মহাত্মা গান্ধীর ছিলেন মতিলাল কোঠারি, বঙ্গবন্ধুর কে

মহিউদ্দিন আহমদ
Published : 27 March 2019, 07:22 AM
Updated : 10 Nov 2014, 06:52 PM

মহাত্মা গান্ধীর জীবনীর উপর দুনিয়াজোড়া খ্যাতিমান সিনেমা পরিচালক রিচার্ড অ্যাটেনবরো নির্মিত 'গান্ধী' ছবিটি ১৯৮২ সালের ৩ ডিসেম্বর লন্ডনে মুক্তি পেলে, ছবিটির প্রথম প্রদর্শনীতে উপস্থিত ছিলেন ব্রিটেনের প্রিন্স চার্লস এবং তাঁর তখনকার স্ত্রী প্রয়াত প্রিন্সেস ডায়না। দিল্লিতে ৩০ নভেম্বর এই ছবির উদ্বোধনী প্রদর্শনীতে উপস্থিত ছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী। নিউ ইয়র্কের প্রথম প্রদর্শনীতেও বিশিষ্ট এমন কেউ উপস্থিত ছিলেন, কিন্তু এখন তাঁর নামটি মনে করতে পারছি না। রিচার্ড অ্যাটেনবরো গত ২৪ আগস্ট নব্বই বছর বয়সে মারা গিয়েছেন।

'গান্ধী' ছবিটির জন্য অ্যাটেনবরো ১৯৮৩তে ৫৫তম অস্কার আয়োজনে সর্বশ্রেষ্ঠ পরিচালকের পুরস্কারটি জিতে নেন। 'গান্ধী'র নাম ভূমিকায় অভিনয় করে বেন কিংসলে পেয়েছিলেন সেরা অভিনেতার পুরস্কার। বস্তুত ছবিটি ১১টি শ্রেণিতে মনোনয়ন পেয়ে পরে ৮টিতে অস্কার পেয়েছিল। স্পষ্ট মনে আছে, জেদ্দায় অস্কার ঘোষণার আগের কয়েক দিন খুব টেনশনে ছিলাম, ছবিটি ক'টি পুরস্কার পাবে এই চিন্তায়।

ছবিটি রিলিজ হওয়ার পরই জেদ্দায় ভিডিও ক্যাসেট জোগাড় করে 'ভিসিআর'এ বাসায় বসে সকলকে নিয়ে দেখেছিলাম। দেখে মুগ্ধ হয়েছিলাম প্রত্যাশিতভাবেই। মহাত্মা গান্ধীর প্রতি আমার বিশেষ দুর্বলতার একটি প্রধান কারণ, ১৯৭৩-৭৫এ দিল্লিতে আমাদের বাংলাদেশ হাইকমিশনে ফার্স্ট সেক্রেটারি হিসেবে কাজ করার সময়, ১৯৪৮ সালের ৩০ জানুয়ারি তাঁকে যে বাড়িতে গুলি করে হত্যা করা হয়, বিড়লাদের সেই বাড়িটি আমাকে প্রায়ই আকর্ষণ করত। আকর্ষণ করত রাজঘাট যেখানে গান্ধীর অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া অনুষ্ঠিত হয়, সে জায়গাটিও। তারপরেও যতবার দিল্লি গিয়েছি, ততবার এই দুই জায়গায় গিয়ে সমৃদ্ধ হতে চেষ্টা করেছি।

আমার শৈশবের প্রথম দিকের যে দুটি স্মৃতি এখনও ভালোই মনে আছে তার একটি হল, তখন শিশু শ্রেণিতে পড়ি, ক্লাসের শিক্ষক সুরেশ ঠাকুর বললেন, 'মহাত্মা গান্ধীকে হত্যা করা হয়েছে, সুতরাং আজ স্কুল ছুটি'। দিনটি কি গান্ধীকে হত্যার পরদিন, ৩১ জানুয়ারি ছিল, নাকি তারও পরদিন তা এত বছর পর এখন মনে নেই। কারণ তখন তো এত দ্রুত খবর পাওয়া যেত না।

'গান্ধী' ছবিটি ১৮৩ মিনিট দৈর্ঘের। শুরু হয় বিড়লা ভবনের লনের দিকে যখন গান্ধী তাঁর দুই তরুণী আত্মীয়া, মনু ও আভার কাঁধে হাত রেখে এগিয়ে আসছিলেন তখন তাকে নাথুরাম গডসের গুলি করার দৃশ্য দিয়ে। তারপর দিল্লির রাজপথ ধরে তাঁর মরদেহ যখন যমুনা নদীর পাড়ের দিকে নিয়ে যাওয়া যাচ্ছিল, তখন তিন লাখ মানুষকে রিচার্ড অ্যাটেনবরো জড়ো করেছিলেন বলে ইন্টারনেটে দেখছি। গিনিস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে ওই সংখ্যাটিকে একটি রেকর্ড বলে উল্লেখ করা হয়েছে। ফিউনারেল প্রসেশনের ধারা বর্ণনায় এক বিদেশি ভাষ্যকার বলতে থাকেন, ''আলবার্ট আইনস্টাইন মহাত্মা গান্ধীর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে বলেছেন, 'ভবিষ্যতে মানুষজন বিশ্বাস করবে না যে রক্ত-মাংসের এমন একজন মানুষ এই ধরাভূমিতে হাঁটাহাঁটি করেছিলেন'।''

আর আইনস্টাইনের বিপরীতে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী উইনস্টন চার্চিল ভারতের স্বাধীনতার আগে তাঁকে বর্ণনা করেছিলেন, 'নেকেড ফকির অব ইন্ডিয়া' বলে!

দুই

হাজারভাবে মহাত্মা গান্ধীকে বর্ণনা করা হয়েছে তাঁর জীবিতাবস্থায় এবং তাঁর মৃত্যুর পর, গত ছেষট্টি বছর ধরে। ধারণা করি, অনাদিকাল পর্যন্ত তাঁকে নিয়ে লেখালেখি, বন্দনা, আলোচনা, সমালোচনা চলতে থাকবে। গান্ধী জীবিতাবস্থায় নোবেল খ্যাতি, পুরস্কার পাননি। এই অস্বীকৃতি নোবেল শান্তি পুরস্কারের বিরুদ্ধে অতি বড় একটি যৌক্তিক অভিযোগ। তাঁকে নোবেল পুরস্কার দেওয়া না হলেও তাঁর অনুসারী, গান্ধীবাদে প্রবল বিশ্বাসীদের নোবেল শান্তি পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে। এই ক্যাটেগরির উজ্বলতম উদাহরণ হচ্ছেন মার্টিন লুথার কিং এবং এই বছরের শান্তি পুরস্কারের দুই বিজয়ীর একজন, ভারতের কৈলাশ সত্যার্থী।

কিন্তু আমাকে অভিভূত করেছে 'গান্ধী' ছবিটির নির্মাণের পেছনে অতিসাধারণ একজন গান্ধীভক্তের নন্দিত ভূমিকা। ছবিটির শুরুতে যখন টাইটেল দেখানো হতে থাকে, তখন এক মিনিটের মধ্যেই ইংরেজিতে এই কথাগুলো ভেসে উঠে পর্দায়:

''ছবিটি এই ৩ জনকে উৎসর্গ করা হল, মতিলাল কোঠারি, আর্ল মাউন্ট ব্যাটেন অব বার্মা এবং পণ্ডিত জওহরলাল নেহেরু।''

জওহরলাল নেহেরুকে আমরা সকলেই চিনি, জানিও; 'আর্ল মাউন্ট ব্যাটেন অব বার্মা' মানে লর্ড লুই মাউন্টব্যাটেন, ব্রিটিশ-শাসিত ভারতের শেষ ব্রিটিশ এবং স্বাধীন ভারতের প্রথম গভর্নর জেনারেল। কিন্তু মতিলাল কোঠারি কে? যাকে রিচার্ড অ্যাটেনবরো মাউন্টব্যাটেন এবং নেহেরুর আগেই, এক নম্বরে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছেন?

জেদ্দাতে ছবিটি প্রথম দেখার পর থেকেই মতিলাল কোঠারি সম্পর্কে জানতে চেষ্টা করে আসছি, কিন্তু তেমন সফল হইনি। রিচার্ড অ্যাটেনবরোর মৃত্যুর পর, ১৪ সেপ্টেম্বর 'হিন্দুস্থান টাইমস'এ প্রকাশিত রামচন্দ্র গুহ নামের এক লেখকের 'দ্য আম আদমী বাহাইন্ড অ্যাটেনবরোস গান্ধী' শিরোনামের এক লেখায় মতিলাল কোঠারি সম্পর্কে বেশ কিছু তথ্য পেলাম।

তিন

মতিলাল কোঠারি লন্ডনে ভারতীয় হাইকমিশনে ছোটখাট একটি পদে কাজ করতেন। ১৯৫০এর দশকের শেষ দিকে তাঁর হার্টে সমস্যা দেখা দেয়। ১৯৬১তে তাঁর অসুস্থতা সত্ত্বেও, মহাত্মা গান্ধীর উপর একটি ছবি নির্মাণের কমিটমেন্ট নিয়ে এগুতে থাকেন। কোঠারি শুরুতেই গান্ধীর জীবনীকার লুই ফিশারের কাছে তাঁর বইটি নিয়ে ছবি নির্মাণের অনুমতি চান। ফিশার কোনো টাকা পয়সা ছাড়াই তাঁকে বইটি ব্যবহারের অনুমতি দেন। ১৯৬২ সালের জুলাইতে কোঠারি রিচার্ড অ্যাটেনবরোকে জিজ্ঞাসা করেন তিনি ছবিটি পরিচালনার দায়িত্ব নেবেন কিনা। ১৯৬৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে অ্যাটেনবরো তাঁর সম্মতি জানান।

তারপর কোঠারির প্রস্তাবেই, অ্যাটেনবরো কথা বলেন মাউন্টব্যাটেনের সঙ্গে। তাঁকে তাঁরা রাজি করান নেহেরুর সঙ্গে কথা বলে তাঁর সম্মতি আদায় করার জন্য। তাঁরা নেহেরুর সম্মতি আদায়েও সফল হন। ১৯৬৪তে নেহেরু হঠাৎ মারা যান। তখন তাঁরা সম্মতি আদায় করেন প্রথমে নেহেরুর উত্তরসূরী লালবাহাদুর শাস্ত্রীর এবং তাঁর মৃত্যুর পর তাঁর উত্তরসূরী ইন্দিরা গান্ধীর। এতসব সাফল্যের পরও অর্থের জোগানটা অ্যাটেনবরোর সমস্যা থেকেই যায়।

ইতোমধ্যে কোঠারি এবং অ্যাটেনবরোর সম্পর্কে কিছুটা ফাটল ধরে। কোঠারি তখন প্রস্তাব দেন দুনিয়ার আরেকজন শ্রেষ্ঠ পরিচালক ডেভিড লিনকে। লিন রাজি হন প্রস্তাবে, কিন্তু ইতোমধ্যে মতিলাল কোঠারি ১৯৭০এ মারা যান হার্ট অ্যাটাকে। লিনও তখন আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন। কিন্তু অ্যাটেনবরোর আগ্রহ নতুন গতি পায় কোঠারির মৃত্যুতে। এই পর্যায়ে তখন পণ্ডিত রবিশংকরও অ্যাটেনবরোকে উৎসাহ দিতে থাকেন। 'গান্ধী' ছবিটির সঙ্গীত পরিচালক হিসেবে তিনিও যুক্ত হন অ্যাটেনবরোর সঙ্গে।

১৯৭৫ সালে ভারতে মিসেস গান্ধী 'ইমার্জেন্সি' জারি করলে ছবিটি নির্মাণের পরিবেশও বাধাগ্রস্ত হয়। তারপর, ১৯৭৭ সালের সাধারণ নির্বাচনে মিসেস গান্ধী তো ক্ষমতাচ্যুত হলেন। ১৯৮০ সালের ২০ নভেম্বর ছবির শুটিং শুরু হয়। ১৫ মিলিয়ন ব্রিটিশ পাউন্ড স্টার্লিং খরচে নির্মিত ছবিটি প্রায় ৬০ মিলিয়ন ডলার আয় করেছে। মনে আছে, ১৯৯৬ সালের ২৩ জুন, আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে শেখ হাসিনা প্রথমবার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করায় তখন দেশের একমাত্র চ্যানেল, বিটিভিতে সপ্তাহের ছবি হিসেবে প্রথম দেখানো হয়েছিল 'গান্ধী' ছবিটি। শাহরিয়ার ইকবাল, বঙ্গবন্ধুর শেষ দিনগুলোতে তাঁর সহকারী এক সচিব, ১৯৯৬ সালে ছিলেন বিটিভির মহাপরিচালক। শেখ হাসিনার ক্ষমতাগ্রহণের কয়েক দিনের মধ্যেই 'গান্ধী' ছবিটি বিটিভিতে দেখানোর অভিযোগে শাহরিয়ার ইকবালকে আক্রমণ করে 'খবর' নামের 'ইনকিলাবী আবর্জনা' ছাপা হয়েছিল। আর এই ছবিটির প্রদর্শনীর কারণে শেখ হাসিনার 'ভারত-তোষণ'ও খুঁজে পেয়েছিল ইনকিলাবী দুর্বৃত্তরা।

ছবিটি সম্পর্কে আমার বড় দুটো অভিযোগের একটি হল, ছবিতে মহাত্মা গান্ধীকে নোয়াখালিতে মোল্লা গোলাম সরোয়ারদের উস্কানিতে সংগঠিত দাঙ্গা দমনের জন্য সেখানে তাঁর প্রায় তিন মাস অবস্থানের কিছৃুই দেখানো হয়নি। অথচ গান্ধীর এই সফর তাঁর দাঙ্গা দমন এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠায় খুব বড় সাফল্যগুলোর একটি ছিল বলে সারা দুনিয়ায় স্বীকৃত।

দ্বিতীয় অভিযোগটি হল, ছবিতে নেহেরু শহীদ সোহরাওয়ার্দীকে কলকাতায় রায়টে মুসলমানদের উস্কানি দেওয়ার জন্য সরাসরি দায়ী করেন। একটি দৃশ্যে দেখা যায়, নেহেরু গান্ধীর অনশন ভাঙাতে সোহরাওয়ার্দীকে গান্ধীর কোলকাতার অনশনস্থলে নিয়ে গেলেন; কিন্তু সোহরাওয়ার্দী একটি হরফও উচ্চরণ করেননি এই দৃশ্যগুলোতে, তাঁকে নেহেরুর পাশে নিরবেই দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়।

আমোদ এবং উৎসাহের সঙ্গে লক্ষ্য করি, সারা দুনিয়ার কতসব দেশে মহাত্মা গান্ধীকে স্মরণ করার কতসব আয়োজন। দুনিয়ার এইসব দেশে তাঁর নামে সড়ক, স্কোয়ার, বাগানের নামকরণ করা হয়েছে। মূর্তি নির্মিত হয়েছে অনেক দেশে। জাতিসংঘ ২০০৭ সালের ১৫ জুন গান্ধীর জন্মদিন ২ অক্টোবরকে 'অহিংস, বিশ্ব শান্তি দিবস' হিসেবে ঘোষণা করেছে। 'গান্ধী' ছবির একটি দৃশ্যে দেখা যায়, 'সেডিসিন'এর অভিযোগে মহাত্মা গান্ধীকে আদালতে আনা হলে, তিন ব্রিটিশ বিচারক দাঁড়িয়ে তাঁকে সম্মান দেখান।

বাংলাদেশে কতসব রাস্তাঘাটের লোকজনের জন্য কতসব স্মৃতি সংরক্ষণ কমিটি! কিন্তু মহাত্মা গান্ধীর নামে? 'নো, নাথিং, নেভার'! এতে কি আমাদের মান-মর্যাদা বাড়ছে, না আমরা ছোট হচ্ছি? আমরা কি জানি যে, পাকিস্তান এবং মুসলমানদের প্রতি গান্ধীর বেশি পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তুলেই তখন কট্টর হিন্দুত্ববাদী সংগঠন 'আরএসএস' (রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সংঘ) পরিকল্পনা করে তাঁকে হত্যা করছিল?

চার

মহাত্মা গান্ধী ভারতের জাতির জনক। আমাদের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানও আমাদের জাতির জনক। ভারতের আর এক নেতা বাঙালি সুভাষ চন্দ্র বসু ভারতের স্বাধীনতার জন্য সশস্ত্র সংগ্রামে প্রবল ভূমিকা রেখেও শেষ পর্যন্ত সফল হননি। কিন্তু বঙ্গবন্ধু সফল হয়েছিলেন স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করে। আমাদের অনেক অনেক ব্যর্থতা। বঙ্গবন্ধুর আওয়ামী লীগের নেতা-মন্ত্রী-নেত্রী-কর্মীদের ব্যর্থতাগুলো বেশি বেশি চোখে লাগে। বঙ্গবন্ধু, তাজউদ্দিন আহমেদ এবং বঙ্গবন্ধুর আশেপাশের নেতাদের মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বের বিপরীতে প্যালেস্টাইনিদের ছেষট্টি বছরের ব্যর্থতা তুলনা করলে, বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় বঙ্গবন্ধুর সাফল্য আরও বেশি স্পষ্ট হয়। দুনিয়ার আরও কতসব অঞ্চলে কতসব মানুষ স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে কত সমুদ্র পরিমাণ রক্ত দিয়ে চলেছে। ইউক্রেইন এবং স্পেনের কাতালোনিয়া স্বাধীনতা সংগ্রামের এমন সর্বসাম্প্রতিক দুটি উদাহরণ। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর এতবড় সাফল্যের পরও গান্ধীভক্ত মতিলাল কোঠারির মতো ক'জন 'বঙ্গবন্ধুভক্ত' আছেন এই দেশে?

বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের বিচারের রায় কার্যকর করার আগ পর্যন্ত দাঁড়ি কাটবেন না বা জুতা পরবেন না এমন কিছু বঙ্গবন্ধুভক্তের খবর কখনও কখনও পড়েছি। বঙ্গবন্ধুর মাজারে একজন ভক্ত সারাদিন কোরান তেলাওয়াত করেন, দেখে এসেছি। কিন্তু একই সঙ্গে সাত-আট বছর আগে বঙ্গবন্ধুর মাজার কমপ্লেক্সের ছোট ছোট কিওস্কগুলোর কয়েকটিতে ভারতীয় হিন্দি ছবির নায়ক-নায়িকাদের বিশাল বিশাল পোস্টার বিক্রির জন্য ঝুলিয়ে রাখতেও দেখেছি। আর কয়েকটিতে হিন্দি ছবির গানও মাইকে বাজানো হচ্ছিল। প্রতিবাদ জানিয়েছিলাম বঙ্গবন্ধুভক্ত তাজুল ইসলামসহ আমরা কয়েকজন। তখন বিএনপি-জামাতিদের অপশাসন চলছিল। ওখানকার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বলেছিলেন, তারা কয়েক মাস বেতন পাচ্ছিলেন না।

এই বাংলাদেশে মতিলাল কোঠারির মতো অনেক অনেক বঙ্গবন্ধু অনুসারীর দরকার আজ। ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগে তাদের পাওয়া যাবে না। এরা বরং বঙ্গবন্ধুকে বেইজ্জত করে চলেছে।

শিউলীতলা, উত্তরা; শনিবার, ১ নভেম্বর, ২০১৪।