একজন বিষয় অবিশেষজ্ঞের রামপাল ভাবনা

বিভুরঞ্জন সরকারবিভুরঞ্জন সরকার
Published : 8 Sept 2016, 03:54 AM
Updated : 8 Sept 2016, 03:54 AM

কিছুদিন ধরেই আলোচনার হট ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে রামপাল। আমার পরিচিত কেউ কেউ জানতে চেয়েছেন, রামপাল নিয়ে কেন কিছু লিখছি না। আসলে রামপাল ইস্যুতে নিজের অবস্থান নিয়ে এতদিন কিছুটা দ্বিধাদ্বন্দ্বে থাকার কারণেই কিছু লেখা হয়ে ওঠেনি। সুন্দরবনের কাছে রামপালে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র গড়ে ওঠার পক্ষে-বিপক্ষে বিতর্ক বেশ জমে উঠেছে। যাঁরা বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের বিরুদ্ধে তাঁরা সুন্দরবনের সম্ভাব্য ক্ষতিসংক্রান্ত বৈজ্ঞানিক তথ্য-উপাত্ত তুলে ধরছেন। অন্যদিকে সরকার অর্থাৎ রামপাল প্রকল্প যারা বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছে তাঁরা তাঁদের পক্ষে যুক্তি হাজির করছেন।

শুরুতে এ প্রকল্পের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিল তেল গ্যাস খনিজসম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি এবং দুটি বাম রাজনৈতিক দল– সিপিবি ও বাসদ। জাতীয় কমিটিতে কয়েকজন নির্দলীয় ব্যক্তি থাকলেও সেখানে মূলত সিপিবি ও বাসদেরই প্রাধান্য। সে হিসেবে বলা যায়, রামপালে বিদ্যুৎকেন্দ্র না করার পক্ষে শুরু থেকেই বামপন্থীরা অবস্থান নিয়ে আছেন। বামপন্থীদের প্রভাব-প্রতিপত্তি খুব বেশি না থাকায় তাদের বিরোধিতা সরকার খুব একটা গায়ে মাখেনি।

কিন্তু সম্প্রতি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া সংবাদ সম্মেলন করে রামপাল প্রকল্প বাতিলের দাবি জানানো পর সরকারি মহলে টনক নড়েছে। ২৪ আগস্টের ওই সংবাদ সম্মেলনে খালেদা জিয়া বলেন, রামপালের প্রস্তাবিত বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন একটি দেশবিরোধী-গণবিরোধী সিদ্ধান্ত।

এরপর ২৭ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংবাদ সম্মেলনে বলেন, রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের কারণে সুন্দরবনের কোনো ক্ষতি হবে না। বিএনপির বিরোধিতার মধ্যে কোনো ষড়যন্ত্র আছে কি না– সে প্রশ্নও তোলেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি জোর দিয়েই বলেন, রামপাল প্রকল্প থেকে তাঁর সরকার পিছু হটবে না।

সুন্দরবন থেকে ১৪ কিলোমিটার দূরে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র তৈরি হলে সুন্দরবন একেবারে ধ্বংস হয়ে যাবে, মারাত্মক বিপর্যয় ঘটবে বলে যাঁরা মনে করছেন তাঁদের সঙ্গে পুরোপুরি একমত পোষণ করা যেমন সম্ভব নয়, তেমনি যারা বলছেন এতে সুন্দরবনের কোনো ক্ষতিই হবে না তাঁদের সঙ্গেও শতভাগ সহমত পোষণ করা যায় না।

এমন অবস্থান থেকেই আমি মনে করি, সব ধরনের সতর্কতা অবলম্বন করে যদি রামপালে বিদ্যুৎকেন্দ্র হয় তাহলে তার বিরোধিতা থেকে সরে আসাই যুক্তিযুক্ত। এ প্রসঙ্গে বলে রাখা ভালো, আমি এ ব্যাপারে একেবারেই বিশেষজ্ঞ মতামত দেওয়ার যোগ্য কেউ নই। সাধারণ বিবেচনা বোধ থেকে কিছু কথা তুলে ধরতে চাই।

আজকাল আমাদের দেশে বিশেষজ্ঞের কোনো অভাব নেই। সরকারি চাকরি থেকে অবসর নিয়ে অনেকেই বিভিন্ন বিষয়ে মতামত দিচ্ছেন। সংবাদপত্রে কলাম লিখছেন, টক শোতে কথা বলছেন। চাকরি জীবনের দীর্ঘ অভিজ্ঞতার কারণে তাঁদের জ্ঞানবুদ্ধি কিছুটা বেশি হতেই পারে। কিন্তু আমার খুব জানার আগ্রহ, চাকরি জীবনে তাঁরা সরকারি সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় সাধারণ মানুষের স্বার্থে কিভাবে এবং কতটুকু ভূমিকা পালন করেছিলেন।

এখন রামপালবিরোধী আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, আমলারা প্রধানমন্ত্রীকে ভুল তথ্য দিয়ে বিভ্রান্ত করছেন। চাকরি জীবনে যারা ভুল তথ্য দিয়ে সরকারের সিদ্ধান্তকে প্রভাবিত করেন, চাকরি থেকে অবসর নিয়ে তাঁরা জনস্বার্থে কথা বলা শুরু করেন– বিষয়টা আমার কাছে অন্তত কিছুটা গোলমেলে বলেই মনে হয়। এবার আসা যাক রামপালসংক্রান্ত অন্য কিছু প্রসঙ্গে।

১. তেল গ্যাস খনিজসম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেছেন, "যারা কোনো বিষয় বোঝে না, তাদের বোঝানো সম্ভব। কিন্তু যারা ইচ্ছে করে বুঝতে চায় না, যাদের মাথা অন্যত্র বন্ধক দেওয়া আছে, যারা মনে করে এটা বুঝলে তাদের জন্য সমস্যা, তাদের কাছে যত যুক্তিই দেওয়া হোক না কেন তারা তা বুঝবে না।"

আনু মুহাম্মদ কথাগুলো বলেছেন সরকারকে উদ্দেশ্য করে। তাঁদের উত্থাপিত তথ্য-উপাত্ত সরকার গ্রাহ্য করছে না বলেই তিনি মনে করেছেন, তারা বুঝতে চায় না। তাদের 'মাথা অন্যত্র বন্ধক' দেওয়া আছে। কিন্তু এই একই যুক্তিতে সরকার পক্ষও তো বলতে পারে, তাঁরা যে তথ্য-উপাত্ত দিয়ে বিরোধীদের যুক্তি খণ্ডন করছেন সেগুলো কেন বিরোধীরা বুঝতে চাইছেন না? তাহলে বিরোধীদের মাথাও কি 'অন্যত্র বন্ধক' দেওয়া আছে? বিরোধীরা যেসব তথ্য বা বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা হাজির করছেন সেগুলোই শুধু অভ্রান্ত আর সরকার পক্ষের সব ভ্রান্ত– এটা কি মেনে নেওয়ার মতো যুক্তি?

২. প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, রামপাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ হবে পৃথিবীর সর্বাধুনিক 'আলট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল' প্রযুক্তি ব্যবহার করে। ফলে এতে সুন্দরবনের পরিবেশ-প্রতিবেশ ও মানুষের কোনো ক্ষতি হবে না।

কিন্তু অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেছেন, আধুনিক ও নিরাপদ যেসব প্রযুক্তি ব্যবহারের কথা বলা হচ্ছে বাস্তবে সেগুলো ব্যবহার করা হবে না। সেগুলো ব্যবহার করলে নাকি বিদ্যুতের দাম বেশি পড়বে।

এখন আমরা সাধারণ মানুষ কার কথা বিশ্বাস করব?

আমি এ ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যর ওপর আস্থা রাখার পক্ষপাতী। আমাদের অভিজ্ঞতা কী বলছে? প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কথা এবং কাজের মধ্যে বড় ধরনের অসঙ্গতি দেখা যায় না। তিনি তাঁর অঙ্গীকার রক্ষায় সাধারণত পিছ-পা হন না। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের বিষয়টি এখানে উল্লেখ করা যায়। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বাংলাদেশের মাটিতে হবে– এটা আমরা কজন বিশ্বাস করতাম?

শেখ হাসিনা ২০০৯ সালে ক্ষমতায় এসে এই বিচার প্রক্রিয়া শুরু করার পরও আমাদের অনেক পণ্ডিত-বিশ্লেষক এ নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন। বিচার হলেও রায় কার্যকর হবে না, এটা সরকারের একটি 'আই ওয়াশ' বা রাজনৈতিক 'স্টান্টবাজি'– এ ধরনের কথাও শোনা গেছে। কয়েকজন অপরাধীর ফাঁসির দণ্ড কার্যকরের আগে অনেকেই নানা ধরনের বিভ্রান্তি ছড়িয়েছেন। অথচ যুদ্ধাপরাধীদের পালের গোদা হিসেবে চিহিৃত ছয়জনের ফাঁসি এর মধ্যেই কার্যকর হয়েছে।

পদ্মাসেতু নিয়েও আমাদের অনেকের মধ্যেই আস্থাহীনতা ছিল। বিশেষ করে বিশ্বব্যাংক সহায়তা প্রত্যাহারের ঘোষণা দেওয়ার পর অনেককেই বলতে শোনা গেছে, পদ্মাসেতু আর হচ্ছে না। কিন্তু আজকের বাস্তবতা কী? নিজেদের টাকাতেই পদ্মাসেতু নির্মিত হচ্ছে। যে প্রকল্প নিয়ে দেখা দিয়েছিল ঘোর অনিশ্চয়তা সেই পদ্মাসেতুই হতে চলেছে বাংলাদেশের অহংকার ও মর্যাদার প্রতীক।

শেখ হাসিনা দেশ এবং দেশের মানুষের স্বার্থের ক্ষতি করে কোনো ধরনের কর্মকাণ্ড করবেন– এটা যাঁরা মনে করেন তাঁরা নিজেরা নিজেদের যত বড় দেশপ্রেমিক বলে মনে করুন না কেন বাস্তবতার নিরিখে তা সত্য বলে মেনে নেওয়া কঠিন।

৩. কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র হলে পরিবেশের যতটা ক্ষতি হবে বলে বিরোধীরা প্রচার করছেন বাস্তবে কী তা হয়? বিশ্বের অনেক দেশেই কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র আছে। এখন পর্যন্ত বিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রধান উপকরণ কয়লা। যেসব জায়গায় কযলাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র আছে, সেসব জায়গার পরিবেশ কি মানুষের বসবাস অনুপযোগী হয়ে পড়েছে? গাছপালা কি শেষ হয়ে গেছে? নদীর পানি কি শুকিয়ে গেছে? এসব প্রশ্নের জবাব যদি 'হ্যাঁ' হয়, তাহলে সেসব দেশের মানুষ বিনা প্রতিবাদে সবকিছু মেনে নিচ্ছে?

আমাদের দেশে দিনাজপুরের বড় পুকুরিয়ায় কয়লাভিত্তিক একটি বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু আছে। বড় পুকুরিয়ার এ বিদ্যুৎকেন্দ্র কি ওই এলাকায় বড় ধরনের কোনো প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণ হয়েছে? কেউ কেউ বলছেন, সেখানে ভূগর্ভের পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় স্থানীয় জনগণ পানি সংকটে ভুগছেন। আশেপাশের কিছু এলাকায় নারকেল গাছে নাকি এখন আর নারকেল হয় না। এসব অভিযোগের বিশ্বাসযোগ্য তদন্ত হওয়া দরকার। দরকার বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রভাব নিয়ে উপযুক্ত সমীক্ষা ও গবেষণা। সেসব না করে শুধু আতঙ্ক ছড়ানো কোনো কাজের কাজ নয়।

কেউ কেউ আবার এমনও বলছেন, রামপালের সঙ্গে বড় পুকুরিয়ার তুলনা করা যাবে না। কারণ, বড় পুকুরিয়ার বিদ্যুৎকেন্দ্রটি আকারে ছোট, মাত্র ১২ মেগাওয়াটের আর রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রর উৎপাদন ক্ষমতা ১,৩২০ মেগাওয়াট। এই হিসাবে বড় পুকুরিয়ার চেয়ে রামপালে ক্ষতি হবে দশগুণেরও বেশি হবে। সত্যি সত্যি এভাবে ক্ষতি হয় কি না– সেটা কোনো গবেষণার মাধ্যমে করা হয়েছে কি?

আগেই বলেছি আমি এ ব্যাপারে বিশেষজ্ঞ নই। কিন্তু কোনো কোনো ক্ষেত্রে আমাদের দেশের বিশেষজ্ঞরা যেসব আতঙ্কজনক তথ্য-উপাত্ত উপস্থাপন করে থাকেন, বাস্তব অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে সেসব মেনে নিতে মন সায় দেয় না।

আমার মনে হয়, আমাদের দেশের মানুষের একটা সহজাত টেকসই সক্ষমতা রয়েছে। আমরা প্রতিদিন যেভাবে ভেজালখাদ্য খাচ্ছি, তাতে মানুষের গড় আয়ু তো কমে যাওয়ার কথা। কিন্তু আমরা তো দেখছি গড় আয়ু বাড়ছে।

পরিবেশবাদীদের বিবেচনায় ঢাকা শহর বসবাসের অযোগ্য। তথ্য-উপাত্ত অনুযায়ী, ঢাকায় বসবাসকারী মানুষের তো স্বাভাবিক জীবনযাপন বা বেঁচে থাকার কথা নয়। কিন্তু মানুষ তো বেঁচে আছে। কেউ হয়তো বলবেন, ক্ষতিটা রাতারাতি হচ্ছে না। এর দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব আছে এবং সে জন্যই আমরা তিলে তিলে মৃত্যুর দিকে হাঁটছি। খারাপ কিছু হওয়ার আশঙ্কায় আমরা কি হাত গুটিয়ে বসে থাকব, নাকি ভালোটার আশা করে খারাপটা মোকাবিলার প্রস্তুতি নেব?

আমাদের দেশের উন্নয়ন অগ্রগতির জন্য বিদ্যুৎ প্রয়োজন। বিদ্যুতের জন্য কয়লা এখনও সাশ্রয়ী উপকরণ। তাই কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র আমাদের প্রয়োজন। প্রশ্ন হচ্ছে, রামপাল ছাড়া দেশে কি আর কোনো জায়গা নেই বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের জন্য? কারণ, রামপালের কাছেই রয়েছে সুন্দরবনের মতো স্পর্শকাতর বনাঞ্চল।

কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র যদি সুন্দরবনের জন্য মারাত্মক ক্ষতির কারণ হয়, তাহলে অন্য যে কোনো জায়গাতেই তা একই ধরনের ক্ষতির কারণ হবে। অন্য জায়গার প্রকৃতি, পরিবেশ এবং মানুষের জীবনের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব কি তাহলে আমরা বিবেচনায় নিচ্ছি না?

সুন্দরবনের কোনো বিকল্প অবশ্যই নেই। সুন্দরবনের কোনো ক্ষতি আমরা কেউই চাইতে পারি না। কিন্তু আমরা না চাইলেও প্রাকৃতিক নিয়ম এবং মানুষের নির্বিচার ব্যবহারের কারণে কি সুন্দরবনের ক্ষতি হচ্ছে না? এই যে সুন্দরবনের বাঘ, হরিণসহ বিভিন্ন প্রজাতির পশুপাখির সংখ্যা ক্রমে হ্রাস পাচ্ছে এবং সেখানকার জীববৈচিত্র্য নষ্ট হচ্ছে– সেটার কারণ কী?

কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র হওয়ার আগেই সুন্দরবন যে ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে– সেটা কেন আমরা রোধ করতে পারিনি? প্রশ্ন উঠতে পারে, আগে যেটা পারিনি এখন সেটা পারার চেষ্টা কেন করব না? বিতর্কটা এখানে এসেই জট পাকিয়ে যায়। সরকার সব দিক বিচার-বিবেচনা করেই রামপালে বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

খামখেয়ালির বশে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে মনে করার কোনো কারণ নেই। যাঁরা রামপালে বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনে বিরোধিতা করছেন, তাঁদের উদ্দেশ্য যদি হয় সুন্দরবন রক্ষা তাহলে সরকার সুন্দরবনের ক্ষতি না করে বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের যে কথা বলছে তা যাতে অক্ষরে অক্ষরে পালিত হয় সে জন্য তাদের চাপ দেওয়া উচিত।

শেখ হাসিনা রামপাল প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে চাইছেন; কাজেই যে কোনো উপায়ে তাঁর বিরোধিতা করা যদি লক্ষ্য না হয় তাহলে রামপালবিরোধীদের তাঁদের অবস্থান পুনর্মূল্যায়ন করা প্রয়োজন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একবার কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করলে সাধারণত তা বাস্তবায়ন করে থাকেন। তাই রামপাল প্রকল্প থেকে সরকারের সরে আসার সম্ভাবনা কম। যাঁরা মনে করছেন আন্দোলন করে এ ক্ষেত্রে বিজয় অর্জন করবেন তাঁরা আশাহত হবেন বলেই মনে হয়।

২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচন বন্ধ করার জন্য আন্দোলনের নামে দেশে চরম অরাজকতা সৃষ্টি করেও সফল হওয়া যায়নি। রামপাল আন্দোলনও সফলতার মুখ না দেখার সম্ভাবনাই উজ্জ্বল।

তাই সুন্দরবনের ক্ষতি না করে কিভাবে রামপাল প্রকল্প বাস্তবায়ন করা যায় সে জন্য সরকারকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়াই হবে সময়োপযোগী কাজ।