লিবিয়ায় হামলা: শেষ কোথায়?

আজিজ হাসান
Published : 22 March 2011, 03:52 PM
Updated : 22 March 2011, 03:52 PM

"এর শেষ কোথায় তা আমার জানা নেই।"- লিবিয়ার ভবিষ্যৎ নিয়ে কথাটি বলেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। প্রশ্নটি এখন গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে সব মহলে। লিবিয়ায় উড্ডয়ন-নিষিদ্ধ এলাকা (নো ফ্লাই জোন) প্রতিষ্ঠা এবং নিরাপত্তা বাহিনীর সহিংসতা থেকে সাধারণ মানুষকে রক্ষায় 'প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ' নেওয়ার অনুমতি দিয়ে ১৭ মার্চ জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে একটি প্রস্তাব পাস হয়। জাতিসংঘের এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে ১৯ মার্চ লিবিয়ায় প্রথম হামলা চালায় ফরাসি যুদ্ধবিমান। পরপরই হামলায় যোগ দেয় যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য। একের পর এক চলতে থাকে বিমান থেকে বোমা নিক্ষেপ এবং ক্ষেপণাস্ত্র হামলা। ফলাফল ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ ও নিহত ৪৮ জন সাধারণ মানুষ। কিছুটা বিরতি। পরদিন রাতে আবারো হামলা-এবার যোগ দেয় ইতালি ও কানাডা। রাজধানী ত্রিপোলিতে লিবিয়ার নেতা কর্নেল মুয়াম্মার গাদ্দাফির বাব আল-আজিজিয়া কম্পাউন্ডে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা, বিধ্বস্ত একটি তিন বা চার তলা ভবন (১৯৮৬ সালেও যুক্তরাষ্ট্রের বোমা হামলার শিকার হয় এ স্থাপনাটি) যদিও পশ্চিমা বাহিনী দাবি করছে তারা কেবল লিবিয়ার বিমান প্রতিরক্ষা স্থাপনায় হামলা চালাচ্ছে নো ফ্লাই জোন কার্যকর করতে। প্রশ্ন ওঠে তবে কি পশ্চিমারা গাদ্দাফিকে হত্যার জন্য হামলা চালিয়েছিলো?

উত্তর প্রস্তুত-তবে বক্তব্যে কৌশলের অভাব নেই। যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস অ্যাডমিরাল বিল গোর্টনি বলেন, "এ বিষয়টি আমি নিশ্চিত করে বলতে পারি, গাদ্দাফি আমাদের হামলার লক্ষ্যের তালিকায় নেই। তবে হামলা চালানোর সময় তিনি যদি কোনো বিমান প্রতিরক্ষা স্থাপনা পরিদর্শন করেন তাহলে সেখানে তার অবস্থান সম্পর্কে আমরা নাও জানতে পারি। এখন আমরা তার বাসভবনে হামলা করছি না।" এদিক থেকে কমতি নেই সভ্য জাতি ফরাসিদের বাক পটুতার। ফ্রান্সের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ল্যরাঁ তেসেইর বলেন, "লিবিয়ায় হামলার লক্ষ্য বেসামরিক মানুষকে রক্ষা করা"। গাদ্দাফি হামলার লক্ষ্য ছিলেন না-এমনকি তার সঠিক অবস্থান জানা গেলেও তাকে গুলি করা হবে না। আর যুক্তরাজ্য জাতিসংঘ সিদ্ধান্ত অক্ষরে অক্ষরে পালনে প্রস্তুত। গাদ্দাফির ওপর হামলার অনুমতি জাতিসংঘ দেয়নি। তাই তার ওপর হামলার প্রশ্নই আসে না। যুক্তরাজ্যের সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান স্যার ডেভিড রিচার্ডস বলেন," গাদ্দাফি 'সত্যিকার অর্থে' হামলার লক্ষ্য ছিলেন না। জাতিসংঘ সিদ্ধান্তে তার ওপর হামলার অনুমোদন নেই।"-তবে আমরা জানি না গাদ্দাফির কী অবস্থা বা কী পরিণতি তার জন্য অপেক্ষা করছে। যেমনটি বুঝতে পারেনি আরব লীগের প্রধান আমর মুসা। লীগের বৈঠক করে তিনি আগ বাড়িয়ে জাতিসংঘের প্রতি আহ্বান জানান লিবিয়ায় নো ফ্লাই জোন ঘোষণা করতে। কিন্তু ঘোষিত নো ফ্লাই জোন বাস্তবায়নের সেনারা ধ্বংসযজ্ঞ চালানো শুরু করার প্রথম প্রহরেই বোধোদয় ঘটে তার। শুরু করেন কান্নাকাটি-আমরা তো লিবিয়ায় সাধারণ মানুষকে রক্ষা করতে চেয়েছিলাম, কিন্তু এখন যে হচ্ছে উল্টোটা। ঘুম ভাঙলো আরো দুটি প্রভাবশালী দেশের কর্তা ব্যক্তিদের। সাবেক ও বর্তমান কমিউনিস্ট শাসিত রাশিয়া ও চীন হামলার পরের দিনই উদ্বেগ প্রকাশ করলো। দ্বিতীয় দফা হামলার পর রাশিয়ার নেতা ভ­াদিমির পুতিন বলে দিলেন- লিবিয়ায় পশ্চিমাদের হামলা মূলত মধ্যযুগের ধর্মযুদ্ধ। আর চীন অভিযোগ করলো, লিবিয়ায় হামলা করে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্র দেশগুলো আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন করেছে। অথচ নিরাপত্তা পরিষদে এ বিষয়ে ভোটদানে বিরত থাকলেও ভেটো দেয়নি ওই ক্ষমতাধর রাষ্ট্র চীন ও রাশিয়া। সোমবার রাতেও যথারীতি বিমান ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চলেছে লিবিয়ায়- অনেক সাধারণ মানুষ নিহত হয়েছে বলে দাবি করেছে লিবিয়া সরকার। এগুলো সবই নাটকের ক্লাইম্যক্স-বেশিরভাগ মানুষেরই জানা। যে ঘটনা প্রবাহ লিবিয়াকে এ পরিস্থিতিতে নিয়ে এসেছে সেদিকে তাকালে আমরা দেখতে পাবো-

ফেব্র"য়ারি ১৫/১৬; মানবাধিকারকর্মী ফেথি তারবেলকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে পূর্বাঞ্চলীয় শহর বেনাগাজিতে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ হয়। লিবিয়ায় রাজবন্দিদের মুক্তি নিয়ে কাজ করতেন তারবেল।

ফেব্র"য়ারি ১৭; 'ক্ষোভের দিন' নাম দিয়ে এদিন বিক্ষোভে নামে জনতা। বিক্ষোভকারীদের ওপর নিরাপত্তা বাহিনী চালায় দমনাভিযান। এরপর টানা তিন-চার দিন বিক্ষোভকারীদের ওপর মেশিনগান, গানশিপ ও স্নাইপার দিয়ে গুলি চালায় নিরাপত্তা বাহিনী। সে সময় সহযোদ্ধাদের লাশ কবর দিতে গিয়েও নিজে লাশ হন অনেক গণতন্ত্রকামী মানুষ। আতঙ্কিত প্রবাসীরা লিবিয়া ছেড়ে পালাতে শুরু করে।

ফেব্র"য়ারি ২০: রাজধানী ত্রিপোলিসহ দেশের অনেক জায়গায় সরকার পতনের দাবিতে বিক্ষোভ হয়। বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে সরকারসমর্থক ও নিরাপত্তা বাহিনীর সহিংসতায় অনেক হতাহত হয়।

ফেব্র"য়ারি ২১: সাধারণ মানুষের ওপর নিরাপত্তা বাহিনীর চরম সহিংসতার প্রতিবাদে জাতিসংঘে লিবিয়ার রাষ্ট্রদূত গাদ্দাফি সরকারের পক্ষ ত্যাগ করে সরকার পতনের আন্দোলনে যোগ দেওয়ার জন্য নিরাপত্তা বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানান।

এ সময় আরব লীগ, ভারত, বাংলাদেশসহ বিশ্বের আরো বেশ কয়েকটি দেশে নিয়োজিত লিবিয়ার অনেক কূটনীতিক পদত্যাগ করেন বা গাদ্দাফির পক্ষ ত্যাগ করেন।

ফেব্র"য়ারি ২২: ক্ষমতা থেকে সরে দাঁড়ানো নয় প্রয়োজনে লিবিয়ায় শহীদ হওয়ার ঘোষণা দেন গাদ্দাফি। পূর্বাঞ্চলে বিদ্রোহ করা নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের ধ্বংস করার ঘোষণা দেন তিনি।

ফেব্র"য়ারি ২৪: বিদ্রোহী বাহিনী মিসরাতা শহরের নিয়ন্ত্রণ নেয়।

ফেব্র"য়ারি ২৬: জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ গাদ্দাফি ও তার পরিবারের সদস্যদের ওপর কয়েকটি নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতকে গাদ্দাফির মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ খতিয়ে দেখার আহ্বান জানায়।

ফেব্র"য়ারি ২৮: লিবিয়ার ওপর অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা এবং গাদ্দাফি ও তার সরকারের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞাসহ বেশ কয়েকটি অবরোধ আরোপ করে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। গাদ্দাফি, তার পরিবার ও সরকারের ওই সব দেশে থাকা সব সম্পদ জব্দ করে ইইউ।

মার্চ ১: বিক্ষোভকারীদের ওপর নিরাপত্তা বাহিনীর সহিংসতার অপরাধে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ সর্বসম্মতভাবে জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিল থেকে লিবিয়ার সদস্যপদ বাতিল করে।

মার্চ ৫: বেনগাজিতে লিবিয়ান ন্যাশনাল কাউন্সিল গঠিত হয়। বিদ্রোহীদের কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে ওই কাউন্সিল।

মার্চ ৯: বিক্ষোভ ও বিদ্রোহের পিছনে আল-কায়েদার হাত রয়েছে-অভিযোগ করেন গাদ্দাফি।

মার্চ ১০: ব্রেগা, জাওইয়াসহ পূর্বাঞ্চলীয় বিভিন্ন শহরে বিদ্রোহীদের হটাতে বিমান হামলা চালায় নিরাপত্তা বাহিনী।

এদিন প্রথম দেশ হিসেবে ফ্রান্স লিবিয়ান ন্যাশনাল কাউন্সিলকে লিবিয়ার বৈধ কর্তৃপক্ষ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।

মার্চ ১১: ফ্রান্সের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক বন্ধ করে লিবিয়া।

মার্চ ১২: লিবিয়ায় নো ফ্লাই জোন ঘোষণার জন্য জাতিসংঘের প্রতি আহ্বান জানায় আরব লীগ।

মার্চ ১৬: বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে অভিযানের অংশ হিসেবে বেনগাজির কাছাকাছি পৌঁছায় নিরাপত্তা বাহিনী। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সব শেষ হবে-এ ঘোষণা দেয় গাদ্দাফির ছেলে সাইফ আল-ইসলাম।

মার্চ ১৭: জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে লিবিয়ায় উড্ডয়ন-নিষিদ্ধ এলাকা (নো ফ্লাই জোন) প্রতিষ্ঠা এবং নিরাপত্তা বাহিনীর সহিংসতা থেকে সাধারণ মানুষকে রক্ষায় 'প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ' নেওয়ার অনুমতি দিয়ে প্রস্তাব পাস হয়।

মার্চ ১৮: অস্ত্রবিরতির ঘোষণা দেয় লিবিয়া।

মার্চ ১৯: লিবিয়ায় হামলা চালায় পশ্চিমা বাহিনী।
এদিন রাতে দ্বিতীয় দফা অস্ত্রবিরতির ঘোষণা দেয় লিবিয়ার সেনাবাহিনী।
মার্চ ২০: দীর্ঘমেয়াদে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন গাদ্দাফি। গাদ্দাফির ১০ লাখ রাজনৈতিক সমর্থকের হাতে অস্ত্র তুলে দেয় লিবিয়া সরকার। পশ্চিমা দেশগুলোর বিমান ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলার মধ্যে গাদ্দাফিকে রক্ষায় মানবপ্রাচীর গড়ে তোলে সমর্থকরা।

এ পরিস্থিতিতে লিবিয়ায় চলমান রয়েছে পশ্চিমা বাহিনীর যৌথ হামলা। এ হামলা ও রক্তক্ষয় কি এড়ানো সম্ভব ছিলো না? সেজন্য কূটনৈতিক তৎপরতা কি যথেষ্ট ছিলো? লিবিয়ায় প্রবল বিক্ষোভ ও বিদ্রোহের মধ্যে ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট হুগো শ্যাভেজ সংকট মোকাবেলায় সরকার ও বিদ্রোহীদের মধ্যে সমঝোতার জন্য একটি মধ্যস্ততার জন্য বিশ্ব নেতাদের প্রতি আহ্বান জানান। কিন্তু পশ্চিমাদের বাহ্বা পাওয়া বিদ্রোহী বাহিনীর নেতাদের সঙ্গে সঙ্গে পশ্চিমা শক্তিগুলোও সে প্রস্তাবকে নাকচ করলেন বা তাতে সাড়া দিলেন না। গাদ্দাফির জাতীয় সংলাপের আহ্বানও হলো উপেক্ষিত। কারণ লিবিয়ায় হামলা অনিবার্য-অন্যভাবে সংকট সমাধান হলে তো মানবতার জয়গান গেয়ে বেড়ানো এসব দেশের কর্তৃত্ব থাকে না, পরিপুষ্ট হয় না নিজের স্বার্থ। শেষ পর্যন্ত হামলাও হলো-এখন কী? গাদ্দাফিকে হত্যার অনুমোদন দেয়নি জাতিসংঘ। পদাতিক বাহিনী নিয়োজিত করারও সুযোগ নেই মার্কিনীদের। তাহলে কি আকাশে যৌথবাহিনী আর স্থলে বিদ্রোহী বাহিনীর অভিযানে শেষ হবে গাদ্দাফি ও তার রাজত্ব? তাও না হয় হলো-তারপরে? পশ্চিমা বিমান ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ধ্বংস হবে লিবিয়ার বিমান প্রতিরক্ষাসহ কিছু সামরিক স্থাপনা সাজোয়া যান। কিন্তু বিশাল সেনাবাহিনীর সদস্যদের কী করা হবে? যে ১০ লাখ মানুষের হাতে সরকার অস্ত্র তুলে দিয়েছে তারা কী করবে? একটি দীর্ঘমেয়াদি যুদ্ধের মধ্যে যাওয়া ছাড়া আর কোনো রাস্তা কি খোলা আছে লিবিয়াবাসীর? আরো কিছু বিষয়ও বিবেচনার দাবি রাখে, আফগানিস্তানে সোভিয়েত বাহিনীকে হটাতে তালেবানকে অস্ত্র ও সব ধরনের রসদ সরবরাহ করেছিলো যুক্তরাষ্ট্র। পরবর্তীতে যুক্তরাষ্ট্রের পরিত্যক্ত আফগানিস্তানে ইসলামি জিহাদিরা পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সরাসরি মদদে হৃষ্টপুষ্ট হয়ে সরাসরি হামলা চালায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রাণকেন্দ্র টুইন টাওয়ারে- ইতিহাসে নতুন রূপ পায় ইসলামি সন্ত্রাসবাদ। চেচেন বিদ্রোহীদেরও রসদ যুগিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু এখন তারা হয়ে উঠেছে অনেকটা উগ্র ইসলামপন্থী। লিবিয়ায় যেভাবে অস্ত্র যাচ্ছে সাধারণ মানুষের হাতে তাতে হামলায় আপনজন হারানো ওই সব সশস্ত্র মানুষ কি পশ্চিমাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবে না? এসব এখন কেবলই প্রশ্ন। উত্তর জানা নেই হামলার নির্দেশ দাতাদেরও। তারা জানে না এর শেষ কোথায়-হয়তো জানে কিন্তু বলছে না পরিস্থিতির অজুহাতে সেগুলোকে জায়েজ করার অপেক্ষায়। যেমনটি তারা করেছে-লিবিয়ায় নো ফ্লাই জোন কার্যকর করার পাশাপাশি ব্যাপক বিমান ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানোর বৈধতা আদায়ের মাধ্যমে। সে যাই হোক না জানার বিষয়টিই আতঙ্কিত করে তুলছে শান্তিপ্রিয় মানুষদের। হামলার দুই দিন পার হওয়ার পরেও মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা বলেন, এর শেষ কোথায় তা আমার জানা নেই।