‘আশ্বাস’ আর ‘আস্থা’ শব্দগুচ্ছে আটকে থাকা সফর

সেলিম খান
Published : 22 Feb 2015, 12:12 PM
Updated : 22 Feb 2015, 12:12 PM

ভোটের রাজনীতিটাই করে গেলেন পশ্চিমবঙ্গের মূখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আমন্ত্রণে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের আয়োজনে অংশ নিতে এবার ঢাকায় আসেন মমতা। সঙ্গে নিয়ে আসেন নিজ দেশের সংস্কৃতি জগতের, বিশেষ করে চলচ্চিত্র শিল্পের সঙ্গে জড়িত নামিদামি বেশ কজনকে।

এঁদের মধ্যে যৌথ কাজের সুবাদে গৌতম ঘোষের সঙ্গে বাংলাদেশের মানুষের সম্পর্ক অনেকটাই পুরনো। এসেছিলেন রূপালী পর্দার নায়ক প্রসেনজিৎ, দীপক কুমার দেব আর মুনমুন সেন। এই তিনজনকে বাংলাদেশের মানুষ জানেন ও চেনেন সিনেমার মাধ্যমে। আসেন গায়ক নচিকেতা। পশ্চিমবঙ্গের পর্যটন মন্ত্রী ও চলচ্চিত্র নির্মাতা ব্রাত্য বসু আর চলচ্চিত্র নির্মাতা প্রতিষ্ঠান মোহন্ত ফিল্মের কর্ণধার। ছিলেন কবি সুবোধ সরকার। এসেছিলেন আমাদের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ছেলে অনিরুদ্ধ কাজীর স্ত্রী কল্যাণী কাজীও।

শুক্রবার ঢাকায় এসেই মমতা প্রথম কথা বলেন, বাংলাদেশের সংস্কৃতি জগতের বিশিষ্ট সব মানুষদের সঙ্গে। 'বৈঠকি বাংলা' নামের এই আড্ডায় ছিলেন মমতার সঙ্গে আসা সংস্কৃতি জগতের মানুষজন। একইভাবে বাংলাদেশের সংস্কৃতি মন্ত্রীর নেতৃত্বে আড্ডায় অংশ নেন আমাদের সংস্কৃতির এগিয়ে থাকা মানুষেরা। যে আয়োজনে মমতার দিক থেকে প্রধানত দুই বাংলার সাংস্কৃতিক আদান-প্রদান, বিশেষ করে যৌথ উদ্যোগে চলচ্চিত্র নির্মাণ ও যৌথ সাংস্কৃতিক উৎসব অনুষ্ঠানের মতো বিষয়গুলোই প্রাধান্য পায়। বিষয়গুলোর বাস্তবায়ন সম্ভাবনায় মমতা এতটাই আগ্রাসী ছিলেন যে, তাৎক্ষণিক তিনি একটি যৌথ কমিটিও করার ঘোষণা দেন, যাতে নিজ দেশের তিনজন প্রতিনিধির নামও জানিয়ে দেন তিনি।

তবে বাংলাদেশের দিক থেকে সংশ্লিষ্ট সব ছাপিয়ে সামনে চলে আসে অভিন্ন নদীর পানি বণ্টন সমস্যা ও দুই দেশের মধ্যকার ছিটমহল সমস্যা সমাধানে স্থল সীমান্ত চুক্তি। যা কিনা আজ থেকে চার বছর আগে মমতারই শেষ মুহূর্তের বিরোধিতায় 'হয়েও হয়ে ওঠেনি'। তাই এবারে বিশেষভাবে তিস্তা নদীর পানি পাওয়া, না-পাওয়া নিয়ে মমতার স্পষ্ট অবস্থান জানতে উন্মুখ ছিলেন সবাই। সে ক্ষেত্রে মমতাই আগ বাড়িয়ে জানিয়ে দেন তাঁর অবস্থান। বলেন, ''আমার ওপর 'আস্থা' রাখুন।''

সে সঙ্গে ভোটের রাজনীতিতে অত্যন্ত কৌশলী মমতা এ কথাও জানিয়ে দেন, ''তিস্তা নিয়ে দু দেশেরই কিছু সমস্যা রয়েছে। যেগুলো আলাপ আলোচনার মাধ্যমেই সমাধান করতে হবে। জল দু' দেশেরই দরকার, জল শুকিয়ে গেছে…. জল তো তৈরি করতে হবে।''

জানালেন বিষয়টি নিয়ে কথা বলবেন, তাঁর ভাষায়, 'হাসিনাজি'র সঙ্গে।

এরপর রাষ্ট্রিক পর্যায়ে মমতার সফর শুরু হয় সন্ধ্যায় রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের সঙ্গে দেখা করবার মধ্য দিয়ে। এই দেখা নিছকই সৌজন্য হলেও তাদের কথাবার্তায়ও জায়গা পায় দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের জনবান্ধব বিস্তার নিয়ে। জায়গা পায় বাংলাদেশের সরকার ও মানুষের কাছে এই মুহূর্তের সমস্যা তিস্তা নদীর পানি ভাগাভাগি আর স্থল সীমান্ত চুক্তি। রাষ্ট্রপতিকেও মমতা জানান, দুই দেশের মধ্যে যেসব সমস্যা এখনও রয়ে গেছে, তার মূলে রয়েছে, তাঁর ভাষায়, 'ভুল বোঝাবুঝি'। যা দূর করতে তিনি সেতু হিসেবে কাজ করবেন জানিয়ে মমতা আবারও বলেন, ''আস্থা রাখুন।''

সফরের দ্বিতীয় দিনে মমতা কথা বলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে। সেখানেও সব কিছু ছাপিয়ে সামনে চলে আসে তিস্তাসহ দুই দেশের মধ্যকার অমীমাংসিত সব ইস্যু। পঁয়তাল্লিশ মিনিটের এই আলোচনা অনুষ্ঠানের প্রথম পনের মিনিট আনুষ্ঠানিক হলেও পরের ত্রিশ মিনিট একান্তে কথা বলেন দুই নেত্রী। এতেও উঠে আসে বিশেষ করে তিস্তা ও স্থল সীমান্ত চুক্তির কথাই। প্রতিবেশি ভারতের, বিশেষভাবে এক সময়ের অবিচ্ছেদ্য অংশ পশ্চিমবঙ্গের প্রতি বাংলাদেশের মানুষের ইমোশন এখানে কাজে লাগাতে এতটুকু কার্পণ্য ছিল না মমতার। তিনি বললেন, ''সকল বাধা পেরিয়ে আপনাদের আমন্ত্রণে এসেছি। দুই দেশের মধ্যে বয়ে যাওয়া গঙ্গা ও যমুনা নদীর যেমন বিস্তৃতি, দুই বাংলার মধ্যে সম্পর্কও তেমন সুগভীর ও নিবিড়।''

১৯৭৪ সালের মুজিব-ইন্দিরা স্থল সীমান্ত চুক্তি সম্পর্কে মমতা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে জানান যে, এ নিয়ে সৃষ্ট সব সমস্যার সমাধান করা হয়েছে। লোকসভায় তা জমাও দেওয়া আছে। চলতি মাসের ২৩ তারিখ থেকে শুরু হওয়া লোকসভার অধিবেশনে তা পাস হবে বলে আশা করছেন সেটাও জানালেন। এখানেও মমতা গোটা বিষয়টাকে ব্র্যাকেটবন্দী করেছেন 'আশা' শব্দটি দিয়ে।

প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে মমতার দিক থেকে একটি বড় অনুযোগ ছিল প্রয়োজনমতো ইলিশ না-পাওয়া নিয়ে। জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাফ জানিয়ে দেন, পানি না এলে ইলিশ আসবে কোত্থেকে? তবে এরও চতুর উত্তর দিতে ভুল করেননি মমতা। বলেন, ইলিশ তো পদ্মার, এর সঙ্গে তিস্তার সম্পর্ক কী? তবে বরাবরকার মতো তিস্তা নিয়ে টেনশন করতে নিষেধ করে তিনি প্রধানমন্ত্রীকে বরং আশ্বস্ত করলেন।

বৈঠকশেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, 'আস্থা' রাখতে বললেও এসব সমস্যা সমাধানে, বিশেষ করে তিস্তা প্রশ্নে খোদ শেখ হাসিনাকেও নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দেননি মমতা। উপরন্তু, ঢাকা ছেড়ে যাবার আগে বিমান বন্দরে তিস্তা প্রশ্নে টাইমফ্রেম জানতে চাইলে সাংবাদিকদের ওপর খানিকটা বিরক্তই হন মমতা।

আগেই বলেছি, মমতার এবারের ঢাকা আসা নিছক সাংস্কৃতিক সৌজন্য হলেও একে 'জরুরি' প্রত্যাশা বাস্তবায়নের একটি উপায় হিসেবেই নিয়েছিল বাংলাদেশের মানুষ। কারণ মমতার এই সফরে সব কিছু ছাপিয়ে যে দুটি ইস্যু বারবারই সামনে এসেছে তা হচ্ছে, তিস্তা ও স্থল সীমান্ত চুক্তি। কেননা আজ থেকে চার বছর আগে সমাধানের দ্বারপ্রান্তে এসেও শুধু মমতার আপত্তিতে তার সুরাহা হয়নি। সেটা তিনি করেছিলেন ভোটের রাজনীতি মাথায় রেখেই।

ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে যে ৫৪টি অভিন্ন নদী রয়েছে সেগুলোর মধ্যে তিস্তা অন্যতম। যে নদীর সমতল অংশের ৩১৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের মধ্যে ১১৫ কিলোমিটারই বাংলাদেশে প্রবাহিত। আর বাকিটা উজানের সিকিম ও জলপাইগুড়ির জীবনপ্রবাহ হিসেবে বিবেচিত।

পানিপ্রবাহ স্বাভাবিক থাকায় স্বাধীনতার পর থেকে দীর্ঘদিন অভিন্ন ও আন্তর্জাতিক নদী তিস্তার পানি বণ্টন নিয়ে দুই দেশের মধ্যে তেমন উদ্যোগের প্রয়োজন পড়েনি। কিস্তু নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করতে ১৯৮২ সালে তিস্তার উজানে জলপাইগুড়ির গজালডোবায় ব্যারেজ তৈরি করে ভারত। এছাড়া ডাইভারশন খাল কেটে মহানন্দা নদীতে পানি সরিয়ে নিতে শুরু করে। এ প্রেক্ষিতে ১৯৮৩ সালের জুলাই মাসে তিস্তা নিয়ে অনুষ্ঠিত হয় দু'দেশের প্রথম যৌথ নদী বৈঠক। সিদ্ধান্ত হয়, তিস্তার পানির শতকরা ৩৬ ভাগ পাবে বাংলাদেশ, ৩৯ শতাংশ ভারত। আর নদীতে সংরক্ষিত থাকবে বাকি ২৫ শতাংশ পানি।

এরই মধ্যে তিস্তার পানির ওপর নির্ভর করে উত্তরবঙ্গের কোচবিহার, জলপাইগুড়ি, দার্জিলিং, উত্তর দিনাজপুর এবং মালদহ জেলার ৯ দশমিক ২২ লাখ হেক্টর জমির জন্য সেচ প্রকল্প হাতে নেয় ভারত। অন্যদিকে, বৃহত্তর রংপুর, দিনাজপুর ও বগুড়া জেলার ৬ দশমিক ৩২ লাখ হেক্টর জমি সেচের আওতায় আনতে ১৯৯০ সালে বাংলাদেশ তৈরি করে তিস্তা ব্যারাজ। শুরুতে এই ব্যারাজের কাছে তিস্তার সর্বাধিক গড় প্রবাহ ছিল ২ লাখ ৮০ হাজার কিউসেক এবং সর্বনিম্ন ১০ হাজার। অথচ উজানে ক্রমবর্ধমান হারে পানি সরিয়ে নেওয়ায় বাংলাদেশে এর প্রবাহ দাঁড়ায় মাত্র এক হাজার কিউসেকে। যা শুকনো সময়ে পাঁচশ কিউসেক হয়ে যায়।

পরিস্থিতি উত্তরণে ২০০৭ সালের সেপ্টেম্বরের যৌথ সভায় তিস্তার পানির ৮০ শতাংশ দু'দেশের মধ্যে সমান অংশে ভাগ করে বাকিটা নদীর জন্য সংরক্ষিত রাখার প্রস্তাব দেয় বাংলাদেশ। কিন্তু বাংলাদেশ 'সমান অংশে পানি পেতে পারে না' জানিয়ে ২০১৪ সালে শুকনো সময়ে তিস্তার পানি প্রবাহ একেবারেই বন্ধ করে দেয় ভারত। এখন সর্বোচ্চ যে হাজার কিউসেক পানি সময় সময়ে আসছে তা মূলত ভারতের গজালডোবা ব্যারাজের ভাটির উপনদী থেকে।

তিস্তা নিয়ে ভারতের এই অবস্থান আসলে নদী-সম্পর্কিত সকল আন্তর্জাতিক আইন ও প্রাসঙ্গিক মামলার রায়ের পরিপন্থী। পানি ভাগাভাগির প্রশ্নে ভারতের একগুঁয়েমি, অনৈতিক ও বেআইনি অবস্থান তিস্তা ও আশপাশের জীবন-জীবিকা করে তুলেছে বিপন্ন। তাই তিস্তার পানি পাওয়ার বিষয়টি এখন সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে বাংলাদেশের কাছে। শুধু তিস্তাই বা বলি কেন, চুক্তি হওয়া সত্ত্বেও গঙ্গার পানির ন্যায্য হিস্যা, স্থল সীমান্ত চুক্তি কিংবা দু'দেশের বাণিজ্যিক ভারসাম্য রক্ষা– কোনো ক্ষেত্রেই কি আমাদের জন্য স্বস্তি পাবার মতো কিছু করেছে ভারত? যার উত্তর হবে, 'নিশ্চয়ই নয়'।

স্থল সীমান্ত নিয়ে সৃষ্ট সমস্যার সমাধান ১৯৭৪ সালে মুজিব-ইন্দিরা চুক্তির মাধ্যমে হয়েই গিয়েছিল। চুক্তি সইয়ের অব্যবহিত পরই তা অনুমোদন করে বাংলাদেশ পার্লামেন্ট। সে মতো ভারত ফেরত পায় বেরুবাড়ি। কিন্তু ভারতের পার্লামেন্ট চুক্তিটি অনুমোদন না করায় বিনিময়ে বাংলাদেশকে আজও ফিরিয়ে দেওয়া হয়নি দহগ্রাম-আঙ্গরপোতা। নির্ধারিত হয়নি দু'দেশের বিরোধপূর্ণ সীমানা। এরই মধ্যে প্রায় চল্লিশ বছরে সমস্যা সমাধানে ভারতের কাছ থেকে বাংলাদেশ পেয়েছে শুধুই 'আশ্বাস' আর 'প্রতিশ্রুতি'র মতো নিছক রাজনৈতিক শব্দগুচ্ছ।

তবে এত সব কিছুর পরও পরিবর্তিত বৈশ্বিক রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে সর্বশেষ বিলটি পার্লামেন্টে অনুমোদনের উদ্যোগ নেয় গেল কংগ্রেস সরকার। কিন্তু সে সময়ের বিরোধী দল বিজেপি, তৃণমূল কংগ্রেস আর আসাম গণপরিষদের জোরালো আপত্তিতে তা হয়ে ওঠেনি। এবারে ঢাকা সফরে এসে একদা বিরোধিতাকারী মমতা বন্দোপাধ্যায় বলছেন, তাঁর দিক থেকে 'সব কিছু' তিনি করে দিয়েছেন। তিনি এ-ও আশা করছেন, পার্লামেন্টের আসছে অধিবেশনে স্থল সীমান্ত চুক্তি-সম্পর্কিত বিলটি পাস হয়ে যাবে।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে, বিল পাস হলেই কি সমস্যার সম্পূর্ণ সমাধান হয়ে যাবে, যেখানে দু'দেশের দিক থেকেই রয়েছে রাজনীতির বাইরের নানাবিধ ওজর-আপত্তির জায়গা? এমনতর রাজনীতি ও রাজনীতির বাইরের ওজর-আপত্তিতেই কমছে না ভারত-বাংলাদেশের মধ্যেকার বাণিজ্যের ভারসাম্য। আমরা যদি গেল ২০১৩-১৪ অর্থবছরের কথাই ধরি, সেখানে দেখতে পাই, এই অর্থ বছরে ভারত থেকে ৫ হাজার ৫শ' ১৩ দশমিক ২০ মিলিয়ন ডলার মূল্যে পণ্য আমদানি করেছে বাংলাদেশ। অথচ ভারতে রফতানির সংখ্যা মাত্র ৪৫৬ দশমিক ৬৩ ডলার। বিপুল এই অসাম্য দূর করতে মমতা বাংলাদেশের বাণিজ্য মন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন, ''মাছ আপনার হাতে, এখন মাথা খাবেন নাকি লেজ খাবেন, তা আপনাকেই ঠিক করতে হবে।''

আসলে তিস্তা বলি কিংবা স্থল সীমান্ত চুক্তি বা বাণিজ্য-ভারসাম্য কমিয়ে আনার কথাই বলি, সব ক্ষেত্রেই যারপরনাই 'ডিপ্লোম্যাটিক' থেকেছেন মমতা। অন্যভাবে বলা যায়, এসবই তাঁর রাজনৈতিক ধাপ্পা– ইংরেজিতে যাকে বলা হয় 'স্টান্ট'। সবটাতেই তিনি বলছেন, ''আমার ওপর আস্থা রাখুন। টেনশন নেবেন না। আমার দিক থেকে কোনো সমস্যা হবে না। আমি দুই দেশের কেন্দ্রের মধ্যে সেতু হিসেবেই কাজ করব।''

বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে তিনি বলেছেন, ''দুই বাংলার সম্পর্ক দেনাপাওনা দিয়ে হয় না। আপনারা আমাকে বোন হিসেবে গ্রহণ করুন। আসুন না হৃদয় এক করি। আপনি সব চাইতে পারেন, আমিও সব দিতে পারি। আবার আমিও সব চাইতে পারি, আপনিও সব দিতে পারেন।''

বর্তমান পুঁজিতান্ত্রিক একমুখী বিশ্ব ব্যবস্থায় 'আনপ্রেডিকটেবিলিটি' বা 'যদি লাইগা যায়' ধরনের ভবিতব্যই যেন বাস্তবানুগ হয়ে উঠেছে। বিশ্বের ৯৯ ভাগ মানুষের সম্পদ মাত্র এক ভাগ মানুষের কাছে কুক্ষিগত। তাই এই বিশ্ব ব্যবস্থার নিয়ন্ত্রক রাজনীতি ও রাজনীতিকরাও হয়ে উঠছেন আদর্শহীন, 'আনকমপ্রোমাইজিং' এবং অনেক বেশি 'আনপ্রেডিকটেবল'। মমতাও এসব গুণ দিয়েই জয় করেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রিত্ব। সে বোধ থেকেই বোধকরি বাংলাদেশও জয় করতে এসেছিলেন।

সেলিম খান: সংবাদকর্মী।