জাতীয়তাবাদ: বাঙালি না বাংলাদেশী?

শামস্ রহমানশামস্ রহমান
Published : 29 July 2018, 03:47 PM
Updated : 29 July 2018, 03:47 PM

গত মার্চ মাসে শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জাফর ইকবালের জীবনের উপর হামলা হয় হামলার দুদিন পর তার স্ত্রী ইয়াসমিন হক আসেন এক সাংবাদিক সম্মেলনে সেখানে তিনি বাংলাদেশ যে বাঙালি জাতীয়তাবাদের ভিত্তিতে স্বাধীন হয়েছে তা স্মরণ করিয়ে দিয়ে আজকের ছাত্র সমাজ এবং নতুন প্রজন্মকে তা বোঝানোর উপর গুরুত্ব দেন স্বাধীনতার চার বছরের মাথায় বাঙালি জাতীয়তাবাদের বিপরীতে নতুন এক জাতীয়তাবাদের ধারণাদেওয়া হয়, যা বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ হিসেবে পরিচিত সেই থেকে জাতীয়তাবাদের প্রশ্নে দেশ আজও দ্বিধাবিভক্ত কেউ বাঙালি, আবার কেউ বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসী কিন্তু কেন? বিষয়ে একটি যুক্তিপূর্ণ ব্যাখ্যা প্রদানের তাগিদেই লেখা ।

আমরা রাজনৈতিক স্বাধীনতা পেয়েছি তা আজ প্রায় সাতচল্লিশ বছর। যে জাতীয়তাবোধে দেশ স্বাধীন হলো, তা আজও বিতর্কিত। এ প্রশ্নে দেশ দ্বিধাবিভক্ত। কেউ বাঙালি জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসী, কেউ আবার বিশ্বাসী বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদে। বিশ্বাসের ভিত্তি কি যুক্তি না আবেগ? মানব সভ্যতার শিখরে দাঁড়িয়ে, এ প্রশ্নের জবাবে যুক্তি ও প্রাসঙ্গিকতা প্রাধান্য পাবে, তা নিশ্চয়ই প্রত্যাশিত!

পঁচাত্তরের পর জাতীয়তাবাদের প্রশ্নে দেশ দ্বিধাবিভক্ত। কেউ বাঙালি, আবার কেউ বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের দাবিদার। আসলে আমি, আপনি, আমরা জাতীয়তাবাদের প্রশ্নে কী? বাঙালি না বাংলাদেশী? এ দুয়ের মাঝে কী কোনও দ্বন্দ্ব আছে? বিশ্লেষণের শুরুতে একটি জনগোষ্ঠির মাঝে জাতীয়তার জন্ম ও তার প্রসার কীভাবে ঘটে তা উপলব্ধির বিশেষ প্রয়োজন।

মানুষে মানুষে মিলে হয় সমাজ। ভাষায় ঘটে আদান-প্রদান। গড়ে উঠে সম্পর্ক। সম্পর্ককে ঘিরে শুরু হয় বসবাস। আর বসবাসের পরিবেশ ও পারিপার্শ্বিকতা যেমন জল, মাটি, বায়ু, এক কথায় জলবায়ুর ছোঁয়ায় রূপ নেয় গায়ের রঙ, দেহের গড়ন, আহার-নিদ্রার অভ্যাস এবং পোশাক-আশাকের ধাঁচ। এসবের প্রভাবে জন্ম নেয় আত্নপ্রকাশের ধরন। যেমন, নৃত্যের তাল ও সঙ্গীতের সুর। আর এসব কিছু মিলেই হয় সংস্কৃতি – যার নিত্যদিনের প্রকাশ আর অভিজ্ঞতার আলোকে জন্ম নেয় একটি জাতির জাতিসত্ত্বা। রাতারাতি গড়ে উঠে না এ জাতিসত্ত্বা। এটা বিবর্তনেরই অংশ। জাতীয়তাবাদ সম্পর্কে বলতে গিয়ে স্টিভেন অ্যালোস এবং ক্যাথরিন জোন্স তাদের গ্রন্থ অস্ট্রেলিয়ান ন্যাশনালিজম: আ ডকুমেন্টরি হিস্ট্রি (১৯৯১) তে বলেছেন – 'To understand nationalism of a nation is to begin to understand it's society and history'।

বাংলাদেশের মানুষের জাতিসত্ত্বা বোঝার জন্য প্রয়োজন এ দেশের মানুষ, সমাজ ও ইতিহাস জানার। শত শত বছর আগে মানুষ বসতি গড়ে, এখানে, আজ যাকে আমরা বলি বাংলাদেশ। বাংলা ভাষায় আদান-প্রদানের মাঝে গড়ে উঠে পারষ্পারিক সম্পর্ক। খাল-বিলে দেশ, বৃষ্টিতে ভেজা, রোদে পোড়া শ্যমলা বর্ণের মানুষগুলো তাই মাছে ভাতে আয়েশি। পোশাক-আশাকে জলবায়ুর প্রভাব সর্বত্র। সুরের রাগ ও নৃত্যের ঝংকারে মেলে এতদ অঞ্চলের প্রকৃতির ছবি। এসবই আমাদের জাতি-সত্ত্বার উপাদান। যুগ যুগ ধরে এসব মিলেই গড়ে উঠেছে বাংলা জাতিসত্ত্বা বা বাঙালি জাতীয়তাবাদের ভিত্তি। যেহেতু, জাতিসত্ত্বার অন্যান্য উপাদানের মাঝে সমন্বয় ঘটায় ভাষা, তাই  জাতীয়তাবাদ গঠনে ভাষার প্রভাব প্রবল। এ বিষয়টি চমৎকারভাবে ফুটে উঠেছে প্রতুলের গানে –

"আমি বাংলায় গান গাই,

আমি বাংলার গান গাই;

আমি আমার আমিকে চিরদিন এই বাংলায় খুঁজে পাই।

আমি বাংলায় দেখি স্বপ্ন

আমি বাংলায় বাঁধি সুর,

আমি এই বাংলার মায়াভরা পথে হেঁটেছি এতটা দূর;

…"

এখানে ভাষা, দেশ, প্রকৃতি, আত্নপরিচয় এবং প্রাণের আবেগ 'বাংলা' শব্দটির মাঝে মিলেমিশে একাকার। তাইতো জাতিসত্ত্বায় আমরা বাঙালি।

তাহলে বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের উদ্ভব হলো কোথা থেকে? ১৯৭৫ পর যেভাবে 'বাংলাদেশ বেতার' নাম রাতারাতি 'রেডিও বাংলাদেশ' হয়ে যায়, তেমনি বাঙালি জাতীয়তাবাদের বদলে উদয় হয় বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ। যারা এ কাজটি করেন, সেদিন হয়তো তাদের সঠিক উপলব্ধির অভাব ছিল। 'বাংলাদেশ বেতার' বা 'রেডিও বাংলাদেশ' একটি নাম, একটি প্রতিষ্ঠান – একটি জড় বস্তু। অন্যদিকে, জাতিবোধ একটি সত্ত্বা যা জীবন্ত, যা রূপান্তরে সময় নেয় শত শত বছর।

জাতীয়তাবাদের প্রশ্নে আমরা কী, তা সঠিকভাবে বোঝার জন্য আরও ব্যখ্যার প্রয়োজন। এজন্য ধার নেব দুটি মৌলিক শব্দের। তার একটি হচ্ছে – Nation – মানে, 'জাতি'। তা থেকে Nationalism – যার আভিধানিক অর্থ 'জাতীয়তাবাদ'। পাশাপাশি আরও একটি শব্দ – Citizen – মানে, 'নাগরিক'। তা থেকে Citizenship – যার অর্থ- 'নাগরিকত্ব'। আর এ দুটি শব্দের মাঝেই মিলবে ৭৫ এর পর কৃত্রিমভাবে সৃষ্ট সঙ্কট, বাঙালি না বাংলাদেশী, তার সমাধান।

Citizenship অর্থাৎ নাগরিকত্ব একটি contract বা চুক্তি, যা আইনে বাঁধা। চুক্তি যখন ভেঙ্গে পড়ে, তখন আইনগত সম্পর্কে ছেদ ধরে। অন্যদিকে, জাতীয়তা – জলবায়ু, ভাষা, আশা-আকাঙ্ক্ষা ও ঐতিহ্যে গড়া একটি সত্ত্বা এবং এ সত্ত্বার অনুভুতি – যার রূপান্তর আছে, ক্ষয় নেই। এককথায়, একটি চুক্তিতে আবদ্ধ, অন্যটি প্রকৃতি-কণায় বাঁধা।

মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে গোলাম আজমের বাংলাদেশের নাগরিত্ব চলে যায় বটে। তাই বলে সে যে বাঙালি, তা অস্বীকার করার উপায় আছে কি? পাকিস্তানি নাগিরকত্ব গ্রহণ করেছিল ঠিকই, কিন্তু পাঞ্জাবি হতে পারেনি নিশ্চয়!

বাংলাদেশ জাতি হিসেবে একটি Homogeneous, অর্থাৎ সমরূপে গঠিত একটি রাষ্ট্র।  শতকরা ৯৯ ভাগের অধিক অধিবাসী বাঙালি জাতিসত্ত্বাভুক্ত, যা শত শত বছরের সৃষ্টি। তাই আমাদের জাতীয়তাবাদ বাঙালি। যেমন, ইংরেজ, রুশ, বা স্প্যানিশ। বাংলাদেশের পাসপোর্টে 'জাতীয় মর্যাদার' বিপরীতে ছাপা হয় 'বাংলাদেশী'। এটা কী যুক্তি সঙ্গত? এ ভুল নিরসনে প্রয়োজন দুটি শব্দের ব্যবহার।

এক, জাতীয়তা (বা জাতীয় মর্যাদা) – বাঙালি। দুই, নাগরিকত্ব – বাংলাদেশী। বাঙালি আর বাংলাদেশীতে কোনও দ্বন্দ্ব নেই। দ্বন্দ্ব শুধু এ শব্দদ্বয়ের সঠিক প্রয়োগে। একজন ইংরেজকে স্কটিশ বলা যায় না, অথবা, একজন স্কটিশকে ইংরেজ। তবে তারা উভয়েই ব্রিটিশ নাগরিক, এর মাঝে ভুল বোঝাবুঝির কোনও অবকাশ নেই।

এবার নিজের কথা বলি। ১৯৯৫ এ অস্ট্রেলিয়ার পাসপোর্ট হাতে পেয়ে নেড়েচেড়ে দেখি। Nationality এর পাশে 'অস্ট্রেলিয়ান' শব্দটি দেখে আঁতকে উঠি। কি আশ্চর্য! রাতারাতি জাতিসত্ত্বা পরিবর্তিত হয়ে গেলাম 'অস্ট্রেলিয়ান'। এ কীভাবে সম্ভব? আমি আইনের ভিত্তিতে এবং চুক্তি সাপেক্ষে অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক – তাতে কোনও সন্দেহ নেই। তবে জাতীয়তায় 'অস্ট্রেলিয়ান', সে প্রশ্নে দ্বন্দ্ব আছে।

বহুজাতি-কেন্দ্রিক দেশ যেমন, অস্ট্রেলিয়া, আমেরিকার জন্য এটা একটি বড় ধরনের সমস্যা। পল কিটিং এবং জন কেনেডির কথাই ধরুন। কিটিং-কেনেডি যথাক্রমে অস্ট্রেলিয়া এবং আমেরিকার সরকার প্রধান ছিলেন। দুটি ভিন্ন দেশের নাগরিক হলেও, জাতিগতভাবে উভয়ই আইরিশ।

বহু জাতি-কেন্দ্রিক দেশের কোনও একটি জাতির প্রাধান্যের কারণে রাষ্ট্রীয় কাঠামো ভেঙ্গে পড়ার সম্ভবনা থাকে। তাই ভিন্ন ভিন্ন ধর্ম, বর্ণ ও ভাষাভাষী জনগোষ্ঠিকে সংবদ্ধ করার প্রয়াসে তারা সৃষ্টি করে 'রাষ্ট্র-ভিত্তিক' জাতীয়তাবাদ। এটা একটি রাজনৈতিক পদক্ষেপ।

এখানে জাতীয় মর্যাদা (Nationality) ও নাগরিকত্বের মাঝে কোনও তফাৎ নেই। যেমন, আমরা অস্ট্রেলিয়াতে। জাতীয়তা ও নাগরিকত্ব- উভয় ক্ষেত্রেই আমরা অস্ট্রেলিয়ান। যদি কখনো অস্ট্রেলিয়ার নাগরিকত্ব চলে যায়, তখন আমার অস্ট্রেলিয়ান জাতিসত্ত্বার কী হবে? আমাকে ফিরে যেতে হবে বাঙালি রূপে। আর এখানেই এই পদ্ধতির দুর্বলতা। এ পদ্ধতিতে দেশের প্রতি Loyalty  বা আনুগত্যের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয় দারুণভাবে। তখন Nationality আর Loyalty এর মাঝের বৈসাদৃশ্য খুঁজে পাওয়া দুষ্কর হয়ে দাঁড়ায়। তারতম্যটা এমন- 'রাষ্ট্র-ভিত্তিক' জাতীয়তাবাদের ক্ষেত্রে 'আনুগত্য'কে কাজে লাগায় জাতিবোধ বা জাতিসত্ত্বা গঠনে; আর 'জাতি-ভিত্তিক' জাতীয়তাবাদে Loyalty বা আনুগত্যকে ব্যবহার করে জাতীয়তা রক্ষায়।

অস্ট্রেলিয়ায় ষাট বছরের বেশি সময় বসবাসের পরও, অস্ট্রেলিয়া-ইতালির মাঝের বিশ্বকাপ ফুটবল প্রতিযোগিতায়, অভিবাসী ইতালিয়ানদের সমর্থন যখন ইতালিয়ানদের পক্ষে যায়, তখন তাদের অস্ট্রেলিয়ার প্রতি loyalty সম্পর্কে কী ধারণা দেয়? তারা এ দেশের নাগরিক, সত্য। জাতীয় মর্যাদায় তারা অস্ট্রেলিয়ান, এটাও সত্য। তবে অস্ট্রেলিয়ান জাতীয়তাবাদের প্রশ্নে দৃঢ়তার অভাব।

এ অনুভূতি শুধু মূল অভিবাসিদের মাঝেই সীমাবদ্ধ নয়, পরবর্তী প্রজন্মও এতে সংক্রামিত। বিশ্বকাপ ফুটবলই এর প্রমাণ। সেটাই হয়তো স্বাভাবিক। সত্যিকার অর্থে অস্ট্রেলিয়ান জাতীয়তাবাদে বিশ্বাস তখনই আসবে, যখন এদেশের প্রকৃতি যেমন আয়ার্স রক বা উলুরু অথবা সমুদ্র-সৈকতে বিশ্বাসী হয়ে উঠবে; ইতিহাস (যেমন- Gallipoli, ANZAC বা The Man from Snowy River) এ আস্থা আসবে; যখন 'অ্যাডভান্স অস্ট্রেলিয়া ফেয়ার' (জাতীয় সঙ্গীত) হৃদয় থেকে বেজে উঠবে। এরজন্য প্রয়োজন দীর্ঘ সময়ের।

'রাষ্ট্র-ভিত্তিক' জাতিসত্ত্বা সৃষ্টির পেছনে অনেক সময় কোনও একটি বিশেষ বিশ্বাসের আশ্রয় নেওয়া হয়, যা মৌলিক জাতিসত্ত্বার উর্দ্ধে। যেমন, ধর্ম। অথবা রাষ্ট্র পরিচালনার ধারা। যেমন, মার্ক্সবাদ বা সমাজতন্ত্র। এ ধারা কোনও বিশেষ জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসী নয়, বিশ্বাসী আন্তর্জাতিকতাবাদে। যেমন, আন্তর্জাতিক ভ্রাতৃত্ববোধ। এ প্রক্রিয়ায় জনগণকে সঙ্গবদ্ধ করার চেষ্টা চলে প্রাক্তন সোভিয়েত ইউনিয়নে এবং ইয়াগোস্লোভিয়ায়। সাত-দশকেও তারা পারেনি একটি জাতিবোধ বা জাতীয়তাবাদের জন্ম দিতে। তাই সমাজতান্ত্রিক ধারা ভেঙ্গে পড়ার সাথে সাথে জনগণ পুনরায় মৌলিক জাতিসত্ত্বায় ফিরে যায়। যেমন, রুশ, বেলারুশ প্রাক্তন সোভিয়ত ইউনিয়নে; ক্রোয়েশিয়ান, বসনিয়ান প্রাক্তন ইয়াগোস্লোভিয়ায়। পাকিস্তান একটি বহু জাতি-কেন্দ্রিক দেশ। গত সত্তর বছরের দুর্বল পাকিস্তানি-জাতীয়তাবাদ ধরে রাখার জন্য প্রতিনিয়ত নিতে হচ্ছে ধর্মের আশ্রয়।

জাতিগতভাবে বাংলাদেশ একটি homogeneous রাষ্ট্র। এদেশের মানুষের জন্য নতুন করে জাতীয়তা বোধের জন্ম দেওয়ার চেষ্টা একটি অর্থহীন পদক্ষেপ। বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের পক্ষে অনেক সময় পশ্চিমবঙ্গের বাঙালিদের থেকে আমাদের থেকে আলাদা করে দেখানোর যুক্তি দাঁড় করা হয়। এটা আমাদের নয়, পশ্চিমবঙ্গের বাঙালিদের সমস্যা। পৃথক করে দেখানোর প্রয়োজন তাদের, আমাদের নয়। সমস্যা বহুজাতি-কেন্দ্রিক রাষ্ট্র ভারতের বলেই পশ্চিমবঙ্গের বাঙালি জাতীয় মর্যাদা 'ভারতীয়', বাঙালি নয়।

১৯৭৫'এর পর বাঙালি থেকে বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের উত্তরণের কায়দাটা কৃত্রিম। এর কোনও যুক্তিসঙ্গত কারণ নেই। তাই আমরা নাগরিত্বের প্রশ্নে বাংলাদেশী হলেও, জাতীয়তাবাদের প্রশ্নে নিঃসন্দেহে বাঙালি।।