RAB-এর বিলুপ্তি সময়ের দাবি

শামীমা বিনতে রহমান
Published : 26 August 2011, 02:50 PM
Updated : 26 August 2011, 02:50 PM

২৪ অগাস্ট আ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ বিষয়ে নতুন এক প্রতিবেদন-' ক্রাইমস আনসিন: এক্সট্রা জুডিশিয়াল এক্সিকিউশনস ইন বাংলাদেশ' প্রতিবেদনে দুটি ওজনদার কথা বলেছে। ১. বিচার বর্হির্ভূত হত্যাকাণ্ড বন্ধে সরকারের এখনই কঠোর পদক্ষেপ নেয়া উচিৎ। আ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের ওয়েব সাইটে দেখা যায়, চলতি বছরেই জানুয়ারি থেকে অগাস্ট পর্যন্ত ৭ বার এই বিচারবিভাগকে তোয়াক্কা না করে র‌্যাবের খুন খারাবির বিরুদ্ধে সরকারকে অবস্থান নেয়ার জন্য অনুরোধ জানিয়েছে।

২. র‌্যাবকে অস্ত্র সরবরাহ করে যেসব দেশ অর্থাৎ, যেসব দেশ র‌্যাবের কাছে অস্ত্র বেচে, সেসব দেশ অস্ট্রিয়া, বেলজিয়াম, চীন, চেক রিপাবলিক, ইতালি, পোল্যান্ড, রাশিয়ান ফেডারেশন, শ্লোভাকিয়া, তুরস্ক এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র-এদের অস্ত্র বেচা বন্ধ করতে বলেছে। ব্যাখ্যায় আ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলেছে, যে সংস্থা ক্রমাগত বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে মানবাধিকার লঙ্ঘন করে যাচ্ছে, সেই প্রতিষ্টানের কাছে অস্ত্র বিক্রি বন্ধ করা মানবাধিকার রক্ষায় সহায়ক হবে। আ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের কাজ দেশে দেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের পরিস্থিতি, তার ভয়াবহতার চেহারা তুলে ধরা, একই সঙ্গে করনীয় ঠিক করা। কিন্তু সেই করনীয় কাজটা যাদের করার কথা, প্রথমত: বাংলাদেশ সরকার, যারা নির্বাচনি ইশতেহারে প্রতিশ্রুতি দিয়ে এসেছিল বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ঘটাবে না, তারা কী করছে? প্রশ্ন হলো, ২০০৪ সালে বিএনপি-জামাত জোট সরকারের সময় প্রতিষ্ঠিত হওয়া এলিট ফোর্স, র‌্যাপিড আ্যাকশন ব্যাটেলিয়ন, র‌্যাব, যারা ২০১০ সাল পর্যন্ত ৭০০ লোককে(আ্যামনেস্টি ইন্ট'র তথ্য) এবং চলতি বছরের মাঝামাঝি পর্যন্ত আরো ২০০ লোককে(একই সূত্র) বিচার ব্যবস্থার মধ্যে না গিয়েই ক্রসফায়ার নামক এক বানোয়াট গল্পে, সন্ত্রাসী বানিয়ে খুন করলো, সেই বাহিনীকে আওয়ামীলীগ নেতৃত্বাধীন সরকার কেন এমন আদর যত্ন করে পুষছে?

এই প্রশ্নে যাবার আগে, দুইটা ঘটনা উল্লেখ করতে চাই। সম্প্রতি পান্থপথে এক উচ্চ মধ্যবিত্ত পরিবারের বাসায় গিয়ে র‌্যাব সদস্যরা একজন 'মাদকসেবী', 'চিহ্ণিত অপরাধী' এক কিশোরকে খুঁজতে রেইড চালায়। ওই ছেলের মা জানান, তার ছেলে তখোন বাসায় ছিল না এবং র‌্যাব সদস্যরা তাকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে এসেছে এবং পুরো ঘর তচনছ করে এসেছে। অন্য ঘটনাটা একটু অন্যরকম। আমার এক বন্ধুর স্বামী মিলিটারি স্টাফ কলেজ থেকে স্থানান্তরিত হয়ে র‌্যাবে অর্ন্তভূক্ত হয়। বন্ধুর কথা অনুযায়ি, তার স্বামী সম্প্রতি চাকরিটি ছেড়ে দিয়েছে, কারণ সে প্রচন্ড রকমের মানসিক সমস্যায় ভুগছিল। একেকটা কিলিং অপারেশনের পর বাসায় এসে অদ্ভুত সব আচরণ করতো। কীভাবে নিজের হাতে গুলি করে মানুষকে মারতে হতো, সেই বর্নণা দিতে গিয়ে মাঝে মাঝেই সে অস্বাভাবিক সব আচরণ করতো।

এই ঘটনাগুলো বললাম, এ জন্য যে ক্রমবর্ধমান সন্ত্রাস নির্মূলে ২০০৪ সালে যে র‌্যাব বাহিনীকে গঠন করা হয়েছে, সেই র‌্যাব বাহিনী সম্পর্কে মানুষের অভিজ্ঞতা থেকে পার্সেপশন এরকম ভয়াবহ আতঙ্কের। বিভিষীকার। এটা সবাই জানে। সবাই জানে র‌্যাবের ব্যবহার করা ক্রসফায়ার শব্দের মানে কী। সবাই জানে ওটা খুন। আর গণমাধ্যমগুলো র‌্যাবের এই খুনগুলোকে র‌্যাবের পাঠানো প্রেসরিলিজে উল্লেখ থাকা ক্রস ফায়ার শব্দই ব্যবহার করে। ১২ই অগাস্ট রাতে উত্তরায় র‌্যাব ৫ জনকে মেরে ফেললো। এর আগে ঝালকাঠির লিমনতো পুরো দেশকে নাড়া দিয়ে গেছে। সেই ঘটনায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর বক্তব্য সবাইকে পরিস্কার করে দিয়েছিল, র‌্যাবের উপর কোন নিয়ন্ত্রণ নাই এ মন্ত্রণালয়ের। খেয়াল করে দেখুন পাঠক, ২০ মে প্রধানমন্ত্রীর প্রতিরক্ষা বিষয়ক উপদেষ্টা তারেক আহমেদ সিদ্দিক হঠাৎ করে সাংবাদিকদের ডেকে বললেন, লিমন এবং তার বাবা দুজনেই সন্ত্রাসী সংগঠনের সদস্য। কোন সংগঠন তার নাম-ধাম কিছুই জানান নি। তারপর দিন মার্কিন রাষ্ট্রদূত জেমস এফ মরিয়ার্টির সাথে তার অফিসিয়াল সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হলে, মন্ত্রী বলেন, প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা যা বলেছেন, যথার্থই বলেছেন। দুইটা প্রশ্ন উঠে, ১. স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে যদি উপদেষ্টার কথাই ধার করতে হয়, তাহলে তার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী থাকার দরকার কি? ২. প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা কেন, কিসের ভিত্তিতে গায়ে পড়ে এসব কথা বলেন, জোরটা কোথায়?

কালো পোশাক, কালো সানগ্লাস পরা ভয়াল দর্শনের র‌্যাব বাহিনীকে দেখলে, সাধারণ কোন মানুষের বিপদের উপকারি সংস্থাতো মনে হয়ই না, অনেককেই বলতে শুনেছি 'যমদূত'। এইগুলা পাবলিক পার্সেপশন। এই পর্যন্ত প্রায় হাজার মানুষ খুন করে ফেলা র‌্যাব কোন মানুষটার উপকার করেছে? খুন করার অভিযোগে র‌্যাবের কোন অফিসারের শাস্তি হয়েছে? কিচ্ছু হয় নি। একটু গার্ডিয়ান পত্রিকার প্রতিবেদন শেয়ার করি পাঠক।

২১ ডিসেম্বর, ২০১০ সালে 'উইকিলিকস কেবলস: বাংলাদেশি ডেথ স্কোয়াড ট্রেইনড বাই ইউকে গভর্নমেন্ট' শিরোনামে রিপোর্ট প্রকাশ করে লন্ডনের গার্ডিয়ান পত্রিকা। এতে বলা হয়, সাম্প্রতিক বছরগুলাতে শত শত বিচারবহির্ভূত হত্যা ও নিয়মিত আটক ব্যক্তিদের নির্যাতন করার দায়ে অভিযুক্ত র‌্যাব যুক্তরাজ্যের কাছ থেকে 'অনুসন্ধানী জেরার কৌশল' এবং কর্মকৌশল বিষয়ে প্রশিক্ষণ নিয়েছে। ওই রিপোর্টেই উইকিলিকসের ফাঁস করা গোপন মার্কিন কুটনৈতিক বার্তায় আরো বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে মানবাধিকার রক্ষা ছাড়া অন্য কোন প্রশিক্ষণ দেবে না। কারণ এ বাহিনী ব্যাপকভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘন করে চলেছে, তাই মার্কিন আইন অনুযায়ি এ প্রশিক্ষণ অবৈধ হতে পারে। ওই প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, অপহরণ, চাঁদাবাজি ও ক্রসফায়ারে হত্যা করার জন্য মোটা অঙ্কের ঘুষ নেয়ার অভিয়োগ রয়েছে র‌্যাবের বিরুদ্ধে। রিপোর্টটিতে আরো বলা হয়, মানবাধিকার বিষয় ছাড়া র‌্যাবের প্রশিক্ষণের ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের কথিত অনাগ্রহ সত্ত্বেও মার্কিন কুটনৈতিক বার্তাই ইঙ্গিত দিচ্ছে, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র উভয়েই বাংলাদেশে সন্ত্রাসবাদবিরোধী অভিযানকে শক্তিশালী করার সংকল্প থেকে র‌্যাবের সক্ষমতা বাড়ানোর পক্ষে। উইকিলিকসের আরেক তার বার্তা থেকে বলা হয়, জেমস এফ মরিয়ার্টি র‌্যাব সম্পর্কে বলেন, এখনকার আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মধ্যে র‌্যাবেরই কোন একদিন যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা, এফবিআইয়ের মতো সংস্থা হিসাবে গড়ে ওঠার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি।

লক্ষ্য করুন প্রিয় নারী ও পুরুষ পাঠক, যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান। যেই যুক্তরাষ্ট্র প্রশিক্ষণ দিতে অস্বীকৃতি জানায়, সেই যুক্তরাষ্ট্র র‌্যাবের কাছে ঠিকই অস্ত্র বেচে। র‌্যাব কী কী অস্ত্র কেনে? আ্যমনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের তথ্য অনুযায়ি, পিস্তল, মেশিনগান, টক্সিক এজেন্ট (টিয়ার শেল), গ্রেনেড, ল্যান্সারস। আর উইকিপিডিয়ার তথ্য অনুযায়ি, যুক্তরাষ্ট্র থেকে কেনে সেমি অটোমেটিক পিস্তল, যার নাম ব্রাউনিং এম ১৯১১।

এই যে ১৮ অগাস্ট, নিষিদ্ধ হরকাতুল জিহাদের আমির হিসাবে যে ইয়াহিয়াকে ভৈরবে বাস থেকে আটক করলো র‌্যাব, তার দুই দিন পর তার পরিবার টেলিভিশনে ছবিসহ খবর দেখে দাবি করলো, ওই লোকের নাম ইয়ার আলি, ৫ মাস আগে নিখোঁজ হয়ে গেছিলো, এখন সে কেমন করে হুজি'র আমীর হলো? ২১ অগাস্ট গ্রেনেড হামলার চার্জশীটভূক্ত ৭ নম্বর জঙ্গী আসামীকে গ্রেফতার করে র‌্যাব আওয়ামীলীগকে সন্তুষ্ট করার চেষ্টা চালিয়েছে, আপাতদৃষ্টিতে মনে হলেও দৃষ্টি আরো প্রসারিত করলে বোঝা সম্ভব, জঙ্গী নির্মূলে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে বাংলাদেশের যে অঙ্গীকার আছে, তা পুরণ করা। তাতে কে বলি হলো আর কে বলি হলো না, তা বিষয় না। বিষয় হলো, শেয়াল পন্ডিতের পাঠশালায় কুমিরের একটা ছানাকে দেখানো। এতে যুক্তরাষ্ট্রও খুশী। আরো অস্ত্র কেনার রাস্তাও খুলে যায়। এটা আমি মনে করি। জঙ্গী বানানো আর সন্ত্রাস দমনের নামে মানুষ খুন করা, র‌্যাবের নিছক কাজ নয়, এর সাথে সম্পর্কিত আছে অন্য অনেক বিষয়, যার মধ্যে প্রধান মনে করি বাণিজ্য। অস্ত্র বাণিজ্য।

নারী ও পুরুষ পাঠক, আপনাদের মনোযোগ আকর্ষন করছি, র‌্যাবের নিজস্ব ওয়েব সাইটে তাদের মনোগ্রাম সম্পর্কে যে ব্যাখ্যা দেয়া আছে, তাতে। একদম ওয়েব সাইট থেকে তুলে দিলাম।
র‌্যাব মনোগ্রাম এর বিভিন্ন প্রতীকের তাৎপর্য

১। জাতীয় ফুল (শাপলা) র‌্যাবের মনোগ্রামের শীর্ষভাগে অবস্থিত জাতীয় ফুল শাপলা। শাপলা বাংলাদেশের জাতীয় ফুল এবং বাংলাদেশের জাতীয় প্রতীক।
২। মনোগ্রামের সবুজ রংয়ের জমিনে লাল সূর্য। অনন্ত সবুজের দেশ বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার সাথে মিল রেখে র‌্যাবের মনোগ্রামের সবুজ ও লাল রংয়ের জমিন নির্ধারণ করা হয়েছে। এলিট ফোর্স র‌্যাব এর প্রতিটি সদস্যের হৃদয়ে রয়েছে বাংলাদেশের পতাকার গৌরব সমুন্নত রাখার ‍বজ্র কঠিন প্রতিজ্ঞা।
৩। জাতীয় স্মৃতিসৌধ। মনোগ্রামের কেন্দ্রে অবস্থিত স্মৃতিসৌধ বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব এবং শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা ও অন্যান্য শহীদের আত্মত্যাগের প্রতীক। জাতীয় স্মৃতিসৌধ শহীদের লালিত স্বপ্নের সুখী বাংলাদেশ গড়ার অংগীকার র‌্যাব সদস্যদের স্মরণ করিয়ে দেয়।
৪। ধানের শীষ । র‌্যাবের মনোগ্রামের স্মৃতিসৌধের প্রতিকৃতির দুইপার্শ্বের ধানের শীষ কৃষি প্রধান বাংলাদেশের ঐতিহ্যের প্রতিচ্ছবি এবং সুখী ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশের প্রতীক।
৫। অগ্রগতির চাকা। র‌্যাবের মনোগ্রামের স্মৃতি উৎকীর্ণ স্মৃতিসৌধ এর নিচে অবস্থিত ধাতব চাকা সময়ের সাথে দ্রুত উন্নয়নশীল বাংলাদেশের অগ্রগতির প্রতীক । যে কোন মূল্যে সন্ত্রাস নির্মূল করে হৃদয়ের দেশ বাংলাদেশের অর্থনীতির অগ্রগতির চাকা অব্যাহত রাখতে র‌্যাব প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।
৬। র‌্যাবের মূলমন্ত্র। মনোগ্রামের সর্বনিম্নে উৎকীর্ণ বাংলাদেশ আমার অহংকার র‌্যাবের মূলমন্ত্র। এ মূলমন্ত্রে উজ্জীবিত র‌্যাবের প্রতিটি সদস্য সন্ত্রাসমুক্ত সুখী এবং সমৃদ্ধ দেশ গড়ার জন্য সর্বদা বজ্র কঠিন সংকল্পবদ্ধ।

মনোগ্রামে 'বাংলাদেশ আমার অহংকার র‌্যাবের মূল মন্ত্র'- নির্বিচারে বাংলাদেশের মানুষ খুন করার মধ্যেই কি র‌্যাবের অহংকার? আরো একটা তথ্য শেয়ার করি, র‌্যাব হেড কোয়ার্টারে ট্রেইনিং এন্ড অরিয়েন্টেশন উইংয়ে যে ছয়টা প্রশিক্ষণ কোর্সের উল্লেখ আছে, তার কোথাও মানবাধিকার বিষয়ক কোন প্রশিক্ষণ কোর্স নাই।

ঢাকা শহরের ৫টি সহ সারা দেশে র‌্যাবের ১২টি ব্যাটেলিয়নের হাতে মানুষ খুন হতে হতে, নিপীড়িত হতে হতে; কাঁদতে কাঁদতে আর সহ্য করা যাচ্ছে না। কিছু ফেন্সিডিল, ইয়াবা উদ্ধার করে, টেলিভিশন, খবরের কাগজের রিপোর্টারদের ফোন করে 'রিকভারি' আছে বলে অথবা হুজি'র জঙ্গী আটক করা হয়েছে বলে ক্যামেরার সামনে ব্রিফিং দিয়ে মানুষকে আর বোঝানো যাচ্ছে না র‌্যাব ভালো কাজ করছে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। আপনার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর যে কোন নিয়ন্ত্রণ নেই, এটা তো আর বলার অপেক্ষা রাখে না। এখন আপনাকেই জবাব দিতে হবে আ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের প্রতিবেদনের। আ্যামেরিকাসহ অন্যান্য দেশের অস্ত্রের বাজার গরম রাখার দায়িত্ব আপনার নয়। আপনার দায়িত্ব বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বন্ধে, ক্ষমতায় আসার আগের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করা। বলেছিলেন, এ ব্যাপারে আপনার অবস্থান 'জিরো টলারেন্স'। আর সেটা পারা যাচ্ছে না যখন, জনগণের সামনে খোলাসা করুণ আপনার সীমাবদ্ধতা।

আরেক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ র‌্যাবের নাম দিয়েছে, 'গভার্ণমেন্ট ডেথ স্কোয়াড'। প্রিয় প্রধানমন্ত্রী, আপনার ভোটাররা আপনাকে মানবিকই ভাবতে পছন্দ করে। তাদের ভাবনাকে মর্যাদা দেয়া আপনার দায়িত্ব যেমন দেশে, তেমনি বিদেশেও বাংলাদেশকে মানবিক দেশ হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করা । হয় র‌্যাবের বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকা হাজারখানেক হত্যাকাণ্ডের বিচার প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে অথবা র‌্যাব নামক খুনী প্রতিষ্ঠানটিকে বন্ধ করে দিয়ে, সেই বরাদ্দ টাকা দিয়ে তৃণমূল পর্যন্ত বিস্তৃত পুলিশ বাহিনীকে দক্ষ, প্রশিক্ষিত এবং আধুনিক অস্ত্রের ব্যবহার শেখা, মানবাধিকার সম্পর্কে প্রশিক্ষণের উদ্যোগ নেয়া যেতে পারে।

শামীমা বিনতে রহমান: লেখক ও সাংবাদিক।