ধর্মানুভূতি: কঠিন সংকটে পাকিস্তান, দেখে শিখবো নাকি ঠেকে?

হাসান মাহমুদহাসান মাহমুদ
Published : 25 Nov 2018, 02:48 PM
Updated : 25 Nov 2018, 02:48 PM

জঙ্গি দমনে বাংলাদেশ সরকারের সাফল্য প্রশংসনীয়। কিন্তু জঙ্গিদের শেকড় মৌলবাদ উচ্ছেদে দরকার কার্যকর একটা পদ্ধতি, সেটা গুলি-বন্দুক-গ্রেপ্তার দিয়ে হয়না। সমস্যাটার চরিত্র পাকিস্তানের উদাহরণ থেকে শেখা দরকার। কারণ দেশে মৌলবাদ প্রথম থেকেই পাকিস্তানি মৌলবাদীদের দ্বারা অনুপ্রাণিত এবং কোনও কোনও ক্ষেত্রে পরিচালিত। দু'দলের ধর্মবিশ্বাস, গ্রন্থগুলো, কর্মপদ্ধতি ও উদ্দেশ্যে একই।

"পাকিস্তান কী ভয়াবহ পরিণতির দিকে এগোচ্ছে তা তিরিশ বছর পর টের পাবে" – বলেছিলেন পাঞ্জাবের নিহত গভর্নর সালমান তাসির-এর সদ্য স্বামীহারা স্ত্রী – জানুয়ারি ২০১১। তিরিশ বছর লাগেনি, এখনই সেই ভয়াবহ পরিণতি স্পষ্ট হয়ে উঠেছে, স্বঘোষিত 'নায়েবে রসূল'-দের তাণ্ডবে টালমাটাল পাকিস্তান।

একাত্তরের পর এত গভীর সংকটে পাকিস্তান পড়েনি কখনো। অলক্ষ্যে ধ্বনিত হচ্ছে ইঙ্গিত, বাংলাদেশের কানে কানে কিছু বলছে নিয়তি – দেখো, দেখে শেখো, নতুবা ওরকম চড়া মূল্য দিয়ে ঠেকে শিখতে হবে।

সংক্ষিপ্ত ঘটনাক্রম, প্রধানত: পাকিস্তানের বিভিন্ন টিভি থেকে।

১. ২০০৯ সাল। পাঞ্জাবে ৪৪ বছর বয়স্ক দুই কন্যার জননী খ্রিস্টান আসিয়া বিবি (আসিয়া নওরীন) তার কাপ দিয়ে বালতি থেকে পানি নেবার পর দুজন মুসলিম নারী ঝগড়া শুরু করে এই বলে যে- ওই পানি অপবিত্র হয়ে গেছে। ঝগড়া বেড়ে গেলে তারা আসিয়া বিবিকে ইসলাম গ্রহণের জন্য চাপ দেয় ও অভিযোগ করে যে আসিয়া নবীজীকে (স) নিয়ে আপত্তিকর কথা বলেছে। কথাটা চাউর হলে উত্তেজিত ক্রুদ্ধ জনতার জমায়েতে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় এবং ভীতসন্ত্রস্ত আসিয়া বিবি জনতার ও মুরুব্বীদের সামনে আপত্তিকর কথার স্বীকারোক্তি করে ক্ষমা চায়। তারপর সে গ্রেপ্তার হয় ও তার বিরুদ্ধে ধর্মানুভূতিতে আঘাতের মামলা হয় (আইন নং ২৯৫সি)।

২. নিম্ন আদালত তাকে মৃত্যুদণ্ড দেয় ২০১০ সালে, সেই থেকে সে কারাগারে একা নির্জন কক্ষে বন্দি। আপিল করলে হাইকোর্ট তার মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখেছ ২০১৪ সালে, আবার আপিল করলে সুপ্রিম কোর্ট তাকে খালাস দিয়েছে গত ৩১ অক্টোবর, ২০১৮। এই তারিখটা পাকিস্তানে উগ্র মাওলানাদের ও গণমানসে অত্যন্ত স্পর্শকাতর, কারণ পাঞ্জাবে ১৯২৯ সালে এদিনেই ফাঁসি হয়েছিল ভারতবর্ষের প্রথম ধর্মানুভূতি মামলার খুনি ইলমুদ্দীনের যে এখনও পাকিস্তানে বিরাট হিরো।

লাহোরের ছাপাখানার মালিক রাজপাল নবীজীর (স) নারীসঙ্গ নিয়ে "রঙ্গীলা রসুল" বই বের করলে ইলমুদ্দীন তাকে খুন করেছিল। আসিয়ার পক্ষে ও ব্লাসফেমি আইনের বিরোধী পাঞ্জাবের গভর্নর সালমান তাসিরকে ২০১১ সালে তার দেহরক্ষী মুমতাজ কাদির প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করলে তার মৃত্যুদণ্ড হয়, সেও পাকিস্তানে বিরাট হিরো। (দেখুন কাদির ও ইলমুদ্দীনের মামলার বিস্তারিত – মতামত বিভাগ – "আবার জঙ্গি: পাকিস্তানি বনাম বাংলাদেশি গণমানস" – ১০ জানুয়ারি, ২০১৮)৷ উগ্রপন্থীরা খুন করেছে ব্লাসফেমি আইনের বিরোধী সংখ্যালঘু মন্ত্রী শাহবাজ ভাট্টিকে এবং আরেক অভিযুক্ত বন্দি প্রফেসর জুনায়েদ হাফিজের উকিলকেও।

৩. সুপ্রিম কোর্ট আসিয়াকে খালাস দিলে উগ্র ইসলামী রাজনৈতিক দল তেহরিক-এ লাব্বায়েক-এর হুংকারী ইমাম খাদিম হোসেন রিজভী উন্মত্ত জনতাকে রাস্তায় নামিয়ে দেশজুড়ে ধ্বংসযজ্ঞ শুরু করে। মিটিং মিছিল স্লোগান কাকে বলে তা বাংলাদেশিরা ভালো করেই জানেন। কিন্তু পাকিস্তানে যা হয়েছে তাকে উন্মাদের তাণ্ডব বললেও কম বলা হয়। তারা প্রকাশ্য ঘোষণায় দেশের সর্বোচ্চ তিন প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে বলতে গেলে যুদ্ধ ঘোষণা করে – (ক) প্রধানমন্ত্রী  ইমরান খানকে "ইহুদীর চর" ঘোষণা করে, (খ) মামলার বিচারপতিদের "কতলযোগ্য" ঘোষণা করে, প্রধান বিচারপতির গৃহভৃত্যদের আহ্বান জানায় তাকে বিষ দিয়ে হত্যা করতে (হার্ট অ্যাটাক হয়ে তিনি হাসপাতালে ছিলেন) এবং (গ) সেনাপ্রধান জাভেদ বাজোয়া-কে "কাফের" ও "কাদিয়ানি" ঘোষণা করে অন্যান্য জেনারেলদের আহ্বান জানায় বিদ্রোহ করে তাকে উৎখাত করতে।

পরে প্রকাশ পায় যে তারা সুপ্রিম কোর্টের রায়টা পড়েও দেখেনি যেখানে পরিষ্কার লেখা আছে কেন আসিয়াকে খালাস দেয়া হলো। তারা হুংকার দিতে দিতে বড় শহরগুলোর রাস্তা অবরোধ করে আগুন লাগিয়েছে, বহু  জায়গায় যান-চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে, অসংখ্য গাড়ি ও দোকান ভষ্মিভুত ও লুট হয়, সরকারও ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে অনেক জায়গায় বন্ধ করে দেয় মোবাইল ও ইন্টারনেট, পাঞ্জাব সরকার জারি করেছে ১৪৪ ধারা।

৪. এ হেন উন্মাদ আগ্রাসনের প্রতি দেশের সর্বোচ্চ এই তিন প্রতিষ্ঠানের প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া ভেজা পাউরুটির মতো মিনমিনে। হিংস্রতাকে আইনের আওতায় না এনে বরং তারা প্রমাণ করার চেষ্টা করেছেন যে তারা রসুল-প্রেমিক খাঁটি মুসলিম। তারা উগ্র ইমামের সাথে সমঝোতা বৈঠক করে তার তিনটে দাবি মেনে নিয়েছেন – রায় পুনর্বিবেচনার দরখাস্ত ও আসিয়া বিবিকে 'একজিট কন্ট্রোল লিস্ট'-এ অন্তর্ভুক্ত করা যাতে তিনি পাকিস্তান ছেড়ে যেতে না পারেন। এদুটো ইতোমধ্যে করা হয়েছে। অথচ এক মন্ত্রী বলেছেন আইন মোতাবেক যার বিরুদ্ধে কোনো মামলা নেই, তাকে অন্য দেশের ভিসা পেলে বিদেশ গমনে বাঁধা দেবার অধিকার সরকারের নেই।

৫. এই সমঝোতা বৈঠকের সম্ভাব্য কারণ ব্যাখ্যা করেছেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শহীদ খাকান আব্বাসী। তার আমলে এক উগ্র ইমামের নেতৃত্বে এরকম তাণ্ডব হলে তিনি হার্ডলাইনে গিয়ে পুলিশ ও আর্মি প্রয়োগের চেষ্টা করেন। কিন্তু দুই প্রতিষ্ঠানই তাকে স্রেফ না করে দেয়। সেনাপ্রধান তাকে বলেছিলেন- 'স্বজাতির ওপরে গুলি চালাবো না'। কথাটা একাত্তরে মাথায় ঢুকলে ভালো হতো। ফলে তিনি সমঝোতা বৈঠকে বাধ্য হন। জাতি, প্রশাসন ও সেনাবাহিনীর বড়ো একটা অংশ ইসলামের উগ্র জঙ্গিবাদের কতখানি সমর্থক হয়ে উঠলে একজন সরকার প্রধানকে এভাবে নাকে খৎ দিয়ে উগ্র মাওলানাদের হুংকারের সামনে মাথা নত করে পিছু হটে আসতে হয় তা বুঝতে আইনস্টাইন হতে হয়না। এরমধ্যে আসিয়া বিবির স্বামী-সন্তানেরা গোপন জায়গায় পালিয়ে আছেন এবং তাকে সরকার গোপন জায়গায় নিয়ে রেখেছে। এখন হিংস্র মৌলবাদীরা ঘরে ঘরে হানা দিয়ে তার পরিবারকে হন্যে হয়ে খুঁজে বেড়াচ্ছে – দ্য গার্ডিয়ান, ২১শে নভেম্বর।

৬. প্রথম থেকেই সংবাদমাধ্যম ওই ভেজা পাউরুটির মতোই মিনমিন করে সরকারের পক্ষে আছে, তারাও প্রমাণ করার চেষ্টা করেছে যে তারা রসুল-প্রেমিক খাঁটি মুসলিম। সম্প্রতি কিছু আলেম রায়ের পক্ষে মত দিয়েছেন, তাদের মধ্যে আছেন বিখ্যাত আলেম মুফতি শফি'র পুত্র পাকিস্তান কেন্দ্রীয় শারিয়া কোর্টের এবং সুপ্রিম কোর্টের "শারিয়া আপিল বিভাগ" এর প্রাক্তন বিচারক, অনেক ইসলামী সংগঠনের সদস্য ও ইসলামী ব্যাংকের অন্যতম প্রবক্তা-নেতা মওলানা ত্বকী উসমানী। সাথে অনেক আলেমও বলেছেন, এ আইন সাধারণ জনগণের বিশেষ করে সংখ্যালঘুদের কী সর্বনাশ করেছে। কয়বছর আগে এক মওলানা চাউর করে দিল গরীব খ্রিস্টান মহল্লায় এক বালিকা কোরানের পোড়া পৃষ্ঠা আবর্জনায় ফেলেছে। যা হবার তাই হলো, উন্মত্ত জনতা হুংকার দিয়ে ছুটে এল, পুরো মহল্লার খ্রীষ্টানেরা প্রাণভয়ে বৌ-বাচ্চা নিয়ে পালিয়ে গেল, ওই মওলানা তাদের জমি দখল করল। পরে তদন্তে প্রমাণ হল ওই মওলানাই জমি দখল করার জন্য ষড়যন্ত্র করে আবর্জনায় কোরানে পোড়া পৃষ্ঠা ফেলে দিয়ে ঘটনাটা সাজিয়েছে। শত শত ভয়াবহ ঘটনার এ একটা মাত্র।

৭. আসিয়া বিবির সমর্থনে বহির্বিশ্বে যতই অসংখ্য কণ্ঠ, সংগঠন ও সরকার সোচ্চার হচ্ছে, ততই সেগুলোকে উগ্র মাওলানারা "ইসলামের বিরুদ্ধে পশ্চিমা ষড়যন্ত্র" হিসেবে প্রচার করছে – জনগণের একাংশ তা বিশ্বাসও করছে। আসিয়া বিবির উকিল হল্যাণ্ডে পালিয়ে গেছেন, নিরাপত্তার জন্য হল্যাণ্ড সরকার পাকিস্তান দূতাবাস থেকে তাদের কর্মচারীদের ফেরত নিয়ে গেছে।

৮. উগ্র ইমামেরা জাতির বিরাট অংশকে এতই হিংস্র করে তুলেছে যে কারো বিরুদ্ধে এ অভিযোগ আনলেই তৎক্ষণাৎ তাকে হত্যার জন্য জনতা পাগল হয়ে হামলে পড়ে। এই দানবেরা গত ২৮ বছরে ৬২ অভিযুক্তকে খুন করেছে, এ ধরনের অভিযোগ করা হয়েছে ১৩০০ জনের বিরুদ্ধে – (ডন, ০১ জুলাই ২০১৬)। সুপ্রিম কোর্টের রায়ে আছে সাক্ষীদের বক্তব্যগুলোতে এতো পার্থক্য ও পরস্পর-বিরোধীতা আছে যে তার ভিত্তিতে কোনো সাজা দেয়া অসম্ভব – দৈনিক ডন, ০৬ নভেম্বর ২০১৮ থেকে সংক্ষেপে:-

(ক) ঘটনার সময় উপস্থিত নারী ছিল ২৫-৩০ জন। কিন্তু আসমা বিবি ও মাফিয়া বিবি ছাড়া আর কেউ ঘটনাটা সম্বন্ধে কারো কাছেই কিছু বলেনি। তার ওপর, আসমা বিবি ও মাফিয়া বিবি কোর্টে এসেও সাক্ষ্য দেয় নি।

(খ) যে কোনো মামলায় প্রথমেই এফআইআর করার বিধান অথচ এ মামলায় ওটা করা হয়েছে ঘটনার দীর্ঘ পাঁচদিন পরে, তাও আবার পুলিশ তদন্তেরও পরে যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। তাই, ষড়যন্ত্র করে ঘটনা সাজানোর সম্ভাবনা অবশ্যই থেকে যায়। এটা সব দেশেই প্রযোজ্য।   ক্যানাডার এক স্কুলের প্রিন্সিপ্যাল ও বোর্ডের সভাপতিকে আজ বরখাস্ত করা হয়েছে শুধুমাত্র  স্কুলে এক হিংস্রতার রিপোর্ট পুলিশকে দুদিন পরে দেবার জন্য।

(গ) বাদী ক্বারী মুহাম্মদ সালাম বলেছেন, এফআইআর-এর প্রাথমিক দরখাস্ত লিখেছিলেন এক  উকিল, কিন্তু তিনি তার নাম পর্যন্ত বলতে পারেননি। তাই, "বর্ণিত ঘটনার সত্যতা সম্বন্ধে সন্দেহ থাকে"।

(ঘ) যে জমায়েতে আসিয়া বিবি স্বীকারোক্তি করে ক্ষমা চেয়েছে বলা হয়েছে, সেখানে উপস্থিত লোকের সংখ্যা মাফিয়া বলেছে ১০০০ জন কিন্তু আসমা বলেছে ২০০০ এর বেশি।

(ঙ) আসমা বলেছে, জমায়েতটা হয়েছিল প্রতিবেশী রানা রাজ্জাকের বাসায়, মাফিয়া বলেছে সেটা হয়েছিল তাদের নিজেদের বাসায়, আরেক সাক্ষী মুহাম্মদ আফজাল বলেছে সেটা হয়েছিল মুখতার আহমদের বাসায়।

(চ) অন্যান্য সাক্ষীরা বলেছে বাদীকে ঘটনাটা জানানো হয়েছে ঘটনার দিনই অর্থাৎ ১৪ জুন, ২০০৯ সালে, কিন্তু বাদী নিজেই বলেছে ঘটনাটা তাকে জানানো হয়েছে ১৬ জুন, ২০০৯ সালে।

(ছ) ঝগড়াটা আদপেই হয়েছিল কিনা, কে কোথায় কবে বেলা কয়টার সময় কি করেছে এমন অনেক কিছুতেই সাক্ষীদের একের কথা অন্যের সাথে মেলেনি। একটা উদ্ধৃতি দিয়ে শেষ করছি। রায়ে এটাও বলা হয়েছে – "আসামীকে শত শত উত্তেজিত লোকের সামনে একা আনা হয়েছে, সেটা খুব ভীতিপ্রদ পরিস্থিতি ছিল। আসামী নিজেকে হুমকির সম্মুখীন ও ভীত বোধ করে থাকতে পারে, এ অবস্থায় সে যদি স্বীকারোক্তি করেও থাকে তবু তা স্বেচ্ছায় করেছে বলা যাবেনা। এক্সট্রা জুডিশিয়াল স্বীকারোক্তি একটি ভঙ্গুর প্রমাণ মাত্র"।

তাহলে সাক্ষীদের সাক্ষ্যে এত অমিলের পরেও আগের দুটো কোর্ট মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিল কিভাবে? অনেকে বলেছেন, পাকিস্তানে এ ধরনের মামলার বিচারকেরা ভয় পান ও অরক্ষিত বোধ করেন, সেটা কারণ হতে পারে। তবে কারণ যা-ই হোক না কেন সাক্ষ্য প্রমাণে এত ভজঘট থাকলে তার ভিত্তিতে মৃত্যুদণ্ড কেন কোনো শাস্তিই দেয়া যায়না।

কালতামামী – সাবধান বাংলাদেশ! 

কয়েক দশক ধরে পাকিস্তানে প্রতিটি রাজনৈতিক দল তাদের স্বার্থে মৌলবাদীদেরকে যতই প্রশ্রয় দিয়েছে ততই সে ক্ষমতাশালী হয়েছে। যুগ যুগ ধরে নিঃশব্দ কৌশলে তারা শক্তিশালী হয়ে এখন সশব্দে ফেটে পড়েছে। কৌশলগুলোর মধ্যে আছে ক্ষমতায় যাবার চেষ্টা করা, আর্মিসহ সরকারের প্রতিটি প্রতিষ্ঠান ও জাতির মন-মানসকে নিজেদের উগ্র ধর্মতত্ত্বে প্রভাবিত করা, ক্ষমতার সাথে দোস্তী, অসংখ্য মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা যা থেকে তারা নিমেষে অসংখ্য উন্মত্ত কিশোর তরুণকে রাস্তায় নামাতে পারে, সিলেবাস পরিবর্তন- যাতে বাচ্চারা শৈশব থেকেই 'মগজ-ধোওয়া' হয় (এর ওপরে আলাদা করে লিখব) ইত্যাদি। এ পর্যন্ত তারা অনেকটাই সফল। কোনো কোনো ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সেই একই পথে ধাবমান এবং এক যাত্রায় পৃথক ফল হয়না।

প্রতিবাদ করার অধিকার সবারই আছে, কিন্তু প্রতিবাদের ভাষা প্রতিবাদীর চরিত্র প্রমাণ করে।