‘দেশ দখল করছিলাম, কিন্তু রাষ্ট্রযন্ত্র দখল করি নাই’

Published : 16 Dec 2018, 12:42 PM
Updated : 16 Dec 2018, 12:42 PM
বিজয় দিবসের ৪৭ তম পূর্তিতে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশ। অনেক চড়াই উৎড়াই পার হয়ে আজ মধ্যম আয়ের দেশের মর্যাদার দিকে হাঁটছে দৃপ্তপায়ে। আর মাত্র তিন বছর পর বাংলাদেশ পালন করবে বিজয়ের সুবর্ণ জয়ন্তী। আমরা আনন্দিত, গর্বিত।
কিন্তু এই আনন্দের মাঝেও মনে খটকা আছে অনেক। আছে অনেক যদি- কিন্তুর অস্তিত্ব। শুধু অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনই কি এই বিজয়ের  লক্ষ্য? যে চেতনা নিয়ে, যে লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিয়ে  মুক্তিযোদ্ধারা জীবন বাজি রেখে এই বিজয় ছিনিয়ে এনেছিলেন, সেই চেতনার কী হবে?  নয়মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ করেও আমরা কেন আমাদের সেই কাঙ্খিত সোনার বাংলা পেলাম না। কেন সপরিবারে  হত্যা করা হলো জাতির পিতাকে? কেন একে একে মেরে ফেলা হলো চার নেতাকে? কেন কোর্ট মার্শালের নামে ফাঁসি দেওয়া হলো কর্ণেল তাহেরকে? কেন ফাঁসি দেয়া হলো ১১ জন কর্মকর্তাসহ ১ হাজার ৪৫০ বিমানসেনাকে?
কেন মুক্তিযোদ্ধা পরিচয় নিয়ে কোণঠাসা হয়ে থাকতে হয়েছে স্বাধীনতার পরে দীর্ঘ বছর?  কেন বেঁচে থাকতে ন্যূনতম সম্মান ও স্বীকৃতি পাননি অনেক মুক্তিযোদ্ধা? কেন মুক্তিযোদ্ধা  সার্টিফিকেট পেয়ে গেল অনেক ভুল মানুষেরা?  কেন মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস নিয়ে, চেতনা নিয়ে আজো বিভক্ত এদেশের মানুষ? এমন শত শত 'কেন' মনের মাঝে কাঁটা হয়ে বিঁধে থাকে। 
একটি দেশের নয়মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ শেষে পাওয়া বিজয়ের ৪৭ বছর পরও যখন স্বাধীনতা বিরোধীদের আস্ফালন অব্যাহত থাকে, দেশ বিরোধী চক্রান্ত চলমান থাকে এবং নতুন প্রজন্ম একটি অংশ মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে  বিভ্রান্ত থাকে; যখন স্বাধীনতা বিরোধী শক্তিকে রাজনৈতিক প্লাটফর্ম দিতে ঐক্য তৈরি হয়, তখন বিজয় উৎযাপনের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে আত্মসমালোচনা খুবই জরুরী হয়ে পড়ে। কি সেই ভুলগুলো যা বাংলাদেশকে মেরুদণ্ড সোজা করে দাঁড়াতে বাঁধা দিয়েছে বার বার। কিছু রাজনৈতিক ইতিহাস ও ঘটনাপ্রবাহ আমরা অনেকেই জানি। তবুও যেন জানা হয় না সবটা। তাই প্রচলিত ঐতিহাসিক রাজনৈতিক কারণের পাশাপাশি খুঁজছিলাম কারণের পেছনের কারণগুলো। হঠাৎ পেয়ে গেলাম এক বীর মুক্তিযোদ্ধার আত্মসমালোচনামূলক কথামালা। মুক্তিযোদ্ধাদের এক সমাবেশে বড্ড নির্মোহভাবে তিনি বলে গেছেন কারণের পেছনের সেই কারণগুলো। বলেছেন, নিজেদের করণীয় নিয়েও। তার বক্তব্যের চুম্বক কিছু অংশ তুলে দিলাম। সকলেই শুনুন, ভাবুন কারণগুলো নিয়ে। হয়তো মিলবে অনেক প্রশ্নের উত্তর।
মানুষটি বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং ৯ নম্বর সেক্টরের সুন্দরবন সাব-সেক্টর কমান্ডার মেজর জিয়াউদ্দিন। তাকে আপনারা সবাই চেনেন, জানেন। নতুন করে পরিচয় করিয়ে দেয়ার কিছু নেই। তারপরও যারা চেনেন না তাদের জন্য লেখার শেষে একটি সংক্ষিপ্ত পরিচিতি দেয়া হলো।
আসুন দেখি ৭১ এবং তার পরবর্তী বাস্তবতা নিয়ে কী বলেছেন তিনি :
আমরা ৭১ সালের শেষে ৭২ সালের শুরুতে একটা বড় ভুল করেছি। সেই ভুলের আমি অংশীদার। আপনারাও অংশীদার। গোড়ায় গলদ যে রয়ে গেছে সেটা আমরা মূল্যায়ন করিনি।
আমরা ৭১ সালে পাকিস্তানিদের পরাজিত করলাম। দেশ দখল করে ফেললাম। আর আসল কাজটা করলাম না কি? রাষ্ট্রযন্ত্র দখল করি নাই। সেই পুরানো আমলারা সব বড় বড় চেয়ারে বইসা আছে। ফিদেল কাস্ট্রো বঙ্গবন্ধুকে বললেন যে, বঙ্গবন্ধু তোমারে তো মাইরা ফেলবে। তুমি সব স্বাধীনতা বিরোধীদের বড় বড় চেয়ারে বসায়া রাখসো। বঙ্গবন্ধু বলে, দ্যাখো, ওরাও তো বাঙালি। ওদের উপরও অত্যাচার হয়েছে। বঙ্গবন্ধু বিরাট। তার শিনার চেয়ে দশগুণ বড় তার কইলজাডা। উনি এই উত্তর দিলেন, কিন্তু ঘটনা তাই ঘটলো।
একজন সামরিক অফিসার। সিলেটে সে পাকিস্তানিদের সাথে এক হয়ে যুদ্ধবন্দি হয়ে আছে। বাঙালি। এই গোঁফ। পাকিস্তানি সাজলে গোঁফ নাকি ভালো হয়। আমাদের একজন মেজর তখন, খুব সম্ভব মেজর মাঈনুল ইসলাম, উনি সিলেটের সেই সার্কিট হাউজে গেলেন যে, যুদ্ধবন্দিরা কেমন আছে, কী সুবিধা অসুবিধা। মানতে তো হবে। আন্তর্জাতিক আইন, মানতে হবে। উনি গিয়ে দেখেন বাঙালি অফিসারও সেখানে উপস্থিত।  উনি দেখে বললেন, স্যার আপনিতো বাঙালি! আপনি কেন যুদ্ধবন্দি হয়েছেন? বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে, আপনি যুদ্ধবন্দি হবেন কেন?
উত্তরে ওই বাঙালি অফিসার বলেন, বাংলাদেশ নামক কোনও দেশে আমি জীবনেও বাস করবো না। আমাদের মুসলমানের পবিত্র ভূমি হইসে পাকিস্তান। আমি সেখানে চলে যাবো। দেড় মাসের মধ্যে সেই সামরিক অফিসার খুব বড় একটা চেয়ার নিয়ে সরকারের মধ্যে পোস্টিং পায়। দেশ এবং রাষ্ট্রযন্ত্রের মধ্যে পার্থক্য আছে, সেটা মুক্তিযোদ্ধাদের বুঝতে হবে।
আমরা দায়ী। কথাটা ঠিক। কিন্তু আমরা বলতে শুধু মুক্তিযোদ্ধারা না। পেছনে যে রাজনৈতিক শক্তিগুলি ছিলো তারাও দায়ী। তারা বোঝেননি যে, যুদ্ধ বিদ্ধস্ত একটা দেশের কী করতে হবে। কারণ যুদ্ধ তো উনারা আর দেখেননি। এজন্য বুঝতে পারেননি কী করতে হবে। আমরা অস্বীকার করবো না যে আমরা দায়ী। তবে এখানে দায়ী যারা তাদের মধ্যে আরো অনেকে আছে। এই ত্রুটি আমাদের যথেষ্ট হয়েছে।
মুক্তিযোদ্ধারা আজকে কিছু সম্মান পাচ্ছে। কিছু স্বীকৃতি পাচ্ছে। বেশ কিছু মুক্তিযোদ্ধা – তাদের নাম ঠিকমতো আসে নাই, ওঠে নাই।
আপনি মনে রাখবেন, মুক্তিযুদ্ধের কথা বললেই আপনি যদি একা বলেন, এই সচিবালয় থেকে শুরু করে সমস্ত প্রশাসনে একশ জন আপনার বিরুদ্ধে দাঁড়ায়া যাবে যে, হারামজাদা আবার মুক্তিযুদ্ধ দেখাইতে আইসো? কাজেই আমরা চাইলেই ভালো করতে পারি না।
বঙ্গবন্ধু যখন প্রেসিডেন্ট হচ্ছেন, বাকশাল হচ্ছে,  তখন বঙ্গবন্ধুর দপ্তর থেকে চিঠি ইস্যু হয়ে গেল যে, প্রেসিডেন্ট গার্ড রেজিমেন্ট গঠন করতে হবে। এই ফাইলটা দেড় বছর আপনারা ঘুরাইছেন। বঙ্গবন্ধু রাষ্ট্রের প্রধান, সরকার প্রধান, কিন্তু আপনারা ফাইল ছাড়েন নাই। বঙ্গবন্ধু সরকারের প্রধান এবং জাতির জনক, উনি পারেন নাই তাদের সাথে। এবং তারা এখন আরও শক্তিশালী।
আমাদের বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা চেষ্টা করছেন অনেক। কিন্তু আমাদের মনে রাখতে হবে, এই আমরা কিন্তু অনেক অবহেলায় ছিলাম। আজকে কিছুটা আমাদের পক্ষে একটা স্রোত আছে। এই দাদা বললেন যে, উনি মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে পরিচয় দিতে পারতেন না। সত্য কথা। আমরা কোথাও গেলে, মুক্তিযোদ্ধা বললে কপাল কুঁচকাইতো, ইত্যাদি। আমরা কখনোই সরকারী পৃষ্ঠপোষকতা পাই নাই। স্টেট, রাষ্ট্রযন্ত্র ছিলো স্বাধীনতা বিরোধী। তারা কিন্তু এখন আরও শক্তিশালী।
ভাগ্য ভালো বঙ্গবন্ধুর কন্যা প্রধানমন্ত্রী। নাইলে যা যা করছেন উনি তার ১০ ভাগও আপনার পক্ষে আসতো না। এটা মনে রাখতে হবে। এবং সেইভাবে নিজেদের প্রস্তুত করতে হবে। স্বাধীনতা-বিরোধী জামাত শিবির এবং নব্য জামাত-টামাত কিছু আছে, এরা কিন্তু দিনে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ২২ ঘণ্টা পলিটিক্স করে। একজন রিক্সাচালককে পেলে পানি খাওয়ায়, বলে আপনি বসেন। আপনি মুসলমান, আমিও মুসলমান। একটু মুসলমানের তদ্বির করা, একটু সাহায্য করা উচিত।
ওদের সেই বাংলাদেশ বিরোধী, বাঙালি বিরোধী কাজকর্ম কিন্তু চলছে।  আর আপনি আমি কী করি? সত্যি কথা বুকে হাত দিয়ে বলেন। দিনে আধঘণ্টা কী আমরা একজনকে বুঝাই যে মুক্তিযুদ্ধ কেন হয়েছিলো? মুক্তিযুদ্ধের এই অবস্থা কেন? বঙ্গবন্ধুকে কেন হত্যা করা হলো? কয়জন বুঝাইসি আমরা বলেন? বুঝাই নাই।
আমাদের একটা দেমাগ আছে, আমরা মুক্তিযোদ্ধা। সব দখল কইরা ফালাইসি। কিন্তু মূল ঘাঁটি যে দখল হয় নাই। দেশ দখল করসিলাম, কিন্তু রাষ্ট্রযন্ত্র দখল করি নাই। কাজেই আজকের এই দুর্গতি। এই যে আমাদের উপর অত্যাচার, আমাদেরকে অপদস্ত করা, এসবকিছুর পিছনে ঐ স্বাধীনতা বিরোধী চক্র ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ২০-২২ ঘন্টা কাজ করে। আমরা আধঘন্টাও করি নাই। কিন্তু আমাদের করা উচিত।
রিক্সাচালকরা দশজন দাঁড় করাইলে দেখা যাবে আট জনে স্বাধীনতা বিরোধীদের পক্ষে কথা বলে। কারণ কী? ওরা ভালো ব্যবহার করে, একটু বসায়। একটু চা পানি খাওয়ায়। আর আমরা? রিক্সাওয়ালা আসছে, দশ টাকা বেশি নিসে, যা ব্যাটা। ওর সাথে সম্পর্কটা আমরা ওখানেই শেষ করে দেই। আর ওখানেই জামাত শিবির আর নব্য জামাত যারা আছে,  পাকিস্তানের দোসর যারা আছে, তারা কিন্তু ওইখানেই শুরু করে। এইযে একটা মানুষকে তাদের পক্ষে নিয়ে যাওয়া, এইটা আমরা করি না।
নতুন প্রজন্মকে নিয়ে যতই আমরা চিৎকার করি, তা কিন্তু হবে না। নতুন প্রজন্মের সামনে যদি এই ৬০ বছর, ৭০ বছর, ৮০ বছরের মুক্তিযোদ্ধারা না থাকে, তাহলে নতুন প্রজন্মকে আপনি পাবেন না। আপনি যদি মনে করেন, আমাদের কোনও দায়িত্ব নাই, এটা ভুল হবে। নতুন প্রজন্মের সামনে আমাদেরও উদাহরণ হিসেবে দাঁড়াতে হবে যে আমরা ভালো মানুষ, আমরা দুর্নীতিবাজ না, আমরা অসৎ না, আমরা মানুষের জন্য কাজ করি। আমরা দেশের জন্য কাজ করতে গিয়ে জীবন বাজি রেখেছি। এই সবগুলি যদি আমরা ওদেরকে না বুঝাই, তাহলে কিন্তু এমনিতে হবে না। হবে না। হবে না। সেইভাবে বুঝে আপনারা যদি কিছু কাজ করেন। মুক্তিযোদ্ধা ভাতা পাচ্ছেন,  অসুস্থ হয়ে গেছেন, তারমধ্যেও কাজ করা যায়। যে ডাক্তার আপনাকে দেখে, যে নার্স আপনাকে দেখে, যে বয় আপনাকে পানি আগায় দেয় বা খাবারটা আগায় দেয়, এদের সাথে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক গল্পটা করেন, উদ্দেশ্যটা বলেন, তাইলেই দেখবেন ওরা শুনবে। ওরা আগ্রহ দেখায়।
আপনারা যারা বৃদ্ধ হয়ে গেছেন আমার মতো, তারা কিন্তু পরাজিত হবেন না। তারা কিন্তু আত্মসমর্পন করবেন না। ওরা আত্মসমর্পনের অনেক কাজ করে। যে পয়সা শেখ হাসিনা আজকে আপনার জন্য পাশ করায়া দিসে, জামাতিরা তারচেয়ে অনেক বেশি পয়সা খরচ করে। তাদের অন্তত দেড় লাখ, দুই লাখ, হাজার কোটি টাকার সম্পদ আছে। ব্যাংক, বীমা, সর্বব্যাপী, সব সংস্থায় তারা আছে। যেখানে জামাত কর্মী আগান যায় না, সেখানে অন্য নাম দিয়ে ঢোকে। এরা এতো সুচতুর এবং এতো এরা মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী। আমরা যদি না বুঝি তাহলে হবে না।
একজন মুক্তিযোদ্ধা ৭১ সালে ১০০ রাজাকারের চেয়ে শক্তিশালী ছিলো। আজকে কিন্তু সেই অবস্থা নাই। ওরা দিন গুনে যে, আরেকটু বুড়া হোক, আরো একটু বুড়া হোক। তাদের শিকড় উপড়ে ফেলতে হবে।
আমরা মুক্তিযোদ্ধা হয়ে বাঁচতেসি, মুক্তিযোদ্ধা হয়েই মরতে হবে। এটা কঠিন ভাবে আপনাকে বুঝতে হবে। আপনি যতই কষ্টে থাকেন, যতই অনিয়মে থাকেন, আপনি মনে রাখবেন, বাংলাদেশটা কিন্তু একটা উন্মুক্ত দেশ আপনার জন্য। আপনি চাইলে অনেক কিছুই এখানে করতে পারেন।
বক্তব্যের লিঙ্ক: https://www.youtube.com/watch?v=pCkFtzSe9rM

জিয়াউদ্দিন আহমেদ সংক্ষিপ্ত পরিচিতি

সেনাবাহিনীতে যোগ দেন ১৯৬৯ সালে। মুক্তিযুদ্ধে ৯ নম্বর সেক্টরে মেজর এম এ জলিলের অধীনে একজন সাব-সেক্টর কমান্ডার ছিলেন তিনি। কর্নেল তাহেরের অনুসারী মেজর জিয়াউদ্দিন ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বরের পর সুন্দরবনে আশ্রয় নেন। পরে সুন্দরবনে সেনা অভিযানে গ্রেপ্তার হন তিনি।

সামরিক আদালতে বিচারের নামে কর্নেল তাহেরকে ফাঁসিতে ঝোলানোর পাশাপাশি জিয়াউদ্দিনকেও ১২ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। ১৯৮০ সালে রাষ্ট্রপতির সাধারণ ক্ষমায় মুক্তি পান তিনি।

আশির দশকে এইচ এম এরশাদ সরকারের সময় বেশ কিছুদিন সিঙ্গাপুরে ছিলেন এই মুক্তিযোদ্ধা। পরে দেশে নিজের এলাকায় ফিরে শুরু করেন শুঁটকির ব্যবসা। ১৯৮৯ সালে তিনি পিরোজপুর পৌরসভার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।

মেজর জিয়াউদ্দিন আহমেদ মেজর জিয়াউদ্দিন আহমেদ একাত্তরে সুন্দরবন অঞ্চলকে শত্রুমুক্ত রাখতে নেতৃত্ব দেওয়া এই মুক্তিযোদ্ধা পরে 'সুন্দরবন বাঁচাও' নামে একটি অরাজনৈতিক সংগঠন তোলেন। স্থানীয়ভাবে তাকে ডাকা হতো সুন্দরবনের 'মুকুটহীন সম্রাট' নামে।

মৎস্যজীবীদের সংগঠন দুবলা ফিশারম্যান গ্রুপের চেয়ারম্যান জিয়াউদ্দিন সুন্দরবন এলাকায় ডাকাত নির্মূল অভিযানেও সক্রিয় ছিলেন। ২০১৩ সালে বনদস্যুদের গুলিতে তিনি আহত হন।

মুক্তিযুদ্ধকালীন সুন্দরবনের বিভিন্ন ঘটনা নিয়ে তিনি ‌'সুন্দরবন সমরে ও সুষমায়'  নামে একটি বইও লিখেছেন।