বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন আমলারা আলাদা জাতি নয়

জায়েদুল আহসান পিন্টু
Published : 22 July 2015, 10:40 AM
Updated : 22 July 2015, 10:40 AM

১ জুলাই এক অনুষ্ঠানে প্রজাতন্ত্রের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারিকে আন্তরিকভাবে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই আহ্বান তিনি সব সময় জানান। সেদিন তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১৯৭২ সালের ১ ফেব্রুয়ারির একটি বক্তৃতা থেকে উদ্ধৃত করে বলেন, জাতির জনক জনগণের সেবায় নিজেদের উৎসর্গ করতে সরকারি কর্মচারিদের ডাক দিয়েছিলেন। বলেছিলেন সব কিছুর উর্ধ্বে জাতির স্বার্থের স্থান দিতে।

প্রধানমন্ত্রী সেদিন যে কথাগুলো বলেননি তা হল, সরকারি কর্মকর্তারা আজকাল সব কিছুর উর্ধ্বে নিজেদের স্বার্থের স্থান দেওয়ার চেষ্টা করছেন। এমনকি সংবিধানেরও উর্ধ্বে সেটা। তারা নিজেদের সুরক্ষার জন্য বিধি-বিধান ও আইন-কানুনের প্রস্তাব করেই যাচ্ছেন। সরকারও যেন সে সব আবদার রেখে ধন্য হচ্ছে।

প্রথমে তারা চাইলেন মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে বিচারিক ক্ষমতা। সেটা পেলেন। এরপর বিচারিক ক্ষমতার আওতা বাড়ালেন, বাড়ালেন দণ্ড দেওয়ার ক্ষমতাও। এরপর চাইলেন মোবাইল কোর্ট পরিচালনার জন্য ডিসিদের অধীনে আলাদা পুলিশ ইউনিট। পুলিশ তাদের কথা শোনে না, তাই নিজস্ব পুলিশ ফোর্স লাগবে। এরপর অনুমতি ছাড়া দুর্নীতির মামলা করতে পারবেন না বলে বিধান করলেন। আদালত অবমাননার দায়ে হাইকোর্ট তলব করতে পারবে না বলে আইন করে অবশ্য টেকাতে পারলেন না।

এবার করতে যাচ্ছেন অপরাধ করলেও অনুমতি ছাড়া গ্রেপ্তার করা যাবে না এমনধারা আইন। কার কাছ থেকে অনুমতি নিতে হবে? সরকারের কাছ থেকে। সরকার মানে আমলাদের কাছ থেকেই অনুমতি আদায়। ১৩ জুলাই মন্ত্রিসভার বৈঠকে এমন বিধান রেখেই সরকারি কর্মচারি আইন, ২০১৫এর খসড়া অনুমোদন করিয়ে নিয়েছেন আমলারা। এর আগে কয়েক বছর এটি নিয়ে পর্যালোচনা হয়েছে।

এ আইনে প্রস্তাব করা হয়েছে যে, ফৌজদারি অপরাধ করলেও সরকারের অনুমোদন ছাড়া কোনো সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারিকে গ্রেপ্তার করা যাবে না। এর আওতায় আবার পোশাকধারী শৃঙ্খলিত যে কোনো বাহিনী, রেলওয়ের কর্মচারি, সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারি এবং উন্নয়ন প্রকল্পের কর্মকর্তা-কর্মচারিরা পড়বেন না। তার মানে, মূলত প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তা-কর্মচারিরাই সুরক্ষা পাবেন।

আইনটি পাস হলে আইনের চোখে সবাই সমান, এই ধারণার ব্যত্যয় ঘটবে বলে নানা মহল বলছেন। এর সুযোগ নিয়ে কারও কারও অপরাধ-প্রবণতাও বেড়ে যেতে পারে। জনপ্রশাসন বা আমলাদের একের পর এক ক্ষমতার বিস্তৃতি ও সুরক্ষার চেষ্টা দেখে মনে হচ্ছে, সকল ক্ষমতার অধিকারী তারা হতে চাচ্ছেন।

আইনটির পক্ষে আমলারা যুক্তি দিয়েছেন এভাবে যে, মিথ্যা মামলার ভোগান্তি থেকে সরকারি কর্মচারিদের রেহাই দিতে আইনটি করা হচ্ছে। যতক্ষণ অপরাধ প্রমাণিত না হয়, ততক্ষণ কাউকে অপরাধী বলা যায় না, এটা আইনের সাধারণ দর্শন যা সবার জন্য প্রযোজ্য। কোনো কর্মচারির বিরুদ্ধে মামলা হলে তাকে গ্রেফতারের সঙ্গে সঙ্গে সাময়িক বরখাস্ত হতে হয়। মিথ্যা মামলায়ও কেউ গ্রেফতার হলে বিচারে নির্দোষ প্রমাণিত না হওয়া পর্যন্ত তাকে বরখাস্ত থাকতে হয়। এতে ওই কর্মচারি ভোগান্তির শিকার হন এবং সরকারি কাজে উৎসাহ হারান। এ জন্যই ঝুঁকি নিয়ে কেউ সরকারি কাজ করতে চান না।

কথা হল, আর কত সুরক্ষা দরকার তাদের? তারা যা-ই চাইছেন সরকার তা-ই দিয়ে দিচ্ছে, সংবিধান তা সমর্থন করুক চাই না করুক। শেষ বিচারে তা টেকানোও যাচ্ছে না। কারণ সংবিধান-বিরোধী সব আইন সুপ্রিম কোর্ট বাতিল করে দিয়েছে। এবারও যে আমলারা নিজেদের শতভাগ স্বাধীন ঘোষণা করে মন্ত্রিসভায় আইনের খসড়া পাস করিয়ে নিলেন, তা ওই একই কারণে টিকবে না সেটা বোঝার মতো জ্ঞান প্রশাসন ক্যাডারের বিজ্ঞজনদের রয়েছে।

সংবিধানের ২৭ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সকল নাগরিক আইনের দৃষ্টিতে সমান এবং আইনের সমান আশ্রয় লাভের অধিকারী। প্রস্তাবিত আইনে সরকারি কর্মচারিদের অতিরিক্ত যে সুবিধা দেওয়া হচ্ছে তাতে সাংবিধানিক বৈষম্য সৃষ্টি হবে। কারণ এ আইন দেশের বৃহত্তর জনগোষ্ঠীকে পাশ কাটিয়ে শুধু একটি বিশেষ গোষ্ঠীকে সুবিধা দিতে যাচ্ছে।

ফৌজদারি কার্যবিধির (সিআরপিসি) ১৯৭ ধারা অনুযায়ী নতুন আইন করা হচ্ছে বলে আমলাদের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে। এই ধারা অনুযায়ী, সরকারের অনুমোদন ছাড়া ফৌজদারি আদালত কোনো সরকারি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ আমলে নিতে পারবেন না। সিআরপিসির এই ধারাও সংবিধানের ২৬ অনুচ্ছেদের মর্মবাণীর সঙ্গে সাংঘর্ষিক। কারণ সেখানে বলা আছে, সংবিধানের সঙ্গে অসমঞ্জস সকল প্রচলিত আইন বাতিল হবে এবং এ ধরনের কোনো আইন প্রণয়ন করা যাবে না। অর্থাৎ সিআরপিসির ও্‌ই ধারাটি বাতিলযোগ্য।

সরকার আইনটি করছে সংবিধানেরই ১৩৩ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী। যাতে বলা আছে, 'এই সংবিধানের বিধানাবলী-সাপেক্ষে সংসদ আইনের দ্বারা প্রজাতন্ত্রের কর্মে কর্মচারিদের নিয়োগ ও কর্মের শর্তাবলী নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে।' অর্থাৎ আইনটি করার জন্য সরকার সংবিধানের একটি ধারা মানার কথা বলছে। কিন্তু ওই আইন যখন সংবিধানেরই আরেকটি ধারা লঙ্ঘন করছে তখন সেটি উপেক্ষা করা হচ্ছে। বিষয়টা যে প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিদের জানা আছে সেটাও সত্য। 'সংবিধানের থোড়াই কেয়ার করি' জাতীয় মনোভাবের প্রকাশ ঘটেছে এখানে।

এর আগে আদালত অবমাননা থেকে সরকারি কর্মচারিরা সুরক্ষা চেয়েছিলেন, সেটা হাইকোর্ট বাতিল করে দিয়েছেন। দুর্নীতির মামলা করতে গেলে আমলাদের কাছ থেকেই আগে অনুমতি নিতে হবে বলে যে বিধান করা হয়েছিল সেটিও বাতিল করেছেন হাইকোর্ট। উচ্চ আদালত বলেছেন, আইনে জনগোষ্ঠীর বিশেষ একটি অংশকে সুরক্ষা দেওয়া বৈষম্যমূলক।

আইনে সমান সুযোগ পাওয়া মানুষের মৌলিক অধিকার। দেখা যাচ্ছে, সরকারি কর্মচারিরা বিশেষ অধিকার নিতে চাচ্ছেন। তারা দুদক আইন সংশোধন করে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৯৭ ধারা আবশ্যিকভাবে পালন করার কথা বলেছিলেন। হাইকোর্ট সেটি বাতিল করে দেওয়ার পর এবার সেই ধারা সরকারি কর্মচারি আইনে ঢুকিয়ে ওই বিশেষ সুবিধা নিতে চাচ্ছেন। দুদক চেয়ারম্যান বলছেন, যেহেতু দুদক আইনে বলা আছে অন্য আইনে যা কিছু থাকুক না কেন, দুদক আইন প্রাধান্য পাবে, তাই সরকারি কর্মচারিরা রেহাই পাবেন না। তিনি এটা জানেন না যে, প্রস্তাবিত আইনেও বলা আছে, 'আপাতত বলবৎ অন্য কোনো আইন, অধ্যাদেশ, বিধি, আদেশ বা নির্দেশে ভিন্নরূপ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই আইনের আওতাভুক্ত প্রজাতন্ত্রের কর্মচারিদের ক্ষেত্রে এই আইনের বিধানই কার্যকর হবে।'

এ নিয়ে হয়তো আরেকটি আইনি লড়াই হবে। তবে সেটা ভবিতব্যের ব্যাপার।

সরকারি কর্মচারিরা মিথ্যা মামলায় হয়রানির শিকার হয়ে সরকারি কাজে উৎসাহ হারানোর যে যুক্তি দিয়েছেন সে বিষয়ে প্রশ্ন হল, এই ঝুঁকি পোশাকধারী শৃঙ্খলিত বাহিনী, রেলওয়ের কর্মচারি, সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারি, উন্নয়ন প্রকল্পের কর্মকর্তা-কর্মচারিরা কেন নিবেন? তারাও সরকারি চাকরি করেন। আমরা যারা বেসরকারি চাকরি করি তারাও কি মিথ্যা মামলার শিকার হই না? দোষী প্রমাণিত না হওয়া পর্যন্ত আমাদেরই-বা কেন গ্রেপ্তার করা হবে? আরও একটি অপরাধ ঘটানো থেকে সম্ভাব্য অপরাধীকে নিবৃত্ত রাখতে বা তার পালিয়ে যাওয়া ঠেকাতে এবং মামলায় অপরাধী যেন প্রভাব খাটাতে না পারে সে জন্যই গ্রেপ্তারের প্রয়োজন হয়।

আমলারা বলছেন, মামলায় গ্রেপ্তার হলে তাদের বরখাস্ত থাকতে হয়, এতে তারা প্রজাতন্ত্রের সেবা করতে পারেন না। অপরাধ প্রমাণ হওয়ার আগে একজন শিক্ষককে যখন গ্রেফতার করা হয় তখন শিক্ষার্থীরা বঞ্চিত হয়। আইনজীবীকে গ্রেপ্তার করা হলে মক্কেল ভোগান্তিতে পড়েন। চিকিৎসককে আটক করা হলে দুর্ভোগ বাড়ে রোগীর। প্রকৌশলীকে আটক করলে থেমে যায় উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড। প্রত্যেক পেশায় দায়িত্ব পালনের সময় ভুলত্রুটি হতে পারে, থাকতে পারে ঝুঁকি। দুর্নীতির মানসিকতা যদি না থাকে তাহলে ঝুঁকি নিতে ভয় পাবার কথা নয়।

প্রস্তাবিত আইনটি আইনের শাসনেরও বিরোধী। কারণ অপরাধের ধরন ও মাত্রার ওপর নির্ভর করে কাকে গ্রেপ্তার করা হবে। এ ক্ষেত্রে অপরাধীর পেশাগত পরিচয় বিবেচ্য হতে পারে না। আর ফৌজদারি মামলায় গ্রেপ্তারের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রের কোনো নাগরিককেই বাড়তি আইনি সুরক্ষা দেওয়া নেই।

বোঝা যাচ্ছে, প্রশাসন ক্যাডারের চাপে মন্ত্রিসভা ওই আইনের খসড়া অনুমোদন করেছে। সংবিধানের ২১ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী তাদের কাজটি করে যাওয়ার কথা। যাতে বলা আছে, সকল সময়ে জনগণের সেবার চেষ্টা করা প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিযুক্ত প্রত্যেক ব্যক্তির কর্তব্য। তা সরকারি কর্মচারিদের এত ভয় কীসের? কতগুলি মামলা হয় প্রতি বছর তাদের নামে? আর কয়টি-ই-বা মিথ্যা? হাতেগোনা কয়েকটি মিথ্যা অভিযোগের কারণে পুরো প্রশাসনের দায়মুক্তির ব্যবস্থা হচ্ছে কেন? এ রকম অযৌক্তিক আবদারে সরকারই-বা কেন সায় দিচ্ছে?

আমলা বন্ধুদের অনেকেই আমাকে বলেন, প্রশাসন চালাতে গেলে কিছু ক্ষমতা লাগে, কিছু দায়মুক্তিরও দরকার পড়ে, তাই আইনি সুরক্ষা দরকার। সুরক্ষা তারা চাইতেই পারেন, তবে তার মাত্রা কতটুকু হবে? এর আগে এই কলামেই লিখেছিলাম, আমলারা সাত খুন মাফ চান কেন? এর জবাব এখন পাওয়া যাচ্ছে, আর সেটা হল, এবার তারা আট খুন মাফ চাইছেন।

এই চাওয়া বাড়তেই থাকবে, আমাদের উদ্বেগটা সেখানেই। ২০০৭ সালে বিচার বিভাগ আলাদা করার পর মোবাইল কোর্ট অধ্যাদেশ দিয়ে আমলারা সীমিত ক্ষমতা আদায় করে নিলেন পরে লিখেছিলাম, এটা 'সূচ হয়ে ঢোকার মতো'। কারণ এরই মধ্যে আমলারা প্রস্তাব করেছেন, কোনো সরকারি কর্মচারির সাজা তিন বছরের বেশি হলে রাষ্ট্রপতি তাকে চাকরিচ্যুত করতে পারবেন। বর্তমান আইনে সে বরখাস্তকরণ এক বছর পরই করা যাচ্ছে। প্রস্তাবিত আইনে তিন বছর পর হলে যা হবে তা হল, একজন সরকারি কর্মকর্তা এমন অপরাধ করলেন যার সাজা দুই বছর, তিনি সাজা খাটা শেষ করে আবার ওই চেয়ারেই বসবেন। এটা ভাবা যায়?

প্রস্তাবিত আইনটি হুবহু পাস হলে সরকারি কর্মকর্তাদের অপরাধ-প্রবণতা বাড়বে বৈ কমবে না, দুর্নীতিও প্রশ্রয় পাবে। সব দিক থেকেই যদি তারা আইনি কাঠমোর মধ্যে নিজেদের 'সুরক্ষিত' রাখেন তাহলে সংবিধান সংশোধন করে বলে দেওয়াই ভালো যে, সকল নাগরিক আইনের দৃষ্টিতে সমান হলেও সরকারি কর্মকর্তারা নন!

২৮ জুলাই থেকে ৩০ জুলাই ঢাকায় জেলা প্রশাসক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বরাবরের মতো প্রধানমন্ত্রী ঔপনিবেশিক মানসিকতা থেকে বেরিয়ে এসে সর্বোচ্চ নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার সঙ্গে জনগণের কল্যাণে কাজ করতে সরকারি কর্মকর্তাদের প্রতি আহ্বান জানাবেন। প্রশাসন ক্যাডারের পক্ষ থেকেও নানা দাবি উত্থাপিত হবে। জনগণের কল্যাণে যত দাবি আসবে সেগুলো অবশ্যই সরকার বিবেচনা করবেন আশা করি। কিন্তু সরকারকে ভুল বুঝিয়ে এমন কিছু করা উচিত হবে না যা বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর স্বার্থের বাইরে যাবে। তাছাড়া যে আইন টেকানো যাবে না তা না করাই শ্রেয়।

এবারের ডিসি সম্মেলন অবশ্য আরেকটি কারণে ভিন্ন মাত্রা পাবে। ১৯৯১ সালে সংসদীয় ব্যবস্থা নতুন করে চালু হওয়ার পর থেকে আগের সংস্থাপন, এখনকার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে কখনও পূর্ণ মন্ত্রী ছিলেন না, প্রতিমন্ত্রী দেওয়া হয়েছে সব সময়। মূল দায়িত্বে থাকতেন প্রধানমন্ত্রী নিজেই। এবািই প্রথম আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম এই মন্ত্রণালয়ের পূর্ণ মন্ত্রীর দায়িত্ব পেলেন। রাজনীতিতে সৎ ও প্রজ্ঞাবান বলেই তাঁকে দপ্তর থেকে সরিয়ে দিয়েও প্রধানমন্ত্রী এই গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দিতে বাধ্য হয়েছেন। নিশ্চয়ই রাজনৈতিক সরকারের এই রাজনৈতিক নেতা আমলাতন্ত্রের খপ্পরে পড়ে প্রশাসন ক্যাডারের অসাংবিধানিক দাবি মেনে নিবেন না।

প্রধানমন্ত্রীর কথা দিয়ে এই লেখা শুরু করেছিলাম। যেখানে তিনি ১৯৭২ সালের ১ ফেব্রুয়ারি দেওয়া বঙ্গবন্ধুর ভাষণ থেকে উদ্ধৃতি দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর বক্তৃতার খসড়া যেসব আমলারা তৈরি করে দেন তাদের স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি, বঙ্গবন্ধু ওই একই বছরের ৪ নভেম্বর সংবিধান গৃহীত হওয়ার দিন গণপরিষদের শেষ অধিবেশনে দেওয়া ভাষণে বলেছিলেন:

''সরকারি কর্মচারিরা একটি আলাদা জাতি নয়। … আইনের চক্ষে সাড়ে সাত কোটি মানুষের যে অধিকার, সরকারি কর্মচারিদেরও সেই অধিকার।''