কেমন হবে আগামীর রাজনীতি

এহসান ইমদাদ
Published : 4 Sept 2016, 08:29 AM
Updated : 4 Sept 2016, 08:29 AM

সত্তরের নির্বাচন ছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে ম্যানডেট– এ কথা একবাক্যে সবাই স্বীকার করেন। সেই নির্বাচনে প্রাদেশিক পরিষদের ৩০০ আসনের মধ্যে আওয়ামী লীগ পায় ২৯৭টি, অর্থাৎ ৯৯ ভাগ আসন। তৎকালীন সমগ্র পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদ নির্বাচনে ১৬৭টি আসন পেয়ে একক সংখ্যাগরিষ্ঠ দলে পরিণত হয় আওয়ামী লীগ। তবে ৯৯ শতাংশ আসন পেলেও ভোট কিন্তু পেয়েছিল ৭২ শতাংশ। অর্থাৎ শতকরা ২৮ জন বাংলাদেশের মানুষ স্বাধীনতা চায়নি। তারা কারা ছিল?

পরিসংখ্যান মতে, ওই ২৮ ভাগের ভেতর ছিল ধনী-সমাজ, আমলা, সুবিধাবাদী, ধর্মীয় মৌলবাদী, মুসলিম লীগার ও জামায়াতে ইসলামীর নেতা ও সমর্থকরা। এছাড়া ছিল হিন্দু বা ভারতবিদ্বেষী মুসলমান, যারা দেশভাগের পর ভারত থেকে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে চলে আসে তারা এবং পূর্ব পাকিস্তানের বিহারি সম্প্রদায়।

বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর এদের অনেক নেতা পালিয়ে পাকিস্তানে চলে যায়, অনেকে আত্মগোপনে থাকে এবং জামায়াতের ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্র সংঘের অপেক্ষাকৃত অপরিচিত নেতা ও কর্মীরা ১৯৭২ সালে প্রতিষ্ঠিত জাসদের ভেতর ঢুকে পড়ে। বাকিরা অপক্ষোয় থাকে সুযোগের; পরবর্তীতে জিয়াউর রহমান যখন রাজনৈতিক দল গঠন করেন, ওই পাকিস্তানপ্রেমীরা তখন দলটির সঙ্গে যুক্ত হয়।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর হত্যার পর থেকে ১৯৭১ সালের পরাজিত স্বাধীনতাবিরোধীরা জিয়াউর রহমানের পৃষ্ঠপোষকতায় ধীরে ধীরে আবার বাংলাদেশের রাজনীতিতে ফিরে আসে। চেষ্টা চলে ইতিহাস বিকৃতির। শুধু ইতিহাস বিকৃতিই নয়, আরব অর্থে বাঙালির হাজার বছরের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক জীবনধারা ও ঐতিহ্য পরিবর্তনের চেষ্টা চলে। দীর্ঘ ২১ বছর মৌলবাদী ও সামরিক সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় তরুণ সমাজকে ভিন্নধারায় প্রবাহিত করে কিছু সাফল্যও পায়।

ঢুকে পড়ে ওয়াহাবি সংস্কৃতি 'খোদা হাফেজ' থেকে 'আল্লাহ হাফেজ'; বেড়ে যায় হিজাব-পরা নারীর সংখ্যা; কোরবানির হাটে বিক্রি হয় আরব থেকে আগত উট, দুম্বা; আরব নারী-পুরুষের পোশাকের দোকান গড়ে ওঠে ইত্যাদি।

স্বাধীনতার ৪৫ বছর পর আজকের বাংলাদেশ প্রগতির পথে। সত্তর সালের নির্বাচনে স্বাধীনতাবিরোধীদের সংখ্যা ছিল শতকরা ২৮ ভাগ। আজ সেই সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে, বিশেষ করে যুব ও তরুণ সমাজের ভেতর। সেই ২৮ ভাগ আজ নগণ্য 'সিঙ্গেল ডিজিট'এ পরিণত হয়েছে। এমনকি ১৯৭১ সালের স্বাধীনতাবিরোধী প্রধান দল জামায়াতে ইসলামীর যুব ও তরুণ নেতাদেরও একটা অংশ স্বাধীনতাযুদ্ধে তাদের অগ্রজদের কর্মকাণ্ডের জন্য লজ্জিত ও ক্ষমাপ্রার্থী।

এখনও কিছু টিকে আছে পঁচাত্তর-পরবর্তী অর্থাৎ ১৯৭৬ সাল থেকে ১৯৯৬ পর্যন্ত পাঠ্যপুস্তকে স্বাধীনতা আন্দোলন, সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের ভুল ও বিকৃত ইতিহাস-পড়া দুই দশকের যুবসমাজ। আর আছে স্বাধীনতাবিরোধীরা, যারা আজ ৬০, ৭০ বা ৮০ বছর বয়স্ক সামান্য সংখ্যক জনগোষ্ঠী। তাহলে কেমন হবে আগামীর রাজনীতি?

বাংলাদেশ সমৃদ্ধশালী দেশ হবে। স্বাধীনতার পক্ষে-বিপক্ষে বলে কিছু থাকবে না। সবাই হবে স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি। হ্যাঁ, একটা বিরোধী বা কট্টরপন্থী অংশ থাকবেই, যা পৃথিবীর সব দেশেই কমবেশি আছে। কিন্তু তারা এতই ক্ষুদ্র যে কখনও ভোটের রাজনীতিতে ভূমিকা রাখতে পারে না।

জাতির জনকের স্থান ইতোমধ্যেই মহাত্মা গান্ধী, জর্জ ওয়াশিংটনের মতো ব্যক্তিত্বের জায়গায় প্রতিষ্ঠিত। মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস, ২৪ বছরের স্বাধীনতা আন্দোলনের সংগ্রামসহ সবারই প্রাপ্য স্থান ইতিহাসে জায়গা করে নেবে। জাতির জনক নিয়ে রাজনীতি, স্বাধীনতার পক্ষে-বিপক্ষে রাজনীতি বন্ধ হবে।

একটি দেশের রাজনীতি সে দেশের সমাজ, অর্থনীতি বা সংস্কৃতির বাইরের কিছু নয়। সমাজ, অর্থনীতি এবং সাংস্কৃতিক দৃষ্টিভঙ্গিই রাজনৈতিক পক্ষ ও প্রতিপক্ষ সৃষ্টি করে। ইতিহাস বিকৃতি বা দেশের সার্বভৌমত্ব বা স্বাধীনতা কোনো দেশের রাজনৈতিক বিভক্তির মাপকাঠি নয়। সাধারণত রক্ষণশীলরা ধার্মিক এবং ধনী সম্প্রদায়ের পক্ষে কাজ করে। পক্ষান্তরে প্রগতিশীলরা মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্তের মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণে বেশি মনোযোগী হয়। প্রগতিশীলরা ধনীদের উপর আয়কর বৃদ্ধি এবং ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের চেয়ে দরিদ্রের শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে বেশি বিনিয়োগে আগ্রহী।

পক্ষান্তরে রক্ষণশীলরা সরকারের পরিধি ছোট করে বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠান ব্যক্তিমালিকানায় দিতে আগ্রহী। এছাড়া ধনীরা যেন বড় বড় প্রতিষ্ঠান ব্যক্তিমালিকানায় চালাতে পারে সে জন্য ধনীদের ট্যাক্স ক্রেডিট দেওয়া, আইনকানুন সহজ রাখাসহ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও ধর্মীয় নেতাদের পরামর্শ কাজে লাগাতে উৎসাহী। রক্ষণশীলরা সমকামী, গর্ভপাত, আধুনিক স্বাস্থ্যব্যবস্থা, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও গবেষণার বিরোধী।

এখানেই সবচেয়ে বড় ব্যবধান প্রগতিশীলদের সঙ্গে রক্ষণশীলদের। নারী-নেতৃত্ব, নারীস্বাধীনতা ইত্যাদি ক্ষেত্রে প্রগতিশীলরা যেমন উদার হয়, রক্ষণশীলরা হয় ততটাই আদিপন্থী। রক্ষণশীলরা সরকারের দিকে তাকিয়ে নেই অথবা অপেক্ষায় থাকে না। কিন্তু প্রগতিশীলরা যেমন বৃহৎ সরকার চায় তেমনি অনেক ক্ষেত্রে সরকারের মুখাপেক্ষী।

ঢাকার মগবাজারের দুই প্রতিবেশির মধ্যে পার্থক্যগুলো লক্ষ করুন। সবুর সাহেবের ছেলে ইঞ্জিনিয়ার, ছেলের বউ সবুর সাহেবের বাড়ির সব কিছু দেখাশোনা করে। উচ্চশিক্ষিত হলেও সবুর সাহেবের বাড়ির মেয়েরা বা বউরা কখনও বাইরে চাকরি বা ব্যবসা করে না। বাড়ির মেয়েরা হিজাব পরে। সবুর সাহেবের পরিবার মাদ্রাসা ও মসজিদে দান করে।

অন্যদিকে কবির সাহেবের ছেলে ইঞ্জিনিয়ার, ছেলের বউ ব্যাংকার। কবির সাহেবের বউ বাড়ির দেখাশোনা করেন, কিন্তু ছেলেও বউকে সহায়তা করে। এ বাড়ির মেয়েরাও উচ্চশিক্ষিত। কিন্তু চাকরি বা ব্যবসা করে। পথশিশুদের জন্য একটি স্কুলে দান করে ও দরিদ্রদের বিনামূল্যে চিকিৎসার একটি ক্লিনিকে অর্থ বা বিনামূল্যে শ্রম দিয়ে সহায়তা করে।

স্বাভাবিকভাবেই বোধগম্য সবুর সাহেবের পরিবার একটি রক্ষণশীল পরিবার এবং কবির সাহেবের পরিবার একটি প্রগতিশীল পরিবার। বিশ্বজুড়ে রাজনীতি এভাবেই বিভক্ত।

বাংলাদেশ পৃথিবীর বাইরের কোনো দেশ নয়। পৃথিবীর মানুষের বিভাজন ঘটে বর্ণ, গোত্র, ধর্ম, সমাজ, সংস্কৃতি ইত্যাদি অনেকভাবে। একটি দেশের ভেতরের মানুষের বিভাজন প্রধানত দুরকম– রক্ষণশীল ও প্রগ্রতিশীল। আরও বিশ্লেষণে দেখা যায়, উদারপন্থী, প্রগতিশীল, মধ্যপন্থী, রক্ষণশীল এবং কট্টরপন্থী– এই পাঁচ ধরনের বিভাজন বা বিভক্তি মূলত সামাজিক, অর্থনৈতিক ও সংস্কৃতিক কারণে ঘটে। কিছু ক্ষেত্রে ধর্ম ঘিরে, যেমন: কট্টর খ্রিস্টান বা প্রগতিশীল খ্রিস্টান ইত্যাদি।

রাজনীতির মাঠে বা সামাজিক জীবনে শতকরা ৯০ ভাগ মানুষের বিচরণ উপরোক্ত দুই থেকে চারের ভেতর, অর্থাৎ প্রগতিশীল, মধ্যপন্থী থেকে রক্ষণশীল পর্যন্ত। এক ও পাঁচ বা উদারপন্থী এবং কট্টরপন্থীর সংখ্যা বিভিন্ন দেশ ভেদে দুই থেকে সর্বোচ্চ ১০ ভাগের ভেতর। নির্বাচনের মাঠে একান্তই যদি হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের সম্ভাবনা থাকে তখনই প্রগতশীল উদারপন্থীকে কাছে চায়। পক্ষান্তরে রক্ষণশীল কট্টরপন্থীকে কাছে ডাকে।

তবে লক্ষ্য করবেন, রক্ষণশীল কখনও উদারপন্থীকে অথবা প্রগতিশীল কখনও কট্টরপন্থীকে কাছে ডাকে না। এটাই স্বাভাবিক। জোট না বাঁধলে প্রগতিশীল এবং রক্ষণশীল যার যার অবস্থান থেকে কিছুটা মধ্যপন্থী হয় এবং এতে উভয় প্রার্থীর দূরত্ব কিছুটা কমে আসে। পূর্বেই বলেছি, শতকরা ৯০ ভাগ ভোটের অবস্থান দুই থেকে চারের ভেতরে, অর্থাৎ রক্ষণশীল, মধ্যপন্থী ও প্রগতিশীল।

বাংলাদেশের প্রধান চার দলের ক্ষেত্রে একমাত্র আওয়ামী লীগেরই জন্ম হয়েছিল একটি প্রগতিশীল দল হিসেবে, ১৯৪৯ সালে। যখন ১৯৪৭ সালে ভারত ভেঙে শুধুমাত্র ধর্মীয় কারণে ভারতের দুপাশে পশ্চিম ও পূর্ব অর্থাৎ একটি মুসলিম দেশ যার এক অংশের নাম দেওয়া হল পূর্ব পাকিস্থান এবং অন্য পাশের নাম পশ্চিম পাকিস্তান। পশ্চিম পাকিস্তান থেকে ভিন্ন এবং সংখ্যাগরিষ্ঠ পূর্ব পাকিস্তানের অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সংস্কৃতিক জীবন। জনগণ ধীরে ধীরে সেই সামাজিক ও সাংস্কৃতিক বিভক্তির পক্ষে যেতে শুরু করে। তার উপলব্ধিতেই একটি প্রগতিশীল রাজনৈতিক দল হিসেবে জন্ম লাভ করে আওয়ামী মুসলিম লীগ। পরে র্ধমনিরপেক্ষতা যোগ হল এবং 'মুসলিম' শব্দ বাতিল হল। অন্য রক্ষণশীলরা থেকে যায় মুসলীম লীগে।

সঙ্গত কারণেই মধ্যপন্থী ও প্রগতিশীলদের নিয়েই তৈরি হয় আওয়ামী লীগ। দেশ ও জাতি নিয়ে আওয়ামী লীগের সুনির্দিষ্ট নীতিমালা থাকার কারণেই জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ২৪ বছর সংগ্রাম, আন্দোলন ও মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশের জন্ম হয়। যে সংগ্রামে জাতির পিতাকে বিভিন্ন মেয়াদে মোট ১৪ বছর জেল খাটতে হয়।

পৃথিবীতে বর্তমানে রাজনীতির প্রধান দুটি ধারা– রক্ষণশীল ও প্রগতিশীল। সেই অর্থে বাংলাদেশের আগামী রাজনীতির একটি দল হিসেবে আওয়ামী লীগ থাকবে তা স্পষ্টতই বলা যায়। এবার দেখা যাক অন্য তিনটি দলের দিক।

পূর্বেই বলেছি, একটি রক্ষণশীল দল গড়ে উঠবে শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে। প্রথমে তাকাই বিএনপির দিকে, দেখা যাক কাদের নিয়ে দলটির প্রতিষ্ঠা। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে ২৮ ভাগ ভোট পেয়ে যারা স্বাধীন বাংলাদেশে ১৯৭২ থেকে ১৯৭৫ পর্যন্ত চুপ করে বসেছিল অথবা যুদ্ধপরাধীর কলঙ্ক নিয়ে বিভিন্ন দেশে পালিয়ে বেড়িয়েছে তাদের স্থান দেওয়া হল এ দলে। আরও দেওয়া হল পিকিংপন্থী কমিউনিষ্ট পার্টিসহ কিছু বাম দলের নেতাদের।

লক্ষ্য করুন, কট্টরপন্থী এবং কট্টর বাম অর্থাৎ উত্তর মেরু আর দক্ষিণ মেরু মিলে একাকার। সেই সঙ্গে আরও যুক্ত হয়েছিল রক্ষণশীল মুসলীম লীগের অনেক নেতাকর্মী। স্বাভাবিক কারণেই যে দলে কট্টর মৌলবাদী থেকে রক্ষণশীল হয়ে বাম ও উদারপন্থী সবাই সমানভাবে উপস্থিত, তখন ওই দলের কী ধরনের নীতিমালা থাকবে? অথবা বিভিন্ন বিশ্বাসে বিশ্বাসী, সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে বিভিন্ন ভাগে বিভক্ত সেই দলের আদৌ কোনো অস্তিত্ব থাকবে কি না সন্দেহ।

পূর্বেই বলেছি, বঙ্গবন্ধু এবং স্বাধীনতার পক্ষে-বিপক্ষে সুবিধা নেওয়ার দিন শেষ হবে।

এরশাদ রাষ্ট্রপতি হিসেবে ক্ষমতায় থেকে দল গঠন করায় জাতীয় পার্টির জন্মলগ্ন থেকে এ দলে স্থান নিয়েছে ক্ষমতালোভী সুবিধাবাদী, অন্য দল থেকে বিতাড়িত, সুবিধা-গ্রহণকারী ব্যবসায়ী, আমলা ও অনেক দলছুট নেতাকর্মী। যার ফলে এখানে সমন্বয় ঘটেছে এক থেকে পাঁচ পর্যন্ত সব শ্রেণির মানুষের। তাহলে কোন আদর্শ সামনে নিয়ে এগোবে দলটি?

আর বাতিল যুদ্ধাপরাধীর দল জামায়াত, ভুল পথে নিয়ে ধর্ম টেনে নিয়ে রাজনৈতিক সুবিধা নেওয়ার দল। এ দলকে কট্টর মৌলবাদীর দলও বলা যায় না।

বাংলাদেশের রাজনীতিতে আপাতত না হলেও আগামীতে একটি রক্ষণশীল দল হয়তো তৈরি হবে। কিন্তু তা কোনো একটি ধর্ম নিয়ে নয়। তা হবে রক্ষণশীল সমাজ ও সংস্কৃতি ধরে রাখার জন্য। তবে আওয়ামী লীগ যদি কট্টর বাম এবং কট্টর ডানদের ভিড়তে না দেয় তবে সেই রক্ষণশীল দল তৈরি বিলম্বিত হবে।

দেশের আর্থসামাজিক কাঠামোগত উন্নয়নের সঙ্গে পরিবর্তিত হবে রাজনৈতিক নেতাদের শিক্ষা, দক্ষতা ও পেশাজীবী আচরণ। বিশ শতকের প্রায় প্রথম দিক পর্যন্ত শুধু অর্থই নয়, পেশিশক্তিরও প্রয়োজন হত নিউ ইয়র্ক শহরের মেয়র নির্বাচনে পাস করতে। আজ সে দেশের রাজনীতিবিদদের অধিকাংশই উচ্চশিক্ষিত পেশাজীবী, বিশেষ করে আইনজীবী। তাঁরাই নির্বাচিত হয়ে আইন প্রণয়ন করেন।

আগামীর বাংলাদেশেও তেমন রাজনীতিবিদরাই এগিয়ে নিয়ে যাবেন বাঙালি জাতিকে।