আমাদের দেশের সবচেয়ে বড় ঘটনা হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধ। যারা এই কথাটা বিশ্বাস করেন না কিংবা কথাটাকে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ মনে করেন না, তাদের এই লেখাটির বাকী অংশ পড়ার কোনও প্রয়োজন নেই।
যারা এখনও পড়ছেন তারাও নিশ্চয়ই একটু অবাক হচ্ছেন। শুধুমাত্র মার্চ মাসে না হয়, ডিসেম্বর মাসে গলা কাঁপিয়ে মুক্তিযুদ্ধের কথা বলার কথা, আমি এই অবেলায় মুক্তিযুদ্ধের প্রসঙ্গ তুলে আনছি কেন? বলা যেতে পারে এটা আমার একটা দুর্বলতা (কিংবা কে জানে, হয়তো এটা আমার একটা শক্তি!) আমি কখনোই মুক্তিযুদ্ধের বিষয়টা আমার মাথা থেকে সরাতে পারি না। মুক্তিযুদ্ধের সময়টুকু একেবারে নিজের চোখে দেখেছি বলে আমার ভেতরে (এবং আমার মতো অন্যদের ভেতরে) এমন একটা মৌলিক পরিবর্তন ঘটে গেছে। যেখান থেকে আমরা কখনোই আগের অবস্থায় ফিরে যেতে পারব না। সেই সময়টুকু ছিল একটা বিস্ময়কর সময়। মানুষ যে কতো ভালো হতে পারে, কতো নিঃস্বার্থ আত্মত্যাগী হতে পারে, সেটা আমরা দেখেছি মুক্তিযুদ্ধের সময়।
আবার ঠিক একইভাবে মানুষ যে কতো খারাপ হতে পারে, কত নৃশংস এবং অমানুষ হতে পারে সেটাও আমরা দেখেছি মুক্তিযুদ্ধের সময়। তাই আমি জেনে হোক, না জেনে হোক, সবসময় সবকিছু বিচার করি আমার ‘মুক্তিযুদ্ধের ফিল্টার’ দিয়ে।
এদেশে যখন কোটাবিরোধী আন্দোলন শুরু হয়েছিল, আমার কাছে তখন সেটা একটা যৌক্তিক আন্দোলন মনে হয়েছিল। আমি তাদের পক্ষে লিখেছি এবং কথা বলেছি। হঠাৎ করে একদিন দেখি এই আন্দোলনকারী একজন নিজের বুকে ‘আমি রাজাকার’ লিখে সগর্বে দাঁড়িয়ে আছে মুহূর্তে আমার মন বিষিয়ে গেল।
আমি শুধু যে এই আন্দোলন নিয়ে সমস্ত উৎসাহ হারিয়ে ফেললাম তা নয়, আমার মনে হতে থাকলো নিশ্চয়ই আমরা কোথাও বড় কোনো ভুল করেছি তা না হলে কেমন করে বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্ম নিজেকে রাজাকার হিসেবে ঘোষণা দিতে পারে? কম বয়সী ছেলেমেয়ে আমার কিছু পাঠক আছে তাদের জন্যে প্রতি বছর বইমেলার আগে আমার কয়েকটা বই লিখতে হয়। এই বছর সবকিছু ফেলে বই মেলার আগেই আমি রাজাকার নিয়ে একটি বই লিখেছি। আমার মনে হয়েছে রাজাকার কী ‘চিজ’ সেটা আমার সবাইকে জানানো উচিৎ, যেন ভবিষ্যতে কেউ এই দেশের মাটিতে দাঁড়িয়ে নিজেকে রাজাকার পরিচয় দেওয়ার নির্বোধ দু:সাহস দেখাতে আগ্রহী না হয়।
কাজেই এই বছর যখন নির্বাচন এগিয়ে আসছে আমি আবার আমার চোখে মুক্তিযুদ্ধের ফিল্টার লাগানো চশমাটি পরে ডানে-বায়ে তাকাতে শুরু করেছি। কী দেখছি সেটি আলোচনা করার জন্য আমার এই লেখা।
নির্বাচনের তিনটা পর্যায়, নির্বাচনের আগে, নির্বাচনের সময় এবং নির্বাচনের পরে। এখন পত্র-পত্রিকায়, সংবাদ-মিডিয়া, টক শো আলোচনা সবকিছুই হচ্ছে নির্বাচনের সময় পর্যায়টি নিয়ে। জোট তৈরি হচ্ছে, ফ্রন্ট তৈরি হচ্ছে, জোট থেকে কেউ বের হয়ে যাচ্ছে, কেউ ঢুকে যাচ্ছে। নূতন নূতন দফা তৈরি হচ্ছে, দাবি তৈরি হচ্ছে ইত্যাদি ইত্যাদি।
আমার কেন জানি মনে হয়, নির্বাচনের সময় কী একেবারে এক কথায় বলে দেওয়া সম্ভব পারলে আদায় করে নাও! শুধু যে বাংলাদেশের জন্যে সেটা সত্যি তা নয়, সারা পৃথিবীর জন্যেই এটা সত্যি, পৃথিবীতে কেউ যুক্তি-তর্ক শুনে ভালো মানুষের মতো কিছু ছেড়ে দেয় না, তার কাছ থেকে আদায় করে নিতে হয়।
ছোট বাচ্চা গলা ফাটিয়ে না চেঁচানো পর্যন্ত মাও তার বাচ্চাকে দুধ খাওয়ায় না! কাজেই নির্বাচনের সময় কী চায়, না চায়- তার দাবি দাওয়া নিয়ে আমাদের কিছু বলার নেই। আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করছি সেই দাবি দাওয়া আদায় করা সম্ভব হয় কীনা সেটা দেখার জন্য।
তবে নির্বাচনের আগের সময় এবং নির্বাচনের পরের সময়টুকু নিয়ে আমার আগ্রহ আছে, কিছু বলারও আছে।
নির্বাচনের আগের সময় নিয়ে আমার খুবই মৌলিক একটা প্রশ্ন, যারা বাংলাদেশ চায় নাই তাদের কী বাংলাদেশের নির্বাচনে অংশ নেওয়ার অধিকার আছে? উদাহরণ জামাতে-ইসলামী। একাত্তরে তারা শুধু পত্রপত্রিকায় বিবৃতি দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেনি, পাকিস্তান সেনাবাহিনীর পদলেহী হয়ে হাতে অস্ত্র নিয়ে রাজাকার বাহিনী আর বদর বাহিনী তৈরি করে মানুষ মেরে গ্রাম জ্বালিয়ে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছিল। স্বাধীনতার পর এই দেশে তাদের রাজনীতি করার অধিকার ছিল না, প্রাণ বাঁচানোর জন্য গর্তে লুকিয়েছিল। তখন এলো পনেরোই অগাস্ট উনিশ শ পঁচাত্তর, বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করেই শেষ হয়ে গেল না, জেলখানায় চার নেতাকে হত্যা করে আওয়ামী লীগকে পুরোপুরি নেতৃত্বহীন করে দেওয়ার চেষ্টা করা হলো।
তখন এই দেশের ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়ংকর ঘটনাটি ঘটল, বাংলাদেশ অ্যাবাউট টার্ন করে পুরোপুরি উল্টোদিকে পাকিস্তানের পথে যাত্রা শুরু করল। নেতৃত্ব দিলেন জেনারেল জিয়াউর রহমান। জেলখানা থেকে যুদ্ধপরাধীরা ছাড়া পেয়ে গেল, তারা রাজনীতি করা শুরু করল। আমাদের এতো স্বপ্নের বাংলাদেশটি জানি কেমন হয়ে গেল। মিলিটারি জেনারেল হয়ে দেশ শাসন করলে ভালো দেখায় না, গণতন্ত্রের ভান করতে হয় তাই জন্ম নিল বিএনপির।
বিএনপির নেতা কর্মী সমর্থক- তারা কি এই রাজনৈতিক দলটির এই জন্ম ইতিহাসের গ্লানি অস্বীকার করতে পারবে? এখানেই কি শেষ? বাংলাদেশ থেকে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস মুছে ফেলা শুরু হলো, টেলিভিশনে রাজাকার বলা যাবে না, পাকিস্তান সেনাবাহিনী বলা যাবে না, হানাদার বাহিনী বলতে হবে, দেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধুকে শুধু টেলিভিশন নয়, সম্ভব হলে পুরো দেশ থেকে নির্বাসন দেয়া হলো। এখানেই শেষ নয়, আমরা দেখলাম একদিন জামাতে ইসলামী এবং বিএনপি এর জোট হয়ে গেল। সিন্দাবাদের সেই বুড়োর মতন জামাতে ইসলামী সেই যে বিএনপি এর ঘাড়ে চেপে বসে তার গলা চিপে ধরেছে সেখান থেকে আর তাদের মুক্তি নেই।
নির্বাচনের আগে এখন নানা রকম জোট হচ্ছে, নানা রকম ফ্রন্ট হচ্ছে, এই সময়ে আমি যদি একেবারে পরিষ্কার বাংলায় শুনতে চাই মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ নিয়ে তাদের বক্তব্য কী- কেউ কি আমার মুখ বন্ধ করতে পারবে? আমি কী বলি তাতে কিছু আসে যায় না। কিন্তু কেউ আমার বিশ্বাস থেকে এক বিন্দু সরাতে পারবে না। যত বড় জোট কিংবা যত বড় ফ্রন্টই হোক না কেন তাদেরকে পরিষ্কার করে সোজা বাংলায় বলতে হবে- এই নির্বাচনে তাদের সাথে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী যুদ্ধাপরাধীর দল জামাতে ইসলামী আছে কী নেই। যতক্ষণ সেটি না হচ্ছে, কারো জন্যে আমার ভেতরে কোনো সম্মানবোধ নেই, কোনো বিশ্বাস নেই।
এবারে আমি নির্বাচনের পরের পর্যায়টি নিয়ে। সবাই কী জানে যতই নির্বাচন এগিয়ে আসছে, এই দেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষজনের বুকের ভেতর এক ধরনের অশান্তি, এক ধরনের দুর্ভাবনা দানা বাঁধতে শুরু করেছে? সবার কী মনে আছে, শেষবার যখন জামাত-বিএনপি নির্বাচনে জয় লাভ করেছিল তখন এই দেশের মাটিতে কী ঘটেছিল? মানুষের ভয়ংকর সাম্প্রদায়িক রূপটি আমি প্রথম দেখেছিলাম উনিশ শ একাত্তর সালে।
জুন-জুলাই মাসে নানা জায়গায় তাড়া খেয়ে আমরা গহীন একটা গ্রামে একজন ধর্মভীরু মানুষের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছি। সেই গহীন গ্রামেও একদিন পাকিস্তান মিলিটারি হানা দিয়েছে, মানুষকে গুলি করে মারছে বাড়ি পুড়িয়ে দিচ্ছে। ঠিক তখন দেখলাম একজন হিন্দু যুবক, তার স্ত্রীর কোলে একটি ছোট শিশু, ভয়ংকর আতঙ্কে প্রাণ বাঁচাতে ছুটে যাচ্ছে। আমার মা তাদের থামালেন, অভয় দিলেন তারপর তাদের একটু টাকা পয়সা দিলেন। পাশেই একজন দাাঁড়িয়ে ছিল, সে অবাক হয়ে আমার মাকে বলল, “এরা হিন্দু, এদেরকে সাহায্য করলে কোনো সওয়াব হবে না! কেন এদের টাকা পয়সা দিচ্ছেন?” আমার মা কী উত্তর দেবেন জানেন না, অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলেন।
বলা যেতে পারে সেই প্রথমবার আমি টের পেলাম মানুষকে ধর্ম দিয়ে ভাগ করে ফেলা যায়। নিজ ধর্মের মানুষের জন্যে গভীর মমতা এবং ভালোবাসা থাকা সম্ভব, আবার অন্য ধর্মের মানুষকে একেবারে মানুষ হিসেবেই বিবেচনা না করা সম্ভব। যখন অন্য ধর্মের মানুষকে মানুষ হিসেবেই বিবেচনা করা হয় না, তখন তাদের প্রতি কী পরিমাণ নৃশংসতা করা সম্ভব সেটা আমরা দেখেছি। নির্বাচনের পর ঠিক সেই ব্যাপারটা ঘটেছিল, ভবিষ্যতে আবার ঘটবে না সেটা কে গ্যারান্টি দিতে পারবে?
আমি সব সময়েই স্বপ্ন দেখি আমাদের দেশের সবাই রাজনীতি করতে মুক্তিযুদ্ধকে বুকে ধারণ করে। সেটি তো আর অযৌক্তিক কোনো কথা নয়। বাংলাদেশটার জন্মই হয়েছিল মুক্তিযুদ্ধ দিয়ে, তাই সেই আদর্শটা নিয়েই যদি রাজনীতি করা হয়, তাহলে নির্বাচন নিয়ে আমাদের ভেতর কোনো দুর্ভাবনা থাকবে না কোনো দুশ্চিন্তা থাকবে না।
কেন জানি মনে হয় ব্যাপারটা হয়তো খুব কঠিন নয়!
কাজী হারুনুর রশিদ
স্যার
মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে আপনি যখন কিছু লিখেন আমার চোখ দিয়ে পানি বের হয়ে যায় ! একজন মুক্তিযোদ্ধা ছাড়া এ ধরনের লেখা সম্ভব না ।
Not applicable
How much does it cost per election in Bangladesh? Isn’t that our money when that election is unfair?
আবু আহাদ শাওন
বাংলাদেশের প্রায় ৩৫% মনুষ্যাকৃতি প্রাণী পাকিস্তানপন্থী।জামায়াত-বিএনপি-সুশীল নানা ফর্মে এরা বাংলাদেশের রাজনীতিতে বিরাজমান। এদেরকে বাদ দিয়ে নির্বাচনের কথা বললে আপনার বাংলাদেশে থাকা কঠিন হয়ে যাবে।
মো মনজুরুল হক
জাফর স্যার, সালাম নিবেন। আপনি আমার ছোট বেলার প্রিয় লেখক। একসময় আপনি আমার হিরো ছিলেন। ছিলেন কারণ এখন নাই। কারণ আমার মতে আপনিও দলকানা। যে নিজে কানা সে কিভাবে পথ দেখাবে?
আপনি আন্দোলনকারী একজন নিজের বুকে ‘আমি রাজাকার’ লেখার ঘটনাটা উল্লেখ করলেন, কিন্তু এর কিছু আগে একজন মাননীয় মন্ত্রীর সংসদে দাঁড়িয়ে আন্দোলনকারীদের “রাজাকারের বাচ্চা” কাণ্ডটি skip করে গেছেন।
স্যার, সমস্যাটা এখানেই। আপনি অনেক কিছু ট্যাকনিক্যালি skip করেন।
ভাল থাকবেন স্যার। আশা করব আপনার দলকানা সমস্যা কাটিয়ে উঠবেন। সত্যিকার অর্থে দেশের মানুষ জন্য ভাল কিছু করবেন।
Wahid
সচেতনমূলক লেখার জন্য ধন্যবাদ। স্বাধীনতা বিরোধীরা যেই দলে থাকবে সেই দলকেই ভোট দেয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। প্রয়োজনে ”না” ভোট দিতে হবে । এইজন্য পছন্দ না হলে ”না” ভোট দেয়ার ব্যবস্থা থাকতে হবে। কারণ আমিও রাজাকারের (আল বদর, আল শামস) ”হৃদয়হীন অত্যাচার“ দেখেছি। এরা বিএনপি এবং আওয়ামীলীগ-এর কাঁধে ভর দিয়ে উঠবে। কাজেই সকলকে সজাগ থাকতে হবে।
সালমান
এই কলামের সার বক্তব্য হচ্ছে- সিল মার ভাই সিল মার নৌকা মার্কায় সিল মার। জাফর ইকবাল , আপনাকে কোন দলীয় মুখ হিসেবে দেখতে খুব দৃষ্টিকটূ লাগে।
সরকার জাবেদ ইকবাল
কামাল সাহেব, আপনিতো সেই ‘বেঙ্গল কিং’-এর মতই উত্তর দিলেন। আপনাদেরকে নিয়ে এই এক সমস্যা; মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিয়ে ভণ্ডামীর সমালোচনা করলেই আপনারা ‘রাজাকার’ ‘জামাত’ ইত্যাদি তকমা দিয়ে বসেন। সবিনয়ে বলছি, কিশোর বয়সে ছিলাম। তাই মুক্তিযুদ্ধে যেতে পারিনি। তবে একবার মুক্তিযোদ্ধাদের সেবাযত্ন (মধ্যরাতে ৫০ জন মুক্তিযোদ্ধার একটি দলকে খাবার পরিবেশন) করার সুযোগ পেয়েছিলাম। সেই স্মৃতি এবং অহঙ্কার নিয়ে এখনও বেঁচে আছি। তাই, এরকম আপত্তিকর ইঙ্গিত করলে কষ্ট পাই।
আবু সালেহ
দেশটিতে এখন তৈল মৈথুন বিশারদে ভরপুর নাটক চলিতেছে। এত তৈলের মাঝে কাহার তৈল বেশি পিছলা বোঝা দায়। এই তৈলের নতুন আবিস্কার চেতনা ফিল্টার। ইহার ভিতর দিয়া বিশ্বজিৎের খুনি চোর ডাকাত সবাই জায়েয হইয়া যায়। এই ফিল্টার দিয়াই আরেক দল চেতনাবাজেরা উনার সহধর্মিণীকে ভরদুপুরে দিগম্বর করিয়াছিলেন।
younusur rahman
দ্বিজাতিতত্ত্বের উপর ভর করে ১৯৪৭ সালের আগে পরে যারা ভারত থেকে বাংলাদেশের অভিবাসী হয়েছে তারা কখনোই মুক্তিযুদ্ধকে বিশ্বাস করবেনা। বিএনপি জামাত এর অনুসারীদের মধ্য থেকে আপনার যদি পরিচিত থাকে তাদের ১০০ জনের তালিকা করে তাদের পারিবারিক ইতিহাস অনুসন্ধান করলে আমার কথার ১০০% সত্যতা পাবেন। এদের মধ্যে আবার যারা সরাসরি রাজনীতি করেনা তারা মুক্তিযুদ্ধের প্রশ্নে প্রচন্ড নিরপেক্ষ। জিনগত বৈশিষ্ট্যর কারণেই পশ্চিমারা আমাদের দেশের বাংগালীদের থেকে মেধাবীও বটে। বিষয়টা ওরা অনুধাবন করে বলেই ওদের কোটা না রাখার দিকে নজর বেশি। যারা পাকিস্তান মনে করে এদেশে আসলো তাদের বড় অংশটা কোনদিন বাংলাদেশকে মেনে নিতে পারবেনা। আপনি যতই ইনিয়ে বানিয়ে বলেননা কেন, কাজ হবে না স্যার। এরা এই দেশের খাবে এই দেশের টাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়বে এই দেশে বড় বড় আমলা হবে এই দেশে ব্যাবসা করে বড়লোকদের কাতারে নাম লিখাবে কিন্ত একটু এদিক ওদিক হলেই “সালারা বাংগালী জাত এরকমই ” বলে গালি দিবে। এগুলি এক ধরণের মোনাফেক। মায়ানমারে রোহিঙ্গারা কয়েকশত বছর ধরে থাকার পরেও সেদেশে তারা নাগরিক হিসেবে মৌলিক অধিকার থেকেও বঞ্চিত ছিল আর আমাদের দেশের এই সকল হিন্দুবিদ্বেষী ৪৭-৭১ অভিবাসীদের সেরকম কোন সমস্যার মুখোমুখি কখনোই হতে হইনি বলেই আজ তারা আমাদের সাথে মিলেমিশে আমাদের মাথার উপর দিনের পর দিন লাঠি ঘোরাচ্ছে আর জিন্দাবাদ জিন্দাবাদ আওয়াজ দিচ্ছে। এরা মুখ দিয়ে আস্তে করে ” জয় বাংলা” বলতেও লজ্জা পায়, (পরিক্ষিত)। অথচ এরা নিজেদের বাংলাদেশী কিংবা কেউ কেউ বাংলাভাষী বাংগালী(আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় থাকলে) বলে থাকে।
সৈয়দ আলি
ড. জাফর ইকবাল ও তদীয় ভ্রাতা ড. হুমায়ুন আহমেদ রাজাকার শব্দটিকে যতো ঘৃণ্য করে তুলতে পেরেছেন, তা’ আর কেউ পারেনি। আমি মুক্তিযুদ্ধ কালের মানুষ। তখন শহরগুলোতে গেস্টাপো স্টাইলের রাজনৈতিক ভাবে প্রশিক্ষিত আলবদর ছিলো সবচেয়ে ভয়াবহ। পক্ষান্তরে আমি যতো রাজাকার দেখেছি তাদের সিংহভাগই দরিদ্র কৃষক পরিবার থেকে আগত। পঞ্চাশ টাকা বেতন, রেশন ও লুটপাটের কিছু ভাগ পেতে এরা প্রধানতঃ রাজাকার বাহিনীতে নাম লিখিয়েছে (মখা আলমগীরের মতো আমলারা এদের সংগঠক ছিলো)। আমি এমনও দেখেছি, পরিবারের এক ভাই রাজাকার, অন্য ভাই মুক্তিযোদ্ধা। রাজাকারদের নৈতিক ও আদর্শগত মান ছিলো শুন্য। আমার অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, রাজাকার ক্যাম্পের সামনে যেয়ে একটি ফাঁকা আওয়াজ করে জয়বাংলা স্লোগান দিলেই বেশিরভাগ রাজাকার আত্মসমর্পন করতো। আমাদের রনকৌশলেও রাজাকারেরা গুরুত্ব পেতোনা। কিন্তু মতাদর্শগতভাবে শক্ত আলবদরের কথা ভিন্ন। তাদের সাথে আমাদের লড়তে হয়েছে। কেউ ভাববেন না যে আমি রাজাকারদের লুটপাট ও অত্যাচারকে আড়াল করছি। কিন্তু আলবদরেরা যে কী ভয়াবহ ছিলো তা’ আমাদের বুদ্ধিজীবি নিধন থেকেই বোঝা যায়।
উপরে বর্ণিত ব্যাখ্যার পরে আমার প্রশ্ন স্বাধীনতার কিছুদিন পরে থেকেই আলবদর ও দালাল শব্দ দুটি যেন মুছে রাজাকার শব্দ দিয়ে প্রতিস্থাপিত হলো। আমি এই প্রতিস্থাপনের পেছনে মতলববাজি খুঁজে পাই।
mohammed khan
very nice article and timely
thank sir
দানিয়েল
স্যার
আমি আপনার সেই খুদে পাঠকদের একজন যে “হাত কাটা রবিন” থেকে আপনার ভক্ত। একটা সময় পর্যন্ত আপনার প্রতিটি কিশোর উপন্যাস ও সায়েন্স ফিকশন আমি কিনতাম। আমি সেগুলো রেখে দিয়েছি আমার ছেলে-মেয়েরা পড়বে বলে। বড় হয়ে যাওয়ার পর একবার বই মেলায় আপনি আমাকে বলেছিলেন ইতিহাস, অর্থনীতি, ধর্ম, সংস্কৃতি এগুলো পড়তে। আমার প্রশ্ন হচ্ছে :
১. বাংলদেশ কি বর্তমানে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা অনুযায়ী পরিচালিত হচ্ছে? এ প্রশ্নের উত্তর যদি হ্যাঁ হয় তবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিয়ে আমার ভিন্নমত আছে।
২. ১৯৭১ সালের ভূ-রাজনৈতিক পরিস্হিতিতে আমাদের রুশ-ভারত বলয়ে যেতে হয়েছিল। চীন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র হয়ে উঠেছিল আমাদের প্রতিপক্ষ। চীনের বিরোধিতায় জাতিসংঘের সদস্যপদ পেতে ১৯৭৪ সাল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়েছিল। এখন চীন ছাড়া আমরা অবকাঠামো উন্নয়নের কথা ভাবতে পারি কি? দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জার্মানি ফ্রান্স, পোলান্ড বা ইংল্যান্ডে যে কীর্তি গড়েছিল তারপরও এখন ইউরোপের নেতৃত্ব কেন জার্মানির হাতে? পররাষ্ট্রনীতির ক্ষেত্রে আদৌ
কোন স্হায়ী শত্রু বা মিত্র আছে কি?
younusur rahman
দ্বিজাতিতত্ত্বের উপর ভর করে ১৯৪৭ সালের আগে পরে যারা ভারত থেকে বাংলাদেশের অভিবাসী হয়েছে তারা কখনোই মুক্তিযুদ্ধকে বিশ্বাস করবেনা। বিএনপি জামাত এর অনুসারীদের মধ্য থেকে আপনার যদি পরিচিত থাকে তাদের ১০০ জনের তালিকা করে তাদের পারিবারিক ইতিহাস অনুসন্ধান করলে আমার কথার ১০০% সত্যতা পাবেন। এদের মধ্যে আবার যারা সরাসরি রাজনীতি করেনা তারা মুক্তিযুদ্ধের প্রশ্নে প্রচন্ড নিরপেক্ষ। জিনগত বৈশিষ্ট্যর কারণেই পশ্চিমারা আমাদের দেশের বাংগালীদের থেকে মেধাবীও বটে। বিষয়টা ওরা অনুধাবন করে বলেই ওদের কোটা না থাকার দিকে নজর বেশি। যারা পাকিস্তান মনে করে এদেশে আসলো তাদের বড় অংশটা কোনদিন বাংলাদেশকে মেনে নিতে পারবেনা। আপনি যতই ইনিয়ে বানিয়ে বলেননা কেন, কাজ হবে না স্যার। এরা এই দেশের খাবে এই দেশের টাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়বে এই দেশে বড় বড় আমলা হবে এই দেশে ব্যাবসা করে বড়লোকদের কাতারে নাম লিখাবে কিন্ত একটু এদিক ওদিক হলেই “সালারা বাংগালী জাত এরকমই ” বলে গালি দিবে। এগুলি এক ধরণের মোনাফেক। মায়ানমারে রোহিঙ্গারা কয়েকশত বছর ধরে থাকার পরেও সেদেশে তারা নাগরিক হিসেবে মৌলিক অধিকার থেকেও বঞ্চিত ছিল আর আমাদের দেশের এই সকল হিন্দুবিদ্বেষী ৪৭-৭১ অভিবাসীদের সেরকম কোন সমস্যার মুখোমুখি কখনোই হতে হইনি বলেই আজ তারা আমাদের সাথে মিলেমিশে আমাদের মাথার উপর দিনের পর দিন লাঠি ঘোরাচ্ছে আর জিন্দাবাদ জিন্দাবাদ আওয়াজ দিচ্ছে। এরা মুখ দিয়ে আস্তে করে ” জয় বাংলা” বলতেও লজ্জা পায়, (পরিক্ষিত)। অথচ এরা নিজেদের বাংলাদেশী কিংবা কেউ কেউ বাংলাভাষী বাংগালী(আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় থাকলে) বলে থাকে।
Imroz Ahmad
কিভাবে যেন আমার মনের কথা বলে ফেলেছেন।
Sarker Javed Iqbal
স্যার,
অত্যন্ত সময়োপযোগী এবং চমৎকার বিশ্লেষণ! আপনাকে ধন্যবাদ। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রতি আপনার গভীর অনুরাগ এবং ভালবাসাকে শ্রদ্ধা জানাই। খুব আশা করেছিলাম মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রশ্নে এবার আপনার সঙ্গে আমার একটা সেতুবন্ধন তৈরি হয়েই যাবে। কিন্তু, আমার আশা পূরণ হলো না। আপনার লেখাটি পড়ে মনে হলো আপনি একটি নিরাপত্তা-চাদরে আবৃত থেকে রিমাণ্ডে থাকা কয়েদীর মতো কথাগুলো বলছেন; ‘যা বলানো হচ্ছে তাই বলছি’। কেন এই ভীতি? কেন এই শঙ্কা? দু’/একটি উদাহরণ দিচ্ছি, –
(১) যারা বাংলাদেশ চায়নি তাদের কথা নামেধামে বলেছেন এবং তাদের বাংলাদেশের রাজনীতিতে ফিরে আসার কথাও বলেছেন। কিন্তু, কে বা কারা তাদেরকে বাংলাদেশের রাজনীতিতে পুনর্বাসন করলো সে’ কথাটি এড়িয়ে গেলেন কেন?
(২) মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন এবং মুক্তিযুদ্ধ-পরবর্তীকালে দু’টি রাজনৈতিক দলের ভূমিকা সম্পর্কে নাম উল্লেখ করেই বলেছেন। কিন্তু, অপর একটি বৃহত্তম দলের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে তাদের ভূমিকা ও বর্তমান আচরণ সম্পর্কে কিছু বললেন না কেন?
(৩) বাংলাদেশে কি বর্তমানে সুস্থ গণতান্ত্রিক চর্চা বিরাজমান আছে? আসন্ন নির্বাচনে (যদি হয়!) দেশের মানুষ কি সত্যিকার অর্থে তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগের সুযোগ পাবে?
(৪) ‘ষোল আনা খাঁটি’ অর্থে বাংলাদেশে কি বর্তমানে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাভিত্তিক কোন রাজনৈতিক দল আছে?
আপনারতো পাঠকের মতামত পড়ার প্রতি তীব্র অনীহা; উত্তর পাওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই। তাই, আশা করছি কোন পাঠক হয়তোবা আমার প্রশ্নগুলোর উত্তর দেবেন।
সৈয়দ আলি
Sarker Javed Iqbal আপনি বহুলপঠিত মানুষ। আপনার স্মরণে থাকবে যে ১৯৭৩ সালের ২২ নভেম্বর সাধারন ক্ষমা ঘোষনার করার কারনে সবুর খানের মতো বা আলবদরের প্রতিষ্ঠাতাদের অন্যতম রেজাউল করিম তালুকদার জেল থেকে মুক্তি পায়। এই সাধারন ক্ষমা নিয়ে এখনকার আওয়ামি এমপি পান্না কায়সার অতি আক্রমনাত্মক ভাষায় তৎকালীন সরকার প্রধানের নিন্দা করেছিলেন।
অতএব যুদ্ধাপরাধী ছেড়ে দেয়ার অভিযোগ এককভাবে জিয়ার উপর চাপিয়ে দিয়ে আপনার স্যার মিথ্যাচরণ করেছেন। জিয়া জামাতিদের প্রতিষ্ঠিত ও রাজনৈতিক অধিকার দিয়েছিলেন এটি সত্য কিন্তু মুক্তিযোদ্ধা ও জনগনের হাত থেকে যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষা করতে তাদেরকে জেলে পাঠানো হয়েছিলো, সেটিও সত্য।
সরকার জাবেদ ইকবাল
ধন্যবাদ জনাব সৈয়দ আলী। এই ঐতিহাসিক সত্যগুলো জেনেও যারা না জানার ভান করে তাদেরকে আমি ‘ভণ্ড’ ছাড়া আর কিছুই ভাবতে পারি না। কাউকে অপরাধী সাব্যস্ত করে নিজের অপরাধের দায়মোচন হয়ে যায় বলে আমি মনে করি না।
kamal
জনাব, আবার ঐ একই প্রশ্ন- ৮ই ফাল্গুন নাকি ২১ শে ফেব্রুয়ারী ? যেমনটা জামাতীরা করে থাকে । ‘ষোল আনা খাঁটি’ অর্থে বাংলাদেশে বর্তমানে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাভিত্তিক কোন রাজনৈতিক দল আছে কী নেই সেটা একটু পরে -তবে ‘ষোল আনা খাঁটি’ মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধী চেতনা ও দলের নাম -জামাত- ই-ইসলাম বাংলাদেশ ।
আশফাকুর রহমান
দারুন মজা।
প্রশ্নটা হচ্ছে – ষোল আনা খাঁটি মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধী চেতনার এক দালালের পরিবারের সাথে ষোল আনা খাঁটি মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী একটি পরিবারের স্বাধীনতা পরবর্তীকালে আত্মীয়তা নতুন কোন ষোল আনা খাঁটি চেতনার জন্ম দিচ্ছে?
manzurul
জাফর স্যারের বৈশিষ্ট হল উনি অত্যন্ত শৈল্পিকভাবে গুরুত্বপূর্ন তথ্য skip করেন।
যেমন স্যার একজন আন্দোলনকারী নিজের বুকে ‘আমি রাজাকার’ লিখেছে উল্লেখ করছেন কিন্তু এর পটভূমি skip করেছেন। উনার তথ্য টা আসলে বাংলা সিনেমার ভাষায় কাটপিস।
আমাদের দূর্ভাগ্য জাফর স্যারের মত একজন উচ্চশিক্ষিত মানুষ বরাবর দলকান। আর সময়মত কালা আর বধিরও বটে।
Alauddin Al Azad
এই লেখার সাথে সম্পূর্ণ একমত। অসাম্প্রদায়িক, ধর্ম নিরপেক্ষ, প্রগতিশীল, বিজ্ঞান ভিত্তিক এক বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন নিয়ে মুক্তিযুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়েছিল এ দেশের কৃষক, শ্রমিক, জনতা। কিন্তু স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি ষড়যন্ত্র করে ৭৫ সালে বংগবন্ধুকে হত্যার মাধ্যমে দেশকে উল্টা দিকে নিয়ে যায। তাই এই অপশক্তি যাতে কোনভাবেই ক্ষমতায় আসতে না পারে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
আবু সাঈদ মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান
উস্কানি মার্কা কথাবাত্রা না বললেই ভালো স্যার। আপনি তো অনেক গুণীজন। উদ্দেশ্য সোজা করুন।
Hasanuzzaman
Great thinking, thanks for this article, Joy Bangla- Joy Bangaandhu. Long Live Muktijuddher Bangladesh.
গাওসেল এ. রাসেল
স্যার, এই হবে অধ্যাপক জাফর ইকবাল কে স্যার বলে আমার শেষ সম্বোধন!
প্রতিনিয়ত উনার দলকানা’র বিষয়টি প্রকট আকার ধারণ করছে। যাই হোক, এই লেখা থেকে দু’টি সিদ্ধান্তে আসা যেতে পারে-
১. “আওয়ামীলীগ ছাড়া অন্য সকল দল অগ্রহণযোগ্য, কারন তারা মুক্তিযুদ্ধের পর বিশেষ পরিস্থিতিতে সৃষ্ট এক একটি দল।” এর দ্বারা প্রকৃতপক্ষে বহুদলীয় গণতন্ত্রকে অস্বীকার করা হচ্ছে।
২. দ্বিতীয়ত, “বাংলাদেশ এর ধর্মপ্রাণ মানুষ মাত্রই হিন্দু বিদ্বেষী। উনি এবং উনার মা’ই একমাত্র মহান।” এক্ষেত্রে আমি বলবো, অবশ্যই এটি ঠিক নয়। এই ধরনের লেখা দিয়ে এই বাংলাদেশের সাধারণ ধর্মপ্রাণ মানুষদের উপর শুধু অবিচারই হয়। আর হ্যা, পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের একশ্রেণীর লোক এই ধরনের লেখা খুব পছন্দ করে উনাকে স্বাগত জানাতে পারেন।
ধন্যবাদ।
Nehal Hasnain
স্যার, ১৯৭৫ সনের ১৫ই আগস্ট ধানমন্ডির ৩২ নম্বর বাসায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব এবং তাঁর পরিবারের সকলকে হত্যার পর সবচেয়ে বেশি লাভবান হয়েছিলেন শুরুতে খন্দকার মুশতাক আহমেদ যার মন্ত্রীসভায় আওয়ামী লীগের বহু নেতা যোগদান করেছিলেন। সেগুলো নিয়ে আপনার বক্তব্য স্পষ্ট করুন। শুধু মেজর জিয়াউর রহমানের দোষ দিয়ে লাভ হবে না। এখানে সকলেরই দায়বদ্ধতা আছে এমনকি শেখ মুজিবেরও যিনি শাসক হিসাবে বহু ক্ষেত্রে শক্তভাবে পরিস্থিতি সামাল দিতে পারেননি।
তানভির
সত্যি কথাগুলো বলবার জন্যে ধন্যবাদ, স্যার। পঁচাত্তরের পরের তিন যুগ ধরে বাংলাদেশের জামাতিকরণ করা হয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যের আর্থিক মদদে বিএনপি-জামাত ও জেনারেলদের নেতৃত্বে শিক্ষার বিকাশ বন্ধ রেখে মাদ্রাসা বানানো হয়েছে, দেশজুড়ে সাঈদী ও অন্যান্য বদমায়েশদের ওয়াজ চালিয়ে ওয়াহাবিবাদ ছড়ানো হয়েছে। এখন বাঙালিকে ভোটের স্বাধীনতা দিলে উদ্বাহু হয়ে খালেদা জিয়ার মতো মূর্খ জামাতি নেতাকে নির্বাচিত করবে। পৌরসভা নির্বাচনগুলোতে তার নমুনা দেখেছি। ভোটের মাঠ সমান করতে হলে আরও অন্তত এক প্রজন্ম ধরে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নির্বাচন হতে হবে।
alam
আপনার মত প্রথিতযশা লেখকের কাছ থেকে এমন ‘নচ্’ ফিল্টারের ব্যবহার খুব পক্ষপাতদুষ্ট মনে হয়! মুক্তিযুদ্ধের চেতনাগুলো দিয়ে বানানো একটি ‘ব্যান্ডস্টপ’ ফিল্টারের সাহায্যে স্বাধীনতার পর থেকে আজ পর্যন্ত যারা দেশ শাসন করেছে তারা কতটা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বড় বড় বুলি ছাড়া আসলেই সেটা ধারণ করেছে এবং সেই অনুযায়ী দেশ পরিচালনা করেছে তার একটা বিশ্লেষণ দেখার অপেক্ষায় রইলাম! ভাল থাকবেন।
Fazlul Haq
জামাতের (পাকিস্তানের) মস্তিষ্ক থেকে বি এন পির জন্ম। কথাটা স্মরণে রাখলে বি এন পি, জামাত জোটের রাজনীতি পরিষ্কার বোঝা যাবে।
নুর ইসলাম রফিক
৭৫ এর মীর জাফর মোশতাক আপনার লেখায় স্থায় পায়নি দেখে আমি হতবাক।
আপনার যে লেখায় বঙ্গবন্ধুর নির্মম ও পরিকল্পিত হত্যার স্থান পায় সেখানে ৭৫ এর মীর জাফর স্থান পায়না এটা মেনে নিতে পারিনা।
মাসুদ আনোয়ার
বেশ তো বললেন, স্যার। আপনার যে অনুভূতি মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে সে একই অনুভূতি আমারও। মুক্তিযুদ্ধের ওপর আমি কোনো কিছুকেই স্থান দিতে পারি না।
কিন্তু সমস্যা হলো, আপনার এ সাদা কথাগুলো কাল আর সাদা থাকবে না। একদল লোক নেমে যাবে নানা কূটচালের মধ্য দিয়ে আপনাকে পেঁচিয়ে ফেলতে। দেখবেন কত রকম কুযুক্তি দিয়ে যে বিশ্লেষণ করা হবে আপনার ছোট্ট, সরল সহজ লেখাটিকে।
ভালো থাকবেন, স্যার। এদের কথায় আমরা কান দিই না। এটাও একধরনের শক্তি।