প্রধানমন্ত্রীর হিসাবনিকাশ ও আর্থসামাজিক উন্নয়নে বাংলাদেশ

এহসান ইমদাদ
Published : 19 Jan 2017, 05:41 AM
Updated : 19 Jan 2017, 05:41 AM

বিএনপি সরকারের শেষ বছর বাংলাদেশের জনগণের মাথাপিছু আয় ছিল ৫৪৩ মার্কিন ডলার। আজ আওয়ামী লীগ সরকার তা উন্নীত করে নিয়ে এসেছে ১,৪৬৬ ডলারে। বিএনপি সরকারের শেষ বছর অতি দরিদ্রের হার ছিল ২৪.২৩%, আজ তা ১২ শতাংশে নেমে এসেছে। একইভাবে ২০০৫ সালে দরিদ্রের হার ছিল ৪১.৪ শতাংশ, এখন তা কমে হয়েছে ২২.৪ শতাংশ।

ধারাবাহিকভাবে ৬.৫ শতাংশ হারে প্রবৃদ্ধি ধরে রেখে ২০১৫-১৬ অর্থবছরে এটি হয়েছে ৭.০৫। ২০০৯ সালে দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদন ছিল মাত্র ৩ হাজার ২০০ মেগাওয়াট, বর্তমানে বিদ্যুৎ উৎপাদন বেড়ে হয়েছে ১৫ হাজার ৩০০ মেগাওয়াটের বেশি।

সাক্ষরতার হার ৪৪ শতাংশ থেকে ৭১ শতাংশে উন্নীত হয়েছ। ১৬ হাজার ৪৩৮টি কমিউনিটি ক্লিনিক ও ইউনিয়ন স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র স্থাপন, মাতৃমৃত্যু হ্রাস পেয়ে প্রতি হাজারে হয়েছে ১.৮ জন এবং শিশুমৃত্যু ২৯ জনে হ্রাস পেয়েছে। ৪৮টি বৃহৎ সেতু নির্মাণ, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, ৪ লেন হাইওয়ে, ১৪টি ড্রেজার ক্রয় ও ১৭টি ক্রয় প্রক্রিয়াধীন, ৪টি অভ্যন্তরীণ নদীবন্দর স্থাপন, শিল্পায়ন ও বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার জন্য ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল, বেসরকারি খাতে ৪৪টি টিভি স্টেশন, ২২টি এফএম রেডিও ও ৩২টি কমিউনিটি রেডিও স্টেশনের অনুমতি প্রদান করা হয়েছে।

নারীর ক্ষমতায়নে বাংলাদেশ আজ বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় দেশগুলোর অন্যতম। ৫ হাজার ২৭৫টি ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার এবং ৮ হাজার ৫০০টি ই-পোস্ট অফিস স্থাপিত হয়েছে। ২৫ হাজার ওয়েবসাইট নিয়ে ওয়েবপোর্টাল 'তথ্য বাতায়ন' চালু হয়েছে। ২০১৫-১৬ বছরে বাংলাদেশে বৈদেশিক বিনিয়োগ হয়েছে ২২৩ কোটি ডলার। বিএনপি সরকারের শেষ বছর ২০০৬ সালে ছিল মাত্র ৪৫ কোটি ডলার।

বছরে খাদ্য উৎপাদন প্রায় ৪ কোটি মেট্রিক টনে উন্নীত হয়েছে। খাদ্য ঘাটতির বাংলাদেশ এখন খাদ্য উদ্বৃত্তের দেশে পরিণত হয়েছে। আজ মিঠাপানির মাছ উৎপাদনে বাংলাদেশ পৃথিবীতে চতুর্থ এবং শাকসবজি উৎপাদনে পৃথিবীতে তৃতীয়। প্রতিরক্ষা, শিক্ষা, ক্রীড়াঙ্গন, নৌ যোগাযোগ ব্যাবস্থায় অভুতপূর্ব সাফল্য এবং সর্বোপরি বাংলাদেশকে 'ডিজিটাইজেশন'-এ এগিয়ে নিয়ে আজ বাংলাদেশ অর্থনৈতিক উন্নয়নশীল শীর্ষ ৫ দেশের একটিতে পরিণত হয়েছে।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হাজার বছরের বাঙালির ইতিহাসের শ্ৰেষ্ঠ দেশ পরিচালক হিসেবে শুধু বিশ্বকেই তাক লাগিয়ে দেননি, বিশ্বের বুকে বাঙালি জাতির আত্মমর্যাদা প্রতিষ্ঠিত করেছেন।

আশির দশকে বিদেশি ছাত্র হিসেবে পড়তে যাওয়ার দুবছর পর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদেশি ছাত্রছাত্রীদের সমিতির সভাপতি নির্বাচিত হই। আমেরিকাতে বসবাসকারী বিদেশি ছাত্রছাত্রীদের একটি অনুষ্ঠানে আমি "একটি বাংলাদেশ তুমি জাগ্রত জনতার, সারা বিশ্বের বিস্ময় তুমি আমার অহংকার" গানটি বাজিয়ে ইংরেজিতে অনুবাদ করে দিই। গানটির দ্বিতীয় লাইনের "সারা বিশ্বের বিস্ময়" শব্দ তিনটি নিয়ে ওরা কৌতূহল দেখাল; কেউ হাসল এই বলে যে অবশ্যই বাংলাদেশ তো সারা বিশ্বের বিস্ময় হবেই– হতদরিদ্র ৫৬ হাজার বর্গ মাইলের প্রতি বর্গ মাইলে ১,৭৬০ জন বসবাস করে, অর্ধেক জনসংখ্যা তিন বেলা ঠিকঠাক খেতে পায় না; দুর্নীতি আর দুরবস্থার এই দেশ যে বেঁচে আছে তা তো সারা বিশ্বের বিস্ময় হবেই!

ওদের কথায় কষ্ট পেয়েছি, সেদিন এর উত্তর ছিল না আমার কাছে। আজ আমার সেই সহপাঠীরা বিভিন্ন দেশে প্রতিষ্ঠিত। আজ আমার অহংকার করে বলতে ইচ্ছে করে–

অর্থনৈতিক অগ্রগতির সূচকে বাংলাদেশকে শীর্ষ দেশগুলোর একটিতে উন্নীত করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনি আমাকে এবং আমার মতো হাজারো বাঙালিকে বিশ্বে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবার সুযোগ করে দিয়েছেন।

গীতিকার নাইম গহরের সেই গানের স্বপ্ন "সারা বিশ্বের বিস্ময়, তুমি আমার অহংকার" সত্যিকার অর্থেই বাস্তবায়িত হল।

বাংলাদেশের অর্থনীতি এখন প্রায় ৮ লাখ কোটিরও বেশি; জিডিপির ভিত্তিতে বিশ্বে ৪৪তম এবং ক্রয় ক্ষমতার ভিত্তিতে বিশ্বে ৩২তম। একসময়ের দুর্ভিক্ষ, দুর্নীতি, আর দুরবস্থার দেশ আজ 'পরমাণু ক্লাব'-এ যুক্ত হচ্ছে। হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনা হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ দেশ পরিচালক হবেন– এ তো কোনো বিস্ময়ের বিষয় নয়।

আওয়ামী লীগের কোনো প্রতিপক্ষ নেই। আমি আবারও বলছি, আওয়ামী লীগের বিপক্ষে কোনো রাজনৈতিক দল নেই। বাংলাদেশ পৃথিবীর বাইরের কোনো দেশ নয়, পৃথিবীর রাজনীতি বিভিন্ন দেশের মানুষ, সমাজ, সংস্কৃতি, ধর্ম, সভ্যতা ইত্যাদি ঘিরে। আবার অন্যভাবে বলা যায়, সমাজ নিয়ে রাজনীতি এবং পৃথিবীর মানুষ সামাজিকভাবে প্রধানত দুই ভাগে বিভক্ত– প্রগতিশীল ও রক্ষণশীল। এ দুই ভাগের ভেতরও রয়েছে তিন আর তিন মোট ছয় ভাগ– অতি উদারপন্থী, প্রগতিশীল এবং প্রগতিশীল থেকে মধ্যপন্থী; আবার অন্য দিকে আছে কট্টর মৌলবাদী, রক্ষণশীল, রক্ষণশীল থেকে মধ্যপন্থী।

ঐতিহাসিকভাবে আওয়ামী লীগ একটি প্রগতিশীল রাজনৈতিক দল এবং এর বিপরীতে বাংলাদেশে আজও কোনো শক্তিশালী রক্ষণশীল দল তৈরি হয়নি। বিএনপি ও জাতীয় পার্টি উভয়ই বিভিন্ন মতাবলম্বীদের সংমিশ্রনে দুটি জগাখিচুরি দল। যুদ্ধাপরাধী জামায়াত বাংলার মাটিতে 'অবৈধ'। তাই আগামীদিনগুলোতে আওয়ামী লীগকেই দেশ চালাতে হবে।

বাংলাদেশকে সামনে এগিয়ে যেতে হলে কিছু বৈষম্য দূর করাসহ কিছু সংস্কার প্রয়োজন। দুর্নীতি, শ্রেণিবৈষম্য এবং সর্বোপরি ব্রিটিশ সামন্ত প্রথা এখনও পুরোপুরি যায়নি। এর কিছু উদাহরণ নিচে তুলে ধরা হল:

এক. দেশের নাগরিক প্রথম, বিদেশি দ্বিতীয়: বাঙালির অাতিথেতার খ্যাতি বিশ্বজুড়ে। উন্নত দেশে বিদেশি বলা মানে একটু ছোট করে দেখা আর বাংলাদেশে বিদেশি মানে অতিরিক্ত সম্মান ও অগ্রাধিকার। তাই বলে বিদেশিরা বেশি জানে বা বোঝে তা নয়। বিশেষজ্ঞ নিয়োগে বাংলাদেশি বা এনআরবিদের অগ্রাধিকার দেওয়া প্রয়োজন। বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে আছে বাঙালি পেশাজীবী, স্কলারস এবং সফল ব্যাবসায়ী; তাদের দেশের কাজে লাগানো যায়।

দুই. সিভিল সার্ভিস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন: মাননীয় প্রধানমন্ত্রী অনেকবার বলেছেন, সরকারি কর্মকর্তারা জনগণের সেবক, জনগণের ট্যাক্স ও ভ্যাট দিয়ে তাদের বেতন দেওয়া হয়। কিন্তু কার্যত তারা এখনও স্যার সেজে বসে আছেন।

তিন. পুলিশ রিফর্ম অ্যাক্ট ১৮৬১: আজও তার বাস্তবায়ন হয়নি।

চার. সরকারি ভাষা: সরকারি ভাষা এখনও ব্রিটিশদের শেখানো কলোনিয়াল ভাষাই রয়ে গেছে! উপরন্তু বাংলা অনুবাদ ওই কলোনিয়াল ভাষার মতো দুর্বোধ্য রয়ে গেছে। এ ছাড়া দায়িত্ব এড়াবার জন্য তাদের প্রতিবেদন এখনও প্রত্যক্ষ না হয়ে পরোক্ষই রয়ে গেছে।

পাঁচ. শ্রেণিবৈষম্য: এখনও কোনো অনুষ্ঠানে সরকারি বা বেসরকারি প্রথমে সোফা, এরপর হাতলওয়ালা চেয়ার, এরপর হাতলছাড়া এবং শেষে বেঞ্চিতে বসতে দেওয়া হয়। এতে করে আমাদের শ্রেণিবৈষম্য প্রকটভাবে চোখে পড়ে।

ছয়. বড় স্যারের চেয়ারে তোয়ালে: আড়াই শ বছর পূর্বে তৎকালীন কিছু বর্ণবাদী ইংরেজ সাহেব ভারতীয়দের সংস্পর্শে যেন আসতে না হয় এ জন্য তারা চেয়ারে তোয়ালে বিছিয়ে বসত। সরকারি বড় কর্মকর্তাদের চেয়ারে সেই তোয়ালের ব্যবহার এখনও চালু রয়েছে।

সাত. ৪০টা স্বাক্ষরের এখনও প্রয়োজন: মাত্র পাঁচ হাজার শেতাঙ্গ ইংরেজ এসেছিল ৩০ কোটি ভারতীয় শাসন করতে (১৭৬৭ থেকে ১৯৪৭ সোলের গড় হিসাব)। তাই অধীনস্থ ভারতীয়দের থেকে ৪০ জনের স্বাক্ষর নেওয়া হত সরকারি কর্মকাণ্ডে যেন ভুল হলে ওই ৪০ জনকে দায়ী করা যায়। এতে ফাইল ৪০টা ডেস্ক ঘুরে আসলেও কোনো অসুবিধা হত না। কারণ তখন ইংলান্ড থেকে ভারত আসতে সময় লাগত ৩ মাস। এখন ইংল্যান্ড থেকে ঢাকায় ৯ ঘণ্টায় আসা যায়। আজ ব্রিটিশরা নেই, অথচ ফাইল পাস হতে এখনও অনেক টেবিল ঘুরতে হয়।

আট. বিনিয়োগবান্ধব ইমিগ্রেশন পলিসি: আমরা অনেক সময় আমেরিকাকে দোষারোপ করি ভিসা, গ্রিনকার্ড বা নাগরিকত্ব পেতে দেরি হলে। আমরা কি জানি বাংলাদেশের ইমিগ্রেশন পলিসি কতটা কঠিন! প্রথমত বাংলাদেশি নাগরিকত্বের কথা বলি। একজন শেতাঙ্গ নারী জন্মসূত্রে মার্কিন নাগরিক, এবং একজন বাংলাদেশির সঙ্গে বিবাহিত প্রায় ৩০ বছর। বাংলাদেশে বসবাস করছে ৯ বছর। নাগরিকত্ব দূরে থাকে আজ পর্যন্ত বাংলাদেশে থাকার 'স্থায়ী কার্ড' অর্থাৎ যাকে আমেরিকা বলে 'গ্রিন কার্ড', তা-ও পাননি। শুধুমাত্র মার্কিন পাসপোর্ট একটা সিল পেয়েছে তাতে লেখা আছে, "বাংলাদেশে আসতে ভিসা লাগবে না।"

বাংলাদেশি নাগরিক না হলে স্বামীর মৃত্যুর পর সে এ দেশে কোনো সম্পত্তির বা ব্যাবসার মালিক হতে পারবে না। এ ছাড়াও আছে নানা প্রকার বৈষম্য, যেমন বাংলাদেশি ছেলে বিদেশি মেয়ে বিয়ে করলে একনাগাড়ে ১০ বছর বাংলাদেশে থাকলে সেই ছেলে তার স্ত্রীর জন্য বাংলাদেশি নাগরিকত্বের আবেদন করতে পারবে, কিন্তু বাংলাদেশি মেয়ে যদি বিদেশি ছেলে বিয়ে করে সেক্ষেত্রে মেয়েটি তার স্বামীর জন্য কোনো আবেদনই করতে পারবে না।

অনেক সময় দেখা যায় ছেলে বা মেয়ে যেহেতু অন্তত একজন বাংলাদেশি তাই কেউ কেউ অবৈধভাবে বাংলাদেশি পাসপোর্ট বানিয়ে নেয়। যা হয়তো ভ্রমণের কাজে লাগে কিন্তু সম্পত্তির মালিকানা বা ব্যাবসায় যোগদানের সময় ধরা পড়বে। আরও আছে, স্বামী-স্ত্রী বিদেশি হলে সন্তান যদি বাংলাদেশে জন্ম নেয় সে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব পাবে না। অথচ হাজার হাজার বাঙালি গর্ববতী নারীকে আমেরিকা নিয়ে সন্তানের জন্ম দিয়ে মার্কিন পাসপোর্ট বানিয়ে বাংলাদেশে চলে আসে।

ফরেন ইনভেস্টমেন্ট আনার ক্ষেত্রেও রয়েছে অনেক জটিলতা। বাংলাদেশে কাজ করার অনুমতি পেতে ফাইল ঘোরে অনেক টেবিলে। এসব দিক বিবেচনার প্রয়োজন আছে।

নয়. সরকারি কর্মকর্তাদের কন্টিনিউস এডুকেশন: সরকারি কর্মকর্তাদের প্রমোশন বয়সের ভিত্তিতে না হয়ে কর্মদক্ষতার ভিত্তিতে হওয়া প্রয়োজন। বিসিএস পরীক্ষার বয়সসীমা থাকলে অনেক দক্ষ মানুষ পাওয়া যায় না। অনেক উন্নত দেশে এই পরীক্ষার বয়স সীমা ৫৯ পর্যন্ত আছে, যেমন যুক্তরাষ্ট্র। ওখানে আর্মি, নেভি, এয়ার ফোর্স এবং প্রাইভেট সেক্টরের অনেক ব্যক্তি পরীক্ষা দিয়ে সরকারি চাকরিতে যোগ দেয়। এতে সরকারও লাভবান হয়। সরকারি কর্মকর্তাদের প্রতি দুবছর অন্তর পরীক্ষা ও 'কন্টিনিউস এডুকেশন'-এর ব্যবস্থা থাকা প্রয়োজন। ইতোমধ্যেই সরকারি কর্মকর্তাদের কর্মদক্ষতা ও কর্মচঞ্চলতা বেসরকারি কর্মকর্তাদের থেকে নিম্নমানের এবং সেই সঙ্গে রয়ে গেছে কর্মস্থবিরতা। এভাবে চলতে থাকলে আগামীতে সরকারি কর্মকর্তারা অন্য কোথাও চাকরি তো পাবেই না, উপরন্তু তারা হয়ে পড়বে দেশের বোঝা। বিসিএস অফিসারদের ট্রেনিংয়ের অন্তত ১ বছর বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমিতে করা যেতে পারে।

দশ. দেশ চলবে জনপ্রতিনিধি দ্বারা: দেশ চালাবে জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধি এবং তাদের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করবে সরকারি কর্মকর্তারা। এর পরিবর্তে আমরা দেখছি জেলা প্রশাসক আর পুলিশ সুপাররা বিভিন্ন জেলাতে 'প্রধান অতিথি' আর 'বিশেষ অতিথি' হয়ে ঘুরে বেড়ান। বাংলাদেশের জেলা শহরগুলোতে কি পণ্ডিত, জ্ঞানীগুণী বা অন্তত বয়োজ্যেষ্ঠ কেউ নেই যাকে প্রধান অতিথি বা বিশেষ অতিথি বানানো যায়?

এগার. নিয়োগ এবং বরখাস্ত: সরকারি চাকরিতে যেমন নিয়োগ প্রথা আছে তেমনই বরখাস্ত প্রথাও পুরোমাত্রায় চালু থাকা প্রয়োজন। বর্তমানে সরকারি অফিসাররা মনে করেন, অন্যায় করলে ওএসডি হবেন, চাকরি তো যাবে না। সহকারী সচিব থেকে সচিব পর্যন্ত সবাইকে বিভিন্ন আকারের সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগ দিলে প্রশাসনের কাজের গতি বাড়বে। তাদেরও বুঝতে হবে ক্ষমতার সঙ্গে দায়িত্বও আসে। কিছু কিছু সরকারি কর্মকর্তা এবং কর্মচারির স্ত্রীরা এবং শ্বশুরবাড়ির লোকজন হঠাৎ করেই ধনী হয় যখন দুর্নীতি দমন বিভাগ তথ্য চায়। এ ব্যাপারে প্রতিবেশী দেশের আয়কর বিভাগকে অনুকরণ করা যায়।

বিশ্বাস করি, উপরোক্ত বিষয়গুলোর দিকে নজর দিয়ে প্রয়োজনীয় সংস্কার কর্মসূচি গ্রহণ ও সেসব বাস্তবায়নে উদ্যোগী হলে বাংলাদেশের সার্বিক সমৃদ্ধি আরও ত্বরান্বিত হবে।