গাদ্দাফিকে ন্যাটো হত্যা করেছে

ফরহাদ মজহার
Published : 26 Oct 2011, 06:29 AM
Updated : 26 Oct 2011, 06:29 AM

পাঁচদিন পর মোয়াম্মার গাদ্দাফি ও তাঁর ছেলে মোয়াতাসিম গাদ্দাফির লাশ দাফন হয়েছে বলে লিবিয়ার ন্যাশনাল ট্রানজিশানাল কাউন্সিল(এনটিসি) জানিয়েছে। তিনি জীবিত ধরা পড়েছিলেন অক্টোবরের ২১ তারিখ বৃহস্পতিবারে। তার দাফন হোল ২৫ তারিখ মঙ্গলবার। তবে কোথায় তাকে পুঁতে ফেলা হোল জানানো হয় নি। শেষমেষ গাদ্দাফির স্থান হোল অজ্ঞাতস্থানে । লিবিয়ায় কোথাও কোন মরুভূমির বালুর নীচে তার শেষ বিছানা সাব্যস্ত হোল। গাদ্দাফিকে সমালোচনা করবার ও তার বিরোধিতা করবার বিস্তর কারন থাকতে পারে। কিন্তু পাশ্চাত্যের সামরিক আগ্রাসন তাকে যেভাবে অপসারণ ও শেষাবধি নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করল এবং পাঁচ দিন লাশ পচিয়ে অজ্ঞাত স্থানে পুঁতল, আগাগোড়াই তা অতিশয় ঘৃণ্য একটি অপরাধের নজির হয়ে উঠেছে। গাদ্দাফিকে সমালোচনা করবার কথা, কিন্তু তার হত্যার প্রতিবাদ জানাবার জন্যই এই লেখা লিখতে হচ্ছে এখন। পুরা আগ্রাসনই চালানো হয়েছে মানবিকতার নামে , যাকে ইংরেজিতে হিউমেনিটেরিয়ান ইন্টারভেনশান বলা হয়। পুরা কুকর্মটি করা হলো গণতন্ত্র কায়েমের কেচ্ছা গেয়ে।

আহত কিন্তু জীবিত ধরা পড়েছিলেন গাদ্দাফি। পরে পিটিয়ে ও গুলি করে তাকে মেরে ফেলা হয়েছে। তাঁর ছেলেকেও জীবিত ধরে বন্দী অবস্থায় গুলি করে মারা হয়েছে। পাঁচদিন ধরে মিসরাতা শহরের মাংস রাখার একটি হিমঘরে দুজনের লাশ রাখা হয়েছিল। লাইন ধরে মানুষ লাশ দেখেছে। লাশে পচন ধরেছে বলেও খবর বেরিয়েছে। তাঁর লাশ স্বজনদের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া অথবা ধর্মীয় মর্যাদায় দাফন করার দাবি উঠেছিল। কিন্তু বিদ্রোহীরা সেই সবে কান দেয় নি। তাকে তারা এমনভাবে পুঁতে ফেলতে চেয়েছে যাতে তার চিহ্ন কেউ খুঁজে না পায়। মৃত গাদ্দাফিও বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারেন। এই ভীতি কাজ করেছে। অতএব চিহ্নহীন অজ্ঞাত স্থানেই তাকে গেঁড়ে রাখতে বাধ্য হয়েছে তারা।

বিদ্রোহী ন্যাশনাল ট্রানজিশনাল কাউন্সিল এখন আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত লিবিয়ার প্রতিনিধি। বাংলাদেশও এই স্বীকৃতি দানের ভিড়ে শামিল। লিবিয়ায় গাদ্দাফির বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ চলেছে আন্তর্জাতিক সমর্থনে এবং ন্যাটোর সামরিক সহায়তায়। দাবি করা হয়েছিল গাদ্দাফি বা তার পরিবারের কাউকে হত্যা ন্যাটোর বিমান হামলা ও সামরিক সহায়তার উদ্দেশ্য নয়। গাদ্দাফিকে সশস্ত্র যুদ্ধে উৎখাতের সমর্থন আছে, কিন্তু তাকে হত্যার অনুমোদন নাই। কিন্তু এখন তো তাকে মেরে ফেলা হয়েছে। কেন মেরে ফেলা হলো? হত্যার বৈধতা নিয়ে এখন তর্ক চলছে। দ্বিতীয় জটিলতা তৈরি হয়েছে যুদ্ধ সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক বিধান নিয়ে। তৃতীয় জেনেভা কনভেনশানের ১৩ অনুচ্ছেদ বলে, "যুদ্ধবন্দীদের অবশ্যই সবসময়ই রক্ষা করতে হবে, বিশেষত তাদের প্রতি সহিংসতা প্রদর্শন ও ভয়ভীতি দেখানোর বিরুদ্ধে এবং অপমান ও মানুষের কৌতুহলের হাত থেকে"। চতুর্থ জেনেভা কনভেনশানের ২৭ অনুচ্ছেদ আরো বিস্তৃত করে বলছে, "সকল পরিস্থিতিতেই রক্ষিত ব্যক্তিরা তাদের ব্যক্তিত্বের সম্মান, মর্যাদা, পারিবারিক অধিকার, ধর্মীয় বিশ্বাস, চর্চা এবং তার আচরণ ও বিধান অনুসরণের অধিকার ভোগ করবেন। সবসময়ই তাদের প্রতি মানবিক আচরণ করতে হবে, বিশেষভাবে সকল ধরনের সহিংসতার কবল থেকে বা ভয়ভীতি প্রদর্শন এবং অপমান করা ও মানুষের কৌতুহলের শিকারে পরিণত হওয়ার হাত থেকে রক্ষা করতে হবে"। বলাবাহুল্য গাদ্দাফি, তার ছেলে মোয়াতাসিম ও তার সমর্থক অনেকের ক্ষেত্রে জেনিভা কনভেনশান লঙ্ঘিত হয়েছে।

ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল কোর্ট বা আইসিসি গাদ্দাফির লাশ দেখতে চেয়েছিল। গাদ্দাফি হত্যা যুদ্ধাপরাধ কিনা এই পশ্ন উঠেছে। যদি যুদ্ধাপরাধ হয় তাহলে তা আমলে নেওয়া আইসিসির এখতিয়ারের মধ্যে পড়ে। কোন হত্যাকাণ্ড যুদ্ধাপরাধ হতে হলে প্রথম বিচার্য যেখানে হত্যাকাণ্ড হয়েছে সেখানে যুদ্ধ চলছিল কিনা। লিবিয়ায় অবশ্যই যুদ্ধ চলছিল। দ্বিতীয় বিচার্য হচ্ছে যুদ্ধ করছে এমন কেউ আত্মসমর্পন করার পর নিরস্ত্র অবস্থায় তাকে মারা হয়েছে কিনা। এর উত্তর হচ্ছে অবশ্যই মারা হয়েছে। ধরা পড়ার পর নিরস্ত্র ও বন্দী অবস্থায় গাদ্দাফিকে হত্যা করা হয়েছে। আইসিসির যুদ্ধাপরাধের অনুচ্ছেদ ৮ অনুযায়ী, "কোন যোদ্ধা তার অস্ত্র ত্যাগ করে ফেলার পর, বা যখন নিজেকে রক্ষা করবার কোন উপায় না রেখে সে স্বেচ্ছায় আত্ম-সমর্পন করে তখন তাকে আহত বা হত্যা করা" যুদ্ধাপরাধ হিশাবে গণ্য হবে। কথা হলো, যুদ্ধাপরাধ কেবল একপক্ষের হয় না। গাদ্দাফি ও তার বাহিনীর ক্ষেত্রে আইসিসির বিধান যেমন খাটে, ঠিক তেমনি সেটা এনটিসি ও বিদ্রোহীদের ক্ষেত্রেও খাটে।

গাদ্দাফিকে যেভাবে হত্যা করা হয়েছে তাতে মানবাধিকার লংঘিত হয়েছে এবং এই হত্যা যুদ্ধাপরাধের সংজ্ঞার মধ্যেই পড়ে। যেসব ভিডিওগুলো এখন গণমাধ্যমে প্রচারিত হয়েছে এবং ইউটিউবে ঘুরছে সেখানে পরিষ্কার দেখা যাচ্ছে গাদ্দাফি ও তার ছেলে উভয়েই জীবন্তই ধরা পড়েছিলেন। বোঝা যাচ্ছে তাদের রক্ষা না করে জীবন্ত অবস্থাতেই মেরে ফেলা হয়েছে। কীভাবে মারা হোল সেই মুহূর্তগুলো সম্পর্কে এখনও পুরাপুরি জানা যায় নি, কিন্তু নিরস্ত্র বন্দী অবস্থাতেই তাকে হত্যা করা হয়েছে এটা নিশ্চিত। এই দায় থেকে ন্যাটো ও এনটিসি সহজে বেরিয়ে আসতে পারবে না। জীবন্ত মানুষ কী করে লাশ হয়ে গেল তার একটা তদন্তের দাবি উঠেছে। যেহেতু জেনেভা কনভেনশানের লংঘন হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে অতএব ঘটনার একটা ব্যাখ্যা দেবার দায়ও তৈরি হয়েছে। বলাবাহুল্য, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো জেনেভা কনভেনশানে স্বীকৃত অধিকার ও আইসিসির সংজ্ঞা অনুযায়ী ওয়ারক্রাইম বা যুদ্ধাপরাধ নিয়ে এখন প্রশ্ন তুলতে বাধ্য হচ্ছে। কিন্তু এতে মনে করবার কোন কারন নাই যে এ নিয়ে বড় কোন হৈ চৈ হবে। বড় জোর জাতিসংঘ, ন্যাটো ও লিবিয়ায় গাদ্দাফির বিরুদ্ধে যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী দেশগুলো একটু বিব্রত হবে মাত্র । তবে সেটা সাময়িক। লোক দেখানোর বেশি কিছু হবে না।

বিষয়টি এতোটুকুতেই শেষ হয়ে যাবে। একটু বিব্রত হওয়া, একটু অস্বস্তি, এতোটুকুই। আইসিসিও এই ক্ষেত্রে যুদ্ধাপরাধ সংঘটিত হয়েছে জেনেও এই অপরাধকে আমলে নেবে না।

মানবাধিকার লঙ্ঘন ও যুদ্ধাপরাধেরএই দায় থেকে কী ব্যাখ্যা দিয়ে ন্যাটো বেরিয়ে আসে সেটাই এখন দেখার বিষয়। তবে গাদ্দাফির হত্যার সঙ্গে ন্যাটো সরাসরি জড়িত–এই সত্য ক্রমশ জানাজানি হয়ে যাচ্ছে। ন্যাটোর সদস্য দেশগুলো তাতে আদৌ বিচলিত বলে মনে হয় না। বরং ন্যাটোর তিনটি দেশের মধ্যে প্রতিযোগিতা চলছে গাদ্দাফিকে হত্যা করার কৃতিত্বটা কার বেশি? মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন নাকি ফ্রান্সের? এই হত্যাকাণ্ডের মধ্য দিয়ে লিবিয়ার বিরুদ্ধে ন্যাটোর যুদ্ধের অবসান হয়েছে, এটা এক বিরাট সাফল্য হিশাবে প্রত্যেকেই দাবি করতে চায়। ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা তাদের একটি রিপোর্টে (DEBKAfiles) বলছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখন স্বীকার করতে রাজী যে গাদ্দাফি সির্তেতে যে বাড়িতে ছিলেন সেই বাড়িটি লাস ভেগাসে বসে তাদের বৈমানিকরা ড্রোন দিয়ে সুনির্দিষ্টভাবে চিহ্নিত করে দুই সপ্তাহ নজরদারিতে রেখেছিল আর বাড়ীটির চারদিক ব্রিটিশ আর মার্কিন সেনাবাহিনী ঘিরে রেখেছিল যাতে গাদ্দাফি বেরুতে না পারে। তার মানে ভুমিতে ন্যাটো সেনাবাহিনী সরাসরি যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছে। অথচ ন্যাটো বারবারই দাবি করে আসছে ভূমিতে তাদের কোন সৈন্য যুদ্ধে অংশগ্রহন করছে না। যুদ্ধে ন্যাটো সেনাবাহিনী্র অংশগ্রহণ করার অর্থ লিবিয়া সংক্রান্ত জাতিসংঘের ম্যান্ডেট লঙ্ঘন করা।

লন্ডনের ডেইলি টেলিগ্রাফ বলছে গাদ্দাফি যে একটি গাড়ির বহরে আছে সেটা একটি বৃটিশ গোয়েন্দা বিমান (USAF River Joint RC-135V/W intelligence signals plane) প্রথমে শনাক্ত করে, তারপর সেই খবর চাউর করে দেয় একটি ফরাসি যুদ্ধবিমানে আর সেই ফরাসি বিমান থেকেই গাদ্দাফির গাড়ি লক্ষ্য করে গুলি করা হয়। ইসরায়েলি এই গোয়েন্দা ওয়েবসাইট এটাও দাবি করে যে জার্মান গুপ্তচর সংস্থা (Bundesnachrichtendienst ) গাদ্দাফি কোথায় আছে সেই তথ্য জোগাড় করবার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। অর্থাৎ ন্যাটো সরাসরি ভূমিযুদ্ধে যেমন অংশগ্রহণ করেছে, তেমনি গাদ্দাফিকে হত্যার ক্ষেত্রেও সরাসরি অংশগ্রহণ করেছে। এর মধ্য দিয়ে ন্যাটো মানবাধিকার যেমন লঙ্ঘন করেছে, ঠিক তেমনি যুদ্ধাপরাধের মতো অপরাধে অপরাধীও হয়েছে। কিন্তু তাই বলে এই অপরাধের জন্য ন্যাটোকে ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল কোর্ট বা আইসিসির কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর সম্ভাবনা অতিশয় ক্ষীণ। কিন্তু যুদ্ধাপরাধী হিশাবে ন্যাটোকে চিহ্নিত করে রাখা আমাদের জন্য দরকার।

লিবিয়ায় যে ঘটনা ঘটেছে তা একজন একনায়কতান্ত্রিক স্বৈরশাসকের বিরুদ্ধে লিবীয় জনগণের গণতান্ত্রিক বিদ্রোহ বা বিপ্লবী যুদ্ধ হিশাবে দেখাবার তামাশায় আমরা যেন বিভ্রান্ত না হই। লিবিয়ায় যা ঘটেছে তা হচ্ছে সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসন। গাদ্দাফির বিরোধীরা সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসনে স্থানীয় সহযোগী হিশাবে ব্যবহৃত হয়েছে। গাদ্দাফিকে গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে উৎখাত করবার সম্ভাবনা ছিল কি ছিল না সেই তর্ক এখন করে আর লাভ নাই। যদি তেমন কোন সম্ভাবনা আদৌ থেকে থাকে তবে সেটা দানা বাঁধবার আগেই সেটা হয়ে উঠেছিল পাশ্চাত্য সমর্থক সশস্ত্র কিছু গোষ্ঠির সরকার উৎখাতের লড়াই। তেলের ওপর দখলদারি প্রতিষ্ঠার প্রতিযোগিতা। গোষ্ঠ ও গোত্রের যুদ্ধ।

ইসরায়েলি ওয়েবসাইটের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হচ্ছে ত্রিপোলি যাদের নিয়ন্ত্রনে তাদের মধ্যে রয়েছে সাবেক আল কায়দা নেতা আবদেল হাকিম বেলহাজ এবং লিবিয়ার মুসলিম ব্রাদারহুডের নেতা ইসমাইল ও আলী আল-সাল্লাবি। তারা এনটিসির নেতা আব্দুল জলিলকে ত্রিপোলিতে একটি বিজয় র‍্যালী করতে এই শর্তে অনুমতি দিয়েছে যে তিনি ঘোষণা করবেন নতুন লিবিয়া হবে একটি শরিয়া ভিত্তিক ইসলামি রাষ্ট্র। এনটিসি সেটাই ঘোষণা করেছে। তারা আরও দাবি করছে যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং তাদের ইউরোপীয় মিত্রদের 'আরব বসন্ত' উসকিয়ে দেবার পেছনে প্রাথমিক উদ্দেশ্য হচ্ছে একনায়কতান্ত্রিক সরকারগুলোকে হঠিয়ে সেখানে শরিয়া ভিত্তিক ইসলামি রাষ্ট্র কায়েম। লিবিয়াকে তারা নজির হিশাবে হাজির করছে।

গাদ্দাফির বিরুদ্ধে তার দেশের মানুষের ক্ষোভ ছিল, কিন্তু তার সমর্থকও কম ছিল না। গাদ্দাফির তিন রূপের সঙ্গে আমরা পরিচিত। তাঁর তরুন বিপ্লবী রূপ। সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে জাতীয় মুক্তির নেতা হিশাবে তার আবির্ভাবের কাল (১৯৬০ – ১৯৮৮)। এই সেই গাদ্দাফি যিনি তার দেশের জ্বালানি সম্পদের আয় অর্থাৎ তেলের টাকার একটা অংশ লিবিয়ার জনগণের জন্য ব্যয় করেছেন। লিবীয় জনগণের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে ভূমিকা রেখেছেন। আরব ও আফ্রিকার দেশের জনগণের সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী আকাংখায় প্রেরণা জুগিয়েছেন। তার চিন্তা ও কাজের পদ্ধতি সুসঙ্গত ছিল এটা দাবি করা যাবে না। এরপর আরেক গাদ্দাফিকে আমরা দেখি যিনি পাশ্চাত্যের সঙ্গে হাত মেলাচ্ছেন, অবাধ বাজার ব্যবস্থার নীতি মেনে নিচ্ছেন। ভোগবিলাসে অনুরক্ত হয়ে উঠছেন। তৃতীয় যে রূপ দেখি সেটা হচ্ছে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে অনন্ত যুদ্ধে পাশ্চাত্য শক্তির সহায়তাকারী বনে যাওয়া। কিন্তু এই শেষের পরিবর্তন তাকে সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসন থেকে বাঁচাতে পারলো না। তাকে মরতেই হোল।

নগ্নভাবে জাতিসংঘের প্রস্তাব লঙ্ঘন, মানবাধিকার বুটের তলায় পিষে ফেলা এবং সহাস্যে যুদ্ধাপরাধ সংঘটিত করা –এই হচ্ছে সাম্রাজ্যবাদের আরেক কুৎসিত চেহারা যা আমাদের সবসময়ই মনে রাখা উচিত। গাদ্দাফিকে যেভাবে হত্যা করা হলো তার মধ্য দিয়ে এই চেহারাই গলিত লাশের মত আমাদের সামনে এসে দাঁড়িয়েছে। একে যেন আমরা চিনতে ভুল না করি।
২৫ অক্টোবর ২০১১। ১০ ককার্তিক ১৪১৮। শ্যামলী।