উন্নয়শীল দেশের পথে উত্তরণের চ্যালেঞ্জ: লাভের চেয়ে ক্ষতির ওজন কি বেশি হবে?

চিররঞ্জন সরকারচিররঞ্জন সরকার
Published : 11 July 2018, 02:14 PM
Updated : 11 July 2018, 02:14 PM

চলতি বছর আমাদের দেশে জাতীয় নির্বাচনের বছর। রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক দিক দিয়ে আমাদের জন্য এই বছরটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। একটি গ্রহণযোগ্য অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠান এবং উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে অ্রগযাত্রার কালে লাগসই নীতি ও কর্মসূচি গ্রহণ করার উপর নির্ভর করছে আমাদের ভবিষ্যৎ উন্নয়নের গতি-প্রকৃতি। এ ব্যাপারে এখনই চিন্তাভাবনা করা জরুরি। কেননা নির্বাচনকে সামনে রেখে গণতান্ত্রিক উত্তরণের সঙ্গে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

গত কয়েক বছরে বিশ্ব অর্থনীতির কারণে দেশের অর্থনীতি সুবিধাজনক অবস্থানে ছিল। বিশেষ করে জ্বালানি তেল, চাল ও সারের দাম ছিল নিম্নমুখী। এতে আমদানি ব্যয় এবং মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে ছিল। কিন্তু এ পরিস্থিতির পরিবর্তন হচ্ছে। ইতিমধ্যে দেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতায় কিছুটা নড়বড়ে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।বিশেষ করে বেসরকারি খাতে বিনিয়োগে স্থবিরতা, কর্মসংস্থানের অভাব, ব্যাংকিং খাতে সুশাসনের ঘাটতি এবং বিদেশে টাকা পাচার বাড়ছে। যা অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনায় ঝুঁকি তৈরি করছে।

তবে এ মুহূর্তে আমাদের সামনে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়শীল দেশের পথে উত্তরণের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলাটাই প্রধান কর্তব্য হওয়া উচিত। উল্লেখ্য, জাতিসংঘ তার সদস্য দেশগুলোকে স্বল্পোন্নত (এলডিসি), উন্নয়নশীল এবং উন্নত- এ তিন শ্রেণিতে বিভক্ত করে। বাংলাদেশ ১৯৭৫ সাল থেকে এলডিসি শ্রেণিভুক্ত।এলডিসিভুক্ত দেশ হওয়ার সুবাদে বিশেষ আর্থিক সুবিধা ব্যবহার করে বাংলাদেশ গত গত চার দশকে বহু অবকাঠামো ও আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন প্রকল্পের বাস্তবায়ন ঘটিয়ে উপকৃত হয়েছে। পাশাপাশি আঞ্চলিক বাণিজ্য চুক্তিগুলির অগ্রাধিকারমূলক সুযোগ ব্যবহার করে নির্দিষ্ট রপ্তানি বাজারে প্রবেশাধিকার পেয়েছে। এলডিসি থেকে এর উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণ ঘটলে অনেক সুবিধা থেকে বাংলাদেশ বঞ্চিত হবে। যাইহোক, আমরা বিশ্বাস করি যে এই মাইলফলক বাংলাদেশের উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় উদ্দীপনা হিসাবে কাজ করবে, বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করবে এবং অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডকে সমৃদ্ধ করবে।

উন্নয়ন কর্মসূচির উপর ভিত্তি করে জাতিসংঘ দেশগুলিকে শ্রেণিবদ্ধ করেছে।তিনটি সূচক ব্যবহার করে এই উন্নয়ন পরিমাপ করা হয়েছে: মাথাপিছু মোট জাতীয় আয় (জিএনআই), মানব সম্পদ সূচক (এইচএআই) এবং একটি অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতা সূচক (ইভিআই)। স্বল্পোন্নত থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের জন্য প্রতিটি দেশের এই সূচকগুলির প্রান্তিক মানের হতে হয়: মাথাপিছু আয় কমপক্ষে ১২৩০ মার্কিন ডলার, মানবসম্পদ সূচকে ৬৬ এবং অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতা সূচকে স্কোর ৩২ বা তার কম। ২০১৮ সালের জানুয়ারি মাসে সরকারি তথ্য মতে, মাথাপিছু আয় দাঁড়িয়েছে ১২৭১ ডলার। মানবসম্পদ সূচকে বাংলাদেশের স্কোর দাঁড়িয়েছে ৭২ দশমিক ৯ এবং অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতা সূচকে স্কোর ২৪.৮ উন্নীত হয়েছে।

জাতিসংঘের উন্নয়ন নীতি কমিটির পক্ষ থেকে প্রতি তিন বছর পর পর এলডিসির অবস্থা পর্যালোচনা করা হয় এবং সর্বশেষ ১৭ মার্চ এই পর্যালোচনা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই পর্যালোচনা বৈঠকে, কমিটি নিশ্চিত করেছে যে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশে উত্তীর্ণ হওয়ার পথে প্রাথমিক মানদণ্ড পূরণ করেছে। নিয়ম অনুযায়ী একটি দেশকে এলডিসি উন্নয়নশীল দেশে উত্তীর্ণ হওয়ার জন্য দুইবার তিন বছর অন্তর অনুষ্ঠিত পর্যালোচনায় তিনটি মানদণ্ডেই কাঙ্ক্ষিত অগ্রগতি দেখাতে হবে। সেই হিসেবে কমিটি ২০২১ সালে আবার বাংলাদেশের এর অগ্রগতি পর্যালোচনা করবে। এর পরে আরও তিন বছর পর্যবেক্ষণ ও পর্যালোচনার পর ২০২৪ সালে বাংলাদেশকে জাতিসংঘের সংজ্ঞা অনুযায়ী একটি উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেওয়া হবে। উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে সম্ভাব্য রূপান্তরে বাংলাদেশকে অনেক চ্যালেঞ্জেরই সম্মুখীন হতে হবে। এর মধ্যে প্রধান হচ্ছে স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে ভোগ করা বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সাহায্য-সহযোগিতা প্রত্যাহার। আছে বাণিজ্য অগ্রাধিকার সুবিধা, উন্নয়ন অর্থায়ন এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে কারিগরি সহায়তাও।

বাণিজ্য সুবিধা হ্রাস

উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশের স্বীকৃতির কারণে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হবে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে। বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) চুক্তির অধীনে তাদের বাধ্যবাধকতার জন্য স্বল্পোন্নত দেশগুলোর জন্য বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করে। উদাহরণস্বরূপ, বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার মেধাস্বত্ত্ব অধিকার (ইন্টেলেকচুয়াল প্রপার্টি রাইটস)-এর সঙ্গে সম্পর্কিত ঔষধজাত (ফার্মাসিউটিক্যাল) পণ্যের নির্দিষ্ট কিছু বিশেষ শর্তের দায় থেকে স্বল্পোন্নত দেশগুলিকে ছাড় প্রদান করা হয়, যার ফলে সস্তায় উৎপাদন সুবিধা পাওয়া যায়। স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে,  সাধারণ অগ্রাধিকার ব্যবস্থায় (জেনারেলাইজড সিস্টেম অফ প্রিফারেন্সেস-জিএসপি) বাংলাদেশ বিভিন্ন দেশের বাজারে প্রবেশের ক্ষেত্রে শর্তহীন সুবিধা ভোগ করে। উদাহরণস্বরূপ, একটি স্বল্পোন্নত হিসাবে, ইউরোপীয়ান ইউনিয়নের জিএসপি সুবিধার আওতায় বাংলাদেশ ইউরোপে শুল্ক ও কোটামুক্ত বস্ত্র রপ্তানি করতে পারে। ফলস্বরূপ, ২০০৮ সাল থেকে ইউরোপের দেশগুলোতে রপ্তানি বেড়েছে। বর্তমানে  প্রায় ৫০% ভাগ তৈরি পোশাক রপ্তানি হয় ইউরোপে। স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে বাংলাদেশ বিশেষ আর্থিক ও বাণিজ্যিক সুবিধার আওতায় দ্বিপক্ষীয় ও আঞ্চলিক বাণিজ্য চুক্তির মাধ্যমে অগ্রাধিকারমূলক বাজারে প্রবেশের সুযোগ পায়। উদাহরণ হিসেবে দক্ষিণ এশিয়ার মুক্ত বাণিজ্য এলাকা বিশেষ করে ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য সুবিধার বিষয়টি উল্লেখ করা যায়।

এই সুবিধাগুলো বাংলাদেশের তৈরি পোশাক (আরএমজি) খাতের উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছে, যা চীনের পর দ্বিতীয় তৈরিপোশাক রপ্তানিকারী দেশ হওয়ার সুযোগ করে দেয়। তৈরিপোশাক রফতানি এখন বাংলাদেশের অর্থনীতির মূল ভিত্তি, মোট রপ্তানি আয়ের ৮০% ভাগই আসে এই খাত থেকে। অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের হিসেব মতে, (জানুয়ারি, ২০১৮), স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তীর্ণ হওয়ার পর, প্রতি বছর ৬.৭% অতিরিক্ত শুল্ক দিলে বাংলাদেশ প্রতিবছর প্রায় ২.৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রপ্তানি আয় হ্রাস করতে পারে। এদিকে, জাতিসংঘের বাণিজ্য ও উন্নয়ন বিষয়ক সম্মেলনে ধারণা করা হয় যে, স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তীর্ণ হওয়ার পর বাংলাদেশের রপ্তানি ৫.৫ শতাংশ থেকে ৭.৫ শতাংশ কমে যেতে পারে।  অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, কর্মসংস্থান এবং দারিদ্র্যের মাত্রার উপর  ব্যাপক প্রভাব পড়তে পারে।

তবে এগুলো নাও ঘটতে পারে। এমনকি স্বল্পোন্নত দেশের তালিকায় আর না থাকলেও, বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য ডব্লিউটিও চুক্তি ও ইউরোপীয়ান ইউনিয়নের জিএসপির আওতায় ভঙ্গুর উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে কম কিংবা বিনা শূল্কের বিশেষ-বিধানের জন্য যোগ্য হতে হবে এবং তৈরি পোশাক খাতের অগ্রগতি ধরে রাখতে অব্যাহত সহযোগিতা দিতে হবে। যাহোক, স্বল্পোন্নত দেশ উন্নয়নশীল দেশে পদার্পণের (২০১৮-২২) সময় সম্ভাব্য সংকট মোকাবিলা করে একটি মসৃন পথে চলতে হলে বাংলাদেশকে এখন অতিরিক্ত নজর দিতে হবে দ্বিপক্ষীয় ও আঞ্চলিক মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) নিয়ে আলোচনার দিকে।

বাংলাদেশ ইতিমধ্যে শ্রীলংকার সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির শর্তাদি নিয়ে আলোচনা করছে, যা ২০১৮ সালের শেষ নাগাদ চূড়ান্ত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। থাইল্যান্ড, আর্জেন্টিনা ও ব্রাজিলের সঙ্গেও এফটিএ নিয়ে আনুষ্ঠানিক আলোচনা শুরু করতে হবে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে মার্কিন যুক্তরাস্ট্রের সঙ্গে একটি চুক্তিতে পৌঁছানো। ইউরোপীয়ান ইউনিয়নের পর বাংলাদেশর সবচেয়ে বড় রপ্তানিকারক দেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আগামী কয়েক বছর ধরে এই আলোচনা চালিয়ে যেতে হবে। ২০১৩ সালের রানা প্লাজা দুর্ঘটনা, যেখানে তেরশরও বেশি গার্মেন্ট শ্রমিকের জীবন কেড়ে নিয়েছে, এর পর যুক্তরাষ্ট্র শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার শর্তে বাংলাদেশ রপ্তানির জন্য শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার প্রত্যাহার করে। ২০১৮ সালের মার্চ মাসের প্রথম দিকে বাংলাদেশের বাণিজ্য মন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যুক্ত বাণিজ্য বিষয়ক শীর্ষ সম্মেলন উদ্বোধনের সময় একটি মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির (এফটিএ) প্রস্তাব করেন। তিনি বলেন যে, ২০২৪ সালে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণ সত্ত্বেও বাংলাদেশ ২০২৭ সাল পর্যন্ত  ইইউ জিএসপি সুবিধা বাণিজ্য সুবিধা পাবে, পরে তা জিএসপির অতিরিক্ত সুবিধা হিসেবে হিসেবে অগ্রাধিকারমূলক বাজার প্রবেশাধিকার হিসেবে গ্রহণ করা যাবে।

উন্নয়ন সম্পর্কিত সহায়তা এবং সহায়তা হ্রাস পাবে

বাণিজ্য ছাড়াও, বিদেশি অর্থায়নের ব্যাপারে আরও অনেক বড় বড় চ্যালেঞ্জ রয়েছে। উন্নয়নশীল দেশে উত্তীর্ণ হওয়ার পর, বাংলাদেশ বিশ্বব্যাংকের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন তহবিলের(ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট এসোসিয়েশনের) ছাড়কৃত অর্থসুবিধাসহ কয়েক ধরনের ছাড়ের বহুমুখী সহায়তার জন্য উপযুক্ত হবে না। এটি পরিকল্পিত অবকাঠামো নির্মাণের উপর প্রভাব ফেলতে পারে। ব্যাংকের ছাড়কৃত অর্থসুবিধা পাবার মাপকাঠি অনুযায়ী, যখন একটি দেশের মাথা পিছু আয় পর পর তিন বছর ১৪০০ মার্কিন ডলারের উপরে থাকে তখন সুদের হার ০.৭৫% থেকে প্রায় ২% বৃদ্ধি পায়।

এই ধরনের বিশেষ সুবিধা হারানোর ক্ষতি সত্ত্বেও, আমরা মনে করি না যে, বৈদেশিক সাহায্যের উপর নির্ভরশীলতা কমে যাওয়ার কারণে অবকাঠামো বা সামাজিক-অর্থনৈতিক কর্মসূচির জন্য পরিকল্পনা মাফিক এগিয়ে চলার ক্ষেত্রে সমস্যার সম্মুখীন হবে। এর প্রধান কারণ দেশটি জাপান, ভারত ও চীনের মতো দেশ থেকে সফলভাবে দ্বিপক্ষীয় ঋণ গ্রহণ করছে। প্রকৃতপক্ষে, বিশ্বব্যাংকের মতে, ১৯৭৫ সালে স্বল্পোন্নত দেশের তালিকায় যুক্ত হওয়ার পর থেকেই ধারাবাহিকভাবে বাংলাদেশ উন্নয়ন সহযোগিতা  ৫.৫% থেকে কমে ২০১৫ সালে প্রায় ১.২% এসে দাঁড়িয়েছে। উন্নয়নশীল দেশে উত্তীর্ণ হওয়ার সময়ে দেশগুলি প্রস্তুতিমূলক উন্নয়নমূলক সহায়তাও পেয়ে থাকে। জাতীয় গর্ব বৃদ্ধির পাশাপাশি উন্নয়নশীল দেশে উত্তীর্ণ হওয়ার অন্যান্য সুবিধাগুলোও যথাযথভাবে ব্যবহার করতে হবে। উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির এই ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে পারলে তা আন্তর্জাতিক ঋণদাতা ও বিনিয়োগকারীদের কাছেও দেশের আকর্ষণ বাড়বে।

উন্নয়নশীল দেশ সামগ্রিকভাবে অর্থনীতির জন্য ইতিবাচক

সর্বোপরি, আমাদের বিশ্বাস যে উন্নয়নশীল দেশে উত্তীর্ণ হওয়ার বর্তমান প্রস্তুতি পর্যায়ে বাংলাদেশের বিনিয়োগ পরিবেশে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। যেহেতু ক্ষুদ্র বাণিজ্য সুবিধার মাপকাঠিতে স্বল্পোন্নত দেশের যাত্রা শুরু হয়, সেক্ষেত্রে আঞ্চলিক ও দ্বিপক্ষীয় মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির জন্য দেশটিকে ক্রমবর্ধমান প্রচেষ্টা চালাতে হবে যাতে করে প্রতিযোগিতামূলক বাজারে অতিরিক্ত শুল্ক রপ্তানি না কমায়। বাণিজ্য-ছাড়ের প্রভাব থেকে মুক্ত হওয়ার এটাই চাবিকাঠি। দীর্ঘস্থায়ী অন্তর্বর্তী কাল অতিক্রম করতে হলে এ ধরনের মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির জন্য দেশটিকে মরিয়া চেষ্টা চালাতে হবে। আমরা বিশ্বাস করি যে বাংলাদেশের উন্নয়নশীল দেশে উত্তীর্ণ হওয়ার সুফল লাভ করতে সক্ষম হবে। অতএব, ক্ষতি কমিয়ে সম্ভাব্য সুবিধাগুলো পেতে হলে পরিবর্তনের পথে এগোতে হবে। এ পরিস্থিতিতে দরকার সরকারের দূরদর্শী ও ইতিবাচক রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত ও কার্যকর নীতি।