প্রতিবাদী সঙ্গীতস্রষ্টার নোবেল জয় আর বিতর্ক

নাদির জুনাইদ
Published : 16 Oct 2016, 04:38 AM
Updated : 16 Oct 2016, 04:38 AM

সঙ্গীতশিল্পী হিসেবে পাঁচ দশকের বেশি সময়ের কর্মজীবনে বিভিন্ন অর্জন আর নিজের কাজের নান্দনিক ভিন্নতার জন্য অনেক আগেই ইতিহাসে স্থান করে নিয়েছেন বিখ্যাত মার্কিন সঙ্গীতরচয়িতা ও গায়ক বব ডিলান। এ সপ্তাহে তাঁকে নিয়ে তৈরি হল নতুন ইতিহাস। মার্কিন সঙ্গীত-ঐতিহ্যে অভিনব কাব্যিক অভিব্যক্তি সৃষ্টি করার জন্য বব ডিলানকে দেওয়া হল সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার। আর এই প্রথমবারের মতো একজন সঙ্গীতশিল্পী সাহিত্যে নোবেলজয়ী হলেন।

সুইডিশ অ্যাকাডেমির এই সিদ্ধান্ত নিয়ে অবশ্য বিতর্ক শুরু হয়েছে। বহু গুণীব্যক্তি যেমন ডিলানের নোবেল প্রাপ্তিতে আনন্দ প্রকাশ করছেন, তেমনি আবার অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন, কোনো কবি বা লেখককে সাহিত্যে পুরস্কার না দেওয়া কতটা যৌক্তিক। এই প্রশ্ন তোলা কতটা প্রয়োজনীয় তা নিয়েও ভিন্নমত থাকবে। হয়তো এই সিদ্ধান্ত অনেকেই বিতর্কিত বলে আখ্যায়িত করবেন সামনের দিনগুলোতেও। কিন্তু আমরা দৃষ্টি দিতে পারি ডিলানের রচনার দিকে যা স্পষ্ট করবে কেন তিনি গুরুত্বপূর্ণ এবং কিভাবে তাঁর কাজ সঙ্গীতের নির্দিষ্ট সীমানা অতিক্রম করে মানুষের নান্দনিক এবং রাজনৈতিক বোধ প্রাণিত করতে সক্ষম হয়েছে।

আমরা দেখতে পাই জনপ্রিয় সংস্কৃতির পরিসরে অবস্থান করেও ডিলানের সঙ্গীত টিকিয়ে রেখেছে প্রগাঢ়তা, ফলে সাধারণ মানুষের বোধগম্য সংস্কৃতি আর অগভীর থাকেনি এবং এই সংস্কৃতির ভোক্তারা পরিচিত আর অভ্যস্ত হয়েছে চিন্তাশীল বক্তব্যের সঙ্গে। বব ডিলান তাই কেবল একজন গায়ক নন, তিনি একজন রচয়িতা। সঙ্গীতের মাধ্যমে যে শৈল্পিক এবং সমাজসচেতন ভাবনা সৃষ্টি করে অগণিত মানুষের মন তিনি প্রভাবিত করেছেন তা কোনো কবি বা ঔপন্যাসিকের একই ধরনের অবদানের চেয়ে কম হতে পারে না।

বব ডিলানের জন্ম ১৯৪১ সালে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মিনেসোটায়। তাঁর আসল নাম রবার্ট অ্যালেন জিমারম্যান। যখন তাঁর বয়স ১৮ তখন থেকে তিনি 'বব ডিলান' নাম ব্যবহার করতে থাকেন। পরে নিজের আত্মজীবনীতে ডিলান লিখেছেন বিখ্যাত কবি ডিলান টমাসের কবিতার প্রতি তিনি আকৃষ্ট ছিলেন। ডিলান টমাসের একটি সুন্দর কথা হল, "যখনই একটি ভাল কবিতা লেখা হয় পৃথিবী আর আগের মতো থাকে না।"

এই তাৎপর্যপূর্ণ কথাটি কবি ডিলান টমাসের অনুরাগী সঙ্গীতশিল্পী বব ডিলানের সৃষ্টিতেও আমরা লক্ষ করি। বব ডিলানের বিভিন্ন বিখ্যাত গানের কথা আর সুর তুলে ধরে তাঁর ভাবনার গভীরতা, কল্পনাশক্তির পরিচয়, সত্য প্রকাশের সাহস এবং এই গানগুলো কেবল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফোক বা রক সঙ্গীতের পরিচিত পরিসরেই নতুন মাত্রা সংযোজন করেনি, সারা বিশ্বের বহু মানুষের মনে তা বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনেছে।

এই পরিবর্তন গতানুগতিকতার গণ্ডি ভেঙে দিয়ে নতুনভাবে মানুষকে চিন্তা করতে শেখানো, সমাজের যে অসঙ্গতি আর অন্যায় টিকে থাকার পরও মানুষের সচেতনতা দেখা যায় না– সেই নিষ্ক্রিয়তা প্রত্যাখ্যান করার জন্য মানুষকে গভীর ভাবনার মুখোমুখি করা। ডিলান তাই একজন প্রতিবাদী শিল্পী। জীবনে প্রতিনিয়ত দেখতে পাওয়া জটিল দিকগুলো সঙ্গীতের মাধ্যমে তিনি প্রকাশ করেছেন। কখনও সহজ ভাষায়, আবার কখনও অপ্রত্যক্ষভাবে যে অস্পষ্টতার সঙ্গে মিল পাওয়া যায় পরাবাস্তব বক্তব্যের।

গিটার আর হারমোনিকা নিয়ে ফোক, ব্লুজ আর রক সঙ্গীতের জনপ্রিয় সুরে গান পরিবেশন করে মানুষকে তিনি শুধুই বিনোদন দেননি। তাঁর গানের কথা মানুষকে গভীরভাবে ভাবতে উদ্বুদ্ধ করে। যে ভাবনায় মানুষ উদ্যোগী হলে শক্তিশালী হবে মানবিকতাবোধ, আর সামাজিক অন্যায়ের বিরুদ্ধে আমরা দেখব প্রতিরোধ।

ষাটের দশকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কিউবান মিসাইল সংকটকে কেন্দ্র করে উদ্বেগ আর যুদ্ধ পরিস্থিতি, জাতিগত বিভেদনীতি আর বৈষম্যের বিরুদ্ধে আফ্রিকান-আমেরিকান জনগোষ্ঠীর সিভিল রাইটস আন্দোলন জোরালো হওয়া প্রভৃতি রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে বিশ্বের অন্যান্য মহাদেশের মতো মার্কিন তরুণ-তরুণীদের মধ্যেও সৃষ্টি হয়েছিল বৈপ্লবিক চেতনা আর প্রথাবিরোধিতার ঝোঁক। বব ডিলানের গানে মার্কিন সঙ্গীতশিল্পী উডি গাথ্রির প্রভাব ছিল লক্ষণীয়। গাথ্রি সঙ্গীত পরিবেশনের সময় যে গিটার ব্যবহার করতেন সেই গিটারে লেখা থাকত– 'দিস মেশিন কিলস ফ্যাসিস্টস।' অর্থাৎ, গাথ্রির জন্য গিটার শুধুই বাদ্যযন্ত্র নয়, তা ছিল ফ্যাসিবাদী অত্যাচারের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা একটি অস্ত্র।

ডিলানও নিজের গান সাহসীভাবে ব্যবহার করেছেন সব ধরনের শোষণের বিরুদ্ধে মানুষকে সচেতন করার জন্য। নিজের ঘনিষ্ঠ বন্ধু অপর বিখ্যাত মার্কিন সমাজসচেতন সঙ্গীতশিল্পী জোয়ান বায়েজের সঙ্গে ষাটের দশকের শুরু থেকেই দেশে চলমান সিভিল রাইটস মুভমেন্টের পক্ষে সক্রিয়ভাবে কাজ করতে থাকেন ডিলান।

১৯৬৩ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অস্থির রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে প্রকাশিত হয় তাঁর দ্বিতীয় অ্যালবাম 'দ্য ফ্রিহুইলিং বব ডিলান'। এই অ্যালবামের প্রথম গানটি ছিল 'ব্লোইং ইন দ্য উইন্ড', যা ডিলানের সবচেয়ে বিখ্যাত গানগুলোর একটি। সারা বিশ্বের অগণিত মানুষের কাছে যা এখনও সমাদৃত। মাত্র ২২ বছর বয়সে নিজের এই গানে ডিলান প্রশ্ন তুলেছেন–

How many roads must a man walk down, before you call him a man?
How many years can some people exist before they are allowed to be free?
How many times can a man turn his head and pretend that he just doesn't see?
How many times must a man look up before he can see the sky?
How many years must one man have before he can hear people cry?
How many deaths will it take till he knows that too many people have died?

The answer, my friend, is blowing in the wind
The answer is blowing in the wind.

ডিলানের এই প্রশ্নগুলোর উত্তর আজও আমাদের জানা নেই। এখনও আকাশের দিকে না তাকিয়ে মানুষ তাকিয়ে থাকে কাদার দিকে। কান থাকার পরও অসহায় মানুষের কান্না কি আমরা শুনতে পাই? এখনও কি আমরা জানি কিছু মানুষের স্বার্থের কারণে আর কত নিরপরাধ মানুষকে প্রাণ হারাতে হবে? মানুষের মুক্তি আদৌ মিলবে কি না– সেই প্রশ্নের উত্তরও আমরা জানি না। আমরা জানি না আদৌ আমরা মানুষ হয়ে উঠতে পেরেছি কি না।

তরুণ ডিলানের সহজ কিন্তু তীক্ষ্ণ প্রশ্ন সমাজের অন্যায় আর বর্বরতার বিবরণ তুলে ধরে, আর সেই সঙ্গে অনুভূতিশীল মানুষকে মুখোমুখি করে আত্মজিজ্ঞাসার। যে প্রশ্নের সম্মুখীন হয়ে হয়তো আমাদের পক্ষে আর স্বস্তিতে থাকা সম্ভব হয় না। এই অ্যালবামেরই অপর বিখ্যাত গান 'আ হার্ড রেইনস আ-গনা ফল'-এ তিনি মূলত দেশের তরুণদের সম্বোধন করে তাদের জানাচ্ছেন এগিয়ে আসা বিপদের কথা–

I saw a newborn baby with wild wolves all around it
I saw ten thousand talkers whose tongues were all broken
I saw guns and sharp swords in the hands of young children
I heard ten thousand whispering and nobody listening
I heard one person starve, I heard many people laughing
And it's a hard, it's a hard, it's a hard, and it's a hard
It's a hard rain's a-gonna fall.

এই বিপদের কথা জানানোর পর ডিলান প্রশ্ন করছেন প্রিয় তরুণদের যে তারা এখন কী করবে? গানের শেষে তিনি স্পষ্ট করেছেন নিজের অবস্থান। সেই অবস্থান প্রতিবাদের এবং সাহসের। ডিলান বলছেন–

And the executioner's face is always well hidden
Where hunger is ugly, where souls are forgotten
Where black is the color, and none is the number
And I'll tell and speak it and think it and breathe it
And reflect from the mountain so all souls can see it
And I'll stand on the ocean until I start sinking
But I'll know my song well before I start singing.
.

প্রতিকূলতার মধ্যেও স্রোতের বিপরীতে থেকে লড়াই করার এই আত্মপ্রত্যয় কেবল কথায় নয়, নিজের কাজেও তিনি প্রমাণ করেছেন। মানবিকতার পক্ষে তিনি আছেন সবসময়, যে কারণে ১৯৭১ সালে বন্ধু জর্জ হ্যারিসনের আহ্বানে সাড়া দিয়ে তিনি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন ভারতে আশ্রয় নেওয়া বাঙালি শরণার্থীদের অর্থসাহায্য আর বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে জনমত গড়ে তোলার লক্ষ্যে আয়োজিত 'কনসার্ট ফর বাংলাদেশ'-এ অংশগ্রহণ করেছিলেন। এটি ছিল বিশ্বের প্রথম বেনেফিট কনসার্ট।

বব ডিলানের নিজের দেশ সেই সময় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করে সাহায্য করছিল পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীকে। কিন্তু নিউ ইয়র্কের ম্যাডিসন স্কোয়ার গার্ডেনে হাজার হাজার মার্কিন তরুণ-তরুণী দেখতে পায় তাদের প্রিয় শিল্পী বব ডিলান মঞ্চে উঠে অন্য অনেক বিখ্যাত সঙ্গীতশিল্পীর সান্নিধ্যে পরিবেশন করলেন তাঁর বিখ্যাত বিভিন্ন গান, সমর্থন করলেন বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে।

এই কনসার্টে সঙ্গীত পরিবেশন করা ছিল নিজে দেশের সরকারি নীতির বিপক্ষে যাওয়া। কিন্তু বহু দূরের এক দেশের অসহায় মানুষদের সাহায্য করার জন্য বব ডিলান এই মঞ্চে আসতে দ্বিধা করেননি। গ্ল্যামার থেকে দূরে থাকা বব ডিলান ম্যাডিসন স্কোয়ার গার্ডেনের মতো বিশাল স্থানে সঙ্গীত পরিবেশনেও স্বচ্ছন্দ ছিলেন না। কিন্তু সেই অনীহা কাটিয়ে শেষ পর্যন্ত এই গুরুত্বপূর্ণ কনসার্টে তিনি অংশগ্রহণ করেন। সাম্রাজ্যবাদ আর যুদ্ধের বিরুদ্ধে আরেকবার প্রকাশ করেন নিজের প্রতিবাদ। যুদ্ধবাজ ক্ষমতাশালীদের প্রতি তাঁর ঘৃণা প্রকাশ পেয়েছে 'মাস্টারস অফ ওয়ার' গানে, যেখানে তিনি লিখেছেন–

Come you masters of war/ you that build all the guns/ you that build the death planes/ you that build all the bombs/ I just want you to know/ I can see through your masks
Let me ask you one question/ is your money that good/ Will it buy you forgiveness/ Do you think it could?
I think you will find/ when your death takes its toll/ all the money you made/ Will never buy back your soul.

সামাজিক আন্দোলনের সময় রচিত 'দ্য টাইমস দে আর আ-চেঞ্জিং' গানে আবারও তিনি জোর দিয়েছেন সমাজ পরিবর্তনের উপর। রাজনৈতিক নেতাদের তিনি সম্বোধন করেছেন সরাসরি–

'Come senators, congressmen/ please heed the call/ don't stand in the doorway/ don't block up the hall.'

১৯৬৩ সালে হত্যা করা হয় সিভিল রাইটস আন্দোলনের সক্রিয় কর্মী মেডগার এভারসকে, যিনি বলেছিলেন– "একজন ব্যক্তিকে হত্যা করা যেতে পারে কিন্তু তার ভাবনাকে নয়।" এই হত্যাকাণ্ড নিয়ে ডিলান রচনা করেন তাঁর গান 'অনলি আ পন ইন দেয়ার গেম', যেখানে তিনি বলেন–

Today Medgar Evers was buried from the bullet he caught
They lowered him down as a king
But when the shadowy sun sets on the one that fired the gun
He'll see by his grave, on the stone that remains
Carved next to his name, his epitaph plain:
Only a pawn in the game.

সরাসরি রাজনৈতিক সমালোচনার পাশাপাশি ডিলানের রচনায় উঠে এসেছে রূপকধর্মী বক্তব্য। ১৯৬৭ সালে রচিত তাঁর বিখ্যাত গান 'অল অ্যালং দ্য ওয়াচটাওয়ার'-এর বক্তব্যে পাওয়া যায় দুর্বোধ্যতা। গানটির বিভিন্ন কথা যেমন–

'But you and I, we've been through that, and this is not our fate/ so let us not talk falsely now, the hour is getting late'

অথবা

'Outside in the distance a wildcat did growl/ two riders were approaching, the wind began to howl'

সমালোচকরা বিভিন্নভাবে ব্যাখ্যা করেছেন। ডিলানের রচনায় আমরা পাই জীবনের গভীর বিশ্লেষণ। 'লাভ মাইনাস জিরো/ নো লিমিট' গানে তিনি বলেন–

'My love, she speaks softly
She knows there's no success like failure
And that failure is no success at all.'

'ইট'স অলরাইট, মা (আই অ্যাম অনলি ব্লিডিং)' গানেও তিনি প্রকাশ করেছেন নিজের প্রতিবাদী অবস্থান–

And if my thought-dreams could've been seen
They would probably put my head in a guillotine
But it's all right, Ma, it's life, and life only.

তাঁর বিখ্যাত গান 'জাস্ট লাইক আ ওম্যান'-এর শুরুতেই উঠে আসে সহানুভূতিহীন আধুনিক সময়ের বর্ণনা–

'Nobody feels any pain
Tonight as I stand inside the rain.'

'লাইক আ রোলিং স্টোন' গানেও তিনি প্রশ্ন করেন নির্দয় আর জটিল বাস্তব সময় সম্পর্কে–

'How does it feel?
How does it feel
To be on your own
With no direction home
A complete unknown
Like a rolling stone?

আবার সেই সঙ্গে তাঁর সঙ্গীতে প্রকাশ পায় ভালোবাসার গভীর প্রকাশ; যে ভালোবাসা কখনও হারিয়ে যায় না আমাদের জীবন থেকে অনেক বিপদ আর হতাশার পরও। 'ইফ নট ফর ইউ' গানে তিনি লিখেছেন–

'If not for you, winter would have no spring
I couldn't hear the robins sing
I just wouldn't have a clue
Anyway it wouldn't ring true if not for you
If not for you, if not for you.'

বব ডিলানের রচনায় আমরা তাই খুঁজে পাই অনুভূতিশীল, গভীর মানবিকতাবোধসম্পন্ন সমাজসচেতন এক সঙ্গীতস্রষ্টাকে যাঁর সৃষ্টিশীলতা, সাহস আর বক্তব্যের ভিন্নতা মার্কিন রক আর ফোক সঙ্গীতের সীমানাকেও ভিন্নভাবে সংজ্ঞায়িত করার সুযোগ সৃষ্টি করেছে। তাঁর অভিব্যক্তির যে গভীরতা সেখানে আমরা লক্ষ করি অসাধারণ কাব্যমাধুর্য।

তিনি মূলত কবি বা লেখক নন কেবল এই কারণে তাঁকে সাহিত্যে নোবেল দেওয়া যথার্থ হয়নি– এমন যুক্তি দেখানো হলে বলতে হয় কোনো রচনার সাহিত্যিক মূল্য সংকীর্ণ এবং সীমিতভাবে বিশ্লেষণের চেষ্টা করা হচ্ছে। বব ডিলানের রচনার শৈল্পিক এবং রাজনৈতিক অভিব্যক্তি আর সুর বহু মানুষের মন আন্দোলিত করেছে। বব ডিলানের কাজ সমৃদ্ধ করেছে সঙ্গীত আর সৃষ্টিশীল রচনার জগৎ, বদলে দিয়েছে অনেক তথাকথিত ধারণা।

প্রতিবাদী এই সঙ্গীতশিল্পীর সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পাওয়া তাঁর বর্ণাঢ্য কর্মজীবনের সঙ্গে মানানসই।