একটি বিস্ময়কর ঘটনা

মুহম্মদ জাফর ইকবালমুহম্মদ জাফর ইকবাল
Published : 28 July 2017, 04:52 AM
Updated : 28 July 2017, 04:52 AM

১.
খবরের কাগজ খুলে যখনই আমি তিতুমীর কলেজের ছাত্র সিদ্দিকুর রহমানের চোখ নষ্ট হয়ে যাওয়ার খবরটি পড়ি, তখনই এক ধরনের অপরাধবোধ অনুভব করি। অনেকেই একটু অবাক হয়ে ভাবতে পারেন এ ধরনের একটা ঘটনা ঘটতে দেখে আমি দুঃখ পেতে পারি, হতাশা কিংবা ক্ষোভ অনুভব করতে পারি, কিন্তু অপরাধবোধ অনুভব করার কারণ কী? আসলে তার একটি কারণ আছে।

এই জুলাই মাসের ১২ তারিখ কবি নজরুল সরকারি কলেজের একজন ছাত্রীর কাছ থেকে আমি একটা ই-মেইল পেয়েছিলাম। ই-মেইলটির শুরুতেই সে লিখেছে:

"গত ছয় মাস আগে ঢাকা বিভাগের সাতটি কলেজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতাধীন করা হয়। এরপর থেকে এই সাত কলেজের সব কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়। এখন পর্যন্ত কোনো পরীক্ষা ক্লাস তো দূরের কথা আমরা কোনো নোটিসও পাইনি। সাত কলেজের প্রায় দুই লাখ ছাত্রছাত্রী অনিশ্চিত ভবিষ্যতের ভেতরে আছি।

"আমাদের পড়াশোনা, ক্যারিয়ার সবকিছু অচল হয়ে যাচ্ছে। পরিবার প্রশ্ন করছে, ক্লাস হচ্ছে না কেন? পরীক্ষা হচ্ছে না কেন? কিন্তু কোনো উত্তর কি আছে আমাদের কাছে? নেই স্যার, উত্তর নেই। প্লিজ স্যার, কোনো কিছু সাজেস্ট করুন। আমাদের এখন কী করা উচিত?"

এই ছাত্রীটি আরও দুই লাখ ছাত্রছাত্রীর পক্ষ থেকে আমার কাছে জানতে চেয়েছে, তাদের এখন কী করা উচিত। আমি তাকে কিছু বলতে পারিনি। আমি জানতাম না ঢাকার সাতটি গুরুত্বপূর্ণ কলেজের লেখাপড়া সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে আছে। আমি আরও অনেক কিছু জানতাম না, ছাত্রীটির ইমেইল থেকে সেগুলো জানতে পেরেছি।

যেমন অনেকেই হয়তো জানেন না, ঢাকার সাতটি বড় কলেজ ছিল জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে। কলেজগুলোর শিক্ষার মান উন্নয়ন, সেশনজট নিরসন, পরীক্ষার ফলাফল তাড়াতাড়ি প্রকাশ করার জন্য মাস কয়েক আগে এই সাতটি কলেজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে আনা হয়েছে। এই সাত কলেজের প্রত্যেকটিতে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর পর্যায়ে ৩০টি বিষয়ে পড়ানো হয়।

এ বছর ১৬ ফেব্রুয়ারির পর থেকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় এই সাত কলেজের কোনো কাজকর্ম দেখছে না। ফেব্রুয়ারি মাস থেকে জুলাই মাস– এই ছয় মাস ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা কোনোভাবেই উপকৃত হয়নি বরং তাদের শিক্ষার ভবিষ্যৎ অদ্ভুতভাবে ঝুলে রয়েছে।

ছাত্রীটি আরও অনেক গুরুতর সমস্যার কথা বলেছে। যেমন: জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট থেকে সাত কলেজের নাম মুছে দেওয়া হয়েছে, তাদের কোনো সিলেবাস নেই, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে কোনো যোগসূত্র নেই, পরীক্ষার বা ফর্ম ফিলাপের কোনো নোটিস নেই ইত্যাদি ইত্যাদি।

আমার কাছে সাহায্য চাওয়া এই লম্বা ইমেইলটি খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে পড়েছি, কিন্তু আমি তাদের কীভাবে সাহায্য করতে পারব, কিছুতেই ভেবে বের করতে পারিনি। আমার নিজের বিশ্ববিদ্যালয় হলে খোঁজখবর নিতে পারতাম, কিন্তু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো প্রতাপশালী বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ব্যাপারে আমি কেমন করে আমার নাক গলাব?

আমি তখন নিজেকে বোঝালাম যে, এই সাতটি কলেজের কোনোটিই ছোটখাটো কলেজ নয়, সবগুলোই অনেক বড় কলেজ। বিশেষ করে ইডেন কলেজ হচ্ছে সারা পৃথিবীর মাঝে সবচেয়ে বড় মহিলাদের কলেজ। তাদের প্রিন্সিপাল মহোদয়রা নিশ্চয়ই ব্যাপারগুলো জানেন এবং তারা নিশ্চয়ই একটা সমাধান বের করে আনবেন। এ ছাড়া চিঠিতে লেখা ছিল ছাত্রছাত্রীরা এর মাঝে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর এবং পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি বিভাগের ছয় মাস কিংবা নয় মাসের সেশনজট একটি ব্যাপার, কিন্তু দুই লাখ ছাত্রছাত্রীর সেশন-জট রীতিমতো রাষ্ট্রীয় বিপর্যয়। এত বড় একটা বিষয় কারও নজরে পড়বে না– সেটা তো হতে পারে না। নিশ্চয়ই কিছু একটা করা হবে। শুরু করার আগেই যদি ছয় মাসের সেশন-জ্যাম থাকে তাহলে লেখাপড়া শেষ হতে হতে নিশ্চিতভাবেই সেটা কয়েক বছরের সেশন-জ্যামে রূপ নেবে। দুই লাখ ছেলেমেয়ের জীবন থেকে দুই বছর সময় কেড়ে নেওয়া যদি রাষ্ট্রীয় বিপর্যয় না হয়, তাহলে রাষ্ট্রীয় বিপর্যয় কী?

২.
কাজেই ২০ জুলাই বৃহস্পতিবার সকালবেলায় যখন এই সাতটি কলেজের ছেলেমেয়েরা শাহবাগে তাদের দাবি নিয়ে উপস্থিত হল সেটি সঙ্গে সঙ্গে আমার নজরে এল। কিছুক্ষণের মাঝে পুলিশের অ্যাকশনের খবর পেলাম এবং দুপুরবেলার মাঝে খবরে দেখতে পেলাম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা করেছে।

যে ঘটনাটি গত ছয় মাসে হতে পারেনি ছাত্রছাত্রীরা পথে নামার সঙ্গে সঙ্গে সেটি ঘটে গেছে!

(পরে আমি জানতে পেরেছি যে পরীক্ষার তারিখটি নাকি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং সাত কলেজের প্রিন্সিপালরা মিলে দুদিন আগে ঠিক করে রেখেছিলেন, কিন্তু তথ্যটি ক্ষুব্ধ ছাত্রছাত্রীদের কাছে পৌঁছানোর সৌজন্যতাটুকু দেখানোর কেউ প্রয়োজন মনে করেননি। ছাত্রছাত্রীরা যখন শাহবাগে জমা হয়েছিল তখন সেখানে সরাসরি সেই তথ্যটি পৌঁছে দিলে কী হত? ভাইস চ্যান্সেলরের বাসা থেকে শাহবাগে দশ মিনিটের মাঝে পায়ে হেঁটে চলে আসা যায়।)

শাহবাগের এই ঘটনাটি দেশের জন্য একটা খুব খারাপ উদাহরণ হয়ে রইল। দেশের সব মানুষ জানতে পারল একটা খুবই ন্যায্য দাবিও সরাসরি আদায় করা যায় না। সে জন্যে পথে নামতে হয়, রাস্তাঘাট বন্ধ করতে হয়, যানবাহন থামিয়ে দিতে হয়। এবং সেটি করা হলে ম্যাজিকের মতো কাজ হয়। যে কাজটি ছয় মাসেও হয়নি সেটি কয়েক ঘণ্টার মাঝে হয়ে যায়। কাজেই আমি নিশ্চিতভাবে অনুমান করতে পারি এই ঘটনা ভবিষ্যতে আরও ঘটবে। শুধু শাহবাগে নয়, সারা দেশে।

৩.
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন কর্মকর্তা পায়ে হেঁটে এসেও দশ মিনিটের মাঝে ছেলেমেয়েদের জানাতে পারত যে তাদের দাবি দুদিন আগে পূরণ করা হয়ে গেছে। ছেলেমেয়েরা প্রথম প্রথম একটু হম্বিতম্বি করত তারপর খুশি হয়ে বাড়ি ফিরে যেতে পারত। এতগুলো ক্ষুব্ধ ছেলেমেয়ের মুখোমুখি হতে যদি তাদের সাহস না থাকে তাহলে পুলিশদের দিয়েও সেই তথ্যটি বিশ্বাসযোগ্যভাবে তাদের কাছে পৌঁছানো যেত, কিন্তু সেটি করা হয়নি।

যেটি করা হয়েছে, সেটি হচ্ছে পুলিশি অ্যাকশন। রাস্তাঘাট বন্ধ করে দেওয়া হলে মানুষজনের দুর্ভোগ কমানোর জন্য পুলিশ নিরুপায় হয়ে এই ধরনের অ্যাকশনে যেতেই পারে। তবে যখন রাজনৈতিক নেতারা বিদেশ থেকে দেশে আসবেন এবং তার দলের সমর্থকরা তাকে সংবর্ধনা জানানোর জন্য এয়ারপোর্ট রোডের যানবাহন বন্ধ করে দেবেন তখনও পুলিশের একই ধরনের তৎপরতা দেখলে তাদের সদিচ্ছার ওপর বিশ্বাস আমার আরও বেড়ে যাবে।

যাইহোক, ক্ষুব্ধ ছেলেমেয়েদের ওপর লাঠিচার্জ করা হল, তাদের ওপর টিয়ার গ্যাস ছোড়া হল। সেই টিয়ার গ্যাসের শেলের আঘাতে তিতুমীর কলেজের ছাত্র সিদ্দিকুর রহমান পথে লুটিয়ে পড়ল। তাকে উদ্ধার করা দূরে থাকুক, সে বেঁচে আছে না মারা গেছে– সেটা দেখার জন্যেও কোনো পুলিশ তার কাছে এল না। শেষ পর্যন্ত একজন পথচারী তাকে টেনে সরিয়ে নিয়ে হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করল।

পুলিশের আচরণ যে মানবিক আচরণ ছিল না– সেটা আমরা পরের কয়েকদিনের মাঝে টের পেলাম। একজন-দুজন নয়, বারোশ ছেলেমেয়ের বিরুদ্ধে মামলা করে দেওয়া হল। (এর আইনগত প্যাঁচটুকু কী আমি জানি না, এই মামলার আসামি দেখিয়ে তারা যে কোনো সময়ে এই সাত কলেজের ছাত্রছাত্রীদের গ্রেপ্তার করতে পারবে?)

শুধু যে মামলা হয়েছে তা নয়, সংবাদমাধ্যমে দেখেছি এই মামলা হচ্ছে হত্যা মামলা! পরীক্ষার তারিখের দাবিতে একত্র হওয়া সাত কলেজের ছেলেমেয়েরা সেদিন শাহবাগে যে তাণ্ডবই করে থাকুক তারা যে কাউকে হত্যা করার জন্য একত্র হয়নি, সেটি বোঝার জন্য কি আইনস্টাইন হতে হয়?

সংবাদমাধ্যমে দেখেছি পুলিশ ছেলেমেয়েদের হাত থেকে তাদের ব্যানারটি কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছে। পুলিশকে নিশ্চয়ই লাঠি দিয়ে পিটিয়ে একজন বিক্ষোভকারীকে ছাতু করে ফেলার অধিকার দেওয়া হয়েছে, কিন্তু আমি নিশ্চিতভাবে বলতে পারি কারও হাত থেকে তাদের ব্যানার কেড়ে নেওয়ার অধিকার দেওয়া হয়নি। কোনো ছাত্রছাত্রীকে যদি ছয় মাস সময়ের ভেতরেও পরীক্ষার তারিখ দেওয়া না হয় এবং সেই কথাটি যদি এক টুকরো কাপড়ে লিখে হাতে ধরে রাখে, সেটি কারও কেড়ে নেওয়ার অধিকার নেই।

ব্যানার কেড়ে নেওয়ার ঘটনা আমি অবশ্য আগেও দেখেছি। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা ভাইস চ্যান্সেলরের বিরুদ্ধে আন্দোলন করার সময় একটা ব্যানার ধরে দাঁড়িয়েছিলেন। তখন ছাত্রলীগের ছেলেরা এসে শিক্ষকদের হাত থেকে সেই ব্যানার কেড়ে নিয়েছিল। কাউকে অসম্মান করতে হলে, তাচ্ছিল্য করতে হলে, অপমান করতে হলে তার হাত থেকে ব্যানার কেড়ে নিতে হয়।

বলতে কোনও দ্বিধা নেই, আমি মনে মনে দুশ্চিন্তায় ছিলাম, সাত কলেজের ছেলেমেয়েদের ওপর ছাত্রলীগের কর্মীরা না আবার হামলা করে বসে। পুলিশ কিছু করলে অনেক সময়েই জবাবদিহি করতে হয়, ছাত্রলীগের সেই ঝামেলা নেই। এই দেশে এই মুহূর্তে তারা যা ইচ্ছা করতে পারে কেউ তাদের বিরুদ্ধে একটা কথা বলতে পারবে না।

সিদ্দিকুর রহমান এখন হাসপাতালে, তার চোখের চিকিৎসার হচ্ছে। চোখের দৃষ্টি ফিরিয়ে আনা যায় কি না, তার চেষ্টা করা হচ্ছে। সংবাদমাধ্যমের খবরে দেখতে পেলাম ঠিক এই সময়ে পুলিশ নানাভাবে প্রমাণ করার চেষ্টা করছে পুরো ঘটনায় তাদের কোনো দোষ নেই। তদন্ত কমিটি হচ্ছে, তদন্ত হচ্ছে এবং আমি মোটামুটি নিশ্চিত কোনো না কোনোভাবে শেষ পর্যন্ত প্রমাণ করে ফেলা হবে পুরো ঘটনাটিতে পুলিশের কোনো দোষ নেই এবং ছাত্রছাত্রীরা নিজেরা নিজেদের ভেতর ঢিল ছোড়াছুড়ি করে এই ঘটনাটি ঘটিয়েছে।

তবে আমি শিক্ষামন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। তিনি হাসপাতালে গিয়ে সিদ্দিকুর রহমানকে দেখে এসে এই ছেলেটি এবং তার আরও দুই লক্ষ সহপাঠীর দাবির প্রতি এক ধরনের সম্মান জানিয়েছেন। সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা, সিদ্দিকুর রহমানের চোখের চিকিৎসার যাবতীয় খরচের দায়িত্ব নিয়ে তাকে চেন্নাইয়ের চোখের হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছে। ছেলেটির মা অসহায়ভাবে তার সন্তানের মাথায় হাত দিয়ে শূন্য দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছেন– এই দৃশ্যটি আমি ভুলতে পারছি না।

৪.
আমাদের দেশে অনেক নামিদামি বিশ্ববিদ্যালয় আছে এবং সেই বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেক সৌভাগ্যবান ছেলেমেয়েরা লেখাপড়া করে। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষকেরা খুব আন্তরিকভাবে ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া করান– সেটি বলা যাবে না; ভালো ছেলেমেয়েরা নিজের আগ্রহে লেখাপড়া করে বিশ্ববিদ্যালয়ের নামটুকু ধরে রেখেছে।

যে বিশ্ববিদ্যালয় যত ভালো সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছেলেমেয়েরা তত দ্রুত ডোনাল্ড ট্রাম্পের সেবা করার জন্যে চলে যায়। কোনো জরিপ নেওয়া হয়েছে কি না জানি না, কিন্তু যদি নেওয়া হয় আমার ধারণা আমরা দেখব, এই দেশের মূল চালিকাশক্তি দেশের নামিদামি বিশ্ববিদ্যালয়ের নামিদামি ছাত্রছাত্রীরা নয়, দেশের মূল চালিকাশক্তি এই দেশের অসংখ্য কলেজের অসংখ্য ছেলেমেয়ে। ঢাকা শহরের সাতটি কলেজের যদি দুই লাখ ছেলেমেয়ে লেখাপড়া করে তাহলে সারা দেশের এই ডিগ্রি কলেজগুলোতে কত ছেলেমেয়ে লেখাপড়া করছে, সেটি অনুমান করা যায়।

উচ্চশিক্ষার কথা বলা হলেই আমাদের চোখের সামনে দেশের বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ছবি ভেসে ওঠে। ডোনাল্ড ট্রাম্পের সেবা করার জন্যে হলেও এই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে ঠিকভাবে গড়ে তোলার দায়িত্ব আছে। কিন্তু আমার ধারণা, তার থেকে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে সারা দেশের অসংখ্য কলেজ।

যদি সেগুলোর লেখাপড়ার মান বাড়ানো হয়, তাহলে শুধু বিশাল সংখ্যার কারণেই তার প্রভাব হবে অনেক বিশাল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে যে সাতটি কলেজের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যদি সেই কলেজের ছেলেমেয়েদের নিজের মূল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছেলেমেয়েদের মতো বিবেচনা করে লেখাপড়ার মান বাড়িয়ে তুলত, তাহলে কি একটা ম্যাজিক হয়ে যেত না?

লেখাপড়া করার জন্য, পরীক্ষা দেওয়ার জন্য ছেলেমেয়েরা পথে নেমেছে, পুলিশের মার খাচ্ছে সারা পৃথিবীর আর কোথাও কি এ রকম ঘটনা ঘটেছে?

এর চাইতে বিস্ময়কর ঘটনা আর কী হতে পারে?