগ্য প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে একটা সম্পাদক পরিষদও গঠন করা দরকার। একই সঙ্গে একটা অনুবাদক দল।

বঙ্গবন্ধুর বিভিন্ন দেশের জাতীয় নেতা আর গরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সঙ্গে ব্যক্তিগত, রাষ্ট্রীয় যোগাযোগ আর বন্ধুত্ব ছিল। সে সব সূত্র ধরে পৃথিবীর দেশে দেশে নানা প্রতিষ্ঠান ও বিশ্ববিদ্যালয়ে সভা, সেমিনার, আলোচনা উৎসব, প্রদর্শনীর আয়োজন করা যেতে পারে। সেক্ষেত্রে আন্তর্জাতিকভাবে দেখভাল করার জন্যে স্বতন্ত্র কমিটির পাশপাশি স্বতন্ত্র বাজেটও দরকার। আন্তর্জাতিক উদযাপনে কার্যক্রমের তালিকায় সভা সেমিনারের পাশাপাশি নাটক, চলচ্চিত্র, আলোকচিত্র, চিত্রকর্ম, কবিতা, ছড়া, অনুবাদ, তথ্যপঞ্জি, গবেষণার মতো বিষয়কে ঘিরে নানা কর্মসূচি ও প্রকল্প থাকতে পারে। আর এসব যে কেবল বাঙালিরা করবেন, তা কিন্তু না। এসবে বিদেশী সংশ্লিষ্ট তরুণ ও পেশাদার লোকজনকে যুক্ত করতে হবে। সে জন্যে বৃত্তি, প্রকল্প অনুদান, পারষ্পরিক সহযোগিতামূলক কর্মপ্রণোদনা চালু করতে হবে। জাতীয় বাজেট উপস্থাপনের সময় বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ উদযাপনের জন্য স্বতন্ত্র বরাদ্দ থাকা দরকার। এক্ষেত্রে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়কে সমন্বয়ের কেন্দ্রে রেখে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ উদযাপনের জন্যে বাজেট বরাদ্দ থাকলে পরবর্তীতে জন্মশতবর্ষকে ঘিরে কর্মযজ্ঞের একটা লাগসই ধারাবাহিকতা চালু রাখা সম্ভব হবে।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রাচ্যবিদ্যা, এশিয়বিদ্যা, দক্ষিণ এশিয়া এবং ভারততত্ত্ব বিষয়ক বিভাগ, কেন্দ্র বা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। ওইসব প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে এখনই যোগাযোগ করা জরুরি, তারা যাতে সামনের বছর ২০২০ সালে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ উদযাপনে সামিল হতে পারে। সেই নিমিত্তে বক্তৃতা, সেমিনারের পাশাপাশি অন্যান্য কর্মসূচি হাতে নিতে পারে। যত সহজে বলে দিলাম, কাজটা অত সহজে হবে না। এজন্য যথেষ্ট সময় নিয়ে যোগাযোগ করা একটা পূর্বশর্ত।

এই উদযাপন উপলক্ষে আন্তর্জাতিক গ্রন্থমেলা বিশেষ করে প্যারিস গ্রন্থমেলা, দিল্লী গ্রন্থমেলা, বেইজিং গ্রন্থমেলা, গোথেনবার্গ আর ফ্রাঙ্কফুর্টসহ অন্যান্য গরুত্ত্বপূর্ণ মেলায় বাংলাদেশের অংশগ্রহণ জরুরি।

বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ উদযাপনে আরও কয়েকটি ভাবনার কথা বলতে চাই। এই উদযাপনে আমরা যেন আমাদের দেশে ৭৫টি আদিবাসী জনগোষ্ঠীর কথা ভুলে না যাই। তাদের নিজস্ব ভাষা ও সাংস্কৃতিক আচার অনুষ্ঠানে তারাও যেন বঙ্গবন্ধুকে স্মরণ করতে পারে। সেদিকেও আমাদের নজর ও প্রণোদনা থাকতে হবে। আমাদের আদিবাসী জনগোষ্ঠীর তিরিশের অধিক নিজস্ব স্বতন্ত্র ভাষা রয়েছে। সে সব ভাষায় বঙ্গবন্ধুর জীবনী অনূদিত হতে পারে।

প্রসঙ্গক্রমে উল্লেখ করতে চাই এখন পর্যন্ত বঙ্গবন্ধুর একটা পূর্ণাঙ্গ সহজ নির্ভুল জীবনী রচিত হয়নি। এরকম একটা জীবনী জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে একশ ভাষায় অনূদিত হতে পারে। প্রয়োজনীয় তহবিলের জোগানের নিমিত্তে বাংলা একাডেমি এরকম একটি প্রকল্প নিয়ে অগ্রসর হতে পারে। বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী এবং কারাগারের রোজনামচা ইংরেজিসহ অন্যান্য ভাষায় বাঙালি দ্বারা নয়, ওইসব ভাষার জাতলেখক এবং অনুবাদক দ্বারা আন্তর্জাতিক মানদণ্ড বজায় রেখে অনুবাদ হওয়া জরুরি। বাঙালি দ্বারা অনূদিত ইংরেজি বা অন্যান্য ভাষায় আরবি, ফার্সি বা উর্দু অনুবাদে বাংলাদেশে বাজার পেলেও ওইসব ভাষাভাষী দেশে সমাদৃত হচ্ছে কি না সেটা নিশ্চিত করতে হবে। বিশেষ করে ইংরেজি ভাষাভাষী দেশে বাংলাদেশের ইংরেজিতে অনূদিত বইয়ের বাজার পেতে হলে বা সমাদৃত হতে হলে ওইসব দেশের ভাষাভাষী অনুবাদক বা লেখকদের সংশ্লিষ্টতা জরুরি। আর নিতান্তই বাঙালির দ্বারা অনূদিত হলেও সংশ্লিষ্ট ভাষার বিশেষ করে ইংরেজি মাতৃভাষা যার এমন কোনও জাত অনুবাদক বা লেখককে সঙ্গে রাখা সংগত। যেমনটা রবীন্দ্রনাথের গীতাঞ্জলি সম্পাদনায় রটেনস্টাইন বা উইলিয়াম বাটলার ইয়েটসেন এর সংশ্লিষ্টতা ছিল। বঙ্গবন্ধুর রচিত গ্রন্থগুলো অনুবাদের ক্ষেত্রেও এই সত্যকে অস্বীকার করার কোনও সুযোগ নাই।

বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ সামনে রেখে পশ্চিমবঙ্গের শান্তিনিকেতনে 'বাংলাদেশ ভবন' প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এরকম 'বাংলাদেশ ভবন' অন্যান্য মহাদেশ বা দেশেও প্রতিষ্ঠা করা যেতে পারে। সাতই মার্চের ভাষণের একশত ভাষায় সাবটাইটেল করার একটা সুযোগ আমরা নিতে পারি।

আর বঙ্গবন্ধুর ক্যালেন্ডারের কথা আগেই উল্লেখ করেছিলাম। এই ক্যালেন্ডারে বছরের ৩৬৫ দিনেই বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্মের কোনও না কোনও ঘটনা উল্লেখ থাকবে। একই সঙ্গে ছবিও। আর যেখানে ছবি খুঁজে পাওয়া অসম্ভব সেখানে আমাদের চিত্রশিল্পীরা সেসব ঘটনাকে উপজীব্য করে চিত্রকর্ম আঁকবেন। সেই চিত্রকর্ম অন্তর্ভুক্ত হবে।

বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে লেখা বিভিন্ন ভাষায় প্রকাশিত বইয়ের একটা ছাপানো এবং ডিজিটাল ক্যাটলগ থাকবে।
বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে আলোকচিত্রগুলোর একটা ডিজিটাল গণ-ক্যাটলগ চালু করা যেতে পারে।

সবশেষে বঙ্গবন্ধুর নামে বড় মাপের ও বড় অর্থমূল্যে একটা আন্তর্জাতিক পুরস্কার চালু করা যেতে পারে। আমাদের এশিয়ায় বড় পুরস্কার তো তেমন একটা নাই। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ ঘিরে আমরা যদি পদ্মাসেতু বাস্তবায়ন করে দেখিয়ে দিতে পারি, তাহলে বঙ্গবন্ধুর নামে একটা আন্তর্জাতিক পুরস্কার চালু করতে পারি, যা নোবেল পুরস্কারের চেয়েও বড় হতে পারে, পারে না কি?