অভিজিৎ হত্যা: অস্তিত্বের সংকটে আমরা

এম সানজীব হোসেন
Published : 4 March 2015, 01:27 PM
Updated : 4 March 2015, 01:27 PM

"অভিজিৎ রায় আহত, মাথায় এবং পিঠে কোপানো হয়েছে।" হঠাৎ ফেসবুকে চোখে পড়ল বন্ধু আরিফুর রহমানের কথাগুলো। মনে অজানা আতঙ্ক। আমি বিদেশে পড়াশোনা করি। বাবা-মাকে স্কাইপে ফোন দিলাম। বাবাকে বললাম, ''তুমি এখনই ঢাকা মেডিকেলে যাও, অভিজিৎদা আহত।''

বাবা রওনা দিলেন। খানিক পরই 'সময়' টিভির স্ক্রল দেখে মা জানালেন, অভিজিৎ রায় আর নেই।

কিছুক্ষণের জন্য মনে চলে গেল ২০০৭ সালের আগস্ট মাসে। আমাদের পরিবারে নেমে এসেছে অন্ধকার। ঢাকা ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কিছু সংখ্যক ছাত্র-শিক্ষককে চোখ বেঁধে সেনা গোয়েন্দা সংস্থা ধরে নিয়ে গিয়েছে। আমার বাবাও তাদের মধ্যে একজন। এখনও স্পষ্ট মনে আছে, আমার রুমে বসে মাকে বুঝিয়েছি, ''মানসিক প্রস্তুতি নাও, বেশ কয়েক বছর জেলে থাকবেন বাবা।''

অন্ধকার কেটে যেতে সময় অবশ্য বেশি সময় লাগল না। এক অভূতপূর্ব আন্দোলনের ফলে পাঁচ মাসের মাথায় আটক ছাত্র-শিক্ষকরা মুক্তি পেলেন। সেবার অভিজিৎদা ও তাঁর মতো বহু মুক্তমনার সাহসী ভূমিকার কারণেই বাবাকে ফেরত পেয়েছিলাম। তখন থেকে তাঁর সঙ্গে আমার পরিচয়। সর্বশেষ কথা হয়েছিল গত বছর ২৯ আগস্ট। 'মহিউদ্দিন আহমেদ' নামের এক তথাকথিত গবেষক মুক্তিযুদ্ধপন্থী রাজনৈতিক শক্তির ঐক্যে ফাটল ধরানোর লক্ষ্যে কর্নেল তাহেরকে নিয়ে একের পর এক মিথ্যা কথা বলে যাচ্ছেন। বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমে এ বিষয়ে একটি দীর্ঘ লেখা প্রকাশ করি। লেখাটি পড়ে অভিজিতদা ফেসবুক মেসেজে বললেন:

It's a great article. Very articulate and very nicely done.

সেদিন বুকটা গর্বে ভরে উঠেছিল। মনে হয়েছিল অভিজিতের মতো নেতা চাই, যে দুঃসময়ে এগিয়ে আসে নিঃশর্ত সমর্থন নিয়ে। এমন একজন অসাধারণ ব্যক্তি আমাদের মাঝে আর নেই ভেবে গভীর দুঃখ, বেদনা ও ক্ষোভে মন ভারাক্রান্ত হল।

অভিজিৎ রায়ের হত্যা নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা করেছি নিকটজনদের সঙ্গে। ফেসবুকে বন্ধু, আইসিএসএফ, ব্লগার্স কমিউনিটি অ্যালায়েন্স, একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির মতো সমমনা সংগঠনের আগুনঝড়া অথচ বিশ্লেষণধর্মী প্রতিক্রিয়া দেখেছি। [i] এগুলোর উপর ভিত্তি করে অভিজিৎকে কেন জীবন দিতে হল এবং এই মুহূর্তে মুক্তিযুদ্ধপন্থী রাজনৈতিক শক্তির কী করণীয়, এসব বিষয়ে কিছু উপসংহারে পৌঁছেছি। পাঠকদের সামনে তা তুলে ধরাই এই লেখার মূল উদ্দেশ্য।

অভিজিৎ রায় ইসলামি জঙ্গিদের হাতে জীবন দিয়েছেন। কারণ বেশ কয়েক বছর ধরে মুক্তিযুদ্ধপন্থী প্রধান রাজনৈতিক শক্তি, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও তার সঙ্গে জোটবদ্ধ অন্যান্য রাজনৈতিক দল, যেমন জাসদ, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার মূল প্রতিপক্ষ ইসলামি জঙ্গিবাদ ও জামায়াত-ই-ইসলামীকে মোকাবেলা করার প্রশ্নে এক ধরনের 'মাঝামাঝি' অবস্থান গ্রহণ করেছে। এই অবস্থান প্রভাব ফেলেছে রাষ্ট্রের বিভিন্ন স্তম্ভে। কেউ কেউ অবাক হবেন ভেবে যে, যে সরকার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠন করে আবদুল কাদের মোল্লাকে ফাঁসি দিয়েছে, সেই একই সরকার ও রাষ্ট্র আবার 'মাঝামাঝি' অবস্থান নিয়েছে কোনো কোনো জায়গায়। এর অন্তর্নিহিত কারণ কী?

পাঠক খেয়াল করুন, ২০০৮ সালে এক ঐতিহাসিক সাধারণ নির্বাচনে জয়লাভ করার পর আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে এবং আমাদের সংবিধানকে তার ১৯৭২ সালের মৌলিক অবস্থায় ফিরিয়ে নিতে সচেষ্ট হয়। জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা ও গণতন্ত্র, এই চার মূলনীতি সংবিধানে স্বমহিমায় ফিরে এলেও, আমাদের সংসদ সদস্যরা ইসলামকে রাষ্ট্রীয় ধর্ম হিসেবে রেখে দেন। সে সংক্রান্ত ধারায় সামান্য পরিবর্তন এনে তাঁরা বলেন:

[…] State shall ensure equal status and equal right in the practice of the Hindu, Buddhist, Christian and other religions.

[ii]

কথাগুলো সুন্দর। কিন্তু একটি মৌলিক প্রশ্নের উত্তর এই বিধানে খুঁজে পাওয়া যায় না। ভুল হলে শুধরে দেবেন, কিন্তু আমার জানামতে ধর্ম (ইসলাম, হিন্দু ইত্যাদি) শুধু মানুষেরই থাকে। কুকুর, বিড়াল, গাছ, বই, রাস্তা, নদীর ধর্ম নেই। সে বিচারে রাষ্ট্রেরও কোনো ধর্ম থাকার কথা নয়। রাষ্ট্র তো রাষ্ট্র, মানুষ নয়।

'মাঝামাঝি' অবস্থান শুধু সংবিধানের বেলাতেই নেওয়া হয়নি। গত ১৫ বছরে বহু আক্রমণ ও হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে ইসলামি জঙ্গিদের দ্বারা। হামলার শিকার হয়েছে উদীচীর মতো সংগঠন ও ভাষা শহীদদের স্মরণে নির্মিত স্মৃতিস্তম্ভ। আক্রান্ত হয়ে অল্পের জন্য বেঁচে গিয়েছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, কবি শামসুর রাহমান, মুক্তিযোদ্ধা আমান, ড. রায়হান রশীদের পরিবার, আসিফ মহিউদ্দিন, গণজাগরণ মঞ্চের কর্মী আরিফ নূরের মতো সাহসী মানুষরা। জীবন প্রদীপ নিভে গিয়েছে অধ্যাপক হুমায়ুন আজাদ, অধ্যাপক মোহাম্মদ ইউনুস, অধ্যাপক এম তাহের, অধ্যাপক একেএম শফিউল ইসলাম লিলন, বগুড়ার প্রভাষক জিয়াউদ্দিন জাকারিয়া বাবু, ব্লগার আহমেদ রাজীব হায়দার, আশরাফুল আলম, আরিফ রায়হান দ্বীপ, মাওলানা নুরুল ইসলাম ফারুক, যুবলীগ নেতা জগতজ্যোতি তালুকদার, লিফটম্যান জাফর মুন্সীর মতো আলোকিতজন। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী ব্যক্তিরা প্রতিনিয়ত পাচ্ছেন জীবননাশের হুমকি। দুঃখের বিষয় হচ্ছে যে, উপরের এতগুলো ঘটনার জন্য এখনও পর্যন্ত কেউ তেমন শাস্তি পায়নি।

অন্যদিকে দেখা গিয়েছে হেফাজতে ইসলামের চাপে নতি স্বীকার করে রাষ্ট্র গ্রেফতার করেছে স্বাধীন মত প্রকাশ করা ব্লগার মশিউর রহমান, রাসেল পারভেজ ও সুব্রত অধিকারী শুভ ও মুক্তিযোদ্ধা ও আওয়ামী লীগ নেতা আবদুল লতিফ সিদ্দিকীকে। অথচ আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগে সাবেক বিচারপতি আবদুস সালাম মামুনের পুত্র মোহাম্মদ আসিফ আদনানকে স্থায়ী জামিন দিয়েছেন মহামান্য হাইকোর্ট। [iii] এর আগে হাইকোর্টের আরেকটি বেঞ্চ পুলিশ প্রতিবেদন দাখিল করা পর্যন্ত আদনানকে অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দিয়েছিলেন যা আপিল বিভাগ স্থগিত করেন। [iv] গত বছরের সেপ্টেম্বরে আদনান ও তার সহযোগী ফজলে এলাহি তানজিলকে গ্রেফতারের সময় তাদের কাছ থেকে বিস্ফোরক দ্রব্য, বোমা তৈরির সার্কিট, রিমোর্ট কন্ট্রোল ও ম্যানুয়াল উদ্ধার করা হয়েছিল। [v]

আশ্চর্য হই যখন পত্রিকায় পড়ি অন্তর্বর্তীকালীন জামিনের শুনানিতে আদনানের পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন সুপ্রিম কোর্ট বারের সাবেক সভাপতি ব্যারিস্টার রোকনউদ্দিন মাহমুদ। [vi] ব্যারিস্টার মাহমুদের অর্থ-বিত্তের অভাব নেই। কোন যুক্তিতে তিনি আদনানের পক্ষে লড়লেন, তা আমাদের বোধগম্য নয়।

এদিকে দু'বছর পেরিয়ে গেলেও, আহমেদ রাজীব হায়দার হত্যা মামলার অভিযোগও গঠন হয়নি এখন পর্যন্ত। [vii] অথচ পত্রিকা থেকে জানতে পেরেছি যে, এই মামলায় অভিযুক্ত নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছয় ছাত্রের মধ্যে পাঁচজনই ঢাকার মূখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে হত্যায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছিল। [viii] তাদের স্বীকারোক্তিতে রাজীব হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে উঠে এসেছে জামায়াত-ই-ইসলামী ও ইসলামী ছাত্র শিবিরের সঙ্গে জড়িত রেদোয়ানুল আজাদ রানার নাম। [ix] ২০১৩ সালের এপ্রিলে ব্লগার সুব্রত শুভ যখন কোর্টে হাজিরা দিতে আসেন তখন লাইনে আহমেদ রাজীব হায়দারের খুনিদেরও দেখেন। খোঁজ নিয়ে সুব্রত জানতে পারেন যে, তারা ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে আরামেই দিন কাটাচ্ছে। [x]

সুব্রতর লেখাটি পড়ে আবারও অতীতে ফিরে গেলাম। ২০০৭ সালে 'মোহাম্মদ বিড়াল' কার্টুন (উল্লেখ্য, ক্যাপশনটি দিয়েছিল 'প্রথম আলো') আঁকায় কার্টুনিস্ট আরিফকে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করার অভিযোগে আটক করা হয়েছিল। তিনি তখন ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে চরম নিরাপত্তাহীনতায় দিন কাটাচ্ছিলেন। কয়েক কয়েদী কাঠিতে মানুষের মল লাগিয়েে আরিফের মুখে ভরে দিয়েছিল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের খেলার মাঠে ছাত্র ও সেনা সদস্যদের মধ্যে সংঘাতের ঘটনায় বাবা যখন জেলখানায়, তখন এ বিষয়ে জানতে পেরে জোর প্রতিবাদ জানান এবং আরিফকে নিজের সেলে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করেন। কারা কর্তৃপক্ষ কিন্তু আরিফের বিরুদ্ধে সংঘটিত কয়েদীদের সেই অপরাধের বিচার করেননি।

পাঠক নিশ্চয়ই জানেন, শফিউর রহমান ফারাবী রামে একজন ফেসবুকে একের পর এক হুমকি দিয়ে তথ্যপ্রযুক্তি আইনে গ্রেফতার হয়েছিল। সে পরবর্তীতে জামিন পেয়েছিল মহামান্য হাইকোর্ট থেকে। কারাগারে ৬ মাস কাটিয়ে জামিনে মুক্তি পেয়ে ফারাবী বলে:

"আমার দৃষ্টিতে নাস্তিকরা হচ্ছে পোকামাকড় আর পোকামাকড়দের মরে যাওয়াই ভালো।" [xi]

৯ ফেব্রুয়ারি, ২০১৪, ফারাবী ফেসবুকে বলে:

"অভিজিৎ রায় আমেরিকা থাকে। তাই তাকে এখন হত্যা করা সম্ভব নয়। তবে সে যখন দেশে আসবে তখন তাকে হত্যা করা হবে।"

প্রকাশ্যে এমন মন্তব্য করলেও ফারাবীর জামিন বহাল থাকে। পরিস্থিতি বিচার করে সাবেক প্রধান বিচারপতি ও বর্তমানে আইন কমিশনের চেয়ারম্যান খায়রুল হক বলেছেন:

''যারা এই ঘটনার সাসপেকটেড খুনিকে চটজলদি বেইল দিয়েছেন, তাদের হাতেও অভিজিতের রক্তের দাগ লেগে আছে। এ ঘটনায় প্রমাণিত হয়, আমাদের পুলিশ ইনইফিসিয়েন্ট। […] তাই বলা যায়, বিচার বিভাগের হাতেও রক্তের দাগ লেগে আছে।'' [xii]

বিচারপতি খায়রুল হক সমালোচনা করেছেন তাঁর নিজের কর্মক্ষেত্রের। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্ণধাররা মুখ খুলবেন কি? যেখানে স্বয়ং পুলিশ কমিশনার নিজে সন্দেহ প্রকাশ করছেন ঢাবি ক্যাম্পাসের ভেতর 'জঙ্গি আখড়া' রয়েছে, তখন কোন বিবেচনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আমজাদ আলী বলেন যে, তাঁর ধারণা বহিরাগত সন্ত্রাসীরা অভিজিৎ রায়কে কুপিয়েছে?[xiii]

এবারের বই মেলায় ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগে 'রোদেলা' প্রকাশনীর স্টল বন্ধ করে দিয়ে বাংলা একাডেমী কেমন বার্তা আমাদের দেশের মানুষকে পাঠাল? গত কয়েক মাসে আমাদের পুলিশ বাহিনী কত জন শিবির কর্মীকে হাতেনাতে ধরেছে বোমা-ককটেল হামলার অভিযোগে? মাত্র কয়েক দিন আগে চট্টগ্রামের হালিশহরের একটি বাড়িতে ৭৬টি তাজা বোমা, ২৪ রাউন্ড গুলি, বিস্ফোরকের বিপুল পরিমাণ মজুদসহ ইসলামী ছাত্রশিবিরের 'সংবিধান', ইসলামী ছাত্রী সংস্থার এক নেত্রীর চিঠি, জিহাদি বইসহ নানা আলামত পাওয়া গেল। [xiv] সেই বাড়ির গ্রেফতারকৃত ভাড়াটিয়া ফয়জুল হক ও রহিমা আক্তার হচ্ছে মাওলানা আজিজের ভাই-বোন। বাঁশখালীতে খামারের আড়ালে জঙ্গি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র পরিচালনাকারী এই মাওলানা সাহেব এ বছরের ৭ জানুয়ারি গ্রেফতার হন। তার বোন রহিমা ইসলামী ছাত্রী সংস্থার সদস্য।

এদিকে গাজীপুরের একটি বাড়িতে বোমা বানানোর সময় বিস্ফোরণে ইসলামী ছাত্র শিবিরের এক কর্মীর হাতের কব্জি উড়ে যায়। উল্লেখ্য, সেদিন চলছিল বিএনপির হরতাল। [xv]

পাঠক, জামাআতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ (জেএমবি), হরকাতুল জিহাদ আল-ইসলাম (হুজি), হিজবুত তাহরীর, আনসারুল্লাহ বাংলা টিম– যে নামই বলা হোক না কেন, এই সকল সংগঠনের মূলে রয়েছে জামায়াত-ই-ইসলামী। ২২ জানুয়ারি, ২০১০, দৈনিক 'কালের কণ্ঠ' হরকাতুল জিহাদের সঙ্গে জামায়াত-ই-ইসলামীর সরাসরি সংশ্লিষ্টতা নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে। [xvi] হুজি কমান্ডার মোহাম্মদ ইউনুস বলেন যে, জামায়াত জঙ্গি তৎপরতার সঙ্গে জড়িত ছিল এবং দলটি অর্থ, সাহস, পরামর্শ দিয়ে সাহায্য করত। জঙ্গি তৎপরতার অভিযোগে জেএমবি, হুজি, হিজবুত তাহরীর, আনসারুল্লাহ বাংলা টিমকে সরকার নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে পারলে, একই অভিযোগে জামায়াত-ই-ইসলামীকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে পারছে না কেন? প্রতিটি দলের অতীত ও ভবিষ্যৎ যে একই সূত্রে গাঁথা তা উপলব্ধি করতে তো 'রকেট সায়েন্টিস্ট' হওয়ার প্রয়োজন নেই।

উপরের ঘটনাপ্রবাহ বিবেচনা করে যদি বলি যে, সরকার ও রাষ্ট্র মূল জায়গায় (জামায়াত-ই-ইসলামী) হাত দিতে এক কদম এগুলে দুই কদম পিছিয়ে যাচ্ছে, তাহলে কি খুব ভুল বলা হবে? ইসলামি জঙ্গিবাদ মোকাবেলায় এগুলো কি দৃঢ়সংকল্পের না 'মাঝামাঝি' অবস্থানের লক্ষণ? পাঠক, বিবেচনা করুন।

কিন্তু এমন তো হওয়ার কথা না। আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের আমলেই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল বহু বাধা মোকাবেলা করে একের পর এক রায় দিয়েছে। অন্যদিকে, ইসলামী ছাত্র শিবির যখন সারা দেশে ছড়িয়ে থাকা শিক্ষায়তনে আক্রমণ চালায় তখন অধিকাংশ ভিকটিম ছাত্রলীগের সদস্য কেন হয়? ফেসবুকে তো আমরা দেখেছি ছাত্রলীগের সদস্যদের কী নির্মমভাবে পায়ের গোড়ালির উপর থেকে কেটে দেওয়া হয়েছে। বামপন্থীদের মধ্য থেকে কেউ মারা যায়নি বললে অবিচার করা হবে। কিন্তু কেউ কি অস্বীকার করতে পারবেন যে, ইসলামি জঙ্গি ও জামায়াত-ই-ইসলামীর মূল লক্ষ্য সব কালেই আওয়ামী লীগ?

তাহলে এই 'মাঝামাঝি' অবস্থান গ্রহণের কারণ কী? মূল সমস্যা কোথায়? বন্ধু অনিন্দ্যের সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনা করে কিছু উত্তর খুঁজে পেয়েছি।

পাঠক, খেয়াল করবেন, প্রায় দু'দশকের বেশি সময় ধরে মুক্তিযুদ্ধপন্থী প্রধান রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ এবং অন্যান্য বামপন্থী দলগুলো সাধারণ জনগণকে সম্পৃক্ত করে কোনো কার্যকর ও ক্রিয়াশীল রাজনৈতিক কর্মসূচি প্রণয়ন করেনি। রাজনৈতিক কর্মসূচির অনুপস্থিতি বলতে আমি যা বোঝাতে চাচ্ছি তা হল, সাধারণ ভোটারের সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধপন্থী রাজনৈতিক দলগুলোর জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা, গণতন্ত্র নিয়ে কোনো আলোচনা নেই। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে একযোগে লক্ষ লক্ষ মানুষ কেন যোগ দিয়েছিল তা নিয়ে গভীর বিশ্লেষণের প্রয়োজন রয়েছে। দীর্ঘকাল ধরে পূর্ব পাকিস্তানের মানুষদের প্রতি পশ্চিম পাকিস্তানি শাসকদের অত্যাচার, পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চে অপারেশন সার্চলাইটের মতো নির্মম ও পরিকল্পিত আক্রমণ সংঘটনসহ অন্যান্য কারণে এ দেশের মানুষ মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল।

একটি কারণ অবশ্য প্রায়ই চোখের আড়ালে থেকে যায় এবং অনেক সময় ইচ্ছা করেই সেভাবে রাখা হয়; তা হল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আওয়ামী লীগ এবং ছাত্রলীগের মাধ্যমে একটি সুচিন্তিত রাজনৈতিক কর্মসূচি এ দেশের মানুষের সামনে উপস্থাপন করেছিলেন। নিউক্লিয়াসের মতো গোপন সংগঠন কাজ করে স্থান করে নিয়েছিল বাংলাদেশের ছাত্র-যুবকদের মনে ও মননে। আমাদের বাবা-চাচারা যে একযোগে যুদ্ধে লড়তে পেরেছিলেন তার অন্যতম কারণ হচ্ছে এই রাজনৈতিক কর্মসূচি, যা তাদেরকে এবং সমগ্র জনতাকে আগের থেকে প্রস্তুত করেছিল। এমন একটি চিত্রই আমি পেয়েছি শ্যামলী ঘোষ রচিত The Awami League 1949-1971, মনিরুল ইসলাম রচিত "জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও সমাজতন্ত্র" ও ইসলামি জঙ্গিদের হাতে নিহত কাজি আরেফ আহমেদ রচিত 'বাঙালির জাতীয় রাষ্ট্র' বইগুলোতে। [xvii]

পাঠক, ১৯৭১ সালে মূল শত্রু ছিল পাকিস্তানি সেনাবাহিনী। আজকে আমাদের মূল শত্রু সে সময়ে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর দেশীয় দোসর জামায়াত-ই-ইসলাম ও তার মতাদর্শ ইসলামি জঙ্গিবাদ। পরিস্থিতি এবার ভিন্ন। তারা প্রস্তুতি নিয়েছে, যেমন বাঙালিরা প্রস্তুত হয়েছিল মুক্তিযুদ্ধের আগে। আর এদিকে আমরা প্রস্তুতিহীন। আমাদের মুক্তিযুদ্ধপন্থী রাজনৈতিক দলগুলোর নেতা-কর্মীরা মুখে মুখে জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতার কথা বললেও তা অনুশীলন করেন না; এ নিয়ে গঠনমূলক আলোচনা-সমালোচনায় অংশগ্রহণ করে জনগণকে সম্পৃক্ত করেন না; সমাজতন্ত্র নিয়ে আলাপ তো সুদূরপরাহত।

তাই যা হওয়ার তাই হয়েছে। একদিকে আমরা যেমন অপ্রস্তুত হয়ে বসে আছি, অন্যদিকে জামায়াত-ই-ইসলামী বিএনপির ছায়াতলে থেকে অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে আঘাত করছে আমাদের মূল পরিচয়ে। তারা বিভ্রান্ত করছে বহু মানুষকে 'ধর্মীয় অনুভূতির' কথা বলে। স্বাধীন মত প্রকাশকারী আলোকিত মানুষদের উপর আক্রমণ চালাচ্ছে তারা। 'আইরনি' হচ্ছে এই যে, ডিজিটাল বাংলাদেশ সাফল্যের সঙ্গে গড়ছে সরকার, কিন্তু তার সুযোগ নিচ্ছে জঙ্গিবাদী শক্তি। ফোনে ইন্টারনেট সুবিধা ব্যবহার করে 'বাঁশের কেল্লা' জানিয়ে দিচ্ছে চাঁদে নাকি দেলাওয়ার হোসেন সাঈদীর মুখ দেখা গিয়েছে। তারা বুঝাতে চাচ্ছে, নাস্তিক বা ভিন্নমতাবলম্বীরা মানুষ নয়, তাদের বেঁচে থাকার অধিকার নেই, তাদের কোপাতে হবে। হিন্দু-বৌদ্ধদের মন্দিরে আগুন জ্বালিয়ে দেওয়া জায়েজ।

আশা আছে তবু। এই চরম দুর্দিনে কি শাহবাগ আলো ছড়ায়নি? অপ্রস্তুত অসংগঠিত জনতা কি তাদের মনের কথা জানিয়ে দেয়নি যে, তারা আজো জয় বাংলায় বিশ্বাসী? তারা কি বলে যাযনি, 'তুমি কে আমি কে, আদিবাসী-বাঙালি'। তারা কি চোখের পানি ফেলতে ফেলতে গায়নি, 'আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি'। তারা কি চায়নি যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসি? তাহলে আর কোন ইঙ্গিতের জন্য আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী দলগুলো বসে আছে?

জাতীয়তাবাদ, ধর্মনিরপেক্ষতা, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র নিয়ে রাজনৈতিক কর্মসূচি নিয়ে নামতে হবে এখনই। জনগণকে আবারও প্রস্তুত করাতে হবে মানসিকভাবে, যেমন বঙ্গবন্ধু সকলকে প্রস্তুত করেছিলেন তাঁর রাজনৈতিক জীবনকালে। কেউ কেউ প্রস্তুতির প্রয়োজন বুঝে কাজে নেমেছেন। আমার নিকট আত্মীয় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সংসদ সদস্য রবিউল আলম মুক্তাদির চৌধুরী অভিজিৎ রায়ের হত্যাকাণ্ডের পর তাঁর এলাকার স্কুল-কলেজের ছাত্রছাত্রীদের বলেছেন অভিজিৎকে ও তাঁর চিন্তা ও কর্ম স্মরণ করতে। তাদের বলেছেন, চণ্ডিদাসের বাণী, 'সবার উপরে মানুষ সত্য তাহার উপরে নাই' অন্তরে ধারণ করতে।

তাহলে আমাদের করণীয় কি? একটাই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে কার্যকর সমর্থন দেওয়া এবং মুক্তিযুদ্ধপন্থী রাজনৈতিক দলগুলোকে বাধ্য করা যাতে তারা যাতে তাদের 'মাঝামাঝি' অবস্থান ত্যাগ ও জনগণকে সম্পৃক্ত করার সুস্পষ্ট রাজনৈতিক কর্মসূচি চালু করে। শেখ হাসিনার পেছনে দাঁড়াতে হবে কেন? পাঠক, মনে আছে আবদুল কাদের মোল্লার ফাঁসির আগের মুহূর্তগুলো? কাদের মোল্লার ফাঁসি যাতে কার্যকর না করা হয় সে জন্য শেখ হাসিনাকে যুক্তরাষ্ট্রের জন কেরি ও জাতিসংঘের বান কি মুন ফোন করেছিলেন। তাদের চাপ উপেক্ষা করেই কিন্তু ফাঁসি কার্যকর করা হয়। [xviii] বাংলাদেশে শেখ হাসিনা ছাড়া কোনো রাজনীতিবিদ কি আছেন এই মুহূর্তে যিনি এমন প্রবল চাপ উপেক্ষা করতে সক্ষম? উত্তর সহজ, নেই।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে বলব, আওয়ামী লীগের মূল চেতনাই হচ্ছে বাঙালি জাতীয়তাবাদ ও অসাম্প্রদায়িকতা। আপনাকে বুঝতে হবে যে, তথাকথিত ধর্মীয় অনুভূতি শান্ত করতে গিয়ে আপনি ভোটের সমীকরণে পরিবর্তন আনতে পারবেন না। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা স্মরণ করে রাজনৈতিক কর্মসূচি নিয়ে জনগণের সামনে আসুন। আমাদের রক্তে যে সাম্প্রদায়িকতা ঢুকে পড়েছে তা সমূলে উৎপাটন করার ব্যবস্থা নিন সেই রাজনৈতিক কর্মসূচি দিয়ে। আমরা যদি ১৯৭২ সালে ধর্মনিরপেক্ষতার মর্ম বুঝতে পারি, আজও পারব। মানুষের মাঝে তুলে ধরুন আরজ আলী মাতুব্বরের জীবন ও দর্শন। রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করুন শক্ত হাতে ইসলামি জঙ্গিদের মোকাবেলায়। রাষ্ট্রযন্ত্রের ভেতর লুকিয়ে থাকা স্বাধীনতাবিরোধীদের চিহ্নিত করে তাড়িয়ে দিন।

নজর দিন বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থার দিকে। কেউ পড়বে মাদ্রাসায়; কেউ বাংলা মিডিয়ামে; আর কেউ দিবে 'ও' লেভেল, 'এ' লেভেল– এভাবে আর কতদিন? এক ও অভিন্ন শিক্ষা ব্যবস্থা চালুর লক্ষ্যে এগিয়ে যান। না হলে আজকে আমাদের সমাজ যতটুকু বিভক্ত, তার চেয়েও বিভক্ত হয়ে পড়বে সামনের বছরগুলোতে। মতপ্রকাশের স্বাধীনতা হরণ করে এমন আইন বাতিল করার প্রক্রিয়ায় নেতৃত্ব দিন। আমাদের দেশের প্রচলিত আইনেই (Code of Criminal Procedure, 1898এর সেকশন ৫৯) যে একজন সাধারণ নাগরিক দুষ্কৃতিকারীদের গ্রেফতার করার অধিকার রাখেন, তা জনগণকে জানিয়ে দিন। [xix]

জামায়াত-ই-ইসলামীকে একটি জঙ্গি সংগঠন হিসেবে নিষিদ্ধ করুন। সুপ্রিম কোর্টের মাননীয় প্রধান বিচারপতিকে অনুরোধ করব, শুধুমাত্র আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল থেকে আসা আপিলের শুনানির জন্য আপিল বিভাগে আলাদা বেঞ্চ গঠন করুন। সংবিধানের আর্টিকেল ১০৭ (৩) সেই ক্ষমতা আপনাকে দিয়েছে। [xx] জঙ্গিদের হামলায় আক্রান্ত আলোকিতজনদের মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি করে ফেলুন। আপনি জানেন, এই আক্রমণ ও হত্যাকাণ্ডগুলো একাত্তরের বুদ্ধিজীবী হত্যার ধারাবাহিকতা মাত্র। আমরা আপনাদের সঙ্গে আছি।

তথাকথিত সুশীল সমাজ আর বিভ্রান্ত বাম দলগুলোকে বলব, আওয়ামী লীগ-বিএনপি 'মুদ্রার এ পিঠ ও পিঠ' বলে আপনারা নিজেদের হাসির পাত্র হিসেবে উপস্থাপন করছেন জনগণের সামনে। যে কারণে, এত মিষ্টি মিষ্টি কথা বললেও জনগণ আপনাদের উপর আস্থা রাখতে পারছে না। মুক্তিযুদ্ধপন্থী ব্যাপক রাজনৈতিক ঐক্য গড়ুন তুলুন আওয়ামী লীগ ও সমমনা দলগুলো সঙ্গে নিয়ে। ইসলামি জঙ্গিবাদ জয়ী হলে তো বাংলাদেশই আর থাকবে না, তখন রাজনীতি করবেন কোথায়? বৃহত্তর ঐক্যের পথে না হেঁটে একা একা শক্তি সঞ্চয় করে আপনারা একদিন স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়বেন, পাগলেও তা বিশ্বাস করবে না। একই সঙ্গে প্রধান রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে আওয়ামী লীগও তার গুরুদায়িত্ব বুঝতে সক্ষম হয়ে আপোষহীন রাজনীতির পথে হাঁটবে।

অভিজিৎ রায় একজন নাস্তিক ছিলেন। শুধু নাস্তিক হওয়ার কারণে তাঁকে হত্যা করা হয়নি। ভুলে গেলে চলবে না, তিনি হিন্দু পরিবারের ছেলে ছিলেন। আমরা, সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানরা সংখ্যালঘু হিন্দুদের প্রতি কেমন ব্যবহার করি তা পাঠকরা জানেন। ছেলের মৃত্যুর পর অভিজিতের বৃদ্ধ পিতা অধ্যাপক অজয় রায়কে দুর্বৃত্তরা ফোনে হুমকি দেয়। তিনি জবাব দেন, "তোরা আমার ছেলেকে খুন করেছিস; কিন্তু ছেলের আদর্শ ও সৃষ্টি কেড়ে নিতে পারিসনি।"

জীবনের শেষ প্রান্তে এসে হিন্দু পরিবারে জন্ম নেওয়া একজন ব্যক্তি যদি এমন বিরূপ পরিস্থিতিতেও আপোষহীন হতে পারেন, মুক্তিযুদ্ধপন্থী দলগুলো পারবে না কেন?

স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের একেবারে শেষ মুহূর্তে জীবন হারালেন জাসদ-কর্মী ডাক্তার মিলন। তাঁর স্মৃতিরক্ষার্থে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে টিএসসির উল্টোপাশে একটি স্মৃতিস্তম্ভ গড়ে তোলা হয়। কিন্তু কী অদ্ভুত ব্যাপার! আমাদের প্রজন্মের ক'জন শহীদ ডাক্তার মিলনকে চেনে?

ছোটবেলায় বাবা যখন মিলন স্মৃতিস্তম্ভের পাশ দিয়ে গাড়ি চালিয়ে কোথাও যেতেন, ঐ স্তম্ভের উপর কাউকে বসে থাকতে দেখলেই তিনি গাড়ি থামিয়ে দিতেন। বসে থাকা ছাত্রছাত্রীদের অনুরোধ করতেন স্তম্ভটির পবিত্রতা রক্ষা করতে। আমার বয়স তখন খুবই অল্প, এগার-বার হবে। আমি কাঁচুমাচু হয়ে গাড়িতে চুপচাপ বসে থাকতাম। ভাবতাম, কী দরকার এ সব ঝামেলা করার। মুক্তিযুদ্ধপন্থী প্রধান দলগুলোর রাজনৈতিক কর্মসূচি থাকলে, মিলনকে আমরা এত সহজে ভুলে যেতাম না।

প্রশ্ন হচ্ছে, অভিজিৎ রায়কে আমরা একইভাবে হারিয়ে যেতে দেব কি? সময়ই বলে দেবে, আমরা আমাদের দায়িত্বপালনে সফল হয়েছি কিনা।

এম সানজীব হোসেন: পিএইচ-ডি গবেষক।

তথ্যসূত্র:

[i]

[ii]

[iii]

[iv]

[v]

[vi]

[vii]

[viii]

[ix]

[x]

[xi]

[xii]

[xiii]

[xiv]

[xv]

[xvi]

[xvii]

Shyamali Ghosh, The Awami League, 1949-1971 (Academic Publishers, 1990)

মনিরুল ইসলাম, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও সমাজতন্ত্র (জ্যা পাবলিকেশনস, পরিবেশক: পাঠক সমাবেশ,

কাজী আরেফ আহমেদ, বাঙালীর জাতীয় রাষ্ট্র (অঙ্কুর প্রকাশনী)

[xviii]

[xix]

[xx]