প্রসঙ্গ: সংসদে প্রবাসী বাংলাদেশিদের প্রতিনিধিত্ব

শামস্ রহমানশামস্ রহমান
Published : 27 Oct 2015, 11:10 AM
Updated : 27 Oct 2015, 11:10 AM

স্বাধীনতার আগে মুক্তি পেলেও বাংলাদেশের বিশিষ্ট চলচিত্রকার জহির রায়হানের ছবি 'জীবন থেকে নেওয়া' দেখেছি স্বাধীনতা-উত্তর সময়ে। সংসারে উপার্জনের প্রধান উৎস আইনজীবী ভাই হওয়া সত্ত্বেও, সমস্ত সম্পদের কর্তৃত্ব ও সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার শুধুই বোনের। তাই টাকা-পয়সা, ধন-রত্নভর্তি সিন্দুকের চাবির গোছা শোভা পায় বোনের কোমরে। উপার্জন আর অবদান একজনের, আর তার অন্যায্য ব্যবহারের অধিকার অন্যজনের– এ কেমন প্রথা? এটা যেমন অযৌক্তিক, তেমনি বাস্তবতার সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ। কোনো (দুর্বলতার) কারণে, কোনো কালে এ প্রথা চালু হলেও, চলতে পারে না চিরদিন। যৌক্তিকতা ও বাস্তবতার নিরিখে এর অবসান অপরিহার্য। তাই ঘাত-প্রতিঘাতের মাঝে শেষে প্রতিষ্ঠা হয় সত্যের।

১৯৬৯এ যা ছিল একটি সিনেমার গল্প– ১৯৭১ সালে তা রূপ নেয় বাস্তবে। আর এভাবেই প্রতিষ্ঠিত হয় এ সত্য, 'যার অবদান যতটুকু, তার সিদ্ধান্তের ভূমিকা ততটুকু'।

এ তো গেল রাষ্ট্রের কথা। ব্যক্তিজীবনে বিষয়টা উপলব্ধি করতে আমাকে একবার দৌড়াতে হয় ম্যানিলায় এডিবির (এশিয়ান ডেভলপমেন্ট ব্যাংক) হেডকোয়ার্টারে। তখন এআইটিতে মাস্টার্স শেষ করেছি মাত্র। কাকতালীয়ভাবে সে সময় এডিবিতে চাকরির একটা বিজ্ঞাপন চোখে পড়ে। পদের শিরোনাম, Young Professional, আর পদের সংখ্যা দুটি। নিজের অভিজ্ঞতা ও যোগ্যতার সঙ্গে বেশ মিল দেখে, দেরি না করে আবেদন করি। তার কিছুদিনের মধ্যে ম্যানিলায় বেড়াতে গেলে, আবেদনপত্রের পরিস্থিতি সম্পর্কে জানার জন্য হাজির হই এডিবি হেডকোয়ার্টারে। সহজেই সাক্ষাতের সুযোগ পাই একজন উর্ধতন অর্থনীতিবিদের সঙ্গে। ভদ্রলোক যে একজন বাঙালি তা তাঁর নাম এবং ইংরেজিতে নামের বানান দেখে বুঝতে পারি। আমার সাক্ষতের উদ্দেশ্যের কথা উত্থাপন করলে তিনি যা বলেন, সংক্ষেপে তা এমন:

''জাপান এডিবিতে সবচেয়ে বেশি অর্থ যোগান দেয়; তাই সিদ্ধান্ত-গ্রহণের ক্ষেত্রে জাপানের অভিমত অপেক্ষাকৃত বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তাই দুটি পদের একটি অবশ্যই জাপানি কেউ পাবে। নিঃসন্দেহে সে ব্যক্তি যোগ্যতাসম্পন্নও হবে। দ্বিতীয়টি, এশিয়ার যে কোনো দেশ থেকে হতে পারে। তাই বেশি আশা না করাই ভালো।''

কষ্ট পেলেও মেনে নিই সেদিনের সেই বাস্তবতা-– 'যার যত বেশি অবদান, তার তত বড় সিদ্ধান্ত-গ্রহণ ক্ষমতা'।

বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রধান দুটি চালিকাশক্তির একটি হল রেমিটেন্স, মানে দেশে পাঠানো প্রবাসীদের উপার্জিত অর্থ। অনেকের মতে, আধুনিককালে পূর্ব বাংলা থেকে কাজের জন্য বিদেশে যাওয়া শুরু ১৯৪২ সালে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় থেকে। তখন বাঙালিদের কাজের জন্য এক ধরনের স্কিম চালু করে বিলাতের সরকার। চল্লিশ ও পঞ্চাশের দশকে পূর্ব বাংলার অনেকেই এ সুযোগ নিয়েছে, বিশেষ করে সিলেটবাসী। সেটা প্রধানত জাহাজে চেপে বিলাতের বন্দরনগরীগুলিতে যাওয়ার মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল এবং তা হত ব্যক্তি-উদ্যোগে।

সংঘবদ্ধভাবে মাইগ্রেন্ট ওয়ার্কার (বিভিন্ন শ্রেণির শ্রমিক ও প্রফেশনাল) হিসেবে বাঙালির প্রবাস-যাত্রার শুরু স্বাধীনতার পর। ১৯৭৬ সালে যাদের সংখ্যা ছিল আনুমানিক ছয় হাজার, আজ তা দাঁড়িয়েছে ৯০ লাখের (৯ মিলিয়ন) বেশি– জনসংখ্যার প্রায় ৫ দশমিক ৭ শতাংশ। এই মাইগ্রেন্ট ওয়ার্কারদের আয়ের সঙ্গে দেশে বসবাসরত আরও অন্তত চার গুণ মানুষ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত। তার মানে, জনসংখ্যার প্রায় ২৫ শতাংশ রেমিটন্সের উপর নির্ভর করে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত থাকলেও, প্রবাসীদের বড় অংশ মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকার দেশগুলিতে কার্যরত।

এ তো গেল 'রেমিটেন্স-জনসংখ্যা' নির্ভরশীলতা-সম্পর্কিত বিশ্লেষণ। এবার দেখা যাক বাংলাদেশের অর্থনীতির দিকটি।

রপ্তানি উন্নয়ন বুরোর তথ্য অনুযায়ী, ২০১৩-১৪ অর্থবছরে তৈরি পোশাক খাত থেকে রপ্তানি আয় ছিল ২৫ বিলিয়ন ডলারের বেশি। একই অর্থবছরে রেমিটেন্সের অংক ছিল ১৪ দশমিক ২৩ বিলিয়ন ডলার। আপাতদৃষ্টিতে রেমিটেন্সের অংক তৈরি পোশাক খাতের রপ্তানি আয়ের ৫৭ শতাংশ দেখালেও, রেমিটেন্সের মাধ্যমে 'নেট' বৈদেশিক আয় পোশাক খাতের প্রায় তিন গুণ। পরিসংখ্যানটি অনুধাবন বিশেষভাবে প্রয়োজন। তাছাড়া, দেশে বছরে যে বৈদেশিক সাহায্য আসে, তার ৭ গুণ বেশি হল রেমিটেন্স-আয়।

বছর বছর রেমিটেন্স আসছে; অংকটা স্ফীত হচ্ছে। কিন্তু তা দেশের কোনো কাজে লাগছে কি? মানে, দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে রেমিটেন্সের উল্লেখযোগ্য ভূমিকা আছে কি? এক কথায়, 'রেমিটেন্স-উন্নয়ন' লিংক কি তাৎপর্যপূর্ণ?

এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক বেশ কিছু গবেষণা হয়েছে। সম্প্রতি প্রকাশিত কয়েকটি গবেষণার উল্লেখ করছি এখানে। একাত্তরটি দেশের পরিসংখ্যান নিয়ে গবেষণার ভিত্তিতে বিশ্ব ব্যাংকের গবেষকরা মন্তব্য করেন:

….remittances significantly reduce the level, depth, and severity of poverty in the developing world.

….. a 10% increase in the share of international migrants in a country's population will lead to a 2.1% decline in the share of people living on less than $1 person per day.

যথাক্রমে, ২৪, ১০০ এবং ১৬১টি দেশের পরিসংখ্যানের ভিত্তিতে একই ধরনের উপসংহার টেনেছে সম্প্রতি প্রকাশিত আরও কয়েকটি গবেষণা প্রবন্ধ। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে 'রেমিটেন্স-উন্নয়ন' লিংক বোঝার উদ্দেশে পরিচালিত সম্প্রতি এক গবেষণায় উল্লেখ করা হয় যে, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে রেমিটেন্সের ভূমিকা তাৎপর্যপূর্ণ।

দেশে রেমিটেন্সের ভূমিকা শুধু অর্থনৈতিক উন্নয়নেই সীমাবদ্ধ নেই, সামাজিক অঙ্গনেও এর প্রভাব লক্ষ্যণীয়। ব্র্যাকের গবেষণায় দেখা গেছে–

Overseas migration of adult males has a significant positive association with women's decision-making capacity and education of girls in the migrant families.

প্রশ্ন হচ্ছে, যারা রেমিটেন্স পাঠায়, দেশের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের সিদ্ধান্তে তাদের কি কোনো ভূমিকা আছে? কিংবা, থাকা কি প্রয়োজন?

বলার অপেক্ষা রাখে না যে, বর্তমানে এ ব্যাপারে প্রবাসীদের কোনো ভূমিকা নেই। কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশ সরকার দেশের সার্বিক উন্নতির জন্য স্কয়ারের বাইরে উন্নয়নের কৌশল খুঁজছে। সেটা নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। আর সে কারণেই আমরা আশা করি, সরকার মাইগ্রেন্ট ওয়ার্কার-বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুগুলিতে সঠিক সিদ্ধান্ত নেবে। মানে, বাংলাদেশি প্রবাসীদের ভূমিকার আইনগত স্বীকৃতি দেবে। এতে দেশের উন্নতি ত্বরান্বিত হবে। প্রবাসীদের বিষয়ে সরকারকে তিনটি পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।

মাইগ্রেন্ট ওয়ার্কারদের সম্মানের সঙ্গে দেখা:

রেমিটেন্স-আর্নারদের যাতায়াত মূলত দেশের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে। ইমিগ্রেশন ও কাস্টমসে তাদের সম্মানের সঙ্গে স্বাগত জানানো উচিত। সব সময় অথবা নিয়োজিত সব কর্মকর্তাই যে প্রবাসীদের অসম্মানের দৃষ্টিতে দেখেন মোটেই তা নয়। তবে অভিজ্ঞতার আলোকে বলছি, মধ্যপ্রাচ্য থেকে যারা ফেরেন, তারা অন্যদের তুলনায় বেশি হয়রানির শিকার হন। অথচ রেমিটেন্স-আয়ের প্রায় ৭০ শতাংশ আসে মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশ থেকে। তাই সম্মানের দাবিদার প্রধানত তারাই।

অর্থ পাঠানো সহজতর ও নিরাপদ করা:

বর্তমান সরকার এ বিষয়ে কিছু উদ্যোগ নিয়েছে বটে, তবে তা যথেষ্ট নয়। হুন্ডি ও 'সঙ্গে নিয়ে' আসা বৈদেশিক মুদ্রার অংক নেহায়েত কম নয়। অনেক গবেষকের মতে, এই অংক অফিসিয়াল রেমিটেন্সের প্রায় অর্ধেক। অফিসিয়াল পদ্ধতিতে বৈদেশিক মুদ্রা পাঠানো আরও সহজ ও আকর্ষণীয় করলে অফিসিয়াল রেমিটেন্সের অংক তৈরি পোশাক খাতের রপ্তানি আয়ের কোনো অংশে কম হবে না, বরঞ্চ বেশি হওয়ার সম্ভাবনা। বিশেষজ্ঞদের মতে, লেনদেনের খরচ কমানো, দ্রুত টাকা পাঠানোর পদ্ধতি ও ব্যবস্থা স্থাপন এবং নিরাপত্তা ও নিশ্চয়তা প্রদানের মধ্য দিয়ে আস্থা বাড়াতে পারলেই অফিসিয়াল পদ্ধতিতে রেমিটেন্স পাঠানো আরও আকর্ষণীয় করা সম্ভব।

সংসদে প্রতিনিধিত্ব প্রদান:

প্রবাসী বাংলাদেশিদের সংখ্যা ৯০ লাখের (৯ মিলিয়ন) বেশি যা বাংলাদেশের জনসংখ্যার প্রায় ৫ দশমিক ৭ শতাংশ। ভোটার সংখ্যার তুলনায় প্রবাসী বাংলাদেশিদের সংখ্যা শতাংশের হিসাবে আরও বেশি হবার কথা। দেশের জনসংখ্যা ১৬০ মিলিয়ন; ভোটার সংখ্যা ৯৭ মিলিয়ন। মাইগ্রেন্ট ওয়ার্কারদের বেশিরভাগই পূর্ণবয়স্ক। সে হিসাবে প্রবাসী ভোটার সংখ্যা সমস্ত ভোটারের প্রায় ৯ দশমিক ১ শতাংশ।

এই বিশালসংখ্যক ভোটার যারা বাংলাদেশের অর্থনীতিতে অর্থের জোগান দিচ্ছেন নিরলসভাবে, তারা দেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক কর্মকাণ্ডের বিষয়ে সিদ্ধান্ত বা অভিমত দিবেন এমন কোনো প্রাতিষ্ঠানিক পদ্ধতি চালু হয়নি। প্রবাসীদের নিজ দেশের সংসদে প্রতিনিধিত্ব করার বিষয়টি নতুন ধারণা নয়। অনেক উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশেই এটি প্রচলিত। যেমন, পশ্চিম ইউরোপের ইতালি ও ফ্রান্স; আফ্রিকার আলজেরিয়া, অ্যাঙ্গোলা ও মোজাম্বিক; লাতিন আমেরিকার কলম্বিয়া; পূর্ব ইউরোপের ক্রোয়েশিয়া ও মেসিডোনিয়া এ উদ্যোগ নিয়েছে। ফ্রান্সের জাতীয় সংসদের ৫৭৭ আসনের মধ্যে ১১টি প্রবাসীদের জন্য নির্ধারিত। প্রবাসী ইতালীয়দের জন্য ১২টি আসন রয়েছে সেদেশের জাতীয় সংসদে। পৃথিবীর প্রবাসী জনসংখ্যার ভিত্তিতে কন্সটিটিউয়েন্সি তৈরি করে নির্বাচনের মাধ্যমে নির্ধারিত হয় প্রতিনিধি। তিউনিশিয়ার জাতীয় সংসদে মোট ২২৭ সদস্যের ১৮ জন প্রবাসী তিউনিশিয়ানের প্রতিনিধিত্ব করেন। আর মেসিডোনিয়াতে তিনটি আসন প্রবাসীদের জন্য সংরক্ষিত।

পদ্ধতিগত দিক থেকে প্রথমে প্রবাসী বাংলাদেশিদের জনসংখ্যার ভিত্তিতে পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলে নির্বাচনের কন্সটিটিউয়েন্সি তৈরি করা দরকার। দেশের একটি সংসদ সদস্যের পদের কন্সটিটিউয়েন্সি যে সংখ্যক ভোটার দ্বারা নির্ধারিত হয়, সে একই সংখ্যক ভোটার দ্বারা নির্ধারিত হতে পারে প্রবাসের নির্বাচনী কন্সটিটিউয়েন্সি। যেহেতু প্রবাসী ভোটাররা দেশের সমস্ত ভোটার সংখ্যার প্রায় ৯ দশমিক ১ শতাংশ, সেহেতু ৩০০ আসনের জাতীয় সংসদে প্রবাসীরা অন্তত ২৭টি আসনের প্রতিনিধিত্বের দাবি করতে পারেন।

এ প্রতিনিধিত্ব শুধু প্রতিনিধিত্বের জন্যই নয়, এর মাধ্যমে বিভিন্ন দেশে অবস্থিত এদেশের প্রায় ৯ দশমিক ১ শতাংশ ভোটার এবং রেমিটেন্স পাঠানো শ্রমশক্তির সঙ্গে সরকার ও প্রশাসনের গড়ে উঠবে পেশাদারি সম্পর্ক। তা থেকে দেশের যে যে সুবিধা প্রাপ্তির সম্ভাবনা রয়েছে তারও কিছুটা উল্লেখ করছি:

প্রথমত, প্রবাসে অনেকেই বড় বড় প্রতিষ্ঠানের মালিক যারা দেশে বিনিয়োগে আগ্রহী। পেশাদারি সম্পর্ক গড়ে উঠলে দেশে প্রবাসীদের প্রত্যক্ষ বিনিয়োগ বাড়ার সম্ভাবনা অনেক। সে সঙ্গে তাদের সঙ্গে বিদেশি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের জয়েন্ট ইনভেস্টমেন্ট বাড়ার সম্ভাবনাও সৃষ্টি হবে।

দ্বিতীয়ত, কোন্ দেশে কী পেশা এবং কী ধরনের দক্ষতাসম্পন্ন পেশাজীবীর প্রয়োজন তা নির্ধারণ সহজ হবে। এর প্রভাব পড়বে দু দিকে: এক. দেশে গড়ে উঠবে সঠিক দক্ষতা তৈরির প্রতিষ্ঠান। প্রসারিত হবে কর্মসংস্থান। দুই. দক্ষ ও অধিক কর্মজীবী রপ্তানির সুযোগ সৃষ্টি হবে; আর সৃষ্টি হবে সমপরিমাণ শ্রমের বিনিময়ে অধিক রেমিটেন্স আয়ের সম্ভাবনা। উদাহরণস্বরূপ ভারত ও ফিলিপিন্সের কথা বলা যেতে পারে।

প্রশ্ন হচ্ছে, এত সব বিবেচনায় নিয়ে বাংলাদেশ সরকার কি শিগগিরই এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে নজর দেবে? আইনগত স্বীকৃতি কি দেওয়া হবে প্রবাসীদের ভূমিকার? নাকি, সেই হীরক রাজার দেশের মতো 'শ্রমিকরা আবার হীরকের কী বোঝে' এই মানসিকতার ধারায়, তারা শুধু রেমিটেন্স পাঠিয়েই ক্ষান্ত থাকুক, তাই চাইবে? সরকার কি মানতে চাইবে যে, সমাজে বা রাষ্ট্রে 'যার যত বেশি অবদান, তার তত বেশি সিদ্ধান্ত-গ্রহণ ক্ষমতা'?

আশা করি, 'জীবন থেকে নেওয়া' সিনেমার মতো মাইগ্রেন্ট ওয়ার্কারদেরও এই ভূমিকাটুকুর জন্য দাবি জানিয়ে আন্দোলন করতে হবে না। দাবি ওঠার আগেই সরকার কাজটি করে ফেলুক। তাহলে সেটাই হবে নেতৃত্বের উৎকর্ষতার পরিচায়ক।

শামস রহমান: অধ্যাপক ও গবেষক, আরএমআইটি বিশ্ববিদ্যালয়, মেলবোর্ন, অষ্ট্রেলিয়া।

তথ্যসূত্র:

1.

Adams Jr, R and Page, J (2009)

"Do international migration and remittances reduce poverty in developing countries?"

World Development, 33, 10, 1645-1669.

2.

Ahmed, M S (2010)

"Migrant workers remittance and economic growth: evidence from Bangladesh"

ASA University Review, 4, 1, 1-13.

3.

BMET (2015)

Bureau of Manpower Employment and Training, Government of Bangladesh

[accessed 5 September]

4.

Catrinescu, N, Leon-Ledesma, Piracha, M, and Quillin, B (2009),

"Remittances, institutions, and economic development"

World Development, 37, 1, 81-92.

5.

Giuliano, R and Ruiz-Arranz, M (2009)

"Remittances, financial development, and growth"

Journal of Development Economics, 90, 144-152.

6.

Gupta S, Pattillo, C A, Wagh, S (2009)

"Effect of remittances on poverty and financial development in Sub-Saharan Africa"

World development, 37, 1, 104-115.

7.

Hadi, A (2001)

"International migration and the change of women's position among the left-behind in rural Bangladesh"

International Journal of Population Geography, 7, 53-61.

8.

IDEA (2015)

Voter turnout data for Bangladesh

[accessed 5 September, 2015]

9.

Lartey, E K K (2013)

"Remittances, investment and growth in sub-Saharan Africa"

The Journal of International Trade & Economic Development, Vol. 22, No. 7, 1038-1058.

10.

RMMRU (2014)

Refugee and Migration Movements Research Unit, University of Dhaka, 2014.

11.

Siddique, A, Selvanathan, E A and Selvanathan, S (2012),

"Remittances and economic growth: empirical evidence from Bangladesh, India and Sri Lanka"

The Journal of Development Studies, 48, 8, 1045-1062.

12.

Wikipedia (2015), Constituencies for French residents overseas

13.

Wikipedia (2015a), Overseas constituency