ব্রিটেনে বাংলাদেশি ডায়াস্পোরা: আত্মপরিচয়ের সংঘাত ও জঙ্গিবাদের বিপ্রতীপ প্রভাব

বিদিত দে
Published : 10 June 2016, 05:00 PM
Updated : 10 June 2016, 05:00 PM

অভিপ্রয়াণ এবং অভিবাসন মানবসভ্যতার একটি অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। সভ্যতার শুরু থেকেই মানুষ তার চাহিদার তাগিদে ছুটে বেড়িয়েছে স্থানান্তরে। শ্রেয়তর জীবনের সন্ধানে মানুষের দেশান্তরী হবার প্রবণতা তাই আজ নতুন কিছু নয়। ব্যষ্টিক চাহিদার পাশাপাশি সামষ্টিক ক্ষেত্রেও নতুন ভৌগলিক অঞ্চল অধিগ্রহণ, সাম্রাজ্যের বিস্তার, অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক প্রভাবের সম্প্রসারণ ইত্যাদি বিভিন্ন কারণে বিশ্বের বিভিন্ন জাতি-গোষ্ঠীর স্থায়ী বা অস্থায়ী অভিপ্রয়াণ দেখা যায় ইতিহাসের পাতায় পাতায়।

কলম্বাসের আটলান্টিক পাড়ি দেবার ঘটনার পেছনে যেমন একই সঙ্গে ব্যক্তিগত অর্জনের নেশা ছিল, তেমনি ছিল স্পেনের রানির সাম্রাজ্য বিস্তারের আকাঙ্ক্ষা। আবার, আলেকজান্দার বা চেঙ্গিস খানদের রাজ্যজয়ের নেশার কারণে তাদের সৈন্যদল বা পরবর্তী বংশধরদের অস্থায়ী থেকে স্থায়ী অভিবাসনের ফলে বিভিন্ন অঞ্চলের রাজনৈতিক এবং নৃতাত্ত্বিক চরিত্রের পরিবর্তন অবিদিত নয়।

অভিবাসন বা অভিপ্রয়াণ একটি ব্যাপক বিষয়। এই ক্ষুদ্র পরিসরে এটি নিয়ে আলোচনা সম্ভব নয়। এই নিবন্ধের লক্ষ্যও তা নয়। বরং এই ক্ষুদ্র পরিসরে বাংলাদেশি ডায়াস্পোরার বিভিন্ন দিক নিয়ে কিছু আলোচনা করার প্রচেষ্টা করা যেতে পারে।

'ডায়াস্পোরা' শব্দটির আভিধানিক বাংলা প্রতিশব্দ নেই বলেই আমার জানা। মূলত 'ডায়াস্পোরা' শব্দটি ব্যবহার করা হয় ভৌগলিক মূল থেকে বিচ্যূত জাতিগোষ্ঠীকে বোঝাতে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে থাকা ইহুদি সম্প্রদায়ের জন্য এই শব্দটির ব্যবহার শুরু হলেও, পরবর্তী সময়ে আফ্রিকান আমেরিকান, স্প্যানিশ ভাষাভাষী যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক হিস্পানিক সম্প্রদায় এবং নিকট সময়ে প্রাচ্য এবং পাশ্চাত্যের ভারতীয় বংশোদ্ভূতদের জন্য এই শব্দের বহুল ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়।

ডায়াস্পোরার ব্যুৎপত্তিগত সংজ্ঞার একটি বিশেষ দিক হল এই গোষ্ঠীগুলো একাধিক দেশে অভিবাসী হিসেবে দুই বা তিন বা তারও বেশি প্রজন্ম ধরে অবস্থান করলেও, তাদের মূল জাতিসত্তার সঙ্গে একটি সংযোগ বজায় রেখে চলে। যেমন, ক্যারিবীয় কৃষ্ণাঙ্গ সম্প্রদায় দীর্ঘ দিন ধরে আফ্রিকা মহাদেশ থেকে বাইরে থাকলেও তাদের সঙ্গীত, জীবনযাপন এবং সামগ্রিক সংস্কৃতিতে তাদের আদি জাতিসত্তার একটি প্রচ্ছন্ন প্রভাব লক্ষ্য করা যায়। যুক্ত্ররাষ্ট্র, যুক্ত্ররাজ্য বা আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে থাকা ভারতীয় সম্প্রদায় এখনও গুজরাট বা পাঞ্জাবের ভাষা ও জীবনযাপন অনেকাংশে ধারণ করে চলেছে।

সর্বোপরি, একই ডায়াস্পোরার সদস্যরা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে থাকলেও এক ধরনের সাংস্কৃতিক ঐক্যের বন্ধনে যুক্ত থাকে। যেমন, ভাংরা নাচ এবং পাঞ্জাবি সঙ্গীত দ্বিতীয় বা তৃতীয় প্রজন্মের ভারতীয়দের মাঝে জনপ্রিয়। ভারতীয় বা পাকিস্তানি বংশোদ্ভূতদের মাঝে ক্রিকেটের আকর্ষণ তাদের আঞ্চলিক সংস্কৃতির একটি বৈশ্বিক রূপ যা তাদের ডায়াস্পোরা বিশেষায়িত করে।

বাংলাদেশি ডায়াস্পোরা উপরোক্ত সম্প্রদায়গুলোর থেকে কিছুটা নবীন, কিন্তু সংখ্যায় এবং গুরুত্বে বর্ধিষ্ণু। যুক্তরাজ্যে আমাদের সিলেটি সম্প্রদায়ের অবস্থান সর্বজনবিদিত। যুক্তরাজ্যের অর্থনীতি, সমাজ এবং রাজনীতিতে তাদের অবদান উত্তরোত্তর বেড়ে চলেছে। সিলেটিদের পথ ধরে বাংলাদেশের অন্যান্য অঞ্চলের অধিবাসীরাও যুক্তরাজ্যে ক্রমেই নিজেদের স্থান করে নিচ্ছেন। হালের লন্ডনভিত্তিক তিনজন বাঙালি এমপির উঠে আসা এই দেশে দ্বিতীয় প্রজন্মের বাংলাদেশিদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার বিষয়টি প্রমাণ করে।

পরিতাপের বিষয় হল, বাংলাদেশি ডায়াস্পোরা নিয়ে গবেষণার সংখ্যা একান্তই সীমিত। লন্ডনের ব্রিকলেন বা নিউ ইয়র্কের জ্যাকসন হাইটস বাংলাদেশি উদ্যোক্তাদের অদম্য স্পৃহা যেমন ধারণ করে, তেমনি পরবাসে দেশীয় সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য লালন করার আকাঙ্ক্ষা দৃশ্যমান করে। একই সঙ্গে এটি বলা প্রয়োজন যে, আমরা লন্ডন বা নিউ ইয়র্কে আজ যা দেখতে পাচ্ছি তা কিন্তু বাংলাদেশি ডায়াস্পোরার উন্মেষের সূচনা মাত্র।

এটি নির্দ্বিধায় বলা যায় যে, বাংলাদেশি ডায়াস্পোরার এই পথপরিক্রমা যাবে আরও বহুদূর।

কিন্তু কেমন হবে আমাদের ডায়াস্পোরার গতিপ্রকৃতি-– কীভাবে পরিচিত হবে তারা? এই 'আত্মপরিচয়' বা আইডেনটিটি শব্দটি সমাজতাত্ত্বিক এবং নৃ্তাত্ত্বিক গবেষণায় ডায়াস্পোরার সঙ্গে সমোচ্চারিত হয়ে থাকে। বহুজাতিক এবং বহুমাত্রিক সমাজের সদস্যদের পরিচয়ের ক্ষেত্রে স্বভাবতই একাধিক পরিচয় লক্ষ্য করা যায়।

পাশ্চাত্যের মাল্টিকালচারাল সমাজে এই পরিচয়ের উন্মেষ, বিকাশ এবং প্রকাশ অনেক ক্ষেত্রেই জটিল এবং বহুধাবিভক্ত। যেমন দ্বিতীয় বা তৃতীয় প্রজন্মের যুক্তরাজ্যের নাগরিক একজন বাংলাদেশি একই সঙ্গে একজন মুসলিম, বাঙালি (ক্ষেত্রবিশেষে সিলেটি)এবং ব্রিটিশ-– এই তিনটি পরিচয় ধারণ করতে পারে। তার বিশ্বাস, মূল্যবোধ এবং ব্যবহার-– এই তিন স্তরে উপরোক্ত পরিচয়গুলোর প্রচ্ছন্ন বা প্রকট রূপ প্রকাশিত হতে পারে। আর এই পরিচয়ের যদি একটি সামষ্টিক রূপ থাকে তবে তা-ই হবে আমাদের বাংলাদেশি সম্প্রদায়ের ডায়াস্পোরা পরিচয়।

আমরা সবাই জানি যে, যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশি সম্প্রদায় অনেক বিস্তৃত এবং অনেক ক্ষেত্রেই এখন তাদের তৃতীয় বা চতুর্থ প্রজন্ম চলছে। এ অবস্থায় এই সম্প্রদায়ের একটি মিশ্র সাংস্কৃতিক অবয়ব গড়ে উঠেছে যেটি ডায়াস্পোরা সম্প্রদায়ের জন্য স্বাভাবিক। কিন্তু পাশ্চাত্যের মুসলমান সমাজের উপর উত্তরোত্তর বাড়তে থাকা প্যান-ইসলামিজম বা ইসলামের বৈশ্বিক রাজনৈতিকায়নের প্রভাব থেকে বাংলাদেশি অভিবাসী সম্প্রদায়ও মুক্ত নয়।

দেখা গেছে যে, ব্রিটিশ বাংলাদেশিদের মধ্যে মৌলবাদ এবং জঙ্গিবাদ খুব আশংকাজনকভাবে বাড়ছে। আশ্চর্যের বিষয় হল, ব্রিটেনে জিহাদিদের আদি গুরু একজন বাংলাদেশি, তার নাম আবু মুনতাসীর। সম্প্রতি আইটিভির একটি প্রতিবেদনে উঠে আসে আবু মুনতাসীরের জিহাদে যোগদানের বিষয়টি। আবু মুনতাসীর আফগানিস্তান, বসনিয়া এবং বার্মাসহ বিভিন্ন দেশে সরাসরি সশস্ত্র যুদ্ধে অংশ নেয় প্যান-ইসলামিজমে উদ্বুদ্ধ হয়ে।

বছরখানেক আগে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ও ইস্ট লন্ডনের বেথনাল গ্রিন স্কুলে অধ্যয়নরত তিন ছাত্রী সিরিয়ায় চলে যায় জিহাদে অংশ নিতে। প্রথমে মনে করা হয়েছিল ইন্টারনেটের মাধ্যমে তাদের মগজ ধোলাই করা হয়েছিল। কিন্তু পরবর্তীতে দেখা যায়, এই প্রক্রিয়ায় পূর্ব লন্ডন মসজিদে গড়ে ওঠা একটি মহল জড়িত থাকতে পারে। এই একই মসজিদের সঙ্গে আইএফই বা ইসলামিক ফোরাম অব ইউরোপের ঘনিষ্ঠতার অভিযোগ অনেক দিন ধরেই চলে আসছে। আইএফই সমগ্র ইউরোপে খেলাফত প্রতিষ্ঠার জন্য নিবেদিত একটি বিতর্কিত সংগঠন।

উল্লেখ্য, ১৯৭১ সালের মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে সাজাপ্রাপ্ত বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ডের অন্যতম পরিকল্পনাকারী চৌধুরী মুইনুদ্দীন আইএফইএর একজন প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। বাংলাদেশি-অধ্যুষিত পূর্ব লন্ডনে গড়ে ওঠা একটি প্রতিষ্ঠানের বিরূদ্ধে প্রকাশ্যে এবং গোপনে আইসিস সমর্থনের অভিযোগ উঠে চ্যানেল ফোরের অপর একটি ডকুমেন্ট্রিতে।

যুক্তরাজ্যভিত্তিক বাংলাদেশি দ্বিতীয় বা তৃতীয় প্রজন্মের একটি বিরাট অংশের পূর্বপুরুষ বৃহত্তর সিলেট অঞ্চল থেকে আগত। গত চার বা পাঁচ দশকে তাদের অবদান শুধু ব্রিটেনে বাংলাদেশিদের একটি সম্মানজনক অবস্থান বিনির্মাণেই নয় বরং বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে এবং পরবর্তী সময়ে গণতান্ত্রিক ও প্রগতিশীল আন্দোলনে সক্রিয় সমর্থন ও সহযোগিতা প্রদানে এক গৌরবোজ্জ্বল নিদর্শন হয়ে রয়েছে।

আমাদের মনে রাখতে হবে যে, ষাটের দশকের ব্রিটেন আজকের মতো এতটা উদার ছিল না। সেই প্রতিকূল বর্ণবাদী পরিবেশে বাংলাদেশিদের অবস্থান দৃঢ় করার কঠিন কাজটি এই সম্প্রদায় করেছে যার পথ ধরে আমরা আজকের ব্রিকলেইন এবং আলতাব আলি পার্ক পেয়েছি। সেই সম্প্রদায়ের উত্তরসূরীদের তাহলে আজকে কেন এই উগ্র দক্ষিণপন্থার দিকে অধিগমন?

এখানে অনেক কারণ রয়েছে। প্যান-ইসলামিজমের প্রসারের কথা আগেই বলা হয়েছে– তার উপর আছে অশিক্ষা, দারিদ্র, কর্মসংস্থানের অভাব; আছে বৃহত্তর জাতিগোষ্ঠীর সংস্কৃতির সঙ্গে একাত্ম হতে না-পারার ব্যর্থতা; উদ্বেগজনকভাবে বাড়তে থাকা ইসলামোফোবিয়া– আবার অন্যদিকে মসজিদভিত্তিক ধর্ম-ব্যবসায়। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে কমিউনিটির কিছু কিছু নেতার ধর্মকে ব্যবহার করে রাজনৈতিক উচ্চাভিলাষের প্রচেষ্টা।

এই পরিস্থিতি শুধু ব্রিটেনের জন্যই চিন্তার বিষয় নয়। এর সঙ্গে বাংলাদেশের অসাম্প্রদায়িক রাজনীতির বর্তমান এবং ভবিষ্যতের একটি সুস্পষ্ট যোগ রয়েছে। গবেষণা থেকে দেখা গেছে যে, দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য ডায়াস্পোরা তাদের মূল দেশের রাজনীতিতে এখন অনেক বেশি সক্রিয় ভূমিকা পালন করছে। পাকিস্তানি-বংশোদ্ভূতদের একটি অংশের সিরিয়া গমন ও তাদের নিজস্ব দেশের জঙ্গি গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে যোগসাজস বা ভারতীয় অভিবাসীদের বিজেপি ও মোদীর প্রতি সমর্থন দেশ ও বিদেশের রাজনীতির একটি পারস্পরিক মিথষ্ক্রিয়া ও বিপ্রতীপ প্রভাবের স্বাক্ষর বহন করে।

বাংলাদেশও ব্যতিক্রম নয়। ব্রিকলেইন এবং পূর্ব লন্ডনে গত দেড় বা দুই দশক ধরে জামায়াত ও সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোর ক্রমবর্ধমান প্রভাব একটি অশনি সংকেত এনে দেয়। ইদানিং বাংলাদেশে আটককৃত যুক্তরাজ্যের এক নাগরিকের জঙ্গি-সংশ্লিষ্টতার প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ সরকার ক্যামেরন প্রশাসনের কাছে তাদের উদ্বেগের কথা প্রকাশ করে।

ড. অভিজিৎ রায় ও অনন্ত বিজয় হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে লন্ডন-প্রবাসী তৌহিদুল ইসলামের নাম উঠে এসেছে গোয়েন্দা রিপোর্টে। কিন্তু পূর্ব লন্ডনভিত্তিক জনৈক ধর্মগুরুর (যিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি অত্যন্ত গর্হিত এবং অপ্রকাশযোগ্য মন্তব্য প্রকাশ্যে করেছিলেন শাহবাগ-পরবর্তী সময়ে) সঙ্গে ক্ষমতাসীন টরি দলের সখ্যতা বাংলাদেশ সরকার ও যুক্তরাজ্যে বসবাসরত প্রগতিশীল ও সেকুলার বাংলাদেশিদের আশাহত, শঙ্কিত করে।

অন্যদিকে, লিবারেল ডেমোক্রেট দলের এক নেতা অন-রেকর্ড একটি বাংলাদেশি টিভি চ্যানেলে বলেন যে, সেকুলার শিক্ষায় শিক্ষিত বাংলাদেশের মুসলমানদের মাঝে ধর্মীয় মূল্যবোধের ঘাটতি রয়েছে। অর্থাৎ যুক্তরাজ্যের রাজনীতিতে ক্রমেই শক্তিশালী হয়ে ওঠা এই প্রতিক্রিয়াশীল শক্তি অত্যন্ত সুকৌশলে বাংলাদেশের অসাম্প্রদায়িক ও ধর্মনিরপেক্ষ মূল্যবোধ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে আঘাত করে চলেছে।

সিলেটের আছে অনেক দিনের অসাম্প্রদায়িক ঐতিহ্য। আছে হাছন রাজা এবং শাহ আবদুল করিমের প্রভাব; পীর দরবেশদের স্নেহ ও শুভাশীষ; মনিপুরী আর কৈবর্তদের সংস্কৃতির অনুরণন। এই বহুত্ব সিলেটের এবং বাংলাদেশের গৌরব-– যা সালাফিস্টদের পছন্দ নয়। তারা কেবল অন্য ধর্ম নয়, বরং ইসলামের ভেতরের বহুত্ব ধংস করতে তৎপর।

ব্রিটেনের সিলেটি সম্প্রদায়ের আত্মপরিচয় তাই আজ নতুন করে উপস্থাপন করতে হবে নতুন প্রজন্মের কাছে। ব্রিটেনে কাজ করছে এমন সেকুলার সামাজিক সংগঠনগুলোর জন্য ব্রিটেন ও বাংলাদেশ সরকারের সাহায্য অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছে। আরও প্রয়োজন দুই সরকারের মধ্যে আস্থা ও সহযোগিতার সম্প্রসারণ। তা না হলে একদিকে যেমন দুদেশের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হতে পারে, অন্যদিকে তেমনি দেশে দুটির উদার অসাম্প্রদায়িক সমাজের উপর আঘাত আসতে পারে।

অনেক পুরনো একটি কথা মনে পড়ছে এ প্রসঙ্গে-– আমাদের হাঁটতে হলেও দৌড়াতে হবে, চলতে হলেও। কারণ প্রতি মুহূর্তে আমাদের দেরি হয়ে যাচ্ছে-– উগ্রবাদের ভাইরাস আমাদের ক্রমেই গ্রাস করছে।