বাংলার বাঘ বেঁচে থাকুক সুন্দরবনে

এম এ আজিজ
Published : 29 July 2015, 04:34 PM
Updated : 29 July 2015, 04:34 PM

বাংলাদেশের 'টাইগাররা' একের পর এক ক্রিকেট পরাশক্তিকে ধরাশায়ী করছে। এ এক বিস্ময়কর ব্যাপার। প্রথমে পাকিস্তান, তারপর ভারত আর সবশেষে দক্ষিণ আফ্রিকা। শুনেছি, আরেক পরাশক্তি অস্ট্রেলিয়া নাকি বাংলাদেশ সফরে আসতে ভয় পাচ্ছে! জেনে-শুনে কি কেউ বাঘের খাঁচায় ঢুকে!

২০১৫ সাল আমাদের ক্রিকেট ইতিহাসে নিঃসন্দেহে এক উজ্জ্বলতম বছর। এই টাইগারদের আলোয় দীপ্তিময় হচ্ছি আমরা আর আমাদের প্রাণপ্রিয় বাংলাদেশ। বিরাজমান নানা অস্থিরতার মধ্যেও লক্ষ-কোটি প্রাণকে এক কাতারে সামিল করে একের পর এক অনাবিল আনন্দময় মুহূর্ত উপহার দিয়ে চলেছে তারা। এরাই আমাদের আনন্দের পসারী, আগামীর বাংলাদেশ।

এবার একটু ভিন্ন প্রসঙ্গে যাই, আসল টাইগারদের গল্প বলি। 'ক্রিকেট টাইগারদের' বুক আর কপালে যে টাইগারের মুখচ্ছবি জ্বলজ্বল করে, সে বাঘের গল্প। এটিও আমাদেরকে বিশ্বদরবারে আলোকিত করে, তবে আলোয় আসে না। অরণ্যের বাসিন্দা এই প্রাণি বিশ্বঐতিহ্য সুন্দরবনে বসবাস করে। প্রতি বছর ২৯ জুলাই বিশ্ব বাঘ দিবস হিসেবে পালিত হয়ে থাকে। রাশিয়ার সেন্ট পিটার্সবার্গে ২০১০ সালে অনুষ্ঠিত প্রথম বাঘ সম্মেলনের পর থেকে বাঘ আছে এমন ১৩টি দেশে দিবসটি পালিত হয়। সম্ভাব্য বিলুপ্তির হাত থেকে প্রাণিটিকে রক্ষার্থে বিশ্ববাসীকে সচেতন করা এ দিবস পালনের উদ্দেশ্য। বাঘ সংরক্ষণ কার্যক্রম এগিয়ে নেওয়া ও প্রয়োজনীয় সমর্থন আদায়ে বিশ্বসম্প্রদায়কে সম্পৃক্ত করাও দিবসটির লক্ষ্য। আমাদের দেশেও প্রতি বছর বন বিভাগের উদ্যোগে উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে এ দিবস পালিত হয়।

ইতিহাস থেকে জানা যায়, ১৯৩০ সালের দিকে বাংলাদেশের ১৭টি জেলার মধ্যে ১১টি জেলায় বাঘ ছিল, কিন্তু বর্তমানে বাঘ শুধুমাত্র সুন্দরবনেই টিকে রয়েছে। পৃথিবীতে বাঘের যে সকল আবাস রয়েছে সুন্দরবন তার অন্যতম। আয়তনের দিক থেকে শুধু নয়, বাঘের সংখ্যার দিক থেকেও। বন বিভাগের ২০০৪ সালের জরিপ অনুযায়ী সুন্দরবনে ৪১৯টি বাঘ আছে বলে জানা গিয়েছিল। ২০০৯ সালের আরেকটি গবেষণায় এ সংখ্যা ৩০০ থেকে ৫০০ বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

বন বিভাগ দুবছরেরও বেশি সময় ধরে বাঘ গণনার জন্য 'ক্যামেরা ট্র্যাপ' জরিপ চালিয়ে আসছে। আমরা অচিরেই সুন্দরবনের বাঘের সংখ্যার একটি ধারণা পাব। তবে সার্বিক দৃষ্টিতে এটি প্রায় নিশ্চিত যে, সুন্দরবনে বাঘেরা মোটেই ভালো নেই। একদিকে চোরাশিকারীর অপতৎপরতা, অন্যদিকে রয়েছে খাদ্য-সংকট। এছাড়া বাঘের আবাস-সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মাত্রার নানা ধরনের হুমকি তো রয়েছেই।

বাঘ এমন একটি আইকনিক ও রাজকীয় প্রাণি যা যে কোনো দেশের জন্য গর্বের বিষয়। বেঙ্গল টাইগার বা বাংলার বাঘ নামটিও আমাদের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে। একটি দেশকে বিশ্বদরবারে পরিচিত করার অনেক উপায় বা উপাদান থাকে। আমাদের দেশে বাঘ তেমন একটি ভালো নিয়ামক। প্রতিবেশিক দিক থেকে বিবেচনায় নিলে সুন্দরবনে বাঘের গুরুত্ব অপরিসীম। বাঘ সুন্দরবনের ইকোসিস্টেমের 'কিস্টোন' প্রজাতি হিসেবে বিবেচিত হয়ে থাকে। কিস্টোন শব্দটির সরল অর্থ হল, সুন্দরবনে বাঘ বেঁচে থাকলে সেখানে প্রাণবৈচিত্র্য টিকে থাকবে। বাঘ হারিয়ে গেলে সুন্দরবনের ধ্বংস ত্বরান্বিত হবে। সুন্দরবন বাঁচলে লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবন-জীবিকার প্রবাহ অব্যাহত থাকবে।

দুর্ভাগ্য হল, বাঘ আমাদের দেশে মহাসংকটাপন্ন প্রাণি। বাঘ বাঁচার পথে যে সকল হুমকি সৃষ্টি হয়েছে তা অব্যাহত থাকলে নিকট ভবিষ্যতে বাঘ বিলুপ্ত হয়ে যেতে পারে।

কাগজের হিসাবে পৃথিবীর মাত্র ১৩টি দেশে প্রাকৃতিক আবাসে বাঘ বেঁচে আছে। যদিও বাস্তবে কয়েকটি দেশ থেকে ইতোমধ্যে বাঘ বিলুপ্তির আশংকা করা হচ্ছে। এই ১৩টি দেশে বর্তমানে বাঘের সংখ্যা প্রায় ৩,৫০০। ১৯০০ সালের দিকে এই সংখ্যা ছিল প্রায় ১ লাখ। তখন ৩৩টি দেশে প্রাকৃতিক পরিবেশে বাঘ বিচরণ করত। গবেষণায় দেখা যায়, পূর্বে যে সকল এলাকায় বাঘ ছিল বর্তমানে তার মাত্র ৭ শতাংশ জায়গায় প্রাণিটি টিকে রয়েছে।

বাঘের প্রজাতি একটি; উপপ্রজাতি ৯টি। ইতোমধ্যে ৩টি উপপ্রজাতি পৃথিবী থেকে বিলুপ্ত হয়ে গেছে। উপপ্রজাতির সংখ্যা নিয়ে মতভেদ রয়েছে, সেটি ভিন্ন প্রসঙ্গ। সুন্দরবনে যে বাঘ রয়েছে সেটি প্যানথেরা টাইগ্রিস উপপ্রজাতি হিসেবে চিহ্নিত। বিশ্বজুড়ে বাঘের যে ৬টি উপপ্রজাতি টিকে রয়েছে তার মধ্যে এটির সদস্যই সবচেয়ে বেশি। পার্শ্ববর্তী ভারতেই বাঘের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি যা সর্বমোট সংখ্যার প্রায় ৫০ শতাংশ।

বাঘ আমাদের জাতীয় প্রাণি। একে নিয়ে আছে কিংবদন্তী, রূপকথা আর রহস্যভরা গল্পগাথা। আমাদের জাতীয় ক্রিকেট দলকে আমরা 'টাইগার' বলে ডাকতে গর্ববোধ করি। আবার আমরা এতটাই সৌভাগ্যবান যে, সুন্দরবনের মতো এমন একটি বাদাবন আমাদের দেশে রয়েছে। এটি প্রকৃতির অপার সৃষ্টি, নয়নাভিরাম সবুজের এক অখণ্ড লীলাভূমি। বাদাবনই আমাদের বাঘের বসতি। নির্দিষ্টভাবে বলা যায়, সুন্দরবনই আমাদের দেশে বাঘের সর্বশেষ আশ্রয়স্থল।

সুন্দরবনের মোট আয়তন প্রায় ১০ হাজার বর্গ কিলোমিটার। এর ৬০ শতাংশ আমাদের দেশে আর বাকি ৪০ শতাংশ ভারতের মধ্যে পড়েছে। সে হিসাবে, আমাদের দেশে রয়েছে ৬,০১৭ বর্গ কিলোমিটার বনাঞ্চল। ধারণা করা হত, সুন্দরবনেই আছে পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি সংখ্যক বেঙ্গল টাইগার বা বাংলার বাঘ। কিস্তু বাস্তবতার সঙ্গে বাঘের এই ধারণাকৃত সংখ্যার বিস্তর তারতম্য ইতোমধ্যে সৃষ্টি হয়ে থাকতে পারে।

অনেকেই বলেন, সুন্দরবনে বাঘ তো না থাকাই ভালো। প্রতি বছর অসংখ্য জেলে, মৌয়াল ও বাওয়ালিরা বাঘের পেটে যায়। বাঘ না থাকলেই তো ল্যাঠা চুকে যেত। বনজীবীরা নিরূপদ্রবে সুন্দরবন থেকে জীবিকা আহরণ করতে পারতেন। বাঘ সংরক্ষণে লক্ষ লক্ষ ডলার খরচ করার প্রয়োজন পড়ত না।

সাধারণ ভাবনায় এমনটি মনে হতেই পারে যে, বাঘের সংখ্যা নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার কী আছে? সেটি ৪১৯ হোক কিংবা ১১৯! বিশেষজ্ঞদের মতে, উদ্বিগ্ন হওয়ার যথেষ্ট কারণ রয়েছে। তবে এটি এখানে নয়, অন্য একটি নিবন্ধে বিস্তারিত বলার ইচ্ছা আছে। গবেষণায় দেখা গেছে, বাঘ ও বাঘের প্রধান খাদ্য চিত্রা হরিণের চোরাশিকার সুন্দরবনে বাঘ বেঁচে থাকার পথে প্রধান হুমকি। বিভিন্ন রিপোর্টের তথ্য থেকে জানা যায়, সুন্দরবন থেকে প্রতি বছর অন্তত দুটি বাঘ চোরাশিকারির হাতে মারা পড়ছে। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, সংখ্যাটি আরও বেশি হবে। কারণ, এ ধরনের অপরাধের ঘটনা খুব কমই ধরা পড়ে বা জানা যায়।

এটিও লক্ষণীয় যে, সাম্প্রতিক সময়ে বাঘ শিকারের প্রবণতা আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে। গত দুবছর বিভিন্ন সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে বাঘের চামড়া ও হাড় আটকের ঘটনা এই আশঙ্কার প্রতিধ্বনি করে। ২০১২ সালের ১১ জুন ঢাকার শ্যামলীর এক বন্যপ্রাণি চোরাশিকারীর বাসা থেকে যখন র‌্যাব তিনটি বাঘের শাবক উদ্ধার করে তখন একটি ইংরেজি সাপ্তাহিকে লিখেছিলাম যে, সুন্দরবনে যেভাবে শিকারীরা অপতৎপরতা চালাচ্ছে, হয়তো সেখান থেকে অচিরেই বাঘ বিলুপ্ত হয়ে যাবে। এটি এখানে উদ্ধৃত করার কারণ, বর্তমান পরিস্থিতির সঙ্গে এটি বেশ প্রাসঙ্গিক। সুতরাং গুরুতর প্রশ্ন হল, আর কতদিন এ শিকার অব্যাহত থাকবে? বাঘের সংখ্যা আর কত নিচে নামবে?

গবেষণায় দেখা গেছে, কোনো বন্যপ্রাণির সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে কমে গেলে প্রকৃতিতে সে প্রাণির টিকে থাকার সম্ভাবনা একেবারে শূন্যের কোঠায় নেমে যায়। সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা বর্তমানে সে রকমই একটি জায়গায় নেমে আসতে পারে। এমনিতেই সুন্দরবন বাঘের জন্য তেমন অনুকূল আবাস নয়, তার উপর রয়েছে জলবায়ু পরিবর্তনসহ নানা হুমকি। সমুদ্র সমতল থেকে সুন্দরবনের বেশিরভাগ এলাকার গড় উচ্চতা এক মিটারেরও কম। ফলে জোয়ার-ভাটার সময় বনের এক বিশাল অংশ পানিতে তলিয়ে যায়। তাছাড়া, ঝড়-জলোচ্ছ্বাসের সময় পুরো সুন্দরবনই বাঘের বসবাসের অনুপযুক্ত হয়ে পড়ে। এ প্রসঙ্গে আমরা আইলা বা সিডরের কথা স্মরণ করতে পারি। সে রকম একটি পেক্ষাপটে সুন্দরবনে বাঘ কতদিন টিকে থাকবে সেটি বড় প্রশ্ন।

গবেষণায় আরও জানা যায়, কোনো প্রজাতি অল্প সংখ্যায় প্রকৃতিতে বেঁচে থাকলেও তাদের জেনেটিক গঠনে একটি গভীর ক্ষত সৃষ্টি হয় যা পরবর্তীতে ঐ প্রজাতিকে বিলুপ্তির দিকে ঠেলে দেয়। তার মানে, প্রকৃতিতে উক্ত প্রজাতির দীর্ঘদিন বেঁচে থাকার সম্ভাবনা দ্রুত হ্রাস পেতে থাকে।

নানা ধরনের হুমকি থাকা সত্ত্বেও সুন্দরবনের আয়তনের বিশালতা এরং 'ধারণাকৃত' বাঘের সংখ্যার জন্য সুন্দরবনকে বাঘ টিকিয়ে রাখার একটি ভালো এলাকা হিসেবে গণ্য করা হয়ে থাকে। বৈশ্বিক দৃষ্টিতে সুন্দরবনকে তাই 'প্রথম শ্রেণির বাঘ সংরক্ষণ ল্যান্ডস্কেপ' হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে, যেখানে বলা হয়েছে, 'সুন্দরবন হল এমন একটি অঞ্চল যেখানে বাঘ দীর্ঘদিন বেঁচে থাকবে।'

১৯৯৭ সালে জাতিসংঘের অঙ্গ সংস্থা ইউনেস্কো সুন্দরবনের আওতাধীন তিনটি বন্যপ্রাণি অভয়ারণ্য এলাকা 'বিশ্বঐতিহ্য' ঘোষণা করে। ফলে সুন্দরবন বাংলাদেশকে যেমন বিশ্বদরবারে এক অন্যমাত্রায় হাজির করেছে, আবার এই বিশ্বসম্পদের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা ও সংরক্ষণের গুরুদায় আমাদের। অন্যদিকে, রামসার কনভেনশনের আওতায় ১৯৯২ সালে সুন্দরবনকে 'রামসার এলাকা' ঘোষণা করা হয়েছে।

সুন্দরবনের অভ্যন্তরে প্রবাহিত ছোট-বড় অসংখ্য নদ-নদী বনের মোট আয়তনের প্রায় ৩০ শতাংশ। এই বিশাল জলরাশি সুন্দরবনের গুরুত্বপূর্ণ জলজ ইকোসিস্টেম গঠন করেছে। এখানে রয়েছে এই ইকোসিস্টেমের সর্বোচ্চ খাদক প্রাণি লোনাপানির কুমির। রয়েছে বৈচিত্র্যময় প্রজাতির মাছ, শামুক, কাঁকড়া আর উল্লেখযোগ্য জলজ স্তন্যপায়ী, যেমন, গাঙ্গেয় ও ইরাবতি শুশুক এবং দৃষ্টিনন্দন নখরবিহীন ভোঁদড়।

ইতোমধ্যে আমরা সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে বাঘ সংরক্ষণের জন্য দৃঢ় প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করতে দেখেছি। আমরা স্মরণ করতে পারি যে, রাশিয়ার সেন্ট পিটার্সবার্গে অনুষ্ঠিত প্রথম বাঘ সম্মেলনে আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উপস্থিত থেকে সুন্দরবনের বাঘ সংরক্ষণের সর্বোচ্চ প্রতিশ্রুতি দেন। সুতরাং এটি পরিষ্কার যে, বাঘ শুধু একটি প্রাণি নয়, এটি জাতীয় সম্পদ। সর্বোচ্চ পর্যায়ের সে অঙ্গীকারের প্রতিফলন কি আমরা মাঠ পর্যায়ের ব্যবস্থাপনার মধ্যে দেখতে পাই?

এই প্রশ্নের উত্তর 'হ্যাঁ বোধক' হলে সুখের বিষয় হত। বাস্তবতা সে রকম নয়। গত কয়েক বছরে বাঘ পাচারকারী থেকে উদ্ধারকৃত বাঘের চামড়া ও হাড়ের পরিসংখ্যান বিশ্লেষণে এটি সহজেই প্রতীয়মান হবে। সুতরাং এটি পরিষ্কার যে, স্থানীয় পর্যায়ে সুন্দরবন ব্যবস্থাপনায় বড় ধরনের দুর্বলতা রয়ে গেছে।

আমরা জানি যে, আমাদের বন বিভাগে প্রয়োজনীয় লোকবল ও সম্পদের সীমাবদ্ধতা রয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশের সামগ্রিক অবস্থার প্রেক্ষাপটে এটি অস্বাভাবিক নয়। তবে গত কয়েক বছরে বন বিভাগ বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে উল্লিখিত সীমাবদ্ধতা অনেকটা কাটিয়ে উঠেছে। এ ক্ষেত্রে, সুন্দরবন ইকোসিষ্টেম ও লাইভলিহোড সিকিউরিটি (SEALS) প্রকল্প এবং স্ট্রেংদেনিং রিজিওনাল কোঅপারেশন ফর ওয়াইল্ডলাইফ প্রটেকশন (SRCWP) প্রকল্পের কথা উল্লেখ করা যায়। এর মধ্যে প্রথম প্রকল্পটি শুধুমাত্র সুন্দরবনকে সামনে নিয়ে বাস্তবায়ন করা হয়েছে। সুন্দরবন রক্ষায় বন বিভাগের সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং বননির্ভরশীল স্থানীয় মানুষের বিকল্প জীবিকায়ানের দিকে লক্ষ্য রেখে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হয়েছে। আর দ্বিতীয়টিরও উল্লেখযোগ্য অংকের অর্থ সুন্দরবনের ব্যবস্থাপনা ও সংরক্ষণের জন্য বরাদ্দ আছে।

সুতরাং বাঘ ও সুন্দরবন সংরক্ষণে মাঠ পর্যায়ে আমরা এখন দৃশ্যমান ও ইতিবাচক পরিবর্তন আশা করতে পারি। আরও নির্দিষ্টভাবে বলা যায়, বাঘ ও হরিণ-শিকারীদের লাগাম টেনে ধরার সময় এখনই। বাঘ গবেষক হিসেবে দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, সুন্দরবনের বাঘকে আমরা অবশ্যই বাঁচাতে সক্ষম হব। আমাদেরকে পারতেই হবে– এই দেশের জন্য, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য। বাঘ শুধুমাত্র জাতীয় ক্রিকেট দলের লোগোতেই নয়, আমাদের সুন্দরবনেও বেঁচে থাকবে।

এম এ আজিজ: সহযোগী অধ্যাপক, প্রাণিবিদ্যা বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়।

ছবির সৌজন্য: মুস্তাফিজ মামুন, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম।