নতুন প্রজন্ম কোন পথে হাঁটছে?

জেনিফার ডি প্যারিস
Published : 28 March 2019, 09:41 AM
Updated : 28 March 2019, 09:41 AM

মানবতা, মনুষ্যত্ব, মানবিকতা এসব শব্দ আমরা আজও বিশ্বাস করি, পরবর্তী প্রজন্মকে শেখাই এই শব্দগুলোর মর্ম কী। মানুষ বরাবরই আশাবাদী প্রাণী, আশা নিয়েই আমরা প্রতিটি দিন বেঁচে থাকি। মানবজাতির আশার অন্যতম বড় উৎস হল নতুন প্রজন্ম, নতুন দিনের এই মানুষগুলোর মুখের দিকে চেয়ে আমরা আশা করি এইবার হয়ত ভাল কিছুই হবে। আমরা যা করি না কেন, আমাদের ভুল দেখে নতুন প্রজন্ম কিছু না কিছু শিখবে। কিন্তু এই আশা ধরে রাখা কঠিন হয়ে পড়ে প্রায় সময়ই।

ঘটনা ১৭ মার্চের। ফেসবুকে হঠাৎ ভাইরাল হয়ে পড়ল একটি ভিডিও। ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে একটি কিশোর বয়সী মেয়ে সাদা রঙের ছোট্ট একটি বিড়ালছানাকে জ্যান্ত অবস্থায় ব্লেড দিয়ে কাটছে। একবার কল্পনা করুন, সে যখন বাচ্চাটির চামড়া তোলা শুরু করেছিল বাচ্চাটি তখনও জীবিত ছিল! বাচ্চাটির ছোট্ট মুখের ভেতর ব্লেড ঢুকিয়ে সে বাচ্চাটির শরীর দুই ভাগ করেছে। বাচ্চাটির মগজ এবং শরীরের অন্যান্য অঙ্গ চার ভাগ করে আলাদা আলাদাভাবে ছবি তুলে উপরে লিখে দিয়েছে 'ব্রেইন', 'কিডনি' ইত্যাদি। এই ছবিগুলো ভিডিওসহ মেয়েটি পোস্ট করেছে তার ফেসবুকের মাই স্টোরিতে। সবচেয়ে অ্যালার্মিং অর্থাৎ চমকে যাওয়ার মত ব্যাপার হল, সে লিখেছে আই লাভ ব্লাড। একটি বিড়ালছানাকে জীবিত অবস্থায় চার টুকরো করে একজন কিশোরী মেয়ে ফেসবুকে পোস্ট দেয় আমি রক্ত ভালবাসি—আমাদের নতুন প্রজন্ম আসলে কোন পথে যাচ্ছে?

উন্নত দেশে হলে কী হত, এ প্রসঙ্গেই যাচ্ছি না। কিন্তু একবার সাধারণভাবে চিন্তা করে দেখুন, আমরা প্রতিদিন মুরগি-গরু-খাসির মাংস খাচ্ছি। কিন্তু যেকোনো প্রাণীকে জবাই দেয়ার আগে 'বিসমিল্লাহ্‌' অর্থাৎ আল্লাহ্‌র নাম অবশ্যই স্মরণ করা হয়। সৃষ্টিকর্তাকে স্মরণ করে, তাকে ধন্যবাদ দেয়া হয় আমাদের খাবারের ব্যবস্থা করার জন্য। জবাই দেয়ার কারণটাও এমন, প্রাণীটির জীবন চলে যাওয়ার পর তার অঙ্গ প্রত্যঙ্গগুলো কাটা হয় আমাদের খাওয়ার জন্য। যেন জীবন্ত অবস্থায় কোন প্রাণী কষ্ট না পায়। আমি জাতিতে মুসলিম নই, তবে আমি ভাল করেই জানি শুধু ইসলাম নয়, পৃথিবীর কোন ধর্ম জীবন্ত একটি প্রাণীর অঙ্গপ্রত্যঙ্গ কাটার মত কাজকে সমর্থন করে না। এমনকি বৈজ্ঞানিক পরীক্ষার জন্য যখন প্রাণীদের অটোপসি করা হয়, তখনও প্রাণীটি মৃত থাকে, জীবিত অবস্থায় তার অঙ্গপ্রত্যঙ্গ কাটা হয় না।

তবে এরপরও আমি পুরোপুরি মেয়েটির দোষ দিতে রাজি নই। আমরা এমন একটি সময়ে বাস করছি, যখন পরিবর্তন অনিবার্য। ধর্মীয় ও সামাজিক মূল্যবোধ ধরে রেখে ক্রমশঃ পরিবর্তনশীল বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে হচ্ছে বাংলাদেশকেও। এই তাল মেলানোর প্রক্রিয়ায় প্রতিনিয়ত হিমশিম খেতে হচ্ছে আমাদের, এ সমস্যার সম্মুখীন সবচেয়ে বেশি হচ্ছে নতুন প্রজন্ম। তাদের হাতে এখন স্মার্টফোন, ইন্টারনেট–পুরো বিশ্বের এমন কিছু নেই যা তাদের হাতের নাগালের বাইরে। ছোট বয়স থেকে তো বটেই, আধুনিকতার প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়ে কিশোর ও তরুণ বয়সীদের উপর। ইন্টারনেটের খারাপ দিকের প্রসঙ্গ উঠলে বেশীরভাগ সময়ই আমরা বুঝি যৌনতা, নগ্নতাকে। কিন্তু আসলেই কি তাই? বর্বর সব ভিডিও দেখার প্রবণতা, মিথ্যা সৌন্দর্যের দিকে তরুণ সমাজের আগ্রহ (যেমন প্লাস্টিক সার্জারি, ইনজেকশন দিয়ে মেয়েদের ঠোঁট ফোলানোর বিকৃত প্রথা) এসবের মত আরও অনেক ট্রেন্ড বিশ্বব্যাপী তরুণদের মধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। তরুণদের মধ্যে জঙ্গিবাদের প্রবণতাও কিন্তু শুরু হয় ঠিক এভাবেই। বাবা-মায়ের মনোযোগের অভাবে অল্প বয়সে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে অনেক তরুণ। সমস্যাটা আজ পুরো বিশ্বব্যাপী, শুধু আমাদের একার নয়। তবে ব্যাপারটা এমন নয় যে আধুনিকতা মানেই খারাপ, কিংবা ইন্টারনেট ব্যবহার করা যাবে না। এর জন্য প্রয়োজন সন্তানের প্রতি বাবা-মায়ের বন্ধুত্বপূর্ণ মনোযোগ। তারা কী করছে, কী দেখছে সেগুলো সম্পর্কে খবর রাখা। কিন্তু দুঃখের বিষয় হল তাদের সঠিকভাবে পথ দেখানোর মত কোন মানুষ এখনও তৈরি হয়নি আমাদের সমাজে। সময়ের সাথে সাথে পরিবর্তন আসবেই, পরিবর্তনের যেমন ভাল দিক আছে, তেমনই আছে খারাপ দিক। কিন্তু ভাল খারাপের পার্থক্য বুঝে কয়জন? আমাদের সমাজে আজও শাসন করা মানেই হল কোনকিছু জোরপূর্বক নিষিদ্ধ করে দেয়া। এর ফলাফল কি হয় আমরা সবাই জানি, নিষিদ্ধ জিনিসের প্রতি আগ্রহ আরও বাড়ে।

স্বাভাবিকভাবেই এই যুগে এসে ছেলেমেয়েদের হাত থেকে স্মার্টফোন কিংবা ইন্টারনেট কেড়ে নেয়া রীতিমত অসম্ভব, এতটুকু আজকাল সব বাবা-মাই জানেন। কিন্তু বয়স অনুযায়ী কতখানি তথ্য আপনার সন্তানের জন্য উপকারী হবে, আর কোন পর্যায়ে গেলে তা হয়ে উঠবে অমঙ্গলজনক, তা কি সবাই বুঝেন? প্রাণী অধিকার কর্মীরা যখন মেয়েটির বাড়িতে পুলিশ নিয়ে গেল, তখন ফেসবুক লাইভে আমরা দেখেছি মেয়েটির মা নিজে তার মেয়ের এই কান্ডকে সমর্থন করছেন। মা হিসেবে নিজের সন্তানকে তিনি সমর্থন করবেন এটা খুবই স্বাভাবিক। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হল, একজন প্রাপ্তবয়স্ক বুদ্ধিসম্পন্ন মানুষ হিসেবে তিনি নিজেই মেয়ের কাজটিকে অপরাধ হিসেবে দেখছেন না। আরও আশ্চর্যের বিষয় হল, এই প্রশ্ন শুধু মেয়েটির মায়ের মনে নয়, আরও অনেকের মনেই আসছে। একটি বিড়াল মেরেছে বলে এমন কি হয়েছে? হ্যাঁ, প্রশ্ন তো ভুল করেনি তারা। বহু আগে থেকেই বাড়ির বিড়াল-কুকুরের বাচ্চা হলে বস্তা ভরে পুকুর-ডোবায় ফেলে আসা রেওয়াজ আমাদের দেশে। কবুতর খেয়ে ফেলায় বিড়াল মারা, কামড় দেয়ার খবরে কুকুর নিধন, পাশের বাড়ির কুকুরকে কোন কারণ ছাড়াই বিষ দিয়ে মেরে ফেলা—এগুলো নিয়মিত ঘটনা যা আজও হচ্ছে।

আমার কথা শুনলে মনে হতে পারে প্রাণীর প্রতি নিষ্ঠুরতা শুধু বাঙালিই বুঝি দেখায়, ব্যাপারটা মোটেও এমন নয়। যুগ যুগ ধরে অবলা প্রাণীদের সঙ্গে নিষ্ঠুর আচরণ করার প্রবণতা দেখা গেছে সব দেশের সব সমাজের মানুষের মধ্যেই। 'পোষা প্রাণীর স্বর্গরাজ্য' বলা হয় আমেরিকা-কানাডার মত উন্নত দেশগুলোকে, যেখানে পোষা প্রাণীদেরকে ঘিরেই গড়ে উঠেছে বিলিয়ন ডলারের ব্যবসা। কিন্তু এই দেশগুলোতেই দেখা যায় ভয়াবহ সব অপরাধের ঘটনা, যেসব অপরাধীর অন্ধকার যাত্রার শুরুটা হয় কিন্তু বাড়ির পোষা কোন প্রাণীকে হত্যার মাধ্যমেই। একটি প্রাণীর জীবন নিতে কেমন লাগে? স্রেফ কৌতূহল মেটানোর জন্যই প্রথমে প্রাণীদের হত্যা করেছিল জেফরি ডেহমার, টেড বান্ডির মত কুখ্যাত সিরিয়াল কিলাররা, শেষ পর্যন্ত যাদের ঠিকানা হয়েছে ফাঁসির মঞ্চে কিংবা ক্রিমিনালি ইনসেইন এসাইলুমে, অর্থাৎ মানসিক বিকারগ্রস্ত অপরাধীদের আশ্রয়কেন্দ্রে।

আজকাল সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমের কল্যাণে আমরা হরহামেশাই দেখছি যুবক ছেলে তার বুড়ো বাবাকে লাঠি দিয়ে পেটাচ্ছে, ডাস্টবিনে পাওয়া যাচ্ছে নবজাতকের লাশ। চুরির দায়ে ছোট্ট ছেলে রাজনকে পিলারের সঙ্গে বেঁধে পিটিয়ে তা ভিডিও করে ফেসবুকে দেয়া হচ্ছে, পেটের ভেতর বাতাস ঢুকিয়ে মেরে ফেলা হচ্ছে শিশু রাকিবকে। ছাত্রলীগের কর্মীরা যখন চারদিক থেকে এলোপাতাড়ি কোপাচ্ছিল অভিজিতকে, তখন সবাই তাকে বাঁচানোর বদলে মোবাইলে ভিডিও করতে বেশি ব্যস্ত ছিল! এগুলো কি কোন স্বাভাবিক মানসিক অবস্থা মানুষের কাজ হতে পারে? কখনও কি ভেবে দেখেছেন এসব ঘটনার শুরুটা কোথায়? অনেকের কাছে মনে হবে এগুলো অনেক আগের কথা, তার সঙ্গে এই মেয়েটির বিড়াল মারার সম্পর্ক কোথায়? বিশ্বের অপরাধীদের ইতিহাস বলে, অবলা প্রাণীদের উপর অত্যাচারের মাধ্যমেই শুরু হয় মানুষের উপর অপরাধ। যখন আমরা একটি বিড়ালছানার চার টুকরো করার ভিডিওকে 'সামান্য' বলে উড়িয়ে দিচ্ছি, তখন কিন্তু আমরা ভবিষ্যতের জেফরি ডেহমার কিংবা টেড বান্ডিদেরকেই সমর্থন দিচ্ছি।

সমস্যা হল, উন্নত দেশগুলোকে অনুসরণ করে আমরা সবকিছুই করছি, পরিবর্তনের স্রোতে গা ভাসাচ্ছি প্রতিনিয়ত। কিন্তু আমরা ভুলে যাচ্ছি সবকিছুর ভাল দিক যেমন থাকে, খারাপ দিকও থাকে। পশ্চিমা দেশগুলো অনেক আগে থেকেই উন্নত, তবে এই উন্নতির অন্ধকার দিক হল এই সিরিয়াল কিলারসহ ভয়ংকর সব অপরাধীরা। যারা শৈশব থেকেই উন্নত জীবনযাত্রায় অভ্যস্ত হয়েছে, সবকিছু পেয়েছে যা একটি শিশুকে পূর্ণাঙ্গ মানুষ হতে সাহায্য করে। কিন্তু এরপরও তারা ভয়ংকর সব অপরাধের পথ বেছে নিয়েছে। কেন? কারণ ভাল খাবার, ভাল শিক্ষাব্যবস্থা, উন্নত জীবন সবকিছু পাওয়া সত্ত্বেও এই মানুষগুলোর স্বাভাবিক মানসিক বিকাশ হয়নি। তারা খুন করেছে বিশেষ কোন উদ্দেশ্যে নয়, স্রেফ কৌতূহলের কারণে, এক ধরণের উত্তেজনা পেতে। মেয়েটির ভাষ্যও কিন্তু অনেকটা এমনই, কৌতূহলের বশে সে আগেও অনেক প্রাণীকে এভাবে জ্যান্ত টুকরো করেছে। অনেকেই ভাববেন, সামান্য কুকুর-বিড়ালের সাথে মানুষের তুলনা কেন? বিড়াল মেরেছে বলে মানুষ কেন মারবে? কিন্তু আপনাকে বুঝতে হবে, যে ব্যক্তি স্রেফ কৌতূহল কিংবা উত্তেজনা পেতে এ ধরণের কাজ করতে পারে, তার চিন্তাভাবনা আপনার কিংবা আমার মত নয়। এটা আমার কথা নয়, বরং মনোবিজ্ঞানের প্রতিষ্ঠিত একটি তত্ত্ব।

যেকোনো মানুষের মানসিক বিকাশে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখে তার বাবা-মা, বাবা-মায়ের কাছ থেকে যে মূল্যবোধ এবং মানবিকতা আমরা শিখি তা স্কুল-কলেজের সার্টিফিকেট আমাদের কখনও শেখাতে পারে না। কাজেই এমনটা ভাবলে চলবে না, যে ছেলেমেয়েদের আমরা সবকিছুই দিয়েছি, এরপরও ওরা এমন কেন হল? অনেকের কাছেই মেয়েটিকে গ্রেফতার করার উদ্যোগ অতিরিক্ত মনে হয়েছে। কেউ কেউ এমনটাও বলছেন যে দেশে মানুষ হত্যার বিচার হয় না, সেখানে বিড়াল মারার বিচার হয়েছে কিভাবে? কিন্তু মানুষ হত্যার পর আমরা কতজন সোচ্চার হই? সোশ্যাল মিডিয়াতে প্রোফাইল পিকচার চেঞ্জ কিংবা একটা স্ট্যাটাস দিয়েই শেষ হয় আমাদের প্রতিবাদ। তাহলে বিচার কিভাবে হবে? প্রাণী অধিকার কর্মীদের মত মানুষের অধিকারের জন্য আপনি দলবল নিয়ে মাঠে নামুন, বিচার হবেই।

ধর্মীয়-সামাজিক নানা কারণে আমাদের সমাজের মানুষ কুকুর-বিড়াল জাতীয় প্রাণীদের ঘেন্না করে কিংবা ভয় পায়, মোটকথা নেতিবাচক হিসেবেই দেখে। ফলে প্রাণীদের হত্যা আমাদের কাছে তেমন কোন বিষয় নয়। এমনকি গণমাধ্যমেও প্রাণীদের উপর অত্যাচার নিয়ে সবসময় নেতিবাচকভাবেই সংবাদ প্রকাশ করতে দেখা যায়। যেমন কুকুরের উপদ্রব বেড়ে গেছে ইত্যাদি ইত্যাদি। ফলে সামাজিকভাবেও অবলা প্রাণীদের উপর অত্যাচারকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয় না আজও। কিন্তু প্রকৃতিতে প্রতিটি প্রাণীর কোন না কোন ভূমিকা অবশ্যই থাকে। ধর্মীয় দিক থেকে বলতে গেলে, সৃষ্টিকর্তা উদ্দেশ্য ছাড়া কোন প্রাণীকে সৃষ্টি করেন না। কুকুর-বিড়াল থেকে শুরু করে বাঘ-হরিণ, সব প্রাণীই প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষা করে কোন না কোনভাবে। এরপরও অবলা প্রাণীদের উপর সবলের নিপীড়ন চলবেই, থামবে না কখনও। তবে একবার ভেবে দেখা জরুরি, এই ছোট্ট একটি ঘটনা বড় কোন সামাজিক অবক্ষয়ের ইঙ্গিত দিচ্ছে না তো? ঝড় এসে সবকিছু ধ্বংস করার আগে ঝড়ের পূর্বাভাস বুঝে সচেতন হওয়ার সময় কিন্তু চলে এসেছে। উন্নয়নের দ্বারগোড়ায় যখন এসে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ, উন্নয়নের কালো দিকটাও জানা জরুরি, অবহেলা করলে ক্ষতি কিন্তু আমাদেরই হবে। আসুন আমরা পরিবর্তনের খারাপ দিকগুলো সম্পর্কে সচেতন হই, নিজেদের জীবনে এতোটাও মশগুল না হয়ে যাই যে আমাদের সন্তানদের, পরিবারের ছোটদের ন্যুনতম মানবিক শিক্ষাটুকু দিতেও ভুল না করি। শুধুমাত্র শাসন নয়, সন্তানের বন্ধু হওয়া একান্ত জরুরি। তারও আগে, নিজেদের শিক্ষিত হওয়া জরুরি। সার্টিফিকেটের শিক্ষা আর বয়স বেড়ে চুল পাকলেই কিন্তু বাড়ে না মূল্যবোধ কিংবা জীবনবোধ, পরিবর্তনের এই হাওয়ায় আসুন আগে নিজেদের বদলাই। নম্র হই, ভালবাসতে শিখি মানুষকে এবং অন্য প্রাণীদেরকেও। যেন বাঙালির শত বছরের মায়াভরা ইতিহাস জঘন্য অপরাধের কালো দাগে ঢেকে না যায়, মনুষ্যত্ব যেন শুধু বইয়ের পাতার শব্দ হিসেবেই থেকে না যায়।