প্রতিক্রিয়া: সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট

মো. আহ্‌কাম উল্লাহ্
Published : 18 Oct 2018, 12:44 PM
Updated : 18 Oct 2018, 12:44 PM

১৪ অক্টোবর ২০১৮ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম-এর মতামত বিভাগে 'প্রসঙ্গ সম্মিলিত সাংস্কৃতি জোট' শিরোনামে জনৈক আনিসুর রহমানের একটি দীর্ঘ লেখা প্রকাশিত হয়েছে।

সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের ব্যাপারে আগ্রহী যেকোনও ব্যক্তি জোটের কর্মকাণ্ড নিয়ে আলোচনা করতে পারেন, মতামত রাখতে পারেন এবং বস্তুনিষ্ঠ সমালোচনাও করতে পারেন- যাতে জোট ঋদ্ধ হয়। কিন্তু উক্ত লেখক উদ্দেশ্যপূর্ণভাবে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট এবং এর বিভিন্ন সময়ের নেতৃত্ব সম্পর্কে মিথ্যা, বানোয়াট মনগড়া বক্তব্য হাজির করে পাঠকদের বিভ্রান্ত করতে চেয়েছেন।

প্রথমে ভেবেছিলাম এ ধরনের লেখা সম্পর্কে কোনও প্রতিক্রিয়া না দেখানোই ভালো। কারণ সমাজে হীন মানসিকতার অনেক লোক রয়েছে যাদের কাজ হলো অন্যের চরিত্র হনন এবং ছিদ্র অন্বেষণ করে বেড়ানো। তারপরও সংস্কৃতিকর্মীদের অনুরোধে দু' একটি কথা উল্লেখ করতে চাই:

১. আনিসুর রহমান লিখেছেন- 'অধ্যাপক কবীর চৌধুরী বলেছিলেন, তার মরদেহ যাতে শহীদ মিনারে নেয়া না হয়।'

প্রকৃত সত্য হলো জাতীয় অধ্যাপক কবীর চৌধুরী বলেছিলেন, তাকে দ্রুত দাফন করার স্বার্থে তার মরদেহ যাতে শহীদ মিনার কিংবা বাংলা একাডেমিতে নেয়া না হয়। কেউ চাইলে পরিবারের সদস্যদের কাছে এর সত্যতা যাচাই করতে পারেন। নাম উল্লেখ না করে একজন বয়োজ্যেষ্ঠ চিত্রশিল্পী অধ্যাপকের উদ্ধৃতি দিয়ে আনিসুর রহমান প্রকৃত অর্থে নিজের মতামতে শহীদ মিনারে বরেণ্য ব্যক্তিদের শ্রদ্ধা নিবেদন করাকে যেভাবে উপহাস, অসম্মান করেছেন- তা বিবেকসম্পন্ন কোনো মানুষের পক্ষে সম্ভব নয়।

সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের স্বেচ্ছাপ্রণোদিত এ ধরনের মানবিক কাজকে আনিসুর রহমান 'ঠিকাদারি ও বিজ্ঞাপনী ব্যবসা' হিসেবে অভিহিত করে ছোট মনের পরিচয় দিয়েছেন। এ মহৎ কর্ম কোনও ধরনের ব্যবসা কিনা প্রয়াত ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যরাই তা ভালো বলতে পারবেন। ধর্ম, বর্ণ, নির্বিশেষে বরেণ্য ব্যক্তিদের শ্রদ্ধা নিবেদনের এ প্রক্রিয়াটিকে তিনি বলেছেন- "এটা অনেকটা আমাদের ঢাকা শহরের বড় বড় মানুষদের জন্য এক ধরনের আঞ্জুমানে মফিদুল ইসলাম।" আনিসুর সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটকে হেয় করতে যেয়ে প্রয়াত বরেণ্য ব্যক্তিদের যেভাবে অপমান করেছেন তা ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ।

২. শিল্প-সংস্কৃতির ক্ষেত্রে জোটের করণীয় সম্পর্কে জোট সচেতন। জাতীয় বাজেটের ন্যূনতম এক শতাংশ বরাদ্দসহ নানা ইস্যুতে জোট দেশব্যাপী বহু কর্মসূচি পালন করেছে এবং তা অব্যাহত আছে। কুৎসা রটনা করে মানুষকে বিভ্রান্ত করা ছাড়া সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট সম্পর্কে আনিসুরের আর কোনও ধারণা আছে বলে মনে হয়নি।

৩. সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের নেতৃত্ব কীভাবে গঠিত হবে, কারা থাকবেন এবং আদৌ এ-সংগঠনের প্রয়োজন আছে কি না তা নিশ্চয়ই আনিসুর ঠিক করে দেবেন না। সংস্কৃতিকর্মী এবং শুভাকাঙ্ক্ষীরাই এ-বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। এ সম্পর্কে আনিসুরের বক্তব্য ধৃষ্টতাপূর্ণ।