আবারও রক্তক্ষয় অতঃপর নীরবতা

ফরিদ আহমেদ
Published : 1 Nov 2015, 03:54 AM
Updated : 1 Nov 2015, 03:54 AM

সামান্য সময়ের ব্যবধানে দুদুটো আক্রমণ শাণিয়েছে বাংলাদেশের ইসলামি মৌলবাদীরা। প্রথম আক্রমণটা ছিল ধানমণ্ডির শুদ্ধস্বর অফিসে। তিন জনের একটা ঘাতক দল অফিসে ঢুকে শুদ্ধস্বরের প্রকাশক আহমেদুর রশীদ টুটুলকে চাপাতি দিয়ে উপর্যুপরি কুপিয়েছে। টুটুলের সঙ্গে ব্লগার ও লেখক রণদীপম বসু এবং কবি তারেক রহিম ছিলেন। ঘাতক দল তাদেরকেও রেহাই দেয়নি। এদের মধ্যে টুটুল ও তারেক রহিমের আঘাত গুরুতর। রণদীপম বসু অন্যদের তুলনায় একটু কম আহত হয়েছেন।

তবু মৃত্যু এদের কাউকে ছিনিয়ে নিয়ে যাবে কিনা, এখনও সেটা নিশ্চিত নয়। দ্বিতীয় আঘাতে কিন্তু মৃত্যু এসেছে নিশ্চিতভাবেই। শাহবাগের আজিজ মার্কেটে অবস্থিত জাগৃতি প্রকাশনীর অফিসে ঢুকে এর কর্ণধার ফয়সাল আরেফিন দীপনকে জবাই করে হত্যা করেছে ঘাতক দল। সামান্য কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানের এই দুই আক্রমণে একই ঘাতক দল ব্যবহৃত হয়েছে নাকি আলাদা আলাদা দল কাজ করেছে, সেটা জানা যায়নি এখন পর্যন্ত। তবে দুটো হামলাই যে একই সুতোয় বাঁধা, সেটা বুঝতে খুব একটা বেগ পেতে হয় না আমাদের।

আহমেদুর রশীদ টুটুল মুক্তমনার স্রষ্টা অভিজিৎ রায়ের একাধিক বইয়ের প্রকাশক। এর মধ্যে রয়েছে 'অবিশ্বাসের দর্শন' এবং 'সমকামিতা'। অন্যদিকে, দীপনের জাগৃতি প্রকাশ করেছে অভিজিৎ রায়ের আলোচিত বই, 'বিশ্বাসের ভাইরাস'।

সেক্যুলার ব্লগার, লেখক বা প্রকাশকদের কুপিয়ে হত্যা নতুন কিছু নয় এখন আর। এই বছরেই মাত্র আট মাসের মধ্যে পাঁচ জনকে প্রায় একইভাবে হত্যা করা হল। এ বছর এই পৈশাচিক হত্যাকাণ্ডের প্রথম শিকার হন মুক্তমনা ব্লগের প্রতিষ্ঠাতা অভিজিৎ রায়। ফেব্রুয়ারি মাসের ছাব্বিশ তারিখে বই মেলা থেকে বেরিয়ে টিএসসি মোড়ে আসতেই চাপাতি হাতের ঘাতক দল অভিজিৎ রায় এবং তাঁর স্ত্রী বন্যা আহমেদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। এই আক্রমণে অভিজিৎ নিহত হন। বন্যা হন গুরুতর আহত। হামলাকারীদের চাপাতির আঘাতে তিনি তাঁর বাঁ হাতের বুড়ো আঙুলটি হারান। তবে মাথায়, ঘাড়ে ও কপালে মারাত্মক কোপের আঘাত নিয়েও সৌভাগ্যক্রমে বেঁচে যান।

অভিজিৎ হত্যার মাত্র এক মাসের মাথায়, দিনের বেলায়, প্রকাশ্য রাজপথে চাপাতি নিয়ে হামলা চালানো হয় ওয়াশিকুর রহমান বাবুর উপর। এতে অংশ নেয় হাটহাজারি মাদ্রাসার দুতিন ছাত্র। কোপের পর কোপ দিয়ে ওই স্থানেই তাঁকে মেরে ফেলা হয়। তৃতীয় লিঙ্গের কজন সাহসী মানুষ ধাওয়া করে খুনিদের দুজনকে ধরতে সক্ষম হয় এবং তাদেরকে পুলিশের হাতে তুলে দেয়।

মে মাসের বার তারিখে ঘাতকের চাপাতি থেকে রক্ষা পেতে জানবাজি রেখে ছুটতে হয়েছে অনন্ত বিজয় দাশকে। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। জলভরা দীঘি পথ আটকে দাঁড়ায় তাঁর। ঘাতকরা দীঘির পাড়ে চাপাতির অসংখ্য কোপে তাঁকে রক্তাক্ত করে চলে যায় নির্বিঘ্নে।

এর মাত্র তিন মাসের মাথায় নীলয় নীলকে তাঁর বাসায় ঢুকে চাপাতি দিয়ে দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে খুনিরা। নিলয়ের স্ত্রীকে বারান্দায় এবং শ্যালিকাকে বাথরুমে আটকে রেখেছিল ঘাতকরা হত্যাকাণ্ড ঘটানোর সময়টাতে।

বাংলাদেশ এখন পরিণত হয়েছে নৃশংস এক বধ্যভূমিতে। প্রতিনিয়ত রক্তের লাল স্রোত বয়ে চলেছে এর গা বেয়ে; খুনের নেশায় পাওয়ায় উন্মত্ত চাপাতির আঘাতে ছিন্নভিন্ন হচ্ছে কোমল সব দেহ, অসাধারণ সব মেধা, অনন্য সব মানুষ। একদল নিশিতে পাওয়া নরপিশাচ ধর্মের নামে চাপাতির হিংস্রতা দিয়ে লণ্ডভণ্ড করে দিচ্ছে আমাদের সব কিছু। দুর্বিষহ এবং পচা দুর্গন্ধময় এক দুরাশয় সময় ধারণ করে চলেছি আমরা; চলেছি অন্তহীন এক আঁধার রাজ্যের অন্তিম সীমানার দিকে।

লেখালেখির 'অপরাধে' একের পর এক বীভৎস হত্যাকাণ্ড ঘটছে, রক্তপাত হচ্ছে অনাবশ্যক এবং অবাঞ্চিতভাবে। কিন্তু এর কোনোটারই সুষ্ঠু তদন্ত হচ্ছে না; কাউকে ধরা হচ্ছে না সেভাবে; কোনো হত্যাকাণ্ডের বিচার হচ্ছে না গ্রহণযোগ্যভাবে। এটাই হত্যাকারীদের উৎসাহ-উদ্দীপনা দিয়ে চলেছে অবিরাম। আমরা দেখেছি, হুমায়ুন আজাদ হত্যার বিচার হয়নি। রাজীব হায়দারের হত্যার হয়নি সুরাহা। কুলকিনারা করা যায়নি অভিজিৎ রায়, ওয়াশিকুর বাবু কিংবা অনন্ত বিজয় দাশের হত্যাকাণ্ডের।

বিচার না হবার যে ইতিহাস গড়ে উঠছে বাংলাদেশে, সেটা এবং সে সঙ্গে সরকারের এসব হত্যাকাণ্ডে গুরুত্ব না দেবার অদ্ভুত ও বিপদজনক যে প্রবণতা, এই দুইয়ে মিলে, একদিন আমরা জাতি হিসেবে বিকলাঙ্গ হয়ে উঠব। এটা বুঝতে পারা আমাদের জন্য জরুরি যে, অসংখ্য মৌলবাদী মানসিকতার জঙ্গি দেশের কোনো কাজে আসবে না। এরা সমাজ, দেশ, জাতির জন্য বরং বিশাল এক বোঝা, সভ্যতার জন্য ক্যান্সার-স্বরূপ।

কিন্তু যে মানুষদের এরা মুরগি কাটার মতো করে কেটে চলেছে নিত্য দিন, তাঁরা সবাই একেক জন প্রাজ্ঞ, প্রতিভাবান ও অসীম সম্ভাবনাময় মানুষ। অকাল ও অপঘাত মৃত্যুর কারণে শুধুমাত্র এরাই যে হারিয়ে যাবেন পৃথিবী থেকে তা নয়, মুক্তচিন্তার আলোকিত জায়গাটাতে ভবিষ্যতে আর কেউ আসতেই সাহস করবে না। এঁদের বিদায়ের সঙ্গে সঙ্গে আলোর ঝর্ণাধারার শেষ স্রোতটা বন্ধ হয়ে যাবে; বর্ণ ও গন্ধ হারাবে ফুল; সবুজ বিদায় নেবে গাছ থেকে সকরুণ নেত্রে; অন্তহীন এক অন্ধকারের মাঝে পতিত হবে দেশ ও জাতি।

সে অন্ধকার থেকে মুক্তি পেতে আমাদের হয়তো অপেক্ষায় থাকতে হতে পারে কয়েক যুগ, কয়েক শতাব্দী কিংবা কয়েক সহস্র বছর। মৌলবাদী জঙ্গিরা ঠিক এই কাজটাই করতে চাইছে আমাদের সমাজ নিয়ে। আলো থেকে বহু দূরে সরিয়ে নিয়ে, পিছন দিকে হাঁটিয়ে, নিয়ে যেতে চাইছে তমসাপূর্ণ এক সময়ে, আলোহীন এক জগতে। যেখানে নেই কোনো জ্ঞানচর্চা, বিজ্ঞান-ভাবনা, যুক্তি-বুদ্ধির পরিচর্চা। এক দল ধর্মান্ধ মাতাল শুধু রক্তপায়ী ড্রাকুলার মতো অশ্লীল উল্লাস করবে সে আদিম অন্ধকারে।

একের পর এক হত্যাকাণ্ডের পর বলতে দ্বিধা নেই যে, বাংলাদেশে সুবুদ্ধিসম্পন্ন মুক্তচিন্তার লেখকদের এখন জান হাতে রেখে লেখালেখি করতে হচ্ছে। কারও নিরাপত্তা নেই। নিজস্ব মতপ্রকাশে সকলেই এখন সংকুচিত, সংশয়াপন্ন এবং দ্বিধাগ্রস্ত। কেউ কেউ প্রবলভাবে আতঙ্কিতও। তেমনটা হওয়াই স্বাভাবিক– না হওয়াটা মূর্খতার লক্ষণ। কখন কার ঘাড়ে চাপাতির ধারালো কোপ এসে পড়বে, কেউ যে তার হদিস জানে না। কেউ জানে না কখন কার জন্য মৃত্যুপরোয়ানা হাতে নিয়ে হাজির হচ্ছে কালো পোশাকের ইসলামি জঙ্গি-সেনা।

অদ্ভুত এক আঁধার ছুঁয়ে গিয়েছে আজ বাংলাদেশকে। এর চারিদিকে এখন শুধু থিক থিক অন্ধকার। এর মাঝে কিলবিল করছে অসংখ্য প্রতিক্রিয়াশীল পুঁতিগন্ধময় পোকামাকড়। অসহিষ্ণুতা ও ঘৃণা এমনই সর্বব্যাপী যে, বিপরীত কোনো ভাবনা– বিশেষ করে ধর্ম, আরও স্পষ্ট করে বললে ইসলাম ধর্ম বিষয়ে সামান্যতম আলোচনাও এক শ্রেণির ইসলামি মৌলবাদী সহ্য করতে পারছে না কিছুতেই। প্রবলভাবে অসহিষ্ণু ও ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেছে তারা। আজ একদল রক্তপিপাসু ধর্মান্ধ মোল্লা ছড়ি ঘোরাচ্ছে আমাদের সবার মাথার ওপর।

সমাজও হয়ে উঠছে প্রবলভাবে ধর্মাচ্ছন্ন। পত্রিকায় নির্দোষ একটা কৌতুকের জন্যও তরুণ কার্টুনিস্টকে জীবন নিয়ে পালাতে হয়েছে দেশ ছেড়ে। ফেসবুকের সামান্য কো্নো একটা পোস্টে লাইক দেবার অপরাধে সরকারের বীর পুঙ্গব বাহিনী গ্রেফতার করে নিয়ে যায় অল্পবয়েসী তরুণদের। সামান্য দুলাইনের স্ট্যাটাসের জন্য বন্দি হতে হয় সাতান্ন ধারায়। দিকে দিকে শুধু ধর্মানুভূতি আহত হবার জিগির উঠেছে যেন। মানুষের আরও কত কত ধরনের অনুভূতি রয়েছে, সেগুলো আঘাতপ্রাপ্ত হয় না। কিন্তু এই অনুভূতি এমনই নাজুক, ভঙ্গুর ও স্পর্শকাতর যে, সেখানে আঘাত পাচ্ছে তারা মুহূর্মুহূ।

প্রত্যেক যুগে, সমাজে মুক্তচিন্তা যাঁরা করেছেন, মুক্তবুদ্ধি যাঁরা ছড়িয়ে দিতে চেয়েছেন, সমাজকে হাত ধরে নিয়ে যেতে চেয়েছেন সামনের দিকে, গাঢ় অন্ধকার দূর করতে চেয়েছেন গভীর ভালোবেসে দীপ জ্বেলে, প্রতিক্রিয়াশীল স্বার্থপর গোষ্ঠী তাদের সহ্য করতে পারেনি। তারা ভয়ানক আক্রোশে ঘৃণার বিষবাষ্প নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছে আলোর মশাল নিভিয়ে দিতে, আলোময় আনন্দযাত্রা থামাতে। গাঢ় অন্ধকার এদের অনেক পছন্দ– অনেক ভালোবাসার ও ভালোলাগার। মুক্ত বাতাসের চেয়ে দমবন্ধ গুমোট পরিবেশই এদের বেশি কাম্য।

তাদের এই আক্রোশে মুক্তচিন্তকদের শরীর থেকে চুইয়ে চুইয়ে রক্ত পড়েছে রুক্ষ কঠিন মাটিতে। বন্ধ্যা মাটি সে রক্তে হয়ে উঠেছে উর্বর, সুজলা-সুফলা। তাতে ঘন সবুজ শস্য ফলেছে, প্রজাপতি উড়েছে, এসেছে পাখির গান। মুক্তচিন্তকদের ঝরে পড়া রক্ত থেকে বের হয়ে এসেছেন আরও অসংখ্য মুক্তচিন্তার মানুষ।

পরম প্রহসনের এক বিচারের মাধ্যমে সক্রেটিসকে হেমলক পান করে মৃত্যুবরণ করে নিতে হয়েছিল প্রাচীন গ্রীসে। হাইপেশিয়াকে আলেকজান্দ্রিয়ার রাস্তায় হায়েনার হিংস্রতায় ছিন্নভিন্ন করা হয়েছে। ব্রুনোকে পুড়িয়ে মারা হয়েছে জ্বলন্ত আগুনে। গ্যালিলিওকে বন্দি করে রাখা হয়েছে অন্ধকার কারাকক্ষে। অভিজিৎ রায়কে হত্যা করা হয়েছে ধারালো অস্ত্র দিয়ে। হুমায়ূন আজাদকে মৃত্যুর দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে কোপের পর কোপে।

তারপরও মুক্তবুদ্ধির চর্চা, প্রগতিশীল আন্দোলন থামানো যায়নি কখনও। যাবেও না।

মানব সমাজের নিয়মবদ্ধ নিয়ম এমনই যে, এটি সামনের দিকেই শুধু এগোবে। পিছন থেকে একে যতই টেনে ধরে রাখার চেষ্টা করা হোক না কেন, এর অগ্রযাত্রা বন্ধ করা যাবে না। রাশ টেনে ধরে এর সম্মুখ সাময়িকভাবে হয়তো ব্যাহত করা সম্ভব, সম্ভব স্বল্প সময়ের জন্য পিছনের দিকেও কিছুটা নিয়ে যাওয়া। কিন্তু দীর্ঘ সময় পরিভ্রমণে এর অগ্রযাত্রা অনিবার্য। নিশ্চিত পদক্ষেপে এটি এগিয়ে যায় পূর্ব দিগন্তের দিকে।

প্রতিক্রিয়াশীলরা এটা খুব ভালো করেই জানে। তাই সব সময় তারা থাকে মরিয়া। যতখানি সম্ভব অঙ্গহানি ঘটিয়ে থামিয়ে দেবার চেষ্টা করে সমাজের চাকা। প্রতিক্রিয়াশীল আর প্রগতিশীলের এই দ্বন্দ্ব তাই সব সময় সুতীব্র, সর্বব্যাপী, সর্বনাশা, রক্তক্ষয়ী। তবে এ রক্তক্ষয় হয় শুধুমাত্র একটা তরফ থেকেই। প্রগতিশীলদের দেহ থেকেই রক্ত ঝরে চুইয়ে চুইয়ে– কখনও-বা ফিনকি দিয়ে, কখনও-বা লাভার স্রোতের মতো তীব্র বেগে। প্রতিক্রিয়াশীলদের মতো খুন, জখম, মারামারি করার মতো মানসিকতা, ইচ্ছা, আগ্রহ, এর কোনোটা প্রগতিশীলদের নেই। অস্ত্রের চেয়ে কলমের শক্তিতেই বেশি বিশ্বাস তাদের। যুক্তির লড়াইয়ে সামিল হতেই বেশি আগ্রহ তাদের। প্রত্যেক অনাহুত লড়াইয়ে তাই একতরফাভাবে রক্ত দিতে হয় তাদেরকেই।

অভিজিৎ রায়, অনন্ত বিজয় দাশ, রাজীব হায়দার থাবা বাবা, ওয়াশিকুর রহমান বাবু, নীলাদ্রী চট্টোপাধ্যায় নীল, ফয়সাল আরেফিন দীপনদের মতো তরুণ-যুবকরা যে অনন্ত সম্ভাবনা নিয়ে আসে আমাদের জন্য, আমাদের সমাজের জন্য, এই ধরিত্রীর জন্য, সেটা পরম মমতা ও গভীর ভালোবাসায় কাজে লাগানো উচিত আমাদের। তাদেরকে এমন একটা নির্ভাবনাময় পরিবেশ ও নিশ্চিন্ত একটা বাগিচা দেওয়া দরকার যেখানে তারা ফাগুনের ফুল হয়ে ফুটতে পারবে।

তার বদলে যদি এদেরকে আমরা কিছু মূর্খ ও ধর্মান্ধের হাতে নিশ্চিহ্ন করে দেবার সুযোগ করে দিই, তবে অকালেই আমরা হারাব তাদের সুগন্ধ। একদিন আফসোস আর আক্ষেপ ছাড়া আমাদের কিছু করার থাকবে না।

পরিস্থিতি এ রকম পর্যায়ে চলে গিয়েছে। খাদের কিনারে দাঁড়িয়ে আছি আমরা এখন। যে কোনো মুহূর্তেই ঘটবে চূড়ান্ত পতন। আমাদের হাতে সময় খুব অল্প। সুস্থবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষদের সবাইকে এখন একাট্টা হয়ে থামাতে হবে এ পতন। সরকারকেও এগিয়ে আসতে হবে আন্তরিকতা নিয়ে। সব কিছু ধসে যাবার পর আফসোসে পোড়ার চেয়ে, আসুন সবাই মিলে শেষ চেষ্টাটা করে দেখি।

দেশ বাঁচুক, দেশের মানুষ বাঁচুক, অনাগত সময়ের আমাদের যে সন্তানরা জন্ম নেবে এ দেশে, তারা একটা আলো-ঝলমল, অপার সুগন্ধময় স্বদেশ পাক।

ফরিদ আহমেদ: মডারেটর, 'মুক্তমনা'।