ধর্ষণ ও পুরুষের দায়

চিররঞ্জন সরকারচিররঞ্জন সরকার
Published : 18 July 2020, 01:14 PM
Updated : 24 May 2015, 01:42 PM

নারীনির্যাতন ও যৌনহয়রানির বিরুদ্ধে দেশব্যাপী যখন বিভিন্ন কর্মসূচি পালিত হচ্ছে, সে সময় চলন্ত মাইক্রোবাসে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন এক গারো তরুণী। ২১ মে, ২০১৫ রাত নয়টার দিকে পেশাগত কাজ শেষে তিনি যমুনা ফিউচার পার্ক থেকে উত্তরার বাসায় যেতে বাসের জন্য একটি সিএনজি স্টেশনের কাছে দাঁড়িয়ে ছিলেন। ওই সময় তাকে একটি মাইক্রোবাসে জোর করে তুলে নিয়ে গাড়ির ভেতরে চালকসহ পাঁচজন তাকে ধর্ষণ করে। বিভিন্ন রাস্তায় চক্কর দিয়ে রাত পৌনে ১১টার দিকে উত্তরার জসীমউদ্দীন সড়কে তাকে নামিয়ে দিয়ে মাইক্রোবাসটি পালিয়ে যায়।

এত বড় একটা অপরাধ সংঘটিত করে অপরাধীরা নির্বিঘ্নে পালিয়ে গেল, অথচ নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত ব্যক্তিরা কিছুই করতে পারল না। ভবিষ্যতে পারবে, সে আশাও ক্ষীণ। কারণ প্রতিদিন, প্রতিনিয়ত ঘটে যাওয়া অসংখ্য অপরাধমূলক ঘটনার কোনোটারই প্রতিকার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা করতে পারেনি। এ জন্য তাদের জবাবদিহি করতে হয় না, কারও চাকরিও যায় না!

আপাতদৃষ্টিতে বিকৃতকামী মানসিকতা বলে ধর্ষণের ব্যাখ্যা দেওয়া যেতে পারে। এই বিকৃতকামুকতা সমাজের এক গভীর অসুখ। যখন একজন আদিবাসী বা সংখ্যালঘু নারীকে ধর্ষণের ঘটনা ঘটে তা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সুপরিকল্পিত। কারণ ধর্ষণকারীরা জানে এ ক্ষেত্রে প্রশাসন নিরব ভূমিকা পালন করবে। তেমন কোনো সামাজিক প্রতিবাদ হবে না। পুরুষতান্ত্রিক কামবোধের সঙ্গে ধর্মীয় বিভেদমূলক মানসিকতা মিলে চূড়ান্ত অরাজকতা! এই অরাজকতাই দিন দিন পোক্ত হচ্ছে। আর সরকার দেশকে 'মধ্যম আয়ের দেশে' পরিণত করার মুলা ঝুলিয়ে যাবতীয় অনাচারের ব্যাপারে চোখ বন্ধ রেখে দিব্যি সময় কাটিয়ে দিচ্ছে।

এর আগে খোদ ঢাকা শহরেই বাংলা নববর্ষ উদযাপনকালে প্রকাশ্যে নারীদের উপর যৌনহয়রানি ও নির্যাতন হয়েছে। এ ব্যাপারে পুলিশ প্রধান প্রথমে 'দু-চারজন দুষ্টু বালকের দুষ্টুমি' বলে ঘটনা লঘু করে বয়ান দেওয়ার পরে কয়েক জনের ছবি প্রকাশ ছাড়া কিছুই করতে পারেননি। দেশে বিচারহীনতার সংস্কৃতি জোরদার হওয়াতে অপরাধীরা ক্রমেই বেপরোয়া হয়ে যাচ্ছে। তারা যা খুশি তাই করছে। কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা কিংবা সামাজিক প্রতিরোধ কোনোটাই জোরদার হচ্ছে না। ফলে দেশটা ক্রমেই অপরাধীদের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হচ্ছে।

প্রশ্ন হল, সাধারণ মানুষ যদি নিরাপদে থাকতে না-ই পারে তাহলে আমাদের এই পোশাকি গণতন্ত্র আর উন্নয়ন দিয়ে কী হবে? অন্ধকারের প্রশ্রয় দিয়ে ক্ষমতায় টিকে থাকা গর্হিত অপরাধ। তাতে সমাজটাই সমাজবিরোধীদের মুক্তরাজ্য হয়ে ওঠে। এক সময় এমন হয়, শাসকদলের শীর্ষ নেতৃত্বও তাদের নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। আমাদের সমাজও যদি অপরাধীদের দখলে চলে যায়, মানুষ দাঁড়াবে কোথায়?

রাজতন্ত্রে মানুষ অসহায় ছিল; এই তথাকথিত গণতন্ত্রেও যদি তাই হয়, তাহলে তো সব শেষ। রাজতন্ত্রেও কিন্তু ধর্ষণ স্বীকৃতি পায়নি। ধর্ষণের জন্য সাম্রাজ্যের পতন ঘটার নজির আছে। প্রতাপশালী রোমান সাম্রাজ্যের বেলায় এমনটা ঘটেছে। ৫০৯ খ্রিস্টপূর্বে অত্যাচারী রোমান রাজা তারকুইনের পুত্র সেক্সটাস ধর্ষণ করে কোলাতিনুসের অপরূপ সুন্দরী স্ত্রী লুক্রেশিয়াকে। যার ডাক নাম লুক্রিশ। এই নারকীয় ঘটনাই বদলে দেয় ইতিহাস। অপমানে লুক্রিশ আত্মহত্যা করতেই প্রতিবাদে জ্বলে ওঠে সারা দেশ। রাজসিংহাসন উল্টে যায়। রোমান সাম্রাজ্যের পতনের পর জন্ম হয় রোমান প্রজাতন্ত্রের।

এ ঘটনার পর শিল্পীদের ছবিতে ফুটে ওঠে নারীর অসম্মানের চিহ্ন, জনরোষের আগুন। সেই ছবি আজও জ্বলজ্বল করছে রোমের মিউজিয়ামে। সাক্ষ্য দিচ্ছে অন্ধকার ইতিহাসের। ঘটনার অনেক পরে পৃথিবীতে এসেছিলেন শেক্সপিয়র। তিনিও অনুভব করেছিলেন লুক্রিশের বেদনা। তাই ১৫৯৪ সালে লুক্রিশকে নিয়ে লিখেছিলেন দীর্ঘ কবিতা, 'দ্য রেপ অব লুক্রিশ'৷

যৌনহয়রানি, ধর্ষণের মতো ঘটনাগুলো উপেক্ষা করার সুযোগ নেই। এমন ঘটনায় শুধু একজন নারীই ধর্ষিত হন না, ধর্ষিত হয় নারীপুরুষনির্বিশেষে সমগ্র সমাজ। কারণ, নারীর অসম্মান, মানবতার অসম্মান, পুরো সভ্যতার জন্যই মানহানিকর। খুনের ক্ষমা আছে, ধর্ষণের নেই। অপরাধ স্বীকার করলে খুনিকে ক্ষমা করা যেতে পারে। তার সংশোধনের সুযোগও গ্রাহ্য। ধর্ষণকারীর বেলায় সেটা খাটে না। কঠোরতম শাস্তি তাকে পেতে হয়। দক্ষিণ আফ্রিকার ট্রুথ অ্যান্ড রিকনসিলিয়েশন কমিশন এ কথাই ঘোষণা করেছে।

অথচ আমাদের দেশে এক দল মানুষ ধর্ষণ করছে, আরেক দল চুপ থেকে ধর্ষণকারীদেরই সমর্থন যোগাচ্ছে। এর ফলে ধর্ষিত হচ্ছে আমাদের সামাজিক নীতিবোধ। ধর্ষণের ঘটনাগুলোতে যখন সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে উঠে না, একজন ধর্ষণ করে আর অন্যরা যখন নিরব থাকে কিংবা ধর্ষকের পক্ষে যাবতীয় যুক্তি ও সমর্থন নিয়ে দাঁড়িয়ে যায়, তখন তাকে সামাজিক ধর্ষণ ছাড়া কী বলা যায়? এটাই এখন আমাদের দেশে বেশি বেশি ঘটছে।

সমীক্ষা বলছে, প্রতি চব্বিশ ঘন্টায় অন্তত নয়জন নারী ধর্ষিতা হচ্ছেন বাংলাদেশে। এর মধ্যে কয়টা কেস নথিভুক্ত হচ্ছে? ধর্ষণের অত্যাচার নিরবে সহ্য করাটাই এখন আমাদের সামাজিক রীতিতে পরিণত হয়েছে। এমনকি সালিশ করে ধর্ষিতার সঙ্গে ধর্ষণকারীর বিয়ে দেওয়ার প্রথাও আছে। অত্যাচারী রাজা, জমিদাররা ধর্ষণ করত নিজেদের অধিকারবলে। ধর্ষিতা চুপ করে থাকত, নয়তো আত্মহত্যা করত। সেই ধারা থেকে আমরা এখনও মুক্ত হতে পারিনি।

নারীনির্যাতন ও যৌনহয়রানি বা ধর্ষণ বিষয়ে আমাদের পুরো সমাজের মূল্যবোধটাই বদলে দেওয়ার সময় অতিক্রান্ত হতে চলেছে। এ ব্যাপারে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। আমাদের দেশের সিনেমা-নাটকে প্রেমের ঘটনায় দেখানো হয় 'বিরক্ত করে যাও, এক সময় ঠিকই পাবে' জাতীয় আচরণ। এটা দেখানো মানে একজন মানুষের মৌলিক অধিকারের কথা বিস্মৃত হয়ে, তার উপরে নিজ আকাঙ্ক্ষার ভার ও দায় চাপিয়ে দেওয়া। এর মধ্যে রয়েছে নিজেকে অতিরিক্ত গুরুত্ব প্রদান ও অন্যের ব্যক্তিত্বের অবজ্ঞা করবার মতো বিপজ্জনক বার্তা।

কোনো নারীকে দেখে কোনো পুরুষের ভালো লাগতেই পারে। আকাঙ্ক্ষিত নারীকে না পেয়ে পুরষের হৃদয়ে প্রবল বেদনাও জন্মাতে পারে। কিন্তু ওই নারীর ওই পুরুষকে ভালো না বাসবার অধিকারে পুরুষটি যদি শ্রদ্ধা না রাখে তাহলে প্রেম ও জুলুমের মধ্যে পার্থক্য থাকে না। সে রকম প্রেম মহিমান্বিত করবার অর্থ এক প্রকার পুং-গুণ্ডামিতে প্রশ্রয়দান, একে প্রশংসায় রঞ্জিত করা। এমনকি নারীকে নির্যাতন করবার সাফাই রচনাও বটে।

আমাদের দেশের সিনেমা-নাটকের ধর্মই হল, উচিত-অনুচিতের পরোয়া না করে পয়সার 'বেহায়া' উপাসনা। সাধারণ মানুষ ইচ্ছাপূরণের গল্প দেখবার সময় 'ষত্ব-ণত্ব' বিচার করেন না। তার বিচারের অভ্যাসটি প্রবলভাবে নিরস্ত ও নিরুৎসাহিত করাই ছবি-ব্যবসায়ের প্রধান লক্ষ্য। কারণ তাহলে ছবির কাটতির পথে বাধা থাকে না। এসবের বিরুদ্ধে এখনই সোচ্চার না হলে ঘরে ঘরে ধর্ষক উৎপাদিত হবে। তখন 'লিঙ্গচ্ছেদের' আইন চালু করলেও তেমন লাভ হবে না।

নারীর যৌনতা ব্যবহার করার সমাজসিদ্ধ অন্য একটি প্রসঙ্গের অবতারণা বোধহয় বাহুল্য হবে না। আমাদের বাক্যবিন্যাসে যত ধরনের গালাগাল প্রচলিত তার সিংহভাগের সঙ্গেই জড়ানো আছে নারীর যৌনতা। পুরুষের যে কোনো মাত্রার ক্ষোভ-ক্রোধ-জ্বালা প্রকাশে মেয়েদের এমন কদর্যভাবে যুক্ত করে তোলার দিকটিও সেই পিতৃতান্ত্রিক দমনেরই ভিন্নতর প্রতিচ্ছবি। দু বর্ণের ক্রিয়াযোগে বা অমুকের ছেলে ইত্যাদি অশ্রাব্য শব্দাবলি বাদ দিয়ে 'অপেক্ষাকৃত নির্মল' একটি গালি 'শালা'র অর্থগত বিশ্লেষণ করলে দেখব, এখানে বক্তা উদ্দিষ্ট ব্যক্তির বোনের সঙ্গে নিজের যৌনসম্পর্কের ইঙ্গিত সূচিত করছে।

এখন খুব বেশি প্রয়োজন পুরুষতান্ত্রিক বিধানগুলোতে সজোরে আঘাত করা। পুরুষতান্ত্রিক বিধানে যৌনতার অনুষঙ্গ বহন করে চলার আবহমানকালীন অভ্যাস মেয়েদের মেনে নিতে হয়েছে বলে এক সন্ত্রাসের জগতে টিকে থাকা হয়ে দাঁড়িয়েছে নারীর অনিবার্য নিয়তি। সে জগতে অবিশ্বাসধ্বস্ত নারী, পুরুষের প্রতিপক্ষে একা নারী। নারীর মন সেখানে অস্বীকৃত, উপেক্ষিত– কেবল আছে তার শরীরটুকু আর তাকে ঘিরে আদিমতার উল্লাস। ভোগের সেই উৎসবে শামিল শত-সহস্র-লক্ষ জন। নইলে ব্যক্তিগত শারীর-লালসা থেকে পারিবারিক বিবাদের আক্রোশ পর্যন্ত যে কোনো কারণেরই সহজ শিকার নারী; প্রতিশোধস্পৃহার সহজ নিবৃত্তি যৌননির্যাতন, ধর্ষণ হবে কেন!

এই হিংস্রতার অনালোচিত বৃত্তে ধরা দিতে হয় কখনও উচ্চশিক্ষিত সপ্রতিভ নারীকে; মানিকগঞ্জগামী লোকাল বাসের যাত্রী নিরীহ গৃহবধূকে; নারায়ণগঞ্জের হতদরিদ্র দর্জিবালিকাকে। আবার কখনও আট-নয় বছরের স্কুলছাত্রীকে, মূক-বধির তরুণীকে, এমনকি দুই-তিন বছরের শিশুকন্যাকেও। নিস্তার নেই কারও।

শুরুর যেমন অন্য এক শুরু থাকে, সব শেষের থাকে অন্য কোনো শেষ। ধর্ষণের পরেও থাকে আর এক রকম ধর্ষণ। তাই পুরুষের সঙ্গে সমান আগ্রহে যে নারীরাও ধর্ষিতার পেশা, জীবনযাত্রা, বিবাহজনিত সুলুকসন্ধান করেন এবং শেষ পর্যন্ত নারীকেই অভিযুক্ত সাব্যস্ত করে মহাস্বস্তির কাঙ্ক্ষিত শ্বাস ফেলেন। তারা যে আসলে পুরুষতন্ত্রেরই মুখ, পিতৃশাসনেরই স্বর, এ কথা নিজেরাও বোঝেন না।

মনে পড়ে যায় ভারতীয় বাংলা সিনেমা 'আদালত ও একটি মেয়ে' অথবা 'দহন'এর যন্ত্রণাময় দৃশ্যগুলো। একবার ধর্ষণের পর প্রতিদিনের ধর্ষণ কীভাবে মেয়েদের জীবন তছনছ করে দেয়, কত সহজে বেদনার দীর্ণতায় ভরে দিতে পারে তার অস্তিত্ব। চূড়ান্ত অবমাননা ও রুদ্ধশ্বাস ক্লেশ বিচিত্র কৌশলে যেখানে নারীকে সইতে বাধ্য করা হয়, সেখানে শোষণ আর যৌনতা মিলেমিশে একাকার হয়ে যায়। তাই গ্রামীণ মোড়লের নির্দেশে নারীকে বিবস্ত্র করে গ্রামে ঘোরানো যায়, ডাইনি সন্দেহে হত্যাও করা হয়। দিনের আলোয় যখন পুরুষ সহকর্মীর কামনার কাছে আত্মসমর্পণ করা ছাড়া বিকল্প থাকে না, তখন দুমুঠোয় শূন্যতাই কেবল আঁকড়ে ধরতে হয় নারীকে।

নারীনির্যাতন, যৌনহয়রানি, ধর্ষণ করে পুরুষরা। কাজেই এ ব্যাপারে সবার আগে এগিয়ে আসতে হবে পুরুষদেরই। সংশোধিত হতে হবে আগে তাদের। মানুষ হতে হলে 'মনুষ্যত্ব' ঊর্ধ্বে তুলে ধরতে হবে, লাম্পট্য নয়। এটা মানবতার দায়।

আমাদের দেশে প্রতিনিয়ত নারীনির্যাতনের ঘটনা ঘটছে। আমরা নিজেরা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে এসব ঘটনা ঘটাচ্ছি। কিন্তু এর জন্য কখনও অনুশোচনা প্রকাশ করি না। আত্মজিজ্ঞাসাও আমাদের মনে জাগে না। অনেক সময় কোনো নারীনির্যাতনের ঘটনা ঘটলে আমরা প্রতিবাদী হই; কিন্তু এই প্রতিবাদের মুহূর্তে নিজেদের দিকে তাকাতে ভুলে যাই। ভুলে যাই আমরা পুরুষ হিসেবে, অনেক সময় সচেতন বা অবচেতনে পুরুষতন্ত্রের অংশ হয়েছি। প্রত্যক্ষ নির্যাতনে শামিল না হলেও গোপন নির্যাতনে মদত দিয়েছি। এই মুহূর্তটি তাই নিজেদের সংশোধনের মুহূর্ত। তার চেষ্টা শুরু করার মুহূর্ত। কীভাবে নিজেদের বদলাতে পারি আমরা, পুরুষেরা?

আমাদের প্রত্যেককে সভ্য মানুষ হওয়ার সাধনা করতে হবে। একজন মানুষ তখনই সভ্য, যখন তার কাছে ধর্মবর্ণনির্বিশেষে পৃথিবীর সকল মানুষ সম্পূর্ণ নিরাপদ বলে বিবেচিত হবে।