ইউরোপকে পথ দেখাবে ফিনল্যান্ডের নির্বাচন

এহেছান লেনিন
Published : 15 April 2019, 11:21 AM
Updated : 15 April 2019, 11:21 AM

দেশে দেশে কট্টর ডানপন্থিদের উত্থানে উদারপন্থিরা যখন খানিকটা কোণঠাসা, সেই পরিস্থিতি পরিবর্তনে খানিকটা হলেও আলো দেখিয়েছে ফিনল্যান্ডের ভোটাররা। এবারের নির্বাচনে জাতীয়তাবাদী আর অভিবাসীবিরোধী বলে পরিচিতি ফিনস পার্টির নিঃশ্বাস ঘাড় ছুঁয়ে গেলেও সোশাল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এসডিপি) জয়কে অনেকেই দেখছেন খাদের কিনারা থেকে উঠে আসার প্রতীক হিসেবে। অবশ্য ভোটের পরও ভোট নিয়ে শোরগোল থামছে না এখনই। ১৭ দশমিক সাত শতাংশ ভোট নিয়ে শীর্ষস্থানে থাকা এসডিপি প্রধান আন্তে রিননের সামনে কোয়ালিশন সরকার গঠনই আপাতত সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ যখন আদর্শিকভাবে বিপরীত মেরুর দল ফিনস পার্টি ভোটে মাত্র শূন্য দশমিক দুই শতাংশ পিছিয়ে।

বাঁচা-মরার লড়াইয়ে হয়তো ১৭ শতাংশ ভোট নিয়ে তৃতীয় স্থানে থাকা এবং বর্তমান সরকারের অংশীদার ন্যাশনাল কোয়ালিশন পার্টিকে কাছে টেনে নিতে পারে এসডিপি! তবে হিসেব-নিকেশ এত সহজ নাও হতে পারে। কাছাকাছি আদর্শের গ্রিনলীগ (১১ দশমিক ৫০%) কিংবা লেফট অ্যালায়েন্সও (৮ দশমিক ২০%) হয়ে যেতে পারে সরকারের অংশীদার। আপাতত দৃষ্টিতে সামনের হিসেব নির্ভর করছে আন্তে রিননে কতোটা ছাড় দিতে প্রস্তুত সেই মানসিকতার উপরই।

ছোট্ট জনসংখ্যার দেশ ফিনল্যান্ডের এবারের নির্বাচন গোটা ইউরোপের জন্য একটা বার্তা নিয়ে এসেছে। আর সেটা হলো- বড় দলগুলোর আধিপত্য ক্রমেই সঙ্কুচিত হয়ে যাচ্ছে।

এই নির্বাচন আরেকটি বিষয়কে সামনে নিয়ে এসেছে, আর সেটি হলো ২০০ সদস্যের পার্লামেন্টে এবার ৯২ জনই নারী সাংসদ নির্বাচিত হয়েছেন।

মজার বিষয়, অনেক পুরনো এবং পরিচিত মুখও আগামী পার্লামেন্টে দেখা যাবে না। ব্লু রিফর্ম পার্টি থেকে নির্বাচিত সাবেক মন্ত্রী সাম্পো তেরহো, পিরক্কো মাত্তিলা, ইয়ারি লিন্ডস্টর্মকে আপাতত নতুন চাকরির বিজ্ঞপ্তির দিকে চোখ রাখতে হবে। ভোটের দৌড়ে উতরাতে পারেননি সদ্য দল গঠন করে নির্বাচনে আসা সেভেন স্টার মুভমেন্টের ঝানু রাজনীতিক পাবো বারুনেন।

প্রবাসীদের একটি বড় অংশই উদ্বেগের মধ্যে ছিলেন এবারের ভোটের আগে। বিশেষ করে অউলুতে রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থীদের বিরুদ্ধে ওঠা কয়েকটি ধর্ষণের অভিযোগকে কেন্দ্র করে যখন ফিনস পার্টির অভিবাসনবিরোধী স্লোগান গোটা ফিনল্যান্ডে ছড়িয়ে পড়ছিল।

আপাতত দেখার বিষয় মধ্য-ডানপন্থি সরকার এবং তার শরিকদল সেন্টার পার্টি, ফিনস পার্টি এবং ন্যাশনাল কোয়ালিশন পার্টির কেউ ফের আগামী সরকারে ঢুকে পড়ে কি না। গ্রিনলীগ কিংবা লেফট অ্যালায়েন্স নিজেদের দর কতোটা উঠাতে পারে সেটাও একটা বিষয় হিসেবে থাকবে।