আন্দোলনের আড়ালে আসলে কী

শামীম আহমেদ
Published : 17 Feb 2015, 05:28 AM
Updated : 17 Feb 2015, 05:28 AM

বইমেলা শুরু হলে আমার মনের মধ্যে অন্যরকম আনন্দ হয়। হাজার হাজার মানুষ দলে দলে সোহরাওয়ার্দী প্রাঙ্গনে আসে। কেউ কেউ দল বেঁধে; কেউ বা একা একাই মেলাপ্রাঙ্গণ জুড়ে ঘুরে বেড়ায়। বই দেখে, বই কেনে-– অন্যমনস্কভাবে অর্ধেকটা বই দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়েও পড়ে ফেলে অনেকেই। খুব বেশি ভিড় না হলে প্রকাশক এবং তার বিক্রয় প্রতিনিধিরাও তেমন কিছু মনে করেন না, পাঠকের আগমনেই তারা খুশি। পাঠক আসতে থাকলে বই বিক্রি এমনিতেই বেড়ে যায়।

মেলার প্রথম দিনেই এবার সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গনে গিয়েছি। যেমনটা যাই প্রতিবার। কবি, সাহিত্যিক, কলাম লেখক, ব্লগ স্টারজদের (ব্লগে লিখে জনপ্রিয় হওয়া একটা নতুন প্রজন্ম আছে এখন যাদের আমি পছন্দ করি, কারণ তাদের জন্যেও অনেক নতুন পাঠক আসেন বইমেলায়) সঙ্গে দেখা হয়, কথা হয়, ভালো লাগে। মেলার প্রথম দিনটিতে গেলে পাঠক কিংবা ক্রেতা এবং লেখক এবং প্রকাশকের সংখ্যা থাকে প্রায় সমান সমান। কারণ মেলার প্রথম দিনটিতে লেখক, প্রকাশকদের মাঝে এক ধরনের আবেগ কাজ করে; তারা সবাই একত্রিত হতে চান মেলাপ্রাঙ্গনে।

এবার মেলার প্রথম দিনটি ছিল আরও কাব্যিক। আকাশে ছিল বিশাল একটি চাঁদ, পূর্ণিমার প্রতীক্ষায় কিঞ্চিৎ অপেক্ষমান। মনে হচ্ছিল মেলায় জড়ো হওয়া লেখক, পাঠকের মিলনমেলায় তার অপেক্ষার অবসান হবে। মেলা থেকে বের হবার কিছুক্ষণ আগে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ভেতর থেকে অর্থাৎ মেলা প্রাঙ্গনের ঠিক পেছন দিকে একাধিক ককটেল বিস্ফোরিত হয়। আশেপাশের মানুষ কিছুটা থতমত।

এখানকার মানুষের মনের মিল অনন্ত, তারা বুদ্ধিবৃত্তিক সংশ্লিষ্টতার জন্য একত্রিত হন। তাদের মনের গহীনে এখনও বেদনা জাগে হুমায়ুন আজাদের অকাল প্রয়াণে। তাই ককটেল বিস্ফোরণ মেলা প্রাঙ্গনে অভীষ্ট নয়। আমাদের মতো পুলিশ বাহিনীও কিছুটা থম মেরে থাকে। তারপর পাশে রাখা টুলে বসে ঝিমোতে থাকে আগের মতো।

আমরা ছোটকালে মাঝে মাঝেই দেখতাম গভীর রাতে তীব্র হুইসেলের শব্দ, তারপর টর্চের আলো এবং অবশেষে পুলিশের দৌড়ে চলা ছিঁচকে চোরের পেছন পেছন। এখন ছিঁচকে চোর আর দেখি না, তারা হয়ে উঠেছে জাঁদরেল সন্ত্রাসী, সিঁদকাটার ঘটনাও শুনি না, শুনি পেট্রোল বোমা নিক্ষেপের ঘটনা।

বই মেলায়, বাণিজ্য মেলায়, অফিস-পাড়ায়, বাসার মোড়ের চায়ের দোকানে সবখানেই দেখছি একটি অজানা আতঙ্ক বিরাজ করছে। ফেব্রুয়ারির প্রথম দিকে এসেই শীত হালকা হতে শুরু করেছে, কিন্তু ভারি হতে শুরু করেছে অনিশ্চয়তার বাতায়ন। প্রথমদিকে সরকার সমর্থক বন্ধুদের দেখেছি গত নির্বাচন-পূর্ববর্তী অবস্থার দিকে ইঙ্গিত করে অত্যন্ত দৃঢ়তার সঙ্গে বলতে যে, এ অবস্থার অবসান হতে মোটেও সময় লাগবে না। জনসমর্থন না পেয়ে বিরোধী দল এমন কর্মসূচি থেকে নির্ঘাত সরে আসবে। এখন দেখছি তাদের মধ্যেও খানিকটা হতাশা; তারা ক্ষীণ গলায় ম্রীয়মান অবস্থায় বলছেন, এই অচলাবস্থার অবসান হবে সহসাই। চারদিকে নানা গুজব ডাল-পালা ছড়াচ্ছে। সরকার জরুরি অবস্থার ঘোষণা করতে পারে, সেনাবাহিনী নামাতে পারে, আরও নানা কিছু।

রাত হলেই দেখি আতঙ্ক বাড়ছে বহু গুণে। কারণ সাধারণত রাতের বেলাতেই আগুন লাগানো হচ্ছে বেশি, বাস-ট্রাক পোড়ানোর ঘটনাও ঘটছে এই সময়টাতে। এখন তো মধ্যরাতে নিরাপত্তার কথা ভেবে ভ্রমণরত মানুষও আর নিরাপদ নয়, মাত্র ক'দিন আগেই ভোর সাড়ে ৩ টায় বাসে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হল বাসভর্তি মানুষকে আর পুড়ে কয়লা হয়ে মারা গেলেন ৭ বাসযাত্রী।

গতকাল বিবিসিতে দেখছিলাম 'আইএস'এর সন্ত্রাসীরা জর্দানের এক আটক পাইলটকে একটি খাঁচার মধ্যে ঢুকিয়ে গেসোলিন দিয়ে পুড়িয়ে মেরেছে। তারপর সেই পুড়িয়ে মারার ঘটনার ভিডিও আপলোড করেছে ইউটিউবে। আমাদের একটা বড় গর্বের জায়গা আমরা দেশ হিসেবে অসাম্প্রদায়িক; আমাদের দেশের সবচেয়ে বড় উৎসব পহেলা বৈশাখ; আমাদের রাষ্ট্রব্যবস্থায় সকল ধর্মের মানুষের সমান অধিকার; নারীর জাগরণ আমাদের সার্বিক অর্থনৈতিক এবং সামাজিক উন্নতির মূল পাথেয়। আমাদের আশংকা হওয়া শুরু হয়েছে এই কথা আমরা আর কতদিন ধরে বলতে পারব। আমরা আশাবাদী হতে গিয়েও হতে পারছি না। আমাদের চারপাশে জ্যান্ত মানুষ পুড়ে মরছে প্রতিনিয়ত; অর্থনীতি পঙ্গু করে দেবার অপচেষ্টা হচ্ছে প্রায় সফল; বিরোধী দল দেশের কথা ভুলে গিয়ে নিজের স্বার্থে ক্ষমতায় যাবার দিবা-স্বপনে বিবেকবর্জিত কর্মকাণ্ডে লিপ্ত এবং সাংবিধানিক সরকার ব্যর্থ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে।

এদিকে বেশ কিছু দিন চুপচাপ থাকা সাম্প্রদায়িক শক্তি যারা মুক্তিযুদ্ধে আমাদের বিরুদ্ধাচরণ করেছে তারা আবার নতুন কর্মপন্থা নিয়ে মাঠে নেমেছে। বিরোধী দল শুধুমাত্র প্রেস নোটের মধ্যে দিয়েই তাদের দায়িত্ব সারছে, জনসমর্থনের অভাব তাদের দৃষ্টিগোচর হচ্ছে বলে বোধ হচ্ছে না। বাংলাদেশের মানুষ যে এই মুহূর্তে নির্বাচনের চাইতে শান্তি আর উন্নতির জন্যই বেশি তৃষ্ণার্ত তা তাদের বোঝানোর ক্ষমতা আমাদের তো নেই-ই, ঈশ্বরের আছে কিনা বোঝা দুঃসাধ্য।

এদিকে ক্ষমতায় থাকার লোভে সরকারের মৌলবাদী সম্প্রদায়ের আপোষের গুঞ্জন শোনা যায় ফিসফাস, সাম্প্রতিক সহিংসতা রোধে সরকারের ব্যর্থতায় সেই গুঞ্জন অনেকটাই সত্য মনে হয় সাধারণ মানুষের। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রক্রিয়া কেন যেন ঝুলে গেছে; গণহত্যা, ধর্ষণে নেতৃত্ব দেওয়া রাজাকারদের ফাঁসিই কেন হয়ে গেছে যাবজ্জীবন; কেন আমাদের ট্যাক্সের পয়সা তারা রাজার হালে বেঁচে থাকবে বাকি জীবন– এইসব প্রশ্নের উত্তরের সঙ্গে সহিংসতার প্রকটতার একটা সম্পর্ক আছে। কেন একটি সন্ত্রাসী দলের রাজনৈতিক নিবন্ধন বন্ধ হয়নি এখনও, এই প্রশ্নের দায়ভারও যাবে সরকারের কাঁধে। মাননীয় সরকার অবশ্য চাইলে আদালতের কথা বলে তার দায়ভার এড়াতে পারে, কিন্তু জনতার আদালতে সেই উত্তর কতটা গ্রহণযোগ্য হবে তা প্রশ্নসাপেক্ষ।

আন্দোলনের নামে চলমান এই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের পরিণতি হিসেবে দুটো বিষয় আজকে বিশেষভাবে তুলে ধরতে চাই। একটি হচ্ছে অর্থনীতি, আরেকটি শিক্ষাব্যবস্থা। বাংলাদেশের গত প্রায় এক দশকের অর্থনৈতিক উত্থান বিস্ময়কর। এর বেশিরভাগই হয়েছে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে। নানারকম সমালোচনা থাকা সত্ত্বেও, আন্দোলনের নামে কিছু সংগঠনের ব্যাপক সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড মোকাবেলা করেও সরকার জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৬এর ওপর রেখেছে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের দিক দিয়ে প্রথমবারের মতো এই অঞ্চলে আমরা ভারতের পর দ্বিতীয় অবস্থানে উঠে এসেছি, সম্পূর্ণ নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতুর মতো বড় উন্নয়ন কর্মকাণ্ড আমরা নিজেরাই শুরু করেছি, কৃষিক্ষেত্রে হয়েছি স্বয়ংসম্পূর্ণ।

'আইএমএফ'এর একটি রিপোর্ট থেকে দেখা যায়, বর্তমানে জিডিপি প্রবৃদ্ধির দিক দিয়ে বাংলাদেশের অবস্থান বিশ্বে ৭ম এবং রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা আমলে নিলেও ২০১৯ সালে বাংলাদেশ এই তালিকায় চলে আসবে দ্বিতীয় অবস্থানে। ইরাকের অবস্থান হবে প্রথম; কেননা তাদের অর্থনৈতিক অবস্থান এতই ভঙ্গুর যে অবিশ্বাস্য উন্নতি স্বাভাবিক, কিন্তু স্থিতিশীল অর্থনীতির দেশগুলোর মধ্যে আসলে বাংলাদেশই থাকবে শীর্ষে, ৭ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি নিয়ে।

বর্তমান সময়ে বিরোধী দলগুলোর আন্দোলনে মানুষের সমর্থন না পাবার একটি বড় কারণ, তারা অত্যন্ত কেন্দ্রীভূত নিজেদের স্বার্থ অর্থাৎ ক্ষমতায় যাবার লক্ষ্য নিয়ে। মানুষের সঙ্গে তাদের সংশ্লিষ্টতা নেই বললেই চলে এবং জনগণের সমর্থন আছে এমন বিষয় নিয়ে তাদের কখনওই আন্দোলন করতে দেখা যায় না। ফলশ্রুতিতে সাধারণ মানুষ সরকারের কর্মকাণ্ডে খুশি না হলেও বিরোধী দলের কর্মকাণ্ডে বিরক্ত অনেক বেশি। তাছাড়া অর্থনৈতিক উন্নয়নের ফলে মানুষের সামাজিক এবং আর্থিক অবস্থার উন্নতি হয়েছে বহুলাংশে। তাই তারা স্বার্থ এবং ক্ষমতায় আরোহণকেন্দ্রিক আন্দোলনে আগ্রহ হারিয়েছে। ইদানিং দুটি শীর্ষস্থানীয় ইংরেজি পত্রিকার জরিপে তাই দেখা গেছে বর্তমান সরকারের জনপ্রিয়তা ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের পর বেড়েছে বৈ কমেনি! তাহলে এই আন্দোলনের নামে সন্ত্রাস কেন চলছে।

উত্তরটি খুব সোজা। একটি পক্ষ বাংলাদেশকে অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী অবস্থানে দেখতে চায় না। তারা চায় আন্দোলনের নামে আমাদের অর্থনীতি পঙ্গু করে দিতে। তাদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে আইএস জঙ্গিদের কর্মকাণ্ড দেখে তাদের উদ্দেশ্য সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা পাওয়া যায়।

এই পক্ষই আবার সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের নামে আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা পঙ্গু করতে চাইছে। তাদের বোমা হামলা, পেট্রোল বোমা নিক্ষেপের কারণে এসএসসি পরীক্ষা ভণ্ডুল হচ্ছে; স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকছে; শিক্ষা ব্যবস্থা ধসে পড়ছে। মৌলবাদী, সাম্প্রদায়িক শক্তির রোষ-ক্ষোভের একটি বড় টার্গেট বরাবরই ছিল শিক্ষাব্যবস্থা। কারণ শিক্ষিত মানুষ তাদের ভণ্ডামি ধরে ফেলে সহজে এবং সে ক্ষেত্রে তারা মানুষের নিষ্পাপ ধর্মবিশ্বাস পুঁজি করে আর ধর্ম ব্যবসায়ে লিপ্ত হতে পারে না। এই শক্তি ১৯৭১এ আমাদেরকে স্বাধীন হতে দিতে চায়নি; এরাই এখন আবার আমাদের অর্থনীতি এবং শিক্ষাব্যবস্থা ধ্বংস করে দিয়ে বাংলাদেশকে পাকিস্তানের মতো একটা ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করে নিজেদের বাজার অর্থনীতির শিকার করতে চায় ভ্রান্ত ধর্মবিশ্বাস এবং মৌলবাদী ধর্মান্ধতা দিয়ে।

আফসোসের ব্যাপার, বিএনপি বাংলাদেশের একটি অন্যতম জনপ্রিয় রাজনৈতিক দল হওয়া সত্ত্বেও জামায়াতে ইসলামী নামের একটি আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী সংগঠনের ফাঁদে পা দিয়ে বসে আছে। সরকার এই সন্ত্রাসী সংগঠনটি নিষিদ্ধ করতে ব্যর্থ হয়েছে এবং শাহবাগে আন্দোলন গড়ে না উঠলে কাদের মোল্লার মতো একজন রাজাকারও ফাঁসিতে ঝুলত কিনা তা নিয়ে সন্দেহ আছে!

সার্বিকভাবে বিএনপির অযৌক্তিক রাজনৈতিক আন্দোলন কেন্দ্র করে দেশে সন্ত্রাস প্রাতিষ্ঠানিক রূপ ধারণ করেছে। এর দায় অবশ্যই নিতে হবে বিএনপিকেও। জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ না করে এই সন্ত্রাস মোকাবেলায় ব্যর্থতার দায়ভার নিতে হবে সরকারকেও। আর এই সামগ্রিক পরিস্থিতিতে যে তৃতীয় শক্তির আশংকায় আছে, সাধারণ মানুষ তার লাভের ফল ভোগ করবে শুধুমাত্র জঙ্গি, মৌলবাদীরাই-– এ বিষয়ে সন্দেহ নেই।

নির্বাচন হোক না হোক, বর্তমার অবস্থার অবসানের জন্য সরকার এবং বিরোধী দলগুলোর মধ্যে সংলাপের বিকল্প নেই। কিন্তু সঙ্গে সঙ্গে এও মনে রাখা দরকার যে, এখন পর্যন্ত যত সহিংস কর্মকাণ্ড হয়েছে, যে সংখ্যক মানুষ পুড়ে মরেছে আগুনে, সে ব্যাপারে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দায়িত্ব আইনশৃঙ্খলা বাহিনীরই। সরকারকে এও নিশ্চিত করতে হবে যে, ভবিষ্যতে এমন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড যাতে আন্দোলনের নামে পার না পেয়ে যায়। কারণ আন্দোলনের নামে দেশে যা হচ্ছে তা পরিষ্কার সন্ত্রাস এবং সন্ত্রাস দমনে যত কঠোরই হোক না কেন সরকার, মানুষ তার পাশে থাকবে।

রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা সংলাপ হতে পারে, কিন্তু সন্ত্রাসী সংগঠন এবং যে কোনো সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে 'জিরো টলারেন্স' দেখিয়ে সরকার আবার ফিরিয়ে আনতে পারে সাধারণ মানুষের আস্থা।

শামীম আহমেদ: উন্নয়ন অর্থনীতিবিদ এবং রাজনৈতিক বিশ্লেষক।