এত সাফল্যেও ঘাটতি শাসন ব্যবস্থায়

মুজতবা হাকিম প্লেটো
Published : 8 Jan 2019, 10:35 AM
Updated : 8 Jan 2019, 10:35 AM

এত এত সাফল্যর মাঝে বাংলাদেশের রাজনৈতিক কাঠামোয় ঘাটতি থেকেই গেল। অংশগ্রহণমূলক সংসদীয় ব্যবস্থা এখনও গড়ে তোলা সম্ভব হলো না।

এরশাদ সরকারের পতনের পর সংসদীয় গণতন্ত্র প্রত্যাবর্তনের কিছুদিনের মধ্যে অনুভূত হতে থাকে সংসদ ঠিক মতো কাজ করছে না। সংসদীয় কার্যক্রমের ভেতর দিয়ে জনগণের কাছে পৌঁছানোয় কোনও ভরসাও পায়নি যে যখন বিরোধী দলে থেকেছে। ক্ষমতায় আসার কৌশল হিসেবে তাই রাস্তার আন্দোলনেই ভরসা রেখেছে রাজনৈতিক দলগুলো।

বিক্ষোভে সক্ষমতার পাল্লায় রাজনৈতিক দলগুলোর শক্তিমত্তা মেপেও এসেছে সাধারণ জনগণ। তবে বিগত দিনগুলোয় লাগাতার অবরোধ, পেট্রোল বোমাবাজি আর মানুষ পোড়ানো, পুলিশহত্যা, গাছকাটার মতো নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডে জনপ্রিয়তা হারায় রাজপথের আন্দোলন। ফলে অর্ধেকের বেশি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত সংসদ সদস্য নিয়েও পুরো মেয়াদ ক্ষমতায় থাকলেও বিএনপি সামান্য প্রতিরোধও গড়তে পারেনি। বরং মাঠে শীর্ষ নেতাহীন অক্ষম বিধ্বস্ত একটি দলে পরিণত হয়েছে।

এবারের নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ তুললেও কোনও প্রতিরোধ গড়ার সক্ষমতা বিএনপিসহ তাদের মিত্রদের নাই। বরং নোয়াখালীতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম নির্বাচনে হারের জন্য দলীয় বিশৃংখলাকেও দায়ী করেছেন। এই বিশৃংখলার জন্য দলীয়কর্মীদের ভৎর্সনাও করেছেন।

আপাতত মাঠে শক্তি সঞ্চয়ের কোনও সম্ভাবনা না থাকলেও, তারা সংসদে না যাবার সিদ্ধান্ত নিয়ে বসে আছেন। এমন কি তাদের মিত্র ড. কামাল হোসেনের দলের নির্বাচিত সদস্যরা যোগদান থেকে পিছিয়ে গেছে। সংসদে যোগ না দিলে যে তারা শক্তি ফিরে পাওয়ায় সক্ষম হবেন তারও কোনও আলামত দেখা যাচ্ছে না।

অন্যদিকে জোটবদ্ধভাবে নির্বাচন করলেও আওয়ামী লীগ এককভাবে মন্ত্রিসভা গঠন করেছে। মহাজোটের মিত্র জাতীয় পার্টি পুরোপুরি বিরোধী দলের ভূমিকায় নামতে এবার আর মন্ত্রিত্ব নেবে না বলে আগেই জানিয়েছে। অনিশ্চিত ভূমিকার জন্য খ্যাত হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ হচ্ছেন সংসদে বিরোধী দলীয় নেতা। জাতীয় পার্টির নেতারা এরশাদ পতনের পর বারবার নির্বাচিত হলেও তারা রাজনৈতিক দল হিসেবে জনগণকে কোনও দিশা দেখাতে পেরেছে কিনা সন্দেহ।

নির্বাচনী মহাজোটের বাইরে মুক্তিযুদ্ধর সপক্ষের ১৪ দলীয় জোটভূক্ত বামপন্থি দলগুলো থেকেও কেউ মন্ত্রিত্ব পাননি। ষাট দশক থেকে বামপন্থি দলগুলোর যথেষ্ট রমরমা অবস্থা থাকলেও সোভিয়েত পতনের পর দিন দিন কাহিল হয়েছে তারা। এমন পর্যায়ে তারা এসে দাঁড়িয়েছে যে নিজস্ব সাংগঠনিক যোগ্যতায় কোথাও নির্বাচনে জেতার সক্ষমতাও তাদের নাই। সেই প্রেক্ষিতে সংসদে তারা কী ভূমিকা নেবেন তা স্পষ্ট নয়। যদিও সংসদে বিকল্প চিন্তাধারার বিরোধী দলের শূন্যতা অচিরেই প্রকট হয়ে দেখা দেবে বলেই মনে হচ্ছে। গঠনমূলক বিরোধী দল সৃষ্টি করতে ব্যর্থ হলে অংশগ্রহণমূলক কার্যকর সংসদীয় ব্যবস্থাও নির্মাণ বাধাগ্রস্ত হবে।

বিরোধী দল গঠনে এদেশে অতীত অভিজ্ঞতা উজ্জ্বল নয়। ১৯৫৪ সালে মুসলিম লীগকে হারিয়ে যুক্তফ্রন্ট ক্ষমতায় এলেও তারা নিজেদের মধ্যে ছন্দময় ভারসাম্য রক্ষা করতে পারে নি। আবার সদ্য স্বাধীন দেশে জাসদও ভারসাম্যপূর্ণ বিরোধীদল গঠন করতে ব্যর্থ হয়।মোটা দাগে প্রথমটির ক্ষেত্রে অনভিজ্ঞতা আর পরেরটির ক্ষেত্রে যুদ্ধের দামামায় গড়া রাগী তারুণ্য আর ষাটদশকের শক্তিশালী বামদের হটিয়ে স্থান দখলের উত্তেজনাই হয়তো কাল হয়েছে। তবে দুক্ষেত্রেই লাভবান হয়েছে পাকিস্তানপন্থি শক্তি। যার খেসারত দেশ কম দিচ্ছে না।

বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে বলা হয়ে থাকে, বিরুদ্ধ দলের নেতারা জেলে গেলে মাসে মাসে তাদের পরিবারকে টাকা পাঠাতেন তিনি। কমরেড তোহার মৃত্যুর পর প্রকাশিত তার স্মৃতিকথায় দেখছি- লোকচক্ষুর অন্তরালে তিনি বঙ্গবন্ধুর সাথে সম্পর্ক রাখতেন। রাজনৈতিক কর্মসূচি গ্রহণে বঙ্গবন্ধু তাকে পরামর্শও দিতেন। এই চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য তার কন্যা শেখ হাসিনাও পেয়েছেন। দলের যোগ্য-অযোগ্য প্রবীণনেতাদের তিনি ধারাবাহিকভাবে হয় মন্ত্রী করেছেন নয় কোথাও পদ দিয়েছেন। শুধু তাই নয় সমাজতন্ত্রের এই ভাটার যুগে একে একে প্রবীণ বাম নেতাদের মন্ত্রীও বানিয়েছেন। সত্যি কথা বলতে কী, নৌকা মার্কার জোরেই তাদের অনেকে বিজয়ী হয়েছেন। বারবার যেমন মন্ত্রী তিনি করেন নাই, তেমনই বারবার সংসদ সদস্য করতে উদ্যোগী না-ও হতে পারেন। ষাট দশক থেকে ভূমিকার স্বীকৃতিই বটে।

এই ধরনের পরিস্থিতিতেও আওয়ামী লীগ ও বিএনপি ভারসাম্য রক্ষা করে সংসদীয় গণতন্ত্রকে এগিয়ে নিতে পারেনি। বিগত বিএনপি-জামায়াত জোট আমলের কর্মকাণ্ডের জন্য তারেক রহমানের প্রতি নানাপক্ষ আঙুল তুললেও সবটার দায় তার একার নয়। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের বাঁক বদলে আবির্ভূত বিএনপির রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি প্রধান ভিত্তিই পাকিস্তানি ভাবধারা। পরিবর্তনে সাড়া দিতে বিএনপির অক্ষমতা সেখানেই। ড. কামাল হোসেনের সাথে যুক্ত হয়ে ড. বি চৌধুরীর বিএনপি ভেঙে নতুন রাজনৈতিক ধারা সৃষ্টির চেষ্টার আঁতুড়ঘরে মৃত্যু আমরা দেখেছি।

হিন্দু-মুসলিম ভিত্তিতে ১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর মোহম্মদ আলী জিন্না ঘোষণা করেছিলেন, সব ধর্মীয় সম্প্রদায়ের মানুষদের নিয়েই আধুনিক পাকিস্তান গড়বেন। এটা যে হয় না তার প্রমাণ পাকিস্তান নিজেই। পাকিস্তান থেকে পাকিস্তানেরই মুক্তি এখন অনিবার্য হয়ে উঠেছে। সেদেশের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানসহ অনেক বুদ্ধিজীবীকেই এখন বাংলাদেশের এগিয়ে যাবার কথা পাড়তে দেখা যাচ্ছে। কীভাবে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের মর্যাদা রক্ষা করতে হয় তাও ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদিকে দেখিয়ে দেবেন বলে ঘোষণাও দিয়েছে ইমরান!

নব্বই দশক থেকে বাংলাদেশে প্রাণবন্ত সংসদীয় ব্যবস্থার জন্য নানাপক্ষের চাপ থাকা সত্ত্বেও সব আলোচনা নীতিবাক্য উচ্চারণই সার। পালা করে আওয়ামী লীগ বিএনপি ক্ষমতায় আসা-যাওয়ারকালেও সরকারি কাজে ধারাবাহিকতা লঙ্ঘিত হচ্ছিল। দেশে কোনো দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা ছিল না। জাতীয় প্রয়োজনে রাজনৈতিকদলগুলোর একত্রিত না হতে পারা নিয়ে সাধারণেও সমালোচনা ছিল। মোল্লাগোছের লোকের মুখেও শুনেছি- ভারতের রাজনীতিকরা এক হতে পারে, কিন্তু বাংলাদেশের নেতারা পারেন না।

তারপরও নব্বই থেকে জনমনে ধারণা জন্মে- বিএনপি ও আওয়ামী লীগ পালাক্রমে শাসন চালাবে। কিন্তু ২০০১ সালে বিএনপি-জামাতের আওয়ামী লীগ খতমের লাইন মাথা চাড়া দেওয়ায় থমকে যায় ওই প্রক্রিয়া। ২১ অগাস্ট গ্রেনেড হামলা যার মাইল ফলক। কালচক্রে থিতু হতে থাকা জাত বৈরিতায় নতুন করে ঘি ঢালে গ্রেনেড হামলা। যদিও বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের স্মৃতি মুছে যায়নি, কেক কাটাও অব্যাহত ছিল।

এই বিনাশী বৈরিতার পেছনে রয়েছে পাকিস্তান-স্মৃতি। বঙ্গবন্ধু হত্যার পরপরই পাকিস্তান পুনরুদ্ধারের আকাঙ্ক্ষাও উথলে উঠেছিল সেকারণে। যদিও এখন দেশের শিশুরাও বোঝে 'পাক সার জমিন সাদ বাদ' ফিরে আসবে না। বাংলাদেশের ট্রেন চলতে শুরু করেছে। বরং পাকিস্তান-বোধ যে অগ্রগতির অন্তরায় তা অনেকটাই স্পষ্ট।

মধ্য ষাটে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের প্রেক্ষিতে 'অরক্ষিত পূর্ববাংলার' ধ্বনি দিয়ে শেখ মুজিবের যাত্রা শুরু। মাত্র কয়েক বছরের মধ্যে বাঙালির বাঁচার লড়াইয়ের মিত্রশক্তি হিসেবে ভারত হয়ে ওঠে পরম বন্ধু। রক্তাক্ত একটা যুদ্ধর পরও বাঙালি সংস্কৃতির উপর ভিত্তি করে আধুনিক রাষ্ট্র গঠনে বিচলিত হয়ে পড়েন অনেকে। শুধু পাকিস্তান রক্ষাকারী রাজাকারই নয়, প্রাণ বাঁচাতে ভারতে পাড়ি জমানোদেরও ওই কাফেলায় দেখতে পাই বাংলাদেশের পরবর্তী রাজনীতিতে। দ্বিজাতি-তত্ত্বের পিছু টানে সাড়া না দিয়ে পারেন নি অনেকে। বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের একাত্তরের কর্মকাণ্ড দেখলেই বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে যায়।

এমন নয় স্বাধীন বাংলাদেশে ফরাসি ধর্মনিরপেক্ষ ধারণার আমদানি হয়েছিল। হিন্দু-মুসলমান-বৌদ্ধ-খ্রিস্টানের সম্মিলিত আবহমান সংস্কৃতির উপর ভিত্তি করে সব ধর্মের সব সম্প্রদায়ের মানুষের সমমর্যাদা প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে একটি আধুনিক রাষ্ট্রগঠনে আকাঙ্ক্ষা প্রতিফলিত হয়েছিল সংবিধানে।

সাংবিধানিক ধর্মনিরপেক্ষ দেশে শুরু থেকেই মানুষের আধ্যাত্মিক চিন্তার ধর্মীয় স্বাধীনতা, ধর্ম চর্চার স্বাধীনতার জন্য নানা উদ্যোগ নিতেও দেখা যায় বঙ্গবন্ধু সরকারকে। প্রথম থেকেই প্যালেস্টাইনকে শর্তহীন সমর্থন দিয়েও জেঁকে বসা পাকিস্তানপন্থিদের প্রোপাগান্ডা মোকাবেলায় সফল হননি। আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে লাগাতার প্রচার চলেছে। তারা ক্ষমতায় আসলে 'মসজিদে উলু ধ্বনি দেওয়া হবে' এমন প্রচারও করেছে বিএনপি।

আশ্চর্যজনকভাবে নির্বাচনী আচরণ বিধিতে এমন প্রচার বাধার সম্মুখিন হয়নি!

তবে ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় আসার পর সব নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ধারাবাহিক ভোট বৃদ্ধিতে ওসব প্রচারে বিভ্রান্ত মানুষের সংখ্যা কমে যাওয়াও ভূমিকা রেখেছে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগকে ধারাবাহিকভাবে ব্যক্তির সামাজিক ধর্ম চর্চার স্বাধীনতার সাথে রাষ্ট্রনীতির ভারসাম্য আনায় উদ্যোগী হতে দেখা যাচ্ছে। সব পরীক্ষা নিরীক্ষা যে প্রশ্নাতীত সে দাবি হয়তো করা যাবে না।

তবে সৌদি সামরিক জোটে যোগদান, কওমী সনদের স্বীকৃতি, রোহিঙ্গা মুসলিমদের আশ্রয় দান টানা ৪৭ বছর ধরে চলা প্রোপাগান্ডার শক্ত মোকাবেলা করতে পেরেছে। আওয়ামী লীগ এর সুফল ভোগ করতে শুরু করেছে। যেকোন সাফল্যই সেদিকে টেনে নেওয়ার শক্তিও রাখে।

ভারতের জুজুর ভয় দেখিয়ে ২১ বছর ক্ষমতার বাইরে রাখা হয়েছিল আওয়ামী লীগকে। বিগত দশ বছরের সাফল্যে খুব স্পষ্টভাবেই ধরা পড়ে প্রতিবেশি ভারতের সাথে শান্তিময় সহাবস্থান দেশকে কতটা এগিয়ে নিতে পারে। বাংলাদেশ খুব স্পষ্ট করেই ঘোষণা দিয়েছে ভারতে অন্তর্ঘাতী কাজে দেশের মাটি পাকিস্তানকে ব্যবহার করতে দেবে না। এটাও প্রতিয়মান হয় যে ভারতে অন্তর্ঘাতমূলক কাজে ভূমি ব্যবহারে জন্য বাংলাদেশকে তাদের দরকার থাকতে পারে, কিন্তু বাংলাদেশের আদৌ পাকিস্তানকে দরকার পড়ে না। পাকিস্তানের ফরমায়েশি কাজে যুক্ত কিছু লোক ধনাঢ্য চৌধুরী হওয়া ছাড়া আর কী কাজে আসে?

এই বোধ দ্রুত বাংলাদেশের রাজনীতির প্রেক্ষাপট বদলে দিচ্ছে। মনে করবার কারণ নাই- 'পুলিশি রাষ্ট্রের' চাপে সবটা কাঁথার তলে সেধিয়ে গেছে। কে যুবা আর কেইবা কিশোর বাঁধ মানে না কেউই। তার চাক্ষুস প্রমাণ নির্বাচনের আগে আগে তরুণ ও কিশোরদের দু-দুটো সফল বিক্ষোভ। পোশাক শ্রমিকদের বাগে রাখার কত কত রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা চালু থাকার পরও  নির্বাচন শেষ হতে না হতেই মজুরির দাবিতে রাস্তায় তারা। চাইলে জনগণ রাস্তায় নেমে আসে শ্রমিকদের বিক্ষোভ চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে।

আওয়ামী লীগের দুর্দান্ত প্রতাপের সাথে এই টানা শাসনে বিপুল বেগে এগিয়ে যাওয়ার মধ্যে ঘাটতি রয়েছে। এত এত বিকাশের মধ্যেও কাল হয়ে দেখা দিচ্ছে বৈষম্য। মুক্তবাজার অর্থনীতি এই বিরোধ মেটাতে অক্ষম। সামাজিক সুরক্ষায় অনেক কর্মসূচিও তাদের রয়েছে। তারপরও এই সমস্যা যে পুরোটা সমাধান হচ্ছে না তা আওয়ামী লীগের নেতারা প্রকাশ্যেই স্বীকার করে থাকেন। এক্ষেত্রে গঠনমূলক সমালোচনা করে পথ দেখাবর যোগ্য দল জাতীয় পাটি নয়।

বিশ্ব রাজনীতির মহাসড়কে পাকিস্তানি চশমার প্রয়োজন ফুরিয়েছে। চীন, ভারত, সৌদি আরব কিংবা পশ্চিমা শক্তিগুলোর সাথে সম্পর্কে পাকিস্তান কোন গুরুত্বপূর্ণ অনুঘটক নয়। তাই রাষ্ট্র এবং সরকারকে অনুধাবন করতে হবে কোন ধারার রাজনীতি দেশের ভারসাম্য রক্ষায় ভুমিকা রাখবে।

দেশ স্বাধীনের পরে আওয়ামী লীগ যে কল্যাণ রাষ্ট্রের ধারণা নিয়ে এগিয়েছে তার থেকে অনেকটাই সরে আসতে বাধ্য তারা। তাই গণতান্ত্রিক বামপন্থি দলগুলোই ভারসাম্য রক্ষায় গঠনমূলক ভূমিকা রাখতে পারে। সংসদীয় সীমার মধ্যে তা সম্ভব না করলে অতি অবশ্যই তা রাস্তার বিক্ষোভে পরিণত হবে। দেশি-বিদেশি বিপুল এই বিনিয়োগের যুগে সুস্থির রাজনৈতিক ধারাবাহিকতা রক্ষা স্পর্শকাতর ব্যাপার রাষ্ট্রীয়ভাবেই।