ভাবান্দোলন ও জিহাদ: বিভ্রান্তির স্বরূপ সন্ধান

মাসুদ রানা
Published : 31 July 2016, 04:54 AM
Updated : 31 July 2016, 04:54 AM

বাংলাদেশের একজন বুদ্ধিজীবী ফরহাদ মজহার তাঁর তথাকথিত ভাবান্দোলন ও জিহাদ-সমর্থনের জন্যে অনেকের কাছে পরমপূজ্য। তাঁর অনুসারী জনৈক পিনাকী ভট্টাচার্য একটি সামাজিক যোগাযোগ-মাধ্যমে দাবি করেছিলেন, তিনি নাকি সকল মৃত ও জীবিত বাঙালির মধ্যে শ্রেষ্ঠ মনীষা। আমি দুঃখিত, তা সত্ত্বেও আমি তাঁর সমালোচক।

প্রতিষ্ঠান ও প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তিত্বের বিরুদ্ধে সমালোচনা অধিকাংশ মানুষ মেনে নিতে পারেন না। কারণ, তাতে তাদের মধ্যে 'কোগনিটিভ ডিসোন্যান্স' বা বোধিক বৈরিতা তৈরি হয় বলে তাদের আবেগ আঘাতপ্রাপ্ত হয় এবং তাঁরা কষ্ট পান। আমি তাদের অনুভূতির প্রতি শ্রদ্ধা ঘোষণা করেই বলছি, ফরহাদ মজহারকে নির্বোধ প্রমাণ করা আমার বুদ্ধিবৃত্তির উদ্দেশ্য নয়, কিন্তু আমার বুদ্ধিবৃত্তিক অবস্থান যদি তাঁর অবস্থানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হয়, তাঁর চিন্তার সওঙ্গ আমার সংঘর্ষ এড়াবার কোনো পথ নেই।

আমি মনে করি, বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্মের মধ্যে বোধিক পর্যায়ে আজ যে-বিভ্রান্তি বিরাজ করছে এবং যার কারণে অসীম সম্ভাবনাময় চৌকস তরুণেরা মর্য্যাদাপূর্ণ আত্মপরিচয় ও জীবনের তাৎপর্যের সন্ধানে আত্মহারা হয়ে মৃত্যু-খেলায় মেতে উঠেছে, তার পেছনে অবদান রয়েছে ফরহাদ মজহারের মতো বুদ্ধিজীবীদের, যাঁরা প্রথমে মার্ক্সবাদী আন্তর্জাতিকতাবাদ ও শ্রেণি-সংগ্রামের নামে বাঙালি-আত্মপরিচয়ের দার্শনিক ও রাজনৈতিক অবস্থানের বিরোধিতা শুরু করে শেষ পর্যন্ত ইসলামিক উম্মাহবাদ ও জিহাদের পক্ষে অবস্থান নিয়ে বাঙালি জাতিত্বের বিরুদ্ধে সংগ্রাম অব্যাহত রেখেছেন। ফলে, আমি আমার জাতির তরুণ প্রজন্মের অস্তিত্ব, তথা জাতির অস্তিত্বের স্বার্থে ঐসব বুদ্ধিবৃত্তির বিরুদ্ধে লড়ার নৈতিক অধিকার সংরক্ষণ করি।

'ভাবান্দোলন' বলতে কী বুঝায়, তা ফরহাদ মজহার কিংবা তাঁর ভাবশিষ্যদের কেউই স্পষ্ট করে সংজ্ঞায়িত করেননি। বিভিন্ন সময়ে জিজ্ঞেস করে উত্তর পাওয়া গিয়েছেঃ বইয়ে আছে, পড়ে নিন। যদিও তাঁরা বাঙালি আত্মপরিচয়ের বিরোধী, কিন্ত 'ভাবান্দোলন'এর আগে 'বাংলার' যোগ করে তাঁরা 'বাংলার ভাবান্দোলন' নাম প্রচার করে থাকেন। শিষ্যদের কেউ কেউ 'বাংলার ভাবান্দোলন'কে সর্বভারতীয় ভক্তিবাদের বিশিষ্ট রূপ বলে অস্বীকার করলেও, ভাবগুরু ফরহাদ মজহার স্বয়ং তা অস্বীকার করেননি। তাঁরা সকলেই ষোল শতকের গোড়ার দিকে বাঙালি হিন্দু-ধর্ম সংস্কারক নিমাই সন্যাসী বা চৈতন্যের 'অচিন্ত্য ভেদাভেদ' দর্শনকে মূল হিসেবে মানেন।

'অচিন্ত্য' মানে যা চিন্তা করা যায় না। আর, 'ভেদাভেদ' বলতে বুঝায় ভেদ ও অভেদ। নিমাই সন্যাসী অভিন্ন স্পিরিটের দ্বৈত প্রকাশ হিসেবে রাধা ও কৃষ্ণের দেহরূপকে প্রতীক হিসেবে প্রতিষ্ঠা করে চিন্তা ও বুদ্ধির উর্ধ্বে প্রেম তথা মানুষের আবেগের প্রতি আবেদন জানিয়ে বোধের ক্ষেত্রে সাম্য সৃষ্টির প্রয়াস পেয়েছেন। ফরহাদ মজহার তাঁর ভাববাদের চর্চায় রাধা-কৃষ্ণের ভাব-বন্দনার কথা গোপন করেন না, কিন্তু তা সত্ত্বেও একটি তীব্র মুসলিম আত্মপরিচয়বোধে জাগ্রত হয়ে তিনি সেখানে ইসলামের অবদান নিরূপণ করে লালন ফকিরের বাউলবাদে এসে স্বস্তি লাভ করেন।

ফরহাদ মজহার যদিও নিজেকে শ্রুতিমধুর 'রাষ্ট্রচিন্তক' হিসেবে পরিচয় দেন, কিন্তু ভাবান্দোলনের ভিত্তিতে কী রাষ্ট্র গঠন করতে চান, তার কোনো রূপরেখাই তিনি দিতে পারেননি। দেশ-জাতি-রাষ্ট্র-রাজনীতির আন্তঃসম্পর্কিত কোনো সমন্বিত রূপরেখাই তাঁর নেই।

সমস্যা হচ্ছে, দার্শনিকভাবে ফরহাদ মজহার বিস্তৃত ও সমন্বিত রূপরেখার বিরুদ্ধে। কারণ, সমগ্রকে যা ব্যাখ্যা করে তাকে তিনি ও তাঁর শিষ্যরা 'গ্র্যাণ্ড ন্যারিটিভ' বলে নিন্দা করেন উত্তরাধুনিকতাবাদীদের রেটোরিক অনুসরণ করে। তবে ইদানিং তিনি দেশে ইসলাম প্রতিষ্ঠার কথা খোলামেলাই বলেন। দুবছর আগে লণ্ডনের একটি আলোচনায় তিনি বলেছেন, ইসলাম প্রতিষ্ঠার জন্যে তিনি বাংলাদেশকে 'কব্জা' করতে চান।

রাজনৈতিক পরিবর্তনের প্রক্রিয়া হিসেবে ফরহাদ মজহার প্রথমে শ্রেণি-সংগ্রামবাদী হলেও, পরবর্তীতে তিনি জিহাদের মধ্যে শ্রেণিসংগ্রাম আবিষ্কার করেন। আমি ২০১৩ সালে এক লেখায় দেখিয়েছিলাম, তিনি শ্রেণি-সংগ্রামের মর্মবস্তু অন্তর্ভুক্ত না করেই জিহাদের সাথে শ্রেণি-সংগ্রাম অভিন্ন করে দেখাচ্ছেন।

শ্রেণি-সংগ্রাম যেখানে উৎপাদনের উপায় (মিনস অব প্রোডাকশন) ও উৎপাদিত পণ্যের (কোমোডিটি) ওপর অধিকার ও অধিকারহীনতার ভিত্তিতে সৃষ্ট দুই বিরুদ্ধ মানব-দলের পরস্পরবিরোধী ইহজাগতিক স্বার্থের সংঘাত দ্বারা বস্তুনিষ্ঠভাবে সংজ্ঞায়িত, জিহাদ সেখানে আল্লাহ্‌র একত্ব, শ্রেষ্ঠত্ব ও শরিকহীন উপাস্যতার ভিত্তিতে কুরআন ও সুন্নাহর নির্দেশিত বিধি প্রতিষ্ঠার ধর্মতাত্ত্বিক ও রাজনৈতিক আন্দোলন, যার রয়েছে ইহজাগতিক ও পারলৌকিক তাৎপর্য।

দুবছর আগে বিশ্বের বিভিন্ন সংবাদ সংস্থা আইএসের এই ঘোষণার ওপর প্রতিবেদন প্রকাশ করে জানিয়েছে যে, তারা সৌদি আররের মক্কায় প্রতিষ্ঠিত প্রাচীন উপসনালয় 'কাবা' ধ্বংস করতে চায়। ২০১৪ সালের ৩০ জুন আজারবাইজানের রাজধানী বাকু থেকে রাশেদ সুলেমানভ নামের এক প্রতিবেদক বার্তাসংস্থা APAএর ওয়েবপেইজে প্রকাশিত তাঁর প্রতিবেদনে আইএসের এক নেতার নাম উল্লেখ লিখেন:

ISIS member Abu Turab Al Mugaddasi said that they would destroy the Kaaba in Mecca: "If Allah wills, we will kill those who worship stones in Mecca and destroy the Kaaba. People go to Mecca to touch the stones, not for Allah.

অর্থাৎ, "আইএস সদস্য আবু তুরাব আল মুগাদ্দাসি বলেন যে, তাঁরা মক্কার কাবা ধ্বংস করবে: "আল্লা চাহে তো, আমরা মক্কার সেইসব পাথর (আসওয়াদ) পুজারীকে হত্যা করব এবং কাবা ধ্বংস করব। লোকেরা মক্কায় যায় পাথরগুলো স্পর্শ করতে, আল্লাহ্‌র জন্য নয়।""

JihadWatch (জিহাদ পর্যবেক্ষক) নামের একটি ওয়েবসাইট এই দিনে উপরের খবর পরিবেশন করে প্রশ্ন করেছে নবী মুহাম্মদকে অনুসরণ করে কাবাতে উপাসনা করা উচিত নাকি পৌত্তলিকতা বন্ধ করতে তা ধ্বংস করা উচিত? সাইটটি লিখেছে:

This will not endear them to many Muslims. The Saudis themselves, who are no friends of The Islamic State, assiduously destroy religious artifacts in a bid to prevent "idolatry," but since Muhammad himself is — according to Islamic tradition — supposed to have prayed in the Kaaba, they have not dared to touch it. Will an irresistible force here meet an immovable object? Muslims must reject and destroy all possible temptations to idolatry, and also must follow Muhammad's example in all things. Can the Kaaba ipso facto not be an inducement to idolatry because Muhammad prayed there? Or must it be destroyed despite Muhammad's example so as to prevent the worship of stones? Are Muslims to follow Muhammad in all things or are they to destroy all sources of idolatry?

অর্থাৎ, "এটি (কাবা ধ্বংস কারা) তাদেরকে (আএইসকে) মুসলমানদের কাছে আদরণীয় করবে না। স্বয়ং সৌদিরা, যারা ইসলামিক স্টেইটের বন্ধু নয়, তারাও 'পৌত্তলিকতা' রুখতে ধর্মীয় শিল্পকর্ম ধ্বংস করতে চায়, কিন্তু যেহেতু ইসলামিক ঐতিহ্য (সুন্নাহ) মতে মুহাম্মদ স্বয়ং কাবাতে উপাসনা করেছেন বলে মনে করা হয়, তাই তারা এটি স্পর্শ করার সাহস দেখাচ্ছে না। এখানে কি একটি অপ্রতিরোধ্য শক্তি একটি জড় বস্তুর সম্মুখীন হবে? মুসলমানদেরকে পৌত্তলিকতার প্রতি সম্ভাব্য সকল প্রবণতা প্রত্যাখ্যান করতে হবে এবং সকল বিষয়েই মুহাম্মদকে অনুসরণ করতে হবে। মুহাম্মদ উপাসনা করেছেন বলেই কি কাবা তার বাস্তব ঘটনার কারণে পৌত্তলিকতার প্রণোদনা হতে পারে না? নাকি মুহাম্মদের উপাসনা সত্ত্বেও পৌত্তলিকতা রুখতে এটিকে ধ্বংস করা উচিত? মুসলমানদের কি সকল বিষয়েই মুহাম্মদকে অনুসরণ করতে হবে, নাকি তাদেরকে পৌত্তলিকতার সকল উৎস ধ্বংস করতে হবে?"

উপরে উদ্ধৃতিতে জিহাদীদের কাছে পৌত্তলিকতার ধারণা এবং এর প্রতি তাদের ঘৃণা বুঝা যায়। তারা এমনকি স্বয়ং নবী মুহম্মদের কাবা-চর্চার বিরুদ্ধে যেতেও প্রস্তুত, যা শুধু সময়ের ব্যাপার। জিহাদীরা যেখানে পৌত্তলিকতার ঘোরতর বিরোধী, রাধাকৃষ্ণের প্রতীক-ভিত্তিক ভাবান্দোলক ফরহাদ মজহার সেখানে কীভাবে জিহাদ ধারণ করবেন? যে-জিহাদীরা তাদের দৃষ্টিতে 'পৌত্তলিকতা' রোধে মুসলমানদের মধ্যে সবচেয়ে পবিত্রজ্ঞাত স্থান 'কাবা' তথা 'আল্লাহ্‌র ঘর' পর্যন্ত ভেঙ্গে ফেলতে চায়, তাদের জিহাদের সঙ্গে কীভাবে লালন ফকিরের মাজারে গীত-নৃত্য-বাদ্য যোগে ভাবচর্চাকারী ফরহাদ মজহার একাত্ম হবেন?

এখানে ভাবুক নীরব, অস্পষ্ট, আলো-আধাঁরিতে আছন্ন।

এই যে অস্পষ্টতা, এই যে কুহেলিকা, এই যে ধূম্রজাল, এটি এক প্রকারের মেইজ বা ফাঁদ, যা ভেদ করতে তরুণ বয়েসী নারীপুরুষ সাধারণত তাদের বয়সের কারণেই আকৃষ্ট হয়। বিশেষত জাতির মধ্যে যদি যখন রাজনৈতিক সঙ্কট চলে, তখন এর সর্বোচ্চ অভিঘাত পড়ে তারুণ্যের মননে ও বুদ্ধিতে। কিন্তু সবাই এই অভিঘাতে সমানভাবে সাড়া দেয় না। তরুণদের মধ্যে বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে চৌকস যারা, তা্রা প্রচলিত ব্যাখা-বিবৃতিতে সন্তুষ্ট থাকতে পারে না। স্বভাবত তারা অস্পষ্টতা, কুহেলিকা ও ধুম্রজাল ভেদ করতে প্রবৃত্ত হয় এই আশায় যে, সেখানে হয়তো সত্যের সন্ধান পাওয়া যাবে।

সত্তরের দশকে জাসদের সিরাজুল আলম খানও আজকের ফরহাদ মজহারের মতো সে-সময়ের রাজনৈতিক সঙ্কটের প্রেক্ষাপটে বিপ্লবের নামে এক ধরনের অস্পষ্টতা, কুহেলিকা ও ধূম্রজাল তৈরি করে লক্ষ লক্ষ তরুণ-তরুণীকে আকৃষ্ট করেছিলেন। আজ ফরহাদ মজহার যেমন ইসলামিক উম্মাহ্‌র কথা বলেন, সিরাজুল আলম খানেরাও সর্বহারার আন্তর্জাতিকতার কথা বলতেন। আজ যেমন, জিহাদী তরুণ-তরুণীরা আরব, সিরিয়া, ইকার, প্যালেস্টাইনকে পূণ্যভূমি মনে করে, সে-সময়ের তরুণ-তরুণীরা চীন-রাশিয়া-ভিয়েতনামকে পূণ্যভূমি মনে করত। এগুলো সম্ভব হয় 'আদর্শ'র কারণে।

আদর্শ মানুষকে তার অভিজ্ঞাত বাস্তবতার বিকল্প বিবরণ ও ভবিষ্যত প্রকল্প প্রস্তাব দিয়ে প্রত্যয় তৈরির ভিত্তিতে পরিবর্তন প্রচেষ্টায় প্রয়াসী করে তোলে। কিন্তু সেই আদর্শ যদি বাস্তব জগতের বস্তুনিষ্ঠ সত্য ধারণ না করে, তা থেকে বিচ্যুত কোনো কল্পিত সৌন্দর্য নির্দেশ করে তরুণ-তরুণীদের ডাকে, তারুণের স্বাভাবিক ধর্মে তারা সেদিকে আকৃষ্ট হতে পারে ও হয়ে থাকে। এই আকর্ষণ থেকে তাদেরকে মা-বাবার চোখের জল কিংবা শাসকের বন্দুকের নল, কোনোটা দিয়েই রোখা যায় না, যদি না তার চেয়ে শ্রেয় ও সত্য প্রকল্প হাজির করা যায়।

সত্য বলতে কোনো বস্তু নেই, সত্য বলতে বোধের বস্তুনিষ্ঠতা বুঝায়। যে-মানব গোষ্ঠী প্রাকৃতিকভাবে প্রাপ্ত ও ঐতিহাসিক চর্চায় রপ্ত পার্থক্যসূচক বিবিধ বৈশিষ্ট্য ধারণ করে দেহগতভাবে, ভাষাগতভাবে, সাংস্কৃতিকভাবে, ঐতিহ্যিকভাবে একটি জনজাতি হিসেবে বিকশিত হতে হতে একটি রাজনৈতিক জাতি হিসেবে গড়ে উঠেছে 'বাঙালি' নাম ধারণ করে বাংলা নামের ভূপরিসরে, সেই জাতিকে দূরদেশের ভিন্ন দেহের, ভিন্নভাষার, ভিন্ন সংস্কৃতির, ভিন্ন ঐতিহ্যের জাতির সঙ্গে শুধু অতিপ্রাকৃত বিশ্বাসের জোরে একজাতি বা 'উম্মাহ' হিসেবে প্রকল্পিত করে জিহাদে উদ্বুদ্ধ করলে তার পরিণাম ভয়াবহ হতে বাধ্য।

মানুষ প্রকৃতির সচেতন অংশ বলে, তার প্রকৃতিবিরোধী চেতনা ও কল্পনা তাকে ব্যর্থতায় পর্যবসিত করতে বাধ্য। অতিপ্রাকৃতিক জাতি-পরিচয়ের কুফল কী, তা কি বাঙালি কঠিন মূল্যে শেখেনি? ধর্মীয় বিশ্বাসকে জাতি-পরিচয়ের ভিত্তি হিসেবে ব্যবহার করে যে পাকিস্তান করা হয়েছিল এবং তার বিষফল কি ১৯৭১ সালে বাঙালি জাতিতে ৩০ লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে ভোগ করতে হয়নি?

ফরহাদ মজহারসহ যে-সকল বুদ্ধিজীবী ডানে-বামে, উত্তরে-দক্ষিণে, পূবে-পশ্চিমে কিংবা উর্ধ্বে-অধে তৎপর রয়েছেন বাঙালি আত্মপরিচয়ের বিপরীতে, তাঁরা শুধু জাতির বিরুদ্ধেই নয়, প্রকৃতির বিরুদ্ধে ব্যর্থ প্রয়াসে নিজের বুদ্ধিনাশ ও তরুণ প্রজন্মের বুদ্ধি ও প্রাণ উভয় নাশ করছেন মাত্র।

শনিবার ৩০ জুলাই ২০১৬; লন্ডন, ইংল্যান্ড