অনেক দেশে নাস্তিক এখন সংখ্যাগুরু, কেন ও প্রতিকার

হাসান মাহমুদহাসান মাহমুদ
Published : 26 Nov 2017, 05:00 PM
Updated : 26 Nov 2017, 05:00 PM

'অনেকে দেশে এখন নাস্তিকরাই সংখ্যাগুরু', এ তথ্য ছাপা হয়েছে শারিয়াপন্থী দলগুলোর সমর্থক দৈনিক 'আমার দেশ' এ, ৩০ জানুয়ারি ২০১৬, গ্যালাপ ইন্টারন্যাশনাল জরিপ৷

চিরকাল বিশ্বাস করেছি পৃথিবীর 'ফাস্টেস্ট গ্রোইং রিলিজিয়ন' (সবচেয়ে প্রসারমান ধর্ম) হল ইসলাম৷ বটেই তো৷ বিশ্বময় মুসলিম পরিবারে সন্তানের সংখ্যা অন্যদের চেয়ে বেশি, পশ্চিমা দেশে অনেকে ইসলাম গ্রহণ করছে, তাতে এটাই তো হবার কথা৷ বিশ্বাসটা প্রথম ধাক্কা খায় বছর বিশ-পঁচিশ আগে এক বিশ্ববিদ্যালয়ের জরিপের খবরে, সেখানে ৬৭ শতাংশ ছাত্রছাত্রীই নাস্তিক৷ তারপর থেকে ব্যাপারটা খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে খেয়াল করেছি; বিভিন্ন দেশে প্রজন্মকে সুযোগ পেলেই প্রশ্ন করেছি। ধীরে ধীরে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে যে, বহুকাল থেকে যা ছিল অন্তর্লীন ফল্গুধারায় প্রবহমান সম্প্রতি তা উচ্ছ্বল জলধি তরঙ্গে রূপ নিয়েছে৷ সংক্ষিপ্ত উদ্ধৃতি–

• ইউরোপের অনেকে দেশে এখন নাস্তিকরাই সংখ্যাগুরু;

• চীনে ৬১ শতাংশ সরাসরি স্রষ্টার অস্তিত্ব অস্বীকার করে;

• সুইডেনে ৮ শতাংশ উপাসনালয়ে ধর্মচর্চা করে, ৭৬ শতাংশ নাস্তিক;

• চেক প্রজাতন্ত্রে ১২ শতাংশ গির্জায় ধর্মচর্চা করে, ৭৫ শতাংশ নাস্তিক;

• ব্রিটেনের ৫৩ শতাংশের ধর্মবিশ্বাস নেই;

• হংকংএর নাগরিকদের ৬২ শতাংশে কোনো ধর্মে বিশ্বাসী নয়;

• জাপানে নাস্তিকের সংখ্যা ৬২ শতাংশ;

• জার্মানিতে ৫৯ শতাংশ নাস্তিক;

• স্পেনের নাগরিকদের বড় একটা অংশই নাস্তিক;

• অস্ট্রিয়ার নাগরিকদেরও বড় অংশ নাস্তিক;

• ফ্রান্সের নাগরিকদের বৃহত্তর অংশ নাস্তিক।

[সূত্র: ডয়চে ভেল]

অস্ট্রেলিয়া নিউজিল্যান্ডেও অন্যরকম হবার কারণ নেই৷ যেহেতু পশ্চিমা বিশ্বের সব কিছুই আমাদের দেশগুলোকে প্রবলভাবে প্রভাবিত করে, তাই ওই ধাক্কা এশিয়ার দেশগুলোতেও গিয়ে লাগছে ও আরও লাগবে৷ কারও পছন্দ হোক বা না হোক, এ সত্যের সামনে দাঁড়াতেই হচ্ছে দুনিয়াকে৷ কয়েক দশক পর বিশ্বসমাজকে এক নূতন পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হবে। বদলে যাবে সামাজিক, সাংস্কৃতিক, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অনেক সমীকরণ৷ এখন দেখা যাক এটা ঘটছে কেন৷ অনেকের অনেক মতামত থাকবে নিশ্চয়ই, কিন্তু শুধু বিশ্বাস দিয়ে বাস্তবের বিশ্লেষণ সম্ভব নয়৷

১.

গণতন্ত্র কুক্ষিগত করে পুঁজিবাদ অর্থাৎ ক্যাপিটালিজম বিশ্বময় এক ভয়ানক ভোগবাদী জীবনধারা ও জীবনবোধ প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়েছে৷ বিশেষ করে পশ্চিমা প্রজন্মের বিশাল অংশ এখন বিশ্বাস করে 'যাবজ্জীবেৎ সুখং জীবেৎ, ঋনং কৃত্ত্বা ঘৃতং পিবেৎ'– অর্থাৎ 'নগদ যা পাও হাত পেতে নাও, বাকির খাতায় শূন্য থাক, দূরের বাদ্য লাভ কী শুনে, মাঝখানে যে বেজায় ফাঁক'। সেখানে ধর্ম, মহাপুরুষ ও ধর্মগ্রন্থের জায়গাও নেই, দরকারও নেই– স্রেফ আনন্দ করে গেলেই জীবন সার্থক৷ পশ্চিমা দেশগুলোর আইনও একে সমর্থন করে– 'একটাই জীবন তোমার, নিজ কর্মের দায়িত্ব নিয়ে অন্যের অধিকার খর্ব না করে বা অন্যকে কষ্ট না দিয়ে জীবন উপভোগ করে যাও'৷

এর মধ্যে নারী-পুরুষের অবাধ সংসর্গও অন্তর্ভুক্ত৷ যৌবন এক পরাক্রান্ত শক্তি৷ জীবনের ষড়রিপু (ছয় শত্রু)– কাম, ক্রোধ, লোভ, মোহ, মদ ও মাৎসর্য্য– তার প্রথমটাই হল কাম যা মানুষকে প্রবলভাবে তাড়িত করে৷ পরস্পরের সম্মতি থাকলে সাবালক নরনারীর মিলন অবৈধ নয়, পশ্চিমা দেশগুলোর এ আইনের পূর্ণ সুযোগ নিয়েছে প্রজন্ম৷ ধর্মগুলো বিয়ের বাইরে দৈহিক সংসর্গের বিরোধী এবং পশ্চিমা প্রজন্মের অবাধ যৌনতায় বড় বাধা৷ কিন্তু এই আইনি অধিকার পশ্চিমা প্রজন্ম পেয়েছে সেটা তারা কিছুতেই ছাড়বে না। দরকার হলে ধৰ্মই ছেড়ে দেবে, এ প্রবণতাও রয়েছে৷ প্রজন্মের এই প্রবণতা আমাদের দেশগুলোতেও বাড়ছে৷

২.

ধর্মই নৈতিকতার ভিত্তি, এ দাবিও অসার প্রমাণিত হয়েছে৷ কারণ ধর্মহীন বা ধর্মে উদাসীন অথচ প্রবলভাবে আধ্যাত্মিক, উদার ও মানবিক গুণাবলীতে আলোকিত মানুষের অজস্র উদাহরণ চারদিকে ছড়িয়ে রয়েছে৷ তারা কারও ক্ষতি করেন না ও বিপদে-আপদে সর্বশক্তি নিয়ে মানুষের পাশে দাঁড়ান৷ হিন্দু সমাজে বিধবা-বিবাহ প্রতিষ্ঠার নায়ক পণ্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র কিংবা আফ্রিকাতে প্রধানত মুসলিম সমাজে ইসলামের নামে ভয়ংকর বর্বর প্রথা নারীর খৎনা উচ্ছেদে সর্বাত্মক চেষ্টাকারী রুডিজার নেহবার্গ দুজনেই ধৰ্মহীন৷ দুর্ভাগ্যক্রমে, গির্জা, মন্দির ও মসজিদ-মাদ্রাসা ইত্যাদির অনেক ধর্মগুরুর ব্যক্তিগত হিংস্রতা, হানাহানি ও অশ্লীলতার খবরও প্রজন্ম জানতে পারছে। যেহেতু ধর্মগুরুদের ভাবমূর্তির উপর ধর্মের ভাবমূর্তি অনেকটাই নির্ভর করে, তাই এটাও ধর্মের প্রতি প্রজন্মের বিতৃষ্ণার বড় কারণ৷

৩.

'ম্যান ডাজ নট লিভ বাই ব্রেড অ্যালোন'। জীবনের স্রোত প্রয়োজনের তাড়নায় প্রবাহিত হয়৷ খাদ্যের পাশাপাশি মানুষের আধ্যাত্মিক প্রয়োজন আছে, যেখানে ধর্মবিশ্বাসের বিকল্প নেই৷ এই আধ্যাত্মিক প্রয়োজনটাই হারিয়েছে এ প্রজন্মের বিশাল অংশ৷ এখন তাদের প্রয়োজন প্রধানত পার্থিব, অর্থাৎ দুনিয়াদারির৷ তাদের চাই টেকনোলজির সর্বশেষ সংস্করণ, চাই পার্টি, নূতন মডেলের গাড়ি, বাড়ি, আরও ভালো চাকরি বা নিজের ব্যবসা– তারা চায় দেশে দেশে ভ্রমণ করতে, ইত্যাদি৷

এসব প্রয়োজন ধর্ম মেটাতে পারছে না। কারণ ওটা ধর্মের কাজই নয়৷ ধর্মের কাজ হেদায়েত করা এবং নৈতিকতা ও মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠা। যার ধারও ধারছে না এ প্রজন্মের বিশাল অংশ৷ যা প্রয়োজন মেটাতে পারে না তা প্রাকৃতিক নিয়মেই অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়ে ও শেষ পর্য্যন্ত পরিত্যক্ত হয়৷ প্রজন্মের বিশাল অংশ ধর্মের মাধুর্য কী জানে না, ধর্মের আবেদন তাদের কাছে নেই৷

৪.

অভিজ্ঞতা কখনও বিশ্বাসঘাতকতা করে না৷ প্রজন্ম সম্প্রতি দেখছে ধর্মের উৎস থেকে উঠে এসেছে ভয়াবহ গণহত্যা, গণধর্ষণ, ব্যাপক হিংস্রতা ও ধ্বংসযজ্ঞ৷ ইতিহাস ঘেঁটে তারা দেখেছে অন্য ধর্মের উৎস থেকেও অতীতে প্রবাহিত হয়েছে অগণিত নিরপরাধীর রক্ত ও অশ্রুস্রোত৷ হিংস্রতা, যুদ্ধ, রক্তক্ষয় অন্যান্য কারণেও হয় এবং তার ব্যাখ্যা সম্ভব৷ কিন্তু সেটা যখন স্রষ্টার নামে হয় তখন তা ব্যাখ্যার অতীত হয়ে দাঁড়ায়৷ প্রজন্ম জানে না কোনো ধর্মই হিংস্রতা শেখায় না৷ জানে না যে ওগুলো ধর্মের অপব্যবহার মাত্র– কতিপয় শক্তিশালী ধর্মগুরুর হিংস্রতা মাত্র৷ তাদের অপকর্মের দায় গিয়ে পড়ে ধর্মের উপর।

এছাড়া আছে রূপকথা৷ ধর্মের মধ্যে অনেক অবৈজ্ঞানিক, অবাস্তব ও হাস্যকর রূপকথা ঢুকে পড়েছে৷ ইসলামের কথাই যদি বলি, কোরানে আছে ব্যভিচার বর্জন করার নির্দেশ, ব্যাভিচারের শাস্তি আজীবন ঘরবন্দি অথবা আল্লাহ অন্য কোনো পথ নির্দেশ না করা পর্যন্ত, আছে ব্যভিচারী নারী-পুরুষকে একশ করে চাবুক (সুরা বনি ইসরাইল ৩২, মুমতাহানা ১২, নিসা ১৫, নূর ২ ইত্যাদি)।

কিন্তু শারিয়া আইনে ব্যাভিচারের শাস্তি বিবাহিতদের মৃত্যুদণ্ড ও অবিবাহিতদের চাবুক (হানাফি আইন হেদায়া পৃষ্ঠা ১৭৮, বিধিবদ্ধ ইসলামি আইন ১ম খণ্ড, ধারা ১২৯, পাকিস্তানের হুদুদ আইন ৭-১৯৭৯, অর্ডিন্যান্স ২০-১৯৮০ দ্বারা পরিবর্তিত, আইন নম্বর ৫ (২)-এর 'অ' ইত্যাদি)।

সূত্রগুলো মোটা দাগে দিলাম, বিস্তারিত আছে 'শারিয়া কী বলে, আমরা কী করি' বইতে৷ আসলে মৃত্যুদণ্ডটা এসেছে কোরানের একটা 'ছাগলে খাওয়া' আয়াত-সম্পর্কিত হাদিস থেকে। কারও দরকার হলে কেতাবের পৃষ্ঠাটার স্ক্যান কপি পাঠানো যাবে। সহি ইবনে মাজাহ ৩য় খণ্ড হাদিস ১৯৪৪, উদ্ধৃতি দিচ্ছি বাংলা করে:

"বর্ণিত আছে যে, বিবি আয়েশা (রাঃ) বলিয়াছেন, 'রজমের আয়াত নাজিল হইয়াছিল। অবশ্যই ইহা একটি কাগজের উপরে লিখা হইয়াছিল যাহা আমার কুশনের নিচে রাখা ছিল। রসুল (দ:)এর ইন্তেকালের পর আমরা যখন তাঁহার সৎকার করিতে ব্যস্ত ছিলাম তখন একটি গৃহপালিত ছাগল ঘরে ঢুকিয়া উহা খাইয়া ফেলে।"

এ হাদিসের ব্যাখ্যায় মধ্যপ্রাচ্যের মওলানা ওয়াজে বলেছেন:

"ছাগলটি বেহেশত হইতে আসিয়াছিল।"

মওলানার খেয়াল নেই, আল্লাহ বলেছেন তিনি এ কেতাব নাজিল করেছেন এবং তিনিই এটা সংরক্ষণ করবেন।

[সুরা হিজর ৯]

এখন আপনারাই বলুন, এসব উদ্ভট ব্যাখ্যা প্রজন্ম মানবে কেন? তাই এটা অত্যন্ত স্বাভাবিক যে, তাদের এক বড় অংশের কাছে ধর্ম একটা ভীতিকর, হাস্যকর ও বর্জনীয় কিছুতে পরিণত হয়েছে৷ আক্ষরিক অর্থে ধরা হয়েছে সব কিছু, ভয়াবহভাবে উপেক্ষিত হয়েছে সুরা ইমরান ৭– এই কেতাবের সুস্পষ্ট অংশটাই আসল অংশ, বাকিটুকু রূপক, অর্থাৎ প্রতীকমাত্র৷

৫.

কিন্তু তাহলে ধর্মের প্রয়োজনীয়তা কী? ধর্মের প্রধান প্রয়োজনীয়তার প্রমাণ হল পৃথিবীর সিংহভাগ মানুষ চিরকাল এবং এখনও ধর্মে বিশ্বাসী, ধর্ম ছাড়া মানুষ চলতে পারে না৷ এটা খুবই সত্যি যে:

"ধর্মগুরুরা নীতিবাক্য প্রচার করিয়াছেন অজস্র। আর উহাতে কাজও হইয়াছে যথেষ্ট। অসংখ্য নরনারী অসৎকাজ ত্যাগ করিয়া সৎকাজে ব্রতী হইয়াছেন……মূলত পশুবৃত্তি বা স্বেচ্ছাচারিতা ত্যাগ করাইয়া মানুষকে সুসভ্য করিয়া গড়িয়া তুলিবার ব্যাপারে ধর্মগুরু বনাম ধর্মের দান অপরিসীম।"

আরজ আলী মাতুব্বর রচনাসমগ্র, ২য় খণ্ড পৃষ্ঠা ১৩৮। সবশেষে তিনি বলেছেন,

"ধর্মীয় শিক্ষার ফলে আদিম মানবদের লাভ হইয়াছে যথেষ্ট এবং বর্তমান যুগেও উহার আবশ্যকতা ফুরায় নাই।"

৬.

প্রজন্মকে ধর্মে আকৃষ্ট করা ধর্মগুরুদেরই দায়িত্ব৷ যতদিন ধর্মীয় গ্রন্থগুলোর অপব্যবহার করে স্রষ্টার নামে বৈধ করা হবে হিংস্রতা, অত্যাচার ও দুর্নীতি, যতদিন অর্থলোলুপ ধর্মদস্যুরা চালিয়ে যাবে ধর্মব্যবসা, যতদিন হুঙ্কারী ধর্মগুরুদের শাস্তি না হবে, ততদিনই মানবজাতি ধীরে ধীরে ধর্ম থেকে সরে যাবে, ধর্ম পরিত্যাগ করবে৷ ধর্মবান্ধব মানববান্ধব ধর্মগুরুরা কীভাবে এই পঙ্কিল দুর্নীতিপরায়ণ জগতে সেগুলো বন্ধ করবেন সেটা তাদেরই দায়িত্ব, সেই ধর্মগুরুদের অপেক্ষায় আছে বিশ্বমানব৷ পশ্চিমা বিশ্বের এ নিয়ে কোনো মাথাব্যথা নেই৷

তবে মুসলিম বিশ্বে ইসলামের নামে যেসব অনাচার-অত্যাচার আমরা দেখি তার অনেকটাই অবসান হবে যদি নেতারা হযরত ওমরের (রা:) শাসন খেয়াল করেন৷ চৌদ্দশ বছর আগে জ্ঞান-বিজ্ঞান ও চিন্তা-চেতনার সীমাবদ্ধতা সত্বেও তিনি যে বিস্ময়কর দূরদৃষ্টি, অন্তর্দৃষ্টি ও প্রজ্ঞা দিয়ে শাসনকার্য পরিচালনা করেছেন তা বর্তমান মুসলিম বিশ্বের নেতাদের আদর্শ হতে পারে৷ সেটার উপর লেখার চেষ্টা করব৷ আপাতত এ প্রাকৃতিক নিয়ম মানতে হচ্ছে যে, "যা ঘটে সেটা ছাড়া আর কিছু ঘটতে পারত না বলেই সেটা ঘটে""৷ প্রজন্ম সম্ভবত মনে করছে:

রহিম যেটা দেখছে পানি করিম সেটা দেখছে কালি,
প্রশংসা যার করছে যদু, মধু তাকে দিচ্ছে গালি।
তুই যেটাকে লম্বা দেখিস অন্যে সেটা দেখছে গোল,
এক অরূপের অজস্র রূপ বড্ড লাগায় গণ্ডগোল।

সবার চোখেই একেক রঙের চশমা তা কেউ পাইনে টের,
সবাই একেক রঙের দেখি, একই মোক্ষ, এক রঙের।
দুই চশমায় মিললে মধুর 'স্লামালেকুম', 'সুপ্রভাত'।
না মিললেই 'ধর শালাকে', 'মার শালাকে'র সূত্রপাত।

আসল সত্য কোথায় থাকে, কে জানে তার হয় কী রূপ,
বিশ্বাসেরই সত্যে সবাই হয়ত খুশি, নয় বিরূপ।
মাতাল ভাবে, সে ঠিক আছে! দুনিয়াটাই খাচ্ছে টাল,
বিশ্বাসেরই 'সত্য' খেয়ে আমরা সবাই পাঁড় মাতাল!

এটাও রূপক অর্থে বলা হল, সবাইকে আবারও সালাম।