মানসম্মত শিক্ষা: চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় কয়েকটি সুপারিশ

বৃন্দলেখক
Published : 16 Nov 2017, 07:39 AM
Updated : 16 Nov 2017, 07:39 AM

১. শিক্ষায় সাফল্য ও অন্তরায়: যেখানে দাঁড়িয়ে আমরা:

শিক্ষাখাতে এ পর্যন্ত আমাদের যে অর্জন আছে তার শুরু হয়েছিল স্বাধীনতার অব্যবহিত পর থেকে সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পরিকল্পনার মধ্য দিয়ে। আবার শিক্ষার প্রসারে উৎসাহী বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনও সদ্য স্বাধীন দেশে জাতিগঠনের স্বপ্ন বুকে নিয়ে নানা উদ্যোগ শুরু করেছিল। এভাবে সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন উদ্যোগের মধ্যে দিয়ে এসেছে জাতিগত এই অর্জন, যার শীর্ষে আছে প্রাথমিকে শতভাগ ভর্তি সংক্রান্ত সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা পূরণ।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপাত্ত অনুযায়ী ২০১৬ সালে প্রাথমিকে গমনোপযোগী শিশুদের ৯৭.৯৪ শতাংশ ভর্তি হয়েছিল। এ থেকে স্পষ্ট যে, এ ক্ষেত্রে লিঙ্গ-বৈষম্য নিরসনও সম্ভব হয়েছে। কারণ মেয়ে ও ছেলেশিশু উভয়েরই প্রায় শতভাগ ভর্তি ছাড়া এ লক্ষ্য অর্জন সম্ভব ছিল না। ২০০৫ সালে ঝরে পড়ার হার ছিল ৪৭.২ শতাংশ, ২০১৫ সালে এসে এ হার দাঁড়িয়েছে ২০.৪ শতাংশ।

বেড়েছে সাক্ষরতার হারও। এ বছরের (২০১৭) জুনে সংসদে মাননীয় শিক্ষামন্ত্রীর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী দেশের সাক্ষরতার হার ৭০ শতাংশ। ইউনিসেফের তথ্য অনুযায়ী ১৯৭১ সালে এ হার ছিল ১৬.৮ শতাংশ।

তবে প্রত্যাশিত মানের শিক্ষা অর্জনের জন্য সার্বিক যে ইতিবাচক পরিবেশ প্রয়োজন তা থেকে বাংলাদেশ এখনও বেশ কিছুটা পিছিয়ে রয়েছে। এর সবচেয়ে বড় কারণ হয়তো-বা আমাদের বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থী এবং তাদের জন্য শিক্ষার প্রত্যাশিত মান নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে বিভিন্ন পর্যায়ে নানাবিধ অন্তরায়। বাংলাদেশ শিক্ষা তথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরোর হিসাবমতে, ২০১৬ সালে ধর্মনিরপেক্ষ (যে শিক্ষাধারার আওতায় সব ধর্মের শিক্ষার্থী ধর্ম বিষয় বাদে বাকি সব বিষয়ে একই পাঠ্যসূচির আওতায় পাঠ গ্রহণ করে) ও ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও মাধ্যমিক-পরবর্তী স্তর সব মিলিয়ে দেশে শিক্ষার্থী সংখ্যা ছিল তিন কোটি ষাট লাখ। এ বছর (২০১৭) কওমি মাদ্রাসার সরকারি স্বীকৃতির পর এ সংখ্যা আরও বাড়বে।

সীমিত সম্পদ নিয়ে এত বিরাটসংখ্যক ছাত্রছাত্রী-সম্বলিত শিক্ষা খাতটি প্রত্যাশিত ধারায় প্রবাহিত করার কাজ নিঃসন্দেহে দুরূহ।

২. শিক্ষা খাতের প্রধান চ্যালেঞ্জ:

বর্তমান যুগে একটি দেশের শিক্ষাব্যবস্থার অন্যতম প্রধান উদ্দেশ্য থাকে জাতির অর্থনৈতিক উন্নয়নের লক্ষ্য ও প্রত্যাশা পূরণের উপযোগী শিক্ষা প্রদান। বাংলাদেশ ২০২০-২১ সালের মধ্যে মধ্যআয়ের দেশে উন্নীত হওয়ার যে লক্ষ্য স্থির করেছে মানসম্মত শিক্ষা ছাড়া সেটি অর্জন সম্ভব নয়। বিশ্ব ব্যাংক ২০১৩ সালে প্রকাশিত একটি নীতি পর্যালোচনাপত্রে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণ হাজির করেছে। এতে বলা হয়েছে, শ্রমশক্তির ৯৬ শতাংশের শিক্ষাগত যোগ্যতা মাধ্যমিকের চেয়ে কম; দুই-তৃতীয়াংশের প্রাথমিকের চেয়ে কম। প্রাথমিক পাশ শ্রমশক্তির মাত্র এক-তৃতীয়াংশের গণনা ও সাক্ষরতায় প্রত্যাশিত জ্ঞান রয়েছে।

এ প্রসঙ্গে মনে রাখা জরুরি যে, মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করতে হলে উপযোগভিত্তিক শিক্ষার সঙ্গে সঙ্গে জোরালো সামাজিক ও মানবিক মূল্যবোধে বলীয়ান শিক্ষাও নিশ্চিত করতে হবে, যাতে শিশু সার্বিক কল্যাণ বলতে জাতি-ধর্ম-বর্ণ-লিঙ্গনির্বিশেষে সকলের জন্য সমতাভিত্তিক অধিকার ও কল্যাণের ধারণাটি আত্মস্থ করতে সক্ষম হয়। এটি দেশের জাতীয় শিক্ষা নীতি ২০১০এর অন্যতম প্রধান লক্ষ্য, উদ্দেশ্য ও তাগিদ।

প্রত্যাশিত শিক্ষা ব্যবস্থা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে আমাদের প্রধান অন্তরায়গুলোর মধ্যে রয়েছে সামাজিক ও মানবিক মূল্যবোধে বলীয়ান শিক্ষার অভাব, একই স্তরের শিক্ষার্থীদের শেখার ক্ষেত্রে অসমতা, বিভিন্ন ধারার শিক্ষার মধ্যে ব্যাপক ফারাক, দুর্বল শিখন মূল্যায়ন ও শিক্ষকের উন্নয়ন ও জবাবদিহিতার ব্যবস্থায় সীমাবদ্ধতা, শিক্ষক প্রণোদনার অভাব, সরকারি তহবিল ব্যবহারের তদারকিতে দুর্বলতা, প্রাথমিকে ঝরে পড়ার উচ্চহার, অতিদরিদ্র বা দুর্গম এলাকার শিশুদের ভর্তি না-হওয়া, প্রাথমিক-পরবর্তী পর্যায়ে শিক্ষার্থী বিশেষ করে নারী শিক্ষার্থী হ্রাস, নগরাঞ্চলে দরিদ্র জনসংখ্যা বৃদ্ধি এবং মানসম্মত দক্ষতা প্রশিক্ষণমূলক শিক্ষার অভাব প্রধান।

তাছাড়া বিশাল এই কর্মযজ্ঞ সম্পাদনে প্রয়োজন পর্যাপ্ত আর্থিক বরাদ্দ, ইউনেস্কো নীতিমালা অনুযায়ী যা জিডিপির অন্ততপক্ষে ছয় শতাংশ ও মোট বাজেটের ২৫ শতাংশ হওয়া উচিত। কিন্তু জিডিপির অনুপাত ও মোট বাজেটের অংশ– উভয় অর্থেই শিক্ষার বরাদ্দে বাংলাদেশ অনেক পিছিয়ে আছে। শিক্ষায় জিডিপির ১.৯ শতাংশ বরাদ্দ নিয়ে বিশ্ব উন্নয়ন সূচকের হিসাবে বাংলাদেশের অবস্থান এখন ১৬১টি দেশের মধ্যে ১৫৫তম। ২০০০ সালে শিক্ষায় বরাদ্দ দুই শতাংশে উন্নীত করার পর থেকে এ যাবত এ খাতের বাজেট আর বাড়েনি।

৩. পাঠবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টি ও উৎকর্ষ সাধনে কয়েকটি সুপারিশ:

এখানে উল্লিখিত সুপারিশগুলোর প্রধান উদ্দেশ্য শেখার জন্য সার্বিক দিক থেকে উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করা। এসব সুপারিশের সঠিক বাস্তবায়নের জন্য উদ্ভাবনি পদক্ষেপ, কর্মকাণ্ডের মান নিয়ন্ত্রণ ও জবাবদিহিতার ওপর বিশেষ জোর দিতে হবে, নতুবা প্রত্যাশিত ফল পাওয়া যাবে না।

সহায়ক শিক্ষক নিয়োগ:

জাতীয় শিক্ষানীতিতে প্রাথমিক ও মাধ্যমিকে ২০১৮ সালের মধ্যে শিক্ষক-শিক্ষার্থী অনুপাত ১:৩০ অর্জনের লক্ষ্য স্থির করা হয়েছে। সে লক্ষ্য থেকে আমরা খুব বেশি হয়তো পিছিয়ে নেই। কেননা বাংলাদেশ শিক্ষা তথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরোর প্রতিবেদন অনুযায়ী ২০১৬ সালে সরকারি প্রাথমিকে এই অনুপাত ছিল ১:৩৯, বেসরকারি প্রাথমিকে ১:২৫, সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ১:৩৫ ও বেসরকারি মাধ্যমিকে ১:৪২।

তবে এ ক্ষেত্রে বিশেষ করে আমাদের গ্রামীণ বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থীদের বৈচিত্র্যময় আর্থসামাজিক অবস্থা বিশেষ বিবেচনায় নেওয়া প্রয়োজন এবং আদর্শ অনুপাতে শ্রেণিকক্ষ ও শিক্ষকের জন্য উপযুক্ত প্রশিক্ষণ ও বাড়তি সহায়তা প্রয়োজন কিনা তা ভেবে দেখা জরুরি। ব্রিটিশ বা পাকিস্তান আমল তো বটেই, এমনকি দুই-আড়াই দশক আগের তুলনায় এ বৈচিত্র্য এখন অনেক বেশি।

বর্তমানে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর ছাত্রছাত্রীদের একটি অংশের অভিভাবকদের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা নেই। আরেকটি অংশের বাবা-মায়েরা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গেছেন। বাকি একটি অংশ আসছে এমন পরিবার থেকে যাদের বাবা-মা প্রাথমিক-পরবর্তী শিক্ষায় শিক্ষিত। বিভিন্ন আর্থসামাজিক পরিস্থিতি থেকে আসা ছাত্রছাত্রী যাতে শ্রেণিকক্ষে একটি সমধারার পরিবেশে জ্ঞানার্জন করতে পারে তা শিক্ষককে নিশ্চিত করতে হয়। শিক্ষক যাতে সেই ভূমিকা সুষ্ঠুভাবে পালন করতে পারেন সেজন্য তাঁর উপযুক্ত প্রশিক্ষণ থাকা প্রয়োজন। অন্যদিকে, এ ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের প্রতি যে বাড়তি মনোযোগ দেওয়া প্রয়োজন তা সহায়ক শিক্ষকের মাধ্যমে নিশ্চিত করা যেতে পারে।

সহায়ক শিক্ষক নিয়োগের বিষয়টি ইতোমধ্যে কোনো কোনো শিক্ষক নিজ উদ্যোগে প্রয়োগ করে সুফল পেয়েছেন। সরকার এসব উদ্ভাবনমূলক উদ্যোগ সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহের মাধ্যমে একটি আদর্শ মডেল তৈরি ও প্রয়োগ করতে পারে।

শিক্ষক প্রশিক্ষণ:

মানসম্মত শিক্ষাদানে শিক্ষক প্রশিক্ষণের বিকল্প নেই। সরকারের প্রাইমারি টিচার্স ট্রেনিং ইনস্টিটিউট (পিটিআই)সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান শিক্ষক প্রশিক্ষণে ভূমিকা পালন করছে সত্য, তবে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে এ ক্ষেত্রে প্রতিনিয়ত যে পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও উদ্ভাবন চলছে তা চাক্ষুষ করার সুযোগ আমাদের শিক্ষকদের কতটুকু? আমাদের দেশে চিকিৎসা, প্রকৌশল, স্থাপত্য, গবেষণা ইত্যাদি পেশায় জড়িতদের জন্য আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অভিজ্ঞতা বিনিময়ের যে সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে শিক্ষকদের জন্য তা তৈরি হয়েছে কি?

আবার পেশাগত উৎকর্ষ সাধনের সঙ্গে ব্যক্তির মর্যাদা বৃদ্ধির বিষয়টি অঙ্গাঙ্গী জড়িত যার সুযোগ শিক্ষকদের জন্য অত্যন্ত সীমিত। এর ফলে অনেক মেধাবী শিক্ষার্থী এ পেশায় আসতে আগ্রহ বোধ করছেন না।

কাজের স্বীকৃতি যে কোনো পেশার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। কেননা ব্যক্তির পেশাগত উৎকর্ষ সাধনে তা অনুপ্রেরণা জোগায়। জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ে বছরের শ্রেষ্ঠ শিক্ষকের স্বীকৃতির বিদ্যমান সরকারি ব্যবস্থাটিকে এজন্য আরও উদ্ভাবনমূলক ও প্রসারিত করা প্রয়োজন।

বিদ্যালয়ের দিনসূচি:

বিশ্বে বার্ষিক শিক্ষা দিবসের যে মান হিসাবটি আছে (আন্তর্জাতিক রীতি অনুযায়ী শিক্ষক-শিক্ষার্থী প্রত্যক্ষ সংযোগের ন্যূনতম সময় বছরে ৯০০-১০০০ ঘণ্টা) তার চেয়ে আমাদের প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর শিক্ষা দিবসের সংখ্যা অনেক কম। বার্ষিক শিক্ষা দিবসের সংখ্যা বাড়াতে হলে সারাদেশের বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর জীবনযাপন প্রক্রিয়া ও ঋতু অনুযায়ী বিদ্যালয়ের দিনসূচি সাজানো প্রয়োজন। এ নিয়ে বহুদিন ধরে বিভিন্ন পর্যায়ে অনেক আলোচনা হলেও কার্যকর পদক্ষেপ এখনও নেওয়া হয়নি।

দলগতভাবে শেখার সুযোগ:

দলগতভাবে শেখার প্রক্রিয়া উন্নত শিক্ষা পদ্ধতির অপরিহার্য দিক। ব্যবহারিক শিক্ষায় বিশেষ করে এর গুরুত্ব ব্যাপক। এ ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীরা কয়েক ভাগে ভাগ হয়ে পাঠ্যবিষয়ের বিভিন্ন অনুবিষয়ের ওপর দলগত কাজ করে। এর মধ্য দিয়ে তাদের বিষয়ভিত্তিক পড়ালেখা যেমন বিস্তৃত হয়, তেমনি হাতেকলমে পরীক্ষা-নিরীক্ষা বা কাজ করার মধ্য দিয়ে তারা ওই বিষয়ে বাস্তবানুগ জ্ঞান অর্জন করে। দলগত কাজের মধ্যে দিয়ে তাদের পারস্পরিক বিনিময়ের ক্ষেত্রও প্রসারিত হয়। এমন একটি শিক্ষণ পদ্ধতি বাস্তবায়ন করতে হলে বর্তমান পাঠক্রম ও শেখার পদ্ধতি ঢেলে সাজাতে হবে। এতে শিক্ষকদের গুণগত মানের পরিশ্রম অধিক হবে, ফলে তাদের সামর্থ্য বাড়ানোর জন্য পদক্ষেপ নিতে হবে।

বিদ্যালয়ে দুপুরের খাবার:

শিশুর পুষ্টি নিশ্চিত করা ও পাঠে মনোযোগ ধরে রাখার স্বার্থে বিদ্যালয় থেকে শিশুকে দুপুরের খাবার দেওয়ার গুরুত্ব সংশ্লিষ্ট সকলেই এখন উপলব্ধি করেন, কিন্তু তার বাজেট ও ব্যবস্থাপনা সহজ নয়। দুপুরের খাবার অনেক শিল্পোন্নত দেশের বিদ্যালয় কার্যক্রমের অপরিহার্য অংশ। যা থেকে বোঝা যায় এটি শুধু দরিদ্র পরিবারের শিশুদের বিষয় নয়, সব ধরনের পরিবারের শিশুর জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

বাজেট ও প্রকল্প বাস্তবায়নে কঠোর নজরদারি:

শিক্ষার উন্নয়নে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপগুলো নিতে কিছু ক্ষেত্রে উপযুক্ত বাজেট বরাদ্দ করতে হবে, আবার কিছু ক্ষেত্রে প্রয়োজন আরও উদ্ভাবনমূলক পন্থা ও কৌশল অবলম্বন এবং পরিকল্পনার সঠিক বাস্তবায়নের জন্য কঠোর নজরদারি।

৪. মানউন্নয়নে চাই এখনই উপযুক্ত উদ্যোগ:

বিশ্ব ব্যাংকের উল্লিখিত পর্যালোচনাপত্র অনুযায়ী, পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের মাত্র ২৫ শতাংশের উপযুক্ত পর্যায়ের বাংলা বিষয়ে জ্ঞান এবং মাত্র ৩৩ শতাংশের গণিত বিষয়ে উপযুক্ত জ্ঞান রয়েছে। অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ৪৪, ৪৪ ও ৩৫ শতাংশের মধ্যে যথাক্রমে বাংলা, ইংরেজি ও গণিত বিষয়ে উপযুক্ত পর্যায়ের জ্ঞান রয়েছে। চিত্রটি যে একেবারেই উৎসাহব্যঞ্জক নয় তা বলা বাহুল্য।

বিশেষজ্ঞদের মতে, বিশ্বের ভবিষ্যৎ ১১টি উদীয়মান অর্থনৈতিক শক্তির একটি বাংলাদেশ। কিন্তু তাদের শঙ্কা শুধুমাত্র শিক্ষায় পিছিয়ে থাকার কারণে অনেক প্রতিশ্রুতির সেই ভবিষ্যৎ মিথ্যা হয়ে যেতে পারে। এ পরিস্থিতি মোকাবেলায় তাই আমাদের উদ্যোগী হতে হবে এবং তা এখনই।

লেখকদ্বয়:

ড. শফিকুল ইসলাম: ব্র্যাকের শিক্ষা কর্মসূচির পরিচালক

প্রিসিলা রাজ: সাংবাদিক, অনুবাদক ও গবেষক।